দ্বিতীয় বিবরণ
৮ “আজ আমি তোমাকে যে-সমস্ত আজ্ঞা দিচ্ছি, সেগুলোর প্রতিটা আজ্ঞা তোমরা ভালোভাবে পালন কোরো। এমনটা করলে তোমরা বেঁচে থাকবে, তোমাদের জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাবে আর তোমরা সেই দেশে গিয়ে সেটা দখল করবে, যে-দেশ দেওয়ার বিষয়ে যিহোবা তোমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে দিব্য করেছিলেন। ২ তোমার ঈশ্বর যিহোবা ৪০ বছর ধরে প্রান্তরে তোমাকে যে-দীর্ঘ পথ হাঁটিয়ে এনেছেন, সেই যাত্রা তুমি কখনো ভুলে যেয়ো না। ঈশ্বর এইজন্য এমনটা করলেন, যাতে তিনি তোমাকে নম্র হতে শেখান এবং তুমি তাঁর আজ্ঞাগুলো পালন করে চলবে কি না, সেই বিষয়ে তোমার হৃদয়ে কী রয়েছে, তা জানার জন্য তোমাকে পরীক্ষা করেন। ৩ তিনি তোমাকে নত করলেন এবং তোমাকে ক্ষুধার্ত অবস্থায় থাকতে দিলেন আর তারপর তোমাকে মান্না খাওয়ালেন, যেটার বিষয়ে তুমি কিংবা তোমার পূর্বপুরুষেরা, কেউই জানত না। ঈশ্বর এইজন্য এমনটা করলেন, যাতে তুমি জানতে পার যে, মানুষ কেবল রুটিতে বাঁচে না কিন্তু যিহোবার মুখ থেকে যে-প্রত্যেক বাক্য বের হয়, তাতেই বাঁচে। ৪ এই ৪০ বছরে না তোমাদের কাপড় পুরোনো হয়ে ছিঁড়েছে আর না তোমাদের পা ফুলেছে। ৫ তুমি ভালোভাবে জান যে, ঠিক যেমন একজন বাবা তার ছেলেকে সংশোধন করে, তেমনই তোমার ঈশ্বর যিহোবা তোমাকে সংশোধন করছিলেন।
৬ “তুমি তোমার ঈশ্বর যিহোবার পথে চলার মাধ্যমে এবং তাঁকে ভয় করার মাধ্যমে তাঁর আজ্ঞাগুলো পালন করে চলবে। ৭ কারণ তোমার ঈশ্বর যিহোবা তোমাকে এক উত্তম দেশে নিয়ে যাচ্ছেন, যেটা নদনদীর দেশ আর যেখানকার উপত্যকা এবং পার্বত্য এলাকায় ঝরনা থেকে জল বের হয়ে আসে ৮ আর যেটা গম, যব, আঙুর গাছ, ডুমুর গাছ, বেদানা, জলপাইয়ের তেল ও মধুর দেশ। ৯ সেটা এমন এক দেশ, যেখানে কখনো দুর্ভিক্ষ হবে না আর তোমার কোনো কিছুরই অভাব হবে না। সেখানকার পাথরে লোহা পাওয়া যায় আর সেখানকার পর্বত খুঁড়ে তুমি তামা বের করবে।
১০ “তুমি যখন খাওয়া-দাওয়া করে তৃপ্ত হবে, তখন তোমার ঈশ্বর যিহোবা তোমাকে যে-উত্তম দেশ দিয়েছেন, সেটার জন্য তুমি তাঁর প্রশংসা করবে। ১১ তুমি এই বিষয়ে সতর্ক থেকো যে, আজ আমি তোমাকে যে-সমস্ত আজ্ঞা, বিচার সংক্রান্ত রায় এবং নিয়ম দিচ্ছি, সেগুলো পালন করতে তোমার যেন কোনো ভুল না হয় আর এভাবে তুমি যেন তোমার ঈশ্বর যিহোবাকে কখনো ভুলে না যাও। ১২ সেই দেশে তুমি যখন খাওয়া-দাওয়া করে তৃপ্ত হবে এবং সুন্দর সুন্দর বাড়ি তৈরি করে সেগুলোতে বাস করবে, ১৩ তোমার মেষ, ছাগল, গরু ও ষাঁড় সংখ্যায় বৃদ্ধি পাবে, তোমার কাছে অনেক সোনা-রুপো থাকবে এবং সব কিছুর প্রাচুর্য থাকবে, ১৪ তখন সাবধান থেকো যেন তোমার হৃদয় অহংকারে ভরে না যায় আর এর ফলে তুমি তোমার ঈশ্বর যিহোবাকে ভুলে না যাও। তুমি সেই ঈশ্বরকে ভুলে যেতে পার, যিনি তোমাকে দাসত্বের দেশ মিশর থেকে বের করে এনেছিলেন এবং ১৫ যিনি তোমাকে সেই বিশাল ও ভয়ংকর প্রান্তরের মধ্যে হাঁটিয়ে এনেছিলেন, যেখানে বিষধর সাপ ও কাঁকড়াবিছে ঘুরে বেড়ায় এবং যেখানকার মাটি একেবারে শুকনো। ঈশ্বর সেখানে শৈল থেকে জল বের করলেন ১৬ এবং তোমাকে মান্না খাওয়ালেন, যেটার বিষয়ে তোমার পূর্বপুরুষেরা জানত না। ভবিষ্যতে যাতে তোমার মঙ্গল হয়, সেইজন্য ঈশ্বর তোমাকে নম্র হতে শেখালেন এবং তোমাকে পরীক্ষা করলেন। ১৭ তুমি যদি কখনো এমনটা ভাবতে শুরু কর যে, ‘আজ আমার কাছে যে-প্রচুর ধনসম্পদ রয়েছে, সেগুলোর সবই আমি নিজের শক্তিতে এবং নিজের ক্ষমতায় অর্জন করেছি,’ ১৮ তা হলে স্মরণ কোরো, তোমার ঈশ্বর যিহোবাই তোমাকে সেই শক্তি দিয়েছেন, যেন তুমি ধনসম্পদ অর্জন করতে পার। ঈশ্বর এইজন্য এমনটা করলেন, যাতে তিনি সেই চুক্তি পূরণ করেন, যে-চুক্তি তিনি তোমার পূর্বপুরুষদের কাছে দিব্য করে করেছিলেন, যেমনটা তিনি এখনও পর্যন্ত পূরণ করছেন।
১৯ “তুমি যদি কখনো তোমার ঈশ্বর যিহোবাকে ভুলে যাও এবং অন্য দেবতাদের অনুসরণ করে তাদের সেবা কর এবং তাদের সামনে মাথা নত কর, তা হলে আজ আমি তোমাদের বলে দিচ্ছি, তোমরা অবশ্যই বিনষ্ট হবে। ২০ তোমরা যদি তোমাদের ঈশ্বর যিহোবার কথা না শোন, তা হলে তোমরাও সেই জাতিগুলোর মতোই বিনষ্ট হয়ে যাবে, যে-জাতিগুলোকে যিহোবা তোমাদের সামনে বিনষ্ট করছেন।