ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w০০ ১/১৫ পৃষ্ঠা ২৩-২৬
  • যিহোবার আরও কাছে আসুন

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • যিহোবার আরও কাছে আসুন
  • ২০০০ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • দয়া দেখান এবং সত্যে চলুন
  • যিহোবার ওপর পুরোপুরি বিশ্বাস রাখতে শিখুন
  • যিহোবাকে আপনার সবচেয়ে ভালটা দিন
  • যিহোবার শাসন মেনে নিন
  • প্রজ্ঞা এবং বুদ্ধি অটলভাবে ধরে রাখুন
  • ভাল কাজ করুন
  • হিতোপদেশ বইয়ের প্রধান বিষয়গুলো
    ২০০৬ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • “সদাপ্রভুই প্রজ্ঞা দান করেন”
    ১৯৯৯ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • প্রজ্ঞা লাভ করুন এবং উপদেশ শুনুন
    ১৯৯৯ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • “তোমার পরিকল্পনা সফল হবে”
    ২০০৭ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
আরও দেখুন
২০০০ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w০০ ১/১৫ পৃষ্ঠা ২৩-২৬

যিহোবার আরও কাছে আসুন

শিষ্য যাকোব লিখেছিলেন “ঈশ্বরের নিকটবর্ত্তী হও, তাহাতে তিনিও তোমাদের নিকটবর্ত্তী হইবেন।” (যাকোব ৪:৮) গীতরচক দায়ূদ গেয়েছিলেন: “যারা যিহোবাকে ভয় করেন তারাই তাঁর কাছে আসেন।” (গীতসংহিতা ২৫:১৪, NW) এটা স্পষ্ট যে যিহোবা ঈশ্বর চান, তাঁর সঙ্গে আমাদের খুব কাছের এক সম্পর্ক থাকুক। কিন্তু, এটা ঠিক যে যারা ঈশ্বরের উপাসনা করেন ও তাঁর আইন মেনে চলেন তারা সবাই-ই তাঁর সঙ্গে তাদের খুব কাছের এক সম্পর্ক আছে বলে মনে করেন না।

আপনার জন্য কী বলা যায়? ঈশ্বরের সঙ্গে কি আপনার খুব কাছের সম্পর্ক আছে? কোন সন্দেহ নেই যে আপনি তাঁর কাছাকাছি আসতে চান। কিন্তু ঈশ্বরের আরও কাছে যাওয়ার জন্য আমরা কী করতে পারি? আমাদের জন্য এর অর্থই বা কী হবে? বাইবেলের হিতোপদেশ বইয়ের তৃতীয় অধ্যায় আমাদের এই প্রশ্নগুলোর উত্তর দেয়।

দয়া দেখান এবং সত্যে চলুন

প্রাচীন ইস্রায়েলের রাজা শলোমন এই কথাগুলো দিয়ে হিতোপদেশ বইয়ের তিন অধ্যায়টা শুরু করেন: “বৎস, তুমি আমার ব্যবস্থা ভুলিও না; তোমার চিত্ত আমার আজ্ঞা সকল পালন করুক। কারণ তদ্দ্বারা তুমি আয়ুর দীর্ঘতা, জীবনের বৎসর-বাহুল্য, এবং শান্তি, প্রাপ্ত হইবে।” (হিতোপদেশ ৩:১, ২) একজন পিতার মতো শলোমন এই উপদেশ দিয়েছিলেন। ঈশ্বরের অনুপ্রেরণায় তিনি এটা লিখেছিলেন, তাই এই উপদেশ আসলে আমাদের সবার জন্য যিহোবা ঈশ্বরের কাছ থেকেই এসেছে। যেখানে আমাদের বলা হয় যে আমরা যেন বাইবেলে দেওয়া ঈশ্বরের সমস্ত বাক্যকে মানি যার মানে হল তাঁর ব্যবস্থা, তাঁর শিক্ষা এবং তাঁর আজ্ঞাগুলো মেনে চলা। আমরা যদি তা করি, তাহলে আমরা ‘আয়ুর দীর্ঘতা, জীবনের বৎসর-বাহুল্য, এবং শান্তি, প্রাপ্ত হব।’ হ্যাঁ, এমনকি এখনই আমরা সুখে শান্তিতে জীবন কাটাতে পারব আর কোন অন্যায় কাজে জড়িয়ে পড়ব না যা প্রায়ই দুষ্ট লোকেদের অকাল মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়। এছাড়াও, এটা আমাদের ভবিষ্যতে শান্তিপূর্ণ নতুন জগতে চিরকাল বেঁচে থাকার আশা দেবে।—হিতোপদেশ ১:২৪-৩১; ২:২১, ২২.

এরপর শলোমন বলেন: “দয়া ও সত্য তোমাকে ত্যাগ না করুক; তুমি তদুভয় তোমার কণ্ঠদেশে বাঁধিয়া রাখ, তোমার হৃদয়-ফলকে লিখিয়া রাখ। তাহা করিলে অনুগ্রহ ও সুবুদ্ধি পাইবে, ঈশ্বরের ও মনুষ্যের দৃষ্টিতে পাইবে।”—হিতোপদেশ ৩:৩, ৪.

মূল ভাষায় “দয়া” শব্দের বদলে “একনিষ্ঠ ভালবাসা” শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে যার সঙ্গে বিশ্বস্ততা, একতা ও নিষ্ঠার মতো গুণগুলো জড়িয়ে আছে। আমরা কি মনে মনে ঠিক করেছি যে যা কিছুই হোক না কেন আমরা যিহোবার সঙ্গে থাকব? আমাদের ভাইবোনদের জন্যও আমরা কি দয়া দেখাই? যে কোন পরিস্থিতিতেই আমরা কি তাদের পাশে থাকার চেষ্টা করি? রোজ তাদের সঙ্গে মেলামেশা করার সময়, এমনকি দুঃসময়েও কি আমরা ‘আমাদের জিহ্বাগ্রে দয়ার ব্যবস্থা’ রাখি?—হিতোপদেশ ৩১:২৬.

যিহোবার দয়া থাকায় তিনি ‘ক্ষমা’ করার জন্য সবসময় তৈরি। (গীতসংহিতা ৮৬:৫) আমরা যদি কোন পাপ করি আর তারজন্য অনুতপ্ত হই ও ঠিক পথে চলতে শুরু করি, তাহলে আমরা নিশ্চিত হতে পারি যে যিহোবার কাছ থেকে “তাপশান্তির সময়” আসবে। (প্রেরিত ৩:২০) তাহলে আমাদেরও কি যিহোবার মতো হয়ে অন্যদের ভুল ক্ষমা করে দেওয়া উচিত নয়?—মথি ৬:১৪, ১৫.

যিহোবা হলেন “সত্যের ঈশ্বর” আর তাই যারা তাঁর কাছে আসতে চান তাদের কাছ থেকে তিনি আশা করেন যে তারা ‘সত্যে’ চলবে। (গীতসংহিতা ৩১:৫) ‘অলীক লোকেরা’ যারা তাদের স্বভাব লুকোতে চান তাদের মতো আমরা যদি দুরকম জীবনযাপন করি অর্থাৎ খ্রীষ্টান ভাইবোনদের সামনে একরকম এবং তারা না থাকলে আর একরকম, তাহলে আমরা কি আশা করতে পারি যে যিহোবা আমাদের বন্ধু হবেন? (গীতসংহিতা ২৬:৪) কিন্তু যিহোবার সামনে এইরকম করা কতই না বোকামির কাজ হবে কারণ যিহোবার “সাক্ষাতে কোন সৃষ্ট বস্তু অপ্রকাশিত নয়।”—ইব্রীয় ৪:১৩.

দয়া ও সত্যের মূল্য ‘আমাদের কণ্ঠদেশে বাঁধিয়া রাখা’ এক দামি হারের মতো কারণ সেগুলো আমাদের ‘ঈশ্বর ও মনুষ্যের দৃষ্টিতে অনুগ্রহ পেতে’ সাহায্য করে। এই গুণগুলো শুধু আমাদের ওপর ওপরই দেখানো উচিত নয় বরং সেগুলোকে ‘আমাদের হৃদয়-ফলকে’ লিখে রাখা দরকার ও আমাদের ব্যক্তিত্বের এক বৈশিষ্ট্য করে তোলা দরকার।

যিহোবার ওপর পুরোপুরি বিশ্বাস রাখতে শিখুন

জ্ঞানী রাজা বলেন: “তুমি সমস্ত চিত্তে সদাপ্রভুতে বিশ্বাস কর; তোমার নিজ বিবেচনায় নির্ভর করিও না; তোমার সমস্ত পথে তাঁহাকে স্বীকার কর; তাহাতে তিনি তোমার পথ সকল সরল করিবেন।”—হিতোপদেশ ৩:৫, ৬.

যিহোবা আমাদের পুরো বিশ্বাস পাওয়ার যোগ্য। সৃষ্টিকর্তা হওয়ায় তাঁর ‘শক্তি প্রবল’ এবং ‘অধিক সামর্থ্য’ আছে। (যিশাইয় ৪০:২৬, ২৯) তাঁর সমস্ত উদ্দেশ্য পূর্ণ করার সামর্থ্য তাঁর আছে আর তাঁর নামের অর্থই হল “তিনি অস্তিত্বে আনেন” আর এইজন্যই তাঁর ওপর আমাদের বিশ্বাস আরও বেড়ে যায় কারণ আমরা জানি যে তিনি তাঁর সমস্ত প্রতিজ্ঞা পূর্ণ করতে পারেন! এছাড়াও “মিথ্যাকথা বলা ঈশ্বরের অসাধ্য” এই বিষয়টা তাঁকে সত্যের মূর্ত প্রতীক করে তোলে। (ইব্রীয় ৬:১৮) তাঁর প্রধান গুণ হল প্রেম। (১ যোহন ৪:৮) তিনি “আপনার সমস্ত পথে ধর্ম্মশীল, আপনার সমস্ত কার্য্যে দয়াবান্‌।” (গীতসংহিতা ১৪৫:১৭) আমরা যদি ঈশ্বরের ওপর বিশ্বাস রাখতে না পারি, তাহলে কার ওপর আমরা বিশ্বাস রাখতে পারব? অবশ্য, যিহোবার ওপর বিশ্বাস গড়ে তুলতে হলে আমাদের প্রথমে তাঁকে ‘আস্বাদন করিয়া দেখিতে হইবে যে তিনি মঙ্গলময়।’ আমরা কীভাবে তাঁকে আস্বাদন করতে পারি? তাঁর বাক্য বাইবেল থেকে আমরা যা শিখছি তা আমাদের নিজেদের জীবনে কাজে লাগিয়ে আর সেটা আমাদের জন্য যে ভাল ফল নিয়ে আসে তা দেখে আমরা বুঝব যে যিহোবা কতখানি মঙ্গলময়।—গীতসংহিতা ৩৪:৮.

কীভাবে আমরা ‘আমাদের সমস্ত পথে যিহোবাকে স্বীকার করতে’ পারি? ঈশ্বরের অনুপ্রেরণায় গীতরচক বলেন: “আমি তোমার সমস্ত কর্ম্ম ধ্যানও করিব, তোমার ক্রিয়া সকল আলোচনা করিব।” (গীতসংহিতা ৭৭:১২) যেহেতু আমরা ঈশ্বরকে দেখতে পাই না তাই তাঁর কাছে আসতে হলে আমাদের তাঁর মহান কাজ এবং তিনি তাঁর লোকেদের সঙ্গে কীরকম ব্যবহার করেন তার ওপর ধ্যান করা জরুরি।

যিহোবাকে স্বীকার করার একটা মুখ্য উপায় হল প্রার্থনা। রাজা দায়ূদ “সমস্ত দিন” যিহোবাকে ডাকতেন। (গীতসংহিতা ৮৬:৩) দায়ূদ যখন প্রান্তরে প্রান্তরে পালিয়ে বেড়াতেন তখন প্রায়ই তিনি রাতের পর রাত প্রার্থনা করে কাটিয়ে দিতেন। (গীতসংহিতা ৬৩:৬, ৭) প্রেরিত পৌল পরামর্শ দিয়েছিলেন: “সর্ব্বসময়ে আত্মাতে প্রার্থনা কর।” (ইফিষীয় ৬:১৮) আমরা কতবার প্রার্থনা করি? মন খুলে যিহোবার সঙ্গে কথা বলতে কি আমাদের ভাল লাগে? যখন আমরা কোন মুশকিলে পড়ি তখন কি সাহায্যের জন্য আমরা তাঁকে ডাকি? গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আমরা কি তাঁর কাছ থেকে নির্দেশনা পাওয়ার জন্য প্রার্থনা করি? আমরা যখন অন্তর থেকে যিহোবার কাছে প্রার্থনা করি তখন তাঁর জন্য আমাদের ভালবাসা বাড়ে। আর আমরা নিশ্চিত হতে পারি যে তিনি আমাদের প্রার্থনা শুনবেন এবং ‘আমাদের পথ সকল সরল করিবেন।’

যিহোবা থাকতে ‘আমাদের নিজ বিবেচনায় নির্ভর করা’ অথবা জগতের বড় বড় জ্ঞানী লোকেদের ওপর নির্ভর করা কতই না বোকামি! “আপনার দৃষ্টিতে জ্ঞানবান হইও না” শলোমন বলেন। আর তিনি আমাদের উপদেশ দেন: “সদাপ্রভুকে ভয় কর, মন্দ হইতে দূরে যাও। ইহা তোমার নাভির স্বাস্থ্যস্বরূপ হইবে, তোমার অস্থির মজ্জাস্বরূপ হইবে।” (হিতোপদেশ ৩:৭, ৮) ঈশ্বরকে অসন্তুষ্ট করার ভয় থাকলে আমরা কোন কাজই না ভেবেচিন্তে ঝোঁকের মাথায় করে বসব না। আমরা আমাদের চিন্তাভাবনা এবং আবেগকে নিজেদের বশে রাখব। এইরকম সশ্রদ্ধ ভয় আমাদেরকে যা খারাপ তা করতে বাধা দেবে আর এর ফলে আমরা আধ্যাত্মিকভাবে উন্নতি করব আর আনন্দে থাকব।

যিহোবাকে আপনার সবচেয়ে ভালটা দিন

আর কোন্‌ উপায়ে আমরা যিহোবার কাছাকাছি আসতে পারি? রাজা নির্দেশ দিয়েছিলেন, “তুমি সদাপ্রভুর সম্মান কর আপনার ধনে, আর তোমার সমস্ত দ্রব্যের অগ্রিমাংশে।” (হিতোপদেশ ৩:৯) যিহোবাকে সম্মান করার মানে হল তাঁকে গভীর শ্রদ্ধা করা এবং তাঁর নাম লোকেদের কাছে প্রচার করে তাঁর প্রশংসা করা। যে দামি জিনিসগুলো দিয়ে আমরা যিহোবাকে সম্মান করতে পারি সেগুলো হল আমাদের সময়, প্রতিভা, শক্তি এবং আমাদের ধনসম্পদ। এগুলোই হল আমাদের অগ্রিমাংশ অর্থাৎ আমাদের সবচেয়ে ভাল কিছু। আমরা যেভাবে আমাদের ধনসম্পদ ব্যবহার করছি তাতে কি এটা দেখা যায় না যে আমরা ‘প্রথমে তাঁহার রাজ্য ও তাঁহার ধার্ম্মিকতার বিষয়ে চেষ্টা করার’ কথাই স্থির করেছি?—মথি ৬:৩৩.

আমাদের দামি জিনিসগুলো দিয়ে যিহোবাকে সম্মান করলে তার পুরস্কার আমরা পাব। “তাহাতে তোমার গোলাঘর সকল বহু শস্যে পূর্ণ হইবে,” শলোমন আশ্বাস দিয়েছিলেন, “তোমার কুণ্ডে নূতন দ্রাক্ষারস উথলিয়া পড়িবে।” (হিতোপদেশ ৩:১০) যদিও আধ্যাত্মিক উন্নতি করার মানে নয় যে আমাদের ধনসম্পদও অনেক বেড়ে যাবে কিন্তু আমরা যদি উদারভাবে আমাদের ধনসম্পদ যিহোবার সম্মানের জন্য ব্যবহার করি, তাহলে তা আমাদের জন্য অনেক আশীর্বাদ নিয়ে আসে। যিহোবার ইচ্ছা পালন করাই ছিল যীশুর বেঁচে থাকার “খাদ্য।” (যোহন ৪:৩৪) একইভাবে, আমরা যখন প্রচার এবং শিষ্য তৈরির কাজ করি যা যিহোবাকে মহিমা দেয়, তখন আমরা আধ্যাত্মিক দিক দিয়ে মজবুত আর পুষ্ট হয়ে উঠি। আমরা যদি সেই কাজ চালিয়েই যাই, তাহলে আমাদের আধ্যাত্মিক ভাণ্ডার সবসময় পূর্ণ থাকবে। আমাদের আনন্দ নতুন দ্রাক্ষারসের মতো উপচে পড়বে।

আমাদের প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় দৈহিক খাবারের জন্যও কি আমরা যিহোবার দিকে তাকাই না এবং তাঁর কাছে প্রার্থনা করি না? (মথি ৬:১১) এমনিতেই আমাদের যা কিছু আছে তার সবই আমাদের প্রেমময় স্বর্গীয় পিতাই আমাদের দিয়েছেন। যিহোবা আমাদের আশীর্বাদ করেন যেন আমরা আমাদের দামি জিনিসগুলো দিয়ে তাঁর প্রশংসা করতে পারি।—১ করিন্থীয় ৪:৭.

যিহোবার শাসন মেনে নিন

ইস্রায়েলের রাজা জানতেন যে যিহোবার কাছে আসতে চাইলে তাঁর শাসন মেনে নেওয়ার চেয়ে জরুরি আর কিছু হতে পারে না আর তাই তিনি আমাদের পরামর্শ দেন: “বৎস, সদাপ্রভুর শাসন তুচ্ছ করিও না, তাঁহার অনুযোগে ক্লান্ত হইও না; কেননা সদাপ্রভু যাহাকে প্রেম করেন, তাহাকেই শাস্তি প্রদান করেন, যেমন পিতা প্রিয় পুত্ত্রের প্রতি করেন।”—হিতোপদেশ ৩:১১, ১২.

কিন্তু, শাসন মেনে নেওয়া হয়তো আমাদের জন্য এতখানি সহজ হয় না। প্রেরিত পৌল লিখেছিলেন: “কোন শাসনই আপাততঃ আনন্দের বিষয় বোধ হয় না, কিন্তু দুঃখের বিষয় বোধ হয়; তথাপি তদ্দ্বারা যাহাদের অভ্যাস জন্মিয়াছে, তাহা পরে তাহাদিগকে ধার্ম্মিকতার শান্তিযুক্ত ফল প্রদান করে।” (ইব্রীয় ১২:১১) তিরস্কার এবং শাসন আমাদের যিহোবার আরও কাছাকাছি নিয়ে আসে তাই এটা খুবই জরুরি। যিহোবার কাছ থেকে পাওয়া শাসন হল আমাদের প্রতি তাঁর ভালবাসার প্রমাণ। আর এই শাসন যিহোবা আমাদের বাবামা, খ্রীষ্টীয় মণ্ডলী বা আমাদের ব্যক্তিগত অধ্যয়নের সময় বাইবেলের কোন পদের মাধ্যমে দিয়ে থাকেন আর এটাকে মেনে নেওয়া খুবই বুদ্ধিমানের কাজ।

প্রজ্ঞা এবং বুদ্ধি অটলভাবে ধরে রাখুন

এর পরে শলোমন যিহোবার কাছে আসার জন্য প্রজ্ঞা এবং বুদ্ধি যে কতটা জরুরি সে বিষয়ে বোঝান। তিনি বলেন: “ধন্য সেই ব্যক্তি যে প্রজ্ঞা পায়, সেই ব্যক্তি যে বুদ্ধি লাভ করে; কেননা রৌপ্যের বাণিজ্য অপেক্ষাও তাহার বাণিজ্য উত্তম, সুবর্ণ অপেক্ষাও প্রজ্ঞা-লাভ উত্তম। . . . যাহারা তাহাকে ধরিয়া রাখে, তাহাদের কাছে তাহা জীবনবৃক্ষ; যে কেহ তাহা গ্রহণ করে, সে ধন্য।”—হিতোপদেশ ৩:১৩-১৮.

যিহোবার অদ্ভুত সৃষ্টি কাজে যে প্রজ্ঞা এবং বুদ্ধি দেখা যায় তা মনে করিয়ে দিয়ে রাজা বলেন: “সদাপ্রভু প্রজ্ঞা দ্বারা পৃথিবীর মূল স্থাপন করিয়াছেন, বুদ্ধি দ্বারা আকাশমণ্ডল অটল করিয়াছেন; . . . বৎস, এ সকল তোমার দৃষ্টি-বহির্ভূত না হউক, তুমি সূক্ষ্ম বুদ্ধি ও পরিণামদর্শিতা রক্ষা কর। তাহাতে সে সকল তোমার প্রাণের জীবনস্বরূপ হইবে, তোমার কণ্ঠের শোভাস্বরূপ হইবে।”—হিতোপদেশ ৩:১৯-২২.

প্রজ্ঞা এবং বুদ্ধি হল ঈশ্বরের গুণাবলি। আমাদের শুধু এই গুণগুলো নিজেদের মধ্যে গড়ে তুললেই হবে না বরং সেইসঙ্গে আমাদের তা ধরে রাখতে হবে আর আমরা এটা করতে পারি অধ্যবসায়ের সঙ্গে বাইবেল অধ্যয়ন করাকে অবহেলা না করে এবং আমরা যা শিখছি তা কাজে লাগিয়ে। শলোমন বলে চলেন, “তখন তুমি নিজ পথে নির্ভয়ে গমন করিবে, তোমার পায়ে উছোট লাগিবে না।” তিনি আরও বলেন: “শয়নকালে তুমি ভয় করিবে না, তুমি শয়ন করিবে, তোমার নিদ্রা সুখদায়িনী হইবে।”—হিতোপদেশ ৩:২৩, ২৪.

হ্যাঁ, শয়তানের দুষ্ট জগতের ওপর চোরের মতো যে “আকস্মিক বিনাশ” আসবে তার জন্য অপেক্ষা করার সময় আমরা নির্ভয়ে চলতে পারি এবং নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারি। (১ থিষলনীকীয় ৫:২, ৩; ১ যোহন ৫:১৯) এমনকি মহাক্লেশ যা খুবই শীঘ্রি আসবে তার জন্যও আমরা এই আশ্বাস পেয়েছি: “আকস্মিক বিপদ হইতে ভীত হইও না, দুষ্টের বিনাশ আসিলে তাহা হইতে ভীত হইও না; কেননা সদাপ্রভু তোমার বিশ্বাসভূমি হইবেন, ফাঁদ হইতে তোমার চরণ রক্ষা করিবেন।”—হিতোপদেশ ৩:২৫, ২৬; মথি ২৪:২১.

ভাল কাজ করুন

শলোমন এই উপদেশও দিয়েছেন, “যাহাদের মঙ্গল করা উচিত, তাহাদের মঙ্গল করিতে অস্বীকার করিও না, যখন তাহা করিবার ক্ষমতা তোমার হাতে থাকে।” (হিতোপদেশ ৩:২৭) অন্যদের জন্য ভাল কিছু করা বলতে আমাদের টাকাপয়সা, ধনসম্পদ অন্যদের ভালর জন্য উদারভাবে কাজে লাগানোকে বোঝায় আর এর সঙ্গে আরও অনেক কিছু জড়িত। কিন্তু ঈশ্বরের কাছে আসার জন্য অন্যদের সাহায্য করাই কি সবচেয়ে ভাল কাজ নয়, যা এই ‘শেষকালে’ আমরা তাদের জন্য করতে পারি? (দানিয়েল ১২:৪) রাজ্যের প্রচার ও শিষ্য তৈরির কাজে উদ্যোগ দেখানোর সময় এখনই।—মথি ২৮:১৯, ২০.

জ্ঞানী রাজা কিছু অভ্যাসের কথাও বলেন যা আমাদের এড়িয়ে চলতে হবে, যেমন তিনি বলেন: “তোমার প্রতিবাসীকে বলিও না, ‘যাও, আবার আসিও, আমি কল্য দিব’, যখন দ্রব্য তোমার হস্তে থাকে। তোমার প্রতিবাসীর বিরুদ্ধে কুসঙ্কল্প করিও না, সে ত তোমার নিকটে নির্ভয়ে বাস করে। অকারণে কোন ব্যক্তির সহিত বিরোধ করিও না, যদি সে তোমার অপকার না করিয়া থাকে। উপদ্রবীর প্রতি ঈর্ষা করিও না, আর তাহার কোন পথ মনোনীত করিও না।”—হিতোপদেশ ৩:২৮-৩১.

এই পরামর্শ শলোমন কেন দিয়েছেন তার কারণ এখন তিনি বলেন: “কেননা খল সদাপ্রভুর ঘৃণার পাত্র; কিন্তু সরলগণের সহিত তাঁহার গূঢ় মন্ত্রণা। দুষ্টের গৃহে সদাপ্রভুর অভিশাপ থাকে, কিন্তু তিনি ধার্ম্মিকদের নিবাসকে আশীর্ব্বাদ করেন। নিশ্চয়ই তিনি নিন্দকদিগের নিন্দা করেন, কিন্তু নম্রদিগকে অনুগ্রহ প্রদান করেন। জ্ঞানবানেরা সম্মানের অধিকারী হইবে, কিন্তু অবজ্ঞাই হীনবুদ্ধিদের উন্নতি।”—হিতোপদেশ ৩:৩২-৩৫.

আমরা যদি ঈশ্বরের কাছে আসতে চাই, তাহলে আমাদের ছলনা এবং দুষ্ট সংকল্প করা উচিত নয়। (হিতোপদেশ ৬:১৬-১৯) আমরা যদি ঈশ্বরের দৃষ্টিতে যা ঠিক কেবল তাই-ই করি, তাহলেই তিনি আমাদের তাঁর অনুগ্রহ এবং আশীর্বাদ দেবেন। আর যখন অন্যেরা দেখে যে আমরা ঈশ্বরের প্রজ্ঞার সঙ্গে মিল রেখে কাজ করছি তখন তারা আমাদের অজান্তেই আমাদের সম্মান করে। তাই আসুন আমরা এই দুষ্ট এবং দৌরাত্ম্যে ভরা জগতে ছলনার পথে না চলি। বরং আমরা সঠিক কাজ করে চলি এবং ঈশ্বরের আরও কাছে আসি।

[২৫ পৃষ্ঠার চিত্রগুলো]

“তুমি সদাপ্রভুর সম্মান কর আপনার ধনে”

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৫)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার