ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w৯৯ ১১/১৫ পৃষ্ঠা ১৩-১৮
  • আপনার মহান সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করুন!

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • আপনার মহান সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করুন!
  • ১৯৯৯ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • প্রাচীনকালের কিছু ভাল উদাহরণ
  • এখনই যিহোবাকে স্মরণ করুন!
  • বৃদ্ধ বয়সের প্রভাবগুলো
  • যারা স্মরণ করেন তাদের ভবিষ্যৎ কী?
  • আপনার জীবনকে সর্বোত্তমভাবে ব্যবহার করুন
    ১৯৯৮ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • আপনি কি ঈশ্বরের প্রতি আপনার সমস্ত কর্তব্য পালন করছেন?
    ১৯৯৯ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • “তুমি যৌবনকালে আপন সৃষ্টিকর্ত্তাকে স্মরণ কর”
    আমাদের খ্রিস্টীয় জীবন ও পরিচর্যা—সভার জন্য অধ্যয়ন পুস্তিকা ২০১৬
  • দুঃসময় আসার আগে যিহোবাকে সেবা করা
    ২০১৪ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
আরও দেখুন
১৯৯৯ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w৯৯ ১১/১৫ পৃষ্ঠা ১৩-১৮

আপনার মহান সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করুন!

“তুমি . . . আপন সৃষ্টিকর্ত্তাকে স্মরণ কর, যেহেতু দুঃসময় আসিতেছে।”—উপদেশক ১২:১.

১. ঈশ্বরের কাছে উৎসর্গীকৃত যুবক-যুবতীদের কীভাবে তাদের যৌবন ও শক্তিকে কাজে লাগানো উচিত?

যিহোবা তাঁর দাসদের তাঁর ইচ্ছা পালন করার জন্য শক্তি দেন। (যিশাইয় ৪০:২৮-৩১) আর বয়স এতে বাধা হয়ে দাঁড়ায় না। কিন্তু ঈশ্বরের কাছে উৎসর্গীকৃত যুবক-যুবতীদের বিশেষ করে তাদের যৌবন ও শক্তিকে বুদ্ধির সঙ্গে কাজে লাগানো উচিত। তাই তারা প্রাচীন ইস্রায়েলের ‘উপদেশক,’ রাজা শলোমনের পরামর্শে মন দেয়। তিনি বলেছিলেন: “তুমি যৌবনকালে আপন সৃষ্টিকর্ত্তাকে স্মরণ কর, যেহেতু দুঃসময় আসিতেছে, এবং সেই বৎসর সকল সন্নিকট হইতেছে, যখন তুমি বলিবে, ইহাতে আমার প্রীতি নাই।”—উপদেশক ১:১; ১২:১.

২. উৎসর্গীকৃত খ্রীষ্টানদের ছেলেমেয়েদের কী করা উচিত?

২ যৌবনকালে মহান সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করার বিষয়ে শলোমনের এই পরামর্শ সবচেয়ে প্রথমে ইস্রায়েলের যুবক-যুবতীদের জন্য ছিল। তারা যিহোবার প্রতি উৎসর্গীকৃত একটা জাতিতে জন্মেছিল। কিন্তু, আজকের দিনে উৎসর্গীকৃত খ্রীষ্টানদের ছেলেমেয়েদের সম্বন্ধে কী বলা যায়? তাদেরও অবশ্যই তাদের মহান সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করা উচিত। যদি তারা তা করে, তবে তারা তাঁকে সম্মান দেখাবে ও নিজেরাও উপকার পাবে।—যিশাইয় ৪৮:১৭, ১৮.

প্রাচীনকালের কিছু ভাল উদাহরণ

৩. যোষেফ, শমূয়েল ও দায়ূদ কোন্‌ উদাহরণ রেখেছেন?

৩ বাইবেলে এমন অনেক যুবক-যুবতীদের কথা বলা আছে যারা তাদের মহান সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করে ভাল উদাহরণ রেখেছেন। যাকোবের ছেলে যোষেফ শিশুকাল থেকেই তার সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করেছিলেন। তাই পোটীফরের স্ত্রী যখন যোষেফকে তার সঙ্গে ব্যভিচার করার জন্য জোরাজুরি করেছিল, তখন তিনি দৃঢ়ভাবে তা প্রত্যাখ্যান করে বলেছিলেন: “আমি কিরূপে এই মহা দুষ্কর্ম করিতে ও ঈশ্বরের বিরুদ্ধে পাপ করিতে পারি?” (আদিপুস্তক ৩৯:৯) লেবীয় শমূয়েল শুধু ছেলেবেলাতেই নয় কিন্তু সারাজীবন ধরে তার সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করেছিলেন। (১ শমূয়েল ১:২২-২৮; ২:১৮; ৩:১-৫) বেথলেহেমের যুবক দায়ূদ যে তার সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করতেন তাতে কোন সন্দেহই নেই। ঈশ্বরের ওপর তার আস্থা সেই সময়ে দেখা গিয়েছিল যখন তিনি দৈত্যাকার পলেষ্টীয় গলিয়াতের মুখোমুখি হয়ে বলেছিলেন: “তুমি খড়্গ, বড়শা ও শল্য লইয়া আমার কাছে আসিতেছ, কিন্তু আমি বাহিনীগণের সদাপ্রভুর, ইস্রায়েলের সৈন্যগণের ঈশ্বরের নামে, তুমি যাঁহাকে টিট্‌কারি দিয়াছ তাঁহারই নামে, তোমার নিকটে আসিতেছি। অদ্য সদাপ্রভু তোমাকে আমার হস্তে সমর্পণ করিবেন; আর আমি তোমাকে আঘাত করিব, তোমার দেহ হইতে মুণ্ড তুলিয়া লইব, . . . তাহাতে ইস্রায়েলে এক ঈশ্বর আছেন, ইহা সমস্ত পৃথিবী জানিতে পারিবে। আর সদাপ্রভু খড়্গ ও বড়শা দ্বারা নিস্তার করেন না, ইহাও এই সমস্ত সমাজ জানিবে; কেননা এই যুদ্ধ সদাপ্রভুর, আর তিনি তোমাদিগকে আমাদের হস্তে সমর্পণ করিবেন।” শীঘ্রই গলিয়াৎ মারা গিয়েছিল এবং পলেষ্টীয়রা পালিয়ে গিয়েছিল।—১ শমূয়েল ১৭:৪৫-৫১.

৪. (ক) কী দেখায় যে সিরিয়ায় বন্দি এক ছোট্ট ইস্রায়েলীয় মেয়ে এবং যুবক রাজা যোশিয় আমাদের মহান সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করেছিলেন? (খ) কীভাবে ১২ বছরের যীশু দেখিয়েছিলেন যে তিনি তাঁর সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করেছিলেন?

৪ এক ছোট্ট বন্দি ইস্রায়েলীয় মেয়ে অল্পবয়সে তার মহান সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করেছিল। সে সিরীয় সেনাপতি নামানের স্ত্রীর কাছে এত সুন্দর করে সাক্ষ্য দিয়েছিল যে নামান ঈশ্বরের ভাববাদীর কাছে গিয়েছিলেন, কুষ্ঠ রোগ থেকে সুস্থ হয়েছিলেন এবং যিহোবার একজন উপাসক হয়েছিলেন। (২ রাজাবলি ৫:১-১৯) যুবক রাজা যোশিয় সাহসের সঙ্গে যিহোবার সত্য উপাসনাকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। (২ রাজাবলি ২২:১–২৩:২৫) কিন্তু নাসরতীয় বালক যীশুই হলেন সবচেয়ে ভাল উদাহরণ, যিনি অল্প বয়সে তাঁর মহান সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করেছিলেন। তাঁর বয়স যখন ১২ বছর ছিল তখন কী হয়েছিল তা লক্ষ্য করুন। তাঁর বাবামা তাঁকে নিস্তারপর্ব পালন করার জন্য যিরূশালেমে নিয়ে গিয়েছিলেন। ঘরে ফেরার পথে, তারা দেখতে পেয়েছিলেন যে যীশু তাদের সঙ্গে নেই, তাই তারা তাঁকে খোঁজার জন্য আবার যিরূশালেমে ফিরে গিয়েছিলেন। তিন দিনের দিন তারা তাঁকে মন্দিরে খুঁজে পান যেখানে তিনি ধর্মগুরুদের সঙ্গে শাস্ত্র সম্বন্ধে বিভিন্ন প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা করছিলেন। তাঁর মায়ের দুশ্চিন্তা দেখে যীশু বলেছিলেন: “কেন আমার অন্বেষণ করিলে? আমার পিতার গৃহে আমাকে থাকিতেই হইবে, ইহা কি জানিতে না?” (লূক ২:৪৯) মন্দিরে, ‘তাঁহার পিতার গৃহে’ আধ্যাত্মিক বিষয়ে জ্ঞান নেওয়া যীশুর জন্য উপকারী ছিল। আজকে, যিহোবার সাক্ষিদের কিংডম হল আমাদের মহান সৃষ্টিকর্তার বিষয়ে সঠিক জ্ঞান নেওয়ার জন্য এক ভাল জায়গা।

এখনই যিহোবাকে স্মরণ করুন!

৫. উপদেশক ১২:১ পদে উপদেশক যা বলেছেন তা নিজের ভাষায় আপনি কীভাবে বলবেন?

৫ যিহোবার আন্তরিক উপাসকেরা যত তাড়াতাড়ি পারেন তাঁর পরিচর্যা শুরু করতে চান ও জীবনের বাকি দিনগুলো ঈশ্বরের সেবা করে কাটাতে চান। কিন্তু, এমন একজন ব্যক্তির ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে কী বলা যায় যিনি সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ না করে তার যৌবনকালকে অনর্থকই নষ্ট করেন? ঈশ্বরের অনুপ্রেরণায় উপদেশক বলেন: “তুমি যৌবনকালে আপন সৃষ্টিকর্ত্তাকে স্মরণ কর, যেহেতু দুঃসময় আসিতেছে, এবং সেই বৎসর সকল সন্নিকট হইতেছে, যখন তুমি বলিবে, ইহাতে আমার প্রীতি নাই।”—উপদেশক ১২:১.

৬. বৃদ্ধ শিমিয়োন এবং হান্না তাদের মহান সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করেছিলেন তার কোন্‌ প্রমাণ আছে?

৬ বৃদ্ধ বয়সের ‘দুঃসময়ে’ কেউই হাসিখুশি থাকেন না। কিন্তু যে বৃদ্ধ লোকেরা ঈশ্বরকে স্মরণ করেন তারা হাসিখুশি থাকেন। উদাহরণ হিসেবে বৃদ্ধ শিমিয়োনের কথা বলা যায়, যিনি মন্দিরে শিশু যীশুকে কোলে নিয়ে খুশি মনে বলেছিলেন: “হে স্বামিন, এখন তুমি তোমার বাক্যানুসারে তোমার দাসকে শান্তিতে বিদায় করিতেছ, কেননা আমার নয়নযুগল তোমার পরিত্রাণ দেখিতে পাইল, যাহা তুমি সকল জাতির সম্মুখে প্রস্তুত করিয়াছ, পরজাতিগণের প্রতি প্রকাশিত হইবার জ্যোতি, ও তোমার প্রজা ইস্রায়েলের গৌরব।” (লূক ২:২৫-৩২) ৮৪ বছরের হান্নাও তার সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করেছিলেন। তিনি সবসময় মন্দিরে থাকতেন এবং শিশু যীশুকে যখন সেখানে নিয়ে আসা হয়েছিল, তখন তিনি সেখানে ছিলেন। “তিনি সেই দণ্ডে উপস্থিত হইয়া ঈশ্বরের ধন্যবাদ করিলেন, এবং যত লোক যিরূশালেমের মুক্তির অপেক্ষা করিতেছিল, তাহাদিগকে যীশুর কথা বলিতে লাগিলেন।”—লূক ২:৩৬-৩৮.

৭. ঈশ্বরের সেবা করতে করতে যারা বৃদ্ধ হয়েছেন তাদের অবস্থা কীরকম?

৭ আজকে যে যিহোবার সাক্ষিরা ঈশ্বরের সেবা করতে করতে বৃদ্ধ হয়েছেন তারাও বৃদ্ধ বয়সে যে সমস্ত শারীরিক সমস্যা ও কষ্টগুলো আসে তা ভোগ করেন। কিন্তু তারপরও তারা কত সুখী আর আমরা তাদের বিশ্বস্ত সেবাকে কতই না উপলব্ধি করি! “সদাপ্রভুতে যে আনন্দ” তা তাদের রয়েছে কারণ তারা জানেন যে তিনি এই পৃথিবীর ওপর তাঁর অজেয় ক্ষমতা গ্রহণ করেছেন এবং যীশু খ্রীষ্টকে ক্ষমতাবান একজন স্বর্গীয় রাজা হিসেবে অভিষিক্ত করেছেন। (নহিমিয় ৮:১০) তাই যুবক বৃদ্ধ সবার জন্য এই পরামর্শে মনোযোগ দেওয়ার সময় এখনই: “যুবকগণ ও যুবতী সকল; বৃদ্ধগণ ও বালক-বালিকা-সমূহ; সকলে সদাপ্রভুর নামের প্রশংসা করুক, কেননা কেবল তাঁহারই নাম উন্নত, তাঁহার প্রভা পৃথিবীর ও স্বর্গের উপরিস্থ।”—গীতসংহিতা ১৪৮:১২, ১৩.

৮, ৯. (ক) কাদের জন্য “দুঃসময়” একেবারেই সুখের নয় আর এর কারণ কী? (খ) আপনি কীভাবে উপদেশক ১২:২ পদ ব্যাখ্যা করবেন?

৮ বৃদ্ধ বয়সের “দুঃসময়” তাদের জন্য একেবারেই সুখের নয়, হয়তো বা প্রচণ্ড কষ্টের যারা তাদের মহান সৃষ্টিকর্তার বিষয়ে ভাবেন না এবং যাদের তাঁর চমৎকার উদ্দেশ্যগুলো সম্বন্ধে কোন ধারণাই নেই। তাদের কোন আধ্যাত্মিক জ্ঞান নেই যা তাদের বৃদ্ধ বয়সের পরীক্ষা এবং স্বর্গ থেকে ফেলে দেওয়ার পর থেকে শয়তান মানুষের ওপর যে সব দুঃখকষ্ট নিয়ে আসছে সেগুলোকে সহ্য করার জন্য শক্তি দেবে। (প্রকাশিত বাক্য ১২:৭-১২) তাই, উপদেশক আমাদের সেই সময়ের আগেই সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করার জন্য পরামর্শ দেন যখন “সূর্য্য, দীপ্তি, চন্দ্র ও তারাগণ অন্ধকারময় হইবে, এবং বৃষ্টির পরে পুনর্ব্বার মেঘ ফিরিয়া আসিবে।” (উপদেশক ১২:২) এই কথাগুলোর মানে কী?

৯ শলোমন যৌবনকালকে প্যালেস্টাইনের গ্রীষ্মকালের সঙ্গে তুলনা করেন যখন সূর্য, চাঁদ ও তারা মেঘমুক্ত পরিষ্কার আকাশ থেকে আলো দেয়। সবকিছু তখন খুব উজ্জ্বল দেখায়। কিন্তু, বৃদ্ধ বয়সে একজন ব্যক্তির দিনগুলো শীতকালের ঠাণ্ডা, বর্ষণমুখর দিনের মতো যখন একটার পর একটা সমস্যা আসতেই থাকে। (ইয়োব ১৪:১) জীবনের গ্রীষ্মকালে সৃষ্টিকর্তা সম্বন্ধে জেনেও তাঁকে সেবা করতে না পারা কতই না দুঃখের বিষয় হবে! বৃদ্ধ বয়সে অর্থাৎ জীবনের শীতকালে সবকিছু অন্ধকার হয়ে যায়, বিশেষ করে তাদের জন্য যারা তাদের যৌবনকালে অসার বস্তুর পিছনে ছুটে যিহোবাকে সেবা করার সুযোগ হেলায় হারিয়েছেন। তাই আমাদের বয়স যাই হোক না কেন, আসুন আমরা সকলে ‘সম্পূর্ণরূপে সদাপ্রভুর অনুগামী’ হই, ঠিক যেমন কালেব হয়েছিলেন, যিনি ভাববাদী মোশির একজন বিশ্বস্ত সঙ্গী ছিলেন।—যিহোশূয়ের পুস্তক ১৪:৬-৯.

বৃদ্ধ বয়সের প্রভাবগুলো

১০. (ক) “গৃহের রক্ষকেরা” কারা? (খ) “পরাক্রমী ব্যক্তিগণ” কারা?

১০ এরপর শলোমন কিছু কঠিন সমস্যার কথা বলেন, “সেই দিনে গৃহের রক্ষকেরা কম্পিত হইবে, পরাক্রমী ব্যক্তিগণ নত হইবে, ও পেষণকারী লোকেরা অল্প হইয়াছে বলিয়া কর্ম্ম ত্যাগ করিবে, এবং গবাক্ষ দিয়া দর্শনকারিণীরা অন্ধীভূতা হইবে।” (উপদেশক ১২:৩) ‘গৃহ’ মানুষের শরীরকে বোঝায়। (মথি ১২:৪৩-৪৫; ২ করিন্থীয় ৫:১-৮) বাহু ও হাত হল গৃহের “রক্ষক” যেগুলো শরীরকে রক্ষা করে এবং এর চাহিদাগুলো মিটিয়ে থাকে। বৃদ্ধ বয়সে এগুলো সাধারণত দুর্বলতা, স্নায়বিক অক্ষমতা ও পক্ষাঘাতের জন্য কাঁপে। “পরাক্রমী ব্যক্তিগণ” অর্থাৎ পা আর মজবুত স্তম্ভের মতো শক্তসবল থাকে না কিন্তু দুর্বল ও বাঁকা হয়ে যায় ফলে পায়ের পাতা ঘষে ঘষে হাঁটতে হয়। তারপরও আপনি কি খ্রীষ্টীয় সভাগুলোতে বৃদ্ধ ভাইবোনদের দেখে খুশি হন না?

১১. রূপকভাবে বলতে গেলে কারা ‘পেষণকারী লোক’ এবং ‘গবাক্ষ দিয়া দর্শণকারিণী’?

১১ “পেষণকারী লোকেরা অল্প হইয়াছে বলিয়া কর্ম্ম ত্যাগ করিবে”—কীভাবে? দাঁতগুলো ক্ষয়ে যায় কিংবা পড়ে যায় আর থাকলেও, অল্প কয়েকটাই মাত্র থাকে। তখন শক্ত খাবার চিবাতে কষ্ট হয় বা একেবারেই চিবনো যায় না। “গবাক্ষ দিয়া দর্শনকারিণীরা” অর্থাৎ আমাদের মনের ক্ষমতা ও আমাদের চোখ, যার মাধ্যমে আমরা দেখি তা পুরোপুরি অন্ধ হয়ে না গেলেও দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হয়ে যায়।

১২. (ক) কীভাবে “পথের দিকের দ্বার রুদ্ধ” হয়? (খ) বৃদ্ধ রাজ্য ঘোষণাকারীদের সম্বন্ধে আপনি কী মনে করেন?

১২ উপদেশক বলে চলেন, “আর পথের দিকের দ্বার রুদ্ধ হইবে; তখন যাঁতার শব্দ অতি সূক্ষ্ম হইবে, এবং পক্ষীর রবে লোকে উঠিয়া দাঁড়াইবে, ও বাদ্যকারিণী কন্যারা সকলে ক্ষীণ হইবে।” (উপদেশক ১২:৪) যারা ঈশ্বরের সেবা করেন না সেইসব বৃদ্ধদের মুখের দুই দরজা অর্থাৎ ঠোঁট ‘গৃহে’ বা দেহের ভিতরে কী আছে তা বলার জন্য খুব কমই খোলে বা একেবারেই খোলে না। তা জনসাধারণের সেবার জন্য “পথের” দিকে কিছুই পাঠায় না। কিন্তু বৃদ্ধ উদ্যোগী রাজ্য ঘোষণাকারীদের সম্বন্ধে কী বলা যায়? (ইয়োব ৪১:১৪) তারা হয়তো এক ঘর থেকে আরেক ঘরে আস্তে আস্তে হেঁটে যান ও কারও কারও হয়তো কথা বলতে কষ্ট হয় কিন্তু তবুও তারা যেভাবেই হোক না কেন যিহোবার প্রশংসা করেন!—গীতসংহিতা ১১৩:১.

১৩. উপদেশক কীভাবে বৃদ্ধদের অন্য সমস্যাগুলো বর্ণনা করেন কিন্তু বৃদ্ধ খ্রীষ্টানদের বেলায় কোন্‌ বিষয়টা ঠিক?

১৩ যাঁতার শব্দ কমে যায় যখন একজন বৃদ্ধ দাঁতহীন মাড়ি দিয়ে খাবার চিবান। তার ঘুম গভীর হয় না। এমনকি পাখির কিচিরমিচিরেও তার ঘুম ভেঙে যায়। তিনি খুব কমই গান গেয়ে থাকেন আর গাইলেও তা পরিষ্কার বোঝা যায় না। ‘সকল বাদ্যকারিণী কন্যারা’ মানে গানের সুর “ক্ষীণ” হয়ে যায়। অন্যদের গানবাজনা শুনেও একজন বৃদ্ধ কোন আনন্দই খুঁজে পান না। কিন্তু বৃদ্ধ অভিষিক্ত ব্যক্তিরা এবং তাদের সঙ্গীরা, যাদের মধ্যেও অনেকেই বেশ বয়স্ক তারা সবসময় খ্রীষ্টীয় সভাগুলোতে ঈশ্বরের প্রশংসা করার জন্য জোরে জোরে গান গেয়ে থাকেন। মণ্ডলীতে যিহোবার প্রশংসা করার জন্য আমাদের পাশে তাদের পেয়ে আমরা কতই না আনন্দিত!—গীতসংহিতা ১৪৯:১.

১৪. বৃদ্ধদের মনে কোন্‌ ভয় বাসা বাঁধে?

১৪ অনেক বৃদ্ধদের জীবন কতই না দুঃখের, বিশেষ করে তাদের যারা সৃষ্টিকর্তাকে উপেক্ষা করেছেন! উপদেশক বলেন: “লোকে উচ্চস্থান হইতে ভীত হইবে, ও পথে ত্রাস হইবে, কদম্ব পুষ্পিত হইবে, ফড়িঙ্গ অতি কষ্টে চলিবে, ও কামনা নিস্তেজ হইবে; কেননা মানুষ আপন নিত্যস্থায়ী নিবাসে চলিয়া যাইবে ও বিলাপকারীরা পথে পথে বেড়াইবে।” (উপদেশক ১২:৫) উঁচু সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে অনেক বৃদ্ধই পড়ে যাবেন বলে ভয় পান। এমনকি উঁচু কোন কিছুর দিকে তাকালেও তাদের মাথা ঝিমঝিম করে। তারা যখন ভিড় রাস্তায় যান, তখন ব্যথা পাবেন কিংবা ছিনতাইকারীর খপ্পরে পড়বেন বলে তারা ভয় পান।

১৫. কীভাবে “কদম্ব পুষ্পিত” হয় এবং কীভাবে ঘাসফড়িং ‘অতি কষ্টে চলে’?

১৫ একজন বৃদ্ধের ক্ষেত্রে “কদম্ব পুষ্পিত হইবে” বলতে বোঝায় যে তার চুল প্রথমে ধূসর এবং পরে একেবারে সাদা হয়ে যায়। পাকা চুল কদম ফুলের পাপড়ির মতো ঝরে পড়ে। তিনি যখন ‘অতি কষ্টে চলেন’ তখন হয়তো তার বাহু দুটো বাঁকা হয়ে ঝুলে থাকে বা তিনি হয়তো কনুই ওপরের দিকে বাঁকিয়ে হাত দিয়ে কোমর ধরে থাকেন আর তখন তাকে একটা ঘাসফড়িংয়ের মতো দেখায়। আমাদের মধ্যে কাউকে যদি কিছুটা এমন দেখায়ও, তবুও আসুন আমরা অন্যদের দেখাই যে আমরা যিহোবার সক্রিয়, দ্রুতগামী পঙ্গপাল বাহিনী!—১৯৯৮ সালের ১লা মে সংখ্যা প্রহরীদুর্গ-র ৮-১৩ পৃষ্ঠা দেখুন।

১৬. মানুষের ‘আপন নিত্যস্থায়ী নিবাস’ কোন্‌টা এবং মরণ যে কাছে এসে গেছে তা কীভাবে বোঝা যায়?

১৬ বৃদ্ধদের খিদে একেবারেই কমে যায়, এমনকি খাবার খুব সুস্বাদু হলেও। এই বিষয়গুলো দেখায় যে তিনি ‘আপন নিত্যস্থায়ী নিবাস’ অর্থাৎ কবরের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। এটা চিরদিনের জন্যই তার বাড়ি হয়ে যাবে যদি তিনি তার সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করতে ব্যর্থ হয়ে থাকেন এবং এমন খারাপ পথে চলে থাকেন যে যার জন্য ঈশ্বর তাকে আর পুনরুত্থিত করবেন না। মরণ যে খুব কাছে এসে গেছে তা বৃদ্ধদের মুখের দরজা থেকে বের হওয়া যন্ত্রণাকাতর আর্তনাদ ও গোঙ্গানি থেকে বোঝা যায়।

১৭. কীভাবে “রৌপ্যের তার” খুলে যায় এবং “সুবর্ণের বাটি” বলতে কী বোঝায়?

১৭ আমাদের সেই সময়ের আগেই সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যখন “রৌপ্যের তার খুলিয়া যাইবে, সুবর্ণের পানপাত্র [বাটি] ভাঙ্গিবে, এবং উনুইর ধারে কলস খণ্ড খণ্ড হইবে, ও কূপে চক্র ভগ্ন হইবে।” (উপদেশক ১২:৬) এখানে “রৌপ্যের তার” বলতে হয়তো সুষুম্নাকাণ্ডকে বোঝানো হয়েছে। আবেগ-অনুভূতিকে মস্তিকে নিয়ে যাওয়ার এই চমৎকার পথ যখন একেবারে নষ্ট হয়ে যায় তখন মৃত্যু অনিবার্য। “সুবর্ণের বাটি” সম্ভবত মস্তিককে বোঝায় যেটা বাটির আকৃতির খুলির মধ্যে থাকে আর যেটার সঙ্গে সুষুম্নাকাণ্ড যুক্ত থাকে। মস্তিষ্ক কতটা মূল্যবান তা বোঝাতে সুবর্ণ শব্দটা ব্যবহার করা হয়েছে কারণ মস্তিষ্ক যখন কাজ করা বন্ধ করে দেয়, তখন মানুষ মারা যায়।

১৮. “উনুইর ধারে কলস” এর রূপক অর্থ কী এবং এটা যখন ভেঙে যায় তখন কী হয়?

১৮ “উনুইর ধারে কলস” হল হৃৎপিণ্ড, যেখানে সারা শরীরের রক্ত এসে জমা হয় আর এটা আবার সেই রক্ত সারা শরীরে পাঠায়। মারা যাওয়ার পর হৃৎপিণ্ড জলের ধারে পড়ে থাকা ভাঙা কলসের মতো হয়ে যায় কারণ এটার আর রক্ত গ্রহণ করার, ধারণ করার এবং পাম্প করার ক্ষমতা থাকে না, যা দেহকে সজীব ও সতেজ রাখার জন্য খুবই জরুরি। ‘কূপের ভগ্ন চক্র’ আর ঘোরে না অর্থাৎ জীবনরক্ষাকারী রক্ত চলাচল প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। অতএব সপ্তদশ শতাব্দীতে চিকিৎসক উইলিয়াম হারভে যখন প্রমাণ করেছিলেন যে রক্ত চলাচল করে, তার চেয়েও অনেক অনেক আগে যিহোবা শলোমনের কাছে রক্ত চলাচলের বিষয়টা বলেছিলেন।

১৯. উপদেশক ১২:৭ পদের কথাগুলো কীভাবে মৃত্যুর বেলায় খাটে?

১৯ উপদেশক আরও বলেছিলেন: “আর ধূলি পূর্ব্ববৎ মৃত্তিকাতে প্রতিগমন করিবে; এবং আত্মা যাঁহার দান, সেই ঈশ্বরের কাছে প্রতিগমন করিবে।” (উপদেশক ১২:৭) ‘কূপের চক্র’ ভগ্ন হয়ে গেলে মানুষের শরীর সেই ধূলিতে ফিরে যায়, যেখান থেকে এটা তৈরি। (আদিপুস্তক ২:৭; ৩:১৯) প্রাণ মারা যায় কারণ ঈশ্বরের দেওয়া আত্মা বা জীবনী শক্তি আবার তাঁর কাছেই ফিরে যায় এবং আমাদের সৃষ্টিকর্তার কাছেই থাকে।—যিহিষ্কেল ১৮:৪, ২০; যাকোব ২:২৬.

যারা স্মরণ করেন তাদের ভবিষ্যৎ কী?

২০. গীতসংহিতা ৯০:১২ পদে লেখা প্রার্থনায় মোশি কোন্‌ অনুরোধ জানিয়েছিলেন?

২০ শলোমন খুব সুন্দরভাবে দেখিয়েছিলেন যে আমাদের মহান সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করা কতটা জরুরি। নিশ্চয়ই, যারা যিহোবাকে স্মরণ করেন ও অন্তর থেকে তাঁর ইচ্ছা পালন করেন তাদের জন্য এই ছোট এবং সমস্যাপূর্ণ জীবনই সবকিছু নয়। তারা যুবক বা বৃদ্ধ যাই হোন না কেন, তাদের মোশির মতো একই মনোভাব রয়েছে, যিনি প্রার্থনা করেছিলেন: “আমাদের দিন গণনা করিতে শিক্ষা দেও, যেন আমরা প্রজ্ঞার চিত্ত লাভ করি।” ঈশ্বরের নম্র ভাববাদী মনেপ্রাণে চেয়েছিলেন যেন ঈশ্বর তাকে ও ইস্রায়েলীয়দেরকে শিক্ষা দেন যাতে তারা বুদ্ধির সঙ্গে ‘তাদের দিন গণনা’ করতে পারেন এবং ঈশ্বর যেভাবে চান সেভাবে সেই দিনগুলো কাজে লাগাতে পারেন।—গীতসংহিতা ৯০:১০, ১২.

২১. আমরা যদি যিহোবার গৌরবের জন্য আমাদের সময় গণনা করতে চাই, তাহলে আমাদের কী করতে হবে?

২১ বিশেষ করে খ্রীষ্টান যুবক-যুবতীদের সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করার জন্য উপদেশকের পরামর্শে মন দিতে দৃঢ়সংকল্প হওয়া উচিত। ঈশ্বরের পবিত্র পরিচর্যা করার কত অপূর্ব সুযোগই না তাদের আছে! তাই আমাদের বয়স যাই হোক না কেন, এই ‘শেষকালে’ আমরা যদি যিহোবার গৌরব করার জন্য আমাদের দিন গণনা করতে শিখি, তবে আমরা হয়তো চিরকাল তা গণনা করে যেতে পারব। (দানিয়েল ১২:৪; যোহন ১৭:৩) আর তা করার জন্য আমাদের অবশ্যই আমাদের মহান সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করতে হবে। এছাড়াও ঈশ্বরের প্রতি আমাদের সমস্ত কর্তব্যও পালন করতে হবে।

আপনি কীভাবে উত্তর দেবেন?

◻ কেন যুবক-যুবতীদেরকে তাদের সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে?

◻ বাইবেলের কিছু উদাহরণ কী যারা তাদের মহান সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করেছিলেন?

◻ বৃদ্ধ বয়সের কিছু প্রভাব কী যা শলোমন বর্ণনা করেছেন?

◻ যারা যিহোবাকে স্মরণ করেন তাদের ভবিষ্যৎ কী?

[Pictures on page 15]

দায়ূদ, বন্দি ইস্রায়েলীয় মেয়ে, হান্না ও শিমিয়োন যিহোবাকে স্মরণ করেছিলেন

[Pictures on page 16]

বৃদ্ধ যিহোবার সাক্ষিরা আনন্দিত মনে আমাদের মহান সৃষ্টিকর্তার পবিত্র পরিচর্যা করেন

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৫)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার