জীবন ও পরিচর্যা সভার জন্য অধ্যয়ন পুস্তিকা-র রেফারেন্স
নভেম্বর ৭-১৩
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | ২ রাজাবলি ৫-৬
“তাদের চেয়ে আমাদের সঙ্গে যারা রয়েছে, তাদের সংখ্যা আরও বেশি”
বাইবেল থেকে শেখো ৫২ অনু. ১-২, ইংরেজি
ইলীশায়
সিরিয়ার রাজা বিন্হদদ বার বার ইজরায়েলকে আক্রমণ করেন। কিন্তু, ভাববাদী ইলীশায় প্রতি বারই ইজরায়েলের রাজাকে সাবধান করে দিতেন আর তাই রাজা রক্ষা পেতেন। এই কারণে বিন্হদদ ইলীশায়কে ধরে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। বিন্হদদ জানতে পারেন, ইলীশায় দোথন নগরে আছেন আর তাই তিনি তাকে ধরে আনার জন্য সিরিয়ার সেনাবাহিনীকে সেখানে পাঠান।
সিরিয়ার সেনাবাহিনী রাতের বেলায় দোথনে আসে। পরের দিন সকালে, ইলীশায়ের পরিচারক বাইরে যান এবং দেখেন যে, এক বিশাল সেনাবাহিনী নগরটা ঘিরে ফেলেছে। তিনি ভয়ে চিৎকার করে বলেন, “প্রভু, প্রভু, এবার আমরা কী করব?” ইলীশায় তাকে বলেন, “তাদের সঙ্গে যারা রয়েছে, তাদের চেয়ে আমাদের সঙ্গে যারা রয়েছে, তাদের সংখ্যা আরও বেশি।” সেই সময় যিহোবা ইলীশায়ের পরিচারকের চোখ খুলে দেন আর তিনি দেখতে পান, নগরের চারিদিকের পার্বত্য এলাকা আগুনের মতো দেখতে ঘোড়া ও যুদ্ধরথে পূর্ণ।
ইলীশায় অগ্নিময় রথ দেখেছিলেন—আপনিও কি দেখেন?
দোথনে শত্রুদের দ্বারা পরিবেষ্টিত হওয়া সত্ত্বেও ইলীশায় শান্ত ছিলেন। কেন? কারণ তিনি যিহোবার ওপর দৃঢ়বিশ্বাস গড়ে তুলেছিলেন। আমাদেরও এই রকম বিশ্বাসের প্রয়োজন। তাই, আসুন আমরা ঈশ্বরের পবিত্র আত্মার জন্য প্রার্থনা করি, যাতে আমরা বিশ্বাস এবং আত্মার ফলের অন্যান্য দিক প্রদর্শন করতে পারি।—লূক ১১:১৩; গালা. ৫:২২, ২৩.
অন্তর্দৃষ্টি-১ ৩৪৩ অনু. ১, ইংরেজি
অন্ধত্ব
পুরো সেনাবাহিনীকে যদি সত্যিকার অর্থে অন্ধ করে দেওয়া হত, তা হলে তাদের সবাইকে হাতড়ে হাতড়ে চলতে হত। তাই, আমরা বলতে পারি, তারা সত্যিকার অর্থে অন্ধ হয়ে যায়নি বরং তাদের মনকে অন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। মনোবিদ্যার একটা বই মনের অন্ধত্ব সম্বন্ধে বলে, ‘এমন এক অন্ধত্ব রয়েছে, যা চোখকে নয় বরং বোঝার ক্ষমতাকে নষ্ট করে দেয়। যে-ব্যক্তির মন অন্ধ হয়ে যায়, তিনি যা দেখেন, সেটার অর্থ বুঝতে পারেন না। তিনি যা দেখেন এবং যা চিন্তা করেন, সেগুলো পুরোপুরি আলাদা হয়।’
অমূল্য রত্ন
দ্বিতীয় রাজাবলি বইয়ের প্রধান বিষয়গুলো
৫:১৫, ১৬—ইলীশায় কেন নামানের উপহার গ্রহণ করেননি? ইলীশায় উপহারটা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন কারণ তিনি উপলব্ধি করেছিলেন যে, নামানের আরোগ্য লাভ সম্বন্ধীয় অলৌকিক কাজটা যিহোবার শক্তিতে সম্পাদিত হয়েছিল, তার নিজের শক্তিতে নয়। তার ঈশ্বর নিযুক্ত পদমর্যাদা থেকে লাভবান হওয়ার কথা তিনি চিন্তাই করতে পারেন না। আজকে সত্য উপাসকরা যিহোবার সেবা থেকে ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হওয়ার চেষ্টা করে না। তারা যিশুর এই উপদেশে মনোযোগ দেয়: “তোমরা বিনামূল্যে পাইয়াছ, বিনামূল্যেই দান করিও।”—মথি ১০:৮.
নভেম্বর ১৪-২০
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | ২ রাজাবলি ৭-৮
“যিহোবা অসম্ভব বিষয়কে সম্ভব করেছিলেন”
অন্তর্দৃষ্টি-১ ৭১৬-৭১৭, ইংরেজি
ইলীশায়
সিরিয়ার রাজা শমরিয়া অবরোধ করার কারণে নগরে দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়ে যায় যে, একজন মহিলা তার নিজের ছেলেকে সেদ্ধ করে খান। এই সমস্ত কিছু দেখে আহাবের ছেলে রাজা যিহোরাম ইলীশায়কে হত্যা করবেন বলে ঠিক করেন। তিনি যখন তার একজন কর্মকর্তাকে নিয়ে ইলীশায়ের বাড়িতে আসেন, তখন ইলীশায় তাকে এই নিশ্চয়তা দেন যে, পরের দিন প্রচুর খাবার পাওয়া যাবে। রাজার কর্মকর্তা ইলীশায়ের কথা বিশ্বাস করেননি। এই কারণে ইলীশায় বলেছিলেন: “কাল এই সমস্ত কিছু তুমি নিজের চোখে দেখবে ঠিকই, কিন্তু খেতে পারবে না।”
ঠিক তা-ই ঘটে। যিহোবা সিরিয়ার সেনাবাহিনীকে আতঙ্কিত করে দেন আর তারা তাদের শিবির ছেড়ে পালিয়ে যায়। তারা সমস্ত কিছু, এমনকী তাদের মজুত করা খাবারও রেখে চলে যায়। রাজা যখন এই বিষয়ে জানতে পারেন, তখন তিনি তার কর্মকর্তাকে শমরিয়ার দরজা পাহারা দেওয়ার আদেশ দেন। কিন্তু, ক্ষুধার্ত ইজরায়েলীয়েরা তাড়াহুড়ো করে সিরিয়ার শিবিরে গিয়ে সেখানে লুটপাট করে। আর সেই কর্মকর্তা তাদের পায়ের তলায় চাপা পড়ে মারা যান। ইলীশায়ের কথা অনুযায়ী সেই কর্মকর্তা নিজের চোখে খাবার দেখতে পেয়েছিলেন ঠিকই, কিন্তু তা খেতে পারেননি।
অমূল্য রত্ন
অন্তর্দৃষ্টি-২ ১৯৫ অনু. ৭-৮, ইংরেজি
প্রদীপ
দায়ূদ যখন প্রমাণ দিয়েছিলেন যে, তিনি একজন বিজ্ঞ ও ভালো রাজা, তখন যিহোবা তাকে “ইজরায়েলের প্রদীপ” বলেছিলেন। (২শমূ ২১:১৭, NW) যিহোবা দায়ূদের সঙ্গে একটা রাজ্যের বিষয়ে চুক্তি করেছিলেন এবং তাকে বলেছিলেন: “তোমার সিংহাসন চিরকাল দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত থাকবে।” অন্য কথায় বললে, যিহোবা দায়ূদের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, ‘ইজরায়েলের প্রদীপ নিভে যাবে না।’ (২শমূ ৭:১১-১৬, NW) এই প্রতিজ্ঞা অনুযায়ী দায়ূদের ছেলে শলোমনের কাছ থেকে আসা রাজপরিবারের “প্রদীপ” কখনো নিভে না গিয়ে চিরকাল ধরে জ্বলেছিল।—১রাজা ১১:৩৬; ১৫:৪; ২রাজা ৮:১৯; ২বংশা ২১:৭.
নভেম্বর ২১-২৭
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | ২ রাজাবলি ৯-১০
“তিনি সাহস, দৃঢ়তা ও উদ্যোগের সঙ্গে কাজ করেছিলেন”
যেহূ উদ্যোগের সঙ্গে সত্য উপাসনাকে সমর্থন করেন
যেহূ এমন এক সময়ে একটা কার্যভার পেয়েছিলেন, যখন ইস্রায়েল জাতি এক খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে ছিল। দেশের ওপর আহাবের বিধবা স্ত্রী এবং শাসনরত রাজা যোরামের মা ঈষেবলের মন্দ প্রভাব ছিল। তিনি যিহোবার উপাসনাকে উচ্চীকৃত করার পরিবর্তে বরং বাল উপাসনাকে উচ্চীকৃত করেছিলেন, ঈশ্বরের ভাববাদীদের বধ করেছিলেন এবং লোকেদেরকে তার “ব্যভিচার” এবং “মায়াবিত্ব” দ্বারা কলুষিত করেছিলেন। (২ রাজা. ৯:২২; ১ রাজা. ১৮:৪, ১৩) যিহোবা যোরাম ও ঈষেবলসহ আহাবের পুরো পরিবারকে ধ্বংস করে দেওয়ার আদেশ জারি করেছিলেন। যেহূকে সেই কাজে নেতৃত্ব দিতে হয়েছিল।
প্রহরীদুর্গ ১১ ১১/১৫ ৪ অনু. ২-৩
যেহূ উদ্যোগের সঙ্গে সত্য উপাসনাকে সমর্থন করেন
যেহূ, তার কাছে পাঠানো দুজন বার্তাবাহকের কাছে কোনো কিছু না বলেই রাজা যোরাম এবং তার মিত্র যিহূদা-রাজ অহসিয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন, যারা তাদের নিজ নিজ রথে ছিল। যোরাম যখন এই প্রশ্ন করেছিলেন যে, “যেহূ, মঙ্গল ত?” তখন তাকে রাগান্বিতভাবে এই উত্তর দেওয়া হয়েছিল: “যে পর্য্যন্ত তোমার মাতা ঈষেবলের এত ব্যভিচার ও মায়াবিত্ব থাকে, সে পর্য্যন্ত মঙ্গল কোথায়?” এই উত্তরে ভীত হয়ে যোরাম পালানোর জন্য উদ্যত হন। কিন্তু, তার তুলনায় যেহূ আরও দ্রুত রথ চালাতেন! একটা ধনুক নিয়ে তিনি যোরামের হৃৎপিণ্ডের মধ্যে একটা তির নিক্ষেপ করেন এবং রাজা নিজের রথের মধ্যে পড়ে মারা যান। যদিও অহসিয় কোনোরকমে পালাতে পেরেছিলেন কিন্তু পরে যেহূ তার পিছু ধাওয়া করে তাকেও হত্যা করেছিলেন।—২ রাজা. ৯:২২-২৪, ২৭.
আহাবের পরিবারের পরবর্তী যে-সদস্যকে হত্যা করতে হবে, তিনি হলেন দুষ্ট রানি ঈষেবল। উপযুক্তভাবেই যেহূ তাকে ‘শাপগ্রস্তা’ বলে উল্লেখ করেছিলেন। যেহূ যখন রথে করে যিষ্রিয়েলে আসেন, তখন তিনি তাকে রাজপ্রাসাদের জানালা দিয়ে নীচে তাকিয়ে থাকতে দেখেন। অনর্থক কথা বলে সময় নষ্ট না করে যেহূ নপুংসকদেরকে আজ্ঞা দেন, যেন তারা ঈষেবলকে জানালা থেকে ধাক্কা দিয়ে নীচে ফেলে দেয়। তা করার পর, যেহূ তার ঘোড়া দিয়ে ঈষেবলকে পদতলে দলিত করেন, যিনি সমস্ত ইস্রায়েলকে কলুষিত করেছিলেন। এরপর, যেহূ দুষ্ট আহাবের পরিবারের আরও অনেক সদস্যকে হত্যা করার জন্য অগ্রসর হন।—২ রাজা. ৯:৩০-৩৪; ১০:১-১৪.
প্রহরীদুর্গ ১১ ১১/১৫ ৫ অনু. ৩-৪
যেহূ উদ্যোগের সঙ্গে সত্য উপাসনাকে সমর্থন করেন
এটা ঠিক যে, যেহূ অনেক রক্তপাত ঘটিয়েছিলেন। তা সত্ত্বেও, শাস্ত্র তাকে একজন সাহসী ব্যক্তি হিসেবে তুলে ধরে, যিনি ইস্রায়েলকে ঈষেবল এবং তার পরিবারের পীড়নকর শাসন থেকে মুক্ত করেছিলেন। ইস্রায়েলের কোনো নেতা যদি এইরকম কাজে সফল হতে চাইতেন, তাহলে তাকে একজন সাহসী, দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ, উদ্যোগী ব্যক্তি হতে হতো। “এটা অনেক কঠিন কাজ ছিল এবং এটা অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে করা হয়েছিল,” একটা বাইবেল অভিধান মন্তব্য করে। “কঠোরভাবে করা না হলে সম্ভবত ইস্রায়েল থেকে বাল উপাসনা নির্মূল করার বিষয়টা ব্যর্থ হতো।”
নিঃসন্দেহে, আপনি লক্ষ করতে পারেন যে, বর্তমানে খ্রিস্টানরা যে-পরিস্থিতিগুলোর মুখোমুখি হয়, সেগুলোর জন্য তাদের যেহূর মতো কিছু গুণাবলি প্রকাশ করার প্রয়োজন। উদাহরণস্বরূপ, সেই সময় আমাদের কেমন প্রতিক্রিয়া দেখানো উচিত, যখন আমরা এমন কার্যকলাপে রত হওয়ার জন্য প্রলোভিত হই, যেগুলোকে যিহোবা নিন্দা করেন? সেটা প্রত্যাখ্যান করার ব্যাপারে আমাদের তৎপর, সাহসী এবং উদ্যোগী হওয়া উচিত। ঈশ্বরীয় ভক্তির বিষয়টা আসলে আমাদের যিহোবার প্রতি উদ্যোগী হতে হবে।
অমূল্য রত্ন
প্রহরীদুর্গ ১১ ১১/১৫ ৫ অনু. ৬-৭
যেহূ উদ্যোগের সঙ্গে সত্য উপাসনাকে সমর্থন করেন
যেহূ হয়তো এইরকমটা মনে করেছিলেন যে, যিহূদা থেকে ইস্রায়েল রাজ্যকে স্বাধীন হওয়ার জন্য দুই রাজ্যকে ধর্মীয় দিক দিয়ে পৃথক হতে হবে। তাই, ইস্রায়েলের প্রাক্তন রাজাদের মতো বাছুর উপাসনাকে স্থায়ী করার মাধ্যমে তিনি তাদেরকে পৃথক রাখার পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। কিন্তু, এটা যিহোবার প্রতি বিশ্বাসের অভাবকে প্রকাশ করেছিল, যিনি তাকে রাজা করেছিলেন।
যিহোবা যেহূর প্রশংসা করেছিলেন, কারণ ‘ঈশ্বরের দৃষ্টিতে যাহা ন্যায্য, তাহা করিয়া তিনি ভাল কাজ করিয়াছেন।’ তবে, যেহূ “সর্ব্বান্তঃকরণে ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর ব্যবস্থানুসারে চলিবার জন্য সতর্ক হইলেন না।” (২ রাজা. ১০:৩০, ৩১) এর আগে যেহূ যেসমস্ত কাজ করেছিলেন, সেটা বিবেচনা করে আপনি হয়তো অবাক এবং দুঃখিত হতে পারেন। কিন্তু, এটা আমাদের জন্য একটা শিক্ষা প্রদান করে। আমরা কখনো যিহোবার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ককে হালকাভাবে নিতে পারি না। প্রতিদিন, তাঁর বাক্য অধ্যয়ন করার, সেটা নিয়ে ধ্যান করার এবং আমাদের স্বর্গীয় পিতার কাছে আন্তরিকভাবে প্রার্থনা করার মাধ্যমে ঈশ্বরের প্রতি আমাদের আনুগত্য গড়ে তোলার প্রচেষ্টা করতে হবে। তাই, আসুন আমরা ক্রমাগত সর্বান্তকরণে যিহোবার ব্যবস্থা অনুযায়ী চলার জন্য আমাদের যথাসাধ্য করি।—১ করি. ১০:১২.
নভেম্বর ২৮–ডিসেম্বর ৪
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | ২ রাজাবলি ১১-১২
“একজন উচ্চাকাঙ্ক্ষী, দুষ্ট মহিলাকে শাস্তি দেওয়া হয়”
বাইবেল থেকে শিখুন ৫৩ অনু. ১, ২, ইংরেজি
অথলিয়া
ঈষেবলের একজন মেয়ে ছিল আর তার নাম হল অথলিয়া। তার মায়ের মতো তিনিও খুব দুষ্ট ছিলেন। অথলিয়া যিহূদার একজন রাজাকে বিয়ে করেছিলেন। তার স্বামী যখন মারা যান, তখন তার ছেলে শাসন করতে শুরু করেন। কিন্তু, তার ছেলে যখন মারা যান, তখন অথলিয়া যিহূদায় শাসন করতে শুরু করেন। এরপর তিনি পুরো রাজপরিবারকে বিনষ্ট করে দিতে চান। তার পরিবর্তে শাসক হতে পারে এমন যে-কাউকে, এমনকী তার নিজের নাতিদেরও তিনি হত্যা করেন। প্রত্যেকে তাকে ভয় পেত।
মহাযাজক যিহোয়াদা এবং তার স্ত্রী যিহোশেবা জানত যে, অথলিয়া যা করছিলেন, তা খুবই মন্দ। তারা নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অথলিয়ার একজন নাতিকে, শিশু যিহোয়াশকে লুকিয়ে রাখেন। তারা তাকে মন্দিরের মধ্যে মানুষ করেন।
বাইবেল থেকে শিখুন ৫৩ অনু. ৩-৪, ইংরেজি
অথলিয়া
যিহোয়াশের বয়স যখন সাত বছর, তখন যিহোয়াদা সমস্ত অধ্যক্ষকে ও লেবীয়দের ডেকে বলেন: ‘মন্দিরের দরজাগুলো পাহারা দাও আর কাউকে ভিতরে ঢুকতে দিয়ো না।’ পরে যিহোয়াদা যিহোয়াশকে যিহূদার রাজা করে তার মাথায় মুকুট পরিয়ে দেন। যিহূদার লোকেরা চিৎকার করে বলতে থাকে: “রাজা দীর্ঘজীবী হোন!”
রানি অথলিয়া লোকদের চিৎকার শুনে দ্রুত মন্দিরে আসেন। তিনি যখন নতুন রাজাকে দেখেন, তখন চিৎকার করে বলেন: “এটা একটা ষড়যন্ত্র! ষড়যন্ত্র!” অধ্যক্ষেরা দুষ্ট রানিকে ধরে তাকে সেখান থেকে নিয়ে যায় এবং তাকে হত্যা করে। কিন্তু, জাতির উপর তিনি যে-মন্দ প্রভাব ফেলেছিলেন, সেই বিষয়ে কী বলা যায়?
অমূল্য রত্ন
দান যা ঈশ্বরের হৃদয়কে আনন্দিত করে
যিহোয়াশের বয়স যখন সাত বছর হয়, তখন মহাযাজক যিহোয়াদা অন্যায়ভাবে দখলকৃত রানিকে অসদুপায়ে অর্জিত সিংহাসন থেকে সরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে তার পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করার জন্য তৈরি হন। তিনি সেই বালককে গুপ্ত স্থান থেকে বের করেন এবং রাজ্যের ন্যায্য উত্তরাধিকারী হিসেবে তাকে মুকুট পরিয়ে দেন। দুষ্ট রানি অথলিয়াকে তখন রাজপ্রহরী দিয়ে মন্দিরের বাইরে টেনে নিয়ে যাওয়া হয় এবং তাকে হত্যা করা হয়, যা লোকেদের জন্য স্বস্তি এবং আনন্দ নিয়ে আসে। তাদের কাজের মাধ্যমে যিহোয়াদা এবং যিহোশেবা যিহূদা দেশে সত্য উপাসনা পুনর্স্থাপন করার ক্ষেত্রে বিরাট অবদান রাখে। কিন্তু, এর চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল যে, তারা দায়ূদের সেই রাজবংশ রক্ষার ক্ষেত্রে অবদান রেখেছিল, যা মশীহের দিকে পরিচালিত করবে।—২ রাজাবলি ১১:৪-২১.
ডিসেম্বর ৫-১১
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | ২ রাজাবলি ১৩-১৫
“পূর্ণ হৃদয় দিয়ে চেষ্টা করলে প্রচুর আশীর্বাদ পাওয়া যায়”
প্রহরীদুর্গ ১০ ৪/১৫ ২৬ অনু. ১১
আপনি কি পূর্ণরূপে খ্রিস্টকে অনুসরণ করছেন?
১১ ঈশ্বরের সেবা উদ্যোগের সঙ্গে করার গুরুত্ব স্পষ্টভাবে তুলে ধরার জন্য ইস্রায়েলের রাজা যোয়াশের জীবনের একটা ঘটনা লক্ষ করুন। অরামের কাছে পরাজিত হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে চিন্তিত হওয়ায় যোয়াশ ইলীশায়ের কাছে ক্রন্দন করেছিলেন। ভাববাদী তাকে জানালা দিয়ে অরামের দিকে একটা তির নিক্ষেপ করার আদেশ দিয়েছিলেন, যা সেই জাতির বিরুদ্ধে যিহোবার দ্বারা বিজয়ী হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিল। এই বিষয়টা নিশ্চয়ই রাজাকে শক্তি প্রদান করেছিল। এরপর ইলীশায় যোয়াশকে তিরগুলো নিয়ে সেগুলো দিয়ে ভূমিতে আঘাত করতে বলেছিলেন। যোয়াশ তিন বার ভূমিতে আঘাত করেছিলেন। এতে ইলীশায় রেগে গিয়েছিলেন, কারণ পাঁচ বা ছয় বার ভূমিতে আঘাত করা ‘অরামকে নিঃশেষ করণ পর্য্যন্ত আঘাত করিবার’ ইঙ্গিত দিত। এখন যোয়াশ মাত্র তিন বার বিজয় লাভ করবেন। যেহেতু তিনি উদ্যোগের অভাব দেখিয়ে কাজ করেছিলেন, তাই যোয়াশ সামান্য সাফল্য অর্জন করেছিলেন। (২ রাজা. ১৩:১৪-১৯) এই বিবরণ থেকে আমরা কোন শিক্ষা লাভ করতে পারি? যিহোবা আমাদের একমাত্র তখনই প্রচুররূপে আশীর্বাদ করবেন, যদি আমরা সর্বান্তঃকরণে এবং উদ্যোগের সঙ্গে তাঁর কাজ করি।
প্রহরীদুর্গ ১৩ ১১/১ ১১ অনু. ৫-৬, ইংরেজি
“যারা আন্তরিকভাবে তাঁর অন্বেষণ করে, তিনি তাদের পুরস্কার দেন”
যিহোবা কাকে পুরস্কার দেন? পৌল বলেন, “যারা আন্তরিকভাবে তাঁর অন্বেষণ করে।” এই কথাগুলো যে-গ্রিক শব্দ থেকে অনুবাদ করা হয়েছে, সেটা পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে যিহোবাকে উপাসনা করাকে বোঝায়। হ্যাঁ, যিহোবা সেই ব্যক্তিদের পুরস্কার দেন, যাদের বিশ্বাস রয়েছে এবং সেই বিশ্বাসের কারণে সমস্ত হৃদয় দিয়ে তাঁকে ভালোবাসে এবং উদ্যোগ সহকারে তাঁকে উপাসনা করে।—মথি ২২:৩৭.
কীভাবে যিহোবা তাঁর বিশ্বস্ত উপাসকদের পুরস্কার দেন? তিনি প্রতিজ্ঞা করেছেন, তিনি তাদের পরমদেশ পৃথিবীতে অনন্তজীবন দেবেন। (প্রকাশিত বাক্য ২১:৩, ৪) এই প্রতিজ্ঞা দেখায়, যিহোবা কতটা উদার এবং তিনি আমাদের কতটা ভালোবাসেন। তবে, যারা আন্তরিকভাবে যিহোবার অন্বেষণ করে, তারা এমনকী এখনই প্রচুর আশীর্বাদ পায়। তারা যখন বাইবেলের কথা অনুযায়ী চলে এবং পবিত্র শক্তির দ্বারা নিজেদের পরিচালিত হতে দেয়, তখন তারা এক পরিতৃপ্তিদায়ক জীবন উপভোগ করে।—গীতসংহিতা ১৪৪:১৫; মথি ৫:৩.
অমূল্য রত্ন
দ্বিতীয় রাজাবলি বইয়ের প্রধান বিষয়গুলো
১৩:২০, ২১—এই অলৌকিক কাজটা কি ধর্মীয় স্মৃতিচিহ্নগুলোর প্রতি সম্মান দেখানোকে সমর্থন করে? না, তা করে না। বাইবেল দেখায় না যে, ইলীশায়ের অস্থিগুলোকে কখনো সম্মান করা হয়েছে। ঈশ্বরের শক্তিতেই এই অলৌকিক কাজটা সম্ভবপর হয়েছিল, যেমনটা ইলীশায় বেঁচে থাকাকালীন তিনি যে-সমস্ত অলৌকিক কাজ সম্পাদন করেছিলেন, সেগুলোর ক্ষেত্রে হয়েছিল।
ডিসেম্বর ১২-১৮
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | ২ রাজাবলি ১৬-১৭
“যিহোবার ধৈর্যের সীমা আছে”
প্রহরীদুর্গ ০৫ ১১/১৫ ২৯ অনু. ১৬
“যিহোবার পথ সকল ন্যায়নিষ্ঠ”
১৬ শমরিয়া ছিল ইস্রায়েলের দশ বংশের রাজ্যের রাজধানী। কিন্তু, এখানে শমরিয়া নামটা সেই রাজ্যের পুরো এলাকার প্রতি প্রযোজ্য হতে পারে। (১ রাজাবলি ২১:১) অশূর-রাজ শল্মনেষর পঞ্চম, সা.কা.পূ. ৭৪২ সালে শমরিয়া শহর অবরোধ করেছিলেন। সা.কা.পূ. ৭৪০ সালে অবশেষে যখন শমরিয়া পতিত হয়েছিল, তখন এর অনেক উচ্চপদস্থ অধিবাসীকে মিসপতামিয়ায় ও মাদীয় দেশে নির্বাসিত করা হয়েছিল। শমরিয়াকে শল্মনেষর পঞ্চম, নাকি তার উত্তরসূরি সর্গোন দ্বিতীয় অধিকার করেছিলেন, তা অজানা রয়ে গিয়েছে। (২ রাজাবলি ১৭:১-৬, ২২, ২৩; ১৮:৯-১২) তবে, সর্গোনের বিবরণগুলো ২৭,২৯০ জন ইস্রায়েলীয়কে, ইউফ্রেটিস উপকূল হতে দূরবর্তী অঞ্চল ও মাদীয় দেশে নির্বাসিত করার বিষয়ে উল্লেখ করে।
“দয়া করে আমাদের ঘরে ফিরে আসতে দাও”
যিরমিয়ের কথাগুলোর পটভূমি বিবেচনা করুন। যিরমিয়ের দিনের অনেক অনেক দশক আগে, খ্রিস্টপূর্ব ৭৪০ সালে যিহোবা ইস্রায়েলের দশ বংশের রাজ্যকে অশূরীয়দের দ্বারা বন্দিত্বে নিয়ে যাওয়া অনুমোদন করেছিলেন। ঈশ্বর অনুশাসন হিসেবে এই দুর্দশাকে অনুমোদন করেছিলেন কারণ তাঁর লোকেরা গুরুতর পাপ করা শুরু করেছিল ও তাঁর ভাববাদীদের বার বার দেওয়া সতর্কবাণীগুলোকেও উপেক্ষা করেছিল। (২ রাজাবলি ১৭:৫-১৮) বন্দিত্বে থাকাকালীন তারা যখন তাদের ঈশ্বরের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল এবং তাদের নিজ দেশ থেকে দূরে ছিল, তখন সেই লোকেরা যে-দুঃখকষ্ট ভোগ করেছিল, সেটার ফলে তাদের মনোভাব কি পরিবর্তিত হয়েছিল? যিহোবা কি তাদের একেবারে ভুলে গিয়েছিলেন? তিনি কি তাদের ঘরে ফিরে আসাকে স্বাগত জানাবেন?
প্রহরীদুর্গ ০১ ১১/১ ১০ অনু. ১০
যিহোবা এক দীর্ঘসহিষ্ণু ঈশ্বর
১০ কিন্তু ইতিহাস দেখায় যে, ঈশ্বরের দীর্ঘসহিষ্ণুতার একটা সীমা আছে। সা.কা.পূ. ৭৪০ সালে, তিনি অশূরীয়দেরকে ইস্রায়েলের দশ বংশের রাজ্যকে ধ্বংস করার অনুমতি দিয়েছিলেন এবং এর অধিবাসীদেরকে নির্বাসনে যেতে দিয়েছিলেন। (২ রাজাবলি ১৭:৫, ৬) আর সা.কা.পূ. ৬০৭ সালে তিনি বাবিলনীয়দেরকে ইস্রায়েলের দুই বংশের রাজ্যকে আক্রমণ করতে এবং যিরূশালেম ও এর মন্দির ধ্বংস করতে দিয়েছিলেন।—২ বংশাবলি ৩৬:১৬-১৯
অমূল্য রত্ন
অন্তর্দৃষ্টি-২ ৮৪৭, ইংরেজি
শমরীয়
খ্রিস্টপূর্ব ৭৪০ সালে দশ বংশের রাজ্যকে পরাজিত করার পর প্রথম “শমরীয়েরা” শব্দটা ব্যবহার করা হয়। শুরুতে, এই শব্দটা দিয়ে কেবল উত্তর রাজ্যে বসবাসরত ইজরায়েলীয়দের বোঝানো হত। অশূরীয়েরা যে-বিদেশিদের সেখানে বাস করার জন্য নিয়ে এসেছিল, তাদের নয়। (২রাজা ১৭:২৯) পরে, ইজরায়েলীয়েরা যখন এই বিদেশিদের বিয়ে করতে শুরু করে, তখন “শমরীয়েরা” শব্দটা দিয়ে সেখানে বাস করত এমন প্রত্যেককে বোঝানো হত, হোক সে একজন ইজরায়েলীয় অথবা বিদেশি। তাই, সেই শব্দটার সঙ্গে জাতিগত অথবা রাজনৈতিক অর্থ যুক্ত ছিল। কিন্তু, পরে যিশুর দিনে তা পরিবর্তন হয়ে যায়। সেই সময় শমরীয় এলাকায় লোকেরা সাধারণত যে-ধর্মীয় দলের অন্তর্ভুক্ত ছিল, তাদের বোঝানোর জন্য “শমরীয়” শব্দটা ব্যবহার করা হত। সেই ধর্মীয় দলের লোকদের কিছু বিশ্বাস যিহুদি ধর্ম থেকে অনেক আলাদা ছিল।—যোহন ৪:৯.
ডিসেম্বর ১৯-২৫
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | ২ রাজাবলি ১৮-১৯
“কীভাবে আমাদের বিরোধীরা আমাদের দুর্বল করে দেওয়ার চেষ্টা করে?”
দ্বিতীয় রাজাবলি বইয়ের প্রধান বিষয়গুলো
১৮:১৯-২১, ২৫—হিষ্কিয় কি মিশরের সঙ্গে কোনো সন্ধি করেছিলেন? না। রব্শাকির অভিযোগ মিথ্যা ছিল, যেমনটা তিনি দাবি করেছিলেন যে, তিনি ‘সদাপ্রভুর সম্মতিতে’ এসেছেন। বিশ্বস্ত রাজা হিষ্কিয় পুরোপুরিভাবে যিহোবার ওপর নির্ভর করেছিলেন।
“ভয় করিও না, আমি তোমার সাহায্য করিব”
সন্দেহের বীজ বপন করার প্রচেষ্টায় রব্শাকি ধূর্ত যুক্তি ব্যবহার করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন: “[সদাপ্রভু] কি সেই নহেন, যাঁহার উচ্চস্থলী ও যজ্ঞবেদি সকল হিষ্কিয় দূর করিয়াছে? . . . সদাপ্রভুই আমাকে বলিয়াছেন, তুমি ঐ দেশে গিয়া উহা ধ্বংস কর।” (২ রাজা. ১৮:২২, ২৫) এভাবে রব্শাকি যুক্তি দেখিয়েছিলেন যে, যিহোবা তাঁর লোকেদের হয়ে যুদ্ধ করবেন না কারণ তিনি তাদের প্রতি অসন্তুষ্ট। কিন্তু, এটা সত্য ছিল না। হিষ্কিয় এবং সেই যিহুদিদের প্রতি যিহোবা সন্তুষ্ট ছিলেন, যারা পুনরায় সত্য উপাসনা শুরু করেছিল।—২ রাজা. ১৮:৩-৭.
প্রহরীদুর্গ ১৩ ১১/১৫ ১৯ অনু. ১৪
সাত জন পালরক্ষক, আট জন নরপতি—বর্তমানে আমাদের জন্য এগুলো যে-অর্থ রাখে
১৪ অশূরের রাজা যিরূশালেমের দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত লাখীশে শিবির স্থাপন করেছিলেন। সেখান থেকে তিনি তিন জন দূতের মাধ্যমে সেই নগরকে আত্মসমর্পণ করার আদেশ দিয়েছিলেন। তার মুখপাত্র, যার সরকারি উপাধি রব্শাকি, তিনি বিভিন্ন ধরনের কৌশলতা অবলম্বন করেছিলেন। ইব্রীয় ভাষায় তিনি লোকেদেরকে রাজার বিদ্রোহ করার এবং অশূরীয়দের বশীভূত হওয়ার জন্য উসকে দিয়েছিলেন, এই মিথ্যা প্রতিজ্ঞা করেছিলেন যে, তিনি তাদেরকে এমন এক দেশে নিয়ে যাবেন, যেখানে তারা এক আরামদায়ক জীবন উপভোগ করতে পারবে। (পড়ুন, ২ রাজাবলি ১৮:৩১, ৩২.) এরপর, রব্শাকি এই দাবি করেন যে, বিভিন্ন জাতির দেবতা যেমন তাদের উপাসকদের রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে, তেমনই যিহোবাও যিহুদিদেরকে অশূরের হাত থেকে উদ্ধার করতে ব্যর্থ হবেন। লোকেরা সেই অপপ্রচারের উত্তর না দিয়ে বিজ্ঞতার সঙ্গে কাজ করেছিল আর এই পন্থাটা আমাদের দিনের যিহোবার দাসেরাও প্রায়ই অনুসরণ করে থাকে।—পড়ুন, ২ রাজাবলি ১৮:৩৫, ৩৬.
বর্ষপুস্তক ৭৪ ১৭৭ অনু. ১, ইংরেজি
ভাগ ২—জার্মানি
এসএস (নাতসি পুলিশবাহিনী) প্রায়ই নোংরা থেকে নোংরা কৌশল ব্যবহার করে একজন ব্যক্তিকে দিয়ে এমন একটা ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করানোর চেষ্টা করত, যেখানে লেখা থাকত যে, সে তার বিশ্বাস পরিত্যাগ করেছে। আগ্রহের বিষয় হল, কেউ যদি সেই ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করত, তা হলে এসএস রক্ষীরা সেই ব্যক্তির বিরুদ্ধে গিয়ে তার সঙ্গে আগের চেয়ে আরও বেশি নিষ্ঠুর আচরণ করত। এটা যে সত্য, সেই বিষয়ে কার্ল ক্রিশ বলেন: “যিহোবার সাক্ষিদের মতো অন্য আর কেউই এসএস রক্ষীদের হাতে এতটা অত্যাচার ভোগ করেনি। এসএস মনে করত, যিহোবার সাক্ষিদের সঙ্গে নিষ্ঠুর আচরণ করলে তারা তাদের দিয়ে ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করাতে পারবে। আমাদের বার বার স্বাক্ষর করার জন্য বলা হত। যদিও কেউ কেউ স্বাক্ষর করেছিল, তবে ছাড়া পেতে পেতে তাদের মধ্যে অনেককেই এক বছরেরও বেশি সময় ধরে অপেক্ষা করতে হয়েছিল। সেই সময়টাতে এসএস সবার সামনে তাদের ভণ্ড ও ভীতু বলে অপমান করত। ক্যাম্প থেকে ছাড়া পাওয়ার অনুমতি দেওয়ার আগে এসএস তাদের জোর করে সাক্ষি ভাইদের সামনে ঘোরাত আর এভাবে তাদের আরও বেশি অপমান করত।”
অমূল্য রত্ন
অন্তর্দৃষ্টি-১ ১৫৫ অনু. ৪, ইংরেজি
প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কার
বাইবেলের বিবরণ জানায়, অশূরের রাজা সন্হেরীবের দুই ছেলে অদ্রম্মেলক ও শরেৎসর তাকে হত্যা করে। আর পরে তার জায়গায় তার আরেক ছেলে এসর-হদ্দোন রাজা হন। (২রাজা ১৯:৩৬, ৩৭) তবে, ব্যাবিলনে মাটি খুঁড়ে যে-পাথর পাওয়া গিয়েছে, সেখানে উল্লেখ করা আছে, সন্হেরীবকে তার দু-জন ছেলে নয়, বরং এক জন ছেলে হত্যা করেছেন। এ ছাড়া, খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দীর ব্যাবিলীয় একজন পুরোহিত বেরোসাস এবং খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দীর ব্যাবিলীয় রাজা নেবোনাইডাস একই কথা বলে। কিন্তু, সম্প্রতি মাটি খুঁড়ে আরেকটা পাথর পাওয়া গিয়েছে আর সেখানে লেখা আছে, এসর-হদ্দোন, যিনি সন্হেরীবের জায়গায় রাজা হয়েছিলেন, স্পষ্টভাবে বলেন যে, তার ভাইয়েরা (বহুবচন) বিদ্রোহ করে এবং তাদের বাবাকে হত্যা করে পালিয়ে যায়। এই বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে একজন ইতিহাসবিদ বলেন: “ব্যাবিলনে মাটি খুঁড়ে প্রথম বার যে-পাথর পাওয়া গিয়েছে, সেখানে যা লেখা ছিল এবং নেবোনাইডাস ও বেরোসাস যা বলেছে, তা ভুল ছিল; কেবল বাইবেলে যা বলা হয়েছে, তা পুরোপুরি সঠিক। এটা প্রমাণ করে, বাইবেলে ছোটো ছোটো বিষয়ে যে-তথ্য দেওয়া হয়েছে, সেগুলোও সঠিক। আর ব্যাবিলন থেকে যে-তথ্য পাওয়া গিয়েছে, বাইবেল সেটার চেয়ে আরও বেশি নির্ভরযোগ্য। তাই এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে, বাইবেলে লেখা ঘটনাগুলো যে-সময়কালে ঘটেছে, সেই সময়কাল সম্বন্ধে যদি কোনো তথ্য পাওয়া যায়, তা হলে সেটার উপর নির্ভর করার ব্যাপারে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।”
ডিসেম্বর ২৬–জানুয়ারি ১
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | ২ রাজাবলি ২০-২১
“আমাদের প্রার্থনা শুনে যিহোবা সাহায্য করে থাকেন”
যিশাইয়ের ভবিষ্যদ্বাণী-১ ৩৯৪ অনু. ২৩, ইংরেজি
একজন রাজা তার বিশ্বাসের কারণে পুরস্কার লাভ করেন
২৩ সন্হেরীব যখন প্রথম বার যিহূদার বিরুদ্ধে লড়াই করতে আসেন, তখন হিষ্কিয় খুবই অসুস্থ হয়ে পড়েন। যিশাইয় তাকে বলেন, তিনি মারা যাবেন। (যিশাইয় ৩৮:১) এই কথা শুনে রাজা একেবারে ভেঙে পড়েন। তার বয়স ৩৯ বছর আর তিনি কেবল নিজের বিষয়েই নয়, কিন্তু সেইসঙ্গে তার প্রজাদের ভবিষ্যতের বিষয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন। জেরুসালেম ও যিহূদাও অশূরীয়দের আক্রমণের মুখে রয়েছে। তিনি যদি মারা যান, তা হলে কে লড়াই করায় নেতৃত্ব দেবে? আর সেই সময় হিষ্কিয়ের কোনো ছেলেও ছিল না, যে তার পরে রাজ্যের দেখাশোনা করবে। এইজন্য হিষ্কিয় আন্তরিকভাবে যিহোবার কাছে প্রার্থনা করেন, যেন তিনি তার প্রতি করুণা দেখান।—যিশাইয় ৩৮:২, ৩.
একাগ্র হৃদয়ে যিহোবার সেবা করুন!
১৬ পরবর্তী সময়ে, হিষ্কিয় এত গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন যে, তার আর বাঁচার কোনো আশা ছিল না। সেই কঠিন সময়ে তিনি যিহোবাকে তার বিশ্বস্ততার কথা স্মরণ করার ও সেইসঙ্গে তাকে সাহায্য করার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। (পড়ুন, ২ রাজাবলি ২০:১-৩.) যিহোবা হিষ্কিয়ের প্রার্থনা শুনেছিলেন এবং তাকে সুস্থ করেছিলেন। তবে, বাইবেল থেকে আমরা জানতে পারি যে, বর্তমানে আমাদের অসুস্থতা থেকে আরোগ্য লাভ করার কিংবা আমাদের আয়ু বৃদ্ধি করার জন্য আমরা ঈশ্বরের কাছ থেকে কোনো অলৌকিক বিষয় আশা করতে পারি না। কিন্তু, হিষ্কিয়ের মতো আমরা সাহায্যের জন্য যিহোবার উপর নির্ভর করতে পারি। আমরা তাঁকে বলতে পারি: “হে সদাপ্রভু, বিনয় করি, তুমি এখন স্মরণ কর, আমি তোমার সাক্ষাতে বিশ্বস্তভাবে ও একাগ্রচিত্তে চলিয়াছি।” আপনি কি বিশ্বাস করেন যে, যিহোবা সবসময় আপনার যত্ন নেবেন আর তা এমনকী সেই সময়ও, যখন আপনি অসুস্থ থাকেন?—গীত. ৪১:৩.
ঐশিক হস্তক্ষেপ আমরা কী আশা করতে পারি?
সাধারণ কাল পূর্ব অষ্টম শতাব্দীতে যিহূদার ৩৯ বছর বয়স্ক রাজা হিষ্কিয় জানতে পেরেছিলেন যে, তার এক মারাত্মক অসুখ হয়েছে। হিষ্কিয় এই সংবাদে প্রচণ্ড মর্মাহত হয়ে তাকে সুস্থ করার জন্য প্রার্থনায় ঈশ্বরকে অনুরোধ করেছিলেন। ঈশ্বর তাঁর ভাববাদীর মাধ্যমে উত্তর দিয়েছিলেন: “আমি তোমার প্রার্থনা শুনিলাম; আমি তোমার নেত্রজল দেখিলাম; দেখ, আমি তোমার আয়ু পনর বৎসর বৃদ্ধি করিব।”—যিশাইয় ৩৮:১-৫.
অমূল্য রত্ন
অন্তর্দৃষ্টি-২ ২৪০ অনু. ১, ইংরেজি
মাপার যন্ত্র
একটা মাপার যন্ত্র হয়তো একটা দালান সঠিকভাবে নির্মাণ করার অথবা সেই দালান টিকে থাকবে কি না, তা পরীক্ষা করার জন্য ব্যবহার করা হত। যিহোবা ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে, তিনি ‘যে-মাপার দড়ি দিয়ে শমরিয়াকে মেপেছিলেন, সেই দড়ি দিয়েই’ জেরুসালেমকে মাপবেন ‘আর আহাবের পরিবারের উপর যে-মাপার যন্ত্র ব্যবহার করেছিলেন, সেই যন্ত্রই’ জেরুসালেমের উপর ব্যবহার করবেন। ঈশ্বর ইতিমধ্যেই শমরিয়া মেপেছিলেন আর দেখতে পেয়েছিলেন, রাজা আহাবের পরিবার খুবই মন্দ। এই কারণে তাদের বিনষ্ট করে দেওয়া হয়। একইভাবে, ঈশ্বর জেরুসালেম এবং এর শাসকদের বিচার করবেন এবং তাদের মন্দতা প্রকাশ করে দেবেন আর এরপর সেই নগর ধ্বংস করে দেবেন। (২রাজা ২১:১০-১৩, NW; ১০:১১) যিশাইয়ের মাধ্যমে যিহোবা বলেছিলেন, “আর আমি ন্যায়বিচারকে মানরজ্জু [“মাপার দড়ি,” NW], ও ধার্ম্মিকতাকে ওলোন সূত্র [“মাপার যন্ত্র,” NW] করিব।” যিহোবার ন্যায়বিচারের মানদণ্ড এটা প্রকাশ করে দেবে যে, আসলে কে ঈশ্বরের দাস এবং কে তাঁর দাস নয়। এই অনুসারে, একজন ব্যক্তিকে জীবিত রাখা হবে অথবা ধ্বংস করে দেওয়া হবে।—যিশা ২৮:১৪-১৯.