আপনি এই প্রতিবন্ধকগুলি কাটিয়ে উঠতে পারেন!
বৃহদাকারের একটি বিমান হয়ত শত শত যাত্রী এবং অনেক টন মাল বহন করে নিয়ে যেতে পারে। কিভাবে, এমন ভারি একটি জাহাজ মাটি ছেড়ে উপরে ওঠে? সরল ভাষায়, উত্তোলনের মাধ্যমে।
যখন বিমান রানওয়ের উপর দিয়ে গতি অর্জন করতে থাকে, তখন বাঁকা পাখাগুলির মধ্য দিয়ে তীব্রগতিতে বায়ু প্রবাহিত হতে থাকে। এর ফলে ঊর্ধ্বমুখী এক চাপের সৃষ্টি হয় যাকে বলা হয় উত্তোলন। যখন যথেষ্ট পরিমাণে উত্তোলন তৈরি হয়ে যায়, তখন বিমানটি মাটি ছেড়ে উড়তে পারে। অবশ্যই, অতিরিক্ত বোঝাই একটি বিমান যথেষ্ট পরিমাণে উত্তোলন গড়ে তুলতে পারে না, ফলে উড়তে পারে না।
আমরা নিজেরাও অত্যন্ত ভারগ্রস্ত হয়ে উঠতে পারি। বহু শতাব্দী আগে রাজা দায়ূদ বলেছিলেন যে তার ‘অপরাধসমূহ ভারী বোঝার ন্যায় তার শক্তি অপেক্ষা ভারী ছিল।’ (গীতসংহিতা ৩৮:৪) একইভাবে, যীশু খ্রীষ্ট জীবিকার চিন্তায় ভারগ্রস্ত হয়ে যাওয়ার বিষয়ে সাবধান করেছিলেন। (লূক ২১:৩৪) নেতিবাচক চিন্তাধারা এবং অনুভূতি আমাদের এমনভাবে ভারাক্রান্ত করে তুলতে পারে যে আমাদের হয়ত “উড়তে” কষ্টকর বলে মনে হতে পারে। আপনি কি সেইভাবে ভারগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন? নাকি আপনার আধ্যাত্মিক অগ্রগতির পথে কিছু বাধা রয়েছে? যদি তাই হয়, তাহলে কী সাহায্যকারী হতে পারে?
আপনি কি একঘেঁয়েমির দ্বারা বিরক্ত হয়ে পড়েছেন?
একঘেঁয়েমিজনিত বিরক্তি—বর্তমানের দিনের জন্য একটি সাধারণ নালিশ—একটি মানসিক প্রতিবন্ধক হয়ে উঠতে পারে, এমনকি কিছু যিহোবার লোকেদের ক্ষেত্রে। বিশেষকরে অল্প বয়স্কদের কিছু কাজকর্মকে একঘেঁয়েমি বলে উপেক্ষা করার প্রবণতা রয়েছে। আপনি কি কয়েক সময়ে খ্রীষ্টীয় সভাগুলি সম্পর্কে ওই রকম অনুভব করেন? যদি তাই হয়, তাহলে আপনার সভায় উপস্থিতিকে উদ্দীপিত করার জন্য আপনি কী করতে পারেন?
সভাতে অংশ নেওয়াই হল এর চাবিকাঠি। পৌল যুবক তীমথিয়কে লিখেছিলেন: “ভক্তিতে দক্ষ হইতে অভ্যাস কর; কেননা শারীরিক দক্ষতার অভ্যাস অল্প বিষয়ে সুফলদায়ক হয়; কিন্তু ভক্তি সর্ব্ববিষয়ে সুফলদায়িকা, তাহা বর্ত্তমান এবং ভবিষ্যৎ জীবনের প্রতিজ্ঞাযুক্ত।” (১ তীমথিয় ৪:৮) শারীরিক ব্যায়ামের একটি বই হয়ত বিরক্তিকর অথবা তার মূল্য সীমিত মনে হতে পারে, যদি সেখানে দেওয়া নির্দেশগুলি আমরা অনুশীলন না করি। খ্রীষ্টীয় সভাগুলির আয়োজন করা হয়েছে আমাদের মনের অনুশীলন করার জন্য এবং আমরা তা করব যদি প্রস্তুত হয়ে যাই ও তাতে অংশ নিই। এইধরনের অংশগ্রহণ সভাগুলিকে আরও পুরস্কারদায়ক এবং আগ্রহজনক করে তুলবে।
এবিষয়ে মারা নামক একজন যুবতী খ্রীষ্টীয় নারী বলেছিলেন: “আমি যদি সভাগুলির জন্য প্রস্তুত হয়ে না যাই, তাহলে আমি সেগুলি উপভোগ করি না। কিন্তু, যখন আমি আগে থেকে প্রস্তুত হয়ে যাই, তখন মন এবং হৃদয় দিয়ে তা আরও গ্রহণ করতে পারি। সভাগুলি আরও অর্থপূর্ণ হয়ে ওঠে এবং আমি মন্তব্য করার জন্য অপেক্ষা করে থাকি।”
শ্রবণ করতে শেখাও সাহায্যকারী হবে। একটি মধুর সঙ্গীত শোনা সহজ এবং তাৎক্ষণিক আনন্দদায়ক। কিন্তু সকল পরিতোষই সঙ্গে সঙ্গে আসে না। আমরা সভা থেকে পরিতৃপ্তি পাই, কেবলমাত্র যখন আমরা গভীরভাবে সেখানে কী বলা হচ্ছে তা শুনি। রেচেল নামে একজন খ্রীষ্টান লক্ষ্য করেছিলেন: “যখন বক্তা প্রাণবন্ত হন না, তখন আমাকে অনেক কষ্ট করে মনোযোগ দিতে হয়। ‘আমার পন্থা হল, বক্তৃতা যত কম আগ্রহজনক হয়, আমাকে তত অধিক মনোযোগ দিতে হবে।’ . . . আমি শাস্ত্রের প্রতি বিশেষ মনোযোগ দিই এবং সেখান থেকে যতটা সম্ভব ততটা জ্ঞান সঞ্চয় করার চেষ্টা করি।” মনোযোগ দিয়ে শোনার জন্য রেচেলের মত আমাদের নিজেদের শাসন করার প্রয়োজন আছে। হিতোপদেশের পুস্তক আমাদের জানায়: “বৎস, আমার প্রজ্ঞায় অবধান কর, আমার বুদ্ধির প্রতি কর্ণপাত কর।”—হিতোপদেশ ৫:১.
সভাগুলিতে কিছু কিছু তথ্যের উপস্থাপন, হয়ত আগে অনেকবার হয়ে গিয়েছে। এটা করা প্রয়োজন! ঈশ্বরের সকল দাসকেই স্মরণ করিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন আছে। অসিদ্ধ দেহ এবং তার অভিলাষ সকল এবং ত্রুটিপূর্ণ স্মরণশক্তির, সকল রকমের প্রাপ্য সাহায্যের প্রয়োজন। প্রেরিত পিতরের ‘সর্বদা তার সহবিশ্বাসীদের কিছু বিষয় স্মরণ করিয়ে দেওয়ার ছিল, যদিও তারা এ সকল জানত এবং সত্যে সুস্থির ছিল।’ (২ পিতর ১:১২) যীশুও ব্যাখ্যা করে বলেছিলেন যে “প্রত্যেক অধ্যাপক এমন গৃহকর্ত্তার তুল্য, যে আপন ভাণ্ডার হইতে নূতন এবং পুরাতন দ্রব্য বাহির করে।” (মথি ১৩:৫২) তাই, যখন সভাতে কোন পরিচিত চিন্তাধারা অর্থাৎ ‘পুরাতন দ্রব্যের’ বিষয় আলোচনা করা হয়, তখন সর্বদাই সেখানে ‘নূতন দ্রব্যের’ কিছু থাকে আমাদের আনন্দ দেওয়ার জন্য।
সভাগুলি থেকে পূর্ণ সুযোগসুবিধা লাভ করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার ফল আধ্যাত্মিকভাবে প্রকৃত উত্তোলন হতে পারে। “ধন্য, যারা তাদের আধ্যাত্মিক বিষয়ে সচেতন [যারা আত্মার জন্য ভিক্ষে করে বেড়ায়],” যীশু বলেছিলেন। (মথি ৫:৩; NW, পাদটীকা) সভাগুলিতে যে স্বাস্থ্যকর আধ্যাত্মিক খাদ্য যোগান হয়, তার প্রতি এইধরনের মনোভাব রাখলে একঘেঁয়েমির অবসান ঘটবে।—মথি ২৪:৪৫-৪৭.
খারাপ উদাহরণ দেখে নিরুৎসাহিত হয়েছেন?
আপনার মণ্ডলীতে কারও আচরণে কি আপনি কখনও বিব্রত হয়ে পড়েছেন? আপনি হয়ত আশ্চর্য হয়ে গিয়েছেন, ‘কিভাবে একজন ভাই ওই রকম ব্যবহার করতে পারে, অথচ সুনাম অর্জন করতে পারে?’ এইধরনের দৃষ্টিভঙ্গি হয়ত আমাদের মানসিক প্রতিবন্ধক হয়ে উঠতে পারে, যা ঈশ্বরের লোকেদের সাথে আমাদের আনন্দদায়ক মেলামেশার গুরুত্বকে বুঝতে দিতে নাও পারে।—গীতসংহিতা ১৩৩:১.
কলসীয় মণ্ডলীর কিছু সদস্যের হয়ত এই একই সমস্যা ছিল। পৌল তাদের পরামর্শ দিয়েছিলেন: “পরস্পর সহনশীল হও, এবং যদি কাহাকেও দোষ দিবার কারণ থাকে, তবে পরস্পর ক্ষমা কর।” (কলসীয় ৩:১৩) পৌল উপলব্ধি করেছিলেন যে কিছু কলসীর খ্রীষ্টান হয়ত খারাপ আচরণ করেছিল এবং যার ফলে হয়ত অপরকে প্রকৃতই অভিযোগ করার কারণ দিয়েছিল। সুতরাং আমাদের অহেতুক আশ্চর্য হওয়ার কারণ নেই, যদি কখনও কখনও আমাদের কোন ভাই বা বোন খ্রীষ্টীয় কিছু গুণ প্রতিফলিত করতে অকৃতকার্য হয়। গুরুতর সমস্যাগুলি সমাধান করার ক্ষেত্রে যীশু উত্তম উপদেশ দিয়েছিলেন। (মথি ৫:২৩, ২৪; ১৮:১৫-১৭) কিন্তু অধিকাংশ সময়ে, আমাদের সহবিশ্বাসীদের সীমাবদ্ধতা বিবেচনা করে আমাদের ক্ষমা করে দেওয়া উচিত। (১ পিতর ৪:৮) বস্তুতপক্ষে, এইধরনের মনোভাব হয়ত আমাদের নিজেদের এবং অন্যদের জন্য মঙ্গলজনক হতে পারে। এমন কেন?
“মানুষের বুদ্ধি তাহাকে ক্রোধে ধীর করে, আর দোষ ছাড়িয়া দেওয়া তাহার শোভা,” হিতোপদেশ ১৯:১১ পদ জানায়। রাগ এবং অসন্তোষকে বাড়তে দেওয়ার পরিবর্তে ক্ষমা করে দেওয়া কতই না উত্তম! স্যালভেডর, একজন প্রাচীন যিনি তার প্রেমপূর্ণ মনোভাবের জন্য পরিচিত, বলেছিলেন: “যখন কোন ভাই আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করে অথবা অশোভনীয় কিছু বলে, তখন আমি নিজেকে প্রশ্ন করি: ‘আমি কিভাবে আমার ভাইকে সাহায্য করতে পারি? তার সাথে আমার মহামূল্য সম্পর্ককে আমি কিভাবে বজায় রাখতে পারি?’ আমি সবসময়েই সচেতন যে ভুল কথা বলা কত সহজ। কেউ যদি অবিবেচকের মত কথা বলে, তাহলে প্রকৃত সমাধান হল যে, সে যা বলেছে তা ফিরিয়ে নেওয়া এবং নতুন করে সম্পর্ক স্থাপন করা। কিন্তু তা অসম্ভব, তাই আমি পরবর্তী উত্তম পদক্ষেপটি নিই এবং তার মন্তব্যকে অগ্রাহ্য করি। এটিকে আমার ভাইয়ের প্রকৃত ব্যক্তিত্বের প্রকাশ মনে করার পরিবর্তে আমি অসিদ্ধ দেহের আকস্মিক আবেগপূর্ণ উক্তি বলে মনে করি।”
আপনি হয়ত মনে করতে পারেন যে, তা করার থেকে বলা হয়ত সহজ। কিন্তু সবকিছুই নির্ভর করছে কিভাবে আমরা আমাদের চিন্তাধারাকে পরিচালিত করি। “যাহা যাহা প্রীতিজনক, . . . সেই সকল আলোচনা কর,” প্রেরিত পৌল উপদেশ দিয়েছিলেন। (ফিলিপীয় ৪:৮) “প্রীতিজনক” কথাটিক অর্থ হল “স্নেহ-প্রবৃত্তকারী।” যিহোবা চান যে মানুষের মধ্যে যা উত্তম, আমরা যেন সেই সকল বিষয় বিবেচনা করি, যে সব বিষয় স্নেহ প্রদর্শন করে, বিরক্তি নয়। এবিষয়ে তিনি নিজেই সর্বোচ্চ উদাহরণ প্রদান করেন। এই বলে গীতরচক আমাদের স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলেন: “হে সদাপ্রভু, তুমি যদি অপরাধ সকল ধর, তবে হে প্রভু, কে দাঁড়াইতে পারিবে?”—গীতসংহিতা ১০৩:১২; ১৩০:৩;
এ কথা সত্য যে, কখনও কখনও একজন ভাইয়ের আচরণ হয়ত আমাদের নিরুৎসাহ করতে পারে, কিন্তু আমাদের সহউপাসকদের অধিকাংশই খ্রীষ্টীয় জীবনের এক উত্তম উদাহরণ স্থাপন করে। এ কথা যদি আমরা স্মরণে রাখি, তাহলে দায়ূদের মত আমরাও ‘সদাপ্রভুর অতিশয় স্তব করে, লোকারণ্যের মধ্যে তাঁহার প্রশংসা করে, সুখী হব।’—গীতসংহিতা ১০৯:৩০.
সাক্ষী হওয়া কি খুব কষ্টকর বলে মনে হয়?
দুঃখের বিষয় যে অন্য একটি মানসিক প্রতিবন্ধকের জন্য কেউ কেউ এখনও যিহোবাকে প্রশংসা করতে শুরু করেনি। বহু ব্যক্তি যারা যিহোবার সাক্ষী নন, তারা দায়িত্বের সাথে তাদের পরিবারের দেখাশুনা করেন এবং এমনকি তাদের স্ত্রীদের খ্রীষ্টীয় পরিচর্যায় সহায়তা করে থাকেন। তারা হলেন বন্ধুত্বপরায়ণ এবং মণ্ডলীর প্রতি আগ্রহ প্রদর্শন করেন, কিন্তু তারা ঈশ্বরের উৎসর্গীকৃত দাস হতে পিছিয়ে যান। কী তাদের পিছনে সরিয়ে রাখে?
একটা সমস্যা হতে পারে যে এই সব স্বামীরা তাদের স্ত্রীদের ব্যস্ত ঈশ্বতান্ত্রিক কাজকর্ম লক্ষ্য করেন এবং মনে করেন যে সাক্ষী হওয়া হল অনেক বেশি চাওয়া। অথবা তারা ভয় পান যে তারা হয়ত গৃহ থেকে গৃহে প্রচার কাজ করতে পারবেন না। তাদের দৃষ্টিভঙ্গিতে দায়িত্ব যেন তাদের কাছে আশীর্বাদের কম গুরুত্বপূর্ণ। এমন মানসিক প্রতিবন্ধক কেন? অধিকাংশ বাইবেল ছাত্রেরা সত্য শিখতে এবং প্রয়োগ করতে সময় নেয়। কিন্তু অবিশ্বাসী স্বামীরা খ্রীষ্টীয় দায়িত্ব সম্বন্ধে সম্পূর্ণরূপে অবগত থাকেন, সেগুলি গ্রহণ করার জন্য প্রেরণা গড়ে তোলার আগেই।
ম্যানুয়েল, যিনি এমন এক পরিস্থিতিতে ছিলেন, ব্যাখ্যা করে বলেন: “দশ বছর ধরে অধিবেশন এবং সভাগুলিতে আমি আমার স্ত্রীর সঙ্গে গিয়েছিলাম। সত্য কথা বলতে কী জগতের লোকেদের চাইতে আমি সাক্ষীদের সঙ্গ পছন্দ করতাম এবং তাদের সাহায্য করতে আমি আনন্দ পেতাম। তাদের মধ্যে যে প্রেম তা দেখে আমি অভিভূত হতাম। কিন্তু গৃহ থেকে গৃহে কাজ করার ধারণাটা আমার কাছে ছিল প্রতিবন্ধকস্বরূপ, আর আমি ভয় পেতাম যে আমার সহকর্মীরা টিটকারি দেবে।
“আমার স্ত্রী আমার সাথে ধৈর্য ধরে ছিল এবং কখনও আমাকে বাইবেল পড়ার জন্য জোর করেনি। সে এবং ছেলেমেয়েরা তাদের উত্তম উদাহরণের দ্বারা ‘প্রচার’ কাজ করত। মণ্ডলীর একজন প্রাচীন, হোসে আমার প্রতি বিশেষ আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। আমার মনে হয় যে তার থেকে উৎসাহ পেয়েই আমি গুরুত্বের সাথে বাইবেল অধ্যয়ন শুরু করেছিলাম। বাপ্তিস্ম নেওয়ার পর আমি উপলব্ধি করেছিলাম যে অন্য কিছুর চাইতে আমার মনই ছিল আমার কাছে সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধক। একবার যখন আমি যিহোবাকে সেবা করার মনস্থির করে নিয়েছি, তখনই ভয় অতিক্রম করতে তাঁর সাহায্য আমি অনুভব করি।”
স্ত্রীরা এবং খ্রীষ্টীয় প্রাচীনেরা কিভাবে ম্যানুয়েলের মত স্বামীদের মানসিক প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করতে সাহায্য করতে পারেন? একটি বাইবেল অধ্যয়ন হয়ত উপলব্ধি এবং ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করতে আকাঙ্ক্ষা গড়ে তুলতে পারে। অবশ্যই, শাস্ত্র সম্পর্কে যথাযথ জ্ঞান বিশ্বাস প্রদর্শন করার এবং ভবিষ্যতে আশার বিষয়ে আস্থার জন্য ভিত্তিস্বরূপ।—রোমীয় ১৫:১৩.
এইধরনের স্বামীদের একটি বাইবেল অধ্যয়ন গ্রহণ করতে কী উৎসাহিত করবে? প্রায়ই, মণ্ডলীতে একজন বোধশক্তি সম্পন্ন ভাইয়ের সাথে বন্ধুত্ব হয়ত বিষয়টির মীমাংসা করে দিতে পারে। হয়ত একজন প্রাচীন অথবা অন্য কোন অভিজ্ঞ ভাই সেই স্বামীকে জানার প্রয়াস করতে পারেন। একবার উত্তম সম্পর্ক গড়ে ওঠার পরে শুধুমাত্র এইটাই করার প্রয়োজন যে, কেউ তাকে একটি বাইবেল অধ্যয়ন করার জন্য আমন্ত্রণ জানায়। (১ করিন্থীয় ৯:১৯-২৩) ইতিমধ্যে, বুদ্ধিমতী খ্রীষ্টীয় স্ত্রী তার অবিশ্বাসী স্বামীর সাথে সামান্য আধ্যাত্মিক খাদ্য বন্টন করে নিতে পারে, এই জেনে যে সে হয়ত চাপে পড়ে সাড়া দেবে না।—হিতোপদেশ ১৯:১৪.
ম্যানুয়েল যেমন তার অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছে যে একজন ব্যক্তি যখন আধ্যাত্মিক শক্তি অর্জন করে, তখন পাহাড়তুল্য প্রতিবন্ধকগুলি সামান্য বলে মনে হয়। যারা তাঁকে সেবা করতে চায়, যিহোবা তাদের প্রাণবন্ত করে তোলেন। (যিশাইয় ৪০:২৯-৩১) ঈশ্বরের শক্তিতে এবং পরিপক্ব সাক্ষীদের সহায়তায় প্রতিবন্ধকগুলি দূর করা যেতে পারে। যখন সম্পূর্ণ হৃদয়ে পরিচর্যা আরও আগ্রহজনক হয়ে ওঠে, তখন গৃহ থেকে গৃহে কাজ করা কম দমনীয় আর সহকর্মীরা কম ভয় প্রদর্শনকারী বলে মনে হবে।—যিশাইয় ৫১:১২; রোমীয় ১০:১০.
গতিবেগকে বজায় রাখা
যে তিনটি বাধা আলোচনা করা হয়েছে, তা দূর করা সম্ভব। যখন একটি বিমান মাটি ছেড়ে উপরে উঠতে শুরু করে, তখন সাধারণত ইঞ্জিন থেকে সবচেয়ে বেশি শক্তির এবং সেই সঙ্গে বিমানচালক দলের একান্ত মনোযোগের প্রয়োজন হয়। উঠার সময়ে সবচেযে বেশি তেলের প্রয়োজন হয়, অন্য যে কোন সময়ের চেয়ে। একইভাবে, নেতিবাচক চিন্তাধারা এবং অনুভূতিগুলিকে জয় করার জন্য প্রয়োজন সবচেয়ে বেশি প্রচেষ্টা এবং একাগ্রতা। শুরু করার সময়টা হয়ত সবচেয়ে বেশি কষ্টকর পর্যায় হতে পারে, কিন্তু একবার গতিবেগ নিলে পর এগিয়ে যাওয়া সহজ হয়।—তুলনা করুন ২ পিতর ১:১০.
শাস্ত্র ভিত্তিক উৎসাহদানকে সত্বর প্রয়োগ করলে অগ্রগতিকে অব্যাহত রাখা যায়। (গীতসংহিতা ১১৯:৬০) আমরা নিশ্চিত হতে পারি যে মণ্ডলী সাহায্য করতে চাইবে। (গালাতীয় ৬:২) কিন্তু, সবার উপরে গুরুত্বপূর্ণ হল যিহোবা ঈশ্বরের সাহায্য। যেমন দায়ূদ বলেছিলেন: “ধন্য প্রভু, যিনি দিন দিন আমাদের ভার বহন করেন।” (গীতসংহিতা ৬৮:১৯) যখন আমরা প্রার্থনায় কথা বলি, আমাদের বোঝা হালকা হয়।
কখনও কখনও মেঘাচ্ছন্ন অবস্থায় বিমান উড়তে শুরু করে এবং মেঘস্তরের মধ্য দিয়ে যায় এবং তারপরে আবার উজ্জ্বল সূর্যালোকে উড়তে থাকে। আমরাও নেতিবাচক চিন্তাধারাগুলিকে পিছনে ফেলে এগিয়ে চলতে পারি। ঐশিক সহায়তায় আমরা মেঘস্তরের প্রতিবন্ধকগুলিকে দূর করতে পারি এবং পৃথিবীব্যাপী যিহোবার উপাসকদের পরিবারে উজ্জ্বল আনন্দময় পরিবেশে আনন্দ উপভোগ করতে পারি।
[Pictures on page 23]
যিহোবার সহায়তায় আমরা মানসিক প্রতিবন্ধকগুলি কাটিয়ে উঠতে পারি