ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w০০ ১০/১ পৃষ্ঠা ১৩-১৭
  • অধ্যয়ন—আনন্দ ও ভাল ফল নিয়ে আসে

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • অধ্যয়ন—আনন্দ ও ভাল ফল নিয়ে আসে
  • ২০০০ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • অধ্যয়নকে আনন্দের বিষয় করে তোলা
  • ঈশ্বরের বাক্য পড়ে আনন্দ পাওয়া
  • অধ্যয়ন উপাসনার অংশ
  • ঈশ্বরের বাক্যের গভীরে খনন করা
  • চেষ্টা ও কার্যকারী হাতিয়ার দরকার
  • “আগ্রহপূর্ব্বক” সঠিক জ্ঞানে বৃদ্ধি লাভ করুন
    ২০০৮ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • রাজাদের জন্য দেওয়া আদর্শ অনুসরণ করুন
    ২০০২ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • ঈশ্বরের বাক্যের ব্যক্তিগত অধ্যয়ন উপভোগ করুন
    ২০০২ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • বাইবেল পড়া—উপকারী ও আনন্দদায়ক
    ২০০০ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
আরও দেখুন
২০০০ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w০০ ১০/১ পৃষ্ঠা ১৩-১৭

অধ্যয়ন—আনন্দ ও ভাল ফল নিয়ে আসে

“যদি . . . তাহার অনুসন্ধান কর; . . . ঈশ্বরবিষয়ক জ্ঞান প্রাপ্ত হইবে।”—হিতোপদেশ ২:৪, ৫.

১. অবসর সময়ে পড়ে আমরা কীভাবে আনন্দ পেতে পারি?

আজকে অনেকে শুধুই আনন্দ পাবার জন্য বইপত্র পড়ে থাকে। আমরা যা পড়ি তা যদি সত্যিই ভাল হয়, তবে তা মনে আনন্দ নিয়ে আসে। নিয়মিত বাইবেল পড়া ছাড়াও কিছু খ্রীষ্টানরা গীতসংহিতা, হিতোপদেশ ও সুসমাচারের বইগুলো বা অন্যান্য অংশ পড়ে আনন্দ পান। ওই বইগুলোর অপূর্ব ভাষা ও সুন্দর সুন্দর কথাগুলো পড়তে তাদের ভাল লাগে। আবার কেউ কেউ অবসর সময়ে যিহোবার সাক্ষিদের বর্ষপুস্তক (ইংরেজি) ও সচেতন থাক! পত্রিকা পড়ে থাকেন। এই পত্রিকায় যেসব জীবন কাহিনী ছাপা হয় কিংবা ইতিহাস, ভূগোল ও প্রকৃতির ওপর প্রবন্ধ থাকে, সেগুলো পড়ে তারা তাদের অবসর সময় কাটান।

২, ৩. (ক) কোন্‌ অর্থে বাইবেলের গভীর বিষয়কে কঠিন বা শক্ত খাবারের সঙ্গে তুলনা করা যায়? (খ) অধ্যয়ন করা বলতে কী বোঝায়?

২ অবসর সময়ে সাধারণত মনের আনন্দের জন্য পড়া হয় কিন্তু অধ্যয়নের জন্য মনকে তৈরি করা দরকার। ইংরেজ দার্শনিক ফ্রান্সিস বেকন লিখেছিলেন: “কিছু বই শুধুই চেখে দেখার জন্য, কিছু বইকে শুধু গিললেই চলে আর অল্প কিছু বই আছে যেগুলোকে ভালভাবে চিবোতে এবং হজম করতে হয়।” বাইবেল হচ্ছে সেইরকমের বই, যেটাকে চিবোতে এবং হজম করতে হয়। প্রেরিত পৌল লিখেছিলেন: “তাঁহার [খ্রীষ্টের, রাজা ও যাজক মল্কীষেদক যাঁকে প্রতিনিধিত্ব করেন] বিষয়ে আমাদের অনেক কথা আছে, তাহার অর্থ ব্যক্ত করা দুষ্কর, কারণ তোমরা শ্রবণে শিথিল হইয়াছ। . . . কঠিন খাদ্য সেই সিদ্ধবয়স্কদেরই জন্য, যাহাদের জ্ঞানেন্দ্রিয় সকল অভ্যাস প্রযুক্ত সদসৎ বিষয়ের বিচারণে পটু হইয়াছে।” (ইব্রীয় ৫:১১, ১৪) কঠিন বা শক্ত খাবার গেলার ও হজম করার আগে সেগুলোকে ভাল করে চিবোতে হয়। তেমনই বাইবেলের গভীর কোন বিষয় মনে গেঁথে নেওয়ার আগে সেই বিষয় নিয়ে অনেক চিন্তা করতে হয়।

৩ একটা ডিকশনারি “অধ্যয়ন” শব্দটাকে এভাবে বলে, “জ্ঞান অর্জনের জন্য বা কোন কিছু ভাল করে বোঝার জন্য পুরোপুরি মন দেওয়া, পড়া বা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা করা।” অতএব, অধ্যয়ন বলতে শুধু তাড়াহুড়ো করে পড়া বা পড়ে যাওয়ার সময় কয়েকটা শব্দের নিচে দাগ দেওয়াকেই বোঝায় না। অধ্যয়ন হল একধরনের কাজ, এর জন্য মনকে তৈরি করতে হয় এবং বোঝার ক্ষমতাকে কাজে লাগাতে হয়। অধ্যয়ন করতে চেষ্টার দরকার কিন্তু তার মানে এই নয় যে অধ্যয়ন করে কোন আনন্দ পাওয়া যায় না।

অধ্যয়নকে আনন্দের বিষয় করে তোলা

৪. গীতরচকের কথা অনুসারে, ঈশ্বরের বাক্য পড়া কীভাবে মনকে সতেজ করে ও ভাল ফল নিয়ে আসে?

৪ ঈশ্বরের বাক্য পড়লে ও অধ্যয়ন করলে মন সতেজ হয় ও অনেক শক্তি পাওয়া যায়। গীতরচক ঘোষণা করেছিলেন: “সদাপ্রভুর ব্যবস্থা সিদ্ধ, প্রাণের স্বাস্থ্যজনক; সদাপ্রভুর সাক্ষ্য বিশ্বসনীয়, অল্পবুদ্ধির জ্ঞানদায়ক। সদাপ্রভুর বিধি সকল যথার্থ, চিত্তের আনন্দবর্দ্ধক; সদাপ্রভুর আজ্ঞা নির্ম্মল, চক্ষুর দীপ্তিজনক।” (গীতসংহিতা ১৯:৭, ৮) যিহোবার ব্যবস্থা ও আজ্ঞাগুলো প্রাণকে সতেজ করে, আধ্যাত্মিক স্বাস্থ্যকে সবল করে, মনে শান্তি নিয়ে আসে এবং যিহোবার চমৎকার উদ্দেশ্যগুলোকে আমরা মনের চোখ দিয়ে স্পষ্ট দেখতে পাই। কত আনন্দই না তা দেয়!

৫. কী করলে অধ্যয়ন করে আমরা অনেক আনন্দ পাব?

৫ কোন কাজ করে ভাল ফল পেলে আমরা খুশিমনে সেই কাজ আবারও করতে চাই। তাই অধ্যয়নকে আনন্দদায়ক করে তোলার জন্য যে নতুন বিষয়গুলো আমরা শিখি সেগুলোকে শীঘ্রিই কাজে লাগানো উচিত। যাকোব লিখেছিলেন: “যে কেহ হেঁট হইয়া স্বাধীনতার সিদ্ধ ব্যবস্থায় দৃষ্টিপাত করে, ও তাহাতে নিবিষ্ট থাকে, ভুলিয়া যাইবার শ্রোতা না হইয়া কার্য্যকারী হয়, সেই আপন কার্য্যে ধন্য হইবে।” (যাকোব ১:২৫) আমরা যা শিখি তা যদি সঙ্গে সঙ্গে কাজ লাগাই, তাহলে তা অনেক পরিতৃপ্তি নিয়ে আসবে। প্রচারে গেলে বা স্টাডি করানোর সময় কেউ যদি আমাদের কোন প্রশ্ন করেন, তাহলে সেটার উত্তর দেওয়ার জন্য গবেষণা করেও আমরা অনেক আনন্দ পাব।

ঈশ্বরের বাক্য পড়ে আনন্দ পাওয়া

৬. গীতসংহিতা ১১৯ অধ্যায়ের লেখক কীভাবে দেখিয়েছিলেন যে তিনি যিহোবার বাক্যকে ভালবাসেন?

৬ গীতসংহিতা ১১৯ অধ্যায়টা সম্ভবত যুবক রাজা হিষ্কিয় লিখেছিলেন। যিহোবার বাক্যকে তিনি কত ভালবাসতেন, ওই অধ্যয়ে তিনি তা তুলে ধরেছেন। কবিতার ভাষায় তিনি বলেছিলেন: “আমি তোমার বিধিকলাপে হর্ষিত হইব [আনন্দ করব], তোমার বাক্য ভুলিয়া যাইব না। তোমার সাক্ষ্যকলাপ আমার হর্ষজনক [আনন্দজনক], . . . আমি তোমার আজ্ঞাসমূহে আমোদ করিব, সে সকল আমি ভালবাসি। আমার প্রতি তোমার করুণা বর্ত্তুক, যেন আমি বাঁচি; কেননা তোমার ব্যবস্থা আমার হর্ষজনক [আনন্দজনক]। সদাপ্রভু, আমি তোমার পরিত্রাণের আকাঙ্ক্ষা করিয়াছি, এবং তোমার ব্যবস্থা আমার হর্ষজনক [আনন্দজনক]।”—গীতসংহিতা ১১৯:১৬, ২৪, ৪৭, ৭৭, ১৭৪.

৭, ৮. (ক) একটা বই ঈশ্বরের বাক্যের জন্য “আনন্দ করব” কথাগুলোর মানে কী বলে? (খ) যিহোবার বাক্যের জন্য আমরা কীভাবে ভালবাসা দেখাতে পারি? (গ) যিহোবার ব্যবস্থা পড়ার আগে ইষ্রা কীভাবে নিজেকে তৈরি করেছিলেন?

৭ যে শব্দকে “আনন্দ করব” বলে অনুবাদ করা হয়েছে সেই সম্বন্ধে বলতে গিয়ে ইব্রীয় শাস্ত্রের ওপর একটা ডিকশনারি বলে: “১৬ পদে যে ক্রিয়াপদ ব্যবহার করা হয়েছে, তা আমোদ করা . . . এবং ধ্যান করার জন্য যে ক্রিয়াপদগুলো রয়েছে সেগুলোর মতোই। . . . বিষয়টা হল: আমোদ, ধ্যান, পরমানন্দ . . . এই শব্দগুলো জানায় যে ইয়াওয়ের বাক্য পড়ে পরমানন্দ পেতে হলে উদ্দেশ্য নিয়ে তাঁর বাক্য পড়তে হবে। আর এর অর্থ বোঝার সঙ্গে আমাদের আবেগও জড়িত রয়েছে।”a

৮ যিহোবার বাক্যকে আমাদের মন থেকে ভালবাসা দরকার আর মনই হল সমস্ত আবেগ-অনুভূতির কেন্দ্রস্থল। কোন একটা বিষয় আমাদেরকে সময় নিয়ে পড়তে হবে, যাতে আমরা তার থেকে আনন্দ পাই। বাইবেলের গভীর বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের ধ্যান করতে হবে ও সেগুলোকে মনে গেঁথে নিতে হবে। আর এর জন্য গভীরভাবে চিন্তা করা ও প্রার্থনা করা দরকার। ইষ্রার মতো আমাদেরও ঈশ্বরের বাক্য পড়ার ও অধ্যয়ন করার জন্য মনকে তৈরি করা দরকার। তাঁর সম্বন্ধে বলা হয়েছে: “সদাপ্রভুর ব্যবস্থা অনুশীলন [অধ্যয়ন] ও পালন করিতে, এবং ইস্রায়েলে বিধি ও শাসন শিক্ষা দিতে ইষ্রা আপন অন্তঃকরণ সুস্থির [মন তৈরি] করিয়াছিলেন।” (ইষ্রা ৭:১০) ইষ্রা মোট তিনটে কারণে তার মনকে তৈরি করেছিলেন যেমন: ঈশ্বরের বাক্য অধ্যয়ন করা, নিজের জীবনে তা কাজে লাগানো এবং অন্যদেরকে সেটা শিক্ষা দেওয়া। আমাদেরও ইষ্রার মতো করা উচিত।

অধ্যয়ন উপাসনার অংশ

৯, ১০. (ক) গীতরচক যিহোবার বাক্য নিয়ে কীভাবে চিন্তা করেছিলেন? (খ) ইব্রীয় ক্রিয়াপদ ‘চিন্তা করা’ বলতে কী বোঝায়? (গ) বাইবেল অধ্যয়নকে কেন “উপাসনার অংশ” বলে মনে করা জরুরি?

৯ গীতরচক বলেন যে তিনি যিহোবার ব্যবস্থা, আজ্ঞা ও সাক্ষ্যকলাপ নিয়ে চিন্তা করেছিলেন। তিনি এই বলে গান করেন: “আমি তোমার নিদেশমালা ধ্যান [চিন্তা] করিব, তোমার সকল পথের প্রতি দৃষ্টি রাখিব। আমি তোমার আজ্ঞা সকলের কাছে অঞ্জলি উঠাইব, সে সকল আমি ভালবাসি, আমি তোমার বিধিকলাপ ধ্যান [চিন্তা] করিব। আমি তোমার ব্যবস্থা কেমন ভালবাসি! তাহা সমস্ত দিন আমার ধ্যানের [চিন্তার] বিষয়। আমার সমস্ত গুরু অপেক্ষা আমি জ্ঞানবান, কেননা আমি তোমার সাক্ষ্যকলাপ ধ্যান [চিন্তা] করি।” (গীতসংহিতা ১১৯:১৫, ৪৮, ৯৭, ৯৯) যিহোবার বাক্য নিয়ে ‘চিন্তা করার’ মানে কী?

১০ যে ইব্রীয় ক্রিয়াপদকে ‘চিন্তা [করা]’ অনুবাদ করা হয়েছে তার মানে “ধ্যান করা বা কোন বিষয় নিয়ে গভীরভাবে ভাবা,” “মনে মনে কোন একটা বিষয় যাচাই করা।” “ঈশ্বরের বাক্য . . . এবং ঈশ্বরের কাজ নিয়ে নীরবে ভাবা।” (থিওলজিক্যাল ওয়ার্ডবুক অফ দি ওল্ড টেস্টামেন্ট) বিশেষ্য পদ “চিন্তা” বলতে ঈশ্বরের ব্যবস্থা নিয়ে “গীতরচকের ধ্যান” ও “অধ্যয়ন”-ও বোঝাতে পারে, যেটাকে “উপাসনার অংশ”-ও বলা হয়। ঈশ্বরের বাক্য অধ্যয়ন করাকে যখন আমরা আমাদের উপাসনার অংশ মনে করি তখন এর গুরুত্ব আরও বেড়ে যায়। তাই, প্রার্থনা করে এবং খুব মন দিয়ে অধ্যয়ন করা দরকার। অধ্যয়ন আমাদের উপাসনার একটা অংশ আর অধ্যয়ন করলে আমরা আরও শুদ্ধভাবে উপাসনা করতে পারব।

ঈশ্বরের বাক্যের গভীরে খনন করা

১১. যিহোবা কীভাবে তাঁর লোকেদের কাছে গভীর বিষয়গুলো প্রকাশ করেন?

১১ যিহোবার কাজ দেখে আশ্চর্য হয়ে গীতরচক গেয়েছিলেন: “সদাপ্রভু, তোমার কার্য্য সকল কেমন মহৎ। তোমার সঙ্কল্প সকল অতি গভীর।” (গীতসংহিতা ৯২:৫) আর প্রেরিত পৌল ‘ঈশ্বরের গভীর বিষয় সকলের’ অর্থাৎ যিহোবা তাঁর ‘আত্মার মাধ্যমে’ তাঁর লোকেদের কাছে যে গভীর বিষয়গুলো প্রকাশ করেন সেই বিষয়ে বলেছিলেন। এই পবিত্র আত্মাই এখন বিশ্বস্ত ও বুদ্ধিমান দাস শ্রেণীকে নির্দেশনা দিচ্ছে। (১ করিন্থীয় ২:১০; মথি ২৪:৪৫) দাস শ্রেণী নিরলস পরিশ্রম করে সকলের জন্য আধ্যাত্মিক খাবারের ব্যবস্থা করেন। তারা নতুন ব্যক্তিদের জন্য ‘দুগ্ধ’ এবং ‘সিদ্ধবয়স্কদের’ জন্য ‘কঠিন খাদ্যের’ ব্যবস্থা করেন।—ইব্রীয় ৫:১১-১৪.

১২. দাস শ্রেণী ‘ঈশ্বরের যে গভীর বিষয় সকল’ ব্যাখ্যা করেছেন তার মধ্যে থেকে একটা উদাহরণ বলুন।

১২ “ঈশ্বরের গভীর বিষয় সকল” বোঝার জন্য, প্রার্থনা করা ও সেগুলো নিয়ে চিন্তা করা দরকার। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, বিশ্বস্ত বুদ্ধিমান দাস শ্রেণী অনেক সুন্দর সুন্দর বিষয়বস্তু ছেপেছেন, যেখানে দেখানো হয়েছে যে যিহোবা একই সঙ্গে ন্যায়বিচারক ও করুণাময়। তবে করুণা দেখান বলে তিনি কখনও ন্যায়বিচার করা থেকে পিছপা হন না বরং করুণা হল, তাঁর ন্যায়বিচার ও প্রেমেরই একটা দিক। একজন পাপীকে বিচার করার সময় যিহোবা প্রথমে দেখেন যে তাঁর পুত্রের মুক্তির মূল্যের ভিত্তিতে তিনি তাকে করুণা দেখাতে পারেন কি না। কোন পাপী যদি অনুতাপ না করে পাপ করেই চলে, তাহলে ঈশ্বর তাকে আর করুণা দেখান না। তিনি তখন তাকে শাস্তি দেন। করুণা ও ন্যায়বিচার দুটোর বেলায়ই যিহোবা তাঁর নীতি বজায় রেখে কাজ করেন।b (রোমীয় ৩:২১-২৬) ‘আহা! ঈশ্বরের প্রজ্ঞা কেমন অগাধ!’—রোমীয় ১১:৩৩.

১৩. বাইবেলের সত্যের ‘সমষ্টির’ প্রতি আমাদের কীভাবে উপলব্ধি দেখানো উচিত?

১৩ যিহোবা তাঁর অনেক উদ্দেশ্য আমাদের জানান দেখে গীতরচকের মতো আমরাও চমৎকৃত হই। দায়ূদ লিখেছিলেন: “হে ঈশ্বর, আমার পক্ষে তোমার সঙ্কল্প [উদ্দেশ্য] সকল কেমন মূল্যবান। তাহার সমষ্টি কেমন অধিক! গণনা করিলে তাহা বালুকা অপেক্ষা বহুসংখ্যক হয়।” (গীতসংহিতা ১৩৯:১৭, ১৮) যিহোবা অনন্তকাল ধরে যে অগণিত বিষয় আমাদেরকে জানাবেন তার থেকে যদিও আজকে আমরা এক ক্ষুদ্র বিষয় সম্বন্ধে জানি, তারপরও আমাদের কাছে যে মূল্যবান সত্যের “সমষ্টি” প্রকাশ করা হয়েছে, তা আমরা যেন গভীরভাবে উপলব্ধি করি এবং ঈশ্বরের বাক্যের গভীর বিষয়গুলো খনন করে বোঝার চেষ্টা করি।—গীতসংহিতা ১১৯:১৬০.

চেষ্টা ও কার্যকারী হাতিয়ার দরকার

১৪. হিতোপদেশ ২:১-৬ পদ কীভাবে তুলে ধরে যে ঈশ্বরের বাক্য অধ্যয়ন করার জন্য চেষ্টা থাকা দরকার?

১৪ বাইবেলের গভীর বিষয়গুলো বোঝার জন্য চেষ্টার দরকার। হিতোপদেশ ২:১-৬ পদ মন দিয়ে পড়লে, তা আমরা ভাল করে বুঝতে পারব। লক্ষ্য করুন, জ্ঞানী রাজা শলোমন ঈশ্বরের জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও বুদ্ধি লাভের জন্য যে ক্রিয়াপদগুলো ব্যবহার করেছেন সেগুলো দেখায় যে এর জন্য অনেক চেষ্টার দরকার। তিনি লিখেছিলেন: “বৎস, তুমি যদি আমার কথা সকল গ্রহণ কর, যদি আমার আজ্ঞা সকল তোমার কাছে সঞ্চয় কর, যদি প্রজ্ঞার দিকে কর্ণপাত কর, যদি বুদ্ধিতে মনোনিবেশ কর; হাঁ, যদি সুবিবেচনাকে আহ্বান কর, যদি বুদ্ধির জন্য উচ্চৈঃস্বর কর; যদি রৌপ্যের ন্যায় তাহার অন্বেষণ কর, গুপ্ত ধনের ন্যায় তাহার অনুসন্ধান কর; তবে সদাপ্রভুর ভয় বুঝিতে পারিবে, ঈশ্বরবিষয়ক জ্ঞান প্রাপ্ত হইবে। কেননা সদাপ্রভুই প্রজ্ঞা দান করেন, তাঁহারই মুখ হইতে জ্ঞান ও বুদ্ধি নির্গত হয়।” (বাঁকা অক্ষরে মুদ্রণ আমাদের।) হ্যাঁ, অধ্যয়ন করে আনন্দ পেতে চাইলে গুপ্ত ধন খোঁজার মতো ঈশ্বরের বাক্যে খনন করা বা গবেষণা করা দরকার।

১৫. অধ্যয়ন করার জন্য যে একটা ভাল পদ্ধতি থাকা দরকার, তা বাইবেলের কোন্‌ উদাহরণ থেকে বোঝা যায়?

১৫ অধ্যয়ন করে আধ্যাত্মিক জ্ঞান বাড়াতে চাইলে অধ্যয়ন করার ভাল পদ্ধতিও দরকার। শলোমন লিখেছিলেন: “লৌহ ভোঁতা হইলে ও তাহাতে ধার না দিলে তাহা চালাইতে অধিক বল লাগে।” (উপদেশক ১০:১০) কোন কারিগর যদি ভোঁতা হাতিয়ার ব্যবহার করে অথবা সে যদি ঠিকভাবে সেটাকে ব্যবহার না করে, তাহলে তার সমস্ত শ্রমই জলে যাবে এবং তার কাজ নিচুমানের হবে। একইভাবে, অধ্যয়ন থেকে আমরা উপকার পাব কি না তা অনেকটা নির্ভর করে আমরা কোন্‌ পদ্ধতিতে অধ্যয়ন করি। ঐশিক পরিচর্যা বিদ্যালয় নির্দেশপুস্তক (ইংরেজি) এর ৭ অধ্যায়ে, কী করে আরও ভালভাবে অধ্যয়ন করা যায় সেই বিষয়ে কিছু পরামর্শ রয়েছে যেগুলো কাজে আসে।c

১৬. গভীর বিষয় অধ্যয়ন করার জন্য আমাদের কাজে আসে এমন কোন্‌ পরামর্শগুলো দেওয়া হয়েছে?

১৬ একজন কারিগর যখন কাজ শুরু করে তখন তার যে যে হাতিয়ার দরকার সেগুলো সে হাতের কাছে নিয়েই বসে। একইভাবে, আমরা যখন অধ্যয়ন করতে বসি তখন যে যে বইপত্রিকাগুলো আমাদের লাগতে পারে সেগুলো হাতের কাছে রাখা দরকার। অধ্যয়ন করা একটা কাজ এবং এর জন্য মনকে তৈরি করতে হয়, এই কথাটা মনে রেখে আমাদের সেই মতোই বসা উচিত। আমরা যদি অধ্যয়নে পুরোপুরি মন দিতে চাই, তাহলে বিছানায় শুয়ে বা ইজিচেয়ারে না বসে চেয়ার-টেবিলে বা ডেস্কের সামনে বসলে ভাল হয়। কিছুক্ষণ মন দিয়ে পড়ার পর আপনি হয়তো হাত-পা নাড়াতে পারেন অথবা মুক্ত বাতাসে কিছুক্ষণ হাঁটাহাটি করতে পারেন কারণ এর ফলে আপনি আরও মন দিয়ে অধ্যয়ন করতে পারবেন।

১৭, ১৮. অধ্যয়নে সাহায্য করার জন্য আপনার কাছে যে হাতিয়ারগুলো আছে সেগুলোকে কীভাবে ব্যবহার করা যায় তা বলুন।

১৭ অধ্যয়ন করার জন্য আমাদের কাছে অনেক হাতিয়ার আছে, যেগুলোর কোন তুলনা হয় না। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ারটা হল নতুন জগৎ অনুবাদ (ইংরেজি) বাইবেল, যা এখন পুরোটা বা আংশিকভাবে মোট ৩৭টা ভাষায় পাওয়া যাচ্ছে। নতুন জগৎ অনুবাদ এর স্ট্যান্ডার্ড সংস্করণে ক্রস রেফারেন্স এবং “বাইবেলের বইয়ের তালিকা” আছে, যেখানে বইগুলোর লেখকদের নাম, তারা কোথায় বসে লিখেছিলেন এবং কত সময় ধরে লিখেছিলেন, তা দেওয়া আছে। এছাড়াও এটাতে বাইবেলের বিভিন্ন শব্দের ইনডেক্স, পরিশিষ্ট এবং বিভিন্ন জায়গার মানচিত্র রয়েছে। কয়েকটা ভাষায় এই বাইবেল বড় আকারে রয়েছে, যেটা রেফারেন্স বাইবেল নামে পরিচিত। আর এই বড় আকারের বাইবেলে আগে বলা সমস্ত কিছু তো রয়েছেই সেইসঙ্গে এখানে ফুটনোট রয়েছে, যেগুলোকে সহজে বের করার জন্য বিভিন্ন চিহ্ন দেওয়া আছে। ঈশ্বরের বাক্যের গভীরে খনন করার জন্য আপনি কি এই বাইবেলের সাহায্য নেন?

১৮ অধ্যয়ন করার জন্য আরেকটা মূল্যবান হাতিয়ার হল, দুখণ্ডের বাইবেল বিশ্বকোষ, শাস্ত্রের প্রতি অন্তর্দৃষ্টি (ইংরেজি)। আপনি যে ভাষা বোঝেন, অধ্যয়ন করার সময় সেই ভাষার অন্তর্দৃষ্টি বইটা আপনার সঙ্গে রাখা উচিত। এই বইগুলো থেকে আপনি বাইবেলের প্রায় সব ঘটনা সম্বন্ধে বিস্তারিত জানতে পারবেন। একইভাবে ‘ঈশ্বর-নিশ্বসিত প্রত্যেক শাস্ত্রলিপি উপকারী’ (ইংরেজি) বইটাও অনেক সাহায্য করতে পারে। আপনি যখন বাইবেলের নতুন কোন বই পড়তে শুরু করবেন তখন ওই বইটা কোথায় বসে লেখা হয়েছিল বা এর ইতিহাস সম্বন্ধে জানার জন্য “প্রত্যেক শাস্ত্রলিপি” বইটা পড়লে ভাল হবে। এছাড়াও এই বইয়ে সংক্ষেপে বাইবেলের বইগুলোর মূল কথা এবং সেগুলো আমাদের কী উপকারে আসে, তা লেখা আছে। অনেক হাতিয়ারের মধ্যে একটা নতুন হাতিয়ার হল, কমপিউটার প্রোগ্রামে ওয়াচটাওয়ার লাইব্রেরি, যা এখন নয়টা ভাষায় পাওয়া যাচ্ছে।

১৯. (ক) বাইবেল অধ্যয়নের জন্য যিহোবা কেন আমাদেরকে ভাল ভাল হাতিয়ার দিয়েছেন? (খ) ঠিক মতো বাইবেল পড়া ও অধ্যয়নের জন্য কী দরকার?

১৯ “বিশ্বস্ত ও বুদ্ধিমান্‌ দাস” শ্রেণীর মাধ্যমে যিহোবা তাঁর লোকেদের এই হাতিয়ারগুলো দিয়েছেন, যাতে তারা এই পৃথিবীতে ‘ঈশ্বরবিষয়ক জ্ঞান অনুসন্ধান করতে ও প্রাপ্ত হতে পারেন।’ (হিতোপদেশ ২:৪, ৫) অধ্যয়ন করার ভাল অভ্যাস আমাদেরকে ঈশ্বরের বিষয়ে আরও ভাল করে জানতে ও তাঁর সঙ্গে এক কাছের সম্পর্ক গড়ে তুলতে সাহায্য করে। (গীতসংহিতা ৬৩:১-৮) হ্যাঁ, অধ্যয়ন মানে কাজ তবে এই কাজে আনন্দ পাওয়া যায় এবং তা ভাল ফল নিয়ে আসে। কিন্তু, এর জন্য সময়ের দরকার আর আপনি হয়তো মনে মনে ভাবছেন, ‘বাইবেল পড়ার ও ব্যক্তিগত অধ্যয়নের এত সময় কোথায়?’ শেষ প্রবন্ধে এই বিষয়েই আলোচনা করা হয়েছে।

[পাদটীকাগুলো]

a নিউ ইন্টারন্যাশনাল ডিকশনারি অফ ওল্ড টেস্টামেন্ট থিওলজি আ্যন্ড এক্সেজিসিস, খণ্ড ৪, পৃষ্ঠা ২০৫-৭.

b ১৯৯৮ সালের ১লা আগস্ট প্রহরীদুর্গ এর ১৩ পৃষ্ঠার ৭ অনুচ্ছেদ দেখুন। বাইবেল অধ্যয়ন করার সময় আপনি এই সংখ্যার দুটো অধ্যয়ন প্রবন্ধ ও সেইসঙ্গে ওয়াচটাওয়ার বাইবেল আ্যন্ড ট্র্যাক্ট সোসাইটির বাইবেল বিশ্বকোষ, শাস্ত্রের প্রতি অন্তর্দৃষ্টি (ইংরেজি) থেকে “ন্যায়বিচার,” “করুণা” এবং “ধার্মিকতা” বিষয়গুলোও দেখতে পারেন।

c ওয়াচটাওয়ার বাইবেল আ্যন্ড ট্র্যাক্ট সোসাইটি প্রকাশ করেছে। আপনার মাতৃভাষায় যদি এই বইটা না থাকে, তাহলে ১৯৯৩ সালের ১লা আগস্ট প্রহরীদুর্গ এর ২০-২৫ পৃষ্ঠা এবং ১৯৮৬ সালের ১৫ই মে প্রহরীদুর্গ (ইংরেজি) এর ১৯-২০ পৃষ্ঠায় অধ্যয়ন পদ্ধতি সম্বন্ধে ভাল পরামর্শ পাওয়া যাবে।

পুনরালোচনার প্রশ্নগুলো

• কীভাবে ব্যক্তিগত অধ্যয়ন আমাদেরকে সতেজ করতে ও ভাল ফল এনে দিতে পারে?

• গীতরচকের মতো কীভাবে আমরা যিহোবার বাক্যের জন্য ‘আনন্দিত’ হতে পারি ও তা নিয়ে ‘চিন্তা করতে’ পারি?

• হিতোপদেশ ২:১-৬ পদ কীভাবে দেখায় যে ঈশ্বরের বাক্য অধ্যয়ন করার জন্য চেষ্টার দরকার?

• অধ্যয়নের জন্য যিহোবা কী কী হাতিয়ারের ব্যবস্থা করেছেন?

[১৪ পৃষ্ঠার চিত্র]

মনে মনে চিন্তা করা ও প্রার্থনা আমাদেরকে ঈশ্বরের বাক্যের জন্য ভালবাসা গড়ে তুলতে সাহায্য করে

[১৭ পৃষ্ঠার চিত্রগুলো]

ঈশ্বরের বাক্যের গভীরে খনন করার জন্য আপনার কাছে যে হাতিয়ারগুলো আছে আপনি কি সেগুলো ব্যবহার করেন?

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৫)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার