ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w১৬ জুলাই পৃষ্ঠা ৭-১২
  • রাজ্যের বিষয়ে চেষ্টা করুন, বস্তুগত বিষয়ে নয়

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • রাজ্যের বিষয়ে চেষ্টা করুন, বস্তুগত বিষয়ে নয়
  • প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০১৬
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • বস্তুবাদিতা আমাদের উপর প্রভাব ফেলতে পারে
  • যিহোবা আমাদের প্রয়োজনীয় বিষয় জুগিয়ে দেন
  • ঈশ্বরের রাজ্য কি আপনার জীবনে প্রথমে রয়েছে?
  • প্রথমে রাজ্যের বিষয়ে চেষ্টা করুন, তা হলে যিহোবা আপনার যত্ন নেবেন
  • ভবিষ্যতের কথা মনে রেখে জীবনযাপন করুন
    ২০০৭ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • ‘প্রথমে রাজ্যের বিষয়ে চেষ্টা কর’
    একমাত্র সত্য ঈশ্বরের উপাসনা করুন
  • ঈশ্বরের ওপর আপনার নির্ভরতা কতখানি দৃঢ়?
    ২০০৬ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • দুশ্চিন্তা করবেন না
    প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে (জনসাধারণের সংস্করণ)—২০১৬
আরও দেখুন
প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০১৬
w১৬ জুলাই পৃষ্ঠা ৭-১২
একজন যিহোবার সাক্ষি একজন মহিলার কাছ পচার করছন আর সেই ছবির উপর লিলি-জাতীয় ফুলের ও পাখিদের ছবি তুলে ধরা হয়েছ

রাজ্যের বিষয়ে চেষ্টা করুন, বস্তুগত বিষয়ে নয়

“[ঈশ্বরের] রাজ্যের বিষয়ে সচেষ্ট হও, তাহা হইলে এই সকলও তোমাদিগকে দেওয়া যাইবে।”—লূক ১২:৩১.

গান সংখ্যা: ৪০, ৪৪

আপনি কী মনে করেন?

  • আমাদের প্রয়োজন ও আমাদের চাওয়ার মধ্যে কোন পার্থক্য রয়েছে?

  • কেন আমাদের আরও বেশি বস্তুগত বিষয় লাভ করার আকাঙ্ক্ষাকে নিয়ন্ত্রণ করা উচিত?

  • কেন আপনি এই ব্যাপারে নিশ্চিত যে, যিহোবা আপনার প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় বিষয় জুগিয়ে দিতে পারেন?

১. আমাদের প্রয়োজন ও আমাদের চাওয়ার মধ্যে কোন পার্থক্য রয়েছে?

বেঁচে থাকার জন্য আমাদের কেবল অল্প কয়েকটা বিষয় প্রয়োজন। উদাহরণ স্বরূপ, আমাদের খাদ্য, বস্ত্র ও বাসস্থান প্রয়োজন। তবে, আমাদের চাওয়ার হয়তো কোনো শেষ নেই। আর অনেক লোক এটা বুঝতেও পারে না, তারা যে-বিষয়গুলো চায় বা পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা করে, সেগুলো আসলে তাদের প্রয়োজন নেই।

২. লোকেরা কোন বিষয়গুলো পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা করে?

২ দরিদ্র দেশের একজন ব্যক্তি যা চান আর ধনী দেশের একজন ব্যক্তি যা চান, সেটার মধ্যে আকাশ-পাতাল পার্থক্য থাকতে পারে। পৃথিবীর কোনো কোনো জায়গায়, লোকেরা একটা মোবাইল ফোন, মোটরসাইকেল অথবা এক টুকরো জমি পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা করে। আবার অন্যান্য জায়গার লোকেরা দামি দামি পোশাক, আরও বড়ো বাড়ি অথবা আরও দামি গাড়ি চায়। কিন্তু, আমরা যেখানেই থাকি না কেন কিংবা আমাদের যত টাকাই থাকুক না কেন, আমাদের মধ্যে ক্রমাগত এমন আরও বিষয় পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা জেগে উঠতে পারে, যেগুলো আমাদের প্রয়োজন নেই অথবা কেনার সামর্থ্য নেই।

বস্তুবাদিতা আমাদের উপর প্রভাব ফেলতে পারে

৩. বস্তুবাদিতা কী?

৩ বস্তুবাদিতা কী? এটা এমন একজন ব্যক্তির মনোভাব, যিনি ঈশ্বরের সঙ্গে নিজের সম্পর্কের চেয়ে বস্তুগত বিষয়ের ব্যাপারে আরও বেশি চিন্তিত। তিনি শুধু নিজের প্রয়োজনীয় বিষয় লাভ করে সন্তুষ্ট থাকেন না, এর পরিবর্তে তিনি সবসময় আরও বেশি কিছু পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা করেন। এমনকী, যাদের প্রচুর টাকাপয়সা নেই অথবা যারা দামি দামি জিনিস কিনতে পারে না, তারাও বস্তুবাদী হতে পারে। তারা হয়তো তাদের জীবনে রাজ্যকে প্রথমে রাখা বন্ধ করে দিতে পারে।—ইব্রীয় ১৩:৫.

৪. শয়তান কীভাবে “চক্ষুর অভিলাষ” ব্যবহার করে থাকে?

৪ শয়তান আমাদেরকে এটা বিশ্বাস করাতে চায়, আমাদের যদি অনেক বস্তুগত বিষয় থাকে, শুধুমাত্র তা হলেই আমরা জীবন উপভোগ করতে পারব। তাই, আমাদের মধ্যে সবসময় আরও বেশি পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা জাগিয়ে তোলার চেষ্টায় সে তার জগৎ ও “চক্ষুর অভিলাষ” ব্যবহার করে থাকে। (১ যোহন ২:১৫-১৭; আদি. ৩:৬; হিতো. ২৭:২০) আমরা ক্রমাগত এমন বিজ্ঞাপন দেখি ও শুনি, যেগুলো আমাদেরকে নতুন নতুন পণ্য কেনার জন্য প্ররোচিত করার চেষ্টা করে। আপনি কি কখনো এমন কিছু কিনে ফেলেছেন, যেটা কোনো দোকানে দেখে আকর্ষণীয় বলে মনে হয়েছে অথবা আপনি কোনো বিজ্ঞাপনে সেটা দেখেছেন? যদি তা-ই হয়, তা হলে পরে আপনি হয়তো বুঝতে পেরেছেন, সেই জিনিসটা আসলে আপনার প্রয়োজন নেই। আমরা যদি ক্রমাগত এমন জিনিস কিনতে থাকি, যেগুলো আমাদের প্রয়োজন নেই, তা হলে আমরা আমাদের জীবনকে জটিল করে তুলি। সেই বিষয়গুলো যিহোবার সেবা থেকে আমাদের বিক্ষিপ্ত করতে পারে। উদাহরণ স্বরূপ, আমাদের হাতে হয়তো বাইবেল অধ্যয়নের জন্য, সভার প্রস্তুতি ও সভাতে যোগদানের জন্য এবং নিয়মিতভাবে প্রচারে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট সময় না-ও থাকতে পারে। মনে রাখবেন, প্রেরিত যোহন এই সাবধানবাণী দিয়েছেন: “জগৎ ও তাহার অভিলাষ বহিয়া যাইতেছে।”

৫. যারা নিজেদের বেশিরভাগ শক্তি আরও বেশি বস্তুগত বিষয় লাভ করার জন্য ব্যবহার করে থাকে, তাদের কী হতে পারে?

৫ শয়তান চায় যেন আমরা নিজেদের শক্তি যিহোবার সেবায় ব্যবহার করার পরিবর্তে আরও বেশি টাকাপয়সা ও বস্তুগত বিষয় লাভ করার জন্য ব্যবহার করি। (মথি ৬:২৪) কিন্তু, আমরা যদি কেবল নিজেদের জন্য আরও বেশি বস্তুগত বিষয় লাভ করার ব্যাপারে আগ্রহী হই, তা হলে আমাদের জীবন অর্থপূর্ণ হবে না। আমরা হয়তো হতাশ হয়ে পড়তে পারি অথবা আর্থিক সমস্যায় পড়ে যেতে পারি। এর চেয়েও খারাপ বিষয় হল, আমরা যিহোবা ও তাঁর রাজ্যের প্রতি বিশ্বাস হারিয়ে ফেলতে পারি। (১ তীম. ৬:৯, ১০; প্রকা. ৩:১৭) যিশু বলেছিলেন, “অন্যান্য বিষয়ের অভিলাষ” করা হচ্ছে কাঁটাবনের মতো, যা একটা বীজ থেকে চারা গাছের বৃদ্ধি থামিয়ে দিতে পারে আর এর ফলে সেই গাছে ফল হয় না।—মার্ক ৪:১৪, ১৮, ১৯.

৬. বারূকের কাছ থেকে আমরা কোন শিক্ষা লাভ করতে পারি?

৬ ভাববাদী যিরমিয়ের সচিব বারূক সম্বন্ধে একটু চিন্তা করে দেখুন। বারূক যখন নিজের জন্য “মহৎ মহৎ বিষয় চেষ্টা” করতে শুরু করেছিলেন, তখন যিহোবা তাকে এই বিষয়টা স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলেন, শীঘ্রই যিরূশালেম ধ্বংস হবে। কিন্তু তিনি বারূকের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, তিনি তার জীবন রক্ষা করবেন। (যির. ৪৫:১-৫) বারূকের এর চেয়ে বেশি কিছু আশা করা উচিত ছিল না। কারণ যিহোবা সেই সময়ে লোকেদের বস্তুগত বিষয় রক্ষা করেননি। (যির. ২০:৫) বর্তমানে আমরা এমন সময়ে বাস করছি, যখন শয়তানের জগতের ধ্বংস খুব নিকটে। তাই, এখন নিজেদের জন্য আরও বেশি বস্তুগত বিষয় লাভ করার সময় নয়। আর আমাদের এমনটা আশা করা উচিত নয়, আমাদের বস্তুগত বিষয়, তা সেগুলো যত মূল্যবান বলেই মনে হোক না কেন, মহাক্লেশের পরও আমাদের কাছে থাকবে।—হিতো. ১১:৪; মথি ২৪:২১, ২২; লূক ১২:১৫.

৭. এখন আমরা কী বিবেচনা করব এবং কেন?

৭ তা হলে, কীভাবে আমরা নিজেদের ও আমাদের পরিবারের ভরণ-পোষণ করতে পারি আর একই সময়ে জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের প্রতি মনোযোগ কেন্দ্রীভূত রাখতে পারি? কীভাবে আমরা বস্তুবাদিতা এড়িয়ে চলতে পারি? আর আমাদের প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো নিয়ে অতিরিক্ত উদ্‌বিগ্ন না হওয়ার ব্যাপারে কী আমাদের সাহায্য করতে পারে? এই বিষয়ে যিশু পর্বতেদত্ত উপদেশে সর্বোত্তম পরামর্শ দিয়েছিলেন। (মথি ৬:১৯-২১) আসুন আমরা মথি ৬:২৫-৩৪ পদ পড়ি এবং আলোচনা করি। এটা আমাদের বুঝতে সাহায্য করবে, কেন আমাদের বস্তুগত বিষয়ে নয় বরং রাজ্যের বিষয়ে চেষ্টা করে চলতে হবে।—লূক ১২:৩১.

যিহোবা আমাদের প্রয়োজনীয় বিষয় জুগিয়ে দেন

৮, ৯. (ক) আমাদের প্রয়োজনীয় বিষয় নিয়ে কেন আমাদের অতিরিক্ত উদ্‌বিগ্ন হওয়া উচিত নয়? (খ) যিশু লোকেদের সম্বন্ধে ও তাদের প্রয়োজন সম্বন্ধে কী জানতেন?

৮ মথি ৬:২৫ পদ পড়ুন। যিশু জানতেন, তাঁর শিষ্যরা কী খাবে, কী পান করবে এবং কী পরবে, সেই বিষয়ে উদ্‌বিগ্ন ছিলেন। তাই পর্বতেদত্ত উপদেশে তিনি তাদের বলেছিলেন: “প্রাণের বিষয়ে . . . ভাবিত হইও না।” যিশু চেয়েছিলেন যেন তারা বুঝতে পারেন, কেন তাদের এই বিষয়গুলো নিয়ে ভাবিত বা উদ্‌বিগ্ন হওয়া উচিত নয়। তিনি জানতেন, তারা যদি এমনকী প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো নিয়ে অতিরিক্ত উদ্‌বিগ্ন হয়ে পড়েন, তা হলে তারা জীবনের আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টা ভুলে যাবেন। যিশু তাঁর শিষ্যদের বিষয়ে এতটাই চিন্তিত ছিলেন যে, তিনি তাঁর উপদেশে এই উদ্‌বিগ্ন হওয়ার বিপদ সম্বন্ধে চার বার উল্লেখ করেছিলেন।—মথি ৬:২৭, ২৮, ৩১, ৩২, ৩৪.

৯ কিন্তু, আমরা কী খাব, কী পান করব অথবা কী পরব, সেই বিষয়ে কেন যিশু উদ্‌বিগ্ন হতে নিষেধ করেছিলেন? আমাদের কি খাদ্য ও বস্ত্রের প্রয়োজন নেই? অবশ্যই প্রয়োজন আছে! আর এগুলো লাভ করার জন্য আমাদের কাছে যদি যথেষ্ট টাকা না থাকে, তা হলে উদ্‌বিগ্ন হওয়া স্বাভাবিক। যিশু তা জানতেন। তিনি জানতেন, লোকেদের কী প্রয়োজন। আর তিনি জানতেন, এই “শেষ কালে” তাঁর শিষ্যদের অত্যন্ত কঠিন পরিস্থিতিতে বাস করতে হবে। (২ তীম. ৩:১) আসলে, বর্তমানে অনেক লোক চাকরি খুঁজে পায় না আর জিনিসপত্রের দাম দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ ছাড়া, অনেক জায়গায়, লোকেরা খুব দরিদ্র আর তাদের খাবারের অভাব রয়েছে। তবে যিশু এটাও জানতেন, খাদ্য ও বস্ত্র থেকে একজন ব্যক্তির জীবন আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

১০. যিশু তাঁর অনুসারীদের প্রার্থনা করতে শিক্ষা দেওয়ার সময়, কোন বিষয়টা তাদের জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হওয়া উচিত, সেই সম্বন্ধে কী বলেছিলেন?

১০ এর আগে, যিশু তাঁর শিষ্যদের শিক্ষা দিয়েছিলেন, তাদের স্বর্গীয় পিতার কাছে প্রার্থনা করার সময় তাদের প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো যাচ্ঞা করা উচিত। তারা এভাবে প্রার্থনা করতে পারতেন: “আমাদের প্রয়োজনীয় খাদ্য আজ আমাদিগকে দেও।” (মথি ৬:১১) আরেক বার যিশু তাদের এভাবে প্রার্থনা করতে বলেছিলেন: “আমাদের প্রয়োজনীয় খাদ্য প্রতিদিন আমাদিগকে দেও।” (লূক ১১:৩) কিন্তু এর অর্থ এই নয়, প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো লাভ করার জন্য আমাদের অনবরত চিন্তা করতে হবে। আসলে, যিশু তাঁর অনুসারীদের শিক্ষা দিয়েছিলেন, তাদের প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো নিয়ে প্রার্থনা করার চেয়ে বরং ঈশ্বরের রাজ্য আসার বিষয়ে প্রার্থনা করা আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। (মথি ৬:১০; লূক ১১:২) শিষ্যরা যাতে উদ্‌বিগ্ন না হন, সেইজন্য যিশু তাদের এটা স্মরণ করিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে সান্ত্বনা দিয়েছিলেন যে, কীভাবে যিহোবা তাঁর সমস্ত সৃষ্টির যত্ন নেন।

১১, ১২. যিহোবা আকাশের পাখিদের যেভাবে যত্ন নিয়ে থাকেন, তা থেকে আমরা কী শিখি? (শুরুতে দেওয়া ছবিটা দেখুন।)

১১ মথি ৬:২৬ পদ পড়ুন। আমাদের “আকাশের পক্ষীদের প্রতি দৃষ্টিপাত” করা উচিত। যদিও পাখি আকারে অনেক ছোটো, কিন্তু তারা অনেক খাবার খায়। আসলে, একটা পাখি যদি একজন মানুষের সমান হতো, তা হলে এটা একজন মানুষের চেয়ে বেশি খাবার খেত। পাখিরা ফলমূল, শস্য, পোকামাকড় ও কেঁচো-জাতীয় প্রাণী খায়। কিন্তু তাদের বীজ বপন করে নিজেদের জন্য খাবার উৎপাদন করতে হয় না। যিহোবা তাদের প্রয়োজনীয় সমস্ত কিছু জুগিয়ে দেন। (গীত. ১৪৭:৯) তবে, তিনি তাদের মুখে খাবার তুলে দেন না! তাদের জন্য প্রচুর খাবার রয়েছে আর তাদেরকে সেই খাবার খুঁজে বের করতে হয়।

১২ যিশু নিশ্চিত ছিলেন, তাঁর পিতা যদি পাখিদের যত্ন নিতে পারেন, তা হলে তিনি মানুষেরও যত্ন নেবেন।[১] (১ পিতর ৫:৬, ৭) তবে এটা ঠিক, পাখিরা যেমন অলস নয়, তেমনই আমাদেরও অলস হওয়া উচিত নয়। আমাদেরকে হয় খাদ্য উৎপাদন করতে হবে নতুবা তা কেনার জন্য অর্থ উপার্জন করতে হবে। যিহোবা আমাদের প্রচেষ্টায় আশীর্বাদ করতে পারেন। আর আমাদের কাছে যখন যথেষ্ট টাকা কিংবা খাদ্য থাকে না, তখনও যিহোবা আমাদের প্রয়োজনীয় বিষয় জুগিয়ে দিতে পারেন। উদাহরণ স্বরূপ, অন্যেরা হয়তো তাদের যা আছে, তা আমাদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে পারে। এ ছাড়া, যিহোবা পাখিদের থাকার জায়গা জুগিয়ে দেন। তিনি পাখিদের বাসা তৈরি করার ক্ষমতা দিয়েছেন এবং যে-সমস্ত উপকরণ দিয়ে এই বাসা তৈরি করতে হয়, সেগুলোও দিয়েছেন। একইভাবে, যিহোবা আমাদের পরিবারের জন্য উপযুক্ত থাকার জায়গা খুঁজে পেতে আমাদের সাহায্য করতে পারেন।

১৩. আমরা যে আকাশের পাখিদের চেয়েও শ্রেষ্ঠ, সেটার কোন প্রমাণ রয়েছে?

১৩ যিহোবা পাখিদের খাবার জুগিয়ে থাকেন, এই বিষয়টা শিষ্যদের স্মরণ করিয়ে দেওয়ার পর, যিশু তাদের জিজ্ঞেস করেছিলেন: “তোমরা কি তাহাদের হইতে অধিক শ্রেষ্ঠ নও?” (তুলনা করুন, লূক ১২:৬, ৭.) এই বিষয়ে বলার সময়ে, যিশুর মনে সম্ভবত এই চিন্তা ছিল, খুব শীঘ্রই তিনি সকল মানুষের জন্য নিজের জীবন দান করবেন। হ্যাঁ, যিশু পাখিদের জন্য কিংবা অন্য কোনো প্রাণীর জন্য জীবন দেননি। তিনি আমাদের জন্য জীবন দিয়েছেন, যাতে আমরা চিরকাল বেঁচে থাকতে পারি।—মথি ২০:২৮.

১৪. একজন উদ্‌বিগ্ন ব্যক্তি কখনো কী করতে পারেন না?

১৪ মথি ৬:২৭ পদ পড়ুন। যিশু যখন বলেছিলেন, উদ্‌বিগ্ন হয়ে আমরা আমাদের বয়স এক হস্তমাত্র বৃদ্ধি করতে পারি না, তখন তিনি কী বুঝিয়েছিলেন? তিনি এটা বুঝিয়েছিলেন, আমাদের প্রয়োজনীয় বিষয় নিয়ে উদ্‌বিগ্ন হয়ে আমরা আমাদের জীবনের আয়ু বাড়াতে পারি না। সত্যি বলতে কী, আমরা যদি অতিরিক্ত চাপগ্রস্ত হয়ে পড়ি, তা হলে আমরা অসুস্থ হয়ে পড়তে পারি আর এমনকী আমাদের জীবনও হারাতে পারি।

১৫, ১৬. (ক) যিহোবা যেভাবে ক্ষেত্রের কানুড় পুষ্পের যত্ন নেন, তা থেকে আমরা কী শিখি? (শুরুতে দেওয়া ছবিটা দেখুন।) (খ) আমাদের নিজেদেরকে কোন প্রশ্নগুলো জিজ্ঞেস করতে হবে এবং কেন?

১৫ মথি ৬:২৮-৩০ পদ পড়ুন। আমরা যখন কোনো সুন্দর পোশাক পড়ি, বিশেষভাবে যখন আমরা প্রচারে যাই অথবা সভাতে ও সম্মেলনে যাই, তখন আমরা অনেক আনন্দিত থাকি। কিন্তু আমাদের কি “বস্ত্রের নিমিত্ত ভাবিত” হওয়ার প্রয়োজন আছে? আবারও যিশু তাঁর শিষ্যদের স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলেন, কীভাবে যিহোবা তাঁর সৃষ্টির যত্ন নেন। যিশু “ক্ষেত্রের কানুড় পুষ্পের” উদাহরণ ব্যবহার করেছিলেন। ‘কানুড় পুষ্প’ বলতে যিশু হয়তো লিলি-জাতীয় সুন্দর সুন্দর ফুলকে বুঝিয়েছিলেন। এই ফুলগুলো নিজেদের জন্য পোশাক তৈরি করে না। কিন্তু এগুলো এতই সুন্দর যে, যিশু বলেছিলেন, “শলোমনও আপনার সমস্ত প্রতাপে ইহার একটীর ন্যায় সুসজ্জিত ছিলেন না”!

১৬ যিশু এরপর কী বলেছিলেন, সেটা ভেবে দেখুন: “ক্ষেত্রের যে তৃণ . . . তাহা যদি ঈশ্বর এরূপ বিভূষিত করেন, তবে হে অল্প-বিশ্বাসীরা, তোমাদিগকে কি আরও অধিক নিশ্চয় বিভূষিত করিবেন না?” অবশ্যই করবেন! তবে, যিশুর শিষ্যদের আরও বেশি বিশ্বাস থাকা প্রয়োজন ছিল। (মথি ৮:২৬; ১৪:৩১; ১৬:৮; ১৭:২০) তাদের এই আস্থা রাখা প্রয়োজন ছিল, যিহোবা তাদের যত্ন নিতে চান এবং তিনি সত্যিই তা নেবেন। আমাদেরও কি সেই আস্থা রয়েছে? আমরা কি এটা বিশ্বাস করি, যিহোবা আমাদের যত্ন নেবেন?

১৭. কোন বিষয়টা যিহোবার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক নষ্ট করে দিতে পারে?

১৭ মথি ৬:৩১, ৩২ পদ পড়ুন। যারা যিহোবাকে জানে না, তাদের মধ্যে অনেকে আরও বেশি টাকাপয়সা ও বস্তুগত বিষয় লাভ করার উপর তাদের জীবনকে কেন্দ্রীভূত রাখে। কিন্তু আমরাও যদি একই বিষয় করতাম, তা হলে যিহোবার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যেত। আমরা জানি, যিহোবা হলেন আমাদের পিতা আর তিনি আমাদের ভালোবাসেন। আর আমরা নিশ্চিত যে, তিনি যা বলেন আমরা যদি তা করি এবং আমাদের জীবনে তাঁর রাজ্যকে প্রথমে রাখি, তা হলে তিনি আমাদের প্রয়োজনীয় সমস্ত কিছু আর এমনকী এর চেয়েও বেশি কিছু জুগিয়ে দেবেন। আমরা এটাও বুঝতে পারি, যিহোবার সঙ্গে এক উত্তম সম্পর্কই আমাদেরকে প্রকৃত সুখী হতে এবং আমাদের প্রয়োজনীয় “গ্রাসাচ্ছাদন” পেয়ে সন্তুষ্ট থাকতে সাহায্য করে।—১ তীম. ৬:৬-৮.

ঈশ্বরের রাজ্য কি আপনার জীবনে প্রথমে রয়েছে?

১৮. যিহোবা আমাদের ব্যক্তিগত বিষয়ে কী জানেন আর তিনি আমাদের জন্য কী করবেন?

১৮ মথি ৬:৩৩ পদ পড়ুন। আমরা যদি রাজ্যকে আমাদের জীবনে প্রথমে রাখি, তা হলে যিহোবা আমাদের প্রয়োজনীয় সমস্ত কিছু জুগিয়ে দেবেন। এই প্রতিজ্ঞা সম্বন্ধে কেন আমরা নিশ্চিত থাকতে পারি, সেই বিষয়ে যিশু ব্যাখ্যা করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন: “তোমাদের স্বর্গীয় পিতা ত জানেন যে এই সকল দ্রব্যে তোমাদের প্রয়োজন আছে।” যিহোবা এমনকী আপনি জানার আগেই আপনার প্রয়োজনীয় বিষয় সম্বন্ধে জানতে পারেন। (ফিলি. ৪:১৯) আপনার কোন পোশাকটা প্রয়োজন হবে, তা তিনি জানেন। এ ছাড়া, আপনার কোন খাবার প্রয়োজন হবে, সেটাও তিনি জানেন। আর তিনি এটাও জানেন, আপনার ও আপনার পরিবারের জন্য থাকার জায়গা প্রয়োজন। যিহোবা লক্ষ রাখবেন, আপনার সত্যিই যা প্রয়োজন, তা যেন আপনি লাভ করেন।

১৯. ভবিষ্যতে কী হতে পারে, সেটা নিয়ে কেন আমাদের উদ্‌বিগ্ন হওয়া উচিত নয়?

১৯ মথি ৬:৩৪ পদ পড়ুন। যিশু আবারও শিষ্যদের বলেছিলেন: “ভাবিত হইও না।” যিহোবা আমাদের প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় বিষয় জুগিয়ে দেবেন। তাই, ভবিষ্যতে কী হতে পারে, সেই বিষয় নিয়ে আমাদের অতিরিক্ত উদ্‌বিগ্ন হওয়ার প্রয়োজন নেই। আমরা যদি অতিরিক্ত উদ্‌বিগ্ন হই, তা হলে আমরা নিজেদের উপর নির্ভর করা শুরু করতে পারি, যা যিহোবার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক নষ্ট করে দিতে পারে। এর পরিবর্তে, যিহোবার উপর আমাদের পুরোপুরি বিশ্বাস বা নির্ভরতা বজায় রাখতে হবে।—হিতো. ৩:৫, ৬; ফিলি. ৪:৬, ৭.

প্রথমে রাজ্যের বিষয়ে চেষ্টা করুন, তা হলে যিহোবা আপনার যত্ন নেবেন

এক দপতি তাদের বাজেট পরীক্ষা করছন

রাজ্যের বিষয়ে আরও বেশি মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করার জন্য আপনি কি নিজের জীবনকে সাদাসিধে করতে পারেন? (২০ অনুচ্ছেদ দেখুন)

২০. (ক) যিহোবার সেবায় আপনি কোন লক্ষ্যস্থাপন করতে পারেন? (খ) আপনার জীবনকে সাদাসিধে করার জন্য আপনি কী করতে পারেন?

২০ আরও বেশি বস্তুগত বিষয় লাভ করার চেষ্টা করতে গিয়ে আমাদের যদি যিহোবাকে সেবা করার জন্য যথেষ্ট শক্তি না থাকে, তা হলে সেটা কত দুঃখজনকই-না হবে! এর পরিবর্তে, যিহোবাকে আমাদের সর্বোত্তমটা দিতে হবে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, আপনি কি এমন একটা মণ্ডলীতে সাহায্য করার জন্য যেতে পারেন, যেখানে আরও বেশি প্রকাশক প্রয়োজন? আপনি কি অগ্রগামী সেবা করতে পারেন? কিংবা আপনি যদি ইতিমধ্যে একজন অগ্রগামী হয়ে থাকেন, তা হলে আপনি কি রাজ্যের সুসমাচার প্রচারকদের জন্য স্কুল-এ যোগ দেওয়ার ব্যাপারে চিন্তা করেছেন? আপনি কি সপ্তাহের কয়েকটা দিন বেথেলে অথবা অনুবাদ অফিসে সাহায্য করার জন্য সময় দিতে পারেন? এ ছাড়া, আপনি হয়তো স্থানীয় নকশা/নির্মাণ স্বেচ্ছাসেবক হতে পারেন এবং কিংডম হল নির্মাণে সাহায্য করার জন্য আপনার কিছুটা সময় ব্যয় করতে পারেন। আপনার জীবনকে আরও সাদাসিধে করার জন্য আপনি কী করতে পারেন, তা নিয়ে চিন্তা করুন, যাতে আপনি রাজ্যের কাজে আরও বেশি সময় ও শক্তি দিতে পারেন। এই বিষয়ে “যেভাবে আপনার জীবন সাদাসিধে করা যায়” শিরোনামের বাক্সে কিছু পরামর্শ তুলে ধরা হয়েছে। আপনার কী করা প্রয়োজন, সেই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য যিহোবার কাছে সাহায্য চেয়ে প্রার্থনা করুন। এরপর প্রয়োজনীয় রদবদল করতে শুরু করুন।

একজন ভাই তার কর্মকর্তার সগ কথা বলছন; এক দপতি জনসাধারণ্যে সাক্ষ্যদান করছন এবং রাজ্যের সুসমাচার পচারকদের জন্য স্কুল-এ যোগ দিয়েছন

২১. কী আপনাকে যিহোবার নিকটবর্তী হতে সাহায্য করবে?

২১ যিশু আমাদের শিক্ষা দিয়েছিলেন, যেন আমরা প্রথমে রাজ্যের বিষয়ে চেষ্টা করি। আমরা যখন তা করি, তখন আমরা আমাদের প্রয়োজনীয় বিষয় নিয়ে উদ্‌বিগ্ন হওয়া এড়িয়ে চলতে পারি। আমরা যিহোবার আরও নিকটবর্তী হই কারণ আমরা এই নির্ভরতা বজায় রাখি, তিনি আমাদের যত্ন নেবেন। আমরা নিজেদের নিয়ন্ত্রণ করতে শিখি এবং আমাদের সামর্থ্য থাকলেও এমন সমস্ত কিছু কেনার চেষ্টা করি না, যেগুলো আমরা চাই অথবা এই জগৎ আমাদেরকে কেনার জন্য প্ররোচিত করে। আমরা যদি এখন আমাদের জীবনকে সাদাসিধে রাখি, তা হলে সেটা আমাদেরকে যিহোবার প্রতি বিশ্বস্ত থাকতে এবং “প্রকৃতরূপে জীবন . . . ধরিয়া রাখিতে” সাহায্য করবে, যে-জীবন সম্বন্ধে তিনি আমাদের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছেন।—১ তীম. ৬:১৯.

^ [১] (১২ অনুচ্ছেদ) যিহোবার কোনো কোনো দাসের কাছে কখনো কখনো যথেষ্ট খাবার থাকে না। যিহোবা কেন এমনটা ঘটতে দিতে পারেন, তা বোঝার জন্য ২০১৪ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর প্রহরীদুর্গ পত্রিকার ২২ পৃষ্ঠায় দেওয়া “পাঠক-পাঠিকাদের থেকে প্রশ্নসকল” শিরোনামের প্রবন্ধ দেখুন।

যেভাবে আপনার জীবন সাদাসিধে করা যায়

  1. আপনার প্রয়োজনীয় বিষয়ের একটা তালিকা তৈরি করুন

  2. আপনার সত্যিই প্রয়োজন নেই এমন বিষয়গুলোর পিছনে টাকা খরচ করবেন না

  3. প্রতি সপ্তাহে অথবা মাসে আপনার যা যা কেনা প্রয়োজন এবং সেগুলো কেনার জন্য আপনার কত টাকা খরচ করার সামর্থ্য রয়েছে, তা নির্ধারণ করুনa

  4. আপনি ব্যবহার করেন না এমন জিনিসপত্র বিক্রি করুন, অন্যদের দিয়ে দিন অথবা ফেলে দিন

  5. যত দ্রুত সম্ভব আপনার ঋণ পরিশোধ করুন

  6. চাকরির পিছনে আপনি যে-সময় দেন, তা কীভাবে কমানো যায়, সেই বিষয়ে চিন্তা করুন

  7. আপনি কীভাবে পরিচর্যা বৃদ্ধি করতে পারেন, সেই বিষয়ে পরিকল্পনা করুন

a ২০১০ সালের জুলাই মাসের সচেতন থাক! (ইংরেজি) পত্রিকার ৮ পৃষ্ঠায় দেওয়া “যেভাবে একটা বাজেট তৈরি করা যায়” শিরোনামের বাক্স দেখুন।

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৫)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার