ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w৯৫ ১১/১ পৃষ্ঠা ১৬-২১
  • জেগে থাকার সময়

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • জেগে থাকার সময়
  • ১৯৯৫ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • “জাগিয়া থাকিও”
  • যে ‘বংশ’ লোপ পাবে
  • ‘সেই দিন ও সেই দণ্ড’
  • ধার্মিক ‘নূতন আকাশমণ্ডল ও নূতন পৃথিবী’
  • পাঠকদের থেকে প্রশ্নসকল
    ১৯৯৭ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • এক “দুষ্ট বংশ” থেকে রক্ষা পাওয়া
    ১৯৯৫ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • খ্রিস্টের উপস্থিতি —আপনার কাছে এর অর্থ কী?
    ২০০৮ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • পাঠকদের থেকে প্রশ্নসকল
    ১৯৯৫ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
আরও দেখুন
১৯৯৫ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w৯৫ ১১/১ পৃষ্ঠা ১৬-২১

জেগে থাকার সময়

“অগ্রে সর্ব্বজাতির কাছে সুসমাচার প্রচারিত হওয়া আবশ্যক। . . . কিন্তু যে কেহ শেষ পর্য্যন্ত স্থির থাকিবে, সেই পরিত্রাণ পাইবে।”—মার্ক ১৩:১০, ১৩.

১. আমাদের কেন ধৈর্য ও সাহস রাখা উচিত?

ধৈর্য আমাদের দেখাতেই হবে—এই অবিশ্বাসী ও বিপথগামী বংশের মাঝে! ঠিক যীশুর দিনের মতো, ১৯১৪ সাল থেকে লোকেদের এক বংশ দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। আর আজ এই দুর্নীতি জগদ্ব্যাপী ছড়িয়ে গেছে। প্রেরিত পৌলের দ্বারা বর্ণিত এই “শেষকালে” এক “বিষম সময় যার মোকাবিলা করা কঠিন” (NW) মানবজাতিকে উৎপীড়িত করছে। ‘দুষ্টলোকেরা ও বঞ্চকেরা . . . উত্তর উত্তর কুপথে অগ্রসর হইতেছে।’ স্পষ্টতই, “সমস্ত জগৎ সেই পাপাত্মার মধ্যে শুইয়া রহিয়াছে,” অর্থাৎ শয়তান দিয়াবল, যে এখন পৃথিবীকে ধ্বংস করার শেষ প্রচেষ্টা করছে। কিন্তু সাহসী হোন! এক “মহাক্লেশ” সন্নিকট যা সকল ধার্মিকতার প্রেমিকদের জন্য স্থায়ী মুক্তি আনবে।—২ তীমথিয় ৩:১-৫, ১৩; ১ যোহন ৫:১৯; প্রকাশিত বাক্য ৭:১৪.

২. ১৯১৪ সালে কিভাবে ভবিষ্যদ্বাণী পরিপূর্ণতা লাভ করে?

২ আনন্দের বিষয় হল যে, প্রস্তুতিমূলকভাবে মানবজাতির উৎপীড়নকারী শত্রুকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য, যিহোবা, প্রভু যীশু খ্রীষ্টকে স্বর্গের সিংহাসনে বসিয়েছেন। (প্রকাশিত বাক্য ১১:১৫) মশীহের প্রথম আগমনের মতো, এই শতাব্দীতেও দানিয়েলের দ্বারা লিখিত এক উল্লেখযোগ্য ভবিষ্যদ্বাণী পরিপূর্ণতা লাভ করেছে। দানিয়েল ৪:১৬, ১৭, ৩২ পদে আমাদের জানানো হয় যে “সাতকাল” ব্যাপী এই পৃথিবীর উপর যোগ্য রাজশাসন ব্যাহত হবে। এর ব্যাপক পরিপূর্ণতা স্বরূপ, এই সাত কাল হল, ৩৬০ ‘দিন’ ব্যাপৃত সাতটি নির্দিষ্ট বাইবেলের বছরগুলি অর্থাৎ মোট ২৫২০ বছর।a এর সময় পরিধি শুরু হয় সা.শ.পূ. ৬০৭ সালে, যখন বাবিলন ইস্রায়েলের রাজ্যকে পদদলিত করে তখন থেকে সা.শ. ১৯১৪ সাল পর্যন্ত এটি চলতে থাকে, যে বছরটিতে যীশু মানবজাতির যোগ্য রাজা হিসাবে স্বর্গের সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হন। তখনই “জাতিগণের সময়” শেষ হয়। (লূক ২১:২৪) কিন্তু আগত এই মশীহ রাজ্যের প্রতি বশ্যতা স্বীকার করতে জাতিগণ অস্বীকার করে।—গীতসংহিতা ২:১-৬, ১০-১২; ১১০:১, ২.

৩, ৪. (ক) আমাদের দিনের সাথে প্রথম-শতাব্দীর ঘটনাগুলির কী তুলনা আছে? (খ) কোন্‌ যুক্তিযুক্ত প্রশ্নগুলি করা যেতে পারে?

৩ যতই ৭০তম সপ্তাহ ব্যাপৃত বছরগুলি (সা.শ. ২৯-৩৬ সাল) এগিয়ে আসতে থাকে আর ১৯১৪ সাল যতই সন্নিকট হতে আরম্ভ করে, ঈশ্বর-ভীরু লোকেরা মশীহের আবির্ভাবের অপেক্ষায় থাকে। অবশ্যই তাঁর আবির্ভাব ঘটে! কিন্তু প্রতিটি ক্ষেত্রে, যা আশা করা হয়েছিল তার তুলনায় তাঁর আবির্ভাবের ধরনটি ছিল ভিন্ন। এছাড়াও প্রতিটি ক্ষেত্রে, অপেক্ষাকৃতভাবে অল্প সময়ের জন্য এক দুষ্ট “বংশ” অবশেষে ঐশিকভাবে নির্দেশিত বিচারের সম্মুখীন হয়।—মথি ২৪:৩৪.

৪ আমাদের আগের প্রবন্ধটিতে, আমরা লক্ষ্য করেছি যে দুষ্ট যিহূদী বংশটি, যারা যীশুকে হত্যা করার দাবি জানিয়েছিল, কিভাবে ধ্বংস হয়েছিল। তাহলে মানবজাতির এই ধ্বংসাত্মক বংশটির সম্বন্ধে কী বলা যায় যা এখনও তার বিরোধিতা করছে অথবা তাঁকে অবজ্ঞা করছে? এই অবিশ্বাসী বংশের উপর কখন বিচার আসবে?

“জাগিয়া থাকিও”

৫. (ক) কোন্‌ উত্তম কারণে যিহোবার ‘দিন ও দণ্ড’ আমাদের জানার দরকার নেই? (খ) মার্কের কথা অনুসারে কোন্‌ উত্তম উপদেশ দেওয়ার দ্বারা যীশু তাঁর ভবিষ্যদ্বাণী শেষ করেন?

৫ সেই সব ঘটনাগুলি যা “মহাক্লেশ” এর দিকে পরিচালনা করবে, সে বিষয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করার পর, যীশু আরও বলেন: “সেই দিনের ও সেই দণ্ডের তত্ত্ব কেহই জানে না, স্বর্গের দূতগণও জানেন না, পুত্ত্রও জানেন না, কেবল পিতা জানেন।” (মথি ২৪:৩-৩৬; মার্ক ১৩:৩-৩২) ঘটনাগুলি ঘটার নির্দিষ্ট সময় জানার আমাদের কোন প্রয়োজন নেই। বরঞ্চ, সজাগ থাকার প্রতি, দৃঢ় বিশ্বাস গড়ে তোলার প্রতি ও যিহোবার পরিচর্যায় ব্যস্ত থাকার প্রতি আমাদের দৃষ্টি নিবদ্ধ রাখা উচিত—তারিখ গণনা করার প্রতি নয়। যীশু তাঁর এই মহান ভবিষ্যদ্বাণী এইভাবে শেষ করেন: “সাবধান, তোমরা জাগিয়া থাকিও, ও প্রার্থনা করিও; কেননা সে সময় কবে হইবে, তাহা জান না। . . . তোমরা জাগিয়া থাকিও, . . . আমি তোমাদিগকে যাহা বলিতেছি, তাহাই সকলকে বলি, জাগিয়া থাকিও।” (মার্ক ১৩:৩৩-৩৭) আজকের জগতের এই অন্ধকারের মধ্যে বিপদ ওত পেতে রয়েছে। আমাদের অবশ্যই জেগে থাকতে হবে!—রোমীয় ১৩:১১-১৩.

৬. (ক) কিসের উপর আমাদের বিশ্বাস গড়ে ওঠা উচিত? (খ) কিভাবে আমরা “দিন গণনা” করতে পারি? (গ) ‘বংশ’ বলতে যীশু আসলে কী বোঝাতে চেয়েছিলেন?

৬ দুষ্ট বিধিব্যবস্থার শেষ কাল সম্বন্ধীয় অনুপ্রাণিত ভবিষ্যদ্বাণীর প্রতি কেবল আমরা মনোযোগ স্থাপন করব না, কিন্তু তারই সাথে আমরা অবশ্যই আমাদের বিশ্বাসকে প্রাথমিকভাবে খ্রীষ্ট যীশুর মূল্যবান বলিদানের উপর ও তারই ভিত্তিতে ঈশ্বরের দেওয়া উত্তম প্রতিজ্ঞাগুলির উপর গড়ে তুলব। (ইব্রীয় ৬:১৭-১৯; ৯:১৪; ১ পিতর ১:১৮, ১৯; ২ পিতর ১:১৬-১৯) এই দুষ্ট বিধিব্যবস্থার শেষ দেখার জন্য আগ্রহবশত অনেক সময় যিহোবার লোকেরা “মহাক্লেশ” কখন আরম্ভ হবে তার নির্দিষ্ট সময়টি অনুমান করার চেষ্টা করেছে এবং এরই সাথে যোগসূত্র হিসাবে ১৯১৪ সালের যে বংশ তার জীবন পরিধি পর্যন্ত গণনা করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু, আমরা “প্রজ্ঞার চিত্ত লাভ” করব যদি কত বছর বা দিন নিয়ে একটি বংশ গঠিত হয় সেই বিষয় গণনা না করে আমরা চিন্তা করি যে যিহোবার উদ্দেশ্যে আনন্দময় প্রশংসা করার ক্ষেত্রে কিভাবে আমরা “আমাদের দিন গণনা” করতে পারি। (গীতসংহিতা ৯০:১২) ‘বংশ’ শব্দটিকে একটি পরিমাপ করার নিয়ম হিসাবে ব্যবহার না করে বরঞ্চ যীশু এটিকে প্রধানত সেই সব সমসাময়িক লোকেদের প্রতি প্রয়োগ করেছিলেন যারা তাদের কিছু উল্লেখযোগ্য চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য সমেত কোন এক ঐতিহাসিক সময় উপস্থিত ছিল।b

৭. ইতিহাসের অধ্যাপক “১৯১৪ সালের বংশ” সম্বন্ধে কী লেখেন ও তা যীশুর ভবিষ্যদ্বাণীর সাথে কিভাবে সম্পর্কযুক্ত?

৭ উপরি উক্ত, বিষয়বস্তুটির সাথে সামঞ্জস্য রেখে, ইতিহাসের অধ্যাপক রর্বাট হোল তার “১৯১৪ সালের বংশ” (ইংরাজি), নামক বইটিতে মন্তব্য করেন: “ঐতিহাসিক বংশকে কখনও তারিখের দ্বারা ব্যাখ্যা করা যায় না . . . এটা কোন তারিখের পর্যায় পড়ে না।” কিন্তু তিনি এটা বলেন যে, ১ম বিশ্বযুদ্ধ “অতীতের সাথে এক ধরনের অভূতপূর্ব বিচ্ছিন্নতার” সৃষ্টি করেছে, তিনি আরও বলেন: “যারা যুদ্ধের মধ্য থেকে রক্ষা পেয়েছিল, তারা কোন রকমভাবেই বিশ্বাস করতে পারছিল না যে একটি জগতের শেষ হয়েছে এবং আগস্ট ১৯১৪ সালে আরেকটির আরম্ভ হয়েছে।” কতই না সত্য এই মন্তব্যটি! এটি মূল বিষয়বস্তুর উপর দৃষ্টি আরোপ করে। ১৯১৪ সাল থেকে শুরু করে মানবজাতির এই ‘বংশ’-টি অসাধারণ পরিবর্তনগুলি লক্ষ্য করে। এটি পৃথিবীকে কোটি কোটি মানুষের রক্তে রক্তাপ্লুত হতে দেখেছে। যুদ্ধ, সাম্প্রদায়িক বিলোপসাধন, সন্ত্রাসবাদ ও অরাজকতা জগদ্ব্যাপী ছেয়ে গেছে। দুর্ভিক্ষ, রোগ ও অনৈতিকতা আমাদের পৃথিবীকে ভরিয়ে রেখেছে। যীশু ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন: “তোমরাও [তাঁর শিষ্যেরা] যখন এই সকল ঘটিতেছে দেখিবে, তখন জানিবে, ঈশ্বরের রাজ্য সন্নিকট। আমি তোমাদিগকে সত্য বলিতেছি, যে পর্য্যন্ত সমস্ত সিদ্ধ না হইবে, সেই পর্য্যন্ত এই কালের [“এই বংশের,” NW] লোকদের লোপ হইবে না।”—লূক ২১:৩১ ৩২.

৮. যিহোবার ভাববাদীরা কিভাবে জেগে থাকার উপর জোর দেন?

৮ হ্যাঁ, মশীহ রাজ্যের পূর্ণবিজয় এখন সন্নিকট! তারিখ গণনা করে অথবা একটি “বংশের” আক্ষরিক জীবন পরিধি সম্বন্ধে অনুমান করার দ্বারা কোন কিছু কি লাভ করা সম্ভবপর হবে? কখনই না! হবক্‌কূক ২:৩ পদ স্পষ্টভাবে জানায়: “এই দর্শন এখনও নিরূপিত কালের নিমিত্ত, ও তাহা পরিনামের আকাঙ্ক্ষা করিতেছে, আর মিথ্যা হইবে না; তাহার বিলম্ব হইলেও তাহার অপেক্ষা কর, কেননা তাহা অবশ্য উপস্থিত হইবে, যথাকালে বিলম্ব করিবে না।” হিসাব নেওয়ার জন্য যিহোবার যে দিন তা আরও কাছে এগিয়ে আসছে।—যিরমিয় ২৫:৩১-৩৩; মালাখি ৪:১.

৯. ১৯১৪ সাল থেকে কোন্‌ ঘটনাগুলি দেখায় যে সময় সন্নিকট?

৯ ১৯১৪ সালে যখন খ্রীষ্টের রাজ্য শাসন শুরু হয়, শয়তানকে পৃথিবীতে নিক্ষেপ করা হয়। এর অর্থ দাঁড়ায় “পৃথিবীর . . . সন্তাপ হইবে; . . . কেননা দিয়াবল তোমাদের নিকটে নামিয়া গিয়াছে; সে অতিশয় রাগাপন্ন, সে জানে, তাহার কাল সংক্ষিপ্ত।” (বাঁকা অক্ষরে মুদ্রণ আমাদের।) (প্রকাশিত বাক্য ১২:১২) হাজার বছর ধরে শয়তান কর্তৃক শাসনের তুলনায় সেই সময়টি বাস্তবিকই খুবই অল্প। রাজ্য সন্নিকট ও তারই সাথে এই দুষ্ট বংশের উপর যিহোবার বিচারের দিন ও ক্ষণও সন্নিকট!—হিতোপদেশ ৩:২৫; ১০:২৪, ২৫.

যে ‘বংশ’ লোপ পাবে

১০. কিভাবে ‘এই বংশ’ নোহের দিনের মতো?

১০ মথি ২৪:৩৪, ৩৫ পদে উদ্ধৃত যীশুর বাক্যগুলিকে আসুন আমরা আরও গভীরভাবে পরীক্ষা করে দেখি: “আমি তোমাদিগকে সত্য কহিতেছি, এই কালের [“এই বংশের,” NW) লোকদের লোপ হইবে না, যে পর্য্যন্ত না এ সমস্ত সিদ্ধ হয়। আকাশের ও পৃথিবীর লোপ হইবে, কিন্তু আমার বাক্যের লোপ কখনও হইবে না।” এরপরে যীশুর বাক্যগুলি দেখায় যে ‘সেই দিনের ও সেই দণ্ডের তত্ত্ব কেউ জানে না।’ এর চাইতে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল যে, তিনি দেখিয়ে দেন যে আমাদের অবশ্যই এই বংশের চারপাশে ফাঁদকে এড়িয়ে চলতে হবে। তাই যীশু আরও বলেন: “বাস্তবিক নোহের সময়ে যেরূপ হইয়াছিল, মনুষ্যপুত্ত্রের আগমনও তদ্রুপ হইবে। কারণ জলপ্লাবনের সেই পূর্ব্ববর্ত্তী কালে, জাহাজে নোহের প্রবেশ দিন পর্য্যন্ত, লোকে যেমন ভোজন ও পান করিত, বিবাহ করিত ও বিবাহিতা হইত, এবং বুঝিতে পারিল না, যাবৎ না বন্যা আসিয়া সকলকে ভাসাইয়া লইয়া গেল; তদ্রূপ মনুষ্যপুত্ত্রের আগমন হইবে।” (মথি ২৪:৩৬-৩৯) এখানে যীশু নোহের দিনের সাথে তাঁর সময়কার বংশের তুলনা করেছেন।—আদিপুস্তক ৬:৫, ৯; পাদটীকা।

১১. মথি ও লূক দ্বারা বর্ণিত কোন্‌ তুলনামূলক “বংশের” আলোচনা যীশু করেছিলেন?

১১ এটাই প্রথম বার ছিল না যখন প্রেরিতেরা যীশুকে বিভিন্ন ‘বংশের’ তুলনা করতে শুনেছিলেন, কারণ কিছুদিন আগে তিনি নিজের সম্বন্ধে বলেছিলেন: “তাঁহাকে অনেক দুঃখ ভোগ করিতে এবং এই কালের [“এই বংশের,” NW] লোকদের কাছে অগ্রাহ্য হইতে হইবে। আর নোহের সময়ে যেরূপ হইয়াছিল, মনুষ্যপুত্ত্রের সময়েও তদ্রূপ হইবে।” (বাঁকা অক্ষরে মুদ্রণ আমাদের।) (লূক ১৭:২৪-২৬) অতএব, মথি ২৪ অধ্যায় ও লূক ১৭ অধ্যায় ঠিক একই বিষয় তুলনা করে। নোহের দিনে “পৃথিবীস্থ [যে] সমুদয় প্রাণী ভ্রষ্টাচারী হইয়াছিল” এবং তারাই যারা প্লাবনে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল, সেটাই ছিল ‘এই বংশ।’ যীশুর দিনে ধর্মভ্রষ্ট যিহূদী লোকেরা যারা যীশুকে প্রত্যাখ্যান করেছিল, তারাই ছিল ‘এই বংশ।’—আদিপুস্তক ৬:১১, ১২; ৭:১.

১২, ১৩. (ক) আজকের কোন্‌ ‘বংশ’ লোপ পাবেই? (খ) কিভাবে যিহোবার লোকেরা এই “কুটিল ও বিপথগামী বংশের” সাথে মোকাবিলা করছে?

১২ অতএব, আজকের দিনে যীশুর ভবিষ্যদ্বাণী শেষ পরিপূর্ণতায় ‘এই বংশ’ পৃথিবীর সেই সব লোকদের প্রতি প্রযোজ্য যারা খ্রীষ্টের উপস্থিতির চিহ্ন দেখতে পায়, কিন্তু তাদের জীবনধারা পরিবর্তন করতে ব্যর্থ হয়। অন্যদিকে আবার, যীশুর শিষ্য হিসাবে আমরা “এই বংশের” জীবনধারা অনুসারে নিজেদের মানিয়ে নিতে অস্বীকার করি। যদিও, এই জগতের কোন অংশ আমরা হব না, “কেননা কাল সন্নিকট।” (প্রকাশিত বাক্য ১:৩; যোহন ১৭:১৬) প্রেরিত পৌল আমাদের উপদেশ দেন: “তোমরা বচসা ও তর্কবিতর্ক বিনা সমস্ত কার্য্য কর, যেন তোমার অনিন্দনীয় ও অমায়িক হও, এই কালের [“এই বংশের,” NW] সেই কুটিল ও বিপথগামী লোকদের মধ্যে ঈশ্বরের নিষ্কলঙ্ক সন্তান হও, যাহাদের মধ্যে তোমরা জগতে জ্যোতির্গণের ন্যায় প্রকাশ পাইতেছ।”—ফিলিপীয় ২:১৪, ১৫; কলসীয় ৩:৫, ১০; ১ যোহন ২:১৫-১৭.

১৩ আমাদের ক্ষেত্রে “জগতে জ্যোতির্গণের ন্যায় প্রকাশ” পাওয়ার অন্তর্ভুক্ত কেবলমাত্র পরিচ্ছন্ন খ্রীষ্টীয় ব্যক্তিত্বই প্রতিফলন করা নয়, কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যীশুর ভাববাণীমূলক আদেশটিও পালন করা: “আর সর্ব্ব জাতির কাছে সাক্ষ্য দিবার নিমিত্ত রাজ্যের এই সুসমাচার সমুদয় জগতে প্রচার করা যাইবে; আর তখন শেষ উপস্থিত হইবে।” (মথি ২৪:১৪) কোন মানুষ বলতে পারবে না কখন সেই শেষ আসবে, কিন্তু আমরা জানি যে দুষ্ট লোকেদের ‘এই বংশ’ তখনই শেষ হবে যখন ঈশ্বরের ইচ্ছা অনুসারে “পৃথিবীর প্রান্ত পর্য্যন্ত” সাক্ষ্য দেওয়া হবে।—প্রেরিত ১:৮.

‘সেই দিন ও সেই দণ্ড’

১৪. “কাল ও সময়” সম্বন্ধে যীশু ও পৌল উভয়েই কী উপদেশ দেন ও আমাদের কিরূপ প্রতিক্রিয়া হওয়া উচিত?

১৪ যখন যিহোবার উদ্দেশ্য অনুসারে সমগ্র পৃথিবীব্যাপী সাক্ষ্য দেওয়া সম্পূর্ণ হবে, সেটাই হবে এই জগৎ ব্যবস্থাকে ধ্বংস করার তাঁর ‘দিন ও দণ্ড।’ আগে থেকে আমাদের এই দিন জানার কোন প্রয়োজন নেই। অতএব, যীশুর আদর্শ অনুকরণ করার দ্বারা, প্রেরিত পৌল উপদেশ দেন: “কিন্তু, হে ভ্রাতৃগণ, বিশেষ বিশেষ কালের ও সময়ের বিষয়ে তোমাদিগকে কিছু লেখা অনাবশ্যক। কারণ তোমরা আপনারা বিলক্ষণ জান, রাত্রিকালে যেমন চোর, তেমনি প্রভুর দিন আসিতেছে। লোকে যখন বলে শান্তি ও অভয় [“নিরাপত্তা,” NW] তখনই তাহাদের কাছে যেমন গর্ব্ভবতীর প্রসব-বেদনা উপস্থিত হইয়া থাকে, তেমনি আকস্মিক বিনাশ উপস্থিত হয়; আর তাহারা কোন ক্রমে এড়াইতে পারিবে না।” লক্ষ্য করুন পৌল কিসের প্রতি দৃষ্টি দিচ্ছেন: ‘লোকে যখন বলে।’ (বাঁকা অক্ষরে মুদ্রণ আমাদের।) হ্যাঁ, যখন “শান্তি ও নিরাপত্তা” সম্বন্ধে আলোচনা চলবে কিন্তু লোকেরা যখন আশা করবে না, তখনই অপ্রত্যাশিতভাবে ঈশ্বরের বিচার উপস্থিত হবে। পৌলের উপদেশ কতই না যথার্থ: “অতএব আইস, আমরা অন্য সকলের ন্যায় নিদ্রা না যাই, বরং জাগিয়া থাকি ও মিতাচারী হই।”—১ থিষলনীকীয় ৫:১-৩, ৬; এছাড়াও দেখুন ৭-১১; প্রেরিত ১:৭.

১৫, ১৬. (ক) আমাদের কেন চিন্তা করা উচিত নয় যে হর্‌মাগিদোন আসতে আমরা যা ভেবেছিলাম তার চাইতে আরও দেরি আছে? (খ) যিহোবার সার্বভৌমত্ব কিভাবে ভবিষ্যতে মহিমান্বিত হবে?

১৫ ‘এই বংশ’ সম্বন্ধে আরও সঠিক দৃষ্টিভঙ্গিটি কি এটাই বোঝাচ্ছে যে আমরা যা ভেবেছিলাম তার থেকে হর্‌মাগিদোন আসতে অনেক দেরি? কখনই না! যদিও আমরা কোন দিনই ‘দিন ও দণ্ড’ সম্বন্ধে কিছুই জানতে পারিনি, কিন্তু যিহোবা ঈশ্বর চিরদিনই তা জানেন, আর তিনি তা পরিবর্তন করেন না। (মালাখি ৩:৬) এটা স্পষ্ট যে, এই জগৎ ক্রমশই অনিবার্য ধ্বংসের মধ্যে ডুবে যাচ্ছে। আগের তুলনায় এখন জেগে থাকা আরও অনেক বেশি জরুরী। “যাহা যাহা শীঘ্র ঘটিবে” তা যিহোবা আমাদের কাছে প্রকাশ করে দিয়েছেন আর আমাদের উচিত সম্পূর্ণ তৎপরতার সাথে এর প্রতি সাড়া দেওয়া।—প্রকাশিত বাক্য ১:১; ১১:১৮; ১৬:১৪, ১৬.

১৬ যতই সময় এগিয়ে আসছে, জেগে থাকুন, কারণ যিহোবা, খুব শীঘ্রই শয়তানের সমস্ত বিধিব্যবস্থার উপর ধ্বংস আনবেন! (যিরমিয় ২৫:২৯-৩১) যিহোবা বলেন: “আমি আপনার মহত্ত্ব ও পবিত্রতা প্রকাশ করিব, বহু-সংখ্যক জাতির সাক্ষাতে আপনার পরিচয় দিব; তাহাতে তাহারা জানিবে যে আমিই সদাপ্রভু।” (যিহিষ্কেল ৩৮:২৩) নির্বাচনমূলক সেই “সদাপ্রভুর দিন” কাছে এগিয়ে আসছে!—যোয়েল ১:১৫; ২:১, ২; আমোষ ৫:১৮-২০; সফনিয় ২:২, ৩.

ধার্মিক ‘নূতন আকাশমণ্ডল ও নূতন পৃথিবী’

১৭, ১৮. (ক) যীশু ও পিতরের কথা অনুসারে কিভাবে ‘এই বংশ’ লোপ পাবে? (খ) ঈশ্বর ভক্তি সম্বন্ধীয় আচরণ ও কাজের বিষয়ে আমরা কেন সজাগ থাকব?

১৭ ‘এ সমস্ত সিদ্ধ হওয়ার’ বিষয় যীশু বলেছিলেন: “আকাশের ও পৃথিবীর লোপ হইবে, কিন্তু আমার বাক্যের লোপ কখনও হইবে না।” (মথি ২৪:৩৪, ৩৫) সম্ভবত যীশুর মনে ছিল সেই “বর্ত্তমান কালের আকাশমণ্ডল ও পৃথিবী”—“এই বংশ” এর—শাসক ও শাসিতদের কথা। প্রেরিত পিতরও ঠিক একই শব্দ ব্যবহার করেন “আকাশমণ্ডল ও পৃথিবী” সম্বন্ধে বলতে গিয়ে যা “অগ্নির নিমিত্ত সঞ্চিত রহিয়াছে, ভক্তিহীন মনুষ্যদের বিচার ও বিনাশের দিন পর্য্যন্ত রক্ষিত হইতেছে।” এরপর তিনি বর্ণনা করেন যে কিভাবে দুর্নীতিগ্রস্ত মানব সমাজ অর্থাৎ “পৃথিবী” ও তার পাপপূর্ণ কাজের সাথে “প্রভুর [“যিহোবার,” NW] দিন চোরের ন্যায় আসিবে; তখন আকাশমণ্ডল [সরকার সম্বন্ধীয়] . . . উড়িয়া যাইবে।” এরপর প্রেরিত আমাদের উপদেশ দেন, “পবিত্র আচার ব্যবহার ও ভক্তিতে [যেমন আমরা] . . . ঈশ্বরের সেই দিনের আগমনের অপেক্ষা ও আকাঙ্ক্ষা করিতে করিতে সেইরূপ হওয়া চাই, যে দিনের হেতু আকাশমণ্ডল জ্বলিয়া বিলীন হইবে, এবং মূলবস্তু সকল পুড়িয়া গিয়া গলিয়া যাইবে।” এরপর কী হবে? পিতর আমাদের দৃষ্টি আরোপ করান ‘নতুন আকাশমণ্ডল ও নতুন পৃথিবী, যাহার মধ্যে ধার্ম্মিকতা বসতি করিবে’ তার প্রতি।—২ পিতর ৩:৭, ১০-১৩.c

১৮ সেই “নূতন আকাশমণ্ডল” অর্থাৎ খ্রীষ্ট যীশু ও তাঁর সহকারী রাজাদের দ্বারা শাসিত রাজ্য মানব সমাজের এক ধার্মিক “নূতন পৃথিবীর” ওপর আশীর্বাদ বর্ষণ করবে। আপনি কি সেই সমাজের এক সম্ভাব্য সদস্য? যদি তাই হন তাহলে উত্তম ভবিষ্যতের জন্য আনন্দিত হওয়ার আপনার যথেষ্ট কারণ আছে!—যিশাইয় ৬৫:১৭-১৯; প্রকাশিত বাক্য ২১:১-৫.

১৯. আমরা এখন কোন্‌ মহান সুযোগ উপভোগ করতে পারি?

১৯ হ্যাঁ, এমনকি এখনই মানবজাতির এক ধার্মিক ‘বংশ’-কে একত্রিত করা হচ্ছে। গীতসংহিতা ৭৮:১, ৪ পদের কথাগুলির সাথে সঙ্গতি রেখে আজকে অভিষিক্ত “বিশ্বস্ত ও বুদ্ধিমান্‌ দাস” ঐশিক শিক্ষা প্রদান করে যাচ্ছে: “হে আমার স্বজাতি, আমার উপদেশ শ্রবণ কর, আমার মুখের বাক্যে কর্ণপাত কর। . . . উত্তরকালীন বংশের কাছে সদাপ্রভুর প্রশংসা বর্ণনা করিব, তাঁহার পরাক্রম ও তাঁহার কৃত আশ্চর্য্য ক্রিয়া সকল বর্ণনা করিব।” (মথি ২৪:৪৫-৪৭) এই বছরে, ১৪ই এপ্রিল, খ্রীষ্টের মৃত্যুর স্মরণার্থে পৃথিবীব্যাপী ৭৫,৫০০টির বেশি মণ্ডলীতে প্রায় ২৩০টি দেশে ১,২০,০০,০০০ জনের বেশি ব্যক্তি যোগদান করেছে। আপনি কি তাদের মধ্যে একজন ছিলেন? আপনি খ্রীষ্ট যীশুর উপর বিশ্বাস রাখুন এবং ‘পরিত্রাণের জন্য যিহোবার নামে ডাকুন।’—রোমীয় ১০:১১-১৩.

২০. যেহেতু “সময় সঙ্কুচিত,” তাই কিভাবে আমরা জেগে থাকবো ও কোন্‌ আশা নিয়ে?

২০ “সময় সঙ্কুচিত” প্রেরিত পৌল বলেছিলেন। অতএব এখনই হল জেগে থাকা ও যিহোবার কাজে ব্যস্ত থাকার সময়, যতই আমরা মানবজাতির এই দুষ্ট বংশের দ্বারা আনিত পরীক্ষা ও বিদ্বেষ সহ্য করি। (১ করিন্থীয় ৭:২৯; মথি ১০:২২; ২৪:১৩, ১৪) আসুন আমরা সজাগ থাকি এবং “এই বংশের” উপর আসা ঘটনাগুলি প্রত্যক্ষ করি যা বাইবেলে আগে থেকে ভবিষ্যদ্বাণী করা ছিল। (লূক ২১:৩১-৩৩) এই সমস্ত কিছুকে এড়িয়ে চলার দ্বারা এবং মনুষ্যপুত্রের সামনে ঐশিক অনুমোদন নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকার দ্বারা, আমরা হয়ত বা পরিশেষে অনন্ত জীবনের পুরস্কার পেতে পারি।

[পাদটীকাগুলো]

a “সাত কাল” সম্বন্ধে আরও তথ্য পাওয়ার জন্য ওয়াচটাওয়ার বাইবেল অ্যান্ড ট্র্যাক্ট সোসাইটি দ্বারা প্রকাশিত “তোমার রাজ্য আইসুক” (ইংরাজি) বইটির ১২৭-৩৯, ১৮৬-৯ পৃষ্ঠা দেখুন।

b ওয়াচটাওয়ার বাইবেল অ্যান্ড ট্র্যাক্ট সোসাইটি দ্বারা প্রকাশিত “শাস্ত্রের প্রতি অন্তর্দৃষ্টি” (ইংরাজি), বইটির খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ৯১৮ দেখুন।

c এছাড়াও ওয়াচটাওয়ার বাইবেল অ্যান্ড ট্র্যাক্ট সোসাইটি দ্বারা প্রকাশিত আমাদের আগত জগৎ সরকার—ঈশ্বরের রাজ্য (ইংরাজি), নামক বইটির পৃষ্ঠা ১৫২-৬ ও ১৮০-১ দেখুন।

পর্যালোচনার প্রশ্নগুলি

◻ দানিয়েল ৪:৩২ পদের পরিপূর্ণতা দেখার পর এখন কিভাবে আমাদের ‘জেগে থাকা’ উচিত?

◻ কিভাবে মথি ও লূকের সুসমাচার ‘এই বংশ’-কে শনাক্ত করে?

◻ “সেই দিন ও সেই দণ্ডের” অপেক্ষায় থাকার সময় আমরা কী লক্ষ্য করব ও আমাদের প্রতিক্রিয়া কিরূপ হওয়া উচিত?

◻ ‘নূতন আকাশমণ্ডল ও পৃথিবীর’ সম্ভাবনা আমাদের কী করতে উৎসাহ দেয়?

[১৭ পৃষ্ঠার চিত্র]

উৎপীড়িত মানবজাতি স্বস্তি পাবে যখন দৌরাত্ম্য ও দুষ্ট বংশের লোপ হবে

[সজন্যে]

Alexandra Boulat/Sipa Press

[সজন্যে]

Left and below: Luc Delahaye/Sipa Press

[১৮ পৃষ্ঠার চিত্র]

সকল স্তরের মানবজাতির সামনে এক উজ্জ্বল ‘নূতন আকাশমণ্ডল ও নূতন পৃথিবী’ উপস্থিত

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৫)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার