ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w১০ ৫/১৫ পৃষ্ঠা ২৮-৩২
  • যিহোবার পবিত্র আত্মাকে দুঃখিত করবেন না

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • যিহোবার পবিত্র আত্মাকে দুঃখিত করবেন না
  • ২০১০ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • পৌল যা বুঝিয়েছিলেন
  • কীভাবে একজন খ্রিস্টান আত্মাকে দুঃখিত করতে পারেন?
  • যেভাবে আত্মাকে দুঃখিত করা এড়িয়ে চলা যায়
  • অন্যান্য যে-উপায়ে আত্মাকে দুঃখিত করা এড়িয়ে চলা যায়
  • সতর্কতা প্রয়োজন
  • পাঠক-পাঠিকাদের থেকে প্রশ্নসকল
    ২০০৪ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • আত্মার ভাব বজায় রাখুন এবং বেঁচে থাকুন!
    ২০০১ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • আত্মার বশে ও আপনার উৎসর্গীকরণের যোগ্যরূপে চলুন
    ২০১০ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • প্রথম শতাব্দীতে এবং বর্তমানে ঈশ্বরের আত্মার দ্বারা পরিচালিত
    ২০১১ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
আরও দেখুন
২০১০ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w১০ ৫/১৫ পৃষ্ঠা ২৮-৩২

যিহোবার পবিত্র আত্মাকে দুঃখিত করবেন না

“ঈশ্বরের সেই পবিত্র আত্মাকে দুঃখিত করিও না, যাঁহার দ্বারা তোমরা . . . মুদ্রাঙ্কিত হইয়াছ।”—ইফি. ৪:৩০.

১. লক্ষ লক্ষ লোকের জন্য যিহোবা কী করেছেন এবং তাদের কোন কর্তব্য রয়েছে?

যিহোবা এই সংকটপূর্ণ জগতে বসবাসরত লক্ষ লক্ষ লোকের জন্য বিশেষ কিছু করেছেন। তিনি তাদের জন্য তাঁর একজাত পুত্র যিশু খ্রিস্টের মাধ্যমে তাঁর নিকটবর্তী হওয়া সম্ভবপর করেছেন। (যোহন ৬:৪৪) এই ব্যক্তিদের মধ্যে আপনিও রয়েছেন, যদি আপনি ইতিমধ্যেই ঈশ্বরের কাছে নিজেকে উৎসর্গ করেন এবং সেই অনুযায়ী জীবনযাপন করে থাকেন। পবিত্র আত্মার নামে বাপ্তাইজিত একজন ব্যক্তি হিসেবে, আপনার সেই আত্মার নির্দেশনার সঙ্গে মিল রেখে আচরণ করার কর্তব্য রয়েছে।—মথি ২৮:১৯.

২. কোন প্রশ্নগুলো আমরা বিবেচনা করব?

২ আমরা যারা ‘আত্মার উদ্দেশে বুনি,’ তারা নতুন মনুষ্য বা ব্যক্তিত্ব পরিধান করি। (গালা. ৬:৮; ইফি. ৪:১৭-২৪) কিন্তু, প্রেরিত পৌল আমাদেরকে ঈশ্বরের পবিত্র আত্মাকে দুঃখিত না করার ব্যাপারে পরামর্শ দিয়েছেন এবং সাবধান করেছেন। (পড়ুন, ইফিষীয় ৪:২৫-৩২.) এখন আমরা প্রেরিতের এই পরামর্শ ভালো করে বিবেচনা করে দেখব। পৌল কী বুঝিয়েছিলেন, যখন তিনি ঈশ্বরের আত্মাকে দুঃখিত করার বিষয়টা নিয়ে কথা বলেছিলেন? যিহোবার কাছে নিজেকে উৎসর্গ করেছেন এমন একজন ব্যক্তি কীভাবে ঈশ্বরের আত্মাকে দুঃখিত করতে পারেন? আর কীভাবে আমরা যিহোবার আত্মাকে দুঃখিত করা এড়িয়ে চলতে পারি?

পৌল যা বুঝিয়েছিলেন

৩. ইফিষীয় ৪:৩০ পদে লিপিবদ্ধ কথাগুলোর অর্থ আপনি কীভাবে ব্যাখ্যা করবেন?

৩ প্রথমে, ইফিষীয় ৪:৩০ পদে লিপিবদ্ধ পৌলের কথাগুলো লক্ষ করুন। তিনি লিখেছিলেন: “ঈশ্বরের সেই পবিত্র আত্মাকে দুঃখিত করিও না, যাঁহার দ্বারা তোমরা মুক্তির দিনের অপেক্ষায় মুদ্রাঙ্কিত হইয়াছ।” পৌল চাননি যেন তার প্রিয় সহবিশ্বাসীরা তাদের আধ্যাত্মিকতাকে ঝুঁকির মুখে ফেলে। যিহোবার পবিত্র আত্মার মাধ্যমেই তারা “মুক্তির দিনের অপেক্ষায় মুদ্রাঙ্কিত” হয়েছিল। ঈশ্বরের পবিত্র আত্মা, অভিষিক্ত নীতিনিষ্ঠা রক্ষাকারী ব্যক্তিদের জন্য এক মুদ্রাঙ্কন অথবা এক “বায়না” ছিল এবং এখনও আছে। (২ করি. ১:২২) সেই মুদ্রাঙ্কন নির্দেশ করে যে, তারা হল ঈশ্বরের অধিকার ও সেইসঙ্গে তারা স্বর্গীয় রাজ্য লাভ করবে। সেই চূড়ান্ত মুদ্রাঙ্কিত সংখ্যা হল ১,৪৪,০০০ জন।—প্রকা. ৭:২-৪.

৪. কেন ঈশ্বরের আত্মাকে দুঃখিত করা এড়িয়ে চলা গুরুত্বপূর্ণ?

৪ আত্মাকে দুঃখিত করাই প্রথম পদক্ষেপ হতে পারে, যা একজন খ্রিস্টানের জীবনে ঈশ্বরের সক্রিয় শক্তির প্রভাব সম্পূর্ণরূপে হারিয়ে ফেলার দিকে পরিচালিত করতে পারে। এইরকমটা যে হতে পারে, তা দায়ূদ বৎশেবার সঙ্গে পাপ করার পর যা বলেছিলেন, তা থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়। দায়ূদ অনুতাপ সহকারে যিহোবার কাছে বিনতি করেছিলেন: “তোমার সম্মুখ হইতে আমাকে দূর করিও না, তোমার পবিত্র আত্মাকে আমা হইতে হরণ করিও না।” (গীত. ৫১:১১) একমাত্র যে-অভিষিক্ত ব্যক্তিরা “মরণ পর্য্যন্ত বিশ্বস্ত” থাকবে, তারাই স্বর্গে অমর জীবনের ‘মুকুট’ লাভ করবে। (প্রকা. ২:১০; ১ করি. ১৫:৫৩) পার্থিব আশা রয়েছে এমন খ্রিস্টানদেরও পবিত্র আত্মার প্রয়োজন, যদি তারা ঈশ্বরের প্রতি নীতিনিষ্ঠা বজায় রাখতে চায় এবং এর ফলে খ্রিস্টের মুক্তির মূল্যরূপ বলিদানের প্রতি বিশ্বাসের ভিত্তিতে ঈশ্বরের কাছ থেকে দানরূপ জীবন লাভ করতে চায়। (যোহন ৩:৩৬; রোমীয় ৫:৮; ৬:২৩) তাই, আমাদের সকলের যিহোবার পবিত্র আত্মাকে দুঃখিত করার বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে হবে।

কীভাবে একজন খ্রিস্টান আত্মাকে দুঃখিত করতে পারেন?

৫, ৬. কীভাবে একজন খ্রিস্টান যিহোবার আত্মাকে দুঃখিত করতে পারেন?

৫ উৎসর্গীকৃত খ্রিস্টান হিসেবে আমরা আত্মাকে দুঃখিত করা এড়িয়ে চলতে পারি। এটা সম্ভব যদি আমরা ‘আত্মার বশে চলি এবং জীবন ধারণ করি’ কারণ তাহলে আমরা মন্দ মাংসিক অভিলাষের কাছে নতিস্বীকার করব না এবং মন্দ বৈশিষ্ট্যগুলো প্রকাশ করব না। (গালা. ৫:১৬, ২৫, ২৬) কিন্তু, এর বিপরীতটাও হতে পারে। আমরা ঈশ্বরের আত্মাকে কিছুটা দুঃখিত করতে পারি, যদি আমরা নিজেদেরকে ধীরে ধীরে, হতে পারে প্রায় অলক্ষিতে সেই আচরণগুলোর দিকে ধাবিত হতে দিই, যেগুলো সম্বন্ধে ঈশ্বরের আত্মা দ্বারা অনুপ্রাণিত বাক্যে নিন্দা করা হয়েছে।

৬ আমরা যদি ক্রমাগত পবিত্র আত্মার নির্দেশনার বিরুদ্ধে কাজ করি, তাহলে আমরা সেই আত্মাকে ও এর উৎস যিহোবাকে দুঃখিত করব। ইফিষীয় ৪:২৫-৩২ পদ পরীক্ষা করলে আমরা দেখতে পাব যে, কীভাবে আমাদের আচরণ করা উচিত ও সেইসঙ্গে কীভাবে এটা আমাদের ঈশ্বরের আত্মাকে দুঃখিত করা এড়িয়ে চলার ক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারে।

যেভাবে আত্মাকে দুঃখিত করা এড়িয়ে চলা যায়

৭, ৮. কেন আমাদের সত্যবাদী হতে হবে, তা ব্যাখ্যা করুন।

৭ আমাদের সত্যবাদী হতে হবে। ইফিষীয় ৪:২৫ পদ অনুযায়ী, পৌল লিখেছিলেন: “তোমরা, যাহা মিথ্যা, তাহা ত্যাগ করিয়া প্রত্যেকে আপন আপন প্রতিবাসীর সহিত সত্য আলাপ করিও; কারণ আমরা পরস্পর অঙ্গ প্রত্যঙ্গ।” যেহেতু আমরা “পরস্পর অঙ্গ প্রত্যঙ্গ” হিসেবে একতাবদ্ধ, তাই নিশ্চিতভাবেই আমাদের খল বা কপট হওয়া কিংবা ইচ্ছাকৃতভাবে আমাদের সহউপাসকদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা উচিত নয় কারণ তা তাদের সঙ্গে মিথ্যা বলার সমরূপ। কেউ যদি এইরকম কাজ করেই চলেন, তাহলে তিনি ঈশ্বরের সঙ্গে তার সমস্ত সম্পর্ক হারিয়ে ফেলবেন।—পড়ুন, হিতোপদেশ ৩:৩২.

৮ প্রতারণাপূর্ণ কথা ও কাজ মণ্ডলীর একতায় বিঘ্ন সৃষ্টি করতে পারে। তাই, আমাদের বিশ্বস্ত ভাববাদী দানিয়েলের মতো হওয়া উচিত, যার মধ্যে অন্যেরা কোনো অপরাধ পায়নি। (দানি. ৬:৪) আর স্বর্গীয় আশাসম্পন্ন খ্রিস্টানদের উদ্দেশে দেওয়া পৌলের এই পরামর্শ আমাদের মনে রাখতে হবে যে, ‘খ্রীষ্টের দেহের’ প্রত্যেক সদস্য পরস্পর অঙ্গপ্রত্যঙ্গ আর তাদেরকে যিশুর সত্যবাদী অভিষিক্ত অনুসারীদের সঙ্গে একতাবদ্ধ থাকতে হবে। (ইফি. ৪:১১, ১২) আমরা যদি পরমদেশ পৃথিবীতে চিরকাল বেঁচে থাকার আশা করি, তাহলে আমাদেরও সত্য বলতে হবে আর এভাবে আমরা বিশ্বব্যাপী আমাদের ভ্রাতৃসমাজের একতায় অবদান রাখতে পারব।

৯. কেন ইফিষীয় ৪:২৬, ২৭ পদের সঙ্গে মিল রেখে কাজ করা অতীব গুরুত্বপূর্ণ?

৯ আমাদেরকে দিয়াবলের প্রতিরোধ করতে হবে ও সেইসঙ্গে আমরা নিজেদেরকে আধ্যাত্মিকভাবে ক্ষতি করার কোনো সুযোগ তাকে দেব না। (যাকোব ৪:৭) পবিত্র আত্মা আমাদেরকে শয়তানের প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। উদাহরণস্বরূপ, আমরা অসংযত ক্রোধকে নিয়ন্ত্রণ করার দ্বারা তাকে প্রতিরোধ করতে পারি। পৌল লিখেছিলেন: “ক্রুদ্ধ হইলে পাপ করিও না; সূর্য্য অস্ত না যাইতে যাইতে তোমাদের কোপাবেশ শান্ত হউক; আর দিয়াবলকে স্থান দিও না।” (ইফি. ৪:২৬, ২৭) আমরা যদি সঠিক কারণেও রাগ করি, তাহলে সঙ্গেসঙ্গে করা এক নীরব প্রার্থনা আমাদের “শীতলাত্মা” বজায় রাখতে সাহায্য করতে পারে, যার ফলে ঈশ্বরের আত্মাকে দুঃখিত করতে পারে এমনভাবে কাজ করার পরিবর্তে আমরা ইন্দ্রিয়দমন প্রদর্শন করতে পারব। (হিতো. ১৭:২৭) তাই, আসুন আমরা যেন ক্রুদ্ধ অবস্থায় না থাকি এবং শয়তানকে এমন সুযোগ না দিই যে, সে আমাদেরকে দুষ্কার্য করার জন্য প্ররোচিত করতে পারে। (গীত. ৩৭:৮, ৯) তাকে প্রতিরোধ করার একটা উপায় হচ্ছে, যিশুর পরামর্শের সঙ্গে মিল রেখে দ্রুত মতবিরোধ মিটমাট করা।—মথি ৫:২৩, ২৪; ১৮:১৫-১৭.

১০, ১১. কেন আমরা চুরি করব না বা অসৎ হব না?

১০ আমরা চুরি করার বা অসৎ হওয়ার কোনো প্রলোভনের কাছেই নতিস্বীকার করব না। চুরি করা সম্বন্ধে পৌল লিখেছিলেন: “চোর আর চুরি না করুক, বরং স্বহস্তে সদ্ব্যাপারে পরিশ্রম করুক, যেন দীনহীনকে দিবার জন্য তাহার হাতে কিছু থাকে।” (ইফি. ৪:২৮) একজন উৎসর্গীকৃত খ্রিস্টান যদি চুরি করে থাকেন, তাহলে তিনি আসলে ঈশ্বরের নামের ওপর নিন্দা নিয়ে আসার দ্বারা “ঈশ্বরের নাম অপব্যবহার” করেন। (হিতো. ৩০:৭-৯) এমনকী দরিদ্রতাও চুরি করাকে ন্যায্য বলে প্রতিপন্ন করে না। যারা ঈশ্বর ও প্রতিবেশীকে ভালোবাসে, তারা বুঝতে পারে যে, চুরি করা কখনো ন্যায্য নয়।—মার্ক ১২:২৮-৩১.

১১ পৌল কেবল এই-ই উল্লেখ করেননি যে, আমাদের কী করা উচিত নয়; বরং এও উল্লেখ করেছেন যে, আমাদের কী করা উচিত। আমরা যদি আত্মার বশে চলি এবং জীবনধারণ করি, তাহলে আমরা কঠোর পরিশ্রম করব, যেন আমরা আমাদের পরিবারের যত্ন নিতে পারি ও সেইসঙ্গে “দীনহীনকে দিবার জন্য” আমাদের “হাতে কিছু থাকে।” (১ তীম. ৫:৮) যিশু ও তাঁর প্রেরিতরা দরিদ্রদের সাহায্য করার জন্য টাকা আলাদা করে রাখত কিন্তু বিশ্বাসঘাতক ঈষ্করিয়োতীয় যিহূদা সেখান থেকে টাকা চুরি করত। (যোহন ১২:৪-৬) নিশ্চিতভাবেই, সে পবিত্র আত্মার দ্বারা চালিত হয়নি। আমরা যারা ঈশ্বরের আত্মার দ্বারা পরিচালিত হই, আমরা ‘সর্ব্ববিষয়ে সদাচরণ করি,’ যেমনটা পৌলও করতেন। (ইব্রীয় ১৩:১৮) এভাবে আমরা যিহোবার আত্মাকে দুঃখিত করা এড়িয়ে চলি।

অন্যান্য যে-উপায়ে আত্মাকে দুঃখিত করা এড়িয়ে চলা যায়

১২, ১৩. (ক) ইফিষীয় ৪:২৯ পদের কথা অনুযায়ী আমাদের কোন ধরনের কথাবার্তা এড়িয়ে চলা উচিত? (খ) আমাদের কথাবার্তার ধরন কেমন হওয়া উচিত?

১২ আমাদেরকে কথাবার্তার ক্ষেত্রে সাবধান হতে হবে। পৌল ঘোষণা করেছিলেন: “তোমাদের মুখ থেকে কোন বাজে কথা বের না হোক, বরং দরকার মত গড়ে তুলবার জন্য যা ভাল তেমন কথাই বের হোক, যেন যারা তা শোনে তাতে তাদের উপকার হয়।” (ইফি. ৪:২৯, বাংলা কমন ল্যাঙ্গুয়েজ ভারসন) আবারও, প্রেরিত কেবল আমাদের কী করা উচিত নয়, সেটাই বলেননি; বরং আমাদের কী করে চলা উচিত, সেটাও বলেছেন। ঈশ্বরের আত্মার প্রভাবাধীনে আমরা “দরকার মত গড়ে তুলবার জন্য যা ভাল তেমন কথাই” বলতে পরিচালিত হব, “যেন যারা তা শোনে তাতে তাদের উপকার হয়।” অধিকন্তু, আমাদের মুখ থেকে “বাজে কথা” বের হতে দেওয়া উচিত নয়। যে-গ্রিক শব্দটিকে “বাজে” হিসেবে অনুবাদ করা হয়েছে, সেটি পচা ফল, মাছ বা মাংসকে বোঝানোর জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ঠিক যেমন আমরা এই খাবারগুলোকে প্রচণ্ড ঘৃণা করি, তেমনই আমরা সেই কথাবার্তাকেও ঘৃণা করি, যেগুলোকে যিহোবা মন্দ বলে গণ্য করেন।

১৩ আমাদের কথাবার্তা শোভন, সদয় ও “লবণে আস্বাদযুক্ত” হওয়া উচিত। (কল. ৩:৮-১০; ৪:৬) আমাদের কথাবার্তা শুনে লোকেরা যেন বুঝতে পারে যে, আমরা আলাদা। তাই, আসুন আমরা “গড়ে তুলবার জন্য যা ভাল,” তা-ই বলি। আর আমরা যেন গীতরচকের মতো একইরকম অনুভব করি, যিনি গেয়েছিলেন: “আমার মুখের বাক্য ও আমার চিত্তের ধ্যান তোমার দৃষ্টিতে গ্রাহ্য হউক, হে সদাপ্রভু, আমার শৈল, আমার মুক্তিদাতা।”—গীত. ১৯:১৪.

১৪. ইফিষীয় ৪:৩০, ৩১ পদ অনুযায়ী আমাদেরকে কোন বিষয়গুলো থেকে মুক্ত হতে হবে?

১৪ আমাদেরকে কটুকাটব্য, ক্রোধ, কলহ এবং সর্বপ্রকার হিংসেচ্ছা থেকে মুক্ত হতে হবে। ঈশ্বরের আত্মাকে দুঃখিত করার বিরুদ্ধে সাবধান করার পর, পৌল লিখেছিলেন: “সর্ব্বপ্রকার কটুকাটব্য, রোষ, ক্রোধ, কলহ, নিন্দা এবং সর্ব্বপ্রকার হিংসেচ্ছা তোমাদের হইতে দূরীকৃত হউক।” (ইফি. ৪:৩০, ৩১) অসিদ্ধ মানুষ হিসেবে আমাদের সকলের নিজেদের চিন্তাভাবনা ও কাজকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কঠোর প্রচেষ্টা করতে হবে। আমরা যদি ‘কটুকাটব্য, রোষ, ক্রোধকে’ নিয়ন্ত্রণ না করি, তাহলে আমরা ঈশ্বরের আত্মাকে দুঃখিত করব। আমরা যদি আমাদের বিরুদ্ধে করা অন্যায়গুলোর হিসাব রাখি, অসন্তুষ্ট মনোভাব প্রকাশ করি এবং যিনি অসন্তুষ্ট করেছেন, তার সঙ্গে পুনরায় সম্মিলিত হতে অসম্মত হই, তাহলেও আমরা ঈশ্বরের আত্মাকে দুঃখিত করব। আমরা যদি এমনকী বাইবেলের পরামর্শও উপেক্ষা করতে শুরু করি, তাহলে আমরা হয়তো এমন বৈশিষ্ট্যগুলো গড়ে তুলতে পারি, যেগুলো আত্মার বিরুদ্ধে পাপ করার দিকে পরিচালিত করতে পারে এবং এর ফলে আমরা মারাত্মক পরিণতিগুলো ভোগ করতে পারি।

১৫. আমাদের প্রতি যদি কোনো অন্যায় করা হয়ে থাকে, তাহলে আমাদের কী করা উচিত?

১৫ আমাদেরকে দয়ালু, করুণচিত্ত বা সমবেদনাময় এবং ক্ষমাশীল হতে হবে। পৌল লিখেছিলেন: “তোমরা পরস্পর মধুরস্বভাব [“দয়ালু,” বাংলা কমন ল্যাঙ্গুয়েজ ভারসন] ও করুণচিত্ত হও, পরস্পর ক্ষমা কর, যেমন ঈশ্বরও খ্রীষ্টে তোমাদিগকে ক্ষমা করিয়াছেন।” (ইফি. ৪:৩২) এমনকী কেউ যদি আমাদের প্রতি কোনো অন্যায় করার কারণে আমরা প্রচণ্ড আঘাত পাই, তাহলে আসুন আমরা ক্ষমা করে দিই, যেমন ঈশ্বর করে থাকেন। (লূক ১১:৪) ধরুন, একজন সহবিশ্বাসী আমাদের সম্বন্ধে নেতিবাচক কিছু বলেছেন। বিষয়গুলো সমাধান করার প্রচেষ্টায় আমরা তার কাছে গিয়েছি। তিনি আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেন এবং ক্ষমা চান। আমরা তাকে ক্ষমা করে দিই কিন্তু আমাদের এর চেয়েও বেশি কিছু করতে হবে। “তুমি আপন জাতির সন্তানদের উপরে প্রতিহিংসা কি দ্বেষ করিও না,” লেবীয় পুস্তক ১৯:১৮ পদ বলে, “বরং আপন প্রতিবাসীকে আপনার মত প্রেম করিবে; আমি সদাপ্রভু।”

সতর্কতা প্রয়োজন

১৬. এমন একটা উদাহরণ দিন, যা দেখায় যে, যিহোবার আত্মাকে দুঃখিত না করার ব্যাপারে আমাদের হয়তো রদবদল করার প্রয়োজন হতে পারে।

১৬ এমনকী একাকী থাকার সময়েও আমরা ঈশ্বরকে অসন্তুষ্ট করে এমন কিছু করার জন্য প্রলুব্ধ হতে পারি। উদাহরণস্বরূপ, একজন ভাই হয়তো আপত্তিকর গানবাজনা শুনে থাকেন। কিন্তু একসময়, ‘বিশ্বস্ত ও বুদ্ধিমান্‌ দাসের’ দ্বারা প্রকাশিত প্রকাশনাগুলোতে প্রাপ্ত বাইবেলের পরামর্শ উপেক্ষা করার কারণে তার বিবেক তাকে দংশন করতে শুরু করে। (মথি ২৪:৪৫) তিনি হয়তো এই সমস্যাটা নিয়ে প্রার্থনা করতে এবং ইফিষীয় ৪:৩০ পদে লিপিবদ্ধ কথাগুলো স্মরণ করতে পারেন। ঈশ্বরের আত্মাকে দুঃখিত করতে পারে এমন কিছু না করার ব্যাপারে দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ হয়ে তিনি এখন থেকে আপত্তিকর গানবাজনা না শোনার সিদ্ধান্ত নেন। যিহোবা সেই ভাইয়ের মনোভাবের ওপর আশীর্বাদ করবেন। তাই, আসুন আমরা ঈশ্বরের আত্মাকে দুঃখিত না করার ব্যাপারে সবসময় সতর্ক থাকি।

১৭. আমরা যদি সতর্ক না থাকি ও প্রার্থনাপূর্ণ মনোভাব বজায় না রাখি, তাহলে কী হতে পারে?

১৭ আমরা যদি সতর্ক না থাকি ও প্রার্থনাপূর্ণ মনোভাব বজায় না রাখি, তাহলে আমরা এমন অশুচি বা মন্দ অভ্যাসের কাছে নতিস্বীকার করে ফেলতে পারি, যেগুলো আত্মাকে দুঃখিত করবে। যেহেতু পিতা তাঁর ব্যক্তিত্বের সঙ্গে মিল রেখে পবিত্র আত্মাকে ব্যবহার করেন, তাই যখন আমরা এই আত্মাকে দুঃখিত করি, তখন আমরা তাঁকেও দুঃখ দিই—নিশ্চিতভাবেই যে-কাজের জন্য আমরা কখনোই দায়ী হতে চাইব না। (ইফি. ৪:৩০) প্রথম শতাব্দীর যিহুদি অধ্যাপকরা পাপের বশবর্তী হয়ে যিশুর অলৌকিক কাজগুলোকে শয়তানের কাজ বলে বর্ণনা করেছিল। (পড়ুন, মার্ক ৩:২২-৩০.) খ্রিস্টের সেই শত্রুরা ‘পবিত্র আত্মার নিন্দা করিয়াছিল’ এবং এভাবে ক্ষমার অযোগ্য পাপ করেছিল। আমরা যেন কখনো সেইরকম কাজ না করি!

১৮. কীভাবে আমরা নির্ণয় করতে পারি যে, আমরা ক্ষমার অযোগ্য পাপ করিনি?

১৮ যেহেতু আমরা ক্ষমার অযোগ্য কোনো পাপই করতে চাই না, তাই আমাদের আত্মাকে দুঃখিত না করার ব্যাপারে পৌল যা বলেছিলেন, সেই কথা মনে রাখতে হবে। কিন্তু, আমরা যদি গুরুতর ভুল করে থাকি, তাহলে? আমরা যদি অনুতপ্ত হয়ে থাকি এবং প্রাচীনদের কাছ থেকে সাহায্য লাভ করে থাকি, তাহলে আমরা এই উপসংহারে আসতে পারি যে, ঈশ্বর আমাদের ক্ষমা করেছেন আর আমরা পবিত্র আত্মার বিরুদ্ধে পাপ করিনি। এ ছাড়া, ঈশ্বরের সাহায্যে আমরা আবারও কোনোভাবে আত্মাকে দুঃখিত করা এড়িয়ে চলতে পারব।

১৯, ২০. (ক) কিছু বিষয় কী, যেগুলো আমাদের এড়িয়ে চলতে হবে? (খ) আমাদের কী করার জন্য দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ হওয়া উচিত?

১৯ ঈশ্বর তাঁর পবিত্র আত্মার মাধ্যমে তাঁর লোকেদের মধ্যে প্রেম, আনন্দ ও একতা বৃদ্ধি করেন। (গীত. ১৩৩:১-৩) তাই, আমাদের গুজবে রত হওয়ার বা আত্মায় নিযুক্ত পালকদের সম্মানকে নষ্ট করে দিতে পারে এমন কিছু বলার দ্বারা আত্মাকে দুঃখিত করা থেকে বিরত হওয়া উচিত। (প্রেরিত ২০:২৮; যিহূদা ৮) এর পরিবর্তে, আমাদের মণ্ডলীর মধ্যে একতা ও পরস্পরের প্রতি সম্মান বৃদ্ধি করতে হবে। নিশ্চিতভাবেই, আমাদের ঈশ্বরের লোকেদের মধ্যে আলাদা আলাদা দল গড়ে তোলার দ্বারা দলভেদকে উসকে দেওয়া উচিত নয়। পৌল লিখেছিলেন: “হে ভ্রাতৃগণ, আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের নামে আমি তোমাদিগকে বিনয় করিয়া বলি, তোমরা সকলে একই কথা বল, তোমাদের মধ্যে দলাদলি না হউক, কিন্তু এক মনে ও এক বিচারে পরিপক্ব হও।”—১ করি. ১:১০.

২০ আমরা যেন যিহোবার আত্মাকে দুঃখিত করা এড়িয়ে চলতে পারি, সেইজন্য তিনি আমাদের সাহায্য করতে ইচ্ছুক এবং সমর্থ। আসুন আমরা ক্রমাগত পবিত্র আত্মা চেয়ে প্রার্থনা করি এবং সেই আত্মাকে দুঃখিত না করার ব্যাপারে দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ হই। আমরা যেন ‘আত্মার উদ্দেশে বুনে’ চলি এবং এখন ও চিরকাল আন্তরিকভাবে এই আত্মার নির্দেশনা অন্বেষণ করে চলি।

আপনি কীভাবে উত্তর দেবেন?

• ঈশ্বরের আত্মাকে দুঃখিত করার অর্থ কী?

• কীভাবে যিহোবার কাছে উৎসর্গীকৃত একজন ব্যক্তি তাঁর আত্মাকে দুঃখিত করতে পারেন?

• কোন কোন উপায়ে আমরা পবিত্র আত্মাকে দুঃখিত করা এড়িয়ে চলতে পারি?

[৩০ পৃষ্ঠার চিত্র]

দ্রুত মতবিরোধ মিটমাট করুন

[৩১ পৃষ্ঠার চিত্র]

আপনার কথাবার্তায় কোন ফল সবচেয়ে ভালোভাবে প্রকাশ পায়?

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৫)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার