অধ্যায় বারো
তিনি তার ঈশ্বরের কাছ থেকে সান্ত্বনা লাভ করেছিলেন
১, ২. এলিয়ের জীবনের সবচেয়ে স্মরণীয় দিনে কী ঘটেছিল?
এলিয় দৌড়ে যাচ্ছেন, আকাশ কালো হয়ে গিয়েছে আর বৃষ্টি পড়ছে। যিষ্রিয়েলে পৌঁছানোর জন্য তাকে অনেকটা পথ যেতে হবে আর তার যথেষ্ট বয়স হয়েছে। কিন্তু তিনি অক্লান্তভাবে দৌড়াচ্ছেন, কারণ “সদাপ্রভুর হস্ত” তার ওপরে ছিল। তার শরীরে যে-শক্তি কাজ করছিল, নিশ্চিতভাবেই তা তার কাছে পরিচিত যেকোনো শক্তির চেয়ে ভিন্ন ছিল। তিনি সবেমাত্র সেই ঘোড়ার দলকে ছাড়িয়ে গিয়েছেন, যেটা আহাব রাজার রাজকীয় রথকে টেনে নিয়ে যাচ্ছিল!—পড়ুন, ১ রাজাবলি ১৮:৪৬.
২ এলিয়কে এখন এক দীর্ঘ পথ যেতে হবে। কল্পনা করুন, এলিয়ের দৌড়ানোর সময় তার চোখে-মুখে বৃষ্টির ফোঁটা পড়ছে এবং তিনি তার জীবনের সবচেয়ে স্মরণীয় দিনের বিষয়ে চিন্তা করছেন। নিঃসন্দেহে, এটা এলিয়ের ঈশ্বর যিহোবার এবং সত্য উপাসনার পক্ষে এক গৌরবময় বিজয় ছিল। বাল উপাসকদেরকে চরম ও অলৌকিকভাবে পরাজিত করার জন্য যিহোবা যেখানে এলিয়কে ব্যবহার করেছিলেন, সেই কর্মিল পর্বতের চূড়া ঝড় ও অন্ধকারে ঢেকে গিয়েছিল এবং সেটাকে তিনি দূরে ফেলে এসেছিলেন। শত শত বাল ভাববাদীদের দুষ্টতাপূর্ণ প্রতারণা প্রকাশ হয়ে পড়েছিল এবং ন্যায্যভাবেই তাদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। এরপর এলিয় সেই দেশে সাড়ে তিন বছর ধরে চলা খরা দূর করার জন্য যিহোবার কাছে প্রার্থনা করেছিলেন। বৃষ্টি শুরু হয়েছিল!—১ রাজা. ১৮:১৮-৪৫.
৩, ৪. (ক) কেন যিষ্রিয়েলে যাওয়ার সময় এলিয়ের প্রত্যাশা হয়তো আরও বেড়ে গিয়েছিল? (খ) আমরা কোন প্রশ্নগুলো বিবেচনা করব?
৩ বৃষ্টির মধ্যে ৩০ কিলোমিটার দূরে যিষ্রিয়েলে যাওয়ার সময় তার প্রত্যাশা হয়তো আরও বেড়ে গিয়েছিল। তিনি হয়তো মনে করেছিলেন যে, শেষপর্যন্ত পরিস্থিতি পালটে যাচ্ছে। আহাবকে পরিবর্তিত হতে হবে! আহাব যা দেখেছিলেন, সেটার পর বাল উপাসনাকে ত্যাগ করা, তার রানি ঈষেবলকে বিরত করা এবং যিহোবার দাসদের ওপর তাড়না বন্ধ করা ছাড়া নিশ্চিতভাবেই তার হাতে আর কোনো উপায় ছিল না।
‘এলিয় যিষ্রিয়েলের প্রবেশ-স্থান পর্য্যন্ত আহাবের অগ্রে অগ্রে দৌড়িয়া গেলেন’
৪ আমরা যেভাবে চাই, বিষয়গুলো যখন সেভাবে ঘটে, তখন স্বভাবতই আমাদের প্রত্যাশা বেড়ে যায়। আমরা হয়তো মনে করতে পারি যে, আমাদের পরিস্থিতি আরও ভালো হবে আর এমনকী এইরকম চিন্তাও করতে পারি যে, আমরা আমাদের সবচেয়ে কঠিন সমস্যাকে পিছনে ফেলে এসেছি। এলিয় যদি এ-রকম চিন্তা করে থাকেন, তাহলে তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই, কারণ তিনিও “আমাদের ন্যায় সুখদুঃখভোগী মনুষ্য ছিলেন।” (যাকোব ৫:১৭) কিন্তু, এলিয়ের সমস্যাগুলো তখনও শেষ হয়ে যায়নি। আসলে কয়েক ঘন্টার মধ্যেই এলিয় এতটাই ভীত, এতটাই হতাশ হয়ে পড়েছিলেন যে, তিনি মৃত্যুকামনা করেছিলেন। কী ঘটেছিল আর কীভাবে যিহোবা তাঁর ভাববাদীকে তার বিশ্বাস ও সাহস পুনরায় অর্জন করতে সাহায্য করেছিলেন? আসুন আমরা তা দেখি।
পরিস্থিতি অপ্রত্যাশিতভাবে পরিবর্তিত হয়
৫. কর্মিল পর্বতে যা ঘটেছিল, তা থেকে কি আহাব যিহোবাকে সম্মান করতে শিখেছিলেন আর কীভাবে আমরা তা জানি?
৫ আহাব যখন যিষ্রিয়েলে তার প্রাসাদে পৌঁছেছিলেন, তখন তিনি কি দেখিয়েছিলেন যে, তিনি পরিবর্তিত হয়েছেন? আমরা পড়ি: “এলিয় যাহা যাহা করিয়াছিলেন, কেমন করিয়া তিনি সমুদয় ভাববাদীকে খড়্গ দ্বারা বধ করিয়াছিলেন, এই সমস্ত বৃত্তান্ত আহাব ঈষেবলকে জ্ঞাত করিলেন।” (১ রাজা. ১৯:১) লক্ষ করুন যে, সেই দিনের ঘটনা সম্বন্ধে আহাবের বর্ণনায় এলিয়ের ঈশ্বর যিহোবার কোনো উল্লেখ ছিল না। আহাব, যিনি আধ্যাত্মিকমনা ব্যক্তি ছিলেন না, তিনি সেই দিনের অলৌকিক ঘটনাগুলোকে শুধুমাত্র মানুষের দৃষ্টিতে দেখেছিলেন আর ভেবেছিলেন যে, সেগুলো আসলে ‘এলিয় করিয়াছিলেন।’ স্পষ্টতই, তিনি যিহোবা ঈশ্বরকে সম্মান করতে শেখেননি। আর তার প্রতিশোধপরায়ণ স্ত্রী কেমন প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিলেন?
৬. ঈষেবল এলিয়কে কোন খবর পাঠিয়েছিলেন আর এটার অর্থ কী ছিল?
৬ ঈষেবল প্রচণ্ড রেগে গিয়েছিলেন! রেগে গিয়ে তিনি এলিয়কে এই খবর পাঠিয়েছিলেন: “কল্য এমন সময়ে যদি আমি তোমার প্রাণকে তাঁহাদের এক জনের প্রাণের সমান না করি, তবে দেবগণ আমাকে অমুক ও ততোধিক দণ্ড দিউন।” (১ রাজা. ১৯:২) এটা ছিল প্রাণনাশের চরম হুমকি। আসলে, ঈষেবল এই প্রতিজ্ঞা করছিলেন যে, তার বাল ভাববাদীদের মৃত্যুর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য পরের দিনের মধ্যে তিনি যদি এলিয়কে হত্যা করতে না পারেন, তাহলে তার নিজেরই মরে যাওয়া উচিত। কল্পনা করুন যে, এলিয় সেই ঝোড়ো রাতে যিষ্রিয়েলে একটা ছোটো ঘরে ঘুম থেকে উঠেই রানির বার্তাবাহককে সেই ভয়াবহ খবর ঘোষণা করতে শোনেন। তিনি কেমন বোধ করেছিলেন?
নিরুৎসাহিত ও ভীত
৭. ঈষেবলের হুমকি এলিয়ের ওপর কী প্রভাব ফেলেছিল আর তিনি কী করেছিলেন?
৭ এলিয় যদি এ-রকম মনে করে থাকেন, বাল উপাসনার বিরুদ্ধে লড়াই প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছে, তাহলে সঙ্গেসঙ্গেই তিনি উপলব্ধি করেছিলেন যে, তার চিন্তা কতটা ভুল ছিল। ঈষেবল দমে যাননি। তার আদেশে এলিয়ের অসংখ্য বিশ্বস্ত সহকর্মীকে ইতিমধ্যেই মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল আর মনে হয়েছিল এ-বার তাকেও মেরে ফেলা হবে। ঈষেবলের হুমকি এলিয়ের ওপর কী প্রভাব ফেলেছিল? বাইবেল আমাদের বলে: “এলিয় তাহা দেখিয়া উঠিলেন [‘এলিয় এতে ভয় পেয়েছিলেন,’ বাংলা কমন ল্যাঙ্গুয়েজ ভারসন]।” এলিয় কি তার মনশ্চক্ষে দেখতে পেয়েছিলেন যে, ঈষেবল তাকে কত নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করছেন? তিনি যদি এই বিষয়গুলো নিয়ে চিন্তা করতেই থাকেন, তাহলে কোনো সন্দেহ নেই যে, তিনি সাহস হারিয়ে ফেলবেন। যা-ই হোক না কেন, এলিয় ‘প্রাণরক্ষার্থে চলিয়া গিয়াছিলেন’ অর্থাৎ তার জীবন বাঁচানোর জন্য তিনি পালিয়ে গিয়েছিলেন।—১ রাজা. ১৮:৪; ১৯:৩.
আমরা যদি আমাদের সাহস বজায় রাখতে চাই, তাহলে আমরা সেই বিপদগুলো নিয়ে চিন্তা করব না, যেগুলোকে আমরা ভয় পাই
৮. (ক) কোন দিক দিয়ে এলিয়ের ও পিতরের সমস্যা একইরকম ছিল? (খ) এলিয় ও পিতরের কাছ থেকে আমরা কোন শিক্ষা পাই?
৮ বিশ্বস্ত ব্যক্তিদের মধ্যে একমাত্র এলিয়ই যে ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন, এমন নয়। এর অনেক পরে, প্রেরিত পিতরও একইরকম সমস্যায় পড়েছিলেন। উদাহরণস্বরূপ, যিশু যখন জলের ওপর দিয়ে হাঁটার সময় পিতরকেও তাঁর সঙ্গে যোগ দিতে সমর্থ করেছিলেন, তখন সেই প্রেরিত ঝোড়ো ‘বাতাস দেখিতে’ শুরু করেছিলেন। এর ফলে তিনি তার সাহস হারিয়ে ফেলেছিলেন এবং ডুবে যেতে শুরু করেছিলেন। (পড়ুন, মথি ১৪:৩০.) তাই, এলিয় ও পিতরের উদাহরণ আমাদেরকে এক মূল্যবান শিক্ষা প্রদান করে। আমরা যদি আমাদের সাহস বজায় রাখতে চাই, তাহলে আমরা সেই বিপদগুলো নিয়ে চিন্তা করব না, যেগুলোকে আমরা ভয় পাই। আমাদের উচিত আশা ও শক্তির উৎসের ওপর আমাদের মনোযোগ কেন্দ্রীভূত রাখা।
“এই যথেষ্ট”
৯. এলিয়ের যাত্রা ও সেইসঙ্গে পালানোর সময় তার মানসিক অবস্থা সম্বন্ধে বর্ণনা করুন।
৯ ভয় পেয়ে এলিয় দক্ষিণ-পশ্চিমে প্রায় ১৫০ কিলোমিটার দূরে যিহুদার দক্ষিণ প্রান্তের কাছাকাছি এক শহর বের্শেবায় পালিয়ে গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি তার পরিচারককে ছেড়ে একাই প্রান্তরে চলে গিয়েছিলেন। বিবরণ বলে যে, তিনি “এক দিনের পথ” গিয়েছিলেন, তাই আমরা হয়তো কল্পনা করতে পারি যে, তিনি সূর্যোদয়ের সঙ্গেসঙ্গে যাত্রা শুরু করেছিলেন আর স্পষ্টতই তিনি খাবারদাবার অথবা অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস নেননি। বিষণ্ণ হয়ে, ভয় পেয়ে তিনি প্রখর রোদে রুক্ষ ও ধু-ধু এলাকার মধ্যে দিয়ে অতি কষ্টে এগিয়ে চলছিলেন। সূর্য যখন ধীরে ধীরে অস্ত যাচ্ছিল ও রাত হচ্ছিল, তখন এলিয়ের আর চলার শক্তি ছিল না। ক্লান্ত হয়ে তিনি একটা রোতম গাছের নীচে বসে পড়েছিলেন, যেটা ছিল সেই ধু-ধু মরুভূমিতে সবচেয়ে কাছের আশ্রয়স্থান।—১ রাজা. ১৯:৪.
১০, ১১. (ক) যিহোবার উদ্দেশে এলিয়ের করা প্রার্থনার অর্থ কী ছিল? (খ) উদ্ধৃত শাস্ত্রপদগুলো ব্যবহার করে, এমন অন্যান্য ঈশ্বরভয়শীল ব্যক্তির অনুভূতি বর্ণনা করুন, যারা হতাশ হয়ে পড়েছিলেন।
১০ অত্যন্ত হতাশ হয়ে এলিয় প্রার্থনা করেছিলেন। তিনি মৃত্যুকামনা করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন: “আপন পিতৃপুরুষদের হইতে আমি উত্তম নহি।” তিনি জানতেন যে, তার পিতৃপুরুষরা তখন কবরের মধ্যে থাকা ধুলি ও অস্থি ছাড়া আর কিছুই নয়, তারা কারো জন্য কোনো ভালো কিছু করতে পারে না। (উপ. ৯:১০) এলিয় নিজেকে সেইরকমই অযোগ্য বলে মনে করেছিলেন। তাই এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে, তিনি আর্তনাদ করে বলেছিলেন: “এই যথেষ্ট।” বেঁচে থেকে কী লাভ?
১১ ঈশ্বরের একজন ব্যক্তি যে, এতটা হতাশ হয়ে পড়তে পারেন, তা জেনে কি আমাদের অবাক হওয়া উচিত? অবশ্যই নয়। বাইবেলের বিবরণে বেশ কিছু পুরুষ ও নারীর বিষয়ে বর্ণনা করা হয়েছে, যারা এতটাই দুঃখিত হয়ে পড়েছিলেন যে, তারা মারা যেতে চেয়েছিলেন—তাদের মধ্যে রয়েছেন রিবিকা, যাকোব, মোশি এবং ইয়োব।—আদি. ২৫:২২; ৩৭:৩৫; গণনা. ১১:১৩-১৫; ইয়োব ১৪:১৩.
১২. আপনি নিজে যদি কখনো হতাশ হয়ে পড়েন, তাহলে কীভাবে আপনি এলিয়ের উদাহরণ অনুসরণ করতে পারেন?
১২ যেহেতু আজকে আমরা ‘বিষম সময়ে’ বাস করছি, তাই এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে, অনেকে এমনকী ঈশ্বরের বিশ্বস্ত দাসেরাও, কখনো কখনো হতাশ হয়ে পড়ে। (২ তীম. ৩:১) আপনি নিজে যদি কখনো এই ধরনের কঠিন পরিস্থিতিতে পড়েন, তাহলে এই ক্ষেত্রে এলিয়ের উদাহরণ অনুসরণ করুন: ঈশ্বরের কাছে নিজের হৃদয় উজাড় করে দিন। কারণ, যিহোবা হলেন “সমস্ত সান্ত্বনার ঈশ্বর।” (পড়ুন, ২ করিন্থীয় ১:৩, ৪.) তিনি কি এলিয়কে সান্ত্বনা প্রদান করেছিলেন?
যিহোবা তাঁর ভাববাদীকে শক্তি জুগিয়েছিলেন
১৩, ১৪ (ক) একজন স্বর্গদূতের দ্বারা যিহোবা কীভাবে তাঁর বিষণ্ণ ভাববাদীর প্রতি প্রেমময় চিন্তা দেখিয়েছিলেন? (খ) এটা জানা কেন সান্ত্বনাদায়ক যে, যিহোবা আমাদের প্রত্যেকের সম্বন্ধে সবকিছু জানেন, যার মধ্যে আমাদের সীমাবদ্ধতাগুলোও রয়েছে?
১৩ যিহোবা যখন স্বর্গ থেকে তাঁর প্রিয় ভাববাদীকে প্রান্তরে সেই গাছের নীচে শুয়ে থাকতে এবং তাকে তার মৃত্যুকামনা করতে দেখেছিলেন, তখন তিনি কেমন অনুভব করেছিলেন বলে আপনি মনে করেন? আমাদের তা অনুমান করার প্রয়োজন নেই। এলিয় গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হওয়ার পর, যিহোবা একজন স্বর্গদূতকে তার কাছে পাঠিয়েছিলেন। সেই স্বর্গদূত এলিয়কে কোমলভাবে স্পর্শ করে জাগিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন: “উঠ, আহার কর।” এলিয় তা-ই করেছিলেন, কারণ স্বর্গদূত তাকে সদয়ভাবে সাধারণ খাদ্য, গরম গরম টাটকা রুটি এবং জল দিয়েছিলেন। এটার জন্য কি এলিয় সেই স্বর্গদূতকে ধন্যবাদ দিয়েছিলেন? বিবরণ শুধু বলে যে, ভাববাদী ভোজন ও পান করেছিলেন এবং আবারও ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। তিনি কি এতটাই হতাশ ছিলেন যে, তিনি কথা বলতে চাননি? যা-ই হোক না কেন, সেই স্বর্গদূত তাকে দ্বিতীয় বার, সম্ভবত ভোরের দিকে, জাগিয়ে তুলেছিলেন। আরও এক বার তিনি এলিয়কে বলেছিলেন, “উঠ, আহার কর” আর এরপর তিনি এই উল্লেখযোগ্য কথাটা বলেছিলেন, “কেননা তোমার শক্তি হইতেও পথ অধিক।”—১ রাজা. ১৯:৫-৭.
১৪ ঈশ্বরদত্ত অন্তর্দৃষ্টি থাকায় সেই স্বর্গদূত জানতেন যে, এলিয় কোথায় যাচ্ছিলেন। এ ছাড়া, তিনি এও জানতেন যে, সেই যাত্রা এলিয়ের জন্য এতটাই কঠিন হবে যে, তিনি নিজের শক্তিতে তা সম্পন্ন করতে পারবেন না। এমন একজন ঈশ্বরকে সেবা করা কতই-না সান্ত্বনাদায়ক, যিনি আমাদের উদ্দেশ্য ও আমাদের সীমাবদ্ধতাগুলো সম্বন্ধে আমাদের চেয়ে আরও ভালো করে জানেন! (পড়ুন, গীতসংহিতা ১০৩:১৩, ১৪.) সেই খাদ্য থেকে এলিয় কতটা উপকৃত হয়েছিলেন?
১৫, ১৬. (ক) যিহোবা এলিয়কে যে খাদ্য জুগিয়ে দিয়েছিলেন, তার ফলে এলিয় কী করতে পেরেছিলেন? (খ) বর্তমান দিনেও যিহোবা যেভাবে তাঁর দাসদের শক্তি জোগান, সেটার জন্য কেন আমাদের উপলব্ধি দেখানো উচিত?
১৫ আমরা পড়ি: “তিনি উঠিয়া ভোজন পান করিলেন, এবং সেই খাদ্যের প্রভাবে চল্লিশ দিবারাত্র গমন করিয়া ঈশ্বরের পর্ব্বত হোরেবে উপস্থিত হইলেন।” (১ রাজা. ১৯:৮) তার চেয়ে ছয় শতাব্দী আগে মোশির এবং প্রায় দশ শতাব্দী পরে যিশুর মতো, এলিয়ও ৪০ দিন ও ৪০ রাত উপবাস করেছিলেন। (যাত্রা. ৩৪:২৮; লূক ৪:১, ২) সেই এক বারের খাবার তার সমস্ত সমস্যার সমাধান করেনি, কিন্তু এটা এক অলৌকিক উপায়ে তাকে শক্তি জুগিয়েছিল। কল্পনা করুন, সেই বয়স্ক ব্যক্তি নির্জন প্রান্তরের মধ্যে দিয়ে দিনের পর দিন, সপ্তাহের পর সপ্তাহ, প্রায় দেড় মাস ধরে কষ্ট করে হেঁটে চলেছেন!
১৬ বর্তমান দিনেও যিহোবা তাঁর দাসদেরকে শক্তি জুগিয়ে থাকেন, তবে অলৌকিকভাবে আক্ষরিক খাদ্য জুগিয়ে নয় বরং আরও গুরুত্বপূর্ণ এক উপায়ে। তিনি তাঁর দাসদের আধ্যাত্মিকভাবে যত্ন নিয়ে থাকেন। (মথি ৪:৪) তাঁর বাক্য ও বাইবেলভিত্তিক প্রকাশনাদি থেকে ঈশ্বর সম্বন্ধে জানা আমাদেরকে আধ্যাত্মিকভাবে শক্তি জোগায়। এই ধরনের আধ্যাত্মিক খাদ্য লাভ করা হয়তো আমাদের সমস্ত সমস্যাকে দূর করবে না, কিন্তু এটা আমাদেরকে সেই সমস্যাগুলো সহ্য করতে সাহায্য করতে পারে, যেগুলো হয়তো অসহনীয়। এ ছাড়া, এটা ‘অনন্ত জীবনের’ দিকে পরিচালিত করে।—যোহন ১৭:৩.
১৭. এলিয় কোথায় গিয়েছিলেন এবং কেন সেই স্থান গুরুত্বপূর্ণ ছিল?
১৭ এলিয় প্রায় ৩২০ কিলোমিটার পথ হেঁটে শেষপর্যন্ত হোরেব পর্বতে (বা সীনয় পর্বত) এসে পৌঁছেছিলেন। এটা এক গুরুত্বপূর্ণ স্থান ছিল কারণ সেখানে অনেক পূর্বে যিহোবা ঈশ্বর একজন স্বর্গদূতের মাধ্যমে জ্বলন্ত ঝোপের মধ্যে মোশির কাছে আবির্ভূত হয়েছিলেন এবং সেই জায়গাতেই পরে যিহোবা ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে ব্যবস্থা চুক্তি করেছিলেন। এলিয় একটা গুহার মধ্যে আশ্রয় নিয়েছিলেন।
যিহোবা যেভাবে তাঁর ভাববাদীকে সান্ত্বনা ও শক্তি প্রদান করেছিলেন
১৮, ১৯. (ক) যিহোবার স্বর্গদূত কোন প্রশ্ন জিজ্ঞেস করেছিলেন আর এলিয় কীভাবে তাতে সাড়া দিয়েছিলেন? (খ) এলিয় তার হতাশার হয়তো কোন তিনটে কারণ প্রকাশ করেছিলেন?
১৮ হোরেবে যিহোবার “বাক্য”—যা স্পষ্টতই একজন স্বর্গদূতের দ্বারা উচ্চারিত হয়েছিল—এই সাধারণ প্রশ্নটা জিজ্ঞেস করেছিল: “এলিয়, তুমি এখানে কি করিতেছ?” খুব সম্ভবত এই প্রশ্নটা কোমলভাবে করা হয়েছিল, কারণ এলিয় এটাকে নিজের হৃদয় উজাড় করে দেওয়ার এক আমন্ত্রণ হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন। আর তিনি সত্যিই তার হৃদয় উজাড় করে দিয়েছিলেন! তিনি বলেছিলেন: “আমি বাহিনীগণের ঈশ্বর সদাপ্রভুর পক্ষে অতিশয় উদ্যোগী হইয়াছি; কেননা ইস্রায়েল-সন্তানগণ তোমার নিয়ম ত্যাগ করিয়াছে, তোমার যজ্ঞবেদি সকল উৎপাটন করিয়াছে, ও তোমার ভাববাদিগণকে খড়্গ দ্বারা বধ করিয়াছে; আর আমি, কেবল একা আমিই অবশিষ্ট রহিলাম; আর তাহারা আমার প্রাণ লইতে চেষ্টা করিতেছে।” (১ রাজা. ১৯:৯, ১০) এলিয়ের কথাগুলো তার হতাশার অন্ততপক্ষে তিনটে কারণ প্রকাশ করে।
১৯ প্রথমত, এলিয় মনে করেছিলেন যে, তার কাজ ব্যর্থ হয়েছে। ঈশ্বরের পবিত্র নাম এবং উপাসনাকে সবকিছুর ঊর্ধ্বে রেখে বছরের পর বছর ধরে যিহোবার সেবায় “অতিশয় উদ্যোগী” হওয়া সত্ত্বেও, এলিয় দেখেছিলেন যে, পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে যাচ্ছে। লোকেরা তখনও অবিশ্বাসী ছিল ও বিদ্রোহ করছিল এবং মিথ্যা উপাসনা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ছিল। দ্বিতীয়ত, এলিয় নিজেকে একা বলে মনে করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন “আমি, কেবল একা আমিই অবশিষ্ট রহিলাম,” এখন যেন তিনিই ছিলেন সেই জাতির মধ্যে শেষ ব্যক্তি, যিনি যিহোবাকে সেবা করছিলেন। তৃতীয়ত, এলিয় ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন। তার অনেক সহভাববাদীকে ইতিমধ্যেই হত্যা করা হয়েছিল আর তিনি নিশ্চিত ছিলেন যে, এ-বার তাকে হত্যা করা হবে। এই ধরনের অনুভূতি প্রকাশ করা হয়তো এলিয়ের পক্ষে সহজ ছিল না, কিন্তু তিনি গর্ব ও অস্বস্তির কারণে পিছিয়ে পড়েননি। প্রার্থনায় তার ঈশ্বরের কাছে নিজের হৃদয় উজাড় করে দিয়ে তিনি সমস্ত বিশ্বস্ত ব্যক্তির জন্য এক উত্তম উদাহরণ স্থাপন করেছেন।—গীত. ৬২:৮.
২০, ২১. (ক) হোরেব পর্বতে গুহার প্রবেশদ্বারে এলিয় যা দেখেছিলেন, তা বর্ণনা করুন। (খ) যিহোবা তাকে যে-শক্তি দেখিয়েছিলেন, তা থেকে এলিয় কী শিখেছিলেন?
২০ যিহোবা কীভাবে এলিয়ের ভয় ও উদ্বেগের প্রতি সাড়া দিয়েছিলেন? সেই স্বর্গদূত তাকে গুহার প্রবেশদ্বারে দাঁড়াতে বলেছিলেন। কী ঘটতে চলেছে, তা না জেনেই তিনি তার কথা শুনেছিলেন। এক প্রবল ঝোড়ো বাতাস বয়ে গিয়েছিল! এর ফলে নিশ্চয়ই কানে তালা লাগার মতো প্রচণ্ড শব্দ হয়েছিল কারণ এটা এত শক্তিশালী ছিল যে, তা পর্বতমালা ও শৈলকে বিদীর্ণ করেছিল। কল্পনা করুন যে, ঝোড়ো বাতাসে তার ভারী ও সাধারণ লোমশ জামাটা প্রায় খুলে যাচ্ছে আর তিনি সেটা ধরে রাখার সঙ্গে সঙ্গে নিজের চোখ ঢাকার চেষ্টা করছেন। এরপর তিনি আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারছিলেন না কারণ মাটি কাঁপতে শুরু করেছিল, সেই অঞ্চলে ভূমিকম্প হয়েছিল! এগুলো কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই, ভয়াবহ আগুন বয়ে গিয়েছিল এবং প্রচণ্ড তাপ থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য তিনি গুহার মধ্যে ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন।—১ রাজা. ১৯:১১, ১২.
যিহোবা এলিয়কে সান্ত্বনা ও উৎসাহ দেওয়ার জন্য তাঁর বিস্ময়কর শক্তি ব্যবহার করেছিলেন
২১ প্রতিটা ক্ষেত্রেই, বিবরণ আমাদেরকে মনে করিয়ে দেয় যে, প্রাকৃতিক শক্তির সেই বিস্ময়কর প্রদর্শনের মধ্যে যিহোবা অবস্থিতি করছিলেন না। এলিয় জানতেন যে, যিহোবা পৌরাণিক কাহিনির কোনো প্রাকৃতিক শক্তির দেবতা ছিলেন না, যেমনটা ছিল বাল দেবতা, যাকে তার ভ্রান্ত উপাসকরা এমন দেবতা হিসেবে উপাসনা করত, যিনি “মেঘে চড়ে আসেন” বা বৃষ্টি নিয়ে আসেন। প্রকৃতিতে যে-সমস্ত বিস্ময়কর শক্তি দেখতে পাওয়া যায়, যিহোবা হলেন সেগুলোর প্রকৃত উৎস, কিন্তু তিনি যা-কিছু সৃষ্টি করেছেন, সেগুলো থেকে তিনি আরও মহান। এমনকী স্বর্গ বা মহাকাশও তাঁকে ধারণ করতে পারে না! (১ রাজা. ৮:২৭) এই সমস্তকিছুই এলিয়কে কীভাবে সাহায্য করেছিল? তার ভয়ের বিষয়টা স্মরণ করুন। অপ্রতিরোধ্য শক্তি যাঁর হাতের মুঠোয় এমন একজন ঈশ্বর যিহোবা তার পক্ষে থাকায়, এলিয়ের আহাব ও ঈষেবলকে ভয় পাওয়ার কোনো কারণই ছিল না!—পড়ুন, গীতসংহিতা ১১৮:৬.
২২. (ক) কীভাবে ‘ঈষৎ শব্দকারী ক্ষুদ্র স্বর’ এলিয়কে পুনরায় আশ্বস্ত করেছিল যে, তিনি অযোগ্য নন? (খ) সেই ‘ঈষৎ শব্দকারী ক্ষুদ্র স্বরের’ উৎস সম্ভবত কে ছিলেন? (পাদটীকা দেখুন।)
২২ আগুন নিভে যাওয়ার পর, সবকিছু শান্ত হয়ে গিয়েছিল এবং এলিয় “ঈষৎ শব্দকারী ক্ষুদ্র এক স্বর” শুনেছিলেন। এই স্বর আবারও এলিয়কে মনের কথা বলতে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল এবং তিনি তা-ই করেছিলেন, দ্বিতীয় বার তার উদ্বেগগুলো সম্বন্ধে বলেছিলেন।a সম্ভবত এটা তাকে আরও স্বস্তি দিয়েছিল। কিন্তু, সেই ‘ঈষৎ শব্দকারী ক্ষুদ্র স্বর’ পরে তাকে যা বলেছিল, তা থেকে এলিয় নিঃসন্দেহে আরও সান্ত্বনা লাভ করেছিলেন। যিহোবা এলিয়কে পুনরায় আশ্বস্ত করেছিলেন যে, তিনি অযোগ্য নন। কীভাবে? ইস্রায়েলে বাল উপাসনার বিরুদ্ধে যুদ্ধের বিষয়ে ঈশ্বর তাঁর ভবিষ্যৎ উদ্দেশ্য সম্বন্ধে অনেক কিছু প্রকাশ করেছিলেন। স্পষ্টতই, এলিয়ের কাজ ব্যর্থ হয়ে যায়নি কারণ ঈশ্বরের উদ্দেশ্য অপ্রতিরোধ্যভাবে সামনের দিকে এগিয়ে চলছিল। এ ছাড়া, যিহোবা যেহেতু তাকে সুনির্দিষ্ট কিছু নির্দেশনা দিয়ে আবার তার কাজে ফেরত পাঠিয়েছিলেন, তাই তখনও সেই উদ্দেশ্যে এলিয়ের ভূমিকা ছিল।—১ রাজা. ১৯:১২-১৭.
২৩. এলিয়ের একাকিত্ব দূর করার জন্য যিহোবা কোন দুটো কাজ করেছিলেন?
২৩ এলিয় যে একাকিত্ব বোধ করেছিলেন, সেই সম্বন্ধে কী বলা যায়? সেই বিষয়ে যিহোবা দুটো কাজ করেছিলেন। প্রথমত, তিনি এলিয়কে বলেছিলেন যেন তিনি ভাববাদী হিসেবে ইলীশায়কে অভিষেক করেন, যিনি এরপর তার উত্তরসূরী হবেন। এই যুবক কয়েক বছরের জন্য এলিয়ের সঙ্গী ও সাহায্যকারী হবেন। সেই সান্ত্বনা কতই-না ব্যবহারিক ছিল! দ্বিতীয়ত, যিহোবা এই রোমাঞ্চকর সংবাদ প্রকাশ করেছিলেন: “ইস্রায়েলের মধ্যে আমি আপনার জন্য সাত সহস্র লোককে অবশিষ্ট রাখিব, সেই সকলের জানু বালের সম্মুখে পাতিত হয় নাই, ও সেই সকলের মুখ তাহাকে চুম্বন করে নাই।” (১ রাজা. ১৯:১৮) এলিয় একা ছিলেন না। সেই হাজার হাজার বিশ্বস্ত ব্যক্তির বিষয়ে শোনা নিশ্চয়ই তার হৃদয়কে উষ্ণ করেছিল, যারা বালের উপাসনা করা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। তারা চেয়েছিলেন যেন এলিয় তার বিশ্বস্ত সেবা বজায় রাখেন এবং তাদের জন্য সেই অন্ধকার সময়ে যিহোবার প্রতি অটল আনুগত্যের এক উদাহরণ স্থাপন করেন। এলিয় নিশ্চয়ই তার ঈশ্বর যিহোবার প্রেরিত সেই বার্তাবাহকের ‘ঈষৎ শব্দকারী ক্ষুদ্র স্বর’ শুনে গভীরভাবে প্রভাবিত হয়েছিলেন।
বাইবেল সেই ‘ঈষৎ শব্দকারী ক্ষুদ্র স্বরের’ মতো হতে পারে, যদি আজকে আমরা এটিকে আমাদের নির্দেশক হতে দিই
২৪, ২৫. (ক) কীভাবে আজ আমরা যিহোবার ‘ঈষৎ শব্দকারী ক্ষুদ্র স্বর’ শুনতে পাই? (খ) আমরা কীভাবে নিশ্চিত হতে পারি যে, যিহোবা যে-সান্ত্বনা প্রদান করেছিলেন, এলিয় তা মেনে নিয়েছিলেন?
২৪ এলিয়ের মতো আমরাও হয়তো সৃষ্টির মধ্যে প্রকাশিত বিপুল প্রাকৃতিক শক্তি দেখে অভিভূত হতে পারি আর তা হওয়া যথার্থ। সৃষ্টি স্পষ্টভাবেই সৃষ্টিকর্তার শক্তিকে প্রতিফলিত করে। (রোমীয় ১:২০) তাঁর বিশ্বস্ত দাসদেরকে সাহায্য করার জন্য যিহোবা এখনও তাঁর অসীম শক্তিকে ব্যবহার করতে ভালোবাসেন। (২ বংশা. ১৬:৯) কিন্তু, ঈশ্বর তাঁর বাক্য বাইবেলের মাধ্যমে আমাদের সঙ্গে আরও বিস্তারিতভাবে কথা বলেন। (পড়ুন, যিশাইয় ৩০:২১.) আরেক কথায়, বাইবেল সেই ‘ঈষৎ শব্দকারী ক্ষুদ্র স্বরের’ মতো হতে পারে, যদি আজকে আমরা এটিকে আমাদের নির্দেশক হতে দিই। বাইবেলের বাক্যের মাধ্যমে যিহোবা আমাদেরকে সংশোধন করেন, উৎসাহ দেন এবং তাঁর প্রেম সম্বন্ধে পুনরায় আশ্বস্ত করেন।
২৫ হোরেব পর্বতে যিহোবা এলিয়কে যে-সান্ত্বনা প্রদান করেছিলেন, তিনি কি তা গ্রহণ করেছিলেন? হ্যাঁ, করেছিলেন! শীঘ্র তিনি তার কাজ শুরু করেছিলেন। আবারও এমন একজন সাহসী ও বিশ্বস্ত ভাববাদী হয়ে উঠেছিলেন, যিনি মিথ্যা উপাসনার মধ্যে থাকা দুষ্টতার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। একইভাবে, আমরা যদি ঈশ্বরের অনুপ্রাণিত কথাগুলো অর্থাৎ ‘শাস্ত্রমূলক সান্ত্বনায়’ মনোযোগ দিই, তাহলে আমরা এলিয়ের বিশ্বাস অনুকরণ করতে পারব।—রোমীয় ১৫:৪.
a সেই ‘ঈষৎ শব্দকারী ক্ষুদ্র স্বরের’ উৎস হয়তো সেই একই স্বর্গদূত, যিনি ১ রাজাবলি ১৯:৯ পদে উল্লেখিত “সদাপ্রভুর বাক্য” প্রদান করেছিলেন। ১৫ পদ “সদাপ্রভু” সম্বন্ধে উল্লেখ করে, যাঁকে সেই স্বর্গদূত প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। আমরা হয়তো সেই স্বর্গদূতের বিষয়ে স্মরণ করতে পারি, যাঁকে যিহোবা প্রান্তরে ইস্রায়েলীয়দেরকে নির্দেশনা দেওয়ার জন্য ব্যবহার করেছিলেন এবং যাঁর বিষয়ে ঈশ্বর বলেছিলেন: “তাঁহার অন্তরে আমার নাম রহিয়াছে।” (যাত্রা. ২৩:২১) অবশ্য, এই বিষয়ে আমরা একেবারে নিশ্চিত করে বলতে পারি না, তবে এটা লক্ষণীয় যে, তাঁর মনুষ্যপূর্ব অস্তিত্বে যিশু যিহোবার দাসদের জন্য “বাক্য” অর্থাৎ বিশেষ মুখপাত্র হিসেবে সেবা করেছিলেন।—যোহন ১:১.