ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w০৬ ১/১ পৃষ্ঠা ২০-২৪
  • ঈশ্বরের ওপর আপনার নির্ভরতা কতখানি দৃঢ়?

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • ঈশ্বরের ওপর আপনার নির্ভরতা কতখানি দৃঢ়?
  • ২০০৬ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • “ভাবিত হইও না”
  • এক ভারসাম্যপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি
  • ভাবিত না হওয়ার বিষয়ে আরও পরামর্শ
  • সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলার প্রচেষ্টা করুন
  • ‘প্রথমে রাজ্যের বিষয়ে চেষ্টা কর’
    একমাত্র সত্য ঈশ্বরের উপাসনা করুন
  • রাজ্যের বিষয়ে চেষ্টা করুন, বস্তুগত বিষয়ে নয়
    প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০১৬
  • দুর্দশার সময়ে যিহোবার ওপর পুরোপুরি নির্ভর করুন
    ২০০৩ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • অনন্তজীবন লাভ করার জন্য আপনি কতখানি ত্যাগস্বীকার করতে ইচ্ছুক?
    ২০০৮ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
আরও দেখুন
২০০৬ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w০৬ ১/১ পৃষ্ঠা ২০-২৪

ঈশ্বরের ওপর আপনার নির্ভরতা কতখানি দৃঢ়?

‘কিন্তু তোমরা প্রথমে রাজ্যের বিষয়ে চেষ্টা কর।’—মথি ৬:৩৩.

১, ২. চাকরির ক্ষেত্রে একজন যুবক কোন পদক্ষেপ নিয়েছিল এবং কেন?

একজন যুবক তার মণ্ডলীতে আরও বেশি সাহায্য করতে চেয়েছিল। সমস্যাটা ছিল তার চাকরি, যেকারণে সে নিয়মিত সভায় উপস্থিত হতে পারত না। সে কীভাবে এই সমস্যার সমাধান করেছিল? সে তার জীবনকে সাধাসিধে করেছিল, তার চাকরিটা ছেড়ে দিয়েছিল এবং পরবর্তী সময়ে এমন একটা চাকরি পেয়েছিল, যা তার খ্রিস্টীয় কাজকর্মে কোনো বাধা সৃষ্টি করেনি। বর্তমানে সে আগের চেয়ে অনেক কম অর্থ উপার্জন করে কিন্তু তারপরও সে তার পরিবারের প্রয়োজনগুলোর যত্ন নিচ্ছে এবং মণ্ডলীকে আরও বেশি করে সাহায্য করতে পারছে।

২ আপনি কি বুঝতে পারছেন যে, কেন সেই যুবক এই ধরনের এক পদক্ষেপ নিয়েছিল? আপনি যদি তার মতো পরিস্থিতিতে থাকতেন, তা হলে আপনি কি এই ধরনের কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ভাবতে পারতেন? প্রশংসনীয় বিষয়টা হচ্ছে, অনেক খ্রিস্টান এইরকম পদক্ষেপ নিয়েছে এবং তাদের কাজগুলো যিশুর এই প্রতিজ্ঞার ওপর তাদের আস্থাকে প্রকাশ করে: “কিন্তু তোমরা প্রথমে তাঁহার রাজ্য ও তাঁহার ধার্ম্মিকতার বিষয়ে চেষ্টা কর, তাহা হইলে ঐ সকল দ্রব্যও তোমাদিগকে দেওয়া হইবে।” (মথি ৬:৩৩) নিরাপত্তার জন্য তারা জগতের ওপর নির্ভর করার পরিবর্তে যিহোবার ওপর নির্ভর করে।—হিতোপদেশ ৩:২৩, ২৬.

৩. কেন কেউ কেউ হয়তো ভাবতে পারে যে, আজকে ঈশ্বরের রাজ্যকে প্রথমে রাখা আদৌ ব্যবহারিক কি না?

৩ আমরা যে কঠিন সময়ে বাস করছি তার পরিপ্রেক্ষিতে কেউ কেউ হয়তো ভাবতে পারে যে, সেই যুবক আদৌ এক বিজ্ঞ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কি না। আজকে, মানবজাতির এক অংশ যেখানে চরম দরিদ্রতার মধ্যে বাস করে, সেখানে অন্যেরা ইতিহাসের সর্বোচ্চ জীবনযাপনের মান অনুযায়ী বাস করে থাকে। দরিদ্র দেশগুলোতে অধিকাংশ লোক তাদের জীবনকে আরেকটু স্বচ্ছন্দ করার জন্য যেকোনো সুযোগের সদ্ব্যবহার করায় ব্যস্ত থাকে। অন্যদিকে, ধনী দেশগুলোতে অস্থিতিশীল অর্থনীতি, পরিবর্তনশীল চাকরির বাজার এবং আগের চেয়ে আরও বেশি সময় ও শক্তি দাবি করে এমন নিয়োগকর্তাদের মুখোমুখি হয়ে অনেকে তাদের জীবনযাপনের মান বজায় রাখতে গিয়ে চাপ অনুভব করে থাকে। জীবিকার্জনের সঙ্গে জড়িত চাপের পরিপ্রেক্ষিতে কেউ কেউ হয়তো ভাবতে পারে, ‘তারপরও কি রাজ্যের বিষয়ে প্রথমে চেষ্টা করা ব্যবহারিক?’ সেই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য, যিশু যে-শ্রোতাদের সঙ্গে কথা বলছিলেন, তাদের সম্বন্ধে বিবেচনা করুন।

“ভাবিত হইও না”

৪, ৫. কীভাবে যিশু দৃষ্টান্তের সাহায্যে স্পষ্ট করেছিলেন যে, ঈশ্বরের লোকেদের জন্য রোজকার বিষয়গুলো নিয়ে অতিরিক্ত ভাবিত না হওয়া যুক্তিসংগত ছিল?

৪ যিশু সেই সময়ে গালীলে ছিলেন আর বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা এক বিস্তর লোকের সঙ্গে কথা বলছিলেন। (মথি ৪:২৫) তাদের মধ্যে হয়তো অল্প কিছু লোক ধনী ছিল। সম্ভবত, অধিকাংশই ছিল দরিদ্র। তা সত্ত্বেও, যিশু তাদেরকে বস্তুগত সম্পদ অর্জন করাকে নয় বরং এর চেয়েও আরও অনেক মূল্যবান কিছু—আধ্যাত্মিক সম্পদ—সঞ্চয় করাকে অগ্রাধিকার দিতে জোরালো পরামর্শ দিয়েছিলেন। (মথি ৬:১৯-২১, ২৪) তিনি বলেছিলেন: “‘কি ভোজন করিব, কি পান করিব’ বলিয়া প্রাণের বিষয়ে, কিম্বা ‘কি পরিব’ বলিয়া শরীরের বিষয়ে ভাবিত হইও না; ভক্ষ্য হইতে প্রাণ ও বস্ত্র হইতে শরীর কি বড় বিষয় নয়?”—মথি ৬:২৫.

৫ যারা তাঁর কথা শুনছিল তাদের অনেকের কাছে যিশুর কথাগুলো হয়তো অবাস্তব বলে মনে হয়েছে। তারা জানত যে, যদি তারা কঠোর পরিশ্রম না করে, তাদের পরিবার কষ্ট পাবে। কিন্তু, যিশু তাদেরকে পাখিদের বিষয়ে স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলেন। পাখিদের প্রতিদিন খাবার খুঁজতে হয় কিন্তু যিহোবা তাদের জন্য তা জুগিয়ে থাকেন। এ ছাড়া, যিশু তাদের মনে করিয়ে দিয়েছিলেন যে, যিহোবা সেই বুনোফুলগুলোর কীভাবে যত্ন নেন, যেগুলোর সৌন্দর্য শলোমনের সমস্ত প্রতাপকে ছাড়িয়ে যায়। যিহোবা যদি পাখি ও ফুলের জন্য চিন্তা করে থাকেন, তা হলে তিনি কি আমাদের জন্য আরও বেশি চিন্তা করবেন না? (মথি ৬:২৬-৩০) যিশু যেমন বলেছিলেন, আমরা বেঁচে থাকার জন্য যে-খাবার ক্রয় করি ও আমাদের শরীরকে আচ্ছাদন করার জন্য যে-বস্ত্র জোগাড় করি, সেগুলোর চেয়ে আমাদের জীবন (প্রাণ) ও শরীর আরও অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যদি শুধুমাত্র খাদ্য ও আচ্ছাদনের পিছনে আমাদের সমস্ত প্রচেষ্টাকে নিয়োজিত করি আর যিহোবাকে সেবা করার জন্য উল্লেখযোগ্য কিছুই না থাকে, তা হলে আমরা বেঁচে থাকার যথার্থ উদ্দেশ্যই হারিয়ে ফেলছি।—উপদেশক ১২:১৩.

এক ভারসাম্যপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি

৬. (ক) খ্রিস্টানদের কোন দায়িত্ব রয়েছে? (খ) কার ওপর খ্রিস্টানরা তাদের পূর্ণ নির্ভরতা রাখে?

৬ অবশ্য, যিশু তাঁর শ্রোতাদের কাজকর্ম বন্ধ করে দিয়ে এই ভেবে ঈশ্বরের জন্য অপেক্ষা করতে বলেননি যে, তিনি কোনো না কোনোভাবে তাদের পরিবারের জন্য প্রয়োজনীয় বস্তু জোগাবেন। এমনকি পাখিদেরও নিজেদের ও তাদের বাচ্চাদের জন্য খাবার খুঁজতে হয়। তাই, খেতে হলে খ্রিস্টানদেরও কাজ করতে হতো। তাদের পরিবারের দায়িত্বগুলোর যত্ন নিতে হতো। খ্রিস্টান দাসদের তাদের স্বামী বা প্রভুদের জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হতো। (২ থিষলনীকীয় ৩:১০-১২; ১ তীমথিয় ৫:৮; ১ পিতর ২:১৮) প্রেরিত পৌল নিজের ভরণপোষণ জোগাতে প্রায়ই তাঁবু নির্মাতা হিসেবে কাজ করেছিলেন। (প্রেরিত ১৮:১-৪; ১ থিষলনীকীয় ২:৯) তা সত্ত্বেও, সেই খ্রিস্টানরা নিরাপত্তার জন্য চাকরির ওপর নির্ভর করেনি। তারা যিহোবার ওপর নির্ভর করেছিল। ফলে, তারা এমন এক মনের শান্তি উপভোগ করেছিল, যা অন্যদের কাছে অজানা ছিল। গীতরচক বলেছিলেন: “যাহারা সদাপ্রভুতে নির্ভর করে, তাহারা সিয়োন পর্ব্বতের সদৃশ, যাহা অটল ও চিরস্থায়ী।”—গীতসংহিতা ১২৫:১.

৭. যে-ব্যক্তি যিহোবার ওপর দৃঢ়ভাবে নির্ভর করেন না, তার দৃষ্টিভঙ্গি হয়তো কী হতে পারে?

৭ যে-ব্যক্তি যিহোবার ওপর দৃঢ়ভাবে নির্ভর করেন না, তিনি হয়তো ভিন্নভাবে চিন্তা করতে পারেন। অধিকাংশ মানুষই বস্তুগত সম্পদকে নিরাপত্তার এক প্রধান বিষয় হিসেবে দেখে থাকে। তাই, বাবামায়েরা তাদের সন্তানদের যৌবনের অধিকাংশ সময় উচ্চশিক্ষার ওপর নিবিষ্ট করতে উৎসাহিত করেছে, এইরকম আশা করে যে, তা তাদেরকে ভাল বেতনের চাকরি পেতে প্রস্তুত করবে। দুঃখের বিষয় যে, কিছু খ্রিস্টান পরিবারকে এই ধরনের বিনিয়োগের ফলে প্রচুর মাশুল দিতে হয়েছে, কারণ তাদের সন্তানরা আধ্যাত্মিক বিষয়গুলোর ওপর থেকে মনোযোগ হারিয়ে ফেলেছে এবং বস্তুগত লক্ষ্যগুলোর দিকে ছুটে গিয়েছে।

৮. খ্রিস্টানরা কোন বিষয়ে ভারসাম্য বজায় রাখে?

৮ তাই বিজ্ঞ খ্রিস্টানরা উপলব্ধি করে যে, যিশুর পরামর্শ প্রথম শতাব্দীর মতো আজও একইভাবে প্রযোজ্য আর তারা এই বিষয়ে ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করে। এমনকি তাদের শাস্ত্রীয় দায়িত্বগুলো পালন করতে গিয়ে চাকরির পিছনে যদি তাদের বেশ অনেকখানি সময় দিতেও হয়, তবুও তারা টাকাপয়সা উপার্জন করার প্রয়োজনকে কখনোই আরও অধিক গুরুত্বপূর্ণ, আধ্যাত্মিক বিষয়গুলোকে উপেক্ষা করতে অনুমোদন করে না।—উপদেশক ৭:১২.

ভাবিত না হওয়ার বিষয়ে আরও পরামর্শ

৯. যারা পূর্ণরূপে যিহোবার ওপর নির্ভর করে, সেই ব্যক্তিদের যিশু কীভাবে আশ্বাস দেন?

৯ পর্বতেদত্ত উপদেশে যিশু তাঁর শ্রোতাদের জোরালোভাবে পরামর্শ দিয়েছিলেন: “ইহা বলিয়া ভাবিত হইও না যে, ‘কি ভোজন করিব?’ বা ‘কি পান করিব?’ বা ‘কি পরিব?’ কেননা পরজাতীয়েরাই এই সকল বিষয় চেষ্টা করিয়া থাকে [“এই সকল বিষয়ে ব্যস্ত থাকে,” বাংলা জুবিলী বাইবেল]; তোমাদের স্বর্গীয় পিতা ত জানেন যে এই সকল দ্রব্যে তোমাদের প্রয়োজন আছে।” (মথি ৬:৩১, ৩২) এই কথাগুলো কতই না উৎসাহজনক! যদি আমরা যিহোবার ওপর পূর্ণরূপে নির্ভর করি, তা হলে তিনি সবসময় আমাদের সাহায্য করে চলবেন। একইসময়ে যিশুর কথাগুলো গুরুগম্ভীরও। তা আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, যদি আমরা বস্তুগত বিষয়গুলো পাওয়ার চেষ্টায় “ব্যস্ত” থাকি, তা হলে আমাদের চিন্তাভাবনা ‘পরজাতিদের’ মতো হবে, যারা সত্য খ্রিস্টান নয়।

১০. একজন যুবক ব্যক্তি যখন পরামর্শের জন্য যিশুর কাছে এসেছিল, তখন যিশু কীভাবে দেখিয়েছিলেন যে, সেই যুবক আসলে কাকে বেশি ভালবাসত?

১০ একবার, অতি ধনী একজন যুবক যিশুকে জিজ্ঞেস করেছিল যে, অনন্তজীবন পাওয়ার জন্য তার কী করা উচিত। যিশু তাকে ব্যবস্থার চাহিদাগুলো স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলেন, যা তখনও বলবৎ ছিল। সেই যুবক যিশুকে এই বলে নিশ্চিত করেছিল: “আমি এ সকলই পালন করিয়াছি, এখন আমার কি ত্রুটি আছে?” যিশুর উত্তর হয়তো অনেকের কাছে অবাস্তব শুনিয়েছিল। তিনি বলেছিলেন: “যদি সিদ্ধ হইতে ইচ্ছা কর, তবে চলিয়া যাও, তোমার যাহা যাহা আছে, বিক্রয় কর, এবং দরিদ্রদিগকে দান কর, তাহাতে স্বর্গে ধন পাইবে; আর আইস, আমার পশ্চাদ্গামী হও।” (মথি ১৯:১৬-২১) সেই যুবক দুঃখিত হয়ে চলে গিয়েছিল, তার ধনসম্পদ হারানোর কথা সে ভাবতেই পারেনি। যিহোবাকে সে যতখানিই ভালবাসুক না কেন, তার ধনসম্পদকে সে এর চেয়ে বেশি ভালবাসত।

১১, ১২. (ক) ধনসম্পদ সম্বন্ধে যিশু কোন গুরুগম্ভীর কথা বলেছিলেন? (খ) কীভাবে ধনসম্পদ যিহোবাকে সেবা করার ক্ষেত্রে এক প্রতিবন্ধক হতে পারে?

১১ সেই ঘটনা যিশুকে অপ্রত্যাশিত কিছু বলতে পরিচালিত করেছিল: “ধনবানের পক্ষে স্বর্গ-রাজ্যে প্রবেশ করা দুষ্কর। . . . ঈশ্বরের রাজ্যে ধনবানের প্রবেশ করা অপেক্ষা বরং সূচীর ছিদ্র দিয়া উটের যাওয়া সহজ।” (মথি ১৯:২৩, ২৪) যিশু কি এটা বুঝিয়েছিলেন যে, কোনো ধনী ব্যক্তিই রাজ্যের অধিকারী হবে না? না, কারণ তিনি আরও বলেছিলেন: “ঈশ্বরের সকলই সাধ্য।” (মথি ১৯:২৫, ২৬) বস্তুতপক্ষে, যিহোবার সাহায্যে সেই সময়ের কিছু ধনী ব্যক্তি অভিষিক্ত খ্রিস্টান হয়েছিল। (১ তীমথিয় ৬:১৭) তা সত্ত্বেও, উপযুক্ত কারণেই যিশু সেই অবাক হওয়ার মতো কথাগুলো বলেছিলেন। তিনি এক সতর্কবাণী দিচ্ছিলেন।

১২ একজন ব্যক্তি যদি সেই ধনী যুবকের মতো তার ধনসম্পদের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েন, তা হলে সেগুলো যিহোবাকে সর্বান্তঃকরণে সেবা করার ক্ষেত্রে তার জন্য এক প্রতিবন্ধক হয়ে উঠতে পারে। আর এটা, যিনি ইতিমধ্যেই ধনী এবং যিনি “ধনী হইতে বাসনা” করেন, উভয়ের বেলায়ই সত্য হতে পারে। (১ তীমথিয় ৬:৯, ১০) বস্তুগত বিষয়গুলোর ওপর অতিরিক্ত নির্ভর করা একজন ব্যক্তিকে “আত্মাতে” কম “দীনহীন” বা আধ্যাত্মিক চাহিদা সম্বন্ধে কম সচেতন হতে পরিচালিত করতে পারে। (মথি ৫:৩) ফলে, তিনি হয়তো একইভাবে যিহোবার সমর্থনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব না-ও করতে পারেন। (দ্বিতীয় বিবরণ ৬:১০-১২) তিনি হয়তো মণ্ডলীতে বিশেষ আচরণ আশা করতে পারেন। (যাকোব ২:১-৪) আর তিনি হয়তো যিহোবাকে সেবা করার চেয়ে বরং তার ধনসম্পদ উপভোগ করার পিছনেই বেশি সময় ব্যয় করতে পারেন।

সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলার প্রচেষ্টা করুন

১৩. লায়দিকেয়ার লোকেদের কোন ভুল দৃষ্টিভঙ্গি ছিল?

১৩ প্রথম শতাব্দীর লায়দিকেয়াস্থ মণ্ডলীতে ধনসম্পদ সম্বন্ধে এক ভুল দৃষ্টিভঙ্গি ছিল। যিশু তাদের বলেছিলেন: “তুমি কহিতেছ, আমি ধনবান্‌, ধন সঞ্চয় করিয়াছি, আমার কিছুরই অভাব নাই; কিন্তু জান না যে, তুমিই দুর্ভাগ্য, কৃপাপাত্র, দরিদ্র, অন্ধ ও উলঙ্গ।” লায়দিকেয়ার লোকেদের ধনসম্পদ তাদেরকে এইরকম দুঃখজনক আধ্যাত্মিক অবস্থায় নিয়ে যায়নি। বরং যিহোবার পরিবর্তে ধনসম্পদের ওপর নির্ভর করাই, তাদেরকে এই অবস্থায় নিয়ে গিয়েছিল। ফলস্বরূপ, তারা আধ্যাত্মিকভাবে কদুষ্ণ ছিল, যাদেরকে যিশু তাঁর মুখ থেকে “বমন করিতে উদ্যত” হয়েছিলেন।—প্রকাশিত বাক্য ৩:১৪-১৭.

১৪. কেন ইব্রীয় খ্রিস্টানরা পৌলের প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য ছিল?

১৪ অন্যদিকে, সেই সময়ের আগে পৌল একবার তাড়নার সময়ে ইব্রীয় খ্রিস্টানদের আচরণের জন্য তাদের প্রশংসা করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন: “তোমরা বন্দিগণের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করিয়াছিলে, এবং আনন্দপূর্ব্বক আপন আপন সম্পত্তির লুট স্বীকার করিয়াছিলে, কারণ তোমরা জানিতে, তোমাদের আরও উত্তম নিজ সম্পত্তি আছে, আর তাহা নিত্যস্থায়ী।” (ইব্রীয় ১০:৩৪) সেই খ্রিস্টানরা তাদের ধনসম্পদ হারিয়ে একেবারে দিশেহারা হয়ে পড়েনি। তারা তাদের আনন্দকে অক্ষুণ্ণ রেখেছিল কারণ তারা তাদের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ তাদের ‘আরও উত্তম নিত্যস্থায়ী সম্পত্তিকে’ আগলে রেখেছিল। যিশুর দৃষ্টান্তের সেই বণিক, যিনি একটা মূল্যবান মুক্তোর জন্য সমস্তকিছু ত্যাগ করেছিলেন, তার মতো তারা দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ ছিল যে, যেকোনো মূল্যই তাদের দিতে হোক না কেন, তারা রাজ্যের আশার ওপর তাদের দৃঢ়মুষ্টিকে ঢিলে হতে দেবে না। (মথি ১৩:৪৫, ৪৬) কী এক সুন্দর মনোভাব!

১৫. কীভাবে লাইবেরিয়ার একজন খ্রিস্টান যুবতী রাজ্যের বিষয়গুলোকে প্রথমে রেখেছিল?

১৫ আজকে অনেকে একইরকম উত্তম মনোভাব গড়ে তোলার প্রচেষ্টা করেছে। উদাহরণস্বরূপ, লাইবেরিয়ায় একজন খ্রিস্টান যুবতীকে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। সেই দেশে, এই ধরনের একটা প্রস্তাবকে নিরাপদ ভবিষ্যতের এক উপায় হিসেবে দেখা হয়। কিন্তু, সে একজন অগ্রগামী অর্থাৎ পূর্ণসময়ের সুসমাচার প্রচারক ছিল আর সে একজন অস্থায়ী বিশেষ অগ্রগামী হিসেবে সেবা করার আমন্ত্রণও লাভ করেছিল। সে প্রথমে রাজ্যের বিষয়ে চেষ্টা করা বেছে নিয়েছিল এবং পূর্ণসময়ের সেবায় রত ছিল। সে তার কার্যভারে গিয়েছিল এবং তিন মাসের মধ্যে ২১টা বাইবেল অধ্যয়ন শুরু করেছিল। এই যুবতী বোন এবং তার মতো হাজার হাজার ব্যক্তি প্রথমে রাজ্যের বিষয় চেষ্টা করে থাকে, এমনকি যদিও এর জন্য সম্ভাব্য বস্তুগত সুযোগসুবিধা ত্যাগ করতে হয়। এই বস্তুবাদিতাপূর্ণ জগতে কীভাবে তারা এই ধরনের এক মনোভাব বজায় রাখে? তারা বেশ কিছু উত্তম গুণ গড়ে তোলার প্রচেষ্টা করেছে। আসুন আমরা এগুলোর কয়েকটা আলোচনা করি।

১৬, ১৭. (ক) যিহোবার ওপর নির্ভর করতে হলে বিনয় কেন গুরুত্বপূর্ণ? (খ) কেন আমাদের ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞাগুলোর ওপর আস্থা গড়ে তোলার প্রচেষ্টা করা উচিত?

১৬ বিনয়: বাইবেল বলে: “তোমার সমস্ত অন্তর দিয়ে সদাপ্রভুর উপর নির্ভর কর; তোমার নিজের বিচারবুদ্ধির উপর ভরসা কোরো না। তোমার সমস্ত চলবার পথে তাঁকে সামনে রাখ; তিনিই তোমার সব পথ সোজা করে দেবেন। তোমাদের নিজের চোখে জ্ঞানী হোয়ো না।” (হিতোপদেশ ৩:৫-৭, বাংলা কমন ল্যাঙ্গুয়েজ ভারসন) মাঝে মাঝে, কোনো নির্দিষ্ট পথকে জাগতিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে হয়তো ব্যবহারিক বলে মনে হতে পারে। (যিরমিয় ১৭:৯) তা সত্ত্বেও, একজন আন্তরিক খ্রিস্টান নির্দেশনার জন্য যিহোবার ওপর নির্ভর করেন। (গীতসংহিতা ৪৮:১৪) ‘তার সমস্ত পথে’—মণ্ডলীর বিষয়গুলোতে, শিক্ষা বা চাকরিতে, অবসর সময় বা অন্য কোনোকিছুতে—তিনি বিনয়ের সঙ্গে যিহোবার পরামর্শ খোঁজেন।—গীতসংহিতা ৭৩:২৪.

১৭ যিহোবার প্রতিজ্ঞাগুলোর ওপর আস্থা: পৌল বলেছিলেন: “যে ব্যক্তি ঈশ্বরের নিকটে উপস্থিত হয়, তাহার ইহা বিশ্বাস করা আবশ্যক যে ঈশ্বর আছেন, এবং যাহারা তাঁহার অন্বেষণ করে, তিনি তাহাদের পুরস্কারদাতা।” (ইব্রীয় ১১:৬) আমাদের যদি সন্দেহ হয় যে, যিহোবা তাঁর প্রতিজ্ঞাগুলো পূর্ণ করবেন কি না, তা হলে জগৎ বা ‘সংসার পূর্ণমাত্রায় ভোগ করাকে’ যুক্তিযুক্ত বলে মনে হতে পারে। (১ করিন্থীয় ৭:৩১) অন্যদিকে, আমাদের বিশ্বাস যদি দৃঢ় হয়, তা হলে আমরা প্রথমে রাজ্যের বিষয় চেষ্টা করার জন্য সংকল্পবদ্ধ হব। দৃঢ় বিশ্বাস কীভাবে গড়ে তোলা যেতে পারে? সবসময় যিহোবার নিকটবর্তী হয়ে, আন্তরিক প্রার্থনা করে এবং নিয়মিত ব্যক্তিগত অধ্যয়নের মাধ্যমে। (গীতসংহিতা ১:১-৩; ফিলিপীয় ৪:৬, ৭; যাকোব ৪:৮) রাজা দায়ূদের মতো আমরা প্রার্থনা করতে পারি: “সদাপ্রভু, আমি তোমার উপরে নির্ভর করিলাম; আমি কহিলাম, তুমিই আমার ঈশ্বর। আহা! তোমার দত্ত মঙ্গল কেমন মহৎ।”—গীতসংহিতা ৩১:১৪, ১৯.

১৮, ১৯. (ক) কীভাবে পরিশ্রমী হওয়া যিহোবার ওপর আমাদের নির্ভরতাকে শক্তিশালী করে? (খ) কেন একজন খ্রিস্টানের ত্যাগস্বীকার করতে ইচ্ছুক হওয়া উচিত?

১৮ যিহোবার সেবায় অধ্যবসায়ী: পৌল যিহোবার প্রতিজ্ঞাগুলোতে রাখা আস্থাকে যত্ন দেখানো বা পরিশ্রমী হওয়ার সঙ্গে যুক্ত করেছিলেন, যখন তিনি লিখেছিলেন: “আমাদের বাসনা এই, যেন তোমাদের প্রত্যেক জন একই প্রকার যত্ন দেখায়, যাহাতে শেষ পর্য্যন্ত প্রত্যাশার পূর্ণতা থাকিবে।” (ইব্রীয় ৬:১১) আমরা যদি যিহোবার সেবায় ব্যস্ত থাকি, তা হলে তিনি আমাদের সমর্থন করবেন। প্রতিবার আমরা যখন সেই সমর্থন লাভ করি, তখন তাঁর ওপর আমাদের নির্ভরতা আরও দৃঢ় হয়, আমরা ‘সুস্থির, নিশ্চল’ হয়ে উঠি। (১ করিন্থীয় ১৫:৫৮) আমাদের বিশ্বাস পুনর্নবীকৃত হয় এবং আমাদের আশা নিশ্চিত হয়।—ইফিষীয় ৩:১৬-১৯.

১৯ ত্যাগস্বীকার করতে ইচ্ছুক: যিশুকে অনুসরণ করার জন্য পৌল এক সম্ভাবনাপূর্ণ পেশাকে ত্যাগ করেছিলেন। তিনি স্পষ্টতই সঠিক বাছাইটি করেছিলেন, যদিও বস্তুগত দৃষ্টিকোণ থেকে তার জীবন মাঝে মাঝে কঠিন ছিল। (১ করিন্থীয় ৪:১১-১৩) যিহোবা এক আরামআয়েশপূর্ণ জীবনের বিষয়ে প্রতিজ্ঞা করেন না আর মাঝে মাঝে তাঁর দাসেরা কষ্ট সহ্য করে থাকে। আমাদের জীবনকে সাধাসিধে করার এবং ত্যাগস্বীকার করার ইচ্ছা, যিহোবাকে সেবা করার বিষয়ে আমাদের সংকল্পের দৃঢ়তাকে প্রমাণ করে।—১ তীমথিয় ৬:৬-৮.

২০. যে-ব্যক্তি রাজ্যের বিষয়গুলোকে প্রথমে রাখেন, তার জন্য ধৈর্য ধরা কেন অতীব গুরুত্বপূর্ণ?

২০ ধৈর্য: শিষ্য যাকোব সহখ্রিস্টানদের জোরালোভাবে পরামর্শ দিয়েছিলেন: “অতএব, হে ভ্রাতৃগণ, তোমরা প্রভুর আগমন পর্য্যন্ত দীর্ঘসহিষ্ণু থাক।” (যাকোব ৫:৭) এই কর্মব্যস্ত জগতে দীর্ঘসহিষ্ণু হওয়া বা ধৈর্য ধরা কঠিন। আমরা চাই বিষয়গুলো তাড়াতাড়ি হোক। কিন্তু, পৌল আমাদের সেই ব্যক্তিদের অনুকরণ করার জন্য জোরালো পরামর্শ দেন, যারা “বিশ্বাস ও দীর্ঘসহিষ্ণুতা দ্বারা প্রতিজ্ঞা-সমূহের দায়াধিকারী।” (ইব্রীয় ৬:১২) যিহোবার অপেক্ষা করতে ইচ্ছুক থাকুন। এক পরমদেশ পৃথিবীতে অনন্তজীবন—এর জন্য অপেক্ষা করা নিশ্চিতভাবেই মূল্যবান!

২১. (ক) আমরা যখন রাজ্যের বিষয়গুলোকে প্রথমে রাখি, তখন আমরা কী প্রদর্শন করি? (খ) পরের প্রবন্ধে কী আলোচনা করা হবে?

২১ হ্যাঁ, প্রথমে রাজ্যের বিষয় চেষ্টা করার ব্যাপারে যিশুর পরামর্শ ব্যবহারিক। যখন আমরা তা করি, তখন আমরা প্রদর্শন করি যে, আমরা যিহোবার ওপর সত্যিই নির্ভর করি আর একজন খ্রিস্টানের বেঁচে থাকার জন্য একমাত্র নিরাপদ উপায় বেছে নিই। কিন্তু, যিশু আমাদেরকে ‘প্রথমে [ঈশ্বরের] ধার্ম্মিকতার বিষয়ে চেষ্টা’ করে চলতেও পরামর্শ দিয়েছিলেন। পরের প্রবন্ধে আমরা দেখব যে, কেন সেই উৎসাহ আজকে বিশেষভাবে প্রয়োজন।

আপনি কি ব্যাখ্যা করতে পারেন?

• বস্তুগত বিষয়গুলো সম্বন্ধে যিশু আমাদের কোন বিষয়ে ভারসাম্য বজায় রাখতে উৎসাহ দিয়েছিলেন?

• উট এবং সূচীর ছিদ্রের বিষয়ে যিশুর দৃষ্টান্ত থেকে আমরা কী শিখি?

• কোন খ্রিস্টীয় গুণগুলো আমাদের প্রথমে ঈশ্বরের রাজ্যের বিষয়ে চেষ্টা করতে সাহায্য করে?

[২১ পৃষ্ঠার চিত্র]

অনেকে যারা যিশুর কথা শুনেছিল, তারা দরিদ্র ছিল

[২৩ পৃষ্ঠার চিত্র]

যিশুর দৃষ্টান্তের বণিক একটা মূল্যবান মুক্তোর জন্য সমস্তকিছু পরিত্যাগ করেছিলেন

[২৩ পৃষ্ঠার চিত্র]

ধনী যুবক ব্যক্তি ঈশ্বরকে ভালবাসার চেয়ে তার ধনসম্পদকে বেশি ভালবাসত

[২৪ পৃষ্ঠার চিত্র]

যদি আমরা যিহোবার সেবায় ব্যস্ত থাকি, তা হলে তিনি আমাদের সমর্থন জোগাবেন

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৫)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার