ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w১৩ ১০/১৫ পৃষ্ঠা ১২-১৬
  • “ঈশ্বরের দাসত্ব কর”

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • “ঈশ্বরের দাসত্ব কর”
  • ২০১৩ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • ‘আমি আপন প্রভুকে ভালোবাসি’
  • স্বাধীন অথচ দাস
  • এক পরিতৃপ্তিদায়ক কেরিয়ার
  • উচ্চশিক্ষা অথবা সর্বোত্তম শিক্ষা?
  • সর্বোত্তম শিক্ষা থেকে উপকার লাভ করুন
  • দাসের পুরস্কার
  • ‘তোমরা মূল্য দ্বারা ক্রীত হইয়াছ’
    ২০০৫ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • শিক্ষা—তা যিহোবাকে প্রশংসা করতে ব্যবহার করুন
    ১৯৯৬ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উৎসর্গীকরণ এবং মনোনয়নের স্বাধীনতা
    ১৯৯৮ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
২০১৩ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w১৩ ১০/১৫ পৃষ্ঠা ১২-১৬

“ঈশ্বরের দাসত্ব কর”

“যত্নে শিথিল হইও না, . . . প্রভুর [ঈশ্বরের] দাসত্ব কর।”—রোমীয় ১২:১১.

আপনি কী মনে করেন?

  • রোমীয় ১২:১১ পদে যে-ধরনের দাসত্বের বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে, সেটার সঙ্গে কী জড়িত?

  • কীভাবে আমরা শয়তান ও তার জগতের দাস হওয়া এড়াতে পারি?

  • যিহোবা তাঁর দাসদের কোন ধরনের পুরস্কার দিতে চান?

১. দাসত্ব সম্বন্ধে সাধারণ দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে রোমীয় ১২:১১ পদে উৎসাহিত করা হয়েছে এমন দাসত্বের পার্থক্য তুলে ধরুন।

খ্রিস্টীয় দাসত্ব, লোকেরা দাসত্ব সম্বন্ধে যা চিন্তা করে, সেটা থেকে একেবারে আলাদা। তারা যখন একজন দাস সম্বন্ধে চিন্তা করে, তখন তাদের মনে এইরকম চিত্র ভেসে ওঠে যে, নিষ্ঠুরভাবে শাসিত হওয়া, অত্যাচার ভোগ করা এবং অন্যায় আচরণ সহ্য করা। কিন্তু, ঈশ্বরের অনুপ্রাণিত বাক্য এমন এক দাসত্ব সম্বন্ধে বলে, যেটার সঙ্গে স্বেচ্ছায় একজন প্রেমময় প্রভুর সেবা করা জড়িত। বস্তুতপক্ষে, প্রেরিত পৌল যখন প্রথম শতাব্দীর খ্রিস্টানদের ‘ঈশ্বরের দাসত্ব করিবার’ উপদেশ দিয়েছিলেন, তখন তিনি ঈশ্বরের প্রতি প্রেমের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে করা পবিত্র সেবার বিষয়ে উৎসাহিত করছিলেন। (রোমীয় ১২:১১) এই ধরনের দাসত্বের সঙ্গে কী জড়িত? কীভাবে আমরা শয়তান ও তার জগতের দাস হওয়া এড়াতে পারি? আর যিহোবার একজন দাস হিসেবে বিশ্বস্ত সেবার পুরস্কারগুলো কী?

‘আমি আপন প্রভুকে ভালোবাসি’

২. (ক) কী একজন ইস্রায়েলীয় দাসকে তার মুক্ত হওয়ার সুযোগকে স্বেচ্ছায় ত্যাগ করতে প্রণোদিত করত? (খ) স্বেচ্ছায় বাধ্য হতে চাইত এমন একজন দাসের কর্ণ বিদ্ধ করার তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়টা কী?

২ ঈশ্বর ইস্রায়েলকে যে-ব্যবস্থা দিয়েছিলেন, তা থেকে আমরা জানতে পারি যে, যিহোবা আমাদের কাছ থেকে কোন ধরনের দাসত্ব চান। একজন ইব্রীয় দাসকে তার দাসত্বের সপ্তম বছরে মুক্ত করে দেওয়া হতো। (যাত্রা. ২১:২) কিন্তু, যে-দাস তার প্রভুকে সত্যিই ভালোবাসত এবং সেই প্রভুর সেবা করে যেতে চাইত, তার জন্য যিহোবা এক উল্লেখযোগ্য ব্যবস্থা করেছিলেন। প্রভুকে তার দাসকে কপাট কিংবা বাজুর কাছে নিয়ে এসে একটা গুঁজি দিয়ে সেই দাসের কর্ণ বিদ্ধ করতে হতো। (যাত্রা. ২১:৫, ৬) এই বিষয়টা অনেক তাৎপর্যপূর্ণ যে, এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে কর্ণ জড়িত ছিল। একজন ইচ্ছুক দাস ক্রমাগত তার প্রভুকে বাধ্য সেবা প্রদান করতে চাইত। এটা আমাদের উপলব্ধি করতে সাহায্য করে যে, যিহোবার প্রতি আমাদের উৎসর্গীকরণের সঙ্গে কী জড়িত—স্বেচ্ছায় বাধ্য হওয়া, যা ঈশ্বরের প্রতি প্রেমের দ্বারা অনুপ্রাণিত হওয়ার মাধ্যমে আসে।

৩. ঈশ্বরের প্রতি আমাদের উৎসর্গীকরণের ভিত্তি কী?

৩ আমরা যখন নিজেদেরকে খ্রিস্টীয় বাপ্তিস্মের জন্য উপস্থাপন করেছিলাম, তখন ইতিমধ্যেই আমরা যিহোবার সেবা করার, তাঁর দাস হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। যিহোবার প্রতি বাধ্য হওয়ার এবং তাঁর ইচ্ছা পালন করার জন্য আমাদের আকাঙ্ক্ষা ছিল বলেই আমরা উৎসর্গীকরণ করেছিলাম। কেউই আমাদের তা করার জন্য জোর করেনি। বাস্তবিকপক্ষে, এমনকী যে-অল্পবয়সিরা বাপ্তিস্ম নিয়ে থাকে তারা কেবল তাদের বাবা-মাকে খুশি করার জন্য নয়, বরং একমাত্র যিহোবার কাছে ব্যক্তিগতভাবে নিজেদের উৎসর্গ করার পরই বাপ্তিস্ম নিয়ে থাকে। খ্রিস্টীয় উৎসর্গীকরণের ভিত্তি হল আমাদের স্বর্গীয় প্রভু যিহোবার প্রতি প্রেম। “ঈশ্বরের প্রতি প্রেম এই,” প্রেরিত যোহন লিখেছিলেন, “যেন আমরা তাঁহার আজ্ঞা সকল পালন করি।”—১ যোহন ৫:৩.

স্বাধীন অথচ দাস

৪. “ধার্ম্মিকতার দাস” হওয়ার জন্য কীসের প্রয়োজন?

৪ আমরা যিহোবার কাছে কতই-না কৃতজ্ঞ যে, তিনি আমাদের জন্য তাঁর দাস হওয়া সম্ভবপর করেছেন! খ্রিস্টের মুক্তির মূল্যরূপ বলিদানের প্রতি আমাদের বিশ্বাসের কারণে আমরা পাপের জোয়াল থেকে মুক্ত হতে পারি। যদিও এখনও আমরা অসিদ্ধ, তবুও আমরা স্বেচ্ছায় যিহোবা এবং যিশুর কর্তৃত্বের অধীনে এসেছি। এই বিষয়টা পৌল তার একটা অনুপ্রাণিত চিঠিতে স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করেছিলেন: ‘তোমরা আপনাদিগকে পাপের সম্বন্ধে মৃত, কিন্তু খ্রীষ্ট যীশুতে ঈশ্বরের সম্বন্ধে জীবিত বলিয়া গণনা কর।’ এরপর তিনি সাবধান করে দিয়েছিলেন: “তোমরা কি জান না যে, আজ্ঞা পালনার্থে যাহার নিকটে দাসরূপে আপনাদিগকে সমর্পণ কর, যাহার আজ্ঞা মান, তোমরা তাহারই দাস; হয় মৃত্যুজনক পাপের দাস, নয় ধার্ম্মিকতাজনক আজ্ঞাপালনের দাস? কিন্তু ঈশ্বরের ধন্যবাদ হউক যে, তোমরা পাপের দাস ছিলে বটে, পরন্তু শিক্ষার যে আদর্শে সমর্পিত হইয়াছ, অন্তঃকরণের সহিত সেই আদর্শের আজ্ঞাবহ হইয়াছ; এবং পাপ হইতে স্বাধীনীকৃত হইয়া তোমরা ধার্ম্মিকতার দাস হইয়াছ।” (রোমীয় ৬:১১, ১৬-১৮) লক্ষ করুন যে, প্রেরিত ‘অন্তঃকরণের সহিত আজ্ঞাবহ হইবার’ বিষয়ে উল্লেখ করেছেন। সত্যিই, যিহোবার প্রতি আমাদের উৎসর্গীকরণ আমাদেরকে “ধার্ম্মিকতার দাস” করে তোলে।

৫. আমরা সকলে কোন আভ্যন্তরীণ লড়াইয়ের মুখোমুখি হই এবং কেন?

৫ তবে, আমাদের উৎসর্গীকরণের যোগ্যরূপে জীবনযাপন করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন বাধাও কাটিয়ে উঠতে হয়। আমরা দুই ধরনের লড়াইয়ের মুখোমুখি হই। প্রথমটা হল সেই লড়াই, যেটার মুখোমুখি পৌল হয়েছিলেন। “বস্তুতঃ আন্তরিক মানুষের ভাব অনুসারে আমি ঈশ্বরের ব্যবস্থায় আমোদ করি,” তিনি লিখেছিলেন, “কিন্তু আমার অঙ্গপ্রত্যঙ্গে অন্য প্রকার এক ব্যবস্থা দেখিতে পাইতেছি; তাহা আমার মনের ব্যবস্থার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে, এবং পাপের যে ব্যবস্থা আমার অঙ্গপ্রত্যঙ্গে আছে, আমাকে তাহার বন্দি দাস করে।” (রোমীয় ৭:২২, ২৩) উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত অসিদ্ধতা আমাদের মধ্যেও রয়েছে। তাই, আমাদের মাংসিক প্রবণতাগুলোর বিরুদ্ধে আমাদের ক্রমাগত লড়াই করতে হয়। প্রেরিত পিতর আমাদের জোরালো পরামর্শ দিয়েছিলেন: “আপনাদিগকে স্বাধীন জান; আর স্বাধীনতাকে দুষ্টতার আবরণ করিও না, কিন্তু আপনাদিগকে ঈশ্বরের দাস জান।”—১ পিতর ২:১৬.

৬, ৭. কীভাবে শয়তান এই জগৎকে আকর্ষণীয় করে তোলে?

৬ দ্বিতীয় যে-লড়াইয়ের মুখোমুখি আমাদের হতে হয়, তা হল মন্দ আত্মার অধীনস্থ এই জগতের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই। যিহোবা এবং যিশুর প্রতি আমাদের আনুগত্য ভেঙে ফেলার জন্য জগতের শাসক শয়তান তার অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহার করে। আমাদেরকে তার কলুষিত প্রভাবের কাছে নতিস্বীকার করার জন্য প্রলুব্ধ করার মাধ্যমে সে আমাদের দাসত্বে নিয়ে আসার চেষ্টা করে। (পড়ুন, ইফিষীয় ৬:১১, ১২.) একটা যে-উপায়ে শয়তান তা করে থাকে, তা হল তার জগৎকে আকর্ষণীয় ও প্রলুব্ধকর করে তোলার মাধ্যমে। “কেহ যদি জগৎকে প্রেম করে,” প্রেরিত যোহন সাবধান করে দিয়েছিলেন, “তবে পিতার প্রেম তাহার অন্তরে নাই। কেননা জগতে যে কিছু আছে, মাংসের অভিলাষ, চক্ষুর অভিলাষ, ও জীবিকার দর্প, এ সকল পিতা হইতে নয়, কিন্তু জগৎ হইতে হইয়াছে।”—১ যোহন ২:১৫, ১৬.

৭ বস্তুগত দিক দিয়ে সমৃদ্ধ হওয়ার বিষয়টা জগতের চারিদিকে ছেয়ে আছে। শয়তান এটা বিশ্বাস করতে উৎসাহিত করে যে, টাকাপয়সাই প্রকৃত সুখ নিয়ে আসে। চারিদিকে প্রচুর সুপারশপ রয়েছে। বিজ্ঞাপনগুলো বস্তুগত সহায়সম্পদ এবং বিনোদনের ওপর কেন্দ্রীভূত এমন জীবনধারা সম্বন্ধে তুলে ধরে। ট্রাভেল এজেন্সিগুলো আকর্ষণীয় জায়গায় ভ্রমণ করার প্রস্তাব দিয়ে থাকে আর বেশিরভাগ সময়ই তা জাগতিক দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে এমন লোকেদের সঙ্গে। হ্যাঁ, আমাদের চারপাশের লোকেরা আমাদের জীবনধারা পরিবর্তন করার কথা বলে থাকে, তবে তা সবসময় জগতের মান অনুযায়ী।

৮, ৯. কোন বিপদ রয়েছে এবং কেন?

৮ প্রথম শতাব্দীর খ্রিস্টীয় মণ্ডলীর যে-ব্যক্তিরা এক জাগতিক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তুলেছিল, তাদের বিষয়ে উল্লেখ করে পিতর সাবধান করে দিয়েছিলেন: “তাহারা দিনমানে উদরতৃপ্তিকে সুখ জ্ঞান করে; তাহারা কলঙ্ক ও মলস্বরূপ, তাহারা তোমাদের সহিত ভোজন পান করিয়া আপন আপন প্রেমভোজে বিলাস করে। কারণ তাহারা অসার গর্ব্বের কথা কহিয়া মাংসিক সুখাভিলাষে, লম্পটতায়, সেই লোকদিগকে প্রলোভিত করে, যাহারা ভ্রমাচারীদের হইতে সম্প্রতি পলায়ন করিতেছে। তাহারা তাহাদের কাছে স্বাধীনতার প্রতিজ্ঞা করে, কিন্তু আপনারা ক্ষয়ের দাস; কেননা যে যাহার দ্বারা পরাভূত, সে তাহার দাসত্বে আনীত।”—২ পিতর ২:১৩, ১৮, ১৯.

৯ “চক্ষুর অভিলাষ” পূর্ণ করা একজন ব্যক্তিকে স্বাধীন করে না। এর পরিবর্তে, তিনি এই জগতের অদৃশ্য প্রভু শয়তান দিয়াবলের দাস হয়ে ওঠেন। (১ যোহন ৫:১৯) বস্তুবাদিতার দাস হওয়া সত্যিই এক বিপদ—এটা এমন এক দাসত্ব, যেটা থেকে মুক্ত হওয়া কঠিন।

এক পরিতৃপ্তিদায়ক কেরিয়ার

১০, ১১. বিশেষত কারা বর্তমানে শয়তানের লক্ষ্যবস্তু এবং কীভাবে জগতের শিক্ষা তাদের জন্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে?

১০ এদনে শয়তান যেমন করেছিল, তেমনই সে বর্তমানেও অনভিজ্ঞ ব্যক্তিদেরকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে। বর্তমানে সে বিশেষভাবে অল্পবয়সিদেরকে আক্রমণ করতে পছন্দ করে। একজন অল্পবয়সি অথবা বস্তুতপক্ষে যেকোনো ব্যক্তিই যখন স্বেচ্ছায় যিহোবার দাস হওয়া বেছে নেয়, তখন শয়তান খুশি হয় না। ঈশ্বরের শত্রু সেই সমস্ত ব্যক্তির ভক্তি ও আনুগত্য ভেঙে ফেলতে চায়, যারা যিহোবার কাছে নিজেদের জীবন উৎসর্গ করে।

১১ আসুন আমরা সেই দাসের উদাহরণে ফিরে যাই, যিনি তার কর্ণ বিদ্ধ করাতে রাজি হতেন। এই দাস নিশ্চয়ই সাময়িক ব্যথা অনুভব করতেন; কিন্তু শীঘ্র সেই ব্যথা চলে যেত এবং তার দাসত্বের স্থায়ী চিহ্ন রয়ে যেত। একইভাবে, একজন অল্পবয়সির জন্য সঙ্গীসাথিদের থেকে আলাদা এক পথ বেছে নেওয়া কঠিন, এমনকী কষ্টকর হতে পারে। শয়তান এইরকম ধারণা তুলে ধরে যে, তার জগতের এক কেরিয়ার একজন ব্যক্তিকে পরিতৃপ্তি এনে দিতে পারে কিন্তু খ্রিস্টানদের তাদের আধ্যাত্মিক প্রয়োজনগুলো পরিতৃপ্ত করার গুরুত্ব বিবেচনা করা উচিত। যিশু শিক্ষা দিয়েছিলেন, “ধন্য যাহারা আত্মাতে দীনহীন,” বা তাদের আধ্যাত্মিক চাহিদা সম্বন্ধে সচেতন। (মথি ৫:৩) উৎসর্গীকৃত খ্রিস্টানরা ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করার জন্য বেঁচে থাকে, শয়তানের ইচ্ছা নয়। তারা যিহোবার ব্যবস্থায় আমোদ করে এবং তারা সেটা নিয়ে দিবারাত্র ধ্যান করে। (পড়ুন, গীতসংহিতা ১:১-৩.) কিন্তু, বর্তমানের অনেক শিক্ষা ব্যবস্থার কারণে যিহোবার একজন দাস ধ্যান করার এবং তার আধ্যাত্মিক চাহিদা পূরণ করার জন্য খুব কমই সময় পেয়ে থাকে।

১২. বর্তমানে অনেক অল্পবয়সি কোন বাছাইয়ের মুখোমুখি হয়?

১২ একজন জাগতিক প্রভু একজন খ্রিস্টান দাসের জীবনকে কঠিন করে তুলতে পারেন। করিন্থীয়দের প্রতি লেখা তার প্রথম চিঠিতে পৌল জিজ্ঞেস করেছিলেন: “তুমি কি দাস হইয়াই আহূত হইয়াছ?” এরপর তিনি তাদের উপদেশ দিয়েছিলেন: “ভাবিত হইও না; কিন্তু যদি স্বাধীন হইতে পার, বরং তাহা অবলম্বন কর।” (১ করি. ৭:২১) সাধারণত দাসত্ব থেকে মুক্তি আশা করা হয়। বর্তমানে, অনেক দেশে একটা নির্দিষ্ট বয়স পর্যন্ত স্কুলে যাওয়া বাধ্যতামূলক। এরপর, ছাত্র-ছাত্রীদেরকে বেছে নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়। এই জগতের একটা কেরিয়ার অনুধাবন করার জন্য ক্রমাগত শিক্ষা লাভ করার কারণে একজন ব্যক্তির পূর্ণসময়ের সেবা অনুধাবন করার স্বাধীনতা কমে যেতে পারে।—পড়ুন, ১ করিন্থীয় ৭:২৩.

উচ্চশিক্ষা অথবা সর্বোত্তম শিক্ষা?

১৩. কোন ধরনের শিক্ষা যিহোবার দাসদের জন্য সবচেয়ে বেশি উপকার নিয়ে আসবে?

১৩ পৌল কলসীয় খ্রিস্টানদের সাবধান করে দিয়েছিলেন: “দেখিও, দর্শনবিদ্যা ও অনর্থক প্রতারণা দ্বারা কেহ যেন তোমাদিগকে বন্দি করিয়া লইয়া না যায়; তাহা মনুষ্যদের পরম্পরাগত শিক্ষার অনুরূপ, জগতের অক্ষরমালার অনুরূপ, খ্রীষ্টের অনুরূপ নয়।” (কল. ২:৮) ‘দর্শনবিদ্যা ও অনর্থক প্রতারণা, যাহা মনুষ্যদের পরম্পরাগত শিক্ষার অনুরূপ,’ তা বর্তমানে জগতের চিন্তাভাবনার মধ্যে ছেয়ে আছে, যে-চিন্তাভাবনা অনেক বুদ্ধিমান ব্যক্তিরা তুলে ধরে। উচ্চশিক্ষা, যা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার ওপর জোর দেয়, তা লাভ করার পর যে-ব্যক্তিরা গ্র্যাজুয়েটপ্রাপ্ত হয়, তাদের খুব সামান্য ব্যবহারিক দক্ষতা থাকে অথবা একেবারেই থাকে না ও সেইসঙ্গে তারা জীবনের বাস্তবতাগুলোর সঙ্গে মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুতও থাকে না। এর বিপরীতে, যিহোবার দাসেরা এমন শিক্ষা বেছে নেয়, যা তাদেরকে প্রয়োজনীয় দক্ষতা গড়ে তুলতে সাহায্য করে, যেন তারা ঈশ্বরের সেবায় এক সাদাসিধে জীবনযাপন বজায় রাখতে পারে। তারা তীমথিয়কে দেওয়া পৌলের পরামর্শে মনোযোগ দেয়: “বাস্তবিকই ভক্তি, সন্তোষযুক্ত হইলে, মহালাভের উপায়, কিন্তু গ্রাসাচ্ছাদন পাইলে আমরা তাহাতেই সন্তুষ্ট থাকিব।” (১ তীম. ৬:৬, ৮) জাগতিক ডিগ্রি এবং নামের পিছনে বিভিন্ন উপাধি লাভ করার পরিবর্তে, প্রকৃত খ্রিস্টানরা সেই ব্যক্তিদের কাছ থেকে ‘সুখ্যাতি-পত্র’ লাভ করার ওপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করে, যাদেরকে তারা যিশুর শিষ্য হওয়ার জন্য সাহায্য করেছে। আর তারা তা যতটা সম্ভব পূর্ণরূপে ক্ষেত্রের পরিচর্যায় রত হওয়ার মাধ্যমে করে থাকে।—পড়ুন, ২ করিন্থীয় ৩:১-৩.

১৪. ফিলিপীয় ৩:৮ পদ অনুসারে, ঈশ্বর ও খ্রিস্টের জন্য তার দাসত্ব করার বিশেষ সুযোগকে পৌল কীভাবে দেখেছিলেন?

১৪ প্রেরিত পৌলের ঘটনা বিবেচনা করুন। তিনি যিহুদি ব্যবস্থাবেত্তা গমলীয়েলের চরণে শিক্ষা লাভ করেছিলেন। পৌল যে-শিক্ষা লাভ করেছিলেন, সেটাকে বর্তমান দিনের একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে। কিন্তু, তিনি যখন এই শিক্ষার সঙ্গে ঈশ্বর ও খ্রিস্টের জন্য তার দাসত্ব করার বিশেষ সুযোগের তুলনা করেছিলেন, তখন সেটাকে তিনি কোন দৃষ্টিতে দেখেছিলেন? তিনি লিখেছিলেন: “আমার প্রভু খ্রীষ্ট যীশুর জ্ঞানের শ্রেষ্ঠতা প্রযুক্ত আমি সকলই ক্ষতি বলিয়া গণ্য করিতেছি।” এরপর তিনি আরও বলেছিলেন, “তাঁহার নিমিত্ত সমস্তেরই ক্ষতি সহ্য করিয়াছি, এবং তাহা মলবৎ গণ্য করিতেছি, যেন খ্রীষ্টকে লাভ করি।” (ফিলি. ৩:৮) এই মূল্যায়ন অল্পবয়সি খ্রিস্টান এবং তাদের ঈশ্বরভয়শীল বাবা-মাকে শিক্ষার বিষয়ে এক বিজ্ঞ বাছাই করতে সাহায্য করে। (ছবিগুলো দেখুন।)

সর্বোত্তম শিক্ষা থেকে উপকার লাভ করুন

১৫, ১৬. যিহোবার সংগঠন কোন শিক্ষা প্রদান করে এবং এর প্রধান লক্ষ্য কী?

১৫ জগতের এমন অনেক প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ সম্বন্ধে কী বলা যায়, যেখানে উচ্চশিক্ষা প্রদান করা হয়? সেগুলো কি মাঝে মাঝে রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতার কেন্দ্রস্থল হয়ে ওঠে না? (ইফি. ২:২) এর বৈসাদৃশ্যে, যিহোবার সংগঠন খ্রিস্টীয় মণ্ডলীর শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সর্বোত্তম শিক্ষা প্রদান করে। আমাদের প্রত্যেকের সাপ্তাহিক ঐশিক পরিচর্যা বিদ্যালয় থেকে উপকার লাভ করার সুযোগ রয়েছে। অবিবাহিত অগ্রগামী ভাইদের জন্য (অবিবাহিত ভাইদের জন্য বাইবেল স্কুল) এবং বিবাহিত অগ্রগামী দম্পতিদের জন্য (খ্রিস্টান দম্পতিদের জন্য বাইবেল স্কুল) বিশেষ কোর্সের ব্যবস্থা রয়েছে। এই ধরনের ঈশতান্ত্রিক শিক্ষা আমাদেরকে আমাদের স্বর্গীয় প্রভু যিহোবার বাধ্য হতে সাহায্য করে।

১৬ ওয়াচ টাওয়ার পাবলিকেশনস্‌ ইনডেক্স অথবা সিডি-রমে ওয়াচটাওয়ার লাইব্রেরি-এর মধ্যে প্রচুর আধ্যাত্মিক সম্পদ রয়েছে, যেগুলো আমরা খুঁজে বের করতে পারি। এই শিক্ষামূলক প্রচেষ্টার প্রধান লক্ষ্য হল, যিহোবার উপাসনা। এটা আমাদের শিক্ষা দেয় যে, কীভাবে আমরা অন্যদেরকে ঈশ্বরের সঙ্গে পুনরায় সম্মিলিত হওয়ার জন্য সাহায্য করতে পারি। (২ করি. ৫:২০) আর এর ফলে, তারা আরও অন্যান্য ব্যক্তিকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য সাহায্য লাভ করবে।—২ তীম. ২:২.

দাসের পুরস্কার

১৭. সর্বোত্তম শিক্ষা বেছে নেওয়া কোন কোন পুরস্কার নিয়ে আসে?

১৭ যিশুর তালন্তের নীতিগল্পে, দু-জন বিশ্বস্ত দাস প্রশংসা লাভ করেছিল এবং তাদেরকে আস্থা সহকারে আরও কাজ দেওয়া হয়েছিল বলে তারা তাদের প্রভুর সঙ্গে আনন্দ করেছিল। (পড়ুন, মথি ২৫:২১, ২৩.) বর্তমানে, সর্বোত্তম শিক্ষা বেছে নেওয়া আনন্দ ও পুরস্কার নিয়ে আসে। মাইকেলের উদাহরণ বিবেচনা করুন। তিনি স্কুলে এতটা ভালো করেছিলেন যে, তার শিক্ষক-শিক্ষিকা তাকে একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ নিয়ে আলোচনা করার জন্য একটা সভায় আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। তাদেরকে অবাক করে দিয়ে, মাইকেল সেই প্রত্যাশার পরিবর্তে এমন সংক্ষিপ্ত বৃত্তিমূলক কোর্স গ্রহণ করার কথা বলেছিলেন, যেটা তাকে শীঘ্র একজন নিয়মিত অগ্রগামী হিসেবে নিজের ভরণ-পোষণ জোগাতে সমর্থ করবে। তিনি কি এইরকমটা মনে করেছিলেন যে, তিনি কিছু থেকে বঞ্চিত হয়েছেন? “একজন অগ্রগামী হিসেবে—এবং এখন মণ্ডলীর একজন প্রাচীন হিসেবে—আমি যে-ঈশতান্ত্রিক শিক্ষা লাভ করেছি, তা আমার কাছে অমূল্য হয়ে আছে,” তিনি বলেন। “আমি যে-সমস্ত আশীর্বাদ এবং বিশেষ সুযোগ উপভোগ করছি, তা আমি হয়তো যে-টাকাপয়সা অর্জন করতে পারতাম, সেটার চেয়ে আরও অনেক বেশি মূল্যবান। আমি সত্যিই আনন্দিত যে, আমি উচ্চশিক্ষার পিছনে ছোটা বেছে নিইনি।”

১৮. কী আমাদেরকে সর্বোত্তম শিক্ষা বাছাই করতে প্রণোদিত করে?

১৮ সর্বোত্তম শিক্ষা আমাদেরকে ঈশ্বরের ইচ্ছা সম্বন্ধে শিক্ষা দেয় এবং যিহোবার জন্য দাসত্ব করতে সাহায্য করে। এটা আমাদের সামনে “ক্ষয়ের দাসত্ব হইতে মুক্ত” হওয়ার এবং পরিশেষে “ঈশ্বরের সন্তানগণের প্রতাপের স্বাধীনতা” লাভ করার প্রত্যাশা রাখে। (রোমীয় ৮:২১) সবচেয়ে বড়ো বিষয় হল, আমরা শিখেছি যে, কীভাবে আমরা সর্বোত্তম উপায়ে দেখাতে পারি, আমরা আসলেই আমাদের স্বর্গীয় প্রভু যিহোবাকে ভালোবাসি।—যাত্রা. ২১:৫.

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৫)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার