ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w৯৮ ৩/১৫ পৃষ্ঠা ১২-১৭
  • উৎসর্গীকরণ এবং মনোনয়নের স্বাধীনতা

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • উৎসর্গীকরণ এবং মনোনয়নের স্বাধীনতা
  • ১৯৯৮ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • “ইস্রায়েলের ঈশ্বর” এর প্রতি উৎসর্গীকরণ
  • “ঈশ্বরের ইস্রায়েলের” উৎসর্গীকরণ
  • বিজ্ঞতার সাথে ঈশ্বর-দত্ত স্বাধীনতা অনুশীলন করা
  • কার দাস হওয়াকে মনোনীত করবেন?
  • নিজেদের উপকৃত করতে শেখা
  • তারা ঈশ্বরের মনোনীত জাতির সদস্য হিসেবে জন্মগ্রহণ করেছিল
    ২০০৬ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • আপনি কি আপনার উৎসর্গীকরণের যোগ্যরূপে চলছেন?
    ২০০১ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • কেন নিজেকে যিহোবার কাছে উৎসর্গ করবেন?
    ২০১০ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • পাঠক-পাঠিকাদের থেকে প্রশ্নসকল
    ২০০৩ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
আরও দেখুন
১৯৯৮ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w৯৮ ৩/১৫ পৃষ্ঠা ১২-১৭

উৎসর্গীকরণ এবং মনোনয়নের স্বাধীনতা

“স্বাধীনতার নিমিত্তই খ্রীষ্ট আমাদিগকে স্বাধীন করিয়াছেন।”—গালাতীয় ৫:১.

১. ইব্রীয় ও গ্রীক শব্দগুলির অনুবাদ “উৎসর্গীকরণ,” “অভিষেক” অথবা “আত্মনিবেদন” কোন্‌ ক্ষেত্রগুলিতে বিশেষভাবে প্রযোজ্য?

এক পবিত্র উদ্দেশ্য সম্পন্ন করার জন্য পৃথক অথবা আলাদা থাকার ধারণাকে প্রকাশ করতে বাইবেল লেখকেরা বেশ কিছু ইব্রীয় ও গ্রীক শব্দ ব্যবহার করেছিলেন। ইংরাজি বাইবেলগুলিতে এই শব্দগুলিকে “উৎসর্গীকরণ,” “অভিষেক” অথবা “আত্মনিবেদন” এই শব্দগুলি দ্বারা অনুবাদ করা হয়েছে। কখনও কখনও এই পরিভাষাগুলি কাঠামোগুলির ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা হয়েছে—সাধারণত প্রাচীন যিরূশালেমে ঈশ্বরের মন্দির এবং সেখানে প্রচলিত উপাসনা পদ্ধতির জন্য। জাগতিক বিষয়গুলির প্রসঙ্গে এই শব্দগুলি খুব কমই ব্যবহৃত হয়েছে।

“ইস্রায়েলের ঈশ্বর” এর প্রতি উৎসর্গীকরণ

২. কেন যিহোবা ন্যায়সংগতভাবেই “ইস্রায়েলের ঈশ্বর” হিসাবে অভিহিত হয়েছিলেন?

২ সাধারণ কাল পূর্ব ১৫১৩ সালে, ঈশ্বর মিশরের দাসত্ব থেকে ইস্রায়েলীয়দের মুক্ত করেছিলেন। এর অল্প কিছুদিন পরেই, তাদের সাথে এক চুক্তিভিত্তিক সম্পর্ক স্থাপন করার দ্বারা তিনি তাদের তাঁর নিজস্ব লোক হিসাবে আলাদা করেছিলেন। তাদের বলা হয়েছিল: “এখন যদি তোমরা আমার রবে অবধান কর ও আমার নিয়ম পালন কর, তবে তোমরা সকল জাতি অপেক্ষা আমার নিজস্ব অধিকার হইবে, কেননা সমস্ত পৃথিবী আমার।” (যাত্রাপুস্তক ১৯:৫; গীতসংহিতা ১৩৫:৪) ইস্রায়েলীয়দের নিজস্ব অধিকারভুক্ত করায়, যিহোবা ন্যায়সংগতভাবেই “ইস্রায়েলের ঈশ্বর” বলে অভিহিত হয়েছিলেন।—যিহোশূয় ২৪:২৩.

৩. ইস্রায়েলকে তাঁর নিজস্ব লোক হিসাবে মনোনীত করার দ্বারা কেন যিহোবা পক্ষপাতিত্ব দেখাননি?

৩ ইস্রায়েলীয়দের তাঁর উৎসর্গীকৃত লোক হিসাবে মনোনীত করার ক্ষেত্রে যিহোবা পক্ষপাতিত্ব করেননি, কারণ তিনি ন-ইস্রায়েলীয়দের জন্যও প্রেমের সাথে চিন্তা করেছিলেন। তিনি তাঁর লোকেদের নির্দেশ দিয়েছিলেন: “কোন বিদেশী লোক যদি তোমাদের দেশে তোমাদের সহিত বাস করে, তোমরা তাহার প্রতি উপদ্রব করিও না। তোমাদের নিকটে তোমাদের স্বদেশীয় লোক যেমন, তোমাদের সহপ্রবাসী বিদেশী লোকও তেমনি হইবে; তুমি তাহাকে আপনার মত প্রেম করিও; কেননা মিসর দেশে তোমরাও বিদেশী ছিলে; আমি সদাপ্রভু তোমাদের ঈশ্বর।” (লেবীয় পুস্তক ১৯:৩৩, ৩৪) কয়েক শতাব্দী পর, ঈশ্বরের দৃষ্টিভঙ্গি প্রেরিত পিতরের মনে প্রবলভাবে ছাপ ফেলেছিল, যিনি স্বীকার করেছিলেন: “আমি সত্যই বুঝিলাম, ঈশ্বর মুখাপেক্ষা [“পক্ষপাতিত্ব,” “NW”] করেন না; কিন্তু প্রত্যেক জাতির মধ্যে যে কেহ তাঁহাকে ভয় করে ও ধর্ম্মাচরণ করে, সে তাঁহার গ্রাহ্য হয়।”—প্রেরিত ১০:৩৪, ৩৫.

৪. ঈশ্বর ও ইস্রায়েলের মধ্যে সম্পর্কের শর্তগুলি কী ছিল এবং ইস্রায়েলীয়রা কি সেগুলি অনুসারে জীবনযাপন করেছিল?

৪ এছাড়াও, লক্ষ্য করুন যে ঈশ্বরের উৎসর্গীকৃত লোক হওয়া শর্তসাপেক্ষ ছিল। একমাত্র তারা যদি যথাযথভাবে ঈশ্বরের রবে অবধান করত এবং তাঁর নিয়ম পালন করত তবে তারা তাঁর “নিজস্ব অধিকার” হতে পারত। দুঃখের বিষয় যে, ইস্রায়েলীয়রা এই চাহিদাগুলি পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছিল। সা.কা. প্রথম শতাব্দীতে ঈশ্বর কর্তৃক প্রেরিত মশীহকে অগ্রাহ্য করার পর, তারা তাদের সুযোগপ্রাপ্ত অবস্থান হারিয়েছিল। যিহোবা আর “ইস্রায়েলের ঈশ্বর” ছিলেন না। স্বাভাবিক ইস্রায়েলীয়রাও আর ঈশ্বরের উৎসর্গীকৃত লোক ছিল না।—মথি ২৩:২৩ পদের সাথে তুলনা করুন।

“ঈশ্বরের ইস্রায়েলের” উৎসর্গীকরণ

৫, ৬. (ক) মথি ২১:৪২, ৪৩ পদে লিপিবদ্ধ তাঁর ভবিষ্যদ্বাণীমূলক বাক্যগুলির দ্বারা যীশু কী বোঝাতে চেয়েছিলেন? (খ) কখন এবং কিভাবে ‘ঈশ্বরের ইস্রায়েল’ অস্তিত্বে এসেছিলেন?

৫ এর অর্থ কি এই যে তখন যিহোবার আর কোন উৎসর্গীকৃত লোক ছিল না? না। গীতরচককে উদ্ধৃত করে, যীশু খ্রীষ্ট ভাববাণী করেছিলেন: “তোমরা কি কখনও শাস্ত্রে পাঠ কর নাই, ‘যে প্রস্তর গাঁথকেরা অগ্রাহ্য করিয়াছে, তাহাই কোণের প্রধান প্রস্তর হইয়া উঠিল; ইহা প্রভু হইতেই হইয়াছে, ইহা আমাদের দৃষ্টিতে অদ্ভুত’? এই জন্য আমি তোমাদিগকে কহিতেছি, তোমাদের নিকট হইতে ঈশ্বরের রাজ্য কাড়িয়া লওয়া যাইবে, এবং এমন এক জাতিকে দেওয়া হইবে, যে জাতি তাহার ফল দিবে।”—মথি ২১:৪২, ৪৩.

৬ “যে জাতি তাহার ফল দিবে” সেই জাতি হিসাবে খ্রীষ্টীয় মণ্ডলী প্রমাণিত হয়েছিল। পৃথিবীতে তাঁর সাময়িক বসবাসকালে, যীশু এর প্রথম সম্ভাব্য সদস্যদের মনোনীত করেছিলেন। কিন্তু সা.কা. ৩৩ সালে পঞ্চাশত্তমীর দিনে, এর প্রায় ১২০ জন প্রথম সদস্যদের উপর তাঁর পবিত্র আত্মা বর্ষণের দ্বারা যিহোবা ঈশ্বর স্বয়ং খ্রীষ্টীয় মণ্ডলীর ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন। (প্রেরিত ১:১৫; ২:১-৪) প্রেরিত পিতর যেমন পরবর্তী সময়ে লিখেছিলেন, এই নবগঠিত মণ্ডলীটি তখন “মনোনীত বংশ, রাজকীয় যাজকবর্গ, পবিত্র জাতি, [ঈশ্বরের] নিজস্ব প্রজাবৃন্দ” হয়েছিল। কোন্‌ কারণের জন্য মনোনীত? তারা “তাঁহারই গুণকীর্ত্তন” করবেন “যিনি [তাহাদিগকে] অন্ধকার হইতে আপনার আশ্চর্য্য জ্যোতির মধ্যে আহ্বান করিয়াছেন।” (১ পিতর ২:৯) ঈশ্বরের আত্মার দ্বারা অভিষিক্ত খ্রীষ্টের অনুগামীরা তখন একটি উৎসর্গীকৃত জাতি, ‘ঈশ্বরের ইস্রায়েলে’ পরিণত হয়েছিলেন।—গালাতীয় ৬:১৬.

৭. ঈশ্বরের ইস্রায়েলের সদস্যেরা কোন্‌ বিষয়গুলি উপভোগ করেছিলেন এবং তাদের কী পরিহার করতে বলা হয়েছিল?

৭ পবিত্র জাতির সদস্যেরা “নিজস্ব প্রজাবৃন্দ” হওয়া সত্ত্বেও, তারা ক্রীতদাসে পরিণত হননি। বিপরীতে, তারা উৎসর্গীকৃত স্বাভাবিক ইস্রায়েল জাতির চেয়ে আরও অধিক স্বাধীনতা উপভোগ করেছিলেন। যীশু এই নতুন জাতির সম্ভাব্য সদস্যদের জন্য প্রতিজ্ঞা করেছিলেন: “তোমরা সেই সত্য জানিবে, এবং সেই সত্য তোমাদিগকে স্বাধীন করিবে।” (যোহন ৮:৩২) প্রেরিত পৌল উল্লেখ করেছিলেন যে খ্রীষ্টানেরা ব্যবস্থা চুক্তির চাহিদাগুলি থেকে স্বাধীন ছিলেন। এই বিষয়ে তিনি গালাতিয়ার সহবিশ্বাসীদের পরামর্শ দিয়েছিলেন: “স্বাধীনতার নিমিত্তই খ্রীষ্ট আমাদিগকে স্বাধীন করিয়াছেন; অতএব তোমরা স্থির থাক, এবং দাসত্ব-যোঁয়ালিতে আর বদ্ধ হইও না।”—গালাতীয় ৫:১.

৮. কোন্‌ ক্ষেত্রে খ্রীষ্টীয় ব্যবস্থা ব্যক্তিবিশেষকে ব্যবস্থা চুক্তির চেয়ে আরও অধিক স্বাধীনতা প্রদান করে?

৮ প্রাচীন কালের স্বাভাবিক ইস্রায়েলের বৈসাদৃশ্যে, আজকে ঈশ্বরের ইস্রায়েল তাদের উৎসর্গীকরণের চাহিদাগুলি যথাযথভাবে পালন করেছেন। এটি আশ্চর্যজনক কিছু নয়, কারণ এর সদস্যেরা স্বেচ্ছায় পালন করাকে মনোনয়ন করেন। স্বাভাবিক ইস্রায়েলের সদস্যেরা জন্মসূত্রে উৎসর্গীকৃত হয়েছিল পক্ষান্তরে ঈশ্বরের ইস্রায়েলের সদস্যেরা মনোনয়নের মাধ্যমে তা হয়েছিলেন। এই দিক দিয়ে খ্রীষ্টীয় ব্যবস্থার সাথে যিহূদী ব্যবস্থা চুক্তির বৈসাদৃশ্য ছিল, যা মনোনয়নের স্বাধীনতা না দিয়েই ব্যক্তিবিশেষের উপর উৎসর্গীকরণ আরোপ করেছিল।

৯, ১০. (ক) কিভাবে যিরমিয় ইঙ্গিত করেছিলেন যে উৎসর্গীকরণের ক্ষেত্রে এক পরিবর্তন হবে? (খ) কেন আপনি বলবেন যে আজকে সমস্ত উৎসর্গীকৃত খ্রীষ্টানেরা ঈশ্বরের ইস্রায়েলের সদস্য নন?

৯ উৎসর্গীকরণ সম্বন্ধীয় এক পরিবর্তনের বিষয়ে ভাববাদী যিরমিয় ভাববাণী করেছিলেন যখন তিনি লিখেছিলেন: “দেখ, এমন সময় আসিতেছে, যে সময়ে আমি ইস্রায়েল-কুলের ও যিহূদা-কুলের সহিত এক নূতন নিয়ম স্থির করিব। মিসর দেশ হইতে তাহাদের পিতৃপুরুষদিগকে বাহির করিয়া আনিবার জন্য তাহাদের হস্ত গ্রহণ করিবার দিনে আমি তাহাদের সহিত যে নিয়ম স্থির করিয়াছিলাম, সেই নিয়মানুসারে নয়; আমি তাহাদের স্বামী হইলেও তাহারা আমার সেই নিয়ম লঙ্ঘন করিল, ইহা সদাপ্রভু কহেন। কিন্তু সেই সকল দিনের পর আমি ইস্রায়েল-কুলের সহিত এই নিয়ম স্থির করিব, ইহা সদাপ্রভু কহেন, আমি তাহাদের অন্তরে আমার ব্যবস্থা দিব, ও তাহাদের হৃদয়ে তাহা লিখিব; এবং আমি তাহাদের ঈশ্বর হইব, ও তাহারা আমার প্রজা হইবে।”—যিরমিয় ৩১:৩১-৩৩.

১০ ঈশ্বরের ব্যবস্থা “তাহাদের অন্তরে,” ঠিক যেন “তাহাদের হৃদয়ে” লিখিত থাকায়, ঈশ্বরের ইস্রায়েলের সদস্যেরা তাদের উৎসর্গীকরণের যোগ্যরূপে জীবনযাপন করতে প্রণোদিত হয়েছেন। তাদের প্রেরণা স্বাভাবিক ইস্রায়েলীয়দের চেয়ে আরও শক্তিশালী, যারা মনোনয়ন নয় কিন্তু জন্মসূত্রে উৎসর্গীকৃত হয়েছিল। আজকে ঈশ্বরের ইস্রায়েল দ্বারা প্রদর্শিত ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করার শক্তিশালী প্রেরণায়, সমগ্র জগদ্ব্যাপী পঞ্চাশ লক্ষেরও বেশি সহউপাসকেরা অংশ নিচ্ছেন। অনুরূপভাবে, যিহোবা ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করার জন্য তারা তাঁর কাছে তাদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। যদিও এই ব্যক্তিদের ঈশ্বরের ইস্রায়েল গঠনকারীদের মত স্বর্গীয় জীবনের আশা নেই, তবুও তারা ঈশ্বরের স্বর্গীয় রাজ্যের শাসনাধীনে পৃথিবীতে অনন্তকাল বেঁচে থাকার প্রত্যাশায় আনন্দ করেন। তারা এর অল্পসংখ্যক অবশিষ্ট সদস্যদের ‘যিনি [তাহাদিগকে] অন্ধকার হইতে আপনার আশ্চর্য্য জ্যোতির মধ্যে আহ্বান করিয়াছেন, তাঁহারই গুণকীর্ত্তন’ করা সম্বন্ধীয় তাদের কর্মভার সম্পাদনে সক্রিয়ভাবে সমর্থন করার দ্বারা আত্মিক ইস্রায়েলের প্রতি উপলব্ধি প্রদর্শন করেন।

বিজ্ঞতার সাথে ঈশ্বর-দত্ত স্বাধীনতা অনুশীলন করা

১১. কোন্‌ ক্ষমতা দিয়ে মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছিল এবং এটি কিভাবে ব্যবহৃত হওয়া উচিত?

১১ ঈশ্বর মানুষ সৃষ্টি করেছিলেন যেন তারা স্বাধীনতার মূল্য বোঝে। তিনি তাদের স্বাধীন ইচ্ছা ধারণের ক্ষমতা দিয়েছিলেন। প্রথম মানব দম্পতি তাদের মনোনয়নের স্বাধীনতাকে ব্যবহার করেছিলেন। কিন্তু, তারা অজ্ঞতা এবং প্রেমহীনতার সাথে এমন এক মনোনয়ন করেছিলেন যা তাদের নিজেদের এবং তাদের সন্তানসন্ততি উভয়কে বিপর্যয়ের দিকে পরিচালিত করেছিল। তবুও, এটি স্পষ্টভাবে দেখায় যে যিহোবা কখনই বুদ্ধিবিশিষ্ট প্রাণীদের তাদের আভ্যন্তরীণ প্রেরণা অথবা আকাঙ্ক্ষাগুলির বিপরীতে কোন পদক্ষেপ নিতে জোর করেন না। আর যেহেতু “ঈশ্বর হৃষ্টচিত্ত দাতাকে ভাল বাসেন,” তাই একমাত্র সেই উৎসর্গীকরণই তাঁর কাছে গ্রহণযোগ্য যার ভিত্তি প্রেম, যা হৃষ্টচিত্তে স্বেচ্ছায় করা হয়েছে ও যা মনোনয়নের স্বাধীনতার উপর প্রতিষ্ঠিত। (২ করিন্থীয় ৯:৭) অন্য যে কোন ধরনের উৎসর্গীকরণ গ্রহণযোগ্য নয়।

১২, ১৩. তীমথি কিভাবে উপযুক্ত শিশু প্রশিক্ষণের আদর্শ হিসাবে প্রমাণিত হন এবং তার উদাহরণ অনেক যুবক-যুবতীদের কী করতে পরিচালিত করেছে?

১২ এই চাহিদাকে সম্পূর্ণরূপে শনাক্ত করে, যিহোবার সাক্ষীরা ঈশ্বরের প্রতি একজনের উৎসর্গীকরণকে সমর্থন করেন কিন্তু তারা কখনও কাউকে এইধরনের উৎসর্গীকরণ করতে বাধ্য করেন না, এমনকি তাদের সন্তানদেরও নয়। বিভিন্ন গির্জার বিপরীতে, সাক্ষীরা তাদের সন্তানদের শিশু অবস্থায় বাপ্তাইজিত করেন না, এটি ঠিক যেন ব্যক্তিগত মনোনয়নের কোন সুযোগ না দিয়ে তাদের উৎসর্গীকরণে বাধ্য করা। যুবক তীমথির দ্বারা অনুসরিত শাস্ত্রীয় আদর্শকে অনুসরণ করা প্রয়োজন। তিনি একজন প্রাপ্তবয়স্ক ছিলেন যখন প্রেরিত পৌল তাকে বলেছিলেন: “যাহা যাহা শিখিয়াছ ও যাহার যাহার প্রমাণ জ্ঞাত হইয়াছ, তাহাতেই স্থির থাক; তুমি ত জান যে, কাহাদের কাছে শিখিয়াছ। আরও জান, তুমি শিশুকাল অবধি পবিত্র শাস্ত্রকলাপ জ্ঞাত আছ, সে সকল খ্রীষ্ট যীশু সম্বন্ধীয় বিশ্বাস দ্বারা তোমাকে পরিত্রাণের নিমিত্ত জ্ঞানবান্‌ করিতে পারে।”—২ তীমথিয় ৩:১৪, ১৫.

১৩ এটি লক্ষণীয় যে তীমথি পবিত্র শাস্ত্রকলাপ জ্ঞাত ছিলেন কারণ তাকে শিশুকাল থেকে শিক্ষা দেওয়া হয়েছিল। তাকে তার মা এবং দিদিমার দেওয়া খ্রীষ্টীয় শিক্ষাগুলিকে বিশ্বাস করার জন্য—প্রমাণ জ্ঞাত করানো হয়েছিল—বাধ্য করা হয়নি। (২ তীমথিয় ১:৫) ফলস্বরূপ, তীমথি খ্রীষ্টের একজন অনুগামী হওয়ার মধ্যে বিজ্ঞতা দেখতে পেয়েছিলেন এবং তারপর খ্রীষ্টীয় উৎসর্গীকরণের ব্যক্তিগত মনোনয়ন করেছিলেন। আধুনিক সময়ে, হাজার হাজার যুবক-যুবতী যাদের বাবামা যিহোবার সাক্ষী তারা এই উদাহরণ অনুসরণ করেছে। (গীতসংহিতা ১১০:৩) আবার অনেকে করেনি। এটি ব্যক্তিগত মনোনয়নের বিষয়।

কার দাস হওয়াকে মনোনীত করবেন?

১৪. সম্পূর্ণ স্বাধীনতা সম্বন্ধে রোমীয় ৬:১৬ পদ আমাদের কী বলে?

১৪ কোন মানুষই সম্পূর্ণরূপে স্বাধীন নয়। প্রত্যেকেই তার স্বাধীনতার ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক কিছু আইন যেমন অভিকর্ষের আইনের দ্বারা সীমাবদ্ধ যা কোনক্রমেই উপেক্ষা করা যায় না। আধ্যাত্মিক অর্থেও, কোন ব্যক্তি সম্পূর্ণরূপে স্বাধীন নন। পৌল যুক্তি দেখিয়েছিলেন: “তোমরা কি জান না যে, আজ্ঞা পালনার্থে যাহার নিকটে দাসরূপে আপনাদিগকে সমর্পণ কর, যাহার আজ্ঞা মান, তোমরা তাহারই দাস; হয় মৃত্যুজনক পাপের দাস, নয় ধার্ম্মিকতাজনক আজ্ঞাপালনের দাস?”—রোমীয় ৬:১৬.

১৫. (ক) লোকেরা দাস হওয়া সম্বন্ধে কেমন বোধ করেন কিন্তু অধিকাংশই পরিণামে কী করেন? (খ) আমরা নিজেদের কোন্‌ উপযুক্ত প্রশ্নগুলি জিজ্ঞাসা করতে পারি?

১৫ কারও দাস হওয়ার ধারণাটি অধিকাংশ লোকেদের মনে বিষাদের ছাপ ফেলে। কিন্তু, আজকের জগতের বাস্তব চিত্রটি হল যে লোকেরা প্রায়ই বিভিন্ন চতুর উপায়গুলির দ্বারা নিজেদের পরিচালিত এবং প্রভাবিত হতে দেয় ফলে তারা অনিচ্ছাকৃতভাবে অন্যের ইচ্ছানুযায়ী কাজ করে থাকে। দৃষ্টান্তস্বরূপ, বিজ্ঞাপন প্রতিষ্ঠান এবং চিত্তবিনোদনের জগৎ অনুসরণের জন্য মানগুলি স্থাপনের মাধ্যমে লোকেদের একই চিন্তাধারায় নিয়ে আসার প্রচেষ্টা করে থাকে। রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় সংগঠনগুলি তাদের ধারণা ও লক্ষ্যগুলিকে সমর্থন করার জন্য লোকেদের প্ররোচিত করে, সর্বদা কেবল প্রত্যয় উৎপাদনকারী যুক্তিগুলির দ্বারা নয় কিন্তু প্রায়ই ঐক্য অথবা নিষ্ঠাবোধের প্রতি আকৃষ্ট করার দ্বারা। যেহেতু পৌল উল্লেখ করেছিলেন যে ‘যাহার আজ্ঞা মানি, আমরা তাহারই দাস,’ তাই আমরা প্রত্যেকে নিজেদের জিজ্ঞাসা করলে ভাল করব যে, ‘আমি কার দাস? আমার সিদ্ধান্তগুলি এবং আমার জীবনধারায় কে সর্বাপেক্ষা বেশি প্রভাব বিস্তার করেন? ধর্মীয় পাদ্রিবর্গ, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, ধনশালী ব্যবসায়ীরা অথবা বিনোদন জগতের ব্যক্তিত্বরা? আমি কার আজ্ঞা পালন করি—ঈশ্বরের অথবা মানুষের?’

১৬. কোন্‌ অর্থে খ্রীষ্টানেরা ঈশ্বরের দাস এবং এইধরনের দাসত্বের প্রতি উপযুক্ত দৃষ্টিভঙ্গি কী?

১৬ খ্রীষ্টানেরা ঈশ্বরের প্রতি বাধ্যতাকে ব্যক্তিগত স্বাধীনতার উপর অবৈধ হস্তক্ষেপ হিসাবে দেখেন না। ব্যক্তিগত আকাঙ্ক্ষা ও অগ্রাধিকারগুলি ঈশ্বরের ইচ্ছার সাথে সংগতিপূর্ণ করার দ্বারা, তারা স্বেচ্ছায় তাদের আদর্শ, যীশু খ্রীষ্টের মত তাদের স্বাধীনতাকে ব্যবহার করেন। (যোহন ৫:৩০; ৬:৩৮) মণ্ডলীর মস্তকরূপে মান্য করে নিজেদের তাঁর বশীভূত করার মাধ্যমে তারা “খ্রীষ্টের মন” গড়ে তোলেন। (১ করিন্থীয় ২:১৪-১৬; কলসীয় ১:১৫-১৮) এটি অনেকটা একজন স্ত্রীলোকের মত যিনি তার ভালবাসার ব্যক্তিকে বিবাহ করেন ও স্বেচ্ছায় তার সাথে সহযোগিতা করেন। বাস্তবিকই, অভিষিক্ত খ্রীষ্টানবর্গকে খ্রীষ্টের সাথে বাগদানকৃত সতী কন্যা বলা হয়েছে।—২ করিন্থীয় ১১:২; ইফিষীয় ৫:২৩, ২৪; প্রকাশিত বাক্য ১৯:৭, ৮.

১৭. সমস্ত যিহোবার সাক্ষীরা কী হওয়াকে মনোনয়ন করেছেন?

১৭ স্বর্গীয় অথবা পার্থিব আশাসম্পন্ন যাই হোন না কেন, প্রত্যেক যিহোবার সাক্ষী ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করার এবং শাসক হিসাবে তাঁর আজ্ঞা মেনে চলার জন্য তাঁর প্রতি এক ব্যক্তিগত উৎসর্গীকরণ করেছেন। প্রত্যেক সাক্ষীর জন্য, তিনি ঈশ্বরের দাস হবেন নাকি মানুষের দাস থাকবেন তা নির্বাচনের ক্ষেত্রে উৎসর্গীকরণ এক ব্যক্তিগত মনোনয়ন হয়ে এসেছে। এটি প্রেরিত পৌলের পরামর্শের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ: “তোমরা মূল্য দ্বারা ক্রীত হইয়াছ, মনুষ্যদের দাস হইও না।”—১ করিন্থীয় ৭:২৩.

নিজেদের উপকৃত করতে শেখা

১৮. কখন একজন সম্ভাব্য সাক্ষী বাপ্তিস্মের যোগ্য হন?

১৮ একজন যিহোবার সাক্ষী হওয়ার যোগ্যতা অর্জনের পূর্বে, এক ব্যক্তিকে অবশ্যই শাস্ত্রীয় শর্তগুলি পূরণ করতে হবে। একজন সম্ভাব্য সাক্ষী খ্রীষ্টীয় উৎসর্গীকরণের নিহিতার্থ প্রকৃতই বুঝতে পেরেছেন কি না সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রাচীনেরা সতর্কতা অবলম্বন করে থাকেন। তিনি কি প্রকৃতই একজন যিহোবার সাক্ষী হতে চান? তিনি কি এর সাথে সংযুক্ত অপরিহার্য বিষয়গুলি অনুযায়ী জীবনযাপন করতে ইচ্ছুক? যদি না হন, তবে তিনি বাপ্তিস্মের জন্য যোগ্য নন।

১৯. কেউ ঈশ্বরের একজন উৎসর্গীকৃত দাস হওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে কেন তার সমালোচনা করার কোন কারণ নেই?

১৯ কিন্তু, একজন ব্যক্তি যদি সমস্ত চাহিদাগুলি পূরণ করেন, তবে কেন ঈশ্বর এবং তাঁর অনুপ্রাণিত বাক্যের দ্বারা নিজেকে প্রভাবিত হতে দেওয়ার স্বতঃপ্রবৃত্ত ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তের জন্য তার সমালোচিত হওয়া উচিত? মানুষের চেয়ে ঈশ্বরের দ্বারা প্রভাবিত হতে দেওয়া কি কম বাঞ্ছনীয়? অথবা এতে কি কম উপকার লাভ হয়? যিহোবার সাক্ষীরা তা মনে করেন না। যিশাইয়ের দ্বারা লিখিত ঈশ্বরের বাক্যের সাথে তারা সর্বান্তকরণে একমত: “আমি সদাপ্রভু তোমার ঈশ্বর, আমি তোমার উপকারজনক শিক্ষা দান করি, ও তোমার গন্তব্য পথে তোমাকে গমন করাই।”—যিশাইয় ৪৮:১৭.

২০. লোকেরা কোন্‌ কোন্‌ ক্ষেত্রে বাইবেল সত্যের দ্বারা স্বাধীন হন?

২০ বাইবেলের সত্য, এক অগ্নিময় নরকে অনন্তকালীন যন্ত্রণার মত মিথ্যা ধর্মীয় মতবাদগুলি বিশ্বাস করা থেকে লোকেদের স্বাধীন করে। (উপদেশক ৯:৫, ১০) পরিবর্তে, এটি মৃতদের জন্য প্রকৃত আশার কারণে তাদের হৃদয় কৃতজ্ঞতায় পূর্ণ করে—পুনরুত্থান যা যীশু খ্রীষ্টের মুক্তির মূল্যরূপ বলিদানের ভিত্তিতে সম্ভবপর হয়েছে। (মথি ২০:২৮; প্রেরিত ২৪:১৫; রোমীয় ৬:২৩) বাইবেলের সত্য লোকেদের সেইসব রাজনৈতিক প্রতিজ্ঞাগুলির উপর নির্ভর করার নৈরাশ্য থেকে স্বাধীন করে যা প্রায়ই ব্যর্থ হয়। পরিবর্তে, এটি এই বিষয়টি জানানোর মাধ্যমে তাদের হৃদয় আনন্দে পরিপূর্ণ করে যে যিহোবার রাজ্য ইতিমধ্যে স্বর্গে শাসন করছে এবং শীঘ্রই সম্পূর্ণ পৃথিবীর উপর শাসন করবে। বাইবেলের সত্য বিভিন্ন অভ্যাস থেকে লোকেদের স্বাধীন করে যেগুলি পতিত মাংসের কাছে আবেদনমূলক হলেও ঈশ্বরের অসম্মান নিয়ে আসে এবং অসফল সম্পর্ক, অসুস্থতা ও অকাল মৃত্যুর মাধ্যমে অত্যধিক ক্ষতি করে। সংক্ষেপে বলতে গেলে, মানুষের দাস হওয়ার চেয়ে ঈশ্বরের দাস হওয়া আরও অনেক বেশি পরিমাণে উপকারজনক। বাস্তবিকপক্ষে, ঈশ্বরের প্রতি উৎসর্গীকরণ “ইহকালে . . . এবং আগামী যুগে অনন্ত জীবন” সম্বন্ধীয় উপকারগুলির বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দেয়।—মার্ক ১০:২৯, ৩০.

২১. ঈশ্বরের প্রতি উৎসর্গীকরণকে যিহোবার সাক্ষীরা কোন্‌ দৃষ্টিতে দেখে থাকেন এবং তাদের ইচ্ছা কী?

২১ প্রাচীনকালের ইস্রায়েলীয়দের মত যিহোবার সাক্ষীরা আজকে জন্মসূত্রে উৎসর্গীকৃত জাতির অংশ হননি। সাক্ষীরা উৎসর্গীকৃত খ্রীষ্টানদের দ্বারা গঠিত একটি মণ্ডলীর অংশ। প্রত্যেক বাপ্তাইজিত সাক্ষী উৎসর্গীকরণ করার ক্ষেত্রে মনোনয়নের স্বাধীনতা ব্যক্তিগতভাবে ব্যবহার করার দ্বারা এরূপ হয়েছেন। বস্তুতপক্ষে, যিহোবার সাক্ষীদের জন্য উৎসর্গীকরণের ফল হল ঈশ্বরের সাথে এক আন্তরিক ব্যক্তিগত সম্পর্ক যা তাঁকে স্বেচ্ছায় সেবা করার দ্বারা চিহ্নিত। তারা এই আনন্দদায়ক সম্পর্ক বজায় ও সেই স্বাধীনতা চিরকাল দৃঢ়রূপে ধরে রাখার জন্য সর্বান্তকরণে আকাঙ্ক্ষা করেন যার দ্বারা যীশু খ্রীষ্ট তাদের স্বাধীন করেছেন।

আপনি কিভাবে উত্তর দেবেন?

◻ তাঁর “নিজস্ব অধিকার” হওয়ার জন্য ইস্রায়েলকে মনোনীত করার ক্ষেত্রে কেন ঈশ্বর পক্ষপাতিত্ব করেননি?

◻ আপনি কেন বলবেন যে খ্রীষ্টীয় উৎসর্গীকরণ স্বাধীনতাকে হ্রাস করে না?

◻ যিহোবা ঈশ্বরের প্রতি উৎসর্গীকরণের উপকারগুলি কী?

◻ মানুষের দাস হওয়ার চেয়ে যিহোবার পরিচারক হওয়া কেন উত্তম?

[১৫ পৃষ্ঠার চিত্র]

প্রাচীন ইস্রায়েলে, ঈশ্বরের প্রতি উৎসর্গীকরণ জন্মগত বিষয় ছিল

[১৬ পৃষ্ঠার চিত্র]

খ্রীষ্টীয় উৎসর্গীকরণ মনোনয়নের বিষয়

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৫)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার