জীবন ও পরিচর্যা সভার জন্য অধ্যয়ন পুস্তিকা-র রেফারেন্স
মার্চ ৬-১২
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | যিরমিয় ১-৪
“তোমার উদ্ধারার্থে আমি তোমার সঙ্গে সঙ্গে আছি”
(যিরমিয় ১:৬) তখন আমি কহিলাম, হায় হায়, হে প্রভু সদাপ্রভু, দেখ, আমি কথা কহিতে জানি না, কেননা আমি বালক।
যিরমিয়ের মতো জাগ্রত থাকুন
৪ যিরমিয় যখন একজন প্রহরী হিসেবে যিহোবার কাছ থেকে কার্যভার লাভ করেছিলেন, তখন তার বয়স হয়তো প্রায় ২৫ বছর। (যির. ১:১, ২) কিন্তু, তিনি নিজেকে নিতান্তই একজন বালক বলে মনে করেছিলেন, যিনি সেই জাতির প্রাচীনবর্গের সঙ্গে কথা বলার ক্ষেত্রে একেবারে অযোগ্য, যারা কিনা বয়সে বড়ো এবং কর্তৃত্বে রয়েছে। (যির. ১:৬) তাকে জোরালো অভিযোগ এবং ভীতিজনক বিচার ঘোষণা করতে হয়েছিল আর তা বিশেষভাবে যাজক, মিথ্যা ভাববাদী, শাসক ও সেইসঙ্গে সেই ব্যক্তিদের কাছে, যারা “আপন আপন ধাবন পথে” চলে এবং “নিত্যস্থায়ী বিপথগমন” দ্বারা বিপথগামী হয়। (যির. ৬:১৩; ৮:৫, ৬) রাজা শলোমনের চমৎকার মন্দির, যা প্রায় চার শতাব্দী ধরে সত্য উপাসনার কেন্দ্র ছিল, সেটা ধ্বংস হয়ে যাবে। যিরূশালেম ও যিহূদা জনশূন্য হয়ে পড়বে এবং সেখানকার অধিবাসীদের বন্দি করে নিয়ে যাওয়া হবে। স্পষ্টতই, যিরমিয়কে যে-বার্তা জানানোর জন্য কার্যভার দেওয়া হয়েছিল, তা অতীব জরুরি ছিল!
(যিরমিয় ১:৭-১০) কিন্তু সদাপ্রভু আমাকে কহিলেন, ‘আমি বালক,’ এমন কথা বলিও না; কিন্তু আমি তোমাকে যাহার কাছে পাঠাইব, তাহারই কাছে তুমি যাইবে, এবং তোমাকে যাহা আজ্ঞা করিব, তাহাই বলিবে। ৮ উহাদের সম্মুখে ভীত হইও না, কেননা তোমার উদ্ধারার্থে আমি তোমার সঙ্গে সঙ্গে আছি, ইহা সদাপ্রভু কহেন। ৯ পরে সদাপ্রভু আপন হস্ত বিস্তার করিয়া আমার মুখ স্পর্শ করিলেন, এবং সদাপ্রভু আমাকে কহিলেন, দেখ, আমি আমার বাক্য তোমার মুখে দিলাম; ১০ দেখ, উৎপাটন, ভঙ্গ বিনাশ ও নিপাত করিবার নিমিত্ত, পত্তন ও রোপণ করিবার নিমিত্ত, আমি জাতিগণের উপরে ও রাজ্য সকলের উপরে আজ তোমাকে নিযুক্ত করিলাম।
(যিরমিয় ১:১৭-১৯) অতএব তুমি কটিবন্ধন কর, উঠ; আমি তোমাকে যাহা যাহা আজ্ঞা করি, সে সমস্ত তাহাদিগকে বল; তাহাদের সম্মুখে উদ্বিগ্ন হইও না, পাছে আমি তাহাদের সাক্ষাতে তোমাকে উদ্বিগ্ন করি। ১৮ আর দেখ, আমি অদ্য সমগ্র দেশের বিরুদ্ধে, যিহূদার রাজগণের, তাহার অধ্যক্ষবর্গের, তাহার যাজকগণের ও দেশের লোকসাধারণের বিরুদ্ধে তোমাকে দৃঢ় নগর, লৌহস্তম্ভ ও পিত্তল-প্রাচীরস্বরূপ করিলাম। ১৯ তাহারা তোমার সহিত যুদ্ধ করিবে, কিন্তু তোমাকে পরাজয় করিতে পারিবে না, কারণ তোমার উদ্ধারার্থে আমি তোমার সঙ্গে সঙ্গে আছি, ইহা সদাপ্রভু কহেন।
প্রহরীদুর্গ ০৫ ১২/১৫ ২৩ অনু. ১৮
আপনি কার আজ্ঞা পালন করেন—ঈশ্বরের নাকি মানুষের?
১৮ ঈশ্বর, ভাববাদী যিরমিয়কে বলেছিলেন: “তোমার উদ্ধারার্থে আমি তোমার সঙ্গে সঙ্গে আছি।” (যিরমিয় ১:৮) কীভাবে আজকে যিহোবা আমাদেরকে তাড়না থেকে উদ্ধার করতে পারেন? তিনি হয়তো গমলীয়েলের মতো নিরপেক্ষ এক বিচারকের উত্থাপন করতে পারেন। অথবা তিনি হয়তো এই বিষয়টা নিশ্চিত করতে পারেন যে, কলুষিত এবং বিরোধী কর্মকর্তার জায়গায় অপ্রত্যাশিতভাবে যেন আরও যুক্তিবাদী কোনো ব্যক্তি আসেন। তবে, মাঝে মাঝে যিহোবা হয়তো তাঁর লোকেদের প্রতি তাড়না ঘটতে দেন। (২ তীমথিয় ৩:১২) ঈশ্বর যদি আমাদেরকে তাড়িত হতে দেন, তা হলে তিনি সবসময় আমাদের সেই তাড়না সহ্য করার শক্তি দেবেন। (১ করিন্থীয় ১০:১৩) আর ঈশ্বর যা-ই ঘটতে দিন না কেন, চূড়ান্ত পরিণতি সম্বন্ধে আমাদের কোনো সন্দেহ নেই: যারা ঈশ্বরের লোকেদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে, তারা ঈশ্বরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে এবং ঈশ্বরের বিরুদ্ধে যুদ্ধকারীরা জয়ী হতে পারবে না।
যিরমিয় ৮৮ অনু. ১৪-১৫, ইংরেজি
“আমি আপ্যায়িত করিয়াছি ক্লান্ত প্রাণকে”
আপনি কি ক্লান্ত প্রাণকে সতেজ করবেন?
১৪ যিরমিয় নিজে যেভাবে উৎসাহিত হয়েছিলেন আর তিনি যেভাবে ‘ক্লান্ত প্রাণ’ ব্যক্তিদের উৎসাহিত করেছিলেন, সেটার প্রতি আমাদের মনোযোগ দেওয়া উচিত। (যির. ৩১:২৫) এই ভাববাদী বিশেষভাবে যিহোবার কাছ থেকে উৎসাহ লাভ করেছিলেন। একটু চিন্তা করুন, যিহোবা যদি আপনাকে এই কথাগুলো বলতেন, তা হলে আপনি কতটা উৎসাহিত হতেন: “দেখ, আমি অদ্য . . . তোমাকে দৃঢ় নগর, . . . করিলাম। তাহারা তোমার সহিত যুদ্ধ করিবে, কিন্তু তোমাকে পরাজয় করিতে পারিবে না, কারণ তোমার উদ্ধারার্থে আমি তোমার সঙ্গে সঙ্গে আছি, ইহা সদাপ্রভু কহেন।” (যির. ১:১৮, ১৯) যিরমিয় উপযুক্ত কারণেই যিহোবাকে “আমার বল ও আমার দুর্গ, এবং সঙ্কটকালে আমার আশ্রয়” হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন।—যির. ১৬:১৯.
১৫ এটা লক্ষণীয় যে, যিহোবা যিরমিয়কে বলেছিলেন: “আমি তোমার সঙ্গে সঙ্গে আছি।” আপনার চেনাজানা কোনো ব্যক্তির যখন উৎসাহের প্রয়োজন হয়, তখন আপনি কী করতে পারেন, সেই বিষয়ে এখান থেকে আপনি কি কোনো ইঙ্গিত পান? কোনো খ্রিস্টান ভাই অথবা বোনের কিংবা কোনো আত্মীয়ের উৎসাহ প্রয়োজন তা বুঝতে পারা এক বিষয় আর সেই প্রয়োজনের প্রতি কার্যকরী উপায়ে সাড়া দেওয়া অন্য বিষয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে, সবচেয়ে কার্যকরী উপায় হল যিরমিয়ের জন্য ঈশ্বর যা করেছিলেন তা করা—দুর্দশাগ্রস্ত ব্যক্তির সঙ্গে থাকা। এরপর, কোনো এক পর্যায়ে উৎসাহজনক কিছু বলুন, তবে অনেক কিছু বলার প্রয়োজন নেই। সম্ভবত, অল্প কিছু কথাই আরও উত্তম ফল নিয়ে আসবে, যদি সেই কথাগুলো আশ্বাস দেওয়ার ও গড়ে তোলার মতো হয়। আপনার কথাগুলো অনেক গুছিয়ে বলতে হবে এমন নয়। বরং সহজসরল কথা বলুন, যা আগ্রহ, চিন্তা এবং প্রকৃত স্নেহ প্রকাশ করে। এই ধরনের কথা অনেক উত্তম ফল নিয়ে আসতে পারে।—পড়ুন, হিতোপদেশ ২৫:১১.
আধ্যাত্মিক রত্ন খুঁজে বের করুন
(যিরমিয় ২:১৩) কেননা আমার প্রজাবৃন্দ দুই দোষ করিয়াছে; জীবন্ত জলের উনুই যে আমি, আমাকে তাহারা ত্যাগ করিয়াছে; আর আপনাদের জন্য কূপ খুদিয়াছে, সেগুলি ভগ্ন কূপ, জলাধার হইতে পারে না।
(যিরমিয় ২:১৮) এখন শীহোর নদীর জল পান করিতে মিসরের পথে কেন যাইতেছ? অথবা ফরাৎ নদীর জল পান করিতে অশূরের পথে কেন যাইতেছ?
যিরমিয় বইয়ের প্রধান বিষয়গুলো
২:১৩, ১৮. অবিশ্বস্ত ইস্রায়েলীয়রা দুটো দোষ করেছিল। তারা আশীর্বাদ, নির্দেশনা ও সুরক্ষার নিশ্চিত উনুই বা উৎস, যিহোবাকে ত্যাগ করেছিল। আর তারা মিশর ও অশূরের সঙ্গে মিত্রবাহিনী গড়ে তোলার প্রচেষ্টা করার মাধ্যমে নিজেদের জন্য রূপক কূপ খনন করেছিল। আমাদের সময়ে মানব দর্শনবিদ্যা, মতবাদ ও জাগতিক রাজনীতির সমর্থন করতে গিয়ে সত্য ঈশ্বরকে ত্যাগ করা হল, ‘জীবন্ত জলের উনুইয়ের’ স্থলে “ভগ্ন কূপ” স্থাপন করা।
(যিরমিয় ৪:১০) তখন আমি কহিলাম, হায় হায়! হে প্রভু সদাপ্রভু, তুমি এই লোকদিগকে ও যিরশালেমকে নিতান্ত ভ্রান্ত করিয়াছ, কথিত হইয়াছে, তোমাদের শান্তি হইবে, কিন্তু তাহাদের প্রাণ পর্য্যন্ত খড়্গ প্রবেশ করিতেছে।
যিরমিয় বইয়ের প্রধান বিষয়গুলো
৪:১০; ১৫:১৮—কোন অর্থে যিহোবা তাঁর বিপথগামী লোকেদের ভ্রান্ত করেছিলেন? যিরমিয়ের দিনে এমন ভাববাদীরা ছিল, যারা ‘মিথ্যা ভাববাণী বলিতেছিল।’ (যিরমিয় ৫:৩১; ২০:৬; ২৩:১৬, ১৭, ২৫-২৮, ৩২) যিহোবা তাদেরকে ভ্রান্ত বার্তা ঘোষণা করা থেকে দমন করেননি।
বাইবেল পাঠ
(যিরমিয় ৪:১-১০) সদাপ্রভু কহেন, হে ইস্রায়েল, তুমি যদি ফিরিয়া আসিতে চাহ, তবে আমারই কাছে ফিরিয়া আইস; এবং যদি আমার দৃষ্টি হইতে তোমার ঘৃণার্হ বস্তু সকল দূর কর, তবে আর বিচলিত হইবে না। ২ আর তুমি সত্যে, ন্যায়ে, ও ধার্ম্মিকতায় ‘জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্য’ বলিয়া শপথ করিবে, আর জাতিগণ তাঁহাতেই আপনাদিগকে আশীর্ব্বাদ করিবে, তাঁহারই শ্লাঘা করিবে। ৩ কারণ সদাপ্রভু যিহূদার ও যিরশালেমের লোকদিগকে এই কথা কহেন, তোমরা আপনাদের পতিত ভূমি চাষ কর, কণ্টকবন মধ্যে বীজ বপন করিও না। ৪ হে যিহূদার লোক, হে যিরশালেমনিবাসিগণ, তোমরা সদাপ্রভুর উদ্দেশে ছিন্নত্বক্ হও, আপন আপন হৃদয়ের ত্বক্ দূর করিয়া ফেল, পাছে তোমাদের ক্রিয়ার দুষ্টতা প্রযুক্ত আমার ক্রোধ অগ্নিবৎ জ্বলিয়া উঠে, এবং এমন দাহ করে যে, কেহ নিবাইতে পারিবে না। ৫ তোমরা যিহূদা দেশে প্রচার কর, যিরশালেমে ঘোষণা কর; বল, তোমরা দেশে তূরীধ্বনি কর, চীৎকার করিয়া বল, তোমরা একত্র হও, আইস, আমরা দৃঢ় নগর সকলে প্রবেশ করি। ৬ সিয়োনের দিকে পতাকা তুল, রক্ষার্থে পলায়ন কর, বিলম্ব করিও না; কেননা আমি উত্তর দিক্ হইতে অমঙ্গল ও মহাধ্বংস আনিব। ৭ সিংহ আপন গহ্বর হইতে উঠিয়া আসিতেছে, জাতিগণের বিনাশক আসিতেছে; সে পথে আছে, সে স্বস্থান হইতে বাহির হইয়াছে, তোমার দেশ ধ্বংসস্থান করণার্থে আসিতেছে; তোমার নগর সকল উচ্ছিন্ন ও নিবাসীবিহীন হইবে। ৮ এই জন্য তোমরা চট পরিধান কর, বিলাপ ও হাহাকার কর, কেননা সদাপ্রভুর জলন্ত ক্রোধ আমাদের হইতে ফিরে নাই। ৯ সদাপ্রভু কহেন, সেই দিন রাজার হৃদয় ও অধ্যক্ষগণের হৃদয় ক্ষয় পাইবে, যাজকগণ চমকিয়া উঠিবে, ও ভাববাদিগণ স্তম্ভিত হইবে। ১০ তখন আমি কহিলাম, হায় হায়! হে প্রভু সদাপ্রভু, তুমি এই লোকদিগকে ও যিরশালেমকে নিতান্ত ভ্রান্ত করিয়াছ, কথিত হইয়াছে, তোমাদের শান্তি হইবে, কিন্তু তাহাদের প্রাণ পর্য্যন্ত খড়্গ প্রবেশ করিতেছে।
মার্চ ১৩-১৯
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | যিরমিয় ৫-৭
“তারা ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করা বন্ধ করে দিয়েছিল”
(যিরমিয় ৬:১৩-১৫) কেননা তাহারা ক্ষুদ্র ও মহান সকলেই লোভে লুব্ধ, ভাববাদী ও যাজক সকলেই কপটাচার করে। ১৪ আর তাহারা আমার জাতির ক্ষত কেবল একটুমাত্র সুস্থ করিয়াছে; যখন শান্তি নাই, তখন শান্তি শান্তি বলিয়াছে। ১৫ তাহারা ঘৃণার্হ কার্য্য করিয়াছে বলিয়া কি লজ্জিত হইল? তাহারা মোটে লজ্জিত হয় নাই, বিষণ্ণ হইতেও জানে না; তজ্জন্য তাহারা পতিতগণের মধ্যে পতিত হইবে; আমি যখন তাহাদের প্রতিফল দিব, তখন তাহাদের নিপাত হইবে, ইহা সদাপ্রভু কহেন।
প্রহরীদুর্গ ৮৮ ৪/১ ১১-১২ অনু. ৭-৮, ইংরেজি
যিরমিয়—ঈশ্বরের বিচার ঘোষণাকারী এক অপ্রিয় ভাববাদী
৭ “তাহারা তোমার সহিত যুদ্ধ করিবে,” যিহোবা সতর্ক করেছিলেন, “কিন্তু তোমাকে পরাজয় করিতে পারিবে না।” (যিরমিয় ১:১৯) কেন যিহুদিরা ও তাদের শাসকরা এই ভাববাদীর সঙ্গে যুদ্ধ করতে চেয়েছিল? কারণ তার বার্তা তাদের আত্মতুষ্টির মনোভাব এবং নিয়মরক্ষার খাতিরে করা উপাসনার উপর আক্রমণ করেছিল। যিরমিয় অকপটে বলেছিলেন: “দেখ, সদাপ্রভুর বাক্য তাহাদের টিট্কারির বিষয় হইয়াছে; সে বাক্যে তাহাদের কিছুই সন্তোষ হয় না। কেননা তাহারা ক্ষুদ্র ও মহান সকলেই লোভে লুব্ধ, ভাববাদী ও যাজক [যাদের নৈতিক বিষয় ও যিহোবার মানগুলোর পক্ষসমর্থন করা উচিত ছিল, তারা] সকলেই কপটাচার করে।”—যিরমিয় ৬:১০, ১৩.
৮ এটা ঠিক, বিভিন্ন বলি উৎসর্গ করার ক্ষেত্রে তারা এই জাতিকে নেতৃত্ব দিয়েছিল। তারা কেবল দায়সারাভাবে সত্য উপাসনা করে যাচ্ছিল, কিন্তু তাদের হৃদয় এর প্রতি নিবদ্ধ ছিল না। সঠিক আচরণের চেয়ে রীতিগত বিষয়গুলো পালন করা তাদের কাছে আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। একই সময়ে, যিহুদি ধর্মীয় নেতারা যখন শান্তি ছিল না, তখন “শান্তি শান্তি” বলে জাতিকে নিরাপত্তার এক মিথ্যা আশ্বাস দ্বারা শান্ত করছিল। (যিরমিয় ৬:১৪; ৮:১১) লোকেদের সঙ্গে ঈশ্বরের এক শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে এমনটা বিশ্বাস করানোর মাধ্যমে তারা লোকেদের বোকা বানাচ্ছিল। তারা মনে করেছিল, তাদের উদ্বিগ্ন হওয়ার প্রয়োজন নেই কারণ তারা যিহোবার সুরক্ষিত প্রজা এবং পবিত্র নগর ও মন্দির তাদের অধিকারে রয়েছে। কিন্তু এই বিষয়ে যিহোবাও কি একই দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করেছিলেন?
(যিরমিয় ৭:১-৭) যিরমিয়ের নিকটে সদাপ্রভুর এই বাক্য উপস্থিত হইল, ২ তুমি সদাপ্রভুর গৃহের দ্বারে দাঁড়াও, তথায় এই কথা প্রচার কর, বল, হে যিহূদার সমস্ত লোক, সদাপ্রভুর কাছে প্রণিপাত করণার্থে এই সকল দ্বারে প্রবেশ করিয়া থাক যে তোমরা, তোমরা সদাপ্রভুর বাক্য শুন। ৩ বাহিনীগণের সদাপ্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, এই কথা কহেন, তোমরা আপন আপন আচার-ব্যবহার শুদ্ধ কর, তাহাতে আমি তোমাদিগকে এই স্থানে বাস করাইব। ৪ তোমরা এ মিথ্যা কথায় বিশ্বাস করিও না, যথা, সদাপ্রভুর মন্দির, সদাপ্রভুর মন্দির, সদাপ্রভুর মন্দির এই সকল। ৫ যদি তোমরা আপন আপন আচার-ব্যবহার সম্পূর্ণরূপে শুদ্ধ কর; যদি বাদী প্রতিবাদীর বিচার যথার্থরূপে নিষ্পত্তি কর; ৬ যদি বিদেশী, পিতৃহীন ও বিধবাদের প্রতি উপদ্রব না কর, এই স্থানে নির্দ্দোষের রক্তপাত না কর, এবং আপনাদের অমঙ্গলের নিমিত্ত অন্য দেবগণের পশ্চাদ্গামী না হও, ৭ তবে আমি এই স্থানে, তোমাদের পিতৃপুরুষদিগকে এই যে দেশ দিয়াছি, এখানে তোমাদিগকে যুগে যুগে চিরকাল বাস করিতে দিব।
প্রহরীদুর্গ ৮৮ ৪/১ ১২ অনু. ৯-১০, ইংরেজি
যিরমিয়—ঈশ্বরের বিচার ঘোষণাকারী এক অপ্রিয় ভাববাদী
৯ যিহোবা যিরমিয়কে মন্দিরের দ্বারে এমন জায়গায় দাঁড়াতে বলেছিলেন, যেখানে সমস্ত লোক তাকে দেখতে পাবে আর তিনি তাকে সেই উপাসকদের কাছে তাঁর বার্তা ঘোষণা করতে বলেছিলেন, যারা মন্দিরে প্রবেশ করছিল। লোকেদের উদ্দেশে তাকে এই কথা বলতে হয়েছিল: “তোমরা এ মিথ্যা কথায় বিশ্বাস করিও না, যথা, সদাপ্রভুর মন্দির, সদাপ্রভুর মন্দির, সদাপ্রভুর মন্দির এই সকল। . . . তাহা উপকার করিতে পারে না।” তাদের মন্দির নিয়ে বড়াই করার সময় যিহুদিরা আসলে বিশ্বাস দ্বারা নয় বরং বাহ্য দৃশ্য দ্বারা চলছিল। তারা ইতিমধ্যেই যিহোবার এই সতর্কবাণী ভুলে গিয়েছিল: “স্বর্গ আমার সিংহাসন, পৃথিবী আমার পাদপীঠ; তোমরা আমার জন্য কিরূপ গৃহ নির্ম্মাণ করিবে?” নিখিলবিশ্বের সার্বভৌম প্রভু যিহোবা কখনোই তাদের মন্দিরের সীমানার মধ্যে আবদ্ধ ছিলেন না, তা সেটা যত জাঁকজমকপূর্ণই হোক না কেন!—যিরমিয় ৭:১-৮; যিশাইয় ৬৬:১.
১০ যিরমিয় প্রকাশ্যে হুল ফোটানোর মতো তিরস্কার করেই চলেন: “তোমরা কি চুরি, নরহত্যা, ব্যভিচার, মিথ্যাশপথ এবং বালের উদ্দেশে ধূপদাহ করিবে, এবং যাহাদিগকে জান নাই, এমন অন্য দেবগণের পশ্চাদ্গমন করিবে, . . . আর বলিবে, আমরা উদ্ধার পাইলাম, যেন ঐ সমস্ত ঘৃণার্হ কার্য্য করিতে পার?” ঈশ্বরের ‘মনোনীত লোক’ হিসেবে যিহুদিরা মনে করেছিল, যতদিন তারা মন্দিরে তাদের বলি নিয়ে আসবে, ততদিন তিনি তাদের যেকোনো আচরণ সহ্য করবেন। কিন্তু তারা যদি তাঁকে এমন একজন আবেগপ্রবণ বাবা হিসেবে দেখে, যিনি তার বখে যাওয়া একমাত্র সন্তানকে প্রশ্রয় দিচ্ছেন, তা হলে তাদের এক রূঢ় বাস্তবতার মুখোমুখি হতে হবে।—যিরমিয় ৭:৯, ১০; যাত্রাপুস্তক ১৯:৫, ৬.
(যিরমিয় ৭:৮-১৫) দেখ, তোমরা মিথ্যা কথায় বিশ্বাস করিতেছ, তাহা উপকার করিতে পারে না। ৯ তোমরা কি চুরি, নরহত্যা, ব্যভিচার, মিথ্যাশপথ এবং বালের উদ্দেশে ধূপদাহ করিবে, এবং যাহাদিগকে জান নাই, এমন অন্য দেবগণের পশ্চাদ্গমন করিবে, আর এখানে আসিয়া, ১০ এই যে গৃহের উপরে আমার নাম কীর্ত্তিত হইয়াছে, এই গৃহে আমার সাক্ষাতে দাঁড়াইবে, আর বলিবে, আমরা উদ্ধার পাইলাম, যেন ঐ সমস্ত ঘৃণার্হ কার্য্য করিতে পার? ১১ এই যে গৃহের উপরে আমার নাম কীর্ত্তিত হইয়াছে, এই গৃহ কি তোমাদের দৃষ্টিতে দস্যুগণের গহ্বর হইয়াছে? দেখ, আমি, আমিই উহা দেখিয়াছি, ইহা সদাপ্রভু কহেন। ১২ কিন্তু শীলোতে আমার যে স্থান ছিল, যেখানে আমি প্রথমে আপন নাম বাস করাইয়াছিলাম, তোমরা একবার তথায় গমন কর, এবং আমার প্রজা ইস্রায়েলের দুষ্টতা প্রযুক্ত আমি সেই স্থানের প্রতি যাহা করিয়াছি, তাহা দেখ। ১৩ আর এখন তোমরা এই সকল কর্ম্ম করিয়াছ, ইহা সদাপ্রভু কহেন, এবং আমি প্রত্যূষে উঠিয়া তোমাদিগকে কথা কহিলেও তোমরা শুন নাই, আমি তোমাদিগকে ডাকিলেও তোমরা উত্তর দেও নাই; ১৪ সেই জন্য এই যে গৃহের উপরে আমার নাম কীর্ত্তিত হইয়াছে, যাহাতে তোমরা বিশ্বাস করিতেছ, এবং এই যে স্থান আমি তোমাদিগকে ও তোমাদের পিতৃপুরুষদিগকে দিয়াছি, ইহার প্রতিও আমি এখন সেইরূপ করিব, যেরূপ শীলোর প্রতি করিয়াছিলাম। ১৫ আর তোমাদের ভ্রাতৃসমূহকে, ইফ্রয়িমের সমস্ত বংশকে, যেমন বাহির করিয়া দিয়াছি, তেমনি তোমাদিগকেও আমার দৃষ্টিপথ হইতে বাহির করিয়া দিব।
যিরমিয় ২১ অনু. ১২, ইংরেজি
“শেষকালে” সেবা করা
১২ যিহোয়াকীমের রাজত্ব কালে, যিহোবা যিরমিয়কে মন্দিরে যেতে বলেছিলেন এবং যিহুদিদের মন্দতার বিষয়ে সরাসরি নিন্দা প্রকাশ করতে বলেছিলেন। তারা যিহোবার মন্দিরকে তাদের জন্য এক রক্ষাকবজ হিসেবে মনে করেছিল। কিন্তু তারা যদি ‘চুরি, নরহত্যা, ব্যভিচার, মিথ্যাশপথ এবং বালের উদ্দেশে ধূপদাহ করে, এবং যাহাদিগকে জানে নাই, এমন অন্য দেবগণের পশ্চাদ্গমন’ করা পরিত্যাগ না করে, তা হলে যিহোবা তাঁর মন্দিরকে পরিত্যাগ করবেন। আর সেখানে উপাসনা করে এমন কপট লোকেদেরও তিনি পরিত্যাগ করবেন, ঠিক যেমনটা মহাযাজক এলির সময়ে তিনি শীলোর আবাসকে পরিত্যাগ করেছিলেন। যিহূদা “ধ্বংসস্থান হইয়া পড়িবে।” (যির. ৭:১-১৫, ৩৪; ২৬:১-৬) সেই বার্তা ঘোষণা করার জন্য যিরমিয়ের কতটা সাহসের প্রয়োজন হয়েছিল, তা একটু চিন্তা করুন! সম্ভবত তিনি বিশিষ্ট ও প্রভাবশালী লোকেদের সামনে তা করেছিলেন। একইভাবে বর্তমানেও কোনো কোনো ভাই-বোন মনে করে, রাস্তায় সাক্ষ্য দেওয়ার সময় অথবা ধনী কিংবা গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলার সময় তাদের যথেষ্ট সাহসের প্রয়োজন। কিন্তু আমরা এই বিষয়ে নিশ্চিত থাকতে পারি: ঈশ্বর আমাদের অবশ্যই সাহায্য করবেন, যেমনটা তিনি যিরমিয়কে করেছিলেন।—ইব্রীয় ১০:৩৯; ১৩:৬.
আধ্যাত্মিক রত্ন খুঁজে বের করুন
(যিরমিয় ৬:১৬) সদাপ্রভু এই কথা কহেন, তোমরা পথে পথে দাঁড়াইয়া দেখ; এবং কোন্কোন্টা চিরন্তন মার্গ, তাহা জিজ্ঞাসা করিয়া বল, উত্তম পথ কোথায়? আর সেই পথে চল, তাহাতে তোমরা আপন আপন প্রাণের জন্য বিশ্রাম পাইবে। কিন্তু তাহারা কহিল, আমরা চলিব না।
প্রহরীদুর্গ ০৫ ১১/১ ২৩ অনু. ১১
আপনি কি ঈশ্বরের সঙ্গে গমনাগমন করবেন?
১১ আমরা কি আসলেই এতটা অন্তরঙ্গভাবে ঈশ্বরের বাক্যকে আমাদের নির্দেশনা দিতে দিই? মাঝে মাঝে একটু সময় নিয়ে নিজেদেরকে অকপটভাবে পরীক্ষা করা উপযুক্ত। একটা পদ বিবেচনা করুন, যা আমাদের তা করতে সাহায্য করবে: “সদাপ্রভু এই কথা কহেন, তোমরা পথে পথে দাঁড়াইয়া দেখ; এবং কোন্ কোন্টা চিরন্তন মার্গ, তাহা জিজ্ঞাসা করিয়া বল, উত্তম পথ কোথায়? আর সেই পথে চল, তাহাতে তোমরা আপন আপন প্রাণের জন্য বিশ্রাম পাইবে।” (যিরমিয় ৬:১৬) এই কথাগুলো আমাদেরকে একজন পথিকের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়, যিনি রাস্তার সংযোগস্থলে থেমে দিক নির্দেশনা জিজ্ঞেস করেন। আধ্যাত্মিক অর্থে, ইস্রায়েলে যিহোবার বিদ্রোহী লোকেদের একই বিষয় করার দরকার ছিল। ‘চিরন্তন মার্গে’ ফিরে যাওয়ার জন্য তাদের পথ খোঁজার দরকার ছিল। “উত্তম পথ” ছিল সেই পথ, যেখানে তাদের বিশ্বস্ত পূর্বপুরুষরা গমনাগমন করত, যে-পথ থেকে সেই জাতি মূর্খের মতো বিপথে চলে গিয়েছিল। দুঃখের বিষয় যে, ইস্রায়েল যিহোবার কাছ থেকে আসা এই প্রেমময় অনুস্মারকের প্রতি একগুঁয়েভাবে সাড়া দিয়েছিল। সেই একই পদ বলে চলে: “কিন্তু তাহারা কহিল, আমরা চলিব না।” তবে, আধুনিক সময়ে ঈশ্বরের লোকেরা এই পরামর্শের প্রতি ভিন্নভাবে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে।
(যিরমিয় ৬:২২, ২৩) সদাপ্রভু এই কথা কহেন, দেখ, উত্তর দেশ হইতে এক জনসমাজ আসিতেছে, পৃথিবীর প্রান্ত হইতে এক মহাজাতি উত্তেজিত হইয়া আসিতেছে। ২৩ তাহারা ধনুক ও বড়শাধারী, নিষ্ঠুর ও করুণারহিত, তাহাদের রব সমুদ্র-গর্জ্জনের তুল্য, এবং তাহারা অশ্বারোহণে আসিতেছে। অয়ি সিয়োন-কন্যে, তোমারই বিপরীতে যুদ্ধ করণার্থে তাহারা প্রত্যেক জন যোদ্ধার ন্যায় সুসজ্জিত হইয়াছে।
প্রহরীদুর্গ ৮৮ ৪/১ ১৩ অনু. ১৫, ইংরেজি
যিরমিয়—ঈশ্বরের বিচার ঘোষণাকারী এক অপ্রিয় ভাববাদী
যিহূদা মূল্য পরিশোধ করে
১৫ খ্রিস্টপূর্ব প্রায় ৬৩২ সালে, কল্দীয় ও মাদীয়দের কাছে অশূর পরাজিত হয়েছিল এবং যিহূদার দক্ষিণ রাজ্যের উপর মিশরের ক্ষমতা হ্রাস পেয়েছিল। উত্তর দিক থেকে আসা আক্রমণ যিহূদার জন্য আসল হুমকি হয়ে উঠবে। তাই, যিরমিয়কে সহযিহুদিদের কাছে কিছু দুঃসংবাদ দিতে হয়েছিল! “দেখ, উত্তর দেশ হইতে এক জনসমাজ আসিতেছে, . . . তাহারা . . . নিষ্ঠুর ও করুণারহিত, . . . অয়ি সিয়োন-কন্যে, তোমারই বিপরীতে যুদ্ধ করণার্থে তাহারা প্রত্যেক জন যোদ্ধার ন্যায় সুসজ্জিত হইয়াছে।” সেই সময়ে বাবিল ছিল উদীয়মান বিশ্বশক্তি। এই বিশ্বশক্তির মাধ্যমেই ঈশ্বর অবিশ্বাসী যিহূদাকে শাস্তি দেবেন।—যিরমিয় ৬:২২, ২৩; ২৫:৮, ৯.
বাইবেল পাঠ
(যিরমিয় ৫:২৬–৬:৫) কারণ আমার প্রজাদের মধ্যে দুষ্ট লোক পাওয়া যায়, তাহারা ব্যাধের ন্যায় হেঁট হইয়া লুকাইয়া থাকে, তাহারা ফাঁদ পাতে ও মানুষ ধরে। ২৭ পিঞ্জর যেমন পক্ষীতে পরিপূর্ণ, তদ্রূপ তাহাদের বাটী ছলে পরিপূর্ণ; এই জন্য তাহারা উন্নত ও ধনবান্ হইয়াছে। ২৮ তাহারা স্হূলকায় ও চাকচিক্যশালী হইয়াছে; হাঁ, তাহারা দুষ্টতার রীতি অপেক্ষাও পাপ করে, তাহারা বিচার করে না, পিতৃহীনের কল্যাণার্থে বিচার করে না, ও দরিদ্রদের বিচার নিষ্পত্তি করে না। ২৯ সদাপ্রভু কহেন, আমি কি এই সকলের প্রতিফল দিব না? আমার প্রাণ কি এই প্রকার জাতির প্রতিশোধ দিবে না? ৩০ দেশের মধ্যে ভয়ানক ও রোমাঞ্চজনক ব্যাপার সাধিত হয়। ৩১ ভাববাদিগণ মিথ্যা ভাববাণী বলে, আর যাজকগণ তাহাদের বশবর্ত্তী হইয়া কর্ত্তৃত্ব করে; আর আমার প্রজারা এই রীতি ভালবাসে; কিন্তু ইহার পরিণামে তোমরা কি করিবে?
৬ হে বিন্যামীন-সন্তানগণ, তোমরা যিরশালেমের মধ্য হইতে পলায়ন কর, তকোয় নগরে তূরী বাজাও, বৈৎহক্কেরমে ধ্বজা তুল, কেননা উত্তর দিক্ হইতে অমঙ্গল ও মহাধ্বংস উকি মারিতেছে। ২ সুন্দরী সুখভোগিনী সিয়োন-কন্যাকে আমি সংহার করিব। ৩ মেষপালকগণ আপন আপন পাল সঙ্গে লইয়া তাহার কাছে আসিবে; তাহারা তাহার বিরুদ্ধে চারিদিকে আপন আপন তাম্বু স্থাপন করিবে, প্রত্যেকে আপন আপন স্থানে পাল চরাইবে। ৪ তাহার বিরুদ্ধে যুদ্ধের আয়োজন কর; উঠ, আমরা মধ্যাহ্নকালে যাত্রা করি। ধিক্ আমাদিগকে! কেননা দিবাবসান হইতেছে, সন্ধ্যাকালের ছায়া দীর্ঘ হইতেছে। ৫ উঠ, আমরা রাত্রিযোগে যাত্রা করি, তাহার অট্টালিকা সকল নষ্ট করি।
মার্চ ২০-২৬
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | যিরমিয় ৮-১১
“একমাত্র যিহোবার নির্দেশনার মাধ্যমেই মানুষ সফল হতে পারে”
(যিরমিয় ১০:২-৫) সদাপ্রভু এই কথা কহেন, তোমরা জাতিগণের ব্যবহার শিখিও না, আকাশের নানা চিহ্ন হইতে ভীত হইও না; বাস্তবিক জাতিগণই তাহা হইতে ভীত হয়। ৩ কেননা জাতিগণের বিধি সকল সার; লোকে বনে যে কাষ্ঠ ছেদন করে, তাহাই বাটালি সহকারে কারুকরের হস্তকৃত কর্ম্ম হইয়া উঠে। ৪ লোকে তাহা রৌপ্য ও সুবর্ণে অলঙ্কৃত করে; এবং যেন না নড়ে, তজ্জন্য হাতুড়ি দিয়া প্রেক মারিয়া তাহা দৃঢ় করে। ৫ সে সকল কোঁদা স্তম্ভস্বরূপ; কথা কহিতে পারে না; তাহাদিগকে বহন করিতে হয়, কারণ তাহারা চলিতে পারে না। তোমরা তাহাদের হইতে ভীত হইও না; কারণ তাহারা অহিত করিতে পারে না, হিত করিতেও তাহাদের সাধ্য নাই।
(যিরমিয় ১০:১৪, ১৫) প্রত্যেক মনুষ্য পশুবৎ হইয়াছে, সে জ্ঞানহীন; প্রত্যেক স্বর্ণকার আপন প্রতিমা দ্বারা লজ্জিত হয়। কারণ তাহার ছাঁচে ঢালা বস্তু, মিথ্যামাত্র, তাহার মধ্যে শ্বাসবায়ু নাই। ১৫ সে সকল অসার, মায়ার কর্ম্মমাত্র; তাহাদের প্রতিফল দানকালে তাহারা বিনষ্ট হইবে।
অন্তর্দৃষ্টি-১ ৫৫৫, ইংরেজি
শশা
এ ছাড়া, পশুপাখিকে ভয় দেখানোর জন্য শস্যক্ষেত্রে স্তম্ভ, খুঁটি বসানো হতো অথবা অন্যান্য কৌশল ব্যবহার করা হতো আর ভাববাদী যিরমিয় প্রতিমাপূজক জাতিগণের তৈরি প্রতিমাগুলোকে এই ধরনের এক বোবা নিষ্প্রাণ ‘কোঁদা স্তম্ভের [‘শসা ক্ষেতের কাকতাড়ুয়ার,’ বাংলা কমন ল্যাঙ্গুয়েজ ভারশন]’ সঙ্গে তুলনা করেছিলেন।—যির ১০:৫.
(যিরমিয় ১০:৬, ৭) হে সদাপ্রভু, তোমার তুল্য কেহই নাই; তুমি মহান, তোমার নামও পরাক্রমে মহৎ। ৭ হে জাতিগণের রাজন্, তোমাকে কে না ভয় করিবে? তাহা তোমারই পাওনা, কেননা জাতিগণের সমস্ত জ্ঞানী লোকের মধ্যে, তাহাদের সমুদয় রাজ্যের মধ্যে তোমার তুল্য কেহ নাই।
(যিরমিয় ১০:১০-১৩) কিন্তু সদাপ্রভু সত্য ঈশ্বর; তিনিই জীবন্ত ঈশ্বর ও অনন্তকালস্থায়ী রাজা; তাঁহার ক্রোধে পৃথিবী কম্পিত হয়, এবং তাঁহার কোপ জাতিগণ সহিতে পারে না। ১১ তোমরা উহাদিগকে এই কথা বল, ‘যে দেবগণ আকাশমণ্ডল ও ভূমণ্ডল গঠন করে নাই, তাহারা ভূমণ্ডল হইতে ও আকাশমণ্ডলের অধঃ হইতে উচ্ছিন্ন হইবে’। ১২ তিনি নিজ শক্তিতে পৃথিবী গঠন করিয়াছেন, নিজ জ্ঞানে জগৎ স্থাপন করিয়াছেন, নিজ বুদ্ধিতে আকাশমণ্ডল বিস্তার করিয়াছেন। ১৩ তিনি রব ছাড়িলে আকাশে জলরাশির শব্দ হয়, তিনি পৃথিবীর প্রান্ত হইতে বাষ্প উত্থাপন করেন; তিনি বৃষ্টির নিমিত্ত বিদ্যুৎ গঠন করেন, তিনি আপন ভাণ্ডার হইতে বায়ু বাহির করিয়া আনেন।
প্রহরীদুর্গ ০৪ ১০/১ ১১ অনু. ১০
আজকে কারা ঈশ্বরকে গৌরব প্রদান করছে?
১০ আপনি উপরে আকাশের দিকে অথবা ঠিক এই পৃথিবীর সৃষ্টির দিকে চোখ বুলান না কেন, একজন সৃষ্টিকর্তার সাক্ষ্যপ্রমাণ অত্যন্ত স্পষ্ট। (যিরমিয় ১০:১২) আমাদের পূর্ণহৃদয়ে স্বর্গীয় প্রাণীদের সঙ্গে একমত হওয়া উচিত, যারা উচ্চরবে বলে: “হে আমাদের যিহোবা ও আমাদের ঈশ্বর, তুমিই গৌরব ও সমাদর ও পরাক্রম গ্রহণের যোগ্য; কেননা তুমিই সকলের সৃষ্টি করিয়াছ।” (প্রকাশিত বাক্য ৪:১১) কিন্তু, অনেক বিজ্ঞানী ‘তাহাদের হৃদয়ের চক্ষু’ দ্বারা প্রমাণ দেখতে ব্যর্থ হয়, যদিও তারা নিজের চোখে বিষয়গুলোর মধ্যে নকশাগুলো দেখে বিস্মিত হয়। (ইফিষীয় ১:১৮) এটাকে আমরা এভাবে তুলে ধরতে পারি: প্রকৃতির সৌন্দর্য এবং নকশার প্রশংসা করা এবং এরপর মহান নির্মাতার অস্তিত্ব সম্বন্ধে অস্বীকার করা ঠিক ততটাই অযৌক্তিক যতটা এক অপূর্ব চিত্রকর্ম দেখে প্রশংসা করা এবং একইসঙ্গে চিত্রকরের অস্তিত্ব সম্বন্ধে অস্বীকার করা, যিনি এক শূন্য চিত্রপটকে শ্রেষ্ঠ শিল্পকর্মে রূপান্তরিত করেছেন। তাই, এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে, যারা ঈশ্বরে বিশ্বাস করতে প্রত্যাখ্যান করে, তাদের সম্বন্ধে বলা হয়েছে যে তাদের “উত্তর দিবার পথ নাই”!
(যিরমিয় ১০:২১-২৩) কেননা পালকগণ পশুবৎ হইয়াছে, সদাপ্রভুর কাছে অন্বেষণ করে নাই, এ জন্য বুদ্ধিপূর্ব্বক চলে নাই, তাহাদের সমস্ত পাল ছিন্নভন্ন হইয়াছে। ২২ কোলাহলের রব! দেখ, তাহা উপস্থিত হইতেছে, উত্তর দেশ হইতে বড় কলরব আসিতেছে; যিহূদার নগর সকল ধ্বংসিত ও শৃগালদের বাসস্থান করা হইবে। ২৩ হে সদাপ্রভু আমি জানি, মনুষ্যের পথ তাহার বশে নয়, মনুষ্য চলিতে চলিতে আপন পাদবিক্ষেপ স্থির করিতে পারে না।
প্রহরীদুর্গ ১৫ অক্টোবর–ডিসেম্বর ১৫ অনু. ১
আপনি কি ঈশ্বরের উপর অসন্তুষ্ট?
বর্তমান জগতের কষ্টকর পরিস্থিতি স্পষ্টভাবে দেখায়, মানুষের শাসন সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ। জগতের সরকারগুলো শুধু যে শান্তি, নিরাপত্তা এবং সুখ আনতে ব্যর্থ হয়েছে তা-ই নয়, তারা পৃথিবীকে প্রায় ধ্বংসের দোরগোড়ায় এনে ফেলেছে। এটা বাইবেলে লিপিবদ্ধ একটা মৌলিক সত্যকে তুলে ধরে: “মনুষ্য চলিতে চলিতে আপন পাদবিক্ষেপ স্থির করিতে পারে না।” (যিরমিয় ১০:২৩) শুধুমাত্র ঈশ্বরের শাসনপদ্ধতি চিরকালীন শান্তি, সুখ এবং সমৃদ্ধির নিশ্চয়তা দিতে পারে কারণ সেটাই হল ঈশ্বরের উদ্দেশ্য।—যিশাইয় ৪৫:১৮.
আধ্যাত্মিক রত্ন খুঁজে বের করুন
(যিরমিয় ৯:২৪) কিন্তু যে ব্যক্তি শ্লাঘা করে, সে এই বিষয়ের শ্লাঘা করুক যে, সে বুঝিতে পারে ও আমার এই পরিচয় পাইয়াছে যে, আমি সদাপ্রভু পৃথিবীতে দয়া, বিচার ও ধার্ম্মিকতার অনুষ্ঠান করি, কারণ ঐ সকলে আমি প্রীত, ইহা সদাপ্রভু কহেন।
প্রহরীদুর্গ ১৩ ১/১৫ ২০ অনু. ১৬
ক্রমাগত যিহোবার নিকটবর্তী হোন
১৬ সঠিক বিষয়গুলো নিয়ে গর্ব করা ভালো হতে পারে। উদাহরণ স্বরূপ, যিহোবার সাক্ষি হওয়ায় আমাদের সর্বদা গর্ববোধ করা উচিত। (যির. ৯:২৪) গঠনমূলক আত্মসম্মানবোধ আমাদেরকে উত্তম সিদ্ধান্তগুলো নিতে এবং আমাদের নৈতিক মানগুলোকে খর্ব করা এড়িয়ে চলতে সাহায্য করে। কিন্তু, নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গি অথবা পদমর্যাদার উপর অতিরিক্ত মূল্য দেওয়া আমাদেরকে যিহোবার কাছ থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে যেতে পারে।—গীত. ১৩৮:৬; রোমীয় ১২:৩.
(যিরমিয় ১১:১০) তাহারা আপনাদের সেই পিতৃপুরুষদের অপরাধের প্রতি ফিরিয়াছে, যাহারা আমার কথা শুনিতে অস্বীকৃত হইয়াছিল; আর তাহারা সেবা করণার্থে অন্য দেবগণের পশ্চাতে গিয়াছে; ইস্রায়েল-কুল ও যিহূদা-কুল আমার সেই নিয়ম ভঙ্গ করিয়াছে, যাহা আমি তাহাদের পিতৃপুরুষদের সহিত করিয়াছিলাম।
যিরমিয় বইয়ের প্রধান বিষয়গুলো
৩:১১-২২; ১১:১০-১২, ১৭—এমনকী যদিও সা.কা.পূ. ৭৪০ সালে শমরিয়ার পতন হয়েছিল, তা সত্ত্বেও কেন যিরমিয় উত্তরের দশ বংশের রাজ্যকে তার ঘোষণার অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন? এর কারণ সা.কা.পূ. ৬০৭ সালে যিরূশালেমের ধ্বংস, শুধুমাত্র যিহূদার উপর নয় বরং সমগ্র ইস্রায়েল জাতির উপর যিহোবার বিচারের প্রকাশ ছিল। (যিহিষ্কেল ৯:৯, ১০) অধিকন্তু, এর পতনের পর দশ বংশের রাজ্যের পুনর্স্থাপনের প্রত্যাশা ক্রমাগত যিরূশালেমেই প্রতিনিধিত্ব হয়েছিল কারণ ঈশ্বরের ভাববাদীদের বার্তা ইস্রায়েলীয়দেরও অন্তর্ভুক্ত করে চলেছিল।
বাইবেল পাঠ
(যিরমিয় ১১:৬-১৬) আর সদাপ্রভু আমাকে কহিলেন, তুমি যিহূদার নগরে নগরে ও যিরশালেমের সড়কে সড়কে এই সমস্ত কথা প্রচার কর, বল, তোমরা এই নিয়মের কথা শুন, ও সে সকল পালন কর। ৭ কেননা যে দিন আমি তোমাদের পিতৃপুরুষদিগকে মিসর দেশ হইতে উঠাইয়া আনিয়াছিলাম, তদবধি অদ্য পর্য্যন্ত সাক্ষ্য দিয়াছি, প্রত্যূষে উঠিয়া আমি তাহাদিগকে দৃঢ়রূপে সাক্ষ্য দিয়া বলিয়াছি, তোমরা আমার রবে অবধান কর। ৮ তবু তাহারা অবধান করিল না, কর্ণপাত করিল না, কিন্তু প্রত্যেকে আপন আপন দুষ্ট হৃদয়ের কঠিনতা অনুসারে আচরণ করিল; সেই জন্য আমি এই নিয়মের সমস্ত কথা তাহাদের উপরে বর্ত্তাইলাম; যে নিয়ম আমি তাহাদিগকে পালন করিতে আজ্ঞা দিয়াছিলাম, কিন্তু তাহারা পালন করে নাই। ৯ আর সদাপ্রভু আমাকে কহিলেন, যিহূদার লোকদের মধ্যে ও যিরশালেমনিবাসিগণের মধ্যে চক্রান্ত পাওয়া গিয়াছে। ১০ তাহারা আপনাদের সেই পিতৃপুরুষদের অপরাধের প্রতি ফিরিয়াছে, যাহারা আমার কথা শুনিতে অস্বীকৃত হইয়াছিল; আর তাহারা সেবা করণার্থে অন্য দেবগণের পশ্চাতে গিয়াছে; ইস্রায়েল-কুল ও যিহূদা-কুল আমার সেই নিয়ম ভঙ্গ করিয়াছে, যাহা আমি তাহাদের পিতৃপুরুষদের সহিত করিয়াছিলাম। ১১ অতএব সদাপ্রভু এই কথা কহেন, দেখ, আমি তাহাদের প্রতি অমঙ্গল ঘটাইব, তাহারা তাহা হইতে রক্ষা পাইতে পারিবে না; তখন তাহারা আমার কাছে ক্রন্দন করিবে, কিন্তু আমি তাহাদের কথা শুনিব না। ১২ আর যিহূদার নগর সকল ও যিরশালেম-নিবাসিগণ যে দেবগণের কাছে ধূপ জ্বালাইয়া থাকে, তাহাদের কাছে গমন করিয়া ক্রন্দন করিবে, কিন্তু তাহারা বিপদের সময়ে তাহাদিগকে কোন মতে নিস্তার করিবে না। ১৩ বস্তুতঃ হে যিহূদা, তোমার যত নগর তত দেবতা; এবং যিরশালেমের যত সড়ক, তোমরা সেই লজ্জাস্পদের নিমিত্ত তত বেদি, বালের উদ্দেশে ধূপদাহ করণার্থে তত বেদি স্থাপন করিয়াছ। ১৪ অতএব তুমি এই জাতির নিমিত্ত প্রার্থনা করিও না, ইহাদের জন্য খেদোক্তি কি প্রার্থনা উৎসর্গ করিও না, কেননা ইহারা বিপদ হেতু যে সময়ে আমাকে ডাকিবে, তখন আমি ইহাদের কথা শুনিব না। ১৫ আমার গৃহে আমার প্রিয়ার কি কার্য্য? সে ত অনেকের সহিত ব্যভিচার করিয়াছে, এবং তোমা হইতে পবিত্র মাংস সরান হইয়াছে। তুমি যখন দুষ্কার্য্য কর, তখনই উল্লাস করিয়া থাক। ১৬ সদাপ্রভু তোমার নাম ‘ফলশোভায় মনোহর হরিৎপর্ণ জিতবৃক্ষ’ রাখিয়াছিলেন; তিনি মহা তুমুল-শব্দ সহকারে তাহার উপরে অগ্নি জ্বালাইয়াছেন, তাই তাহার শাখা সকল ভাঙ্গিয়া পড়িল।
মার্চ ২৭–এপ্রিল ২
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | যিরমিয় ১২-১৬
“ইস্রায়েল যিহোবাকে ভুলে গিয়েছিল”
(যিরমিয় ১৩:১-৫) সদাপ্রভু আমাকে এই কথা কহিলেন, তুমি যাও, মসীনা-সূতার এক পটিকা ক্রয় কর, ও তাহা কটিদেশে বাঁধ, তাহা জলে দিও না। ২ তাহাতে আমি সদাপ্রভুর বাক্যানুসারে এক পটিকা ক্রয় করিলাম, ও আমার কটিদেশে বাঁধিলাম। ৩ পরে দ্বিতীয় বার সদাপ্রভুর বাক্য আমার নিকটে উপস্থিত হইল, ৪ যথা, তুমি যে পটিকা ক্রয় করিয়া কটিদেশে বাঁধিয়াছ, উঠ, তাহা লইয়া ফরাৎ নদীর নিকটে গিয়া তথাকার শৈলের কোন ছিদ্রে লুকাইয়া রাখ। ৫ তাহাতে আমি সদাপ্রভুর আজ্ঞানুসারে গিয়া ফরাৎনদীর কাছে তাহা লুকাইয়া রাখিলাম।
যিরমিয় ৫১ অনু. ১৭, ইংরেজি
এক বঞ্চক হৃদয়ের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকুন
১৭ যিরমিয়ের কার্যভারের সঙ্গে ঈশ্বরের নির্দেশনার প্রতি বাধ্যতা দেখানো জড়িত ছিল। আপনি যদি যিরমিয়ের জায়গায় থাকতেন, তা হলে আপনি কি এই ধরনের নির্দেশনা মেনে নিতেন? একটা পর্যায়ে, যিহোবা যিরমিয়কে মসিনা সুতোর এক পটিকা বা কটিবন্ধনী ক্রয় করে তা কটিদেশে বাঁধতে বলেছিলেন। এরপর, ঈশ্বর তাকে ফরাৎ নদীর দিকে যাত্রা করতে বলেছিলেন। একটা মানচিত্র পরীক্ষা করলে আপনি দেখতে পাবেন, এর মানে ছিল প্রায় ৫০০ কিলোমিটার (৩০০ মাইল) পথ ভ্রমণ করা। সেখানে পৌঁছানোর পর, যিরমিয়কে সেই কটিবন্ধনীটা পাথরের কোনো ছিদ্রে লুকিয়ে রাখতে হয়েছিল আর এরপর আবারও যাত্রা করে যিরূশালেমে ফিরে আসতে হয়েছিল। পরে ঈশ্বর আবার তাকে সেই কটিবন্ধনী নিয়ে আসতে বলেছিলেন। (পড়ুন, যিরমিয় ১৩:১-৯.) সব মিলিয়ে, যিরমিয়কে প্রায় ১,৯০০ কিলোমিটার (১,২০০ মাইল) পথ যাত্রা করতে হয়েছিল। তিনি যে মাসের পর মাস হেঁটে এতটা পথ যাত্রা করেছিলেন, তা বাইবেলের সমালোচকরা বিশ্বাস করতে পারেন না। (ইষ্রা ৭:৯) কিন্তু, ঈশ্বর এটাই করতে বলেছিলেন আর যিরমিয় তা-ই করেছিলেন।
(যিরমিয় ১৩:৬-৮) পরে বহুদিন গতে সদাপ্রভু আমাকে কহিলেন, তুমি উঠ, ফরাতের নিকটে যাও, এবং আমার আজ্ঞায় তথায় যে পটিকা লুকাইয়া রাখিয়াছ, তাহা তথা হইতে তুলিয়া লও। ৭ তখন আমি ফরাতের নিকটে গেলাম, এবং খনন করিয়া যে স্থানে পটিকাটী লুকাইয়া রাখিয়াছিলাম, তথা হইতে তাহা তুলিয়া লইলাম; ৮ আর দেখ, সে পটিকা নষ্ট হইয়াছে, কোন কার্য্যের যোগ্য নাই।
যিরমিয় ৫২ অনু. ১৮, ইংরেজি
এক বঞ্চক হৃদয়ের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকুন
১৮ একটু কল্পনা করুন, যিহূদিয়ার পর্বতময় এলাকা দিয়ে ভাববাদী হেঁটে যাচ্ছেন আর এরপর তার যাত্রাপথ অনুযায়ী একটা মরুভূমির মধ্য দিয়ে ফরাৎ নদীর দিকে যাচ্ছেন। এসবই শুধু একটা মসিনা সুতোর কটিবন্ধনী লুকিয়ে রাখার জন্য! তিনি দীর্ঘদিন নিজের ঘরে না থাকায়, তার প্রতিবেশীরা নিশ্চয়ই কৌতূহলী হয়ে উঠেছিল। তিনি যখন ফিরে এসেছিলেন, তখন তার কাছে মসিনা সুতোর সেই কটিবন্ধনী ছিল না। এরপর, ঈশ্বর সেই কটিবন্ধনী তুলে আনার জন্য আবার তাকে দীর্ঘযাত্রা করতে বলেছিলেন, যেটা তখন নষ্ট হয়ে গিয়েছে এবং “কোন কার্য্যের যোগ্য নাই।” একটু কল্পনা করুন, এমনটা চিন্তা করা কতই-না স্বাভাবিক ছিল: ‘যথেষ্ট হয়েছে। এসবের কোনো মানেই হয় না।’ কিন্তু, ঈশ্বরের দ্বারা গঠিত হওয়ায় তিনি সেভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাননি। অভিযোগ করার পরিবর্তে তিনি নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করেছিলেন!
(যিরমিয় ১৩:৯-১১) তখন সদাপ্রভুর বাক্য আমার নিকটে উপস্থিত হইল, যথা, সদাপ্রভু এই কথা কহেন, এইরূপে আমি যিহূদার দর্প ও যিরশালেমের মহাদর্প চূর্ণ করিয়া ফেলিব। ১০ এই যে দুষ্ট জাতি আমার কথা শুনিতে অস্বীকার করে, আপন আপন হৃদয়ের কঠিনতা অনুসারে চলে, এবং অন্য দেবগণের সেবা ও তাহাদের কাছে প্রণিপাত করিবার জন্য তাহাদের অনুগামী হয়, তাহারা এই পটিকার ন্যায় হইবে, যাহা কোন কার্য্যের যোগ্য নয়। ১১ কেননা, সদাপ্রভু কহেন, মনুষ্যের কটিদেশে যেমন পটিকা জড়ান থাকে, তদ্রূপ আমি সমস্ত ইস্রায়েল-কুলকে ও সমস্ত যিহূদা-কুলকে আপনাতে জড়াইয়াছিলাম, যেন তাহারা আমার উদ্দেশে প্রজাবর্গ, এবং কীর্ত্তি, প্রশংসা ও শোভাস্বরূপ হয়; কিন্তু তাহারা শুনিতে চাহিল না।
যিরমিয় ৫২ অনু. ১৯-২০, ইংরেজি
এক বঞ্চক হৃদয়ের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকুন
১৯ দ্বিতীয় বার যাত্রা করার পরই ঈশ্বর বিষয়গুলো ব্যাখ্যা করেছিলেন। যিরমিয়ের কাজগুলো তাকে জোরালো এক বার্তা ঘোষণা করার জন্য প্রস্তুত করেছিল: “এই যে দুষ্ট জাতি আমার কথা শুনিতে অস্বীকার করে, আপন আপন হৃদয়ের কঠিনতা অনুসারে চলে, এবং অন্য দেবগণের সেবা ও তাহাদের কাছে প্রণিপাত করিবার জন্য তাহাদের অনুগামী হয়, তাহারা এই পটিকার ন্যায় হইবে, যাহা কোন কার্য্যের যোগ্য নয়।” (যির ১৩:১০) যিহোবা তাঁর লোকেদের শিক্ষা দেওয়ার জন্য কতই-না কার্যকরী এক উপায় ব্যবহার করেন! যিহোবার প্রতি যিরমিয়ের আন্তরিক বাধ্যতা হয়তো সামান্য বলে মনে হয়েছিল, কিন্তু তা লোকেদের হৃদয়ে পৌঁছানোর জন্য যিহোবার উদ্দেশ্যসাধনে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।—যির ১৩:১১.
২০ বর্তমানে ঈশ্বরের কাছ থেকে এক শিক্ষা লাভ করার জন্য খ্রিস্টানদের শত শত কিলোমিটার পথ হেঁটে পার হতে বলা হয় না। তবে এমনটা কি হতে পারে, আপনি যে-খ্রিস্টীয় পথের অনুধাবন করছেন, তা দেখে আপনার প্রতিবেশীরা অথবা সঙ্গীসাথিরা হয়তো অবাক হয় কিংবা এমনকী আপনার সমালোচনা করে? এর অন্তর্ভুক্ত হতে পারে, আপনার পোশাক-আশাক ও সাজগোজ, শিক্ষা ক্ষেত্রে আপনার বাছাই, আপনি যে-কেরিয়ার বেছে নেন অথবা মদ্য-জাতীয় পানীয়ের ব্যাপারে আপনার দৃষ্টিভঙ্গি। ঈশ্বরের নির্দেশনার প্রতি বাধ্য হওয়ার ক্ষেত্রে আপনি কি যিরমিয়ের মতো দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ হবেন? আপনার হৃদয়কে ঈশ্বরের দ্বারা গঠিত হতে দেওয়ার ফলে আপনি যে-সমস্ত বাছাই করেন, সেগুলো হয়তো আপনাকে উত্তম সাক্ষ্য দেওয়ার সুযোগ এনে দেবে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টা হল, যিহোবার বাক্যে প্রাপ্ত নির্দেশনার প্রতি বাধ্য হওয়া এবং বিশ্বস্ত দাসের মাধ্যমে প্রদত্ত নির্দেশনা মেনে নেওয়া আপনার জন্য স্থায়ী মঙ্গল নিয়ে আসে। বঞ্চক হৃদয়ের দ্বারা পরিচালিত হওয়ার পরিবর্তে আপনি যিরমিয়ের মতো হতে পারেন। তাই, ঈশ্বরের দ্বারা গঠিত হওয়ার জন্য দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ হোন; তাঁকে সুযোগ দিন যেন তিনি আপনাকে এমন এক সমাদরের পাত্রে পরিণত করেন, যে-পাত্র তিনি চিরকাল ধরে ব্যবহার করবেন।
অন্তর্দৃষ্টি-১ ১১২১ অনু. ২, ইংরেজি
কটিদেশ
যিহোবা ইস্রায়েলকুল ও যিহূদাকুল সম্বন্ধে এমনভাবে উল্লেখ করেছিলেন যেন তারা তাঁর কটিদেশের এক কটিবন্ধনীর মতো। তিনি তাদেরকে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠভাবে ধরে রেখেছিলেন যেন তারা তাঁর প্রশংসা ও শোভা স্বরূপ হয়। (যির ১৩:১১) ভবিষ্যদ্বাণীতে যিশু খ্রিস্টকে এমনভাবে তুলে ধরা হয়েছে যে, তিনি ধার্মিকতাকে কটিদেশের পটুকা বা কটিবন্ধনী করে এবং বিশ্বস্ততাকে তাঁর কক্ষের বা নিতম্বের পটুকা করে শাসন করছেন। এটা হয়তো নির্দেশ করে, যিশু খ্রিস্টের সমস্ত সক্রিয় শক্তি তাঁর ধার্মিকতা ও বিশ্বস্ততার প্রতি স্থিরভাবে আসক্ত থাকে। কটিবন্ধনী যেমন কটিদেশকে দৃঢ় রাখতে সাহায্য করে, তেমনই ধার্মিকতার নৈতিক মান তাঁকে যিহোবার নিযুক্ত বিচারকর্তা হিসেবে কাজ করতে শক্তিশালী করে।—যিশা ১১:১, ৫.
আধ্যাত্মিক রত্ন খুঁজে বের করুন
(যিরমিয় ১২:১, ২) হে সদাপ্রভু, আমি যখন তোমার সহিত বিবাদ করি, তুমিই ধর্ম্মময়; তথাপি তোমার সহিত বাদানুবাদ করিব। দুষ্ট লোকদের পথ কেন কুশলযুক্ত হয়? যাহারা অতিশয় বিশ্বাসঘাতক, তাহারা কেন শান্তিতে থাকে? ২ তুমি তাহাদিগকে রোপণ করিয়াছ; তাহারা মূল বাঁধিয়াছে; তাহারা বৃদ্ধি পাইয়া ফলবানও হইতেছে; তুমি তাহাদের মুখের নিকটস্থ, কিন্তু তাহাদের অন্তঃকরণ হইতে দূরবর্ত্তী।
(যিরমিয় ১২:১৪) আমার সমস্ত দুষ্ট প্রতিবাসীর বিরুদ্ধে সদাপ্রভু এই কথা বলেন,—আমি আপন প্রজা ইস্রায়েলকে যাহার অধিকারী করিয়াছি, সেই অধিকার তাহারা স্পর্শ করে, দেখ, আমি তাহাদের ভূমি হইতে তাহাদিগকে উৎপাটন করিব, এবং তাহাদের মধ্য হইতে যিহূদা-কুলকেও উৎপাটন করিব।
যিরমিয় ১১৮ অনু. ১১, ইংরেজি
আপনি কি প্রতিদিন জিজ্ঞেস করেন, “সদাপ্রভু কোথায়?”
১১ যিরমিয় যখন দুষ্ট লোকেদের সফল হতে দেখেছিলেন, তখন একটা প্রশ্ন তার মনকে উত্ত্যক্ত করেছিল। (পড়ুন, যিরমিয় ১২:১, ৩.) যিহোবার ধার্মিকতা সম্বন্ধে কোনো প্রশ্ন না তুলে ভাববাদী তার “বিবাদ” বা অভিযোগের উত্তর খুঁজেছিলেন। তার সততা থেকে এটা স্পষ্ট হয়েছিল, ঈশ্বরের সঙ্গে তার এক দৃঢ় বন্ধন রয়েছে, ঠিক যেমনটা একজন সন্তানের তার প্রিয় বাবার সঙ্গে থাকে। যিরমিয় শুধু এই বিষয়টা বুঝতে পারেননি, কেন দুষ্ট হওয়া সত্ত্বেও অনেক যিহুদি সমৃদ্ধি লাভ করছিল। যিরমিয় কি সন্তোষজনক উত্তর পেয়েছিলেন? যিহোবা তাকে আশ্বস্ত করেছিলেন, তিনি দুষ্টদের উৎপাটন করবেন। (যির ১২:১৪) যিরমিয় ঈশ্বরের কাছে যে-বিষয়গুলো নিয়ে প্রার্থনা করেছিলেন সেগুলো যখন তিনি পরিপূর্ণ হতে দেখেছিলেন, তখন ঈশ্বরের বিচারের প্রতি তার আস্থা আরও বৃদ্ধি পেয়েছিল। ফল স্বরূপ, যিরমিয় নিশ্চয়ই যিহোবার কাছে আরও বেশি প্রার্থনা করেছিলেন, তার পিতার কাছে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করেছিলেন।
(যিরমিয় ১৫:১৭) আমি পরিহাসকারীদের সভাতে বসি নাই, উল্লাস করি নাই; তোমার হস্ত প্রযুক্ত একাকী বসিতাম, কেননা তুমি আমাকে ক্রোধে পূর্ণ করিয়াছ।
যিরমিয়ের মতো সাহসী হোন
আসুন আমরা আমাদের সংসর্গের বিষয়ে সতর্ক থাকি
১৬ যিরমিয় এমন কিছুর বিষয়ে বর্ণনা করেছিলেন, যা তাকে সাহসী হতে সাহায্য করেছিল। তিনি বলেছিলেন: “আমি পরিহাসকারীদের সভাতে বসি নাই, উল্লাস করি নাই; তোমার হস্ত প্রযুক্ত একাকী বসিতাম, কেননা তুমি আমাকে ক্রোধে পূর্ণ করিয়াছ।” (যিরমিয় ১৫:১৭) যিরমিয় কুসংসর্গের দ্বারা কলুষিত হওয়ার চেয়ে বরং একা থাকতেন। আজকে আমরাও বিষয়গুলোকে একইভাবে দেখি। আমরা কখনো পৌলের এই সাবধানবাণী ভুলে যাই না যে, “কুসংসর্গ শিষ্টাচার নষ্ট করে,” এমনকী যে-শিষ্টাচার আমাদের বহু বছর ধরে ছিল।—১ করিন্থীয় ১৫:৩৩.
বাইবেল পাঠ
(যিরমিয় ১৩:১৫-২৭) তোমরা শুন, কর্ণপাত কর, অহঙ্কার করিও না, কেননা সদাপ্রভু কথা বলিয়াছেন। ১৬ তোমরা সময় থাকিতে আপনাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর গৌরব স্বীকার কর, নতুবা তিনি অন্ধকার উপস্থিত করিবেন, আর তিমিরাচ্ছন্ন পর্ব্বতমালায় তোমাদের চরণে উছোট লাগিবে, এবং তোমরা আলোর অপেক্ষা করিলে তিনি তাহা মৃত্যুচ্ছায়াতে পরিণত করিবেন, ঘোর অন্ধকারস্বরূপ করিবেন। ১৭ তোমরা যদি এ কথা না শুন, তবে তোমাদের দর্প প্রযুক্ত আমার প্রাণ নিরালায় রোদন করিবে, এবং আমার চক্ষু অশ্রুপাত করিবে, অশ্রুধারা বহিবে, কেননা সদাপ্রভুর পাল বন্দি হইল। ১৮ তুমি রাজাকে ও মাতারাণীকে বল, তোমরা অবনত হও, বস, কেননা তোমাদের উষ্ণীষ, তোমাদের চারু মুকুট খসিয়া পড়িল। ১৯ দক্ষিণ প্রদেশীয় নগর সকল রুদ্ধ হইল; তাহা খুলিয়া দেয়, এমন কেহ নাই; সমস্ত যিহূদা বন্দিরূপে নীত হইয়াছে, তাহার সমুদয় লোক বন্দিরূপে নীত হইয়াছে। ২০ তোমরা চক্ষু তুলিয়া দেখ, উহারা উত্তর দিক্ হইতে আসিতেছে; তোমাকে যে মেষপাল দত্ত হইয়াছিল, তোমার সেই চারু মেষপাল কোথায়? ২১ তুমি যাহাদিগকে আত্মীয়রূপে আপনার উপরে [প্রভুত্ব করিতে] শিক্ষা দিয়াছ, যখন তিনি তাহাদিগকে মস্তকরূপে তোমার উপরে নিযুক্ত করিবেন, তৎকালে কি বলিবে? প্রসবকালে যেমন স্ত্রীলোক, তেমনি তুমি কি যন্ত্রণাগ্রস্ত হইবে না? ২২ আর যদি তুমি মনে মনে বল, আমার এমন দশা কেন ঘটিল? তোমার অপরাধের বাহুল্যে তোমার পরিচ্ছদের অন্ত তুলিয়া দেওয়া হইল, তোমার পাদমূলের প্রতি অত্যাচার করা হইল। ২৩ কূশীয় কি আপন ত্বক্, কিম্বা চিতাবাঘ কি আপন চিত্রবিচিত্র পরিবর্ত্তন করিতে পারে? তাহা হইলে দুষ্কর্ম্ম অভ্যাস করিয়াছ যে তোমরা, তোমরাও সৎকর্ম্ম করিতে পারিবে। ২৪ আর আমি ইহাদিগকে উড়াইয়া দিব, যেমন প্রান্তরস্থ বায়ুব সম্মুখে নাড়া উড়িয়া যায়। ২৫ ইহাই তোমার নির্দ্দিষ্ট অধিকার, আমা দ্বারা নিরূপিত তোমার অংশ, এই কথা সদাপ্রভু কহেন; যেহেতু তুমি আমাকে ভুলিয়া গিয়াছ, এবং মিথ্যাতে বিশ্বাস করিয়াছ। ২৬ এই জন্য আমিও তোমার পরিচ্ছদের অন্ত মুখের ঊর্দ্ধ্ব পর্য্যন্ত তুলিয়া দিব, আর তোমার লজ্জা দেখা যাইবে। ২৭ আমি ক্ষেত্রস্থ পর্ব্বতগণের উপরে তোমার ঘৃণিত ব্যাপার সকল, তোমার ব্যভিচার, তোমার হ্রেষা, তোমার বেশ্যাবৃত্তি সম্বন্ধীয় কুকর্ম্ম দেখিয়াছি। ধিক্ তোমাকে, যিরূশালেম! তুমি শুচি হইতে চাহ না; আর কত দিন এমন থাকিবে?