ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w৯৮ ১১/১৫ পৃষ্ঠা ১৫-২০
  • ঈশ্বরের সঙ্গে গমনাগমন—অনন্তকালের প্রতি দৃষ্টি রেখে

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • ঈশ্বরের সঙ্গে গমনাগমন—অনন্তকালের প্রতি দৃষ্টি রেখে
  • ১৯৯৮ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • যিহোবা তাঁর নিরূপিত সময়ে কাজ করেন
  • অক্লান্ত উদ্যোগে সেবা করা
  • আমাদের উদ্দেশ্যগুলি পরীক্ষা করা
  • অনন্তকালের জন্য পরিকল্পনা!
  • অনন্ত জীবনের প্রতি দৃষ্টি রেখে সেবা করা
  • অনন্তকালীন রাজার প্রশংসা করুন!
    ১৯৯৬ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • “তোমরা যাঃ এর প্রশংসা কর!”
    ১৯৯৬ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • “জাগিয়া থাক”
    ২০০০ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • আপনি কি ঈশ্বরের সঙ্গে গমনাগমন করবেন?
    ২০০৫ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
আরও দেখুন
১৯৯৮ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w৯৮ ১১/১৫ পৃষ্ঠা ১৫-২০

ঈশ্বরের সঙ্গে গমনাগমন—অনন্তকালের প্রতি দৃষ্টি রেখে

“আমরা যুগে যুগে চিরকাল আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর নামে চলিব।”—মীখা ৪:৫.

১. কেন যিহোবাকে “অনন্তকালীন রাজা” বলে অভিহিত করা যায়?

যিহোবা ঈশ্বরের কোন শুরু ছিল না। উপযুক্তরূপেই তাঁকে “অনেক দিনের বৃদ্ধ” বলে অভিহিত করা হয়েছে কারণ যুগ যুগ ধরে তাঁর অস্তিত্ব রয়েছে। (দানিয়েল ৭:৯, ১৩) এছাড়াও যিহোবা এক অনন্তকালীন ভবিষ্যৎ উপভোগ করবেন। একমাত্র তিনিই “অনন্তকালীন রাজা।” (প্রকাশিত বাক্য ১০:৬; ১৫:৩, NW) তাঁর চোখে, হাজার বছর “যেন গত কল্য, তাহা ত চলিয়া গিয়াছে, আর যেন রাত্রির এক প্রহরমাত্র।”—গীতসংহিতা ৯০:৪.

২. (ক) বাধ্য মানুষের জন্য ঈশ্বরের উদ্দেশ্য কী? (খ) কিসের উপর আমাদের আশা ও পরিকল্পনাগুলিকে কেন্দ্রীভূত করা উচিত?

২ যেহেতু জীবনদাতা অনন্তকালস্থায়ী, তাই প্রথম মানব দম্পতি আদম ও হবার পরমদেশে চিরকাল বেঁচে থাকার আশাকে তিনি বাস্তবায়িত করতে পারতেন। কিন্তু, অবাধ্যতার কারণে আদম অনন্ত জীবনের অধিকার হারিয়েছিল এবং তার বংশধরদের মধ্যে পাপ ও মৃত্যু সঞ্চারিত করেছিল। (রোমীয় ৫:১২) তথাপি, আদমের বিদ্রোহ ঈশ্বরের আদি উদ্দেশ্য ব্যাহত করতে পারেনি। যিহোবার ইচ্ছা এই যে বাধ্য মানুষেরা অনন্তকাল জীবিত থাকবে আর তিনি তাঁর উদ্দেশ্য অবশ্যই পূর্ণ করবেন। (যিশাইয় ৫৫:১১) সুতরাং, এটি কত উপযুক্ত যে আমরা যেন অনন্তকালের প্রতি দৃষ্টি রেখে যিহোবাকে সেবা করার মধ্যে আমাদের আশা ও পরিকল্পনাগুলি কেন্দ্রীভূত করি। ‘ঈশ্বরের দিনের’ আকাঙ্ক্ষা বজায় রাখার সঙ্গে সঙ্গে এই বিষয়টি মনে রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যে ঈশ্বরের সঙ্গে চিরকাল গমনাগমন করাই হল আমাদের লক্ষ্য।—২ পিতর ৩:১২.

যিহোবা তাঁর নিরূপিত সময়ে কাজ করেন

৩. কিভাবে আমরা জানি যে যিহোবার তাঁর উদ্দেশ্যগুলি পরিপূর্ণ করার জন্য একটি “নিরূপিত সময়” আছে?

৩ যারা ঈশ্বরের সঙ্গে গমনাগমন করছেন তাদের মতো, আমরাও তাঁর ইচ্ছা পালন করার জন্য অত্যন্ত আগ্রহী। আমরা জানি, যিহোবা হলেন মহান সময়রক্ষক আর আমাদের এই আস্থা আছে যে তিনি নিরূপিত সময়ে তাঁর উদ্দেশ্যগুলি পরিপূর্ণ করতে কখনও ব্যর্থ হন না। উদাহরণস্বরূপ, “কাল সম্পূর্ণ হইলে ঈশ্বর আপনার নিকট হইতে আপন পুত্রকে প্রেরণ করিলেন।” (গালাতীয় ৪:৪) প্রেরিত যোহন এক নিরূপিত “কাল” সম্বন্ধে বলেছিলেন যখন তার দেখা রূপক ভবিষ্যদ্বাণীমূলক বিষয়গুলি পরিপূর্ণ হবে। (প্রকাশিত বাক্য ১:১-৩) “মৃত লোকদের বিচার করিবার [নিরূপিত] সময়” আছে। (প্রকাশিত বাক্য ১১:১৮) ১,৯০০ বছরেরও আগে প্রেরিত পৌল এই কথা বলার জন্য অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন যে ঈশ্বর “একটী দিন স্থির করিয়াছেন, যে দিনে . . . ন্যায়ে জগৎসংসারের বিচার করিবেন।”—প্রেরিত ১৭:৩১.

৪. কিভাবে আমরা জানি যে যিহোবা এই দুষ্ট বিধিব্যবস্থা ধ্বংস করতে চান?

৪ যিহোবা এই দুষ্ট বিধিব্যবস্থা ধ্বংস করবেন কারণ আজকের জগতে তাঁর নাম নিন্দিত হচ্ছে। দুষ্টদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। (গীতসংহিতা ৯২:৭) তাদের কথা ও কাজের দ্বারা তারা ঈশ্বরকে অপমান করে আর তাঁর দাসেদের গালিগালাজ ও তাড়না করা হচ্ছে তা দেখা তাঁকে যন্ত্রণা দেয়। (সখরিয় ২:৮) এতে আশ্চর্য হওয়ার কিছুই নেই যে যিহোবা শয়তানের সম্পূর্ণ সংগঠনকে শীঘ্রই ধ্বংস করবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন! আর তা ঠিক কখন হবে সেটিও ঈশ্বর স্থির করেছেন এবং বাইবেলের ভবিষ্যদ্বাণীগুলির পরিপূর্ণতা পরিষ্কার করে দেয় যে আমরা এখন ‘শেষকালে’ বাস করছি। (দানিয়েল ১২:৪) যারা তাঁকে ভালবাসেন তাদের মঙ্গলের জন্য তিনি শীঘ্রই সক্রিয় হবেন।

৫. লোট ও হবক্‌কূক তাদের চারিদিকের পরিস্থিতিকে কোন্‌ দৃষ্টিতে দেখেছিলেন?

৫ যিহোবার অতীতের দাসেরা দুষ্ট বিধিব্যবস্থার ধ্বংস দেখার জন্য আকাঙ্ক্ষা করেছিলেন। ধার্মিক লোট “ধর্ম্মহীনদের স্বৈরাচারে ক্লিষ্ট হইতেন।” (২ পিতর ২:৭) ভাববাদী হবক্‌কূক তার চারিদিকের পরিস্থিতি দেখে দুঃখিত হয়ে মিনতি করেছিলেন: “হে সদাপ্রভু, কত কাল আমি আর্ত্তনাদ করিব, আর তুমি শুনিবে না? আমি দৌরাত্ম্যের বিষয়ে তোমার কাছে কাঁদিতেছি, আর তুমি নিস্তার করিতেছ না। তুমি কেন আমাকে অধর্ম্ম দেখাইতেছ, কেন দুষ্কার্য্যের প্রতি দৃষ্টিপাত করিতেছ? লুটপাট ও দৌরাত্ম্য আমার সম্মুখে হইতেছে, বিরোধ উপস্থিত, বিসংবাদ বাড়িয়া উঠিতেছে।”—হবক্‌কূক ১:২, ৩.

৬. হবক্‌কূকের প্রার্থনার উত্তরে যিহোবা কী বলেছিলেন এবং আমরা এর থেকে কী জানতে পারি?

৬ যিহোবা হবক্‌কূককে এই কথার মাধ্যমে আংশিকভাবে উত্তর দিয়েছিলেন: “এই দর্শন এখনও নিরূপিত কালের নিমিত্ত, ও তাহা পরিনামের আকাঙ্ক্ষা করিতেছে, আর মিথ্যা হইবে না; তাহার বিলম্ব হইলেও তাহার অপেক্ষা কর, কেননা তাহা অবশ্য উপস্থিত হইবে, যথাকালে বিলম্ব করিবে না।” (হবক্‌কূক ২:৩) এভাবেই ঈশ্বর জানিয়েছিলেন যে তিনি ‘নিরূপিত কালে’ সক্রিয় হবেন। বিলম্ব হচ্ছে বলে মনে হলেও যিহোবা তাঁর উদ্দেশ্য পূর্ণ করবেনই করবেন!—২ পিতর ৩:৯.

অক্লান্ত উদ্যোগে সেবা করা

৭. যীশু যদিও জানতেন না ঠিক কখন যিহোবার দিন আসবে, তবুও কিভাবে তিনি তাঁর কাজ করে চলেছিলেন?

৭ ঈশ্বরের সঙ্গে উদ্যোগ সহকারে গমনাগমন করতে, যিহোবা ঠিক কখন সক্রিয় হবেন তা জানা কি আমাদের জন্য আবশ্যক? অব্যশই না। কয়েকটি উদাহরণ বিবেচনা করুন। স্বর্গের মতো কখন পৃথিবীতেও ঈশ্বরের ইচ্ছা পূর্ণ হবে সেই সময়ের প্রতি যীশুর অত্যন্ত আগ্রহ ছিল। তাই, খ্রীষ্ট তাঁর অনুগামীদের প্রার্থনা করতে শিখিয়েছিলেন: “হে আমাদের স্বর্গস্থ পিতঃ তোমার নাম পবিত্র বলিয়া মান্য হউক, তোমার রাজ্য আইসুক, তোমার ইচ্ছা সিদ্ধ হউক, যেমন স্বর্গে তেমনি পৃথিবীতেও হউক।” (মথি ৬:৯, ১০) যীশু যদিও জানতেন যে এই অনুরোধের উত্তর পাওয়া যাবে কিন্তু তিনি যথার্থ সময়টি জানতেন না। এই বিধিব্যবস্থার ধ্বংস সম্বন্ধে তাঁর মহান ভবিষ্যদ্বাণীতে, তিনি বলেছিলেন: “সেই দিনের ও সেই দণ্ডের তত্ত্ব কেহই জানে না, স্বর্গে দূতগণও জানেন না, পুত্ত্রও জানেন না, কেবল পিতা জানেন।” (মথি ২৪:৩৬) যেহেতু ঈশ্বরের উদ্দেশ্যগুলি সম্পাদনে যীশু খ্রীষ্টই হলেন মুখ্য চরিত্র, তাই তিনি তাঁর স্বর্গীয় পিতার শত্রুদের বিচারে সরাসরি অংশ নেবেন। কিন্তু, পৃথিবীতে থাকাকালে যীশু এমনকি জানতেনও না ঠিক কখন ঈশ্বর সক্রিয় হবেন। সেই বিষয়টি কি তাঁকে যিহোবার সেবায় কম উদ্যোগী করেছিল? অবশ্যই নয়! যীশু উদ্যোগের সঙ্গে মন্দির পরিষ্কার করছেন দেখে, “তাঁহার শিষ্যগণের মনে পড়িল যে, লেখা আছে, ‘তোমার গৃহনিমিত্তক উদ্যোগ আমাকে গ্রাস করিবে।’” (যোহন ২:১৭; গীতসংহিতা ৬৯:৯) যীশুকে যে কাজের জন্য পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছিল তা সম্পাদনে তিনি নিজে সম্পূর্ণরূপে রত ছিলেন আর তা তিনি অক্লান্ত উদ্যোগ সহকারে করেছিলেন। এছাড়াও তিনি অনন্তকালের প্রতি দৃষ্টি রেখে ঈশ্বরের সেবা করেছিলেন।

৮, ৯. শিষ্যরা যখন রাজ্য ফিরিয়ে আনার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, তখন তাদের কী বলা হয়েছিল এবং কিভাবে তারা প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিলেন?

৮ খ্রীষ্টের শিষ্যদের ক্ষেত্রেও এই বিষয়টি প্রযোজ্য ছিল। যীশু স্বর্গারোহণের ঠিক আগে তাদের সঙ্গে মিলিত হয়েছিলেন। বিবরণটি জানায়: “তাঁহারা একত্র হইয়া তাঁহাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, প্রভু, আপনি কি এই সময়ে ইস্রায়েলের হাতে রাজ্য ফিরাইয়া আনিবেন?” তাদের প্রভুর মতো, তারাও রাজ্যের আগমনের বিষয়ে অত্যন্ত আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু, যীশু উত্তর দিয়েছিলেন: “যে সকল সময় কি কাল পিতা নিজ কর্ত্তৃত্বের অধীন রাখিয়াছেন, তাহা তোমাদের জানিবার বিষয় নয়। কিন্তু পবিত্র আত্মা তোমাদের উপরে আসিলে তোমরা শক্তি প্রাপ্ত হইবে; আর তোমরা যিরূশালেমে, সমুদয় যিহূদীয়া ও শমরিয়া দেশে, এবং পৃথিবীর প্রান্ত পর্য্যন্ত আমার সাক্ষী হইবে।”—প্রেরিত ১:৬-৮.

৯ শিষ্যরা এই উত্তরে নিরুৎসাহিত হয়েছিলেন বলে কোন উল্লেখ কোথাও নেই। পরিবর্তে, তারা উদ্যোগ সহকারে প্রচার কাজে রত হয়েছিলেন। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে, তারা সম্পূর্ণ যিরূশালেমে তাদের শিক্ষা ছড়িয়ে দিয়েছিলেন। (প্রেরিত ৫:২৮) আর ৩০ বছরের মধ্যে, তারা এতটা ব্যাপকভাবে প্রচার করেছিলেন যে পৌল বলতে পেরেছিলেন, সুসমাচার “আকাশমণ্ডলের অধঃস্থিত সমস্ত সৃষ্টির কাছে” প্রচারিত হয়েছিল। (কলসীয় ১:২৩) যদিও শিষ্যদের আশানুযায়ী রাজ্য ‘ইস্রায়েলের হাতে ফিরে আসেনি’ এবং তাদের জীবনকালে স্বর্গে প্রতিষ্ঠিতও হয়নি, তবুও তারা অনন্তকালের প্রতি দৃষ্টি রেখে উদ্যোগ সহকারে যিহোবার সেবা করে গিয়েছিলেন।

আমাদের উদ্দেশ্যগুলি পরীক্ষা করা

১০. ঈশ্বর কখন শয়তানের ব্যবস্থাকে ধ্বংস করবেন তা না জানা আমাদের কী প্রমাণ করার সুযোগ দেয়?

১০ যিহোবার আধুনিক দিনের দাসেরাও এই মন্দ বিধিব্যবস্থার ধ্বংস দেখার জন্য আকাঙ্ক্ষা করেন। তথাপি, ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞাত নতুন জগতে উদ্ধার পাওয়াই আমাদের প্রধান আগ্রহের বিষয় নয়। আমরা যিহোবার নামের পবিত্রীকরণ এবং তাঁর সার্বভৌমত্বের প্রতিষ্ঠা দেখতে চাই। এই কারণে, আমরা আনন্দিত হতে পারি যে যিহোবা শয়তানের ব্যবস্থা ধ্বংস করার জন্য নিরূপিত “সময় কি কাল” আমাদের জানাননি। আমাদের ক্ষণস্থায়ী, স্বার্থপর লক্ষ্যগুলির কারণে নয় কিন্তু ঈশ্বরকে ভালবাসি বলে তাঁর সঙ্গে অনন্তকাল গমনাগমন করার জন্য আমরা দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ তা প্রমাণ করার সুযোগে এটি আমাদের দেয়।

১১, ১২. কিভাবে ইয়োবের আনুগত্যতা অভিযোগের সম্মুখীন হয়েছিল এবং কিভাবে সেই অভিযোগের সঙ্গে আমরা জড়িত?

১১ এছাড়াও ঈশ্বরের প্রতি আমাদের আনুগত্য বজায় রাখা, ধার্মিক ইয়োব ও তার মতো মানুষেরা স্বার্থের কারণে ঈশ্বরের সেবা করেন বলে শয়তান যে অভিযোগ করেছিল, সেটিকে ভুল প্রমাণ করতে সাহায্য করে। যিহোবা তাঁর দাস ইয়োবকে সিদ্ধ, সরল ও ঈশ্বরভয়শীল বলার পর, শয়তান অন্যায়ভাবে অভিযোগ করেছিল: “ইয়োব কি বিনা লাভে ঈশ্বরকে ভয় করে? তুমি তাহার চারিদিকে, তাহার বাটীর চারিদিকে ও তাহার সর্ব্বস্বের চারিদিকে কি বেড়া দেও নাই? তুমি তাহার হস্তের কার্য্য আশীর্ব্বাদযুক্ত করিয়াছ, এবং তাহার পশুধন দেশময় ব্যাপিয়াছে। কিন্তু তুমি একবার হস্ত বিস্তার করিয়া তাহার সর্ব্বস্ব স্পর্শ কর, তবে সে অবশ্য তোমার সম্মুখেই তোমাকে জলাঞ্জলি দিবে।” (ইয়োব ১:৮-১১) ইয়োব পরীক্ষার মধ্যেও তার আনুগত্য বজায় রেখে এই বিদ্বেষপূর্ণ দাবিকে মিথ্যা প্রমাণ করেছিলেন।

১২ একইভাবে আনুগত্য বজায় রাখার মাধ্যমে, আমরাও শয়তানের প্রতিটি অভিযোগকে ভুল প্রমাণ করতে পারি যে আমরা কেবল পুরস্কার আসন্ন তা জেনে ঈশ্বরের সেবা করি না। দুষ্টদের প্রতি ঈশ্বর ঠিক কখন প্রতিশোধ নেবেন তা না জানা আমাদের এই বিষয়টি প্রমাণ করার সুযোগ দেয় যে আমরা সত্যই যিহোবাকে ভালবাসি ও চিরকাল তাঁর পথে চলতে চাই। এটি দেখায়, আমরা ঈশ্বরের প্রতি নিষ্ঠাবান এবং তিনি যেভাবে বিভিন্ন বিষয় পরিচালনা করেন তার উপর আমাদের আস্থা আছে। এছাড়াও, সময় কি কাল না জানা আমাদের সতর্ক ও আধ্যাত্মিকভাবে সজাগ থাকতে সাহায্য করে কারণ আমরা জানি ধ্বংস, রাতে যেমন চোর আসে তেমনি যে কোন মুহূর্তে আসতে পারে। (মথি ২৪:৪২-৪৪) প্রতিদিন যিহোবার সঙ্গে গমনাগমন করার মাধ্যমে, আমরা তাঁর হৃদয়কে আনন্দিত এবং দিয়াবলকে উত্তর দিতে পারি, যে তাঁকে টিটকারি দেয়।—হিতোপদেশ ২৭:১১.

অনন্তকালের জন্য পরিকল্পনা!

১৩. ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে পরিকল্পনা করার বিষয়ে বাইবেল কী উল্লেখ করে?

১৩ যারা ঈশ্বরের সঙ্গে গমনাগমন করেন তারা জানেন যে ভবিষ্যতের জন্য যুক্তিসংগত পরিকল্পনা করা বিজ্ঞতার কাজ। বৃদ্ধ বয়সের সমস্যা ও সীমাবদ্ধতাগুলি জানার ফলে অনেক ব্যক্তি তাদের যুবক বয়স এবং শক্তির সদ্ব্যবহার করার চেষ্টা করেন যাতে বৃদ্ধ অবস্থায় তাদের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা থাকে। সুতরাং, এর চেয়ে আরও অধিক গুরুত্বপূর্ণ আমাদের আধ্যাত্মিক ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে কী বলা যায়? হিতোপদেশ ২১:৫ পদ বলে: “পরিশ্রমীর চিন্তা হইতে কেবল ধনলাভ হয়, কিন্তু যে কেহ হঠকারী, তাহার কেবল অভাব ঘটে।” অনন্তকালের প্রতি দৃষ্টি রেখে আগে থেকে পরিকল্পনা করা সত্যই লাভজনক। যেহেতু আমরা যথাযথভাবে জানি না ঠিক কখন এই ব্যবস্থা ধ্বংস হবে, তাই আমাদের ভবিষ্যৎ চাহিদাগুলি সম্বন্ধে কিছুটা চিন্তা করা দরকার। তবে আসুন আমরা ভারসাম্য বজায় রাখি এবং জীবনে ঐশিক আগ্রহগুলিকে প্রথম স্থান দিই। যে লোকেদের বিশ্বাসের অভাব আছে তারা হয়তো এই সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেন, একজনের সমস্ত মনোযোগ ঈশ্বরের ইচ্ছা পালনের উপর কেন্দ্রীভূত করা হবে অদূরদর্শিতা। কিন্তু তাই কি?

১৪, ১৫. (ক) ভবিষ্যতের পরিকল্পনা সম্বন্ধে যীশু কোন্‌ দৃষ্টান্তটি বলেছিলেন? (খ) কেন যীশুর দৃষ্টান্তের ধনী ব্যক্তিটি অদূরদর্শী ছিলেন?

১৪ যীশু একটি দৃষ্টান্ত বলেছিলেন যা এই বিষয়ে আলোকপাত করে। তিনি বলেছিলেন: “এক জন ধনবানের ভূমিতে প্রচুর শস্য উৎপন্ন হইয়াছিল। তাহাতে সে মনে মনে বিবেচনা করিতে লাগিল, কি করি? আমার শস্য রাখিবার ত স্থান নাই। পরে কহিল, এইরূপ করিব, আমার গোলাঘর সকল ভাঙ্গিয়া বড় বড় গোলাঘর নির্ম্মাণ করিব, এবং তাহার মধ্যে আমার সমস্ত শস্য ও আমার দ্রব্য রাখিব। আর আপন প্রাণকে বলিব, প্রাণ, বহুবৎসরের নিমিত্ত তোমার জন্য অনেক দ্রব্য সঞ্চিত আছে; বিশ্রাম কর, ভোজন পান কর, আমোদ প্রমোদ কর। কিন্তু ঈশ্বর তাহাকে কহিলেন, হে নির্ব্বোধ, অদ্য রাত্রিতেই তোমার প্রাণ তোমা হইতে দাবি করিয়া লওয়া যাইবে, তবে তুমি এই যে আয়োজন করিলে, এ সকল কাহার হইবে? যে কেহ আপনার জন্য ধন সঞ্চয় করে, এবং ঈশ্বরের উদ্দেশে ধনবান্‌ নয়, সে এইরূপ।”—লূক ১২:১৬-২১.

১৫ যীশু কি এই যুক্তি প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিলেন যে ভবিষ্যতের বস্তুগত নিরাপত্তার জন্য ধনী ব্যক্তির কঠোর পরিশ্রম করা উচিত হয়নি? না, কারণ শাস্ত্র কঠোর পরিশ্রমকে উৎসাহিত করে। (২ থিষলনীকীয় ৩:১০) ধনী ব্যক্তির ভুল ছিল যে তিনি “ঈশ্বরের উদ্দেশে ধনবান্‌” হওয়ার প্রয়োজনীয় বিষয়গুলি করেননি। যদিও তিনি বহু বছর ধরে তার বস্তুগত সম্পদ ভোগ করতে পারতেন, তবুও এক দিন না এক দিন তাকে মরতেই হতো। তিনি অদূরদর্শী ছিলেন, অনন্তকাল সম্বন্ধে চিন্তা করেননি।

১৬. এক নিরাপদ ভবিষ্যতের জন্য কেন আমরা যিহোবার উপর সম্পূর্ণ নির্ভর করতে পারি?

১৬ অনন্তকালের প্রতি দৃষ্টি রেখে যিহোবার সঙ্গে গমনাগমন করা ব্যবহারিক এবং দূরদর্শী। ভবিষ্যতের জন্য পরিকল্পনা করার এটিই সর্বোত্তম পদ্ধতি। শিক্ষা, চাকরি ও পারিবারিক দায়িত্বগুলি সম্বন্ধে ব্যবহারিক পরিকল্পনা করা বিজ্ঞতার কাজ হলেও, আমাদের সবসময় মনে রাখা উচিত যে যিহোবা তাঁর নিষ্ঠাবান দাসেদের কখনই পরিত্যাগ করেন না। রাজা দায়ূদ গেয়েছিলেন: “আমি যুবক ছিলাম, এখন বৃদ্ধ হইয়াছি, কিন্তু ধার্ম্মিককে পরিত্যক্ত দেখি নাই, তাহার বংশকে খাদ্য ভিক্ষা করিতে দেখি নাই।” (গীতসংহিতা ৩৭:২৫) যীশুও একইরকম আশ্বাস দিয়েছিলেন যে, যারা প্রথমে রাজ্যের বিষয়ে চেষ্টা করেন এবং যিহোবার ধার্মিক পথে চলেন তাদের সকলের জন্য ঈশ্বর জীবনধারণের প্রয়োজনীয় বস্তু যোগাবেন।—মথি ৬:৩৩.

১৭. কিভাবে আমরা জানি যে ধ্বংস নিকটে?

১৭ যদিও আমরা অনন্তকালের প্রতি দৃষ্টি রেখে ঈশ্বরের সেবা করি, তবুও আমরা সর্বদাই যিহোবার দিনের আকাঙ্ক্ষা করে চলি। বাইবেলের ভবিষ্যদ্বাণীর পরিপূর্ণতা সেই দিন যে নিকটে তা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণ করে। যুদ্ধ, মহামারী, ভূমিকম্প, দুর্ভিক্ষ আর সেইসঙ্গে সত্য খ্রীষ্টানদের তাড়না ও বিশ্বব্যাপী ঈশ্বরের রাজ্যের সুসমাচার প্রচার এই শতাব্দীকে স্বতন্ত্র করেছে। এই সমস্তকিছু দুষ্ট বিধিব্যবস্থার ধ্বংসের সময়ের বৈশিষ্ট্য। (মথি ২৪:৭-১৪; লূক ২১:১১) জগৎ সেই সমস্ত লোকেদের দ্বারা পূর্ণ যারা “আত্মপ্রিয়, অর্থপ্রিয়, আত্মশ্লাঘী, অভিমানী, ধর্ম্মনিন্দক, পিতামাতার অবাধ্য, অকৃতজ্ঞ, অসাধু, স্নেহরহিত, ক্ষমাহীন, অপবাদক, অজিতেন্দ্রিয়, প্রচণ্ড, সদ্‌বিদ্বেষী, বিশ্বাসঘাতক, দুঃসাহসী, গর্ব্বান্ধ, ঈশ্বরপ্রিয় নয়, বরং বিলাসপ্রিয়।” (২ তীমিথিয় ৩:১-৫) এই সংকটপূর্ণ শেষকালে, যিহোবার দাস হিসাবে জীবনযাপন করা আমাদের জন্য কষ্টকর। আমরা সেই দিনের জন্য কতই না আকাঙ্ক্ষা করি যখন যিহোবার রাজ্য সমস্ত দুষ্টতা দূর করবে! এই অবসরে, আসুন আমরা অনন্তকালের প্রতি দৃষ্টি রেখে ঈশ্বরের সঙ্গে গমনাগমন করার জন্য দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ হই।

অনন্ত জীবনের প্রতি দৃষ্টি রেখে সেবা করা

১৮, ১৯. কী দেখায় যে প্রাচীন কালের বিশ্বস্ত ব্যক্তিরা অনন্তকালের প্রতি দৃষ্টি রেখে ঈশ্বরের সেবা করেছিলেন?

১৮ যিহোবার সঙ্গে গমনাগমন করার সময়, আসুন আমরা হেবল, হনোক, নোহ, অব্রাহাম ও সারার বিশ্বাসের কথা মনে রাখি। তাদের বিষয়ে উল্লেখ করার পর, পৌল লিখেছিলেন: “বিশ্বাসানুরূপে ইহাঁরা সকলে মরিলেন; ইহাঁরা প্রতিজ্ঞাকলাপের ফল প্রাপ্ত হন নাই, কিন্তু দূর হইতে তাহা দেখিতে পাইয়া সাদর সম্ভাষণ করিয়াছিলেন, এবং আপনারা যে পৃথিবীতে বিদেশী ও প্রবাসী, ইহা স্বীকার করিয়াছিলেন।” (ইব্রীয় ১১:১৩) ওই বিশ্বাসী ব্যক্তিরা “আরও উত্তম দেশের, অর্থাৎ স্বর্গীয় দেশের, আকাঙ্ক্ষা” করছিলেন। (ইব্রীয় ১১:১৬) বিশ্বাসে, তারা মশীহ রাজ্যের শাসনাধীন আরও উত্তম দেশের জন্য প্রত্যাশা করেছিলেন। আমরা হয়তো নিশ্চিত হতে পারি যে ঈশ্বর আরও উত্তম দেশে অর্থাৎ রাজ্যের শাসনাধীন পার্থিব পরমদেশে অনন্ত জীবন দিয়ে তাদের পুরস্কৃত করবেন।—ইব্রীয় ১১:৩৯, ৪০.

১৯ ভাববাদী মীখা অনন্তকাল ঈশ্বরের উপাসনা করার জন্য যিহোবার লোকেদের দৃঢ়সংকল্পকে প্রকাশ করেছিলেন। তিনি লিখেছিলেন: “জাতিমাত্র প্রত্যেকে আপন আপন দেবের নামে চলে; আর আমরা যুগে যুগে চিরকাল আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর নামে চলিব।” (মীখা ৪:৫) মীখা তার মৃত্যু পর্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে যিহোবার সেবা করেছিলেন। নতুন জগতে পুনরুত্থিত হওয়ার পর, এই ভাববাদী নিঃসন্দেহে অনন্তকাল ধরে ঈশ্বরের সঙ্গে গমনাগমন করে যাবেন। আমরা যারা শেষকালের গভীরে বাস করছি তাদের জন্য কী এক উত্তম উদাহরণ!

২০. আমাদের দৃঢ়সংকল্প কী হওয়া উচিত?

২০ আমরা যিহোবার নামের প্রতি যে ভালবাসা দেখাই তা তিনি উপলব্ধি করেন। (ইব্রীয় ৬:১০) দিয়াবল শাসিত এই জগতে তাঁর প্রতি আমাদের আনুগত্য বজায় রাখা যে কঠিন তা তিনি জানেন। যদিও “জগৎ . . . বহিয়া যাইতেছে; কিন্তু যে ব্যক্তি ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করে, সে অনন্তকালস্থায়ী।” (১ যোহন ২:১৭; ৫:১৯) অতএব, যিহোবার সাহায্য নিয়ে আসুন আমরা প্রতিদিন যে পরীক্ষাগুলির সম্মুখীন হই তা সহ্য করার জন্য দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ হই। আমাদের প্রেমময় স্বর্গীয় পিতার প্রতিজ্ঞাত চমৎকার আশীর্বাদগুলিতে যেন আমরা আমাদের চিন্তা ও জীবনধারা কেন্দ্রীভূত করি। এই আশীর্বাদগুলি আমরা লাভ করতে পারি যদি আমরা অনন্তকালের প্রতি দৃষ্টি রেখে ঈশ্বরের সঙ্গে গমনাগমন করে চলি।—যিহূদা ২০, ২১.

আপনি কিভাবে উত্তর দেবেন?

◻ বাধ্য মানুষের জন্য ঈশ্বরের উদ্দেশ্য কী?

◻ ভক্তিহীন জগতের ধ্বংস আনার জন্য কেন যিহোবা এখনও সক্রিয় হননি?

◻ ঠিক কখন ঈশ্বর সক্রিয় হবেন তা না জানা কেন আমাদের উদ্যোগকে হ্রাস করবে না?

◻ অনন্তকালের প্রতি দৃষ্টি রেখে ঈশ্বরের সঙ্গে গমনাগমন করার কিছু উপকার কী কী?

[১৭ পৃষ্ঠার চিত্র]

ঈশ্বরের সঙ্গে গমনাগমন করার জন্য আমাদের উদ্যোগ সহকারে তাঁকে সেবা করা প্রয়োজন যেমন খ্রীষ্টের প্রাথমিক শিষ্যেরা করেছিলেন

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৫)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার