ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w০২ ১১/১৫ পৃষ্ঠা ১৪-১৯
  • একযোগে সেবা করে চলুন

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • একযোগে সেবা করে চলুন
  • ২০০২ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • পক্ষপাতিত্বের কোন স্থান নেই
  • বচসা থেকে মুক্ত হোন
  • অপবাদের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকুন
  • বিচার করবেন না!
  • দুর্বল কিন্তু সমাদরের
  • একযোগে সেবা করে চলুন
  • “বচসা” করবেন না
    ২০০৬ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • মণ্ডলীর ইতিবাচক মনোভাব রক্ষা করুন
    ২০১২ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • যিহোবার সংগঠনের উত্তম উত্তম দ্রব্যের ওপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করুন
    ২০০৬ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • ‘সমস্ত পৃথিবীতে এক ভাষা ছিল’
    আমাদের খ্রিস্টীয় জীবন ও পরিচর্যা—সভার জন্য অধ্যয়ন পুস্তিকা ২০২০
আরও দেখুন
২০০২ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w০২ ১১/১৫ পৃষ্ঠা ১৪-১৯

একযোগে সেবা করে চলুন

“আমি জাতিগণকে বিশুদ্ধ ওষ্ঠ দিব, যেন তাহারা সকলেই সদাপ্রভুর [“যিহোবার,” NW] নামে ডাকে ও একযোগে তাঁহার আরাধনা করে।”—সফনিয় ৩:৯.

১. সফনিয় ৩:৯ পদের পরিপূর্ণতায় কী ঘটছে?

সারা পৃথিবীতে এখন প্রায় ৬,০০০ ভাষায় কথা বলা হয়। এ ছাড়া, অনেক উপভাষা বা স্থানীয় ভাষা রয়েছে। কিন্তু, লোকেরা যে-বিভিন্ন ভাষায়ই কথা বলুক না কেন, যেমন আরবি এবং হিন্দি, যিহোবা এমন কিছু সম্পাদন করেছেন, যা সত্যিই উল্লেখযোগ্য। তিনি সমস্ত জায়গার লোকেদের জন্য একটা ও একমাত্র বিশুদ্ধ ওষ্ঠ শেখা এবং বলা সম্ভবপর করেছেন। এটা ভাববাদী সফনিয়ের মাধ্যমে দেওয়া প্রতিজ্ঞার পরিপূর্ণতা হিসেবে ঘটছে: “আমি [যিহোবা ঈশ্বর] জাতিগণকে বিশুদ্ধ ওষ্ঠ দিব, যেন তাহারা সকলেই যিহোবার নামে ডাকে ও একযোগে তাঁহার আরাধনা করে।”—সফনিয় ৩:৯.

২. “বিশুদ্ধ ওষ্ঠ” কী এবং এটা কী সম্ভবপর করেছে?

২ “বিশুদ্ধ ওষ্ঠ” হল ঈশ্বরের বাক্যের সত্য, যা তাঁর বাক্য বাইবেলে পাওয়া যায়। বিশেষ করে এটা হল ঈশ্বরের রাজ্য সম্বন্ধে সত্য, যা যিহোবার নামকে পবিত্র করবে, তাঁর সার্বভৌমত্বকে প্রতিপাদন করবে এবং মানবজাতির জন্য আশীর্বাদ নিয়ে আসবে। (মথি ৬:৯, ১০) সমস্ত জাতি এবং বংশের লোকেরা পৃথিবীতে আধ্যাত্মিক দিক দিয়ে একমাত্র শুদ্ধ ভাষা, বিশুদ্ধ ওষ্ঠে কথা বলে। এটা তাদের “একযোগে” যিহোবাকে সেবা করতে সক্ষম করে। এভাবে তারা ঐক্যবদ্ধভাবে বা “একমতে” তাঁকে সেবা করে।—দ্যা নিউ ইংলিশ বাইবেল।

পক্ষপাতিত্বের কোন স্থান নেই

৩. কী আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে যিহোবাকে সেবা করতে সক্ষম করেছে?

৩ খ্রীষ্টান হিসেবে আমরা কৃতজ্ঞ যে আমাদের মধ্যে বিভিন্ন ভাষার লোকেদের সহযোগিতা আছে। যদিও আমরা অনেক ভাষায় রাজ্যের সুসমাচার প্রচার করি কিন্তু আমরা একতাবদ্ধভাবে ঈশ্বরের সেবা করি। (গীতসংহিতা ১৩৩:১) এটা সম্ভবপর কারণ পৃথিবীর যেখানেই আমরা বাস করি না কেন, যিহোবার প্রশংসা করার জন্য আমরা একটা বিশুদ্ধ ওষ্ঠ ব্যবহার করি।

৪. ঈশ্বরের লোকেদের মধ্যে কেন কোন পক্ষপাতিত্ব থাকবে না?

৪ ঈশ্বরের লোকেদের মধ্যে অবশ্যই কোন পক্ষপাতিত্ব থাকবে না। প্রেরিত পিতর এই বিষয়টা স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন, যখন সা.কা. ৩৬ সালে তিনি পরজাতীয় শতপতি কর্ণীলিয়ের বাড়িতে প্রচার করেছিলেন এবং এই বলতে পরিচালিত হয়েছিলেন: “আমি সত্যই বুঝিলাম, ঈশ্বর মুখাপেক্ষা [“পক্ষপাতিত্ব,” NW] করেন না; কিন্তু প্রত্যেক জাতির মধ্যে যে কেহ তাঁহাকে ভয় করে ও ধর্ম্মাচরণ করে, সে তাঁহার গ্রাহ্য হয়।” (প্রেরিত ১০:৩৪, ৩৫) এটা যেহেতু সত্যি তাই খ্রীষ্টীয় মণ্ডলীতে পক্ষপাতিত্ব, দলভেদ বা প্রিয় ব্যক্তির প্রতি বিশেষ অনুগ্রহ দেখানোর কোন স্থান নেই।

৫. মণ্ডলীতে দলাদলি সৃষ্টি করা কেন ভুল?

৫ একজন কলেজ ছাত্র কিংডম হলে তার পরিদর্শন সম্বন্ধে বলে: “সাধারণত গির্জাগুলো, একটা নির্দিষ্ট জাতি বা উপজাতিগত দলের লোকেদের আহ্বান জানায়। . . . যিহোবার সাক্ষিরা নির্দিষ্ট কোন দলের সঙ্গে নয় বরং একসঙ্গে বসেছিল।” কিন্তু, প্রাচীন করিন্থের মণ্ডলীতে কিছু সদস্য দল পাকিয়েছিল। এভাবে মতবিরোধের সৃষ্টি করে তারা ঈশ্বরের পবিত্র আত্মার কাজের বিরোধিতা করেছিল কারণ এটা একতা এবং শান্তি বাড়ায়। (গালাতীয় ৫:২২) আমরা যদি মণ্ডলীর মধ্যে দলভেদ সৃষ্টি করি, তা হলে আমরা আত্মার নেতৃত্বের বিরুদ্ধে কাজ করব। তাই আসুন, আমরা করিন্থীয়দের প্রতি বলা পৌলের কথাগুলো মনে রাখি: “হে ভ্রাতৃগণ, আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের নামে আমি তোমাদিগকে বিনয় করিয়া বলি, তোমরা সকলে একই কথা বল, তোমাদের মধ্যে দলাদলি না হউক, কিন্তু এক মনে ও এক বিচারে পরিপক্ব হও।” (১ করিন্থীয় ১:১০) ইফিষীয়দের কাছে লেখা চিঠিতেও পৌল একতার ওপর জোর দিয়েছিলেন।—ইফিষীয় ৪:১-৬, ১৬.

৬, ৭. পক্ষানুরাগ সম্বন্ধে যাকোব কোন্‌ পরামর্শ দিয়েছিলেন এবং কীভাবে তার কথাগুলো কাজে লাগে?

৬ খ্রীষ্টানদের কাছে সবসময়ই নিরপেক্ষতা আশা করা হয়। (রোমীয় ২:১১) কারণ প্রথম শতাব্দীতে মণ্ডলীর কেউ কেউ ধনী ব্যক্তিবিশেষের প্রতি পক্ষপাতিত্বের মনোভাব দেখিয়েছিল বলে শিষ্য যাকোব লিখেছিলেন: “হে আমার ভ্রাতৃগণ, তোমরা আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের—প্রতাপের প্রভুর—বিশ্বাস মুখাপেক্ষার [“পক্ষানুরাগের,” NW] সহিত ধারণ করিও না। কেননা যদি তোমাদের সমাজগৃহে স্বর্ণময় অঙ্গুরীয়ে ও শুভ্র বস্ত্রে ভূষিত কোন ব্যক্তি আইসে, এবং মলিন বস্ত্র পরিহিত কোন দরিদ্রও আইসে, আর তোমরা সেই শুভ্রবস্ত্র পরিহিত ব্যক্তির মুখ চাহিয়া বল, ‘আপনি এখানে উত্তম স্থানে বসুন,’ কিন্তু সেই দরিদ্রকে যদি বল, ‘তুমি ওখানে দাঁড়াও, কিম্বা আমার পাদপীঠের তলে বস,’ তাহা হইলে তোমরা কি আপনাদের মধ্যে ভেদাভেদ করিতেছ না, এবং মন্দ বিতর্কে লিপ্ত বিচারকর্ত্তা হইতেছ না?”—যাকোব ২:১-৪.

৭ ধনী অবিশ্বাসী ব্যক্তিরা যদি স্বর্ণের আংটি এবং জমকাল পোশাক পরে খ্রীষ্টীয় সভাতে আসত ও সেইসঙ্গে গরীব অবিশ্বাসীরা ময়লা জামাকাপড় পরে আসত, তা হলে ধনী ব্যক্তিদের প্রতি এক বিশেষ আচরণ দেখানো হতো। তাদের ‘উত্তম স্থান’ দেওয়া হতো কিন্তু গরীব ব্যক্তিদের দাঁড়িয়ে থাকতে বা মেঝেতে কারও পায়ের কাছে বসতে বলা হতো। কিন্তু, ঈশ্বর পক্ষপাতহীনভাবে ধনী-গরিব নির্বিশেষে সকলের জন্য যীশুর মুক্তির মূল্য জুগিয়েছেন। (ইয়োব ৩৪:১৯; ২ করিন্থীয় ৫:১৪) তাই, আমরা যদি যিহোবাকে খুশি করতে চাই এবং একযোগে তাঁর সেবা করতে চাই, তা হলে আমাদের পক্ষানুরাগ দেখানো বা ‘আমাদের লাভার্থে মনুষ্যদের তোষামোদ করা’ উচিত নয়।—যিহূদা ৪, ১৬.

বচসা থেকে মুক্ত হোন

৮. ইস্রায়েলীয়দের বচসার ফলে কী হয়েছিল?

৮ আমাদের মধ্যে একতা বজায় রাখার জন্য এবং সবসময় ঐশিক অনুগ্রহ পেতে হলে আমাদের পৌলের পরামর্শে মনোযোগ দিতে হবে: “তোমরা বচসা . . . বিনা সমস্ত কার্য্য কর।” (ফিলিপীয় ২:১৪, ১৫) অবিশ্বাসী ইস্রায়েলীয়রা মিশরের দাসত্ব থেকে মুক্ত হয়ে মোশি ও হারোণের বিরুদ্ধে বচসা করেছিল এবং এভাবে যিহোবার বিরুদ্ধেও বচসা করেছিল। এই কারণে যিহোশূয় ও কালেব এবং লেবীয়রা ছাড়া, ২০ বছর ও তার উর্ধ্বে সমস্ত লোক প্রতিজ্ঞাত দেশে প্রবেশ করতে পারেনি, কিন্তু প্রান্তরে ইস্রায়েলীয়দের সুদীর্ঘ ৪০ বছর যাত্রার সময় মারা গিয়েছিল। (গণনাপুস্তক ১৪:২, ৩, ২৬-৩০; ১ করিন্থীয় ১০:১০) বচসার জন্য তাদের কী মূল্যই না দিতে হয়েছিল!

৯. মরিয়ম তার বচসার জন্য কী ভোগ করেছিলেন?

৯ এটা দেখায় যে, সমস্ত বচসাকারী জাতির কী হতে পারে। ব্যক্তিবিশেষের বচসা সম্বন্ধে কী বলা যায়? মোশির বোন মরিয়ম ও সেইসঙ্গে তার ভাই হারোণ বচসা করে বলেছিল: “সদাপ্রভু কি কেবল মোশির সহিত কথা কহিয়াছেন? আমাদের সহিত কি কহেন নাই?” বিবরণ আরও বলে: “এ কথা সদাপ্রভু শুনিলেন।” (গণনাপুস্তক ১২:১, ২) পরিণতি কী হয়েছিল? মরিয়ম, স্পষ্টতই যিনি এই অভিযোগে নেতৃত্ব নিয়েছিলেন, তিনি ঈশ্বরের দ্বারা অবমানিত হয়েছিলেন। কীভাবে? কুষ্ঠ দ্বারা আক্রান্ত হয়ে এবং শুচি না হওয়া পর্যন্ত সাত দিন ধরে শিবিরের বাইরে থাকার মাধ্যমে।—গণনাপুস্তক ১২:৯-১৫.

১০, ১১. দমন করা না হলে, বচসা কোন্‌ পরিণতি নিয়ে আসতে পারে? উদাহরণ দিন।

১০ বচসা শুধু কোন ভুল কাজের বিরুদ্ধে একটা অভিযোগই নয়। নাছোড়বান্দা বচসাকারীরা তাদের অনুভূতি এবং অবস্থানকে এত বেশি গুরুত্ব দেয় যে, ঈশ্বরের চেয়ে বরং নিজেদের বেশি প্রাধান্য দেয়। দমন না করা হলে, তা আধ্যাত্মিক ভাইবোনদের মধ্যে মতবিরোধ নিয়ে আসে এবং একযোগে যিহোবাকে সেবা করার ক্ষেত্রে তাদের বাধা দেয়। এর কারণ বচসাকারীরা অনবরত অভিযোগ করেই যায় এই আশা নিয়ে যে, নিঃসন্দেহে অন্যেরা তাদের প্রতি সহানুভূতি দেখাবে।

১১ উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, কেউ কেউ হয়তো মণ্ডলীর কোন প্রাচীনের ভূমিকা বা যত্ন নেওয়ার বিষয়ে তার দায়িত্বের সমালোচনা করতে পারে। আমরা যদি অভিযোগকারীর প্রতি কান দিই, তা হলে আমরাও হয়তো তার মতো করে চিন্তা করতে শুরু করতে পারি। আমাদের মনে সেই অসন্তুষ্টকর মনোভাবের বীজ বপন করার আগে পর্যন্ত সেই প্রাচীনের কার্যকলাপ হয়তো আমাদের বিরক্ত করেনি কিন্তু এখন তা করে। পরে, সেই প্রাচীনের কোন কাজই আমাদের চোখে সঠিক বলে মনে হবে না এবং আমরাও হয়তো তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা শুরু করতে পারি। এইধরনের আচরণ যিহোবার লোকেদের মণ্ডলীর মধ্যে থাকা ঠিক নয়।

১২. বচসা ঈশ্বরের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের ওপর কোন্‌ প্রভাব ফেলতে পারে?

১২ যে-লোকেদের ঈশ্বরের পালকে নেতৃত্ব দেওয়ার দায়িত্ব রয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে বচসা করা গালিগালাজের দিকে নিয়ে যায়। এইধরনের বচসা বা অপবাদের সঙ্গে তাদের ওপর ধিক্কার নিয়ে আসা, যিহোবার সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। (যাত্রাপুস্তক ২২:২৮) অনুতপ্তহীন কটুভাষী ব্যক্তিরা ঈশ্বরের রাজ্যের অধিকারী হবে না। (১ করিন্থীয় ৫:১১; ৬:১০) শিষ্য যিহূদা বচসাকারীদের সম্বন্ধে লিখেছিলেন যারা “প্রভুত্ব অগ্রাহ্য করে, এবং যাহারা গৌরবের পাত্র তাহাদের” বা মণ্ডলীতে দায়িত্ববান ব্যক্তিদের, “নিন্দা করে।” (যিহূদা ৮) ওই বচসাকারীদের ঐশিক অনুমোদন নেই এবং আমরা বিজ্ঞতার সঙ্গে তাদের দুষ্ট কাজ এড়িয়ে চলব।

১৩. কেন সমস্ত অভিযোগই ভুল নয়?

১৩ কিন্তু, সমস্ত অভিযোগই ঈশ্বরকে অখুশি করে না। তিনি সদোম ও ঘমোরার “ক্রন্দন” উপেক্ষা করেননি তবে সেই দুষ্ট নগরগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছিলেন। (আদিপুস্তক ১৮:২০, ২১; ১৯:২৪, ২৫) যিরূশালেমে সা.কা. ৩৩ সালের পঞ্চাশত্তমীর কিছু কাল পরে, “গ্রীক ভাষাবাদী যিহূদীরা ইব্রীয়দের বিপক্ষে বচসা করিতে লাগিল, কেননা দৈনিক পরিচর্য্যায় তাহাদের বিধবারা উপেক্ষিত হইতেছিল।” এর ফলে, “বারো জন” ব্যক্তি “সুখ্যাতিপন্ন . . . সাত জনকে” খাবার বিতরণের “কার্য্যের ভার” দিয়ে বিষয়টা সংশোধন করেছিল। (প্রেরিত ৬:১-৬) বর্তমান দিনের প্রাচীনরা ন্যায়সংগত অভিযোগের প্রতি ‘তাহাদের কর্ণ রোধ’ করবে না। (হিতোপদেশ ২১:১৩) আর সহ উপাসকদের সমালোচনা করার পরিবর্তে প্রাচীনদের উৎসাহজনক এবং গঠনকারী হওয়া উচিত।—১ করিন্থীয় ৮:১.

১৪. বচসা থেকে মুক্ত থাকার জন্য কোন্‌ গুণ বিশেষভাবে প্রয়োজন?

১৪ আমাদের সবার বচসা থেকে মুক্ত হওয়া দরকার কারণ অভিযোগ করার মনোভাব আধ্যাত্মিক দিক দিয়ে গঠনমূলক নয়। এইধরনের মনোভাব আমাদের একতাকে ধ্বংস করে দিতে পারে। পরিবর্তে, আসুন আমরা সবসময় পবিত্র আত্মাকে আমাদের মধ্যে প্রেম উৎপন্ন করতে দিই। (গালাতীয় ৫:২২) ‘প্রেমের রাজকীয় ব্যবস্থা’ পালন করা আমাদের একযোগে যিহোবার সেবা করে যেতে সাহায্য করবে।—যাকোব ২:৮; ১ করিন্থীয় ১৩:৪-৮; ১ পিতর ৪:৮.

অপবাদের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকুন

১৫. গুজব এবং অপবাদের মধ্যে আপনি কীভাবে পার্থক্য দেখাবেন?

১৫ যেহেতু বচসা ক্ষতিকারক গুজবের দিকে পরিচালিত করে তাই আমরা যা বলি, সেই বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। গুজব হল, লোকেদের সম্বন্ধে এবং তাদের বিষয় নিয়ে অযথা কথাবার্তা। কিন্তু অপবাদ হল মিথ্যা তথ্য, যার উদ্দেশ্য হল অন্য ব্যক্তির সুনাম নষ্ট করা। এইধরনের কথাবার্তা বিদ্বেষপরায়ণ এবং অধার্মিক। তাই, ঈশ্বর ইস্রায়েলীয়দের বলেছিলেন: “তুমি কর্ণেজপ হইয়া আপন লোকদের মধ্যে ইতস্ততঃ ভ্রমণ করিও না”—লেবীয় পুস্তক ১৯:১৬.

১৬. কিছু গুজবকারীর বিরুদ্ধে পৌল কী বলেছিলেন এবং আমাদের কীভাবে তার পরামর্শের দ্বারা প্রভাবিত হওয়া উচিত?

১৬ যেহেতু অযথা কথাবার্তা অপবাদের দিকে নিয়ে যায়, তাই পৌল কিছু গুজবকারীদের বিরুদ্ধে কথা বলেছিলেন। যে-বিধবারা মণ্ডলীতে সাহায্য করার জন্য যোগ্য, তাদের সম্বন্ধে বলার পর তিনি সেই সমস্ত বিধবাদের সম্বন্ধে বলেছিলেন, যারা “বাড়ী বাড়ী ঘুরিয়া বেড়াইয়া অলস হইতে শিখে; কেবল অলসও নয়, বরং বাচাল ও অনধিকারচর্চ্চাকারিণী হইতে ও অনুচিত কথা কহিতে” শেখে। (১ তীমথিয় ৫:১১-১৫) একজন খ্রীষ্টান মহিলা যদি বুঝতে পারেন যে, অপবাদের দিকে নিয়ে যেতে পারে এমন কথাবার্তা বলার প্রতি তার দুর্বলতা আছে, তা হলে তার পৌলের পরামর্শে মনোযোগ দেওয়া উচিত যে, ‘অনপবাদিকা নয় ধীরা’ হোন। (১ তীমথিয় ৩:১১) অবশ্য, খ্রীষ্টান পুরুষরাও ক্ষতিকারক গুজব থেকে নিজেদের রক্ষা করবে।—হিতোপদেশ ১০:১৯.

বিচার করবেন না!

১৭, ১৮. (ক) আমাদের ভাইদের বিচার করা সম্বন্ধে যীশু কী বলেছিলেন? (খ) বিচার করা সম্বন্ধে আমরা কীভাবে যীশুর কথাগুলো কাজে লাগাতে পারি?

১৭ আমরা যদি কাউকে অপবাদ না-ও দিই কিন্তু আমাদের অন্যদের বিচার করা এড়িয়ে চলার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করতে হবে। যীশু এইধরনের মনোভাবের নিন্দা করেছেন, যখন তিনি বলেছিলেন: “তোমরা বিচার করিও না, যেন বিচারিত না হও। কেননা যেরূপ বিচারে তোমরা বিচার কর, সেইরূপ বিচারে তোমরাও বিচারিত হইবে; এবং যে পরিমাণে পরিমাণ কর, সেই পরিমাণে তোমাদের নিমিত্ত পরিমাণ করা যাইবে। আর তোমার ভ্রাতার চক্ষে যে কুটা আছে, তাহাই কেন দেখিতেছ, কিন্তু তোমার নিজের চক্ষে যে কড়িকাট আছে, তাহা কেন ভাবিয়া দেখিতেছ না? অথবা তুমি কেমন করিয়া আপন ভ্রাতাকে বলিবে, এস, আমি তোমার চক্ষু হইতে কুটা গাছটা বাহির করিয়া দিই? আর দেখ, তোমার নিজের চক্ষে কড়িকাট রহিয়াছে! হে কপটি, আগে আপনার চক্ষু হইতে কড়িকাট বাহির করিয়া ফেল, আর তখন তোমার ভ্রাতার চক্ষু হইতে কুটা গাছটা বাহির করিবার নিমিত্ত স্পষ্ট দেখিতে পাইবে।”—মথি ৭:১-৫.

১৮ আমাদের সঠিক বিচার করার ক্ষমতা যখন রূপক “কড়িকাট” দিয়ে ব্যাহত হয়, তখন অনুমান করে আমাদের ভাইদের চোখ থেকে সামান্য “কুটা গাছটা” বের করতে চাওয়া উচিত নয়। বস্তুত, আমরা যদি উপলব্ধি করি যে ঈশ্বর কতটা করুণাময়, তা হলে আমরা আমাদের আধ্যাত্মিক ভাই ও বোনদের বিচার করতে চাইব না। কীভাবে আমরা আমাদের স্বর্গীয় পিতার মতো করে তাদের বুঝতে পারি? অবাক হওয়ার কিছু নেই যে, যীশু আমাদের সাবধান করেছিলেন যেন ‘আমরা বিচার না করি, যেন বিচারিত না হই’! আমাদের নিজেদের অসিদ্ধতা সম্বন্ধে সৎ মূল্যায়ন আমাদের বিচার করতে বাধা দেবে, যা ঈশ্বর অধার্মিক বলে মনে করেন।

দুর্বল কিন্তু সমাদরের

১৯. সহ বিশ্বাসীদের আমাদের কীভাবে দেখা উচিত?

১৯ আমরা যদি আমাদের সহ বিশ্বাসীদের সঙ্গে একযোগে ঈশ্বরকে সেবা করার জন্য সংকল্পবদ্ধ হই, তা হলে আমরা শুধু বিচার করাই এড়িয়ে চলব না। আমরা তাদের প্রতি সম্মান দেখানোর ক্ষেত্রে নেতৃত্ব নেব। (রোমীয় ১২:১০) বস্তুত, আমরা নিজেদের নয় কিন্তু তাদের সুবিধা দেখব এবং তাদের জন্য আনন্দের সঙ্গে যেকোন কাজ করব। (যোহন ১৩:১২-১৭; ১ করিন্থীয় ১০:২৪) কীভাবে আমরা এই উত্তম মনোভাব বজায় রাখতে পারি? এই কথা মনে রেখে যে, প্রত্যেক বিশ্বাসী যিহোবার কাছে মূল্যবান এবং আমাদের পরস্পরকে প্রয়োজন রয়েছে, ঠিক যেমন মানব দেহের প্রত্যেক অঙ্গ পরস্পরের ওপর নির্ভরশীল।—১ করিন্থীয় ১২:১৪-২৭.

২০, ২১. ২ তীমথিয় ২:২০, ২১ পদের কথাগুলো আমাদের জন্য কী অর্থ রাখে?

২০ এটা ঠিক যে, খ্রীষ্টানরা দুর্বল মৃন্ময় পাত্র, যাদের পরিচর্যার মহিমান্বিত সম্পদ দেওয়া হয়েছে। (২ করিন্থীয় ৪:৭) আমরা যদি যিহোবার প্রশংসার জন্য এই আশীর্বাদজনক কাজ করে যেতে চাই, তা হলে আমাদের তাঁর ও তাঁর পুত্রের সামনে সম্মানীয় অবস্থান বজায় রাখতে হবে। একমাত্র নৈতিক ও আধ্যাত্মিক দিক দিয়ে বিশুদ্ধ থেকে আমরা ঈশ্বরের ব্যবহারের জন্য সমাদরের পাত্র থাকব। এই ক্ষেত্রে পৌল লিখেছিলেন “কোন বৃহৎ বাটীতে কেবল স্বর্ণের ও রৌপ্যের পাত্র নয়, কাষ্ঠের ও মৃত্তিকার পাত্রও থাকে; তাহার কতকগুলি সমাদরের, কতকগুলি অনাদরের পাত্র। অতএব যদি কেহ আপনাকে এই সকল হইতে শুচি করে, তবে সে সমাদরের পাত্র, পবিত্রীকৃত, কর্ত্তার কার্য্যের উপযোগী, সমস্ত সৎক্রিয়ার নিমিত্ত প্রস্তুত হইবে।”—২ তীমথিয় ২:২০, ২১.

২১ যে-ব্যক্তিরা ঐশিক চাহিদা অনুযায়ী জীবনযাপন করে না, তারা “অনাদরের পাত্র।” কিন্তু, ঈশ্বরীর কাজ অনুধাবন করে আমরা ‘সমাদরের পাত্র, পবিত্রীকৃত, অথবা যিহোবার সেবা করার জন্য পৃথকীকৃত এবং সমস্ত সৎক্রিয়ার নিমিত্ত প্রস্তুত’ হতে পারব। তাই, আমাদের নিজেদের জিজ্ঞেস করা উচিত: ‘আমি কি “সমাদরের পাত্র”? সহ বিশ্বাসীদের ওপর কি আমার ভাল প্রভাব রয়েছে? আমি কি মণ্ডলীর এমন একজন সদস্য, যে সহ বিশ্বাসীদের সঙ্গে একযোগে কাজ করে?’

একযোগে সেবা করে চলুন

২২. খ্রীষ্টীয় মণ্ডলীকে কীসের সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে?

২২ খ্রীষ্টীয় মণ্ডলী হল পারিবারিক ব্যবস্থার মতো। একটা পরিবারে প্রেমময়, সাহায্যকারী এবং আনন্দপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করে, যখন এর সমস্ত সদস্য যিহোবাকে উপাসনা করে। একটা পরিবার হয়তো বিভিন্ন ব্যক্তিত্বের লোকেদের নিয়ে গঠিত কিন্তু প্রত্যেকের সমাদরের স্থান রয়েছে। মণ্ডলীতেও পরিস্থিতি একইরকম। যদিও আমরা সকলে ভিন্ন—এবং অসিদ্ধ—ঈশ্বর আমাদের যীশুর মাধ্যমে তাঁর কাছে নিয়ে এসেছেন। (যোহন ৬:৪৪; ১৪:৬) যিহোবা এবং যীশু আমাদের ভালবাসেন আর ঐক্যবদ্ধ পরিবার হিসেবে আমাদেরও পরস্পরের প্রতি ভালবাসা দেখাতে হবে।—১ যোহন ৪:৭-১১.

২৩. আমাদের কী মনে রাখতে হবে এবং কী করার জন্য দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ হতে হবে?

২৩ এ ছাড়া, পরিবারতুল্য খ্রীষ্টীয় মণ্ডলী এমন একটা স্থান, যেখানে আমরা নির্ভুলভাবে আনুগত্যের আশা রাখতে পারি। প্রেরিত পৌল লিখেছিলেন: “আমার বাসনা এই, সকল স্থানে পুরুষেরা বিনা ক্রোধে ও বিনা বিতর্কে শুচি [“অনুগত,” NW] হস্ত তুলিয়া প্রার্থনা করুক।” (১ তীমথিয় ২:৮) পৌল এভাবে আনুগত্যকে “সকল স্থানে” করা প্রার্থনার সঙ্গে যুক্ত করেছেন, যে-স্থানে খ্রীষ্টানরা মিলিত হয়। একমাত্র অনুগত পুরুষদেরই প্রার্থনায় মণ্ডলীর প্রতিনিধিত্ব করা উচিত। অবশ্য, ঈশ্বর চান যেন আমরা সকলে তাঁর প্রতি এবং পরস্পরের প্রতি অনুগত থাকি। (উপদেশক ১২:১৩, ১৪) তাই আসুন, মানব দেহের অঙ্গপ্রত্যঙ্গের মতো আমরা একসঙ্গে কাজ করার জন্য ঐক্যবদ্ধ হই। সেইসঙ্গে, আমরা যেন যিহোবার উপাসকদের পরিবারের অংশ হিসেবে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করি। সর্বোপরি, আসুন আমরা মনে রাখি যে, আমাদের পরস্পরকে প্রয়োজন রয়েছে এবং আমরা যদি একযোগে যিহোবার সেবা করে যাই, তা হলে আমরা ঈশ্বরের অনুমোদন ও আশীর্বাদ উপভোগ করব।

আপনি কীভাবে উত্তর দেবেন?

• কোন্‌ বিষয়টা যিহোবার লোকেদের একযোগে তাঁকে সেবা করতে সক্ষম করে?

• খ্রীষ্টানরা কেন পক্ষপাতিত্ব এড়িয়ে চলে?

• বচসা করা যে ভুল, সেই সম্বন্ধে আপনি কী বলবেন?

• কেন আমরা সহ বিশ্বাসীদের সমাদর করব?

[১৫ পৃষ্ঠার চিত্র]

পিতর বুঝেছিলেন যে, “ঈশ্বর পক্ষপাতিত্ব করেন না”

[১৬ পৃষ্ঠার চিত্র]

আপনি কি জানেন, কেন ঈশ্বর মরিয়মকে অবমানিত করেছিলেন?

[১৮ পৃষ্ঠার চিত্র]

অনুগত খ্রীষ্টানরা একযোগে আনন্দের সঙ্গে যিহোবাকে সেবা করে

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৫)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার