ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • lv অধ্যায় ১৫ পৃষ্ঠা ১৯৫-২০৮
  • আপনার কঠোর পরিশ্রমের মধ্যে আনন্দ খুঁজুন

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • আপনার কঠোর পরিশ্রমের মধ্যে আনন্দ খুঁজুন
  • “ঈশ্বরের প্রেমে আপনাদিগকে রক্ষা কর”
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • সর্বশ্রেষ্ঠ কর্মী এবং দক্ষ কর্মী
  • যেভাবে আমাদের কঠোর পরিশ্রমের মধ্যে আনন্দ খুঁজে পাওয়া যায়
  • আমাদের কাজ বাছাইয়ের ক্ষেত্রে বিচক্ষণতা ব্যবহার করা
  • কাজের প্রতি এক ভারসাম্যপূর্ণ মনোভাব বজায় রাখা
  • পরিচর্যায় কঠোর পরিশ্রম করা
  • সমস্ত পরিশ্রমের মধ্যে সুখভোগ করুন
    আমাদের খ্রিস্টীয় জীবন ও পরিচর্যা—সভার জন্য অধ্যয়ন পুস্তিকা ২০১৬
  • যেভাবে কাজের প্রতি ভারসাম্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলা যায়
    ২০০৩ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • কাজ—এক আশীর্বাদ, নাকি অভিশাপ?
    ২০০৫ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
“ঈশ্বরের প্রেমে আপনাদিগকে রক্ষা কর”
lv অধ্যায় ১৫ পৃষ্ঠা ১৯৫-২০৮
আফকার একটা জায়গায় কিছু মহিলা কঠার পরিশম করছন

অধ্যায় ১৫

আপনার কঠোর পরিশ্রমের মধ্যে আনন্দ খুঁজুন

“প্রত্যেক মনুষ্য . . . সমস্ত পরিশ্রমের মধ্যে সুখভোগ করে [“আনন্দ খুঁজে পাক,” ইজি-টু-রিড ভারশন]।”—উপদেশক ৩:১৩.

১-৩. (ক) অনেক লোক তাদের কাজ সম্বন্ধে কেমন বোধ করে? (খ) বাইবেল কাজ সম্বন্ধে কোন দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরে আর এই অধ্যায়ে আমরা কোন প্রশ্নগুলো বিবেচনা করব?

আজকের জগতে অনেক লোকের কাছে কাজ আর যা-ই হোক, উপভোগ্য কোনো বিষয় নয়। বিশেষত তারা উপভোগ করে না এমন একটা কাজে দীর্ঘ সময় ধরে পরিশ্রম করার ফলে, তাদের প্রতিদিন কাজে যেতে ভালো লাগে না। যাদের এইরকম মনোভাব রয়েছে, তারা কীভাবে তাদের কাজের প্রতি এক ব্যক্তিগত আগ্রহ দেখানোর ও পরিতৃপ্তি খুঁজে পাওয়ার জন্য অনুপ্রাণিত হতে পারে?

২ বাইবেল, কঠোর পরিশ্রমের প্রতি এক ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরে। এটি বলে যে, কাজ ও এর ফল হল এক আশীর্বাদ। শলোমন লিখেছিলেন: ‘প্রত্যেক মনুষ্য ভোজন পান ও সমস্ত পরিশ্রমের মধ্যে আনন্দ খুঁজে পাক, ইহাও ঈশ্বরের দান।’ (উপদেশক ৩:১৩) যিহোবা, যিনি আমাদের ভালোবাসেন এবং সবসময় আমাদের জন্য সর্বোত্তমটা চান, তিনি চান যেন আমরা আমাদের কাজে পরিতৃপ্তি খুঁজে পাই এবং আমাদের পরিশ্রমের ফল উপভোগ করি। তাঁর প্রেমে অবস্থিতি করতে চাইলে আমাদেরকে কাজ সম্বন্ধে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি এবং তাঁর নীতিগুলোর সঙ্গে মিল রেখে জীবনযাপন করতে হবে।—পড়ুন, উপদেশক ২:২৪; ৫:১৮.

৩ এই অধ্যায়ে আমরা চারটে প্রশ্ন বিবেচনা করব: কীভাবে আমরা আমাদের কঠোর পরিশ্রমের মধ্যে আনন্দ খুঁজে পেতে পারি? কোন ধরনের কাজ সত্য খ্রিস্টানদের জন্য নয়? কীভাবে আমরা জাগতিক কাজ ও আধ্যাত্মিক কার্যকলাপের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে পারি? আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কোন কাজ আমরা করতে পারি? তবে, আসুন প্রথমে আমরা নিখিলবিশ্বের সর্বমহান দু-জন কর্মীর—যিহোবা ঈশ্বর ও যিশু খ্রিস্টের—উদাহরণ পরীক্ষা করে দেখি।

সর্বশ্রেষ্ঠ কর্মী এবং দক্ষ কর্মী

৪, ৫. কীভাবে বাইবেল ইঙ্গিত দেয় যে, যিহোবা একজন উৎপাদনশীল কর্মী?

৪ যিহোবা হলেন সর্বশ্রেষ্ঠ কর্মী। আদিপুস্তক ১:১ পদ বলে: “আদিতে ঈশ্বর আকাশমণ্ডল ও পৃথিবীর সৃষ্টি করিলেন।” ঈশ্বর যখন পৃথিবীর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত সৃজনশীল কাজ সম্পন্ন করেছিলেন, তখন তিনি ফল স্বরূপ সেটাকে “অতি উত্তম” বলে ঘোষণা করেছিলেন। (আদিপুস্তক ১:৩১) অন্য কথায়, তিনি তাঁর সমস্ত পার্থিব কাজ নিয়ে পূর্ণরূপে পরিতৃপ্ত ছিলেন। নিঃসন্দেহে, ‘পরম ধন্য [“সুখী,” NW] ঈশ্বর’ যিহোবা একজন উৎপাদনশীল কর্মী হওয়ায় প্রচুর আনন্দ খুঁজে পেয়েছিলেন।—১ তীমথিয় ১:১১.

৫ আমাদের পরিশ্রমী ঈশ্বর কখনো কাজ করা থেকে বিরত হন না। পৃথিবী ও পৃথিবীস্থ সমস্তকিছু সম্পন্ন করার অনেক পরে যিশু বলেছিলেন: “আমার পিতা এখন পর্য্যন্ত কার্য্য করিতেছেন।” (যোহন ৫:১৭) পিতা কোন কাজ করছেন? স্বর্গে তাঁর নিবাসস্থান থেকে তিনি নিশ্চিতভাবেই মানবজাতিকে নির্দেশনা দেওয়ার ও যত্ন নেওয়ার ক্ষেত্রে সক্রিয় রয়েছেন। তিনি এক “নূতন সৃষ্টি” অর্থাৎ আত্মায়জাত খ্রিস্টানদের অস্তিত্বে এনেছেন, যারা পরিশেষে স্বর্গে যিশুর সঙ্গে শাসন করবে। (২ করিন্থীয় ৫:১৭) তিনি মানবজাতির জন্য তাঁর উদ্দেশ্য পরিপূর্ণতার লক্ষ্যে কাজ করে আসছেন আর তা হল যারা তাঁকে ভালোবাসে, তারা এক নতুন জগতে অনন্তজীবন লাভ করবে। (রোমীয় ৬:২৩) যিহোবা এই কাজের ফল থেকে নিশ্চয়ই অনেক খুশি। লক্ষ লক্ষ লোক রাজ্যের বার্তার প্রতি সাড়া দিয়েছে, ঈশ্বরের দ্বারা আকর্ষিত হয়েছে এবং তাঁর প্রেমে অবস্থিতি করার জন্য তাদের জীবনে রদবদল করেছে।—যোহন ৬:৪৪.

৬, ৭. যিশুর কঠোর পরিশ্রম করার কোন দীর্ঘ নথি রয়েছে?

৬ যিশুর কঠোর পরিশ্রম করার এক দীর্ঘ নথি রয়েছে। মনুষ্যপূর্ব অস্তিত্বের আগে, তিনি “স্বর্গে ও পৃথিবীতে” সমস্তকিছু সৃষ্টি করার ক্ষেত্রে ঈশ্বরের “কার্য্যকারী [‘দক্ষ কর্মী,’ ইজি-টু-রিড ভারশন]” হিসেবে কাজ করেছিলেন। (হিতোপদেশ ৮:২২-৩১; কলসীয় ১:১৫-১৭) পৃথিবীতে থাকাকালীন যিশু একজন পরিশ্রমী ব্যক্তি হিসেবে কাজ চালিয়ে গিয়েছিলেন। ছেলেবেলাতে তিনি নির্মাণকাজ শিখেছিলেন এবং “সূত্রধর” হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছিলেন।a (মার্ক ৬:৩) এই পেশার অন্তর্ভুক্ত ছিল পরিশ্রান্তকর কাজ ও বিভিন্ন ধরনের দক্ষতা—আর তা বিশেষভাবে সেই যুগে, যখন স-মিল, মজুত সরবরাহকারী দোকান ও বিদ্যুৎচালিত যন্ত্রগুলো ছিল না। আপনি কি কল্পনা করতে পারেন যে, যিশু নিজের জন্য কাঠের তক্তা আনতে বাইরে যাচ্ছেন—হতে পারে এমনকী গাছ কাটছেন এবং কাঠগুলোকে তাঁর কাজের জায়গায় টেনে নিয়ে আসছেন? আপনি কি তাঁকে মনশ্চক্ষে দেখতে পারেন যে, তিনি বাড়ি নির্মাণ করছেন—ছাদের কড়িকাঠ প্রস্তুত করে তা স্থাপন করছেন, দরজা বানাচ্ছেন আর এমনকী কিছু আসবাবপত্র তৈরি করছেন? নিঃসন্দেহে যিশু ব্যক্তিগতভাবে সেই পরিতৃপ্তি লাভ করেছিলেন, যা দক্ষতার সঙ্গে কৃত কঠোর পরিশ্রম থেকে আসে।

৭ যিশু তাঁর পরিচর্যা সম্পাদন করার ক্ষেত্রে একজন অসাধারণ অধ্যবসায়ী কর্মী ছিলেন। সাড়ে তিন বছর ধরে তিনি খুবই গুরুত্বপূর্ণ এই কাজে পুরোপুরি নিয়োজিত ছিলেন। যত লোকের কাছে সম্ভব পৌঁছানোর জন্য তিনি অধ্যবসায়ের সঙ্গে কাজ করেছিলেন অর্থাৎ তিনি ভোর বেলা ঘুম থেকে উঠতেন এবং অনেক রাত পর্যন্ত কাজ করতেন। (লূক ২১:৩৭, ৩৮; যোহন ৩:২) তিনি “ঘোষণা করিতে করিতে এবং ঈশ্বরের রাজ্যের সুসমাচার প্রচার করিতে করিতে নগরে নগরে ও গ্রামে গ্রামে” ভ্রমণ করতেন। (লূক ৮:১) লোকেদের কাছে সুসমাচারের বার্তা নিয়ে যাওয়ার জন্য যিশু পায়ে হেঁটে ধুলোবালিপূর্ণ রাস্তায় ভ্রমণ করে আক্ষরিকভাবে শত শত কিলোমিটার পাড়ি দিয়েছিলেন।

৮, ৯. কীভাবে যিশু তাঁর কঠোর পরিশ্রমের মধ্যে আনন্দ খুঁজে পেয়েছিলেন?

৮ যিশু কি পরিচর্যায় তাঁর কঠোর পরিশ্রমের মধ্যে আনন্দ খুঁজে পেয়েছিলেন? হ্যাঁ পেয়েছিলেন! তিনি রাজ্যের সত্যের বীজ বপন করেছিলেন, এমন ক্ষেত্র রেখে এসেছিলেন, যা কাটার জন্য পেকে গিয়েছিল। ঈশ্বরের কাজ করা যিশুকে এতটাই শক্তি দিয়েছিল ও পুষ্টি জুগিয়েছিল যে, তিনি সেই কাজ সম্পাদন করার জন্য খাবার পরিহার করতে ইচ্ছুক ছিলেন। (যোহন ৪:৩১-৩৮) নিশ্চিতভাবেই যিশু যে-পরিতৃপ্তি বোধ করেছিলেন, তা একটু চিন্তা করুন, যখন তিনি তাঁর পার্থিব পরিচর্যার শেষের দিকে উপযুক্তভাবেই তাঁর পিতাকে এই কথা বলতে পেরেছিলেন: “তুমি আমাকে যে কার্য্য করিতে দিয়াছ, তাহা সমাপ্ত করিয়া আমি পৃথিবীতে তোমাকে মহিমান্বিত করিয়াছি।”—যোহন ১৭:৪.

৯ নিশ্চিতভাবেই, যিহোবা ও যিশু সেই ব্যক্তিদের মধ্যে মুখ্য উদাহরণ, যারা তাদের কঠোর পরিশ্রমের মধ্যে আনন্দ খুঁজে পায়। যিহোবার প্রতি আমাদের প্রেম আমাদেরকে ‘ঈশ্বরের অনুকারী হইতে’ অনুপ্রাণিত করে। (ইফিষীয় ৫:১) যিশুর প্রতি আমাদের প্রেম আমাদেরকে ‘তাঁহার পদচিহ্নের অনুগমন করিতে’ প্রণোদিত করে। (১ পিতর ২:২১) তাই, আসুন এখন আমরা পরীক্ষা করে দেখি যে, কীভাবে আমরাও আমাদের কঠোর পরিশ্রমের মধ্যে আনন্দ খুঁজে পেতে পারি।

যেভাবে আমাদের কঠোর পরিশ্রমের মধ্যে আনন্দ খুঁজে পাওয়া যায়

একজন ব্যক্তি জানালা পরিকার করছন এবং একজন মহিলা অফিসে কাজ করছন

বাইবেলের নীতিগুলো প্রয়োগ করা আপনাকে আপনার কঠোর পরিশ্রমের মধ্যে আনন্দ খুঁজে পাওয়ার ক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারে

১০, ১১. কী আমাদের কাজের প্রতি এক ইতিবাচক মনোভাব গড়ে তোলার প্রচেষ্টা করার ক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারে?

১০ জাগতিক কাজ সত্য খ্রিস্টানদের জীবনের একটা অংশ হতে পারে। আমরা আমাদের কাজের মধ্যে পরিতৃপ্তি ও কিছুটা সন্তোষ খুঁজে পেতে চাই কিন্তু আমরা যদি এমন জাগতিক কাজ করি, যা আমাদের পছন্দ নয়, তাহলে এটা অনেক কঠিন হতে পারে। এইরকম পরিস্থিতিতে আমাদের কাজের মধ্যে কীভাবে আনন্দ খুঁজে পাওয়া সম্ভব?

১১ এক ইতিবাচক মনোভাব গড়ে তোলার প্রচেষ্টা করে। আমরা সবসময় আমাদের পরিস্থিতির পরিবর্তন করতে পারি না কিন্তু আমরা আমাদের মনোভাবকে পরিবর্তন করতে পারি। ঈশ্বরের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে ধ্যান করা আমাদেরকে কাজের প্রতি এক ইতিবাচক মনোভাব গড়ে তোলার প্রচেষ্টা করার ক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারে। উদাহরণ স্বরূপ, আপনি যদি একটা পরিবারের মস্তক হয়ে থাকেন, তাহলে এই বিষয়টা নিয়ে চিন্তা করুন যে, আপনার কাজ, তা সেটাকে যত ছোটো বলেই মনে হোক না কেন, আপনার পরিবারের জন্য বস্তুগত প্রয়োজনগুলো জোগাতে সমর্থ করে। তাই, আপনার প্রিয়জনদের যত্ন নেওয়া ঈশ্বরের চোখে কোনো ছোটো বিষয় নয়। তাঁর বাক্য বলে, যে-ব্যক্তি তার পরিবারের ভরণপোষণ জোগাতে ব্যর্থ হন, তিনি “অবিশ্বাসী অপেক্ষা অধম।” (১ তীমথিয় ৫:৮) আপনার কাজ যে এক কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানোর—আপনাকে ঈশ্বরদত্ত দায়িত্ব সম্পাদন করতে সাহায্য করার—একটা উপায়, তা স্বীকার করা আপনাকে আপনার কাজে কিছুটা পরিপূর্ণতা ও উদ্দেশ্য খুঁজে পাওয়ার ক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারে, যা হয়তো আপনার সহকর্মীদের নেই।

১২. কোন কোন দিক দিয়ে আমাদের কাজে অধ্যবসায়ী ও সৎ হওয়া পুরস্কারজনক?

১২ অধ্যবসায়ী ও সৎ হয়ে। কঠোর পরিশ্রম করা এবং কীভাবে আমাদের কাজ ভালোভাবে করা যায়, তা শেখা আশীর্বাদ নিয়ে আসতে পারে। কর্মকর্তারা প্রায়ই তাদের অধ্যবসায়ী ও দক্ষ কর্মচারীদের উচ্চমূল্য দিয়ে থাকে। (হিতোপদেশ ১২:২৪; ২২:২৯) সত্য খ্রিস্টান হিসেবে আমাদেরও নিজেদের কাজে সৎ হতে হবে—আমরা টাকাপয়সা, জিনিসপত্র অথবা আমাদের কর্মকর্তার কাছ থেকে সময় চুরি করব না। (ইফিষীয় ৪:২৮) আগের অধ্যায়ে আমরা যেমন দেখেছি যে, সততা পুরস্কার নিয়ে আসে। যে-কর্মচারীর সৎ হিসেবে সুনাম রয়েছে, তার উপর নির্ভর করা হয়। আর আমাদের কর্মকর্তা আমাদের কঠোর পরিশ্রমের উদাহরণ দেখুন বা না-ই দেখুন, আমরা সেই পরিতৃপ্তি পেতে পারি, যা “সৎসংবেদ” থাকার এবং এটা জানার মাধ্যমে আসে যে, আমরা যে-ঈশ্বরকে ভালোবাসি, তাঁকে খুশি করছি।—ইব্রীয় ১৩:১৮; কলসীয় ৩:২২-২৪.

১৩. কর্মক্ষেত্রে আমাদের উত্তম উদাহরণের কোন ফলাফল থাকতে পারে?

১৩ আমাদের আচরণ যে ঈশ্বরের গৌরব নিয়ে আসতে পারে, তা স্বীকার করে। আমরা যখন আমাদের কর্মক্ষেত্রে খ্রিস্টীয় আচরণের উচ্চমান বজায় রাখি, তখন নিশ্চিতভাবেই অন্যেরা তা লক্ষ করে। এর ফলাফল কী হয়? এভাবে আমরা হয়তো ‘আমাদের ত্রাণকর্ত্তা ঈশ্বরের শিক্ষা ভূষিত করি।’ (তীত ২:৯, ১০) হ্যাঁ, আমাদের উত্তম আচরণ অন্যদেরকে আমাদের উপাসনা পদ্ধতির সৌন্দর্য দেখতে সাহায্য করে, সেটাকে তাদের কাছে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে। কর্মক্ষেত্রে আপনার উত্তম আচরণের জন্য আপনার কোনো সহকর্মী যদি সত্যের প্রতি সাড়া দেন, তাহলে আপনার কেমন লাগবে, তা একটু চিন্তা করুন! সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টা বিবেচনা করুন: আপনার উত্তম আচরণ যিহোবাকে গৌরবান্বিত করে এবং তাঁর হৃদয়কে আনন্দিত করে, তা জানার চেয়ে পরিতৃপ্তিদায়ক আর কী হতে পারে?—পড়ুন, হিতোপদেশ ২৭:১১; ১ পিতর ২:১২.

আমাদের কাজ বাছাইয়ের ক্ষেত্রে বিচক্ষণতা ব্যবহার করা

১৪-১৬. কাজের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্তের মুখোমুখি হলে, আমাদের কোন গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নগুলো বিবেচনা করতে হবে?

১৪ জাগতিক কাজের ব্যাপারে কোনটা গ্রহণযোগ্য এবং কোনটা গ্রহণযোগ্য নয়, সেই সম্বন্ধে বাইবেল বিস্তারিত নির্দেশনা দেয় না। এর অর্থ এই নয় যে, আমরা চাইলেই যেকোনো ধরনের চাকরি গ্রহণ করতে পারি, তা সেটার সঙ্গে যা-ই জড়িত থাকুক না কেন। শাস্ত্র আমাদেরকে এমন উৎপাদনশীল ও সম্মানযোগ্য কাজ বাছাই করার ব্যাপারে সাহায্য করতে পারে, যা ঈশ্বরকে খুশি করে আর একইসঙ্গে সেই কাজ এড়িয়ে চলতে সাহায্য করতে পারে, যা তাঁকে অখুশি করবে। (হিতোপদেশ ২:৬) চাকরির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় আমাদের দুটো গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন বিবেচনা করতে হবে।

১৫ এই নির্দিষ্ট কাজটা করা কি বাইবেলে নিন্দা করা হয়েছে এমন কাজের সমরূপ হবে? ঈশ্বরের বাক্য স্পষ্টভাবে চুরি করা, মিথ্যা বলা এবং মূর্তি তৈরি করাকে নিন্দা করে। (যাত্রাপুস্তক ২০:৪; ইফিষীয় ৪:২৮; প্রকাশিত বাক্য ২১:৮) আমরা এমন যেকোনো কাজ প্রত্যাখ্যান করব, যেখানে আমাদের এই ধরনের বিষয় করতে হবে। যিহোবার প্রতি আমাদের প্রেম আমাদেরকে কখনো এমন একটা কাজ গ্রহণ করার অনুমতি দেবে না, যেটার সঙ্গে সেই অভ্যাসগুলোতে রত হওয়া জড়িত, যেগুলো ঈশ্বরের আজ্ঞা সকল লঙ্ঘন করে।—পড়ুন, ১ যোহন ৫:৩.

১৬ এই কাজ করা কি স্পষ্টতই আমাদেরকে একটা ভুল অভ্যাসের অংশীদার অথবা একজন উদ্যোক্তা করে তুলবে? একটা উদাহরণ বিবেচনা করুন। একজন রিসেপশনিস্ট হিসেবে কাজ করা ভুল নয়। কিন্তু, কী হবে যদি একজন খ্রিস্টানকে ব্লাড ব্যাঙ্কে একটা কাজ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়? এটা ঠিক যে, তার কাজের জন্য সরাসরি রক্ত সঞ্চালনের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার প্রয়োজন হবে না। তা সত্ত্বেও, সেখানে তার নিয়মিত কাজ করা কি রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়াকে—ঈশ্বরের বাক্যের বিপরীত এক অভ্যাসকে—সমর্থন করবে না? (প্রেরিত ১৫:২৯) যিহোবার প্রেমিক হিসেবে আমরা অশাস্ত্রীয় অভ্যাসগুলোর সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত হতে চাই না।

১৭. (ক) কাজের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় কোনো বিষয়গুলো আমরা সতর্কতার সঙ্গে বিবেচনা করতে পারি? ( “আমার কি এই কাজ গ্রহণ করা উচিত?” শিরোনামের বাক্সটা দেখুন।) (খ) কীভাবে আমাদের বিবেক আমাদেরকে এমন সিদ্ধান্তগুলো নেওয়ার ক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারে, যেগুলো ঈশ্বরকে খুশি করে?

১৭ পনেরো ও ষোলো অনুচ্ছেদে উত্থাপিত দুটো গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন সতর্কতার সঙ্গে বিশ্লেষণ করার দ্বারা কাজ সম্বন্ধীয় অনেক বিষয় সমাধান করা যেতে পারে। অধিকন্তু, অন্যান্য আরও বিষয় রয়েছে, যেগুলো কাজ সম্বন্ধে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় সতর্কতার সঙ্গে বিবেচনা করা উচিত।b আমরা এইরকমটা আশা করতে পারি না যে, বিশ্বস্ত দাস সেই নিয়মকানুন দিয়ে দেবে, যা উত্থাপিত হতে পারে এমন সমস্ত পরিস্থিতিতে নির্দেশনা দেবে। এখানেই আমাদের বিচক্ষণতা ব্যবহার করতে হবে। ২ অধ্যায়ে আমরা যেমন শিখেছি যে, আমাদের রোজকার জীবনে কীভাবে ঈশ্বরের বাক্যকে কাজে লাগানো যায়, তা অধ্যয়ন করার মাধ্যমে আমাদের বিবেককে শিক্ষিত এবং প্রশিক্ষিত করতে হবে। এভাবে আমাদের “জ্ঞানেন্দ্রিয় সকল অভ্যাস প্রযুক্ত” পটু বা প্রশিক্ষিত করার মাধ্যমে আমাদের বিবেক আমাদেরকে সেই সিদ্ধান্তগুলো নেওয়ার ক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারে, যেগুলো ঈশ্বরকে খুশি করে এবং আমাদেরকে তাঁর প্রেমে অবস্থিতি করতে সমর্থ করে।—ইব্রীয় ৫:১৪.

আমার কি এই কাজ গ্রহণ করা উচিত?

একজন ব্যক্তি খবরের কাগজে চাকরির সধান করছন

নীতি: “সকলই ঈশ্বরের গৌরবার্থে কর।” —১ করিন্থীয় ১০:৩১.

নিজেকে জিজ্ঞেস করার মতো কিছু প্রশ্ন

  • এই কাজের সঙ্গে কি সেই কাজকর্ম যুক্ত, যেগুলোকে বাইবেলে সরাসরি নিন্দা করা হয়েছে?—যাত্রাপুস্তক ২০:১৩-১৫.

  • এই কাজ করা কি আমাকে এক নিন্দনীয় অভ্যাসের অংশীদার করে তুলবে?—প্রকাশিত বাক্য ১৮:৪.

  • এই কাজ কি নিছক এক জনহিতকর কাজ, যা মূলত শাস্ত্রীয়ভাবে আপত্তিকর নয়, যেমন ডাকপিয়নের কাজ?—প্রেরিত ১৪:১৬, ১৭.

  • এই কাজ করা অন্যদের উপর কোন প্রভাব ফেলবে; এটা কি অন্যদের বিবেকে আঘাত দেবে? —রোমীয় ১৪:১৯-২২.

  • আমি যদি অন্য একটা দেশে কাজ নিই এবং আমার পরিবারকে ফেলে আসি, তাহলে আমার পরিবারের উপর তা কোন আবেগগত ও আধ্যাত্মিক প্রভাব ফেলতে পারে?—ইফিষীয় ৫:২৮–৬:৪.

কাজের প্রতি এক ভারসাম্যপূর্ণ মনোভাব বজায় রাখা

১৮. কেন আধ্যাত্মিক ভারসাম্য বজায় রাখা সহজ নয়?

১৮ এই ‘শেষ কালের বিষম সময়ে’ আধ্যাত্মিক ভারসাম্য বজায় রাখা সহজ নয়। (২ তীমথিয় ৩:১) কোনো কাজ খুঁজে পাওয়া ও তাতে বহাল থাকা সত্যিই কঠিন হতে পারে। সত্য খ্রিস্টান হিসেবে আমরা আমাদের পরিবারের ভরণপোষণ জোগানোর জন্য কঠোর পরিশ্রম করার গুরুত্ব বুঝতে পারি। কিন্তু, আমরা যদি সতর্ক না থাকি, তাহলে কর্মক্ষেত্রের চাপ বা জগতের কলুষিত বস্তুগত চিন্তাভাবনা আমাদের আধ্যাত্মিক অনুধাবনকে ব্যাহত করতে পারে। (১ তীমথিয় ৬:৯, ১০) আসুন আমরা বিবেচনা করি যে, কীভাবে আমরা আমাদের ভারসাম্য বজায় রাখতে এবং “যাহা যাহা ভিন্ন প্রকার [“বেশি গুরুত্বপূর্ণ,” NW],” সেই বিষয়গুলোকে নিশ্চিত করতে পারি।—ফিলিপীয় ১:১০.

১৯. কেন যিহোবা আমাদের পূর্ণ নির্ভরতা পাওয়ার যোগ্য আর এই ধরনের নির্ভরতা আমাদেরকে কী এড়িয়ে চলার ক্ষেত্রে সাহায্য করে?

১৯ যিহোবার উপর আপনার পূর্ণ বিশ্বাস বা নির্ভরতা রাখুন। (পড়ুন, হিতোপদেশ ৩:৫, ৬.) তিনি কি এই ধরনের নির্ভরতা পাওয়ার যোগ্য নন? সবচেয়ে বড়ো কথা হল, তিনি আমাদের জন্য চিন্তা করেন। (১ পিতর ৫:৭) তিনি আমাদের প্রয়োজনগুলো সম্বন্ধে আমাদের চেয়ে ভালো জানেন আর তাঁর হাত কখনো খাটো নয়। (গীতসংহিতা ৩৭:২৫) তাই, সেই সময় আমাদের মনোযোগ দিয়ে শোনা উচিত, যখন তাঁর বাক্য আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়: “তোমাদের আচার ব্যবহার ধনাসক্তিবিহীন হউক; তোমাদের যাহা আছে, তাহাতে সন্তুষ্ট থাক; কারণ [ঈশ্বর] বলিয়াছেন, ‘আমি কোন ক্রমে তোমাকে ছাড়িব না, ও কোন ক্রমে তোমাকে ত্যাগ করিব না।’” (ইব্রীয় ১৩:৫) পূর্ণসময়ের অনেক দাস, জীবনের প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো জোগানোর ব্যাপারে ঈশ্বরের ক্ষমতার প্রমাণ দিতে পারে। আমরা যদি পূর্ণরূপে এই বিষয়ে নির্ভর করি যে, যিহোবা আমাদের জন্য চিন্তা করবেন, তাহলে আমরা আমাদের পরিবারের ভরণপোষণ জোগানোর ব্যাপারে অযথা ভাবিত হওয়া এড়াতে পারব। (মথি ৬:২৫-৩২) আমরা জাগতিক কাজকে আমাদের আধ্যাত্মিক কাজকর্ম যেমন, সুসমাচার প্রচার ও সভাগুলোতে যোগদান করার মতো কাজকর্মকে অবহেলা করার সুযোগ দেব না।—মথি ২৪:১৪; ইব্রীয় ১০:২৪, ২৫.

২০. এক সরল চোখ বজায় রাখার অর্থ কী আর কীভাবে আপনি এইরকম এক দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখতে পারেন?

২০ আপনার চোখ সরল রাখুন। (পড়ুন, মথি ৬:২২, ২৩.) এক সরল চোখ বজায় রাখার অর্থ হল আমাদের জীবনকে জটিল না রাখা। একজন খ্রিস্টানের সরল চোখ শুধু একটা উদ্দেশ্যের—ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করার—উপর কেন্দ্রীভূত থাকে। তাই, আমাদের চোখ যদি কেন্দ্রীভূত থাকে, তাহলে আমরা উচ্চবেতনের চাকরি এবং আরও বিলাসী জীবনধারার পিছনে ছোটার দ্বারা ভারগ্রস্ত হয়ে পড়ব না। কিংবা আমরা সেইসমস্ত সর্বাধুনিক ও সর্বোত্তম বস্তুগত বিষয়ের জন্য অবিরাম প্রচেষ্টার দ্বারা মগ্ন হয়ে পড়ব না, যেগুলো সম্বন্ধে বিজ্ঞাপনদাতারা আমাদেরকে এই বিশ্বাস করাতে চায় যে, সুখী হওয়ার জন্য আমাদের সেগুলো লাগবে। কীভাবে আমরা এক সরল চোখ বজায় রাখতে পারি? অযথা ঋণ করে নিজেকে ভারগ্রস্ত করা এড়িয়ে চলুন। আপনার জীবনকে এমন বস্তুগত বিষয়গুলো দ্বারা জটিল করে তুলবেন না, যেগুলো প্রচুর সময় ও মনোযোগ কেড়ে নেয়। “গ্রাসাচ্ছাদন” পেয়েই সন্তুষ্ট থাকার বিষয়ে বাইবেলের পরামর্শে মনোযোগ দিন। (১ তীমথিয় ৬:৮) আপনার জীবনকে যথাসম্ভব সাদাসিধে করার চেষ্টা করুন।

২১. কেন আমাদের অগ্রাধিকারের বিষয়গুলো স্থাপন করতে হবে আর আমাদের জীবনে যেন কোন বিষয়টা প্রথমে থাকে?

২১ আধ্যাত্মিক অগ্রাধিকারের বিষয়গুলো স্থাপন করুন এবং সেগুলোর সঙ্গে লেগে থাকুন। যেহেতু আমাদের রোজকার জীবনে ব্যবহার করার জন্য সীমিত সময় রয়েছে, তাই আমাদের অগ্রাধিকারের বিষয়গুলো স্থাপন করতে হবে। নতুবা কম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো আমাদের মূল্যবান সময়কে কেড়ে নিতে পারে, অধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোকে চেপে রাখতে পারে। আমাদের জীবনে কোন বিষয়টা প্রধান অগ্রাধিকারের বিষয় হওয়া উচিত? জগতের অনেকে এই বিধিব্যবস্থায় লাভজনক এক কেরিয়ার অর্জন করার জন্য মূলত উচ্চশিক্ষার পিছনে ছোটার উপর জোর দেয়। কিন্তু, যিশু তাঁর অনুসারীদের ‘প্রথমে রাজ্যের বিষয়ে চেষ্টা করিবার’ জোরালো পরামর্শ দিয়েছেন। (মথি ৬:৩৩) হ্যাঁ, সত্য খ্রিস্টান হিসেবে আমরা ঈশ্বরের রাজ্যকে আমাদের জীবনে প্রথমে রাখি। আমাদের জীবনধারা—আমরা যে-বাছাইগুলো করি, আমরা যে-লক্ষ্যগুলো স্থাপন করি, আমরা যে-কাজগুলোর অনুধাবন করি, সেগুলো—যেন দেখায় যে, বস্তুগত চিন্তা এবং জাগতিক অনুধাবনগুলোর চেয়ে রাজ্যের বিষয়গুলো ও ঈশ্বরের ইচ্ছা আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

“আমার সিদ্ধান্ত এক আনন্দপূর্ণ ও পরিতৃপ্তিদায়ক জীবনের দিকে পরিচালিত করেছে”

“আমি পড়াশোনায় অনেক ভালো করেছিলাম এবং নিউ ইয়র্ক সিটির স্বনামধন্য প্রাইভেট স্কুলে পূর্ণ বৃত্তি লাভ করেছিলাম। আমার স্কুলের উপদেষ্টারা আমাকে বেশ কয়েকটা নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভরতি হওয়ার জন্য চাপ দিয়েছিল। সেখান থেকে কয়েকটা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমি সুযোগ পেয়েছিলাম আর এমনকী যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে সুপরিচিত একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃত্তি লাভ করেছিলাম। কিন্তু, দুটো কারণে আমি সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিলাম। আমি বাড়ি থেকে দূরে ক্যাম্পাসের মধ্যে বাস করার নৈতিক বিপদগুলো আগেই বুঝতে পেরেছিলাম এবং আমার অগ্রগামী কাজ করার প্রবল আকাঙ্ক্ষা ছিল।

“এখন আমি ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে নিয়মিত অগ্রগামী হিসেবে কাজ করছি। আমি নিজেকে বিভিন্ন ধরনের পরিচর্যায়—যেখানে বেশি প্রয়োজন সেখানে সেবা করায়, কিংডম হল নির্মাণে সাহায্য করায় এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় ত্রাণসামগ্রী বিতরণে সহযোগিতা করায়—ব্যস্ত রেখেছি। সম্প্রতি, আমি নিউ ইয়র্ক সিটিতে বিদেশিভাষী একটা দলকে সাহায্য করার আনন্দ উপভোগ করছি।

“পূর্ণসময়ের পরিচর্যায় আমার কেরিয়ারের দিকে ফিরে তাকালে আমি বুঝতে পারি যে, আমি কতটা আশীর্বাদ লাভ করেছি। আমার সিদ্ধান্ত এক আনন্দপূর্ণ ও পরিতৃপ্তিদায়ক জীবনের দিকে পরিচালিত করেছে। আমার যে-অভিজ্ঞতাগুলো হয়েছে এবং আমি যে-বন্ধুত্ব গড়ে তুলেছি, সেগুলোকে আমি কোনো কিছুর সঙ্গেই বিনিময় করব না।”—জেনাইডা।

পরিচর্যায় কঠোর পরিশ্রম করা

এক দপতি পচার করছন

আমাদের জীবনে প্রচার কাজকে অগ্রাধিকার দেওয়ার মাধ্যমে আমরা যিহোবার প্রতি আমাদের প্রেম দেখাতে পারি

২২, ২৩. (ক) সত্য খ্রিস্টানদের প্রধান কাজ কী আর কীভাবে আমরা দেখাতে পারি যে, এই কাজ আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ? ( “আমার সিদ্ধান্ত এক আনন্দপূর্ণ ও পরিতৃপ্তিদায়ক জীবনের দিকে পরিচালিত করেছে” শিরোনামের বাক্সটা দেখুন।) (খ) জাগতিক কাজের বিষয়ে আপনার দৃঢ়সংকল্প কী?

২২ আমরা যে শেষ সময়ের একেবারে শেষে বাস করছি, তা জানার ফলে আমরা সত্য খ্রিস্টানদের জন্য প্রধান কাজের—প্রচার ও শিষ্য তৈরির কাজের—উপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত রাখি। (মথি ২৪:১৪; ২৮:১৯, ২০) আমাদের আদর্শ যিশুর মতো আমরা পূর্ণরূপে এই জীবনরক্ষাকারী কাজে নিয়োজিত থাকতে চাই। কীভাবে আমরা দেখাতে পারি যে, এই কাজ আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ? ঈশ্বরের বেশিরভাগ লোক মণ্ডলীর প্রকাশক হিসেবে প্রচার কাজে পূর্ণরূপে নিজেদের বিলিয়ে দেয়। কেউ কেউ অগ্রগামী বা মিশনারি হিসেবে সেবা করার জন্য তাদের বিষয়গুলোকে সমন্বয় করেছে। আধ্যাত্মিক লক্ষ্যগুলোর গুরুত্ব উপলব্ধি করে অনেক বাবা-মা তাদের সন্তানদেরকে পূর্ণসময়ের সেবার কেরিয়ার অনুধাবন করার জন্য উৎসাহিত করেছে। উদ্যোগী রাজ্য ঘোষকরা কি পরিচর্যায় তাদের কঠোর পরিশ্রমে আনন্দ খুঁজে পায়? অবশ্যই পায়! পূর্ণহৃদয়ে যিহোবার সেবা করা আনন্দজনক, পরিতৃপ্তিদায়ক ও অসংখ্য আশীর্বাদ সম্বলিত জীবনের এক নিশ্চিত পথ।—পড়ুন, হিতোপদেশ ১০:২২.

২৩ আমাদের মধ্যে অনেককেই আমাদের পরিবারের বস্তুগত বিষয়গুলো জোগানোর জন্য জাগতিক কাজে দীর্ঘ সময় ব্যয় করতে হয়। মনে রাখবেন যে, যিহোবা চান যেন আমরা আমাদের কঠোর পরিশ্রমের মধ্যে আনন্দ খুঁজে পাই। আমাদের মনোভাব ও কাজগুলোকে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি ও নীতিগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার মাধ্যমে আমরা আমাদের কাজে পরিতৃপ্তি খুঁজে পেতে পারি। কিন্তু, আসুন আমরা জাগতিক কাজকে আমাদের প্রধান কাজ—ঈশ্বরের রাজ্যের সুসমাচার ঘোষণা করা—থেকে আমাদেরকে বিক্ষিপ্ত করার সুযোগ না দেওয়ার জন্য দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ হই। এই কাজকে আমাদের জীবনে অগ্রাধিকার দেওয়ার মাধ্যমে আমরা যিহোবার প্রতি আমাদের প্রেম প্রদর্শন করি আর এভাবে তাঁর প্রেমে অবস্থিতি করি।

a যে-গ্রিক শব্দটাকে “সূত্রধর” হিসেবে অনুবাদ করা হয়েছে, সেটাকে “কাঠের কাজ করেন এমন একজন কর্মীর জন্য ব্যবহৃত সাধারণ শব্দ” বলা যেতে পারে, “তা তিনি বাড়ি নির্মাণ করুন অথবা আসবাবপত্র বানান কিংবা অন্য যেকোনো ধরনের কাঠের জিনিসপত্র তৈরি করুন না কেন।”

b কাজ সম্বন্ধে বিবেচ্য বিষয়গুলো নিয়ে আরও বিস্তারিত আলোচনার জন্য ১৯৯৯ সালের ১৫ এপ্রিল প্রহরীদুর্গ পত্রিকার ২৮-৩০ পৃষ্ঠা এবং ১৯৮২ সালের ১৫ জুলাই প্রহরীদুর্গ (ইংরেজি) পত্রিকার ২৬ পৃষ্ঠা দেখুন।

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৫)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার