ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • g৯৬ ১/৮ পৃষ্ঠা ২৬-২৭
  • খেলার মধ্যে প্রতিযোগিতা কি অন্যায়?

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • খেলার মধ্যে প্রতিযোগিতা কি অন্যায়?
  • ১৯৯৬ সচেতন থাক!
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • খেলাধুলা ও ক্রীড়ার ইতিহাস
  • যখন প্রতিযোগিতা সীমা ছাড়িয়ে যায়
  • ভারসাম্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গি
  • ঈশ্বরের প্রতি ভক্তি বনাম শরীরচর্চা
    আমাদের খ্রিস্টীয় জীবন ও পরিচর্যা—সভার জন্য অধ্যয়ন পুস্তিকা ২০১৯
১৯৯৬ সচেতন থাক!
g৯৬ ১/৮ পৃষ্ঠা ২৬-২৭

বাইবেলের দৃষ্টিভঙ্গি

খেলার মধ্যে প্রতিযোগিতা কি অন্যায়?

দুই জন বৃদ্ধ ব্যক্তি একটি রৌদ্রোজ্জ্বল দিনে পার্কে বসে চেকার্স খেলছেন। কাছেই ছেলেমেয়েদের চিৎকার আর তারা ছুটোছুটি করে ট্যাগ খেলছে। খুব কাছেই যুবকের দল বাস্কেটবল খেলা উপভোগ করছে। হ্যাঁ, আমাদের চারিদিকে প্রত্যেকদিন, ছোট এবং বড়রা খেলাধুলা ও ক্রীড়া উপভোগ করে থাকে। যখন তারা এতে অংশ নেয় তখন অধিকাংশই চেষ্টা করে তাদের সাধ্যমত খেলতে। হতে পারে আপনিও তা করে থাকেন।

কিন্তু এটা কি বলা যায় যে বন্ধুত্বসুলভ প্রতিযোগিতা অন্যায়? অনেকে গালাতীয় ৫:২৬ (NW) পদে দেওয়া প্রেরিত পৌলের উপদেশের সাথে পরিচিত, যেখানে তিনি বলেছিলেন যে খ্রীষ্টানদের “পরস্পরের মধ্যে প্রতিযোগিতা জাগিয়ে তোলা,” উচিত নয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে, খ্রীষ্টানদের পক্ষে খেলাধুলা ও ক্রীড়ামূলক আমোদপ্রমোদের মধ্যে প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া কি অসঙ্গত?

পরিষ্কারভাবে বলতে গেলে, না। কেন? এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার আগে, আসুন আমরা সংক্ষেপে খেলাধুলা ও ক্রীড়ার ইতিহাস সম্বন্ধে কিছু আলোচনা করি।

খেলাধুলা ও ক্রীড়ার ইতিহাস

খেলাধুলা ও ক্রীড়ায় অংশ নেওয়ার ব্যাপারটি প্রাচীন কাল থেকে চলে আসছে এবং এটি সমগ্র ইতিহাসে এক প্রচলিত দিক হিসাবে পরিগণিত হয়েছে—এমনকি ঈশ্বরের লোকেদের ক্ষেত্রেও। এমনকি “বল” শব্দটি বাইবেলে পাওয়া যায়। যিশাইয় ২২:১৮ (NW) পদে, দুষ্ট লোকেদের প্রতি যিহোবার অভিশাপ সম্বন্ধে উল্লেখ করার সময়, এটি জানায়: “তিনি বলের ন্যায় (তাদের) শক্ত করে মোড়াবেন।” কয়েকটি আধুনিক বল—যেমন গল্ফের বল ও বেসবল—এগুলি এখনও শক্ত কোন বস্তু দিয়ে মোড়ানো থাকে। কিং জেমস বাইবেল এই একই পদকে এইভাবে অনুবাদ করে: “তিনি . . . তোমাদের বলের মত ছুঁড়ে ফেলবেন।” এই তুলনামূলক শব্দটিকে যদি যথার্থ হতে হয়, তাহলে সেই সময় যারা বাস করত তারা নিশ্চয়ই বলের ব্যবহার করত।

এছাড়াও, বাইবেলে পূর্বপুরুষ যাকোবের কথা বলা আছে যিনি দূতের সাথে মল্লযুদ্ধ করেছিলেন। এই ঘটনাটি মনে হয় যাকোবের কোন পূর্ববর্তী কৌশলতার পরিপ্রেক্ষিতে উল্লেখ করা হয়েছিল, যেহেতু এই লড়াইটি ছিল অমীমাংসিত এবং এটি বেশ কিছু ঘন্টা ধরে চলেছিল। (আদিপুস্তক ৩২:২৪-২৬) আগ্রহের বিষয় হল যে, কিছু পণ্ডিতের মতবাদ অনুসারে, এই ঘটনাটি সম্ভবত এটাই ইঙ্গিত করে যে মল্লযুদ্ধের নিয়মকানুনকে যাকোব মানতেন। সম্ভবত ইস্রায়েলীয়রা ধনুর্বিদ্যায়ও অংশ নিত—আরেকটি খেলা যার জন্য অভ্যাস ও কৌশলতার প্রয়োজন হয়। (১ শমূয়েল ২০:২০; বিলাপ ৩:১২) দৌড়ান হল খেলার আরেকটি অংশ যে ক্ষেত্রে প্রাচীন কালের লোকেদের অনুশীলন ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হত।—২ শমূয়েল ১৮:২৩-২৭; ১ বংশাবলি ১২:৮.

যে সব খেলার সাথে মনের সম্পর্ক—যেমন ধাঁধাঁর সমাধান—এগুলি খুবই প্রচলিত ও উচ্চসম্মানের সাথে পরিগণিত হত। সম্ভবত এগুলির মধ্যে সবচাইতে উল্লেখযোগ্য উদাহরণ হল পলিষ্টীয়দের কাছে শিম্‌শোনের দ্বারা একটি ধাঁধাঁর সমাধান।—বিচারকর্ত্তৃগণের বিবরণ ১৪:১২-১৮.

খ্রীষ্টীয় গ্রীক শাস্ত্রাবলীতে, অনেক সময় খেলাধুলা ও ক্রীড়াকে খ্রীষ্টীয় জীবনধারার এক রূপালঙ্কার হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ১ করিন্থীয় ৯:২৪, ২৫ পদে পৌল ক্রীড়াবিদ্‌দের কঠোর অনুশীলনের কথা উল্লেখ করেন এবং এটি খ্রীষ্টানদের জন্য আত্মসংযম ও সহিষ্ণুতার প্রয়োজনের উপর প্রয়োগ করেন। এছাড়াও, এটা স্পষ্ট যে যিহোবা তাঁর সৃষ্টির মধ্যে এক ধরনের ক্রীড়ামূলক বৈশিষ্ট্য রোপিত করেছেন, যার ফলে মানুষ এবং পশু উভয়ই খেলার জন্য কিছু সময় করে নেয়।—ইয়োব ৪০:২০; সখরিয় ৮:৫; তুলনা করুন ইব্রীয় ১২:১.

যখন প্রতিযোগিতা সীমা ছাড়িয়ে যায়

তাহলে, যখন প্রেরিত পৌল সহখ্রীষ্টানদের বলেছিলেন “পরস্পরের মধ্যে প্রতিযোগিতা জাগিয়ে তোলা” তাদের পক্ষে উচিত নয় তখন তিনি কী বুঝাতে চেয়েছিলেন? (গালাতীয় ৫:২৬) এর পটভূমিকার মধ্যেই উত্তর লুকিয়ে আছে। এই মন্তব্যটি করার আগে পৌল তাদের বলেছিলেন “অনর্থক দর্প” না করতে অথবা অন্যান্য বাইবেল অনুবাদ যেমন এটিকে “গর্ব,” “অহঙ্কার,” “বৃথা যশ পাওয়ার ইচ্ছা,” এই বলে অনুবাদ করেছে। পৌলের দিনের ক্রীড়াবিদ্‌দের মধ্যে যশ ও সম্মান পাওয়ার প্রবণতা ছিল।

আজকের দিনের এই বৃথা গৌরবময় জগতেও, আরও ক্রমবর্ধমান সংখ্যায় ক্রীড়াবিদেরা আত্মগরিমার পিছনে ছুটছে এবং নিজেদের ও কৌশলতার প্রতি আকর্ষিত করানোর চেষ্টা করছে। এমনকি অনেকে এতদূর পর্যন্ত এগিয়ে যায় যে তারা অপরকে ছোট নজরে দেখার চেষ্টা করে। বিদ্রূপ করা, আঙুল দেখানো এবং খারাপ ভাষা ব্যবহার করা অথবা যাকে অনেক ক্রীড়াবিদেরা বলে থাকে “অশ্লীল কথাবার্তা” এগুলি আজকের দিনে ক্রমশই সাধারণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এই সমস্ত কিছুই “প্রতিযোগিতা জাগিয়ে তোলে” যার ফলে এটি সেই দিকে পরিচালিত করে যাকে পৌল গালাতীয় ৫:২৬ পদের শেষের দিকে—হিংসা বলে সম্বোধন করেছেন।

এর সবচাইতে উৎকট দিকটি হল, এইধরনের ভারসাম্যহীন প্রতিযোগিতা লড়াই এমনকি মৃত্যুর দিকে পর্যন্ত নিয়ে যায়। গিবিয়োনে শৌল ও দায়ূদের লোকেদের মধ্যে যে সাক্ষাৎকার হয়েছিল তার কথা বিবেচনা করুন যখন অব্‌নের ও যোয়াব এই বিষয়ে সম্মত হয় যাতে করে “যুবকগণ উঠিয়া [তাদের] সম্মুখে যুদ্ধক্রীড়া” করে। (২ শমূয়েল ২:১৪-৩২, তানাখ) এখানে সম্ভবত মল্লযুদ্ধ সংক্রান্ত কোন খেলার কথা বলা হয়েছে। যে ধরনের প্রতিযোগিতাই হোক না কেন কিছুক্ষণ পরেই সেটি এক ভয়ঙ্কর ও রক্তাক্ত লড়াইয়ে পরিণত হয়েছিল।

ভারসাম্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গি

আনন্দজনক খেলা ও ক্রীড়া হওয়া উচিত সতেজতামূলক—হতাশাজনক নয়। এটি আমরা সম্পাদন করতে পারি যদি যথার্থ স্থানে বিষয়গুলিকে রাখি, আর এটাও মনে রাখি যে ঈশ্বরের ও আমাদের সহমানুষের কাছে আমাদের যে মূল্য আছে তার সাথে আমাদের খেলা বা ক্রীড়া কৌশলের কোন সম্পর্ক নেই।

দৈহিক অথবা মানসিক ক্ষমতার জন্য নিজেদের মধ্যে উৎকর্ষতার মনোভাব গড়ে তোলা হবে মূর্খতার কাজ। অতএব আসুন আমরা যেন নিজেদের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করানোর যে জাগতিক প্রবণতা তা এড়িয়ে চলি, অপরের মধ্যে হিংসার মনোভাব জাগিয়ে না তুলি, কারণ প্রেম ঈর্ষা করে না। (১ করিন্থীয় ১৩:৪; ১ পিতর ২:১) যদিও উত্তেজনা, উদ্যোগের স্বতঃস্ফুর্ত প্রকাশ এবং দলের মধ্যে একে অপরের প্রতি অভিনন্দন আশা করা যুক্তিসঙ্গত, কিন্তু আমরা কখনই চাইব না যে এই অনুভূতিগুলি সীমা ছাড়িয়ে যাক এবং গৌরবের কোন বিষয় হয়ে দাঁড়াক।

খেলাধুলা বা ক্রীড়ার ক্ষেত্রে একজনের ক্ষমতার উপর ভিত্তি করে আমরা কখনই তার মূল্যায়ন করব না। ঠিক একই রকমভাবে কৌশলতার অভাবের জন্য আমরা নিজেদেরও ছোট করে দেখব না। এর মানে কি এই যে আমাদের কোন রকম খেলার মধ্যে পয়েন্টের হিসাব রাখা ভুল? না, কখনই না। কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে যে ক্রীড়া কতই না এক তাৎপর্যহীন বিষয়—কত ভাল সে খেলতে পারে তার উপর মানুষের প্রকৃত মূল্য নির্ভর করে না। দলগতভাবে খেলার মধ্যে সর্বদাই প্রত্যেকটি টিমের মধ্যে খেলোয়াড়দের পরিবর্তন ঘটে অতএব একটা দলই সবসময় বিজয়ী হতে পারে না।

খ্রীষ্টানদের এটাও মনে রাখা উচিত যে যদিও খেলা ও ক্রীড়ার কথা বাইবেলে উল্লেখ করা আছে, কিন্তু তা খুবই স্বল্প পরিমাণে। এটা ভাবা ভুল হবে যে বাইবেলেতে খেলার উল্লেখ হওয়া মানেই যে কোনভাবেই খেলাতে অংশ নেওয়া যেতে পারে। (তুলনা করুন ১ করিন্থীয় ৯:২৬ সাথে গীতসংহিতা ১১:৫.) এছাড়াও পৌল উল্লেখ করেছিলেন যে “শারীরিক দক্ষতার অভ্যাস অল্প বিষয়ে সুফলদায়ক হয়; কিন্তু ভক্তি সর্ব্ববিষয়ে সুফলদায়িকা।”—১ তীমথিয় ৪:৮.

সুতরাং যথার্থ স্থানে খেলা ও ক্রীড়া আনন্দদায়ক ও সতেজতামূলক। সমস্ত প্রতিযোগিতাকে বাইবেল নিন্দা করে না, কিন্তু যে সব প্রতিযোগিতা অহংকার, বিদ্বেষ, লোভ, ঈর্ষা অথবা দৌরাত্ম্যের উদ্ভব ঘটায় তার নিন্দা করে।

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৫)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার