ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w৯৯ ১০/১ পৃষ্ঠা ৫-১০
  • “সকল বিষয়েরই সময় আছে”

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • “সকল বিষয়েরই সময় আছে”
  • ১৯৯৯ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • “রোদন করিবার কাল ও হাস্য করিবার কাল”
  • রোদন করা সত্ত্বেও, সত্যিকারের সুখী!
  • “আলিঙ্গনের কাল ও আলিঙ্গন না করিবার কাল”
  • বিয়ে—প্রেমময় ঈশ্বরের কাছ থেকে এক উপহার
    “ঈশ্বরের প্রেমে আপনাদিগকে রক্ষা কর”
  • এই শেষকালে বিয়ে করা ও বাবামা হওয়া
    ২০০৮ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • আপনার বিবাহের এক উত্তমভিত্তি স্থাপন করা
    আপনার পারিবারিক জীবন সুখী করা
  • বিয়ে সম্বন্ধে বাইবেল কী বলে?
    বাইবেলের প্রশ্নের উত্তর
আরও দেখুন
১৯৯৯ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w৯৯ ১০/১ পৃষ্ঠা ৫-১০

“সকল বিষয়েরই সময় আছে”

“সকল বিষয়েরই সময় আছে, ও আকাশের নীচে সমস্ত ব্যাপারের কাল আছে।”—উপদেশক ৩:১.

১. অসিদ্ধ মানুষদের কোন্‌ অক্ষমতা আছে আর মাঝে মাঝে তার কী ফল হয়?

লোকেরা প্রায়ই বলে থাকে, “এই কাজটা আমার আরেকটু আগে করা উচিত ছিল।” কিংবা তারা অনুশোচনা করে বলে, “আমার আরেকটু অপেক্ষা করা উচিত ছিল।” এই কথাগুলো দেখায় যে অসিদ্ধ মানুষের কোন কাজ করার জন্য সঠিক সময়টা বেছে নিতে কত অসুবিধা হয়। এই অক্ষমতা মানুষে মানুষে সম্পর্ক ছিন্ন করে দেয়, দুঃখ ও হতাশা নিয়ে আসে আর সবচেয়ে দুঃখজনক বিষয় হল যে তা যিহোবা ও তাঁর সংগঠনের ওপর কিছু লোকেদের বিশ্বাসকে দুর্বল করে দেয়।

২, ৩. (ক) যিহোবাকে সময় ঠিক করতে দেওয়া কেন বুদ্ধিমানের কাজ? (খ) বাইবেলের ভবিষ্যদ্বাণীর পরিপূর্ণতা সম্বন্ধে আমাদের কোন্‌ ভারসাম্যপূর্ণ মনোভাব রাখা উচিত?

২ যিহোবার সেই জ্ঞান ও বুদ্ধি আছে যা মানুষের নেই, তাই তিনি যদি চান, তাহলে আগে থেকেই সব কাজের ফলাফল সম্বন্ধে জানতে পারেন। তিনি “শেষের বিষয় আদি অবধি” জানতে পারেন। (যিশাইয় ৪৬:১০) অতএব, তিনি যদি কিছু করতে চান তাহলে তিনি জানেন যে সেই কাজের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত সময় কোন্‌টা। তাই, আমাদের নিজেদের ভুল সময় জ্ঞানের ওপর ভরসা না করে আমরা যদি সব কাজের জন্য তাঁকেই সময় ঠিক করতে দিই তাহলেই আমরা বুদ্ধিমানের মতো কাজ করি!

৩ উদাহরণস্বরূপ, পরিপক্ব খ্রীষ্টানেরা অধৈর্য না হয়ে এই বিশ্বাস নিয়ে অপেক্ষা করেন যে বাইবেলের কিছু ভবিষ্যদ্বাণী যিহোবার নিরূপিত সময়ে পরিপূর্ণ হবে। তারা সবসময় তাঁর সেবায় ব্যস্ত থাকেন আর বিলাপ ৩:২৬ পদের নীতি তারা সবসময়ই মনে রাখেন: “সদাপ্রভুর পরিত্রাণের প্রত্যাশা করা, নীরবে অপেক্ষা করা, ইহাই মঙ্গল।” (হবক্‌কূক ৩:১৬ পদের সঙ্গে তুলনা করুন।) সেইসঙ্গে তারা বিশ্বাস করেন, যিহোবা যে বিচারের কথা ঘোষণা করেছেন তা “বিলম্ব হইলেও . . . অবশ্য উপস্থিত হইবে, যথাকালে বিলম্ব করিবে না।”—হবক্‌কূক ২:৩.

৪. আমোষ ৩:৭ এবং মথি ২৪:৪৫ পদ কীভাবে আমাদেরকে ধৈর্যের সঙ্গে যিহোবার জন্য অপেক্ষা করতে সাহায্য করে?

৪ অন্যদিকে, আমরা যদি বাইবেলের কোন পদ অথবা ওয়াচ টাওয়ার প্রকাশনাগুলোতে দেওয়া কোন বিষয় বুঝতে না পারি, তাহলে কি আমাদের অধৈর্য হয়ে পড়ার কোন কারণ আছে? বিষয়গুলো পরিষ্কার করে দিতে যিহোবার নিরূপিত সময়ের জন্য অপেক্ষা করাই হল বুদ্ধিমানের কাজ। কারণ “নিশ্চয়ই প্রভু সদাপ্রভু আপনার দাস ভাববাদিগণের নিকটে আপন গূঢ় মন্ত্রণা প্রকাশ না করিয়া কিছুই করেন না।” (আমোষ ৩:৭) কত চমৎকার এক প্রতিজ্ঞা! কিন্তু আমাদের বুঝতে হবে যে যিহোবা তাঁর গূঢ় মন্ত্রণা ঠিক তখনই প্রকাশ করেন যখন তিনি মনে করেন যে তা করা উপযুক্ত। সেইজন্য যিহোবা “বিশ্বস্ত ও বুদ্ধিমান্‌ দাস”-কে নিযুক্ত করেছেন যাতে তারা তাঁর লোকেদেরকে “উপযুক্ত সময়ে [আধ্যাত্মিক] খাদ্য দেয়।” (বাঁকা অক্ষরে মুদ্রণ আমাদের।) (মথি ২৪:৪৫) তাই, কোন বিষয় পুরোপুরি বোঝা যায়নি বলে আমাদের খুব বেশি হাঁ-হুতাশ করার বা চিন্তিত হওয়ার দরকার নেই। এর বদলে আমরা বিশ্বাস রাখতে পারি যে আমরা যদি ধৈর্যের সঙ্গে যিহোবার জন্য অপেক্ষা করি, তাহলে আমাদের যা যা দরকার তা তিনি বিশ্বস্ত দাসের মাধ্যমে “উপযুক্ত সময়ে” আমাদেরকে দেবেন।

৫. উপদেশক ৩:১-৮ পদ আলোচনা করলে কোন্‌ উপকার পাওয়া যায়?

৫ জ্ঞানী রাজা শলোমন ২৮টা বিষয়ের কথা বলেছিলেন যেগুলোর প্রত্যেকটার জন্য ভিন্ন ভিন্ন “সময়” আছে। (উপদেশক ৩:১-৮) শলোমন যা বলেছিলেন তার গভীর অর্থ বোঝা আমাদেরকে কোন কাজ করার সঠিক সময় বা ভুল সময় কোন্‌টা তা ঠিক করতে সাহায্য করবে, যেভাবে ঈশ্বর করে থাকেন। (ইব্রীয় ৫:১৪) আর এটা আমাদের জীবনে জরুরি পরিবর্তন আনতে সাহায্য করবে।

“রোদন করিবার কাল ও হাস্য করিবার কাল”

৬, ৭. (ক) আজ লোকেরা কোন্‌ বিষয়গুলোর জন্য “রোদন” করেন? (খ) লোকেদের দুঃখকষ্টকে ঢাকার জন্য জগৎ কী করে?

৬ যদিও “রোদন করিবার ও হাস্য করিবার কাল” আছে কিন্তু আমাদের মধ্যে এমন কে আছেন যিনি রোদনের চেয়ে হাস্যকেই আগে বেছে নেবেন না? (উপদেশক ৩:৪) কিন্তু, দুঃখের সঙ্গে বলতে হয় যে আজকের জগতে রোদন ছাড়া আর কিছু আছে বলে মনে হয় না। রেডিও, টিভি, খবরের কাগজ সব জায়গাতেই শুধু খারাপ খবর। আমরা যখন শুনি যে স্কুলে ছোট ছোট বাচ্চারা তাদের সহপাঠীদেরকে মেরে ফেলেছে, বাবামায়েরা তাদের বাচ্চাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করছেন, সন্ত্রাসীরা নির্দোষ লোকেদের খুন করছে বা পঙ্গু করে দিচ্ছে এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগে মানুষের জীবন ও সম্পদের ক্ষতি হচ্ছে, তখন আমরা ভয়ে আঁতকে উঠি। আমাদের নজরে পড়ার জন্য টেলিভিশনের পর্দায় ক্ষুধার্ত, কঙ্কালসার শিশু ও ছিন্নমূল শরণার্থীদের ভীড় যেন লেগেই আছে। যে শব্দগুলো আগে শোনা যেত না এখন তা আমাদের মনে দুশ্চিন্তা ও ভয় নিয়ে আসে যেমন, সাম্প্রদায়িক বিলোপসাধন, এইডস, যুদ্ধে জীবাণুর ব্যবহার এবং এল নিনো ঝঞ্ছা।

৭ এই বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই যে আজকের জগৎ-সংসার দুঃখ ও বেদনায় ভরা। কিন্তু, লোকেদের দুর্দশাকে ঢাকার জন্য মনোরঞ্জন জগৎ একটার পর একটা খারাপ, জঘন্য আর প্রায়ই অনৈতিক ও হিংস্রতায় ভরা বিনোদন আমাদের সামনে হাজির করে চলেছে যাতে আমরা এই জগতের দুঃখকষ্টকে ভুলে থাকি। কিন্তু মূর্খতায় ভরা এই বিনোদনগুলোতে মানুষ যে ক্ষণিকের জন্য হাসে ও আনন্দ পায় তাকে সত্যিকারের আনন্দ ভেবে ভুল করা উচিত নয়। আনন্দ হল ঈশ্বরের আত্মার একটা ফল যা শয়তানের জগৎ দিতে পারে না।—গালাতীয় ৫:২২, ২৩; ইফিষীয় ৫:৩, ৪.

৮. আজকে খ্রীষ্টানদের রোদন করা উচিত না হাস্য করা উচিত? ব্যাখ্যা করুন।

৮ জগতের দুঃখজনক অবস্থাকে ভাল মতো দেখলে আমরা বুঝতে পারি যে হাস্য করার সময় এখন নয়। এখন শুধু বিনোদন ও মনোরঞ্জনের সময় নয় অথবা আধ্যাত্মিক বিষয়গুলোকে পিছনে ফেলে ‘খেলা [মজা] করার’ সময়ও এটা নয়। (উপদেশক ৭:২-৪ পদের সঙ্গে তুলনা করুন।) প্রেরিত পৌল বলেছিলেন, “যাহারা সংসার ভোগ করিতেছে,” তাদের এমনভাবে চলা উচিত “যেন পূর্ণমাত্রায় করিতেছে না।” কিন্তু কেন? কারণ “এই সংসারের অভিনয় অতীত হইতেছে।” (১ করিন্থীয় ৭:৩১) সত্য খ্রীষ্টানেরা আমাদের সময়ের গুরুত্বকে পুরোপুরি উপলব্ধি করেন।—ফিলিপীয় ৪:৮.

রোদন করা সত্ত্বেও, সত্যিকারের সুখী!

৯. জলপ্লাবনের আগে কোন্‌ দুঃখজনক অবস্থা ছিল আর তা আজকে আমাদের জন্য কী বোঝায়?

৯ সারা পৃথিবীতে যখন জলপ্লাবন হয়েছিল তখনকার লোকেরা জীবনকে গুরুত্বের সঙ্গে নেয়নি। তারা তাদের মতো করে জীবন কাটিয়েছিল এবং “পৃথিবীতে মনুষ্যের দুষ্টতা বড়” হওয়া সত্ত্বেও, তারা রোদন করেনি কারণ তারা ‘পৃথিবী যে দৌরাত্ম্যে পরিপূর্ণ ছিল’ সেই বিষয়ে ভেবেও দেখেনি। (আদিপুস্তক ৬:৫, ১১) যীশু সেই দুঃখজনক অবস্থার কথা বলে ভাববাণী করেছিলেন যে আমাদের সময়ের লোকেদের মনোভাবও এইরকমই হবে। তিনি সতর্ক করে দিয়েছিলেন: “জলপ্লাবনের সেই পূর্ব্ববর্ত্তী কালে, জাহাজে নোহের প্রবেশ দিন পর্য্যন্ত, লোকে যেমন ভোজন ও পান করিত, বিবাহ করিত ও বিবাহিতা হইত, এবং বুঝিতে পারিল না, যাবৎ না বন্যা আসিয়া সকলকে ভাসাইয়া লইয়া গেল; তদ্রূপ মনুষ্যপুত্ত্রের আগমন হইবে।”—মথি ২৪:৩৮, ৩৯.

১০. হগয়ের দিনের ইস্রায়েলীয়রা কীভাবে দেখিয়েছিল যে যিহোবার নিরূপিত সময়ের জন্য তাদের উপলব্ধির অভাব ছিল?

১০ জলপ্লাবনের প্রায় ১,৮৫০ বছর পর হগয়ের দিনে অনেক ইস্রায়েলীয়রা আধ্যাত্মিক বিষয়ের জন্য উপলব্ধির অভাব দেখিয়েছিল। নিজেদের কাজে ব্যস্ত থাকায় তারা ঠিক করে বুঝতে পারেনি যে তাদের সময়টাই ছিল যিহোবার কাজকে প্রথম স্থানে রাখার সময়। আমরা পড়ি: “এই লোকেরা বলিতেছে, সময়, সদাপ্রভুর গৃহ নির্ম্মাণের সময়, উপস্থিত হয় নাই। তখন হগয় ভাববাদী দ্বারা সদাপ্রভুর এই বাক্য উপস্থিত হইল; এই কি তোমাদের আপন আপন ছাদ আঁটা গৃহে বাস করিবার সময়? এই গৃহ ত উৎসন্ন রহিয়াছে। এই জন্য এখন বাহিনীগণের সদাপ্রভু এই কথা কহেন, তোমরা আপন আপন পথ আলোচনা কর।”—হগয় ১:১-৫.

১১. আমাদের নিজেদেরকে কোন্‌ প্রশ্নগুলো জিজ্ঞাসা করা ঠিক হবে?

১১ যিহোবার সাক্ষি হিসেবে আজকে আমাদেরও হগয়ের দিনের ইস্রায়েলীয়দের মতো যিহোবার কাছ থেকে কিছু দায়িত্ব ও সুযোগ রয়েছে। তাই সেগুলোকে গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া ও আমরা কীভাবে চলছি সেই বিষয়ে গভীরভাবে চিন্তা করা আমাদের জন্য ভাল হবে। আমরা কি জগতের অবস্থা ও ঈশ্বরের নামের ওপর যে নিন্দা আসছে তা দেখে “রোদন” করি? লোকেরা যখন বলে যে ঈশ্বর বলে কেউ নেই অথবা তাঁর ধার্মিক নীতিগুলোকে সরাসরি উপেক্ষা করে তখন কি আমরা দুঃখ পাই? ২,৫০০ বছর আগে যিহিষ্কেল তার একটা দর্শনে যে চিহ্নিত লোকেদের দেখেছিলেন আমরা কি সেই লোকেদের মতো প্রতিক্রিয়া দেখাই? তাদের সম্বন্ধে আমরা পড়ি: “সদাপ্রভু তাহাকে [যার লেখার অধিকার ছিল] কহিলেন, তুমি নগরের মধ্য দিয়া, যিরূশালেমের মধ্য দিয়া যাও, এবং তাহার মধ্যে কৃত সমস্ত ঘৃণার্হ কার্য্যের বিষয়ে যে সকল লোক দীর্ঘনিঃশ্বাস ত্যাগ করে ও কোঁকায়, তাহাদের প্রত্যেকের কপালে চিহ্ন দেও।”—যিহিষ্কেল ৯:৪.

১২. যিহিষ্কেল ৯:৫, ৬ পদ আজকে লোকেদের জন্য কী অর্থ রাখে?

১২ আজকে, আমাদের জন্য এই বিবরণের অর্থ কী তা পরিষ্কার হয়ে যায় যখন আমরা ছয়জন অস্ত্রধারী লোককে ধ্বংস করার যে নির্দেশ দেওয়া হয় সেটা পড়ি: “তোমরা নগর দিয়া ইহার পশ্চাতে পশ্চাতে যাও, এবং আঘাত কর, চক্ষুলজ্জা করিও না, দয়াও করিও না; বৃদ্ধ, যুবক, কুমারী, শিশু ও স্ত্রীলোকদিগকে নিঃশেষে বধ কর, কিন্তু যাহাদের কপালে চিহ্নটী দেখা যায়, তাহাদের কাহারও নিকটে যাইও না; আর আমার ধর্ম্মধাম অবধি আরম্ভ কর।” (যিহিষ্কেল ৯:৫, ৬) দ্রুত এগিয়ে আসা সেই মহাক্লেশ থেকে আমাদের পরিত্রাণ নির্ভর করছে এই বিষয়টা স্বীকার করার ওপর যে এখন হল মূলত রোদন করার সময়।

১৩, ১৪. (ক) কোন্‌ ধরনের লোকেদের যীশু সুখী বলেছিলেন? (খ) আপনি কেন মনে করেন যে এই বর্ণনা যিহোবার সাক্ষিদের বেলায়ই সবচেয়ে বেশি খাটে তা ব্যাখ্যা করুন।

১৩ এই দুঃখজনক অবস্থা দেখে যিহোবার দাসেরা “রোদন” করেন কিন্তু তাই বলে এর মানে এই নয় যে তারা সুখী নন। আসল বিষয়টা ঠিক এর উল্টো! আসলে তারাই হলেন পৃথিবীতে সবচেয়ে সুখী ব্যক্তি। যীশু তাদের সুখের কষ্টিপাথরের খোঁজ দিয়েছিলেন যখন তিনি বলেছিলেন: “ধন্য [সুখী] যাহারা আত্মাতে দীনহীন, . . . যাহারা শোক করে, . . . যাহারা মৃদুশীল, . . . যাহারা ধার্ম্মিকতার জন্য ক্ষুধিত ও তৃষিত, . . . যাহারা দয়াশীল, . . . যাহারা নির্ম্মলান্তঃকরণ, . . . যাহারা মিলন করিযা দেয়, . . . যাহারা ধার্ম্মিকতার জন্য তাড়িত হইয়াছে।” (মথি ৫:৩-১০) আর এই বিষয়ে অনেক প্রমাণ আছে যে অন্য যে কোন ধর্মীয় সংগঠনের চেয়ে এই কথাগুলো যিহোবার সাক্ষিদের বেলায়ই সবচেয়ে বেশি খাটে।

১৪ বিশেষ করে ১৯১৯ সালে সত্য উপাসনা পুনরুদ্ধার করার সময় থেকে যিহোবার সুখী লোকেরা “হাস্য” করার কারণ পেয়েছেন। আধ্যাত্মিক অর্থে এই লোকেরা ততখানিই সুখী ছিলেন যতখানি সুখী সা.কা.পূ. ষষ্ঠ শতাব্দীতে যারা বাবিলন থেকে ফিরে এসেছিল তারা ছিল: “সদাপ্রভু যখন সিয়োনের বন্দিদিগকে ফিরাইলেন, তখন আমরা স্বপ্নদর্শকদের ন্যায় হইলাম। তৎকালে আমাদের মুখ হাস্যে পূর্ণ হইল, আমাদের জিহ্বা আনন্দগানে পূর্ণ হইল; . . . সদাপ্রভু আমাদের নিমিত্ত মহৎ মহৎ কর্ম্ম করিয়াছেন, সে জন্য আমরা আনন্দিত হইয়াছি।” (গীতসংহিতা ১২৬:১-৩) কিন্তু এই আধ্যাত্মিক আনন্দের মধ্যেও যিহোবার সাক্ষিরা বুদ্ধির সঙ্গে মনে রাখেন যে এই সময়টা খুবই জরুরি। আর নতুন জগৎ যখন সত্যি সত্যি আসবে এবং পৃথিবীর অধিবাসীরা ‘প্রকৃত জীবন ধরিবে’ একমাত্র তখনই রোদন করার সময় চিরকালের জন্য চলে গিয়ে হাস্য করার সময় আসবে।—১ তীমথিয় ৬:১৯; প্রকাশিত বাক্য ২১:৩, ৪.

“আলিঙ্গনের কাল ও আলিঙ্গন না করিবার কাল”

১৫. বন্ধুত্ব করার ব্যাপারে খ্রীষ্টানেরা কেন সতর্ক?

১৫ কার সঙ্গে বন্ধুত্ব করবেন সেই ব্যাপারে খ্রীষ্টানেরা খুবই সতর্ক। পৌলের এই কথা তারা মনে রাখেন: “ভ্রান্ত হইও না, কুসংসর্গ শিষ্টাচার নষ্ট করে।” (১ করিন্থীয় ১৫:৩৩) আর জ্ঞানী রাজা শলোমন বলেছিলেন: “জ্ঞানীদের সহচর হও, জ্ঞানী হইবে; কিন্তু যে হীনবুদ্ধিদের বন্ধু, সে ভগ্ন হইবে।”—হিতোপদেশ ১৩:২০.

১৬, ১৭. বন্ধুত্ব, বিয়ের আগে মেলামেশা ও বিয়েকে যিহোবার সাক্ষিরা কীভাবে দেখেন এবং কেন?

১৬ যিহোবার দাসেরা তাদের সঙ্গেই বন্ধুত্ব করেন যারা তাদের মতো যিহোবা ও তাঁর ধার্মিকতাকে ভালবাসেন। তারা বন্ধুদের সঙ্গ উপভোগ করেন ও তাদের সম্মান করেন কিন্তু আজকে অনেক দেশে বিয়ের আগে মেলামেশা সম্বন্ধে যে প্রশ্রয়ী দৃষ্টিভঙ্গি আছে তা তারা বুদ্ধিপূর্বক এড়িয়ে চলেন। বিয়ের আগে মেলামেশাকে নিছক একটা মজা হিসেবে নেওয়ার বদলে তারা এটাকে বিয়ের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য একটা গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখে থাকেন। আর এই পদক্ষেপ শুধু তখনই নেওয়া উচিত যখন একজন বিয়ের স্থায়ী বন্ধন গড়ে তোলার জন্য শারীরিক, মানসিক, আধ্যাত্মিক ও সেইসঙ্গে শাস্ত্রীয়ভাবে তৈরি।—১ করিন্থীয় ৭:৩৬.

১৭ কেউ কেউ হয়তো মনে করতে পারেন যে বিয়ের আগে মেলামেশা ও বিয়ের সম্বন্ধে এরকম ধারণা সেকেলে। কিন্তু যিহোবার সাক্ষিরা, তাদের সঙ্গীসাথিদের চাপে পড়ে বন্ধুবান্ধব বাছাই, বিয়ের আগে মেলামেশা কিংবা বিয়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন না। তারা জানেন যে “প্রজ্ঞা নিজ কর্ম্মসমূহ দ্বারা নির্দ্দোষ বলিয়া গণিত হয়।” (মথি ১১:১৯) আর যিহোবাই যেহেতু সব বিষয় সবচেয়ে ভাল জানেন, তাই তারা যিহোবার এই পরামর্শকে খুবই মূল্য দেন যে “কেবল প্রভুতেই” বিয়ে করা উচিত। (১ করিন্থীয় ৭:৩৯; ২ করিন্থীয় ৬:১৪) বিয়ের পর ছোটখাটো কোন সমস্যা হলেই বিবাহ বিচ্ছেদ করা যাবে কিংবা পৃথক হওয়া যাবে, এমন ভুল ধারণা নিয়ে তারা তাড়াহুড়ো করে বিয়ে করেন না। উপযুক্ত সাথি খোঁজার জন্য তারা অনেক সময় নেন, তারা বোঝেন যে বিয়ের অঙ্গীকার একবার করলে যিহোবার এই ব্যবস্থা তাদের জন্য কার্যকর হয়: “তাহারা আর দুই নয়, কিন্তু একাঙ্গ। অতএব ঈশ্বর যাহার যোগ করিয়া দিয়াছেন, মনুষ্য তাহার বিয়োগ না করুক।”—মথি ১৯:৬; মার্ক ১০:৯.

১৮. সুখী বিয়ে শুরুর জন্য একটা ধাপ কী?

১৮ বিয়ে হল একটা চিরস্থায়ী বন্ধন, যার আগে অনেক কিছু ভেবে দেখা দরকার। যুক্তিযুক্তভাবেই একজন পুরুষ নিজেকে জিজ্ঞাসা করবেন, ‘সে কি সত্যিই আমার জন্য উপযুক্ত?’ কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে এই প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করাও তার জন্য সমান জরুরি, ‘আমি কি তার উপযুক্ত পাত্র? আমি কি একজন পরিপক্ব খ্রীষ্টান এবং আমি কি ঠিকভাবে তার আধ্যাত্মিক চাহিদাগুলোর যত্ন নিতে পারব?’ ভাবী দুই সাথির জন্যই এটা যিহোবার কাছ থেকে আসা দায়িত্ব যে তারা আধ্যাত্মিক দিক দিয়ে শক্তিশালী হবেন এবং এমন অটুট বিবাহ বন্ধনে নিজেদের বাঁধবেন যাতে তাদের ওপর যিহোবার আশীর্বাদ থাকে। হাজার হাজার খ্রীষ্টান দম্পতিরা প্রমাণ করেছেন সুখী বিবাহ শুরু করার এক চমৎকার ধাপ হল পূর্ণ-সময়ের পরিচর্যা করা কারণ তা গ্রহণ করার চেয়ে দান করার ইচ্ছাকে প্রথমে রাখে।

১৯. কিছু খ্রীষ্টানেরা কেন অবিবাহিত থাকেন?

১৯ কিছু খ্রীষ্টানেরা সুসমাচারের জন্য অবিবাহিত থেকে ‘আলিঙ্গন না করাকে’ বেছে নেন। (উপদেশক ৩:৫) অন্যেরা, ততদিন পর্যন্ত অপেক্ষা করেন যতদিন পর্যন্ত না তারা মনে করেন যে একজন উপযুক্ত সাথি পাওয়ার মতো আধ্যাত্মিকতা তারা গড়ে তুলেছেন। কিন্তু আসুন আমরা সেইসব অবিবাহিত খ্রীষ্টানদের কথাও মনে করি যারা বিয়ে করতে চান কিন্তু সাথি খুঁজে না পাওয়ায় অবিবাহিত আছেন। বিয়ে না করেও ঐশিক নীতিগুলোর সঙ্গে তারা যে কোনরকম আপোশ করেননি সেই জন্য যিহোবা নিশ্চয়ই খুব আনন্দিত হন। আমরা তাদের বিশ্বস্ততাকে সম্মান করি এবং তাদেরকে যে সাহায্য দেওয়া দরকার তা দিই।

২০. বিবাহিত সাথিরাও কেন মাঝে মাঝে ‘আলিঙ্গন করেন না’?

২০ বিবাহিত দম্পতিরাও কি মাঝে মাঝে ‘আলিঙ্গন না করে থাকতে পারেন’? এক অর্থে বলা যায় যে তারা পারেন কারণ পৌল বলেছিলেন: “আমি এই কথা বলিতেছি, ভ্রাতৃগণ, সময় সঙ্কুচিত, এখন হইতে যাহাদের স্ত্রী আছে, তাহারা এমন চলুক, যেন তাহাদের স্ত্রী নাই।” (১ করিন্থীয় ৭:২৯) আর সেইজন্য কখনও কখনও ঈশ্বরের সেবা যে দায়িত্বগুলো নিয়ে আসে সেগুলোকে আগে স্থান দিয়ে বিয়ের আনন্দ ও খুশিকে পিছনে রাখতে হয়। এই বিষয়ের প্রতি এক সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি বিবাহকে দুর্বল করে দেবে না বরং এটাকে আরও শক্তিশালী করবে কারণ তা দুজনকেই মনে রাখতে সাহায্য করে যে তাদের এই বন্ধনের মাঝে যিহোবা আছেন আর তিনি এটাকে শক্তিশালী করবেন।—উপদেশক ৪:১২.

২১. বিবাহিত দম্পতিদের বাচ্চা আনা উচিত কী অনুচিত এই বিষয়ে আমরা কেন কোন কথা বলব না?

২১ কিছু বিবাহিত দম্পতিরা ঈশ্বরের পরিচর্যা আরও সহজে করার জন্য সন্তান না আনার সিদ্ধান্ত নেন। এটা তাদের জন্য সত্যিই এক বড় ত্যাগস্বীকার আর যিহোবা অবশ্যই এর জন্য তাদেরকে পুরস্কার দেবেন। বাইবেল সুসামাচারের কারণে অবিবাহিত থাকাকে উৎসাহ দিলেও এই কারণে সন্তান না আনার ব্যাপারে সরাসরি কোন পরামর্শ দেয় না। (মথি ১৯:১০-১২; ১ করিন্থীয় ৭:৩৮. মথি ২৪:১৯ এবং লূক ২৩:২৮-৩০ পদের সঙ্গে তুলনা করুন।) তাই, বিবাহিত দম্পতিদের তাদের পরিস্থিতি অনুযায়ী ও তাদের নিজেদের বিবেকবুদ্ধি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। আর বিবাহিত দম্পতিরা যে সিদ্ধান্তই নিন না কেন, তাদের সিদ্ধান্ত নিয়ে কোনরকম সমালোচনা করা উচিত নয়।

২২. কোন্‌ বিষয় ঠিক করা আমাদের জন্য জরুরি?

২২ হ্যাঁ, “সকল বিষয়েরই সময় আছে, ও আকাশের নীচে সমস্ত ব্যাপারের কাল আছে।” এমনকি “যুদ্ধের কাল ও সন্ধির [শান্তির] কাল” আছে। (উপদেশক ৩:১, ৮) পরের প্রবন্ধ ব্যাখ্যা করবে যে কেন আমাদের ঠিক করা উচিত যে এখন কোন্‌ সময়।

আপনি কি ব্যাখ্যা করতে পারেন?

◻ আমাদের জানা কেন জরুরি যে “সকল বিষয়েরই সময় আছে”?

◻ আজকে কেন মূলত “রোদন করিবার কাল”?

◻ খ্রীষ্টানেরা যদিও “রোদন” করছেন, তবুও কেন তারা সত্যিকারের সুখী?

◻ কিছু খ্রীষ্টানেরা কীভাবে দেখান যে তারা এখনকার সময়কে ‘আলিঙ্গন না করিবার কাল’ হিসেবে দেখেন?

[৬, ৭ পৃষ্ঠার চিত্র]

জগতের অবস্থার জন্য খ্রীষ্টানেরা যদিও “রোদন” করেন, . .

. . . তবুও তারাই পৃথিবীতে সবচেয়ে সুখী ব্যক্তি

[৮ পৃষ্ঠার চিত্র]

পূর্ণ-সময়ের পরিচর্যা সুখী বিবাহের এক চমৎকার ভিত্তি

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৫)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার