ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w১৫ ৭/১৫ পৃষ্ঠা ১৪-১৯
  • “তোমাদের মুক্তি সন্নিকট”!

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • “তোমাদের মুক্তি সন্নিকট”!
  • ২০১৫ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • মহাক্লেশের শুরু
  • পরীক্ষার ও বিচারের এক সময়
  • রাজ্যে দেদীপ্যমান হওয়া
  • “আমাদিগকে বলুন দেখি, এই সকল ঘটনা কখন্‌ হইবে?”
    ২০১৩ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • ‘মহাক্লেশের’ সময়ে বিশ্বস্ত থাকুন
    প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০১৯
  • প্রকাশিত বাক্যে আমাদের ভবিষ্যতের জন্য আশা
    প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য সম্বন্ধে ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০২২
  • ঈশ্বর যখন কার্যকারী হবেন তখন আপনি কি রক্ষা পাবেন?
    ১৯৯৬ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
আরও দেখুন
২০১৫ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w১৫ ৭/১৫ পৃষ্ঠা ১৪-১৯
মন্দিরের পাচীর ভেঙে ফেলার চষ্টা করার সময়, পথম শতাব্দীর একটা খস্টান পরিবার ছাদ থেকে তা দেখছ

“তোমাদের মুক্তি সন্নিকট”!

“তোমরা ঊর্দ্ধ্বদৃষ্টি করিও, মাথা তুলিও, কেননা তোমাদের মুক্তি সন্নিকট।”—লূক ২১:২৮.

গান সংখ্যা: ৪৯, ৪৩

আপনি কীভাবে উত্তর দেবেন?

  • ৬৬ খ্রিস্টাব্দে যেমনটা ঘটেছিল, শীঘ্রই আমরা একইরকম কোন ঘটনাগুলো ঘটতে দেখব?

  • “মহতী বাবিল” ধ্বংস হওয়ার পর পরীক্ষার কোন সময় উপস্থিত হবে?

  • মথি ২৪:৩১ পদে সংগ্রহের কাজ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

১. ছেষট্টি খ্রিস্টাব্দে কী ঘটেছিল? (শুরুতে দেওয়া ছবিটা দেখুন।)

কল্পনা করুন, আপনি ৬৬ খ্রিস্টাব্দে যিরূশালেমে বাস করছেন। আপনি একজন খ্রিস্টান। আপনার চারপাশে বিভিন্ন ঘটনা ঘটছে। রোমীয় দেশাধ্যক্ষ ফ্লোরাস মন্দিরের কোষাগার থেকে ১৭ তালন্ত মুদ্রা বাজেয়াপ্ত করেছেন। যিহুদিরা সঙ্গেসঙ্গে উত্তেজিত হয়ে উঠেছে। তারা অনেক রোমীয় সৈন্যকে হত্যা করেছে এবং রোমের কাছ থেকে নিজেদের স্বাধীন হিসেবে ঘোষণা করেছে। কিন্তু, রোমীয়রাও দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিন মাসের মধ্যে, সেস্টিয়াস গ্যালাসের নেতৃত্বে ৩০,০০০ সৈন্য যিরূশালেম ঘিরে ফেলেছে। বিদ্রোহী যিহুদিরা লুকানোর জন্য মন্দিরের ভিতরে আশ্রয় নিয়েছে। কিন্তু রোমীয় সৈন্যরা মন্দিরের প্রাচীরের কাছে চলে এসেছে এবং তা ভেঙে ফেলার চেষ্টা করছে। নগরের ভিতরে সকলে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। এসব ঘটনা দেখে আপনার কেমন লাগত?

২. খ্রিস্টানরা যখন রোমীয় সৈন্যদেরকে তাদের নগর ঘিরে ফেলতে দেখেছিল, তখন তাদের কী করতে হয়েছিল আর সেটা কীভাবে সম্ভবপর হয়েছিল?

২ বহুবছর আগে, যিশু তাঁর শিষ্যদের এই ঘটনা সম্বন্ধে সাবধান করেছিলেন এবং তাদের এই নির্দেশ দিয়েছিলেন: “যখন তোমরা যিরূশালেমকে সৈন্যসামন্ত দ্বারা বেষ্টিত দেখিবে, তখন জানিবে যে, তাহার ধ্বংস সন্নিকট। তখন যাহারা যিহূদিয়ায় থাকে, তাহারা পাহাড় অঞ্চলে পলায়ন করুক, এবং যাহারা নগরের মধ্যে থাকে, তাহারা বাহিরে যাউক; আর যাহারা পল্লীগ্রামে থাকে, তাহারা নগরে প্রবেশ না করুক।” (লূক ২১:২০, ২১) যেহেতু সৈন্যরা যিরূশালেমকে ঘিরে ফেলেছিল, তাহলে কীভাবে শিষ্যদের পক্ষে সেই নগর ত্যাগ করার বিষয়ে যিশুর নির্দেশ পালন করা সম্ভবপর হয়েছিল? আশ্চর্যজনক একটা ঘটনা ঘটেছিল। রোমীয় সৈন্যবাহিনী হঠাৎ করেই যিরূশালেম থেকে চলে গিয়েছিল! সেই আক্রমণের সময় “কমাইয়া দেওয়া” হয়েছিল, যেমনটা যিশু আগেই বলেছিলেন। (মথি ২৪:২২) সৈন্যরা চলে যাওয়ার পর, বিশ্বস্ত খ্রিস্টানরা দ্রুত পাহাড় অঞ্চলে পালিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে যিশুর নির্দেশ পালন করার সুযোগ পেয়েছিল।a পরে ৭০ খ্রিস্টাব্দে এক নতুন রোমীয় সৈন্যবাহিনী যিরূশালেমে ফিরে এসেছিল। এই বার সেই নগর ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, যারা যিশুর নির্দেশনার বাধ্য হয়েছিল, তারা সকলে রক্ষা পেয়েছিল।

৩. খ্রিস্টানরা শীঘ্রই কোন পরিস্থিতির মুখোমুখি হবে আর এই প্রবন্ধে আমরা কী আলোচনা করব?

৩ যিশুর সেই সাবধানবাণী ও নির্দেশনা আমাদের দিনের প্রতিও প্রযোজ্য। খুব শীঘ্র, আমরাও একইরকম পরিস্থিতির মুখোমুখি হব। যিশু খ্রিস্টানদের কেবল যিরূশালেমের ধ্বংস সম্বন্ধেই সাবধান করেননি। প্রথম শতাব্দীতে ঘটা ওই ঘটনাগুলো সম্বন্ধে বলার মাধ্যমে যিশু এটাও ব্যাখ্যা করেছিলেন, ভবিষ্যতে যখন হঠাৎ করে “মহাক্লেশ” শুরু হবে, তখন কী ঘটবে। (মথি ২৪:৩, ২১, ২৯) যিরূশালেমের ধ্বংস থেকে যেমন বিশ্বস্ত খ্রিস্টানরা রক্ষা পেয়েছিল, তেমনই আসন্ন বিশ্বব্যাপী ধ্বংস থেকে “বিস্তর লোক” রক্ষা পাবে। (পড়ুন, প্রকাশিত বাক্য ৭:৯, ১৩, ১৪.) ভবিষ্যতের এই ঘটনাগুলোর বিষয়ে বাইবেল যা বলে, তা বোঝা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেন? কারণ আমাদের জীবন এর উপর নির্ভর করে। তাই আসুন আমরা এখন আলোচনা করি, এই ঘটনাগুলো কীভাবে আমাদের ব্যক্তিগতভাবে প্রভাবিত করে।

মহাক্লেশের শুরু

৪. কীভাবে মহাক্লেশ শুরু হবে?

৪ কীভাবে মহাক্লেশ শুরু হবে? সমস্ত মিথ্যা ধর্ম ধ্বংস করার মাধ্যমে তা শুরু হবে। বাইবেলে মিথ্যা ধর্মকে ‘মহতী বাবিল, বেশ্যাগণের জননী’ বলা হয়েছে। (প্রকা. ১৭:৫-৭) কেন মিথ্যা ধর্মকে বেশ্যা বলা হয়েছে? কারণ এর পাদরিরা ঈশ্বরের প্রতি অবিশ্বস্ত হয়ে পড়েছে। তারা যিশু ও তাঁর রাজ্যকে অনুগতভাবে সমর্থন করেনি। এর পরিবর্তে, তারা নিজেদের প্রভাব আরও বৃদ্ধি করার জন্য মানুষের সরকারগুলোকে সমর্থন করেছে এবং বাইবেলের বিভিন্ন শিক্ষাকে উপেক্ষা করেছে। তাদের উপাসনা অভিষিক্ত খ্রিস্টানদের উপাসনার মতো শুদ্ধ নয়। (২ করি. ১১:২; যাকোব ১:২৭; প্রকা. ১৪:৪) কিন্তু, কে মহতী বাবিলকে ধ্বংস করবে? যিহোবা “তাঁহারই মানস” বা ইচ্ছা “সিন্দূরবর্ণ পশুর” ‘দশ শৃঙ্গের’ মাধ্যমে ‘পূর্ণ করিবেন।’ ‘সিন্দূরবর্ণ পশু’ রাষ্ট্রসংঘকে চিত্রিত করে এবং সেই পশুর “দশ শৃঙ্গ” রাষ্ট্রসংঘকে সমর্থনকারী সমস্ত রাজনৈতিক শক্তিগুলোকে চিত্রিত করে।—পড়ুন, প্রকাশিত বাক্য ১৭:৩, ১৬-১৮.

৫, ৬. কেন আমরা বলতে পারি, মহতী বাবিলকে ধ্বংস করার অর্থ এই নয় যে, এর সঙ্গে জড়িত সকল ব্যক্তি মারা যাবে?

৫ মহতী বাবিলকে যখন ধ্বংস করা হবে, তখন মিথ্যা ধর্মের সঙ্গে জড়িত সকল ব্যক্তিই কি মারা যাবে? না। সেই সময়ে কী ঘটবে, তা লেখার জন্য যিহোবা ভাববাদী সখরিয়কে অনুপ্রাণিত করেছিলেন। অতীতে মিথ্যা ধর্মের অংশ ছিলেন এমন একজন ব্যক্তি সেই সময়ে এই কথা বলবেন: “আমি ভাববাদী নহি, আমি কৃষীবল, বাল্যকালাবধি দাস। আর যখন কেহ তাহাকে বলিবে, তোমার দুই হস্তের মধ্যে এই সকল ক্ষতের দাগ কি? তখন সে উত্তর করিবে, আমার আত্মীয়দের বাটীতে যে সকল আঘাত পাইয়াছি, এ সেই সকল আঘাত।” (সখ. ১৩:৪-৬) তাই, এমনকী ধর্মীয় নেতারাও এমন ভান করবে যেন তারা কোনো ধর্মীয় কাজ করে না আর সেইসঙ্গে তাদের যে কখনো মিথ্যা ধর্মের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল, সেই বিষয়টাও তারা অস্বীকার করবে।

৬ সেই সময়ে ঈশ্বরের লোকেদের প্রতি কী ঘটবে? যিশু ব্যাখ্যা করেন: “আর সেই দিনের সংখ্যা যদি কমাইয়া দেওয়া না যাইত, তবে কোন প্রাণীই রক্ষা পাইত না; কিন্তু মনোনীতদের জন্য সেই দিনের সংখ্যা কমাইয়া দেওয়া যাইবে।” (মথি ২৪:২২) প্রথম শতাব্দীতে, যিরূশালেমে ক্লেশের সময় “কমাইয়া দেওয়া” হয়েছিল। এর ফলে ‘মনোনীতরা’ অর্থাৎ অভিষিক্ত খ্রিস্টানরা পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন। একইভাবে, “মনোনীতদের” জন্য মহাক্লেশের প্রথম পর্যায়ের সময়কাল “কমাইয়া দেওয়া” হবে। “দশ শৃঙ্গ” অর্থাৎ রাজনৈতিক শক্তিগুলোকে ঈশ্বরের লোকেদের ধ্বংস করার সুযোগ দেওয়া হবে না। বরং সমস্ত মিথ্যা ধর্ম ধ্বংস করার পর, কিছুটা সময় শান্তি থাকবে।

পরীক্ষার ও বিচারের এক সময়

৭, ৮. মিথ্যা ধর্মের ধ্বংসের পর কোন সুযোগ খোলা থাকবে আর সেই সময়ে ঈশ্বরের লোকেরা কীভাবে অন্য সকলের চেয়ে আলাদা থাকবে?

৭ মিথ্যা ধর্মকে ধ্বংস করে দেওয়ার পর কী ঘটবে? সেই সময়ে, আমাদের হৃদয়ে আসলে কী রয়েছে, সেটা প্রকাশ পাবে। তখন অধিকাংশ মানুষ “পর্ব্বতীয় শৈলে” অর্থাৎ মানুষের বিভিন্ন সংগঠনের কাছ থেকে সুরক্ষা ও সাহায্য লাভ করার চেষ্টা করবে। (প্রকা. ৬:১৫-১৭) কিন্তু, যিহোবার লোকেরা সুরক্ষার জন্য তাঁর উপর নির্ভর করবে। প্রথম শতাব্দীতে যখন আক্রমণের সময় “কমাইয়া দেওয়া” হয়েছিল, তখন এই সময় দেওয়ার অর্থ এটা ছিল না, সকল যিহুদি হঠাৎ করে খ্রিস্ট ধর্মে ধর্মান্তরিত হবে। এর পরিবর্তে, এই সময় দেওয়া হয়েছিল যাতে ইতিমধ্যেই যারা খ্রিস্টান, তারা যিশুর নির্দেশনা অনুযায়ী যিরূশালেম থেকে বের হয়ে যেতে পারে। একইভাবে, ভবিষ্যতে যখন মহতী বাবিলের বিরুদ্ধে আক্রমণের সময় “কমাইয়া দেওয়া” হবে, তখন আমরা এমনটা আশা করতে পারি না, অনেক লোক হঠাৎ করে সত্য খ্রিস্ট ধর্মে ধর্মান্তরিত হবে। এর পরিবর্তে, সেই সময়ে সকল সত্য উপাসক এটা প্রমাণ করার সুযোগ পাবে, তারা যিহোবাকে ভালোবাসে এবং অভিষিক্ত ব্যক্তিদের সমর্থন করে।—মথি ২৫:৩৪-৪০.

৮ পরীক্ষার সেই সময়ে ঠিক কী ঘটবে, তা আমরা জানি না। তবে আমরা এটা জানি, সেই সময়ে জীবনযাপন সহজ হবে না এবং আমাদের বিভিন্ন ত্যাগস্বীকার করতে হবে। প্রথম শতাব্দীতে, রক্ষা পাওয়ার জন্য খ্রিস্টানদের নিজেদের ঘরবাড়ি ত্যাগ করতে হয়েছিল এবং বিভিন্ন কঠিন পরিস্থিতি সহ্য করতে হয়েছিল। (মার্ক ১৩:১৫-১৮) তাই আমাদের নিজেদেরকে জিজ্ঞেস করা উচিত: ‘আমি কি নিজের বস্তুগত বিষয় ত্যাগ করার জন্য প্রস্তুত আছি? যিহোবার প্রতি অনুগত থাকার জন্য যা-কিছু করা প্রয়োজন, আমি কি তা করার জন্য ইচ্ছুক আছি?’ একটু চিন্তা করে দেখুন! সেই সময়ে যা-ই ঘটুক না কেন, একমাত্র আমরাই আমাদের ঈশ্বরের উপাসনা করব, যেমনটা ভাববাদী দানিয়েল করেছিলেন।—দানি. ৬:১০, ১১.

৯, ১০. (ক) মহাক্লেশের সময়ে ঈশ্বরের লোকেরা কোন বার্তা জানাবে? (খ) শত্রুরা ঈশ্বরের লোকেদের প্রতি কেমন প্রতিক্রিয়া দেখাবে?

৯ মহাক্লেশের সময়টা ‘রাজ্যের সুসমাচার’ প্রচার করার সময় নয়। তখন আর রাজ্যের বার্তা প্রচার করার সময় থাকবে না। বরং সেটা হবে “শেষ” উপস্থিত হওয়ার সময়! (মথি ২৪:১৪) ঈশ্বরের লোকেরা সাহসের সঙ্গে সেই স্পষ্ট বিচারের বার্তা জানাবে, যা সকল লোককে প্রভাবিত করবে। সেই বার্তা এইরকম হতে পারে, শয়তানের দুষ্ট জগৎ পুরোপুরি ধ্বংস হতে যাচ্ছে। বাইবেলে এই বার্তাকে শিলাবর্ষণের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। বাইবেল বলে: “আকাশ হইতে মনুষ্যদের উপরে বৃহৎ বৃহৎ শিলাবর্ষণ হইল, তাহার এক একটী এক এক তালন্ত পরিমিত; এই শিলা-বৃষ্টিরূপ আঘাত প্রযুক্ত মনুষ্যেরা ঈশ্বরের নিন্দা করিল; কারণ সেই আঘাত অতিশয় ভারী।”—প্রকা. ১৬:২১.

১০ আমাদের শত্রুরা এই স্পষ্ট বিচারের বার্তা শুনতে পাবে। বিভিন্ন জাতির এক জোট, যাদেরকে বাইবেলে ‘মাগোগ দেশীয় গোগ’ বলা হয়েছে, তারা কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাবে, তা ব্যাখ্যা করার জন্য যিহোবা ভাববাদী যিহিষ্কেলকে অনুপ্রাণিত করেছিলেন। তিনি লিখেছিলেন: “প্রভু সদাপ্রভু এই কথা কহেন, সেই দিন নানা বিষয় তোমার মনে পড়িবে, এবং তুমি অনিষ্টের সঙ্কল্প করিবে। তুমি কহিবে, আমি সেই অপ্রাচীর গ্রামপূর্ণ দেশের বিরুদ্ধে যাত্রা করিব, আমি সেই শান্তিযুক্ত লোকদের কাছে যাইব, তাহারা নির্ভয়ে বাস করিতেছে; তাহারা সকলে প্রাচীরহীন স্থানে বাস করিতেছে; এবং তাহাদের অর্গল কি কবাট নাই। [তোমার অভিপ্রায় এই] যে, লুট কর ও দ্রব্য হরণ কর; [পূর্ব্বে] উৎসন্ন সেই বসতিস্থান সকলের প্রতি এবং জাতিগণের মধ্য হইতে সংগৃহীত, আর পশু ও ধন প্রাপ্ত এবং পৃথিবীর নাভিনিবাসী জাতির প্রতি হস্ত বিস্তার কর।” (যিহি. ৩৮:১০-১২) ঈশ্বরের লোকেরা অন্য সকলের চেয়ে আলাদা থাকবে, রূপকভাবে বললে তারা “পৃথিবীর নাভিনিবাসী” হবে অর্থাৎ সকলের কাছে লক্ষণীয় হয়ে উঠবে। জাতিগণ তখন আর নিজেদের দমন করতে পারবে না। তারা যিহোবার অভিষিক্ত ব্যক্তিদের ও সেইসঙ্গে যারা তাদের সমর্থন করে, তাদের আক্রমণ করার জন্য উঠে-পড়ে লাগবে।

১১. (ক) মহাক্লেশের সময়ে যে-ধারাবাহিক ঘটনা ঘটবে, সেই সম্বন্ধে আমাদের কী মনে রাখতে হবে? (খ) লোকেরা যখন বিভিন্ন চিহ্ন দেখতে পাবে, তখন তারা কেমন প্রতিক্রিয়া দেখাবে?

১১ এরপর কী ঘটবে? ধারাবাহিকভাবে ঠিক কী ঘটবে, তা যদিও বাইবেল আমাদের জানায় না, তবে সম্ভবত একই সময়ে কয়েকটা ঘটনা ঘটবে। এই বিধিব্যবস্থার শেষ সম্বন্ধে ভবিষ্যদ্‌বাণী করতে গিয়ে যিশু বলেছিলেন: “সূর্য্যে, চন্দ্রে ও নক্ষত্রগণে নানা চিহ্ন প্রকাশ পাইবে, এবং পৃথিবীতে জাতিগণের ক্লেশ হইবে, তাহারা সমুদ্রের ও তরঙ্গের গর্জ্জনে উদ্বিগ্ন হইবে। ভয়ে, এবং ভূমণ্ডলে যাহা যাহা ঘটিবে তাহার আশঙ্কায়, মানুষের প্রাণ উড়িয়া যাইবে; কেননা আকাশ-মণ্ডলের পরাক্রম সকল বিচলিত হইবে। আর তৎকালে তাহারা মনুষ্যপুত্রকে পরাক্রম ও মহাপ্রতাপ সহকারে মেঘযোগে আসিতে দেখিবে।” (লূক ২১:২৫-২৭; পড়ুন, মার্ক ১৩:২৪-২৬.) এই ভবিষ্যদ্‌বাণী পরিপূর্ণ হওয়ার সময় কি আক্ষরিক আকাশে কোনো ভয়ংকর চিহ্ন ও ঘটনা দেখা যাবে? কী ঘটে তা দেখার জন্য এখন আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। কিন্তু আমরা এটা জানি, ঈশ্বরের শত্রুরা যখন সেইসমস্ত চিহ্ন দেখবে, তখন তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়বে।

খস্টানরা ইতিবাচক মনোভাব এবং উদ্ধার লাভ করার আথা নিয়ে মহাক্লেশের মুখোমুখি হচ্ছ

আমরা আস্থা রাখতে পারি কারণ আমরা জানি, আমরা রক্ষা পাব! (১২, ১৩ অনুচ্ছেদ দেখুন)

১২, ১৩. (ক) যিশু যখন “পরাক্রম ও মহাপ্রতাপ সহকারে” আসবেন, তখন কী ঘটবে? (খ) সেই সময়ে ঈশ্বরের দাসেরা কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাবে?

১২ যিশু যখন “পরাক্রম ও মহাপ্রতাপ সহকারে” আসবেন, তখন কী ঘটবে? যারা তাঁর প্রতি বিশ্বস্ত থাকবে, তাদের তিনি পুরস্কার দেবেন এবং যারা তাঁর প্রতি বিশ্বস্ত থাকবে না, তাদের তিনি শাস্তি দেবেন। (মথি ২৪:৪৬, ৪৭, ৫০, ৫১; ২৫:১৯, ২৮-৩০) বিষয়টা আরও বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করার জন্য যিশু একটা দৃষ্টান্ত ব্যবহার করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন: “আর যখন মনুষ্যপুত্ত্র সমুদয় দূত সঙ্গে করিয়া আপন প্রতাপে আসিবেন, তখন তিনি নিজ প্রতাপের সিংহাসনে বসিবেন। আর সমুদয় জাতি তাঁহার সম্মুখে একত্রীকৃত হইবে; পরে তিনি তাহাদের এক জন হইতে অন্য জনকে পৃথক্‌ করিবেন, যেমন পালরক্ষক ছাগ হইতে মেষ পৃথক্‌ করে; আর তিনি মেষদিগকে আপনার দক্ষিণদিকে ও ছাগদিগকে বামদিকে রাখিবেন।” (মথি ২৫:৩১-৩৩) মেষদের ও ছাগদের কী হবে? তাদের বিচার করা হবে। ছাগেরা অর্থাৎ অবিশ্বস্ত ব্যক্তিরা “অনন্ত দণ্ডে . . . প্রবেশ করিবে।” কিন্তু মেষেরা অর্থাৎ বিশ্বস্ত ব্যক্তিরা অনন্তজীবন লাভ করবে।—মথি ২৫:৪৬.

১৩ ছাগেরা যখন বুঝতে পারবে তাদের ধ্বংস করা হবে, তখন তারা কেমন প্রতিক্রিয়া দেখাবে? তারা “বিলাপ করিবে।” (মথি ২৪:৩০) কিন্তু, অভিষিক্ত ব্যক্তিরা ও যারা তাদের সমর্থন করে, তারা কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাবে? তারা সেটাই করবে, যা যিশু করতে বলেছিলেন: “এ সকল ঘটনা আরম্ভ হইলে তোমরা ঊর্দ্ধ্বদৃষ্টি করিও, মাথা তুলিও, কেননা তোমাদের মুক্তি সন্নিকট।”—লূক ২১:২৮.

রাজ্যে দেদীপ্যমান হওয়া

১৪, ১৫. মাগোগ দেশীয় গোগের আক্রমণ শুরু হওয়ার পর কোন সংগ্রহের কাজ করা হবে আর তা কীভাবে করা হবে?

১৪ মাগোগ দেশীয় গোগ ঈশ্বরের লোকেদের আক্রমণ করার পর কী ঘটবে? বাইবেল বলে, মনুষ্যপুত্র “দূতগণকে প্রেরণ করিয়া পৃথিবীর সীমা অবধি আকাশের সীমা পর্য্যন্ত চারি বায়ু হইতে তাঁহার মনোনীতদিগকে একত্র করিবেন।” (মার্ক ১৩:২৭; মথি ২৪:৩১) এই একত্রীকরণের বা সংগ্রহের কাজ অভিষিক্ত খ্রিস্টানদের প্রথম মনোনীত করার সময়কে নির্দেশ করে না। আর এটা পৃথিবীতে বেঁচে থাকা অভিষিক্ত ব্যক্তিদের চূড়ান্ত মুদ্রাঙ্কনকেও নির্দেশ করে না। (মথি ১৩:৩৭, ৩৮) কারণ সেই মুদ্রাঙ্কন মহাক্লেশ শুরু হওয়ার ঠিক আগে ঘটবে। (প্রকা. ৭:১-৪) তা হলে, যিশুর উল্লেখিত এই সংগ্রহের কাজ কী? এটা হচ্ছে সেই সময়, যখন পৃথিবীতে বেঁচে থাকা অভিষিক্ত ব্যক্তিরা তাদের পুরস্কার লাভ করবেন এবং স্বর্গে যাবেন। (১ থিষল. ৪:১৫-১৭; প্রকা. ১৪:১) মাগোগ দেশীয় গোগ আক্রমণ শুরু করার কিছু সময় পর এই ঘটনা ঘটবে। (যিহি. ৩৮:১১) তারপর যিশুর বলা এই কথা পরিপূর্ণ হবে: “ধার্ম্মিকেরা আপনাদের পিতার রাজ্যে সূর্য্যের ন্যায় দেদীপ্যমান হইবে।”—মথি ১৩:৪৩.b

১৫ এর অর্থ কি এই যে, অভিষিক্ত ব্যক্তিদের “সশরীরে উঠিয়ে নেওয়া” হবে? খ্রিস্টীয়জগতের অনেকে বিশ্বাস করে, খ্রিস্টানদের মাংসিক দেহে স্বর্গে উঠিয়ে নেওয়া হবে। তারা এটাও মনে করে, তারা যিশুকে আবারও সশরীরে পৃথিবীতে শাসন করার জন্য ফিরে আসতে দেখবে। কিন্তু, বাইবেল স্পষ্টভাবে প্রকাশ করে, যিশু অদৃশ্যভাবে ফিরে আসবেন। এটি বলে: “মনুষ্যপুত্রের চিহ্ন আকাশে দেখা যাইবে” এবং যিশু “আকাশীয় মেঘরথে” আসবেন। (মথি ২৪:৩০) বাইবেল এটাও বলে, “রক্ত মাংস ঈশ্বরের রাজ্যের অধিকারী হইতে পারে না।” তাই, যাদের স্বর্গে নিয়ে যাওয়া হবে, তাদের প্রথমে “রূপান্তরীকৃত” হতে হবে আর তা হবে “এক মুহূর্ত্তের মধ্যে, চক্ষুর পলকে, শেষ তূরীধ্বনিতে।”c (পড়ুন, ১ করিন্থীয় ১৫:৫০-৫৩.) আমরা এই ঘটনা বর্ণনা করার জন্য এখানে “সশরীরে উঠিয়ে নেওয়া” শব্দগুলো ব্যবহার করিনি কারণ এটা খ্রিস্টীয়জগতের মিথ্যা শিক্ষার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। তবে, পৃথিবীতে বেঁচে থাকা বিশ্বস্ত অভিষিক্ত ব্যক্তিদের মুহূর্তের মধ্যে সংগ্রহ করা হবে।

১৬, ১৭. মেষশাবকের বিবাহের আগে কোন ঘটনা অবশ্যই ঘটবে?

১৬ এক লক্ষ চুয়াল্লিশ হাজার অভিষিক্ত ব্যক্তি সকলে স্বর্গে যাওয়ার পর, মেষশাবকের বিবাহের চূড়ান্ত প্রস্তুতি শুরু হবে। (প্রকা. ১৯:৯) কিন্তু সেই রোমাঞ্চকর ঘটনার আগে আরও একটা ঘটনা অবশ্যই ঘটবে। মনে রাখবেন, অভিষিক্ত ব্যক্তিরা পৃথিবীতে বেঁচে থাকার সময় গোগ ঈশ্বরের লোকেদের আক্রমণ করবে। (যিহি. ৩৮:১৬) ঈশ্বরের লোকেরা তখন কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাবে? তারা এই নির্দেশনার বাধ্য হবে: “এবার তোমাদিগকে যুদ্ধ করিতে হইবে না; . . . তোমরা শ্রেণীবদ্ধ হও, দাঁড়াইয়া থাক, আর তোমাদের সহবর্ত্তী সদাপ্রভু যে নিস্তার করিবেন, তাহা দেখ; ভীত কি নিরাশ হইও না।” (২ বংশা. ২০:১৭) গোগ আক্রমণ শুরু করার কিছু সময় পর পৃথিবীতে বেঁচে থাকা অভিষিক্ত ব্যক্তিদের স্বর্গে নিয়ে যাওয়া হবে। গোগের আক্রমণের প্রতিক্রিয়া স্বরূপ স্বর্গে কী হবে, তা প্রকাশিত বাক্য ১৭:১৪ পদ আমাদের জানায়। ঈশ্বরের শত্রুরা “মেষশাবকের সহিত যুদ্ধ করিবে, আর মেষশাবক তাহাদিগকে জয় করিবেন, কারণ ‘তিনি প্রভুদের প্রভু ও রাজাদের রাজা;’ এবং যাঁহারা তাঁহার সহবর্ত্তী, আহূত ও মনোনীত ও বিশ্বস্ত, তাঁহারাও জয় করিবেন।” তাই, স্বর্গে যিশু ও তাঁর ১,৪৪,০০০ জন অভিষিক্ত রাজা, পৃথিবীতে থাকা ঈশ্বরের লোকেদের উদ্ধার করবেন।

১৭ এই উদ্ধার কাজ করার জন্য আরমাগিদোন যুদ্ধ শুরু হবে, যা যিহোবার পবিত্র নামের গৌরব নিয়ে আসবে। (প্রকা. ১৬:১৬) যাদের ছাগ বা অবিশ্বস্ত হিসেবে বিচার করা হবে, তারা সকলে ধ্বংস হবে। পৃথিবীতে আর কোনো দুষ্টতা থাকবে না এবং “বিস্তর লোক” আরমাগিদোন থেকে রক্ষা পাবে। অবশেষে, প্রকাশিত বাক্য বইয়ে বর্ণিত রোমাঞ্চকর পরিণতি অর্থাৎ মেষশাবকের বিবাহ সম্পন্ন হবে! (প্রকা. ২১:১-৪)d যারা পৃথিবীতে বেঁচে থাকবে, তারা সকলে ঈশ্বরের অনুগ্রহ লাভ করবে এবং তাঁর অসীম প্রেম ও উদারতা দেখতে পাবে। আমরা সেই সময়ের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে আছি। তখন কী এক দারুণ বিবাহভোজই-না হবে!—পড়ুন, ২ পিতর ৩:১৩.

১৮. ভবিষ্যদ্‌বাণীকৃত যে-রোমাঞ্চকর ঘটনাগুলো শীঘ্রই ঘটতে যাচ্ছে, সেই সম্বন্ধে জানার পর, এখন আমাদের কী করার জন্য দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ হতে হবে?

১৮ শীঘ্রই যে-রোমাঞ্চকর ঘটনাগুলো ঘটতে যাচ্ছে, সেই সম্বন্ধে জানার পর, এখন আমাদের প্রত্যেকের কী করা উচিত? যিহোবা প্রেরিত পিতরকে এই কথাগুলো লিখতে অনুপ্রাণিত করেছিলেন: “এইরূপে যখন এই সমস্তই বিলীন হইবে, তখন পবিত্র আচার ব্যবহার ও ভক্তিতে কিরূপ লোক হওয়া তোমাদের উচিত! ঈশ্বরের সেই দিনের আগমনের অপেক্ষা ও আকাঙ্ক্ষা করিতে করিতে সেইরূপ হওয়া চাই . . . অতএব, প্রিয়তমেরা, তোমরা যখন এই সকলের অপেক্ষা করিতেছ, তখন যত্ন কর, যেন তাঁহার কাছে তোমাদিগকে নিষ্কলঙ্ক ও নির্দ্দোষ অবস্থায় শান্তিতে দেখিতে পাওয়া যায়!” (২ পিতর ৩:১১, ১২, ১৪) তাই আসুন, আমরা ক্রমাগত বিশুদ্ধ উপাসনা করার, মিথ্যা ধর্মের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক না রাখার এবং শান্তিরাজ যিশু খ্রিস্টকে সমর্থন করার জন্য দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ হই!

a ২০১২ সালের ১৫ এপ্রিল প্রহরীদুর্গ পত্রিকার ২৫-২৬ পৃষ্ঠা দেখুন।

b ২০১৩ সালের ১৫ জুলাই প্রহরীদুর্গ পত্রিকার ১৩-১৪ পৃষ্ঠা দেখুন।

c সেই সময়ে পৃথিবীতে বেঁচে থাকা অভিষিক্ত ব্যক্তিদের মাংসিক দেহ স্বর্গে নিয়ে যাওয়া হবে না। (১ করি. ১৫:৪৮, ৪৯) যিশুর মাংসিক দেহ যেমন অদৃশ্য হয়েছিল, তেমনই তাদের মাংসিক দেহও সম্ভবত অদৃশ্য হবে।

d এই ধারাবাহিক ঘটনা সম্বন্ধে গীতসংহিতার ৪৫ গীতেও বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। প্রথমে রাজা যুদ্ধ করেন আর এরপর বিবাহ সম্পন্ন হয়।

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৫)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার