রাজাবলির দ্বিতীয় খণ্ড
১২ যেহূর রাজত্বের সপ্তম বছরে যিহোয়াশ রাজা হয়েছিলেন আর তিনি জেরুসালেম থেকে ৪০ বছর ধরে রাজত্ব করলেন। তার মায়ের নাম ছিল সিবিয়া, যিনি বের্-শেবার বাসিন্দা ছিলেন। ২ যতদিন যাজক যিহোয়াদা যিহোয়াশকে নির্দেশনা দিলেন, ততদিন তিনি যিহোবার দৃষ্টিতে যা সঠিক, তা-ই করলেন। ৩ কিন্তু, উঁচু জায়গাগুলো দূর করা হল না আর লোকেরা তখনও সেই জায়গাগুলোতে বলি উৎসর্গ করত, যাতে বলি থেকে ধোঁয়া বের হয়।
৪ যিহোয়াশ যাজকদের বললেন: “তোমরা যিহোবার গৃহে দান হিসেবে আনা সমস্ত টাকাপয়সা নেবে অর্থাৎ প্রত্যেক ব্যক্তির কর, প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য নির্ধারিত টাকা এবং প্রত্যেক ব্যক্তি হৃদয় থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে যে-টাকা এনে যিহোবার গৃহে দেয়, সেটা নেবে। ৫ যারা দান দেবে, তাদের* কাছ থেকে যাজকেরা নিজে গিয়ে সেই টাকা নেবে আর গৃহের যে-সমস্ত জায়গায় ক্ষয়ক্ষতি* হয়েছে, সেগুলো মেরামত করার জন্য সেই টাকা ব্যবহার করবে।”
৬ কিন্তু, রাজা যিহোয়াশের রাজত্বের ২৩তম বছর পর্যন্তও যাজকেরা গৃহ মেরামতের কাজ করলেন না। ৭ তাই, রাজা যাজক যিহোয়াদা এবং অন্য যাজকদের ডেকে পাঠালেন এবং তাদের বললেন: “কেন এখনও পর্যন্ত গৃহ মেরামত করা হয়নি? তোমরা যখন মেরামতের কাজের জন্য টাকা ব্যবহার করছ না, তখন যারা দান করছে, তাদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া বন্ধ করে দাও।” ৮ তাই, যাজকেরা একমত হলেন যে, তারা আর লোকদের কাছ থেকে টাকা নেবেন না এবং গৃহের মেরামতের কাজের জন্য আর দায়বদ্ধ থাকবেন না।
৯ তখন যাজক যিহোয়াদা একটা বাক্স নিলেন, সেটার ঢাকনায় একটা ছিদ্র করলেন আর সেটাকে এমন জায়গায় রাখলেন, যাতে যারা যিহোবার গৃহে আসছে, তারা ঢোকার সময় ডান দিকে বেদির পাশে সেটা দেখতে পায়। যে-যাজকেরা দারোয়ান হিসেবে কাজ করত, তারা যিহোবার গৃহে আনা সমস্ত টাকাপয়সা সেই বাক্সে ফেলত। ১০ তারা যখন দেখত, বাক্সটা ভরে গিয়েছে, তখন তারা গিয়ে রাজার সচিব ও মহাযাজককে তা বলত আর তারা দু-জন এসে যিহোবার গৃহে আনা সমস্ত টাকাপয়সা একত্রিত করতেন* এবং তা গুনতেন। ১১ তারপর, তারা সেই টাকাপয়সা নিয়ে গিয়ে সেই ব্যক্তিদের দিতেন, যাদের যিহোবার গৃহের কাজকর্ম দেখাশোনা করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। এরপর, যারা কাজের দেখাশোনা করছিলেন, তারা সেই টাকা নিয়ে গিয়ে যে-ছুতোর মিস্ত্রি ও নির্মাণকারীরা যিহোবার গৃহ মেরামত করছিল, তাদের দিতেন ১২ ও সেইসঙ্গে রাজমিস্ত্রিদের এবং যে-মজুরেরা পাথর কাটত, তাদের দিতেন। শুধু তা-ই নয়, তারা সেই টাকা দিয়ে যিহোবার গৃহের মেরামতের কাজের জন্য কড়িকাঠ এবং কাটা পাথরও নিয়ে আসতেন এবং মেরামতের কাজের অন্যান্য সমস্ত খরচ মেটাতেন।
১৩ কিন্তু, যিহোবার গৃহে আনা টাকাপয়সা থেকে কোনো কিছুই যিহোবার গৃহের জন্য রুপোর পাত্র, প্রদীপ নেভানোর কাঁচি, বাটি, তূরী কিংবা সোনা-রুপোর অন্য কোনো জিনিস বানানোর জন্য ব্যবহার করা হল না। ১৪ তারা এই টাকা কেবল সেই ব্যক্তিদের দিতেন, যারা কাজের দেখাশোনা করছিলেন আর সেই ব্যক্তিরা এই টাকা দিয়ে যিহোবার গৃহ মেরামত করতেন। ১৫ তারা কাজের দেখাশোনা করছে এমন ব্যক্তিদের কাছ থেকে কখনো হিসাব চাইতেন না, যাদের মজুরদের মজুরি দেওয়ার জন্য টাকা দেওয়া হত কারণ তারা নির্ভরযোগ্য লোক ছিলেন। ১৬ কিন্তু, দোষার্থক বলি এবং পাপার্থক বলির জন্য যে-টাকা দেওয়া হত, সেটা যিহোবার গৃহ মেরামত করার জন্য ব্যবহার করা হত না। সেটার উপর যাজকদের অধিকার ছিল।
১৭ সেই সময়ে সিরিয়ার রাজা হসায়েল গাতের উপর আক্রমণ করলেন আর সেটা দখল করে নিলেন। তারপর, তিনি জেরুসালেমের উপর আক্রমণ করার সিদ্ধান্ত নিলেন। ১৮ তখন যিহূদার রাজা যিহোয়াশ হসায়েলকে সেইসমস্ত জিনিস পাঠালেন, যেগুলো তার পূর্বপুরুষেরা অর্থাৎ যিহূদার রাজা যিহোশাফট, যিহোরাম ও অহসিয় পবিত্র করেছিলেন। এ ছাড়া, তিনি সেই জিনিসগুলোও পাঠালেন, যেগুলো তিনি নিজে পবিত্র করেছিলেন। তিনি যিহোবার গৃহের কোষাগারের এবং রাজপ্রাসাদের কোষাগারের সমস্ত সোনাও তার কাছে পাঠিয়ে দিলেন। তাই, হসায়েল জেরুসালেমের উপর আক্রমণ করলেন না, তিনি ফিরে গেলেন।
১৯ যিহোয়াশের জীবনের বাকি কাহিনি এবং তার সমস্ত কাজের বিবরণ যিহূদার রাজাদের ইতিহাস বইয়ে লেখা আছে। ২০ যিহোয়াশের সেবকেরা একসঙ্গে মিলে তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করল আর সিল্লা যাওয়ার রাস্তায় বৈৎ-মিল্লোয়* তাকে মেরে ফেলল। ২১ তার যে-সেবকেরা তাকে হত্যা করল, তারা হল: শিমিয়তের ছেলে যোষাখর এবং শোমরের ছেলে যিহোষাবদ। তারা যিহোয়াশকে দায়ূদ-নগরে তার পূর্বপুরুষদের কবরে কবর দিল আর তার জায়গায় তার ছেলে অমৎসিয় রাজা হলেন।