-
আপনার উন্নতি যেন সকলে দেখতে পায়২০০১ প্রহরীদুর্গ | আগস্ট ১
-
-
“আত্মার ফল” দেখান
১২. আধ্যাত্মিক দিক দিয়ে উন্নতি করার বিষয়ে আমাদের যে লক্ষ্য, তাতে আত্মার ফল দেখানো কেন জরুরি?
১২ “বিশ্বাসের ও তত্ত্বজ্ঞানের ঐক্য” লাভ করা যেমন জরুরি, তেমনই আমাদের জীবনের প্রতিটা ক্ষেত্রে ঈশ্বরের আত্মার ফল উৎপন্ন করাও জরুরি। কেন? কারণ, আমরা দেখেছি যে পরিপক্বতা ভিতরের বা লুকানো কোন বিষয় নয় কিন্তু এমন এক বৈশিষ্ট্য, যা স্পষ্টভাবে দেখা যায় এবং অন্যদের উপকার করে ও গড়ে তোলে। অবশ্য, আধ্যাত্মিক উন্নতির জন্য আমাদের যে লক্ষ্য, তা শুধু ভদ্র আচরণ আয়ত্ত করাকে বোঝায় না। বদলে, আমরা যদি আধ্যাত্মিক দিক দিয়ে বৃদ্ধি পাই, ঈশ্বরের আত্মার পরিচালনা মেনে নিই, তাহলে আমাদের আচরণ এবং কাজে বিরাট পরিবর্তন দেখা যাবে। প্রেরিত পৌল বলেছিলেন, “তোমরা আত্মার বশে চল, তাহা হইলে মাংসের অভিলাষ পূর্ণ করিবে না।”—গালাতীয় ৫:১৬.
১৩. কোন্ পরিবর্তন স্পষ্ট দেখায় যে একজন ব্যক্তি উন্নতি করে চলেছেন?
১৩ পৌল বিভিন্ন ‘মাংসের কার্য্য সকলের’ তালিকা দিয়েছেন, যা “প্রকাশ” পায়। ঈশ্বরের চাহিদাগুলোর গুরুত্ব উপলব্ধি করার আগে, একজন ব্যক্তি হয়তো জগতের মতো জীবনযাপন করতেন এবং পৌল যে বিষয়গুলো উল্লেখ করেছেন তার কিছু কিছু হয়তো তার মধ্যে ছিল যেমন: “বেশ্যাগমন, অশুচিতা, স্বৈরিতা, প্রতিমাপূজা, কুহক, নানা প্রকার শত্রুতা, বিবাদ, ঈর্ষা, রাগ, প্রতিযোগিতা, বিচ্ছিন্নতা, দলভেদ, মাৎসর্য্য, মত্ততা, রঙ্গরস ও তৎসদৃশ অন্য অন্য দোষ।” (গালাতীয় ৫:১৯-২১) কিন্তু, আধ্যাত্মিক দিক দিয়ে উন্নতি করে তিনি ধীরে ধীরে সেই অবাঞ্ছিত “মাংসের কার্য্য সকল” কাটিয়ে ওঠেন এবং তার জায়গায় “আত্মার ফল” গড়ে তোলেন। বাইরে দিয়ে এই পরিবর্তন স্পষ্ট দেখায় যে, একজন ব্যক্তি আধ্যাত্মিক পরিপক্বতার দিকে উন্নতি করছেন।—গালাতীয় ৫:২২.
১৪. “মাংসের কার্য্য সকল” এবং “আত্মার ফল” এই কথাগুলোকে বুঝিয়ে বলুন।
১৪ “মাংসের কার্য্য সকল” এবং “আত্মার ফল” এই কথাগুলোতে আমাদের মনোযোগ দেওয়া উচিত। “কার্য্য” হচ্ছে একজন ব্যক্তির কৃত কর্মের ফল। অন্য কথায়, পৌল মাংসের কার্য সকলের যে তালিকা দিয়েছেন, তা হয়তো একজন ব্যক্তির জেনেশুনে করা কাজ অথবা অসিদ্ধ মাংসের প্রভাবের ফল। (রোমীয় ১:২৪, ২৮; ৭:২১-২৫) অন্যদিকে, “আত্মার ফল” বলে যে গুণগুলোর তালিকা দেওয়া হয়েছে, তা চরিত্রের বা ব্যক্তিত্বের উন্নতি করার জন্য যে প্রচেষ্টা করা হয়, তার ফলকে বোঝায় না বরং একজন ব্যক্তির ওপর পবিত্র আত্মাকে কাজ করতে দেওয়ায় যে ফল উৎপন্ন হয়, তাকে বোঝায়। একটা গাছকে সঠিকভাবে যত্ন নেওয়া হলে এটা যেমন ফল উৎপাদন করে, ঠিক তেমনই একজন ব্যক্তির জীবনে যখন পবিত্র আত্মা পুরোপুরি কাজ করে তখন তার মধ্যে আত্মার ফল দেখা যায়।—গীতসংহিতা ১:১-৩.
১৫. সমস্ত ‘আত্মার ফলের’ দিকে মনোযোগ দেওয়া কেন জরুরি?
১৫ এখানে আরেকটা বিষয় বিবেচনা করার মতো আর তা হল, ভাল গুণগুলো বোঝানোর জন্য পৌল “ফল” শব্দটা ব্যবহার করেছেন। আমাদের পছন্দ মতো ফল বেছে নেওয়ার জন্য আত্মা বিভিন্ন ফল উৎপন্ন করে না। পৌল যে সমস্ত গুণের কথা বলেছেন যেমন প্রেম, আনন্দ, শান্তি, দীর্ঘসহিষ্ণুতা, মাধুর্য, মঙ্গলভাব, বিশ্বস্ততা, মৃদুতা এবং ইন্দ্রিয়দমন, সবই সমানভাবে জরুরি এবং এগুলো একসঙ্গে নতুন খ্রীষ্টীয় ব্যক্তিত্ব গড়ে তোলে। (ইফিষীয় ৪:২৪; কলসীয় ৩:১০) তাই, আমরা হয়তো আমাদের ব্যক্তিত্বে বা প্রবণতায় এই গুণগুলোর মধ্যে কয়েকটা স্পষ্টভাবে দেখতে পাই কিন্তু পৌল যে ফলগুলোর কথা বলেছেন তার সবগুলোর দিকেই আমাদের মনোযোগ দেওয়া জরুরি। তা করে আমরা আমাদের জীবনে খ্রীষ্টের মতো ব্যক্তিত্ব আরও ভালভাবে দেখাতে পারব।—১ পিতর ২:১২, ২১.
১৬. খ্রীষ্টীয় পরিপক্বতা অর্জনের জন্য আমাদের লক্ষ্য কী আর কীভাবে আমরা সেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারি?
১৬ পৌলের আলোচনা থেকে আমরা যে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টা শিখতে পারি তা হল, খ্রীষ্টীয় পরিপক্বতা অর্জন করতে গিয়ে আমাদের লক্ষ্য, বিশেষ জ্ঞান লাভ করা ও শেখা কিংবা ভাল ব্যক্তিত্ব গড়ে তোলাও নয়। আমাদের লক্ষ্য হবে ঈশ্বরের আত্মাকে আমাদের জীবনে পুরোপুরি কাজ করতে দেওয়া। আমাদের চিন্তাধারা এবং কাজে যত আমরা ঈশ্বরের আত্মার পরিচালনা মেনে নেব আধ্যাত্মিক দিক দিয়ে আমরা তত পরিপক্ব হব। কিন্তু, কীভাবে আমরা এই লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারি? ঈশ্বরের আত্মা যেন আমাদের ওপর কাজ করতে পারে এর জন্য আমাদের হৃদয় ও মনকে খোলা রাখতে হবে। এর জন্য খ্রীষ্টীয় সভাগুলোতে নিয়মিত যোগ দিতে ও উত্তর দিতে হবে। এছাড়াও, আমাদেরকে নিয়মিত ঈশ্বরের বাক্য অধ্যয়ন ও তা নিয়ে ধ্যান করতে হবে এবং অন্যদের সঙ্গে মেলামেশা করার, কোন কিছু বাছাই করার এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এর নীতিগুলোকে কাজে লাগাতে হবে। আর, এভাবেই আমাদের উন্নতি স্পষ্টভাবে দেখা যাবে।
-
-
আপনার উন্নতি যেন সকলে দেখতে পায়২০০১ প্রহরীদুর্গ | আগস্ট ১
-
-
• কোন্ কোন্ দিক দিয়ে আধ্যাত্মিক পরিপক্বতা দেখানো যেতে পারে?
-