জীবন ও পরিচর্যা সভার জন্য অধ্যয়ন পুস্তিকা-র রেফারেন্স
মে ৬-১২
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | ২ করিন্থীয় ৪-৬
“আমরা নিরুৎসাহ হই না”
প্রহরীদুর্গ ০৪ ৮/১৫ ২৫ অনু. ১৬-১৭
ক্লান্ত কিন্তু ক্লান্তিতে অবসন্ন নয়
১৬ আমাদের আধ্যাত্মিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া অবশ্যই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। যিহোবা ঈশ্বরের সঙ্গে যখন আমাদের অন্তরঙ্গ সম্পর্ক থাকে, তখন আমরা হয়তো শারীরিক দিক দিয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়তে পারি কিন্তু আমরা কখনো তাঁকে সেবা করার ব্যাপারে ক্লান্ত হয়ে পড়ব না। যিহোবা হলেন এমন একজন যিনি “ক্লান্ত ব্যক্তিকে শক্তি দেন, ও শক্তিহীন লোকের বল বৃদ্ধি করেন।” (যিশাইয় ৪০:২৮, ২৯) প্রেরিত পৌল, যিনি ব্যক্তিগতভাবে এই কথাগুলোর সত্যতা সম্বন্ধে অভিজ্ঞতা লাভ করেছিলেন, তিনি লিখেছিলেন: “আমরা নিরুৎসাহ হই না, কিন্তু আমাদের বাহ্য মনুষ্য যদ্যপি ক্ষীণ হইতেছে, তথাপি আন্তরিক মনুষ্য দিন দিন নূতনীকৃত হইতেছে।”—২ করিন্থীয় ৪:১৬.
১৭ “দিন দিন,” এই অভিব্যক্তিটা লক্ষ করুন। এর অর্থ হল, প্রতিদিন যিহোবার ব্যবস্থাগুলো থেকে উপকার লাভ করা। ৪৩ বছর ধরে বিশ্বস্তভাবে সেবা করছেন এমন একজন মিশনারিকে বেশ কিছু সময় ধরে শারীরিক ক্লান্তি এবং নিরুৎসাহিতার সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছিল। কিন্তু, তিনি অবসন্ন হয়ে পড়েননি। তিনি বলেন: “আমি তাড়াতাড়ি ওঠার অভ্যাস গড়ে তুলেছি, যাতে যেকোনো কাজ শুরু করার আগে আমি যিহোবার কাছে প্রার্থনা করার এবং তাঁর বাক্য পড়ার জন্য সময় ব্যয় করতে পারি। দৈনন্দিন এই রুটিন আমাকে এখন পর্যন্ত টিকে থাকতে সাহায্য করেছে।” আমরা আসলেই যিহোবার টিকিয়ে রাখার ক্ষমতার উপর নির্ভর করতে পারি, যদি আমরা নিয়মিতভাবে, হ্যাঁ “দিন দিন” তাঁর কাছে প্রার্থনা করি এবং তাঁর উচ্চতর গুণাবলি ও তাঁর প্রতিজ্ঞাগুলো নিয়ে ধ্যান করি।
অন্তর্দৃষ্টি-১ ৭২৪-৭২৫, ইংরেজি
ধৈর্য
এ ছাড়া, খ্রিস্টীয় আশার প্রতি অর্থাৎ পাপহীন অবস্থায় অনন্তজীবন লাভের প্রতি দৃষ্টি হারিয়ে না ফেলাও গুরুত্বপূর্ণ। এমনকী তাড়নাকারীদের হাতে মৃত্যুও এই আশাকে অকার্যকর করতে পারে না। (রোমীয় ৫:৪, ৫; ১থিষল ১:৩; প্রকা ২:১০) সেই মহান আশার সঙ্গে তুলনা করা হলে, বর্তমান ক্লেশ নগণ্য বিষয় হয়ে যাবে। (রোমীয় ৮:১৮-২৫) যেকোনো ক্লেশ, তা সেটা এখন তীব্র হলেও, অনন্তকালীন সময়ের বিপরীতে, সেই ক্লেশ হল ‘আপাততঃ লঘুতর [“ক্ষণস্থায়ী ও সামান্য,” NW]।’ (২করি ৪:১৬-১৮) একজন ব্যক্তি যদি পরীক্ষার এই ক্ষণস্থায়ী বৈশিষ্ট্য সম্বন্ধে মনে রাখেন ও খ্রিস্টীয় আশাকে ধরে রাখেন, তা হলে তিনি হতাশার কাছে নতিস্বীকার করা ও যিহোবা ঈশ্বরের প্রতি অবিশ্বস্ত হয়ে পড়া প্রতিরোধ করতে পারেন।
আধ্যাত্মিক রত্ন খুঁজে বের করুন
প্রহরীদুর্গ ১২ ২/১ ২৮-২৯, ইংরেজি
“যিহোবার মুখে হাসি ফুটিয়ে তুলুন”
পরিচালকগোষ্ঠীর একজন সদস্য ডেভিড স্প্লেন এই শাস্ত্রীয় মূলভাব সম্বন্ধে বিশ্লেষণ করেছিলেন। (২ করিন্থীয় ৪:৭) এই ধন কী? এটা কি জ্ঞান, না কি প্রজ্ঞা? “না,” বক্তা উত্তর দিয়েছিলেন। “প্রেরিত পৌল যে-ধনের বিষয়ে বলেছিলেন তা হল, ‘সত্য প্রকাশ’ করার জন্য ‘পরিচর্যা-পদ।’” (২ করিন্থীয় ৪:১, ২, ৫) ভাই স্প্লেন ছাত্র-ছাত্রীদের মনে করিয়ে দিয়েছিলেন, তারা যে-পাঁচ মাস অধ্যয়নের জন্য ব্যয় করেছে, তা ছিল পরিচর্যায় এক বিশেষ কার্যভারের জন্য প্রস্তুতির সময়। সেই কার্যভার হল অত্যন্ত মূল্যবান।
বক্তা ব্যাখ্যা করেছিলেন যে, ‘মৃন্ময় পাত্র’ আমাদের মাংসিক দেহকে বোঝায়। তিনি মৃন্ময় বা মাটির পাত্র ও সোনার পাত্রের মধ্যে পার্থক্য তুলে ধরেছিলেন। সাধারণত সোনার পাত্র খুব বেশি ব্যবহার করা হয় না। অন্যদিকে, মাটির পাত্র ব্যবহার করার জন্যই তৈরি করা হয়। আমরা যদি সোনার পাত্রে ধন রাখি, তা হলে আমরা হয়তো সেই সোনার পাত্রের প্রতিও ততটুকু মনোযোগ দিতে পারি, যতটা এর মধ্যে থাকা ধনের প্রতি দিয়ে থাকি। “ছাত্র-ছাত্রীরা, আপনারা নিজেদের প্রতি মনোযোগ আকর্ষণ করতে চাইবেন না,” ভাই স্প্লেন বলেছিলেন। “মিশনারি হিসেবে আপনারা লোকেদের যিহোবার প্রতি পরিচালিত করবেন। আপনারা হলেন সামান্য মাটির পাত্র।”
প্রহরীদুর্গ ০৯ ১১/১৫ ২১ অনু. ৭
ভ্রাতৃপ্রেম বৃদ্ধি করে চলুন
৭ আমাদের সম্বন্ধে কী বলা যায়? ভ্রাতৃপ্রেম প্রদর্শন করার ক্ষেত্রে কীভাবে আমরা ‘প্রশস্ত হইতে’ পারি? সমবয়সি বা একই সাম্প্রদায়িক পটভূমির লোকেরা হয়তো স্বাভাবিকভাবেই একে অন্যের প্রতি আকৃষ্ট হতে পারে। আর বিনোদনের ব্যাপারেও যাদের একইরকম পছন্দ রয়েছে, তারা প্রায়ই একসঙ্গে অনেক সময় কাটিয়ে থাকে। কিন্তু, আমাদের পছন্দের বিষয়গুলো সম্বন্ধে কিছু খ্রিস্টানের সঙ্গে কথা বলা যদি আমাদেরকে অন্যদের থেকে পৃথক করে দেয়, তা হলে আমাদের ‘প্রশস্ত হইতে’ হবে। আমাদের নিজেদেরকে এই কথা জিজ্ঞেস করা বিজ্ঞতার কাজ হবে: ‘আমার সঙ্গে তেমন ঘনিষ্ঠ নয় এমন ভাই-বোনদের সঙ্গে কি আমি কদাচিৎ প্রচারে অংশ নিই বা সামাজিক মেলামেশা করি? কিংডম হলে কি আমি এই চিন্তা করে নতুন ব্যক্তিদের সঙ্গে কম মেলামেশা করি যে, প্রথমে তাদেরকে প্রমাণ দিতে হবে আদৌ তারা আমার বন্ধু হওয়ার যোগ্য কি না? আমি কি মণ্ডলীতে বয়স্ক ও অল্পবয়সি উভয়কেই সম্ভাষণ জানাই?’
মে ১৩-১৯
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | ২ করিন্থীয় ৭-১০
“আমাদের ত্রাণ সেবা”
“ঈশ্বর হৃষ্টচিত্ত দাতাকে ভাল বাসেন”
প্রথমত পৌল করিন্থীয়দের মাকিদনিয়ার খ্রিস্টানদের কথা বলেছিলেন যারা ত্রাণ কাজে উদাহরণযোগ্য সাড়া দিয়েছিলেন। পৌল লিখেছিলেন, “ক্লেশরূপ মহাপরীক্ষার মধ্যেও তাহাদের আনন্দের উপচয় এবং অগাধ দীনতা তাহাদের দানশীলতারূপ ধনের উদ্দেশে উপচিয়া পড়িয়াছে।” মাকিদনিয়ার ভাইদের পীড়াপীড়ি করতে হয়নি। বিপরীতে, পৌল বলেন যে তারা “বিস্তর অনুনয় সহকারে সেই অনুগ্রহের সম্বন্ধে, . . . আমাদের কাছে অনুরোধ করিয়াছিল।” আমরা যখন তাদের নিজেদের “অগাধ দীনতা” সম্বন্ধে চিন্তা করি তখন মাকিদনীয় ভাইদের হৃষ্টচিত্তের দান আরও উল্লেখযোগ্য হয়ে ওঠে।—২ করিন্থীয় ৮:২-৪.
ঈশ্বরের রাজ্য শাসন করছে! ২০৯ অনু. ১, ইংরেজি
ত্রাণ সেবা
সময়টা প্রায় ৪৬ খ্রিস্টাব্দ এবং যিহূদিয়া দুর্ভিক্ষের কবলে রয়েছে। সেখানে বসবাসরত খ্রিস্টের যিহুদি শিষ্যদের কাছে, প্রাপ্তিসাধ্য সামান্য শস্যের বিনিময়ে যে-আকাশছোঁয়া দাম দাবি করা হচ্ছিল, তা দেওয়ার মতো টাকাপয়সা তাদের নেই। তারা ক্ষুধার্ত, তাদের চোখে-মুখে অনাহারের ছাপ স্পষ্ট। কিন্তু, তারা এমন এক উপায়ে যিহোবার হাতের সুরক্ষা লাভ করতে যাচ্ছে, যে-ব্যাপারে খ্রিস্টের অন্য শিষ্যদের আগে কখনো অভিজ্ঞতা হয়নি। কী ঘটতে যাচ্ছে?
ঈশ্বরের রাজ্য শাসন করছে! ২০৯-২১০ অনু. ৪-৬, ইংরেজি
ত্রাণ সেবা
৪ করিন্থীয়দের প্রতি তার দ্বিতীয় চিঠিতে পৌল ব্যাখ্যা করেছিলেন, খ্রিস্টানদের পরিচর্যার দুটো দিক রয়েছে। যদিও পৌলের চিঠি অভিষিক্ত খ্রিস্টানদের উদ্দেশে লেখা হয়েছিল, কিন্তু তার কথাগুলো খ্রিস্টের ‘আরও মেষের’ প্রতিও প্রযোজ্য। (যোহন ১০:১৬) আমাদের পরিচর্যার একটা দিক হল “সম্মিলনের পরিচর্য্যা-পদ” অর্থাৎ আমাদের প্রচার ও শিক্ষা দেওয়ার কাজ। (২ করি ৫:১৮-২০; ১ তীম ২:৩-৬) পরিচর্যার অন্য দিকের সঙ্গে এমন কিছু জড়িত, যা আমরা সহবিশ্বাসীদের জন্য করে থাকি। বিশেষভাবে পৌল ‘পরিচর্য্যা [‘ত্রাণ সেবা,’ NW]’ সম্বন্ধে উল্লেখ করেছিলেন। (২ করি ৮:৪) “সম্মিলনের পরিচর্য্যা-পদ” ও ‘ত্রাণ সেবা’ এই দুটো অভিব্যক্তির মধ্যে ‘পরিচর্যা’ বা ‘সেবা’ শব্দটা, গ্রিক ডায়াকোনিয়া শব্দের একটা রূপ থেকে অনুবাদ করা হয়েছে। কেন এটা গুরুত্বপূর্ণ?
৫ দুটো কাজে একই গ্রিক শব্দ ব্যবহার করার মাধ্যমে পৌল ত্রাণ সেবাকে পরিচর্যার অন্যান্য ধরনের সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত করেছেন, যা খ্রিস্টীয় মণ্ডলীতে সম্পন্ন করা হচ্ছে। তিনি আগে বলেছিলেন: “পরিচর্য্যা নানা প্রকার, কিন্তু প্রভু এক; এবং ক্রিয়াসাধক গুণ নানা প্রকার, . . . কিন্তু এই সকল কর্ম্ম সেই একমাত্র আত্মা সাধন করেন। (১ করি ১২:৪-৬, ১১) আসলে, পৌল মণ্ডলীর বিভিন্ন ধরনের পরিচর্যাকে ‘আরাধনার [‘পবিত্র সেবার,’ NW]’ সঙ্গে যুক্ত করেছেন। (রোমীয় ১২:১, ৬-৮) এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, তিনি “পবিত্রদিগের পরিচর্য্যা করিতে” নিজের কিছুটা সময় ব্যয় করাকে উপযুক্ত বলে মনে করেছিলেন!—রোমীয় ১৫:২৫, ২৬.
৬ পৌল করিন্থীয়দের বুঝতে সাহায্য করেছিলেন, কেন ত্রাণ কাজ তাদের পরিচর্যা ও যিহোবার উপাসনার অংশ ছিল। যুক্তিটা লক্ষ করুন: যে-খ্রিস্টানরা ত্রাণ দিয়ে থাকে, সেটার পিছনে কারণ হল “খ্রীষ্টের সুসমাচারের প্রতি” তাদের “স্বীকৃত আজ্ঞাবহতা।” (২ করি ৯:১৩) তাই, খ্রিস্টের শিক্ষাকে কাজে লাগানোর আকাঙ্ক্ষা দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে খ্রিস্টানরা সহবিশ্বাসীদের সাহায্য করে। পৌল বলেছিলেন, তাদের ভাই-বোনদের জন্য তারা যে-দয়ার কাজগুলো করে থাকে, সেগুলো ‘ঈশ্বরের অতি মহৎ অনুগ্রহেরই’ প্রকাশ। (২ করি ৯:১৪; ১ পিতর ৪:১০) তাই, আমাদের অভাবী ভাই-বোনদের সেবা করা, যেটার অন্তর্ভুক্ত ত্রাণ কাজ, সেই বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে ১৯৭৫ সালের ১ ডিসেম্বর প্রহরীদুর্গ পত্রিকা উপযুক্তভাবেই বলেছিল: “যিহোবা ঈশ্বর ও তাঁর পুত্র যিশু খ্রিস্ট যে এই ধরনের সেবার প্রতি সত্যিই গুরুত্ব প্রদান করেন, সেই বিষয়ে আমাদের কখনোই সন্দেহ করা উচিত নয়।” হ্যাঁ, ত্রাণ কাজ হল পবিত্র সেবার একটা গুরুত্বপূর্ণ দিক।—রোমীয় ১২:১, ৭; ২ করি ৮:৭; ইব্রীয় ১৩:১৬.
ঈশ্বরের রাজ্য শাসন করছে! ১৯৬ অনু. ১০, ইংরেজি
যেভাবে রাজ্যের কাজের জন্য অর্থ জোগানো হয়
১০ প্রথমত আমরা স্বেচ্ছাকৃত দান করি কারণ আমরা যিহোবাকে ভালোবাসি এবং “তাঁহার দৃষ্টিতে যাহা যাহা প্রীতিজনক,” সেগুলোই করতে চাই। (১ যোহন ৩:২২) যিহোবা এমন একজন উপাসকের উপর সত্যিই খুশি হন, যিনি হৃদয় থেকে উদারভাবে দান করেন। আসুন আমরা খ্রিস্টানদের দান দেওয়ার বিষয়ে পৌলের কথাগুলো বিবেচনা করি। (পড়ুন, ২ করিন্থীয় ৯:৭.) একজন প্রকৃত খ্রিস্টান এমন দাতা নন, যিনি অনিচ্ছুক বা যাকে জোর করে বাধ্য করা হচ্ছে। বরং তিনি দান করেন কারণ তিনি “আপন হৃদয়ে” তা করার ‘সঙ্কল্প করিয়াছেন।’ অর্থাৎ কোনো প্রয়োজন সম্বন্ধে ও কীভাবে তিনি তা পূরণ করতে পারেন সেই সম্বন্ধে বিবেচনা করার পর, তিনি দান করেন। এই ধরনের একজন দাতা যিহোবার কাছে প্রিয় কারণ “ঈশ্বর হৃষ্টচিত্ত দাতাকে ভাল বাসেন।” আরেকটা অনুবাদ এভাবে বলে: “ঈশ্বর সেই ব্যক্তিদের ভালোবাসেন, যারা দান করতে ভালোবাসে।”
আধ্যাত্মিক রত্ন খুঁজে বের করুন
ঈশ্বরের “বর্ণনাতীত দানের” দ্বারা অনুপ্রাণিত হোন
২ পৌল জানতেন, যিশুর বলিদান এই নিশ্চয়তা প্রদান করে, ঈশ্বরের অপূর্ব প্রতিজ্ঞাগুলো পরিপূর্ণ হবেই। (পড়ুন, ২ করিন্থীয় ১:২০.) এর অর্থ হল, ঈশ্বরের “বর্ণনাতীত দানের” মধ্যে যিশুর বলিদান রয়েছে। এ ছাড়া, যিহোবা আমাদের প্রতি যে-মঙ্গল করেন ও অনুগত প্রেম দেখান, সেই সমস্ত কিছুও এই দানের অন্তর্ভুক্ত। এই দান এতই মহামূল্য যে, তা আমাদের বোধগম্যতা অনুযায়ী পুরোপুরি বর্ণনা করা অসম্ভব। এই বিশেষ দান সম্বন্ধে আমাদের কেমন অনুভব করা উচিত? আর ২০১৬ সালের ২৩ মার্চ খ্রিস্টের মৃত্যুর স্মরণার্থ উদ্যাপনের জন্য প্রস্তুত হওয়ার সময়, কীভাবে এই দানের দ্বারা আমাদের অনুপ্রাণিত হওয়া উচিত?
সচেতন থাক! ৯৯ ৭/৮ ২০-২১
অহংকার করা কি অন্যায়?
খ্রিস্টীয় গ্রিক শাস্ত্রে, কাওকেওমি ক্রিয়া পদকে “অহংকার করা, শ্লাঘা করা, গর্ব করা” হিসেবে অনুবাদ করা হয়েছে আর তা ভালো ও খারাপ দুই অর্থেই ব্যবহার করা হয়েছে। উদাহরণ স্বরূপ, প্রেরিত পৌল বলেন যে আমরা “ঈশ্বরের প্রতাপের প্রত্যাশায় শ্লাঘা” করতে পারি। তিনি এও পরামর্শ দেন: “‘যে শ্লাঘা করে, সে প্রভুতেই শ্লাঘা করুক।’” (রোমীয় ৫:২; ২ করিন্থীয় ১০:১৭) এর মানে যিহোবা আমাদের ঈশ্বর বলে আমরা অহংকার করি আর এটা এমন এক অনুভূতি যার ফলে আমরা তাঁর সুনাম ও খ্যাতির জন্য আনন্দ করতে চাই।
মে ২০-২৬
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন|২করিন্থীয় ১১-১৩
“পৌলের ‘মাংসে একটা কণ্টক’”
দুর্বলতা সত্ত্বেও বলবান
আরেকজন বিশ্বস্ত দাস “মাংসে একটা কণ্টক,” দীর্ঘস্থায়ী এক সমস্যা দূর করে দেওয়ার জন্য যিহোবার কাছে প্রার্থনা করেছিলেন। প্রেরিত পৌল এই পরীক্ষা থেকে তাকে মুক্ত করার জন্য ঈশ্বরের কাছে তিন বার অনুরোধ জানিয়েছিলেন। সমস্যা যা-ই ছিল না কেন, একটা বিরক্তিকর কণ্টকের মতো সেটা যিহোবার সেবায় পৌলের আনন্দকে কেড়ে নিয়েছিল। পৌল এটাকে অনবরত মুষ্ট্যাঘাত করার সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। যিহোবার উত্তর ছিল: “আমার অনুগ্রহ তোমার পক্ষে যথেষ্ট; কেননা আমার শক্তি দুর্ব্বলতায় সিদ্ধি পায়।” যিহোবা মাংসের কণ্টকটা দূর করে দেননি। পৌলকে এটার সঙ্গে লড়াই করে যেতে হয়েছিল কিন্তু তিনি আরও বলেছিলেন: “যখন আমি দুর্ব্বল, তখনই বলবান্।” (২ করি. ১২:৭-১০) তিনি কী বোঝাতে চেয়েছিলেন?
প্রহরীদুর্গ ০৬ ১২/১৫ ২৪ অনু. ১৭-১৮
“যাহারা তাঁহার কাছে যাচ্ঞা করে, তাহাদিগকে” যিহোবা “পবিত্র আত্মা” দান করেন
১৭ পৌলের প্রার্থনার উত্তরে ঈশ্বর তাকে বলেছিলেন: “আমার অনুগ্রহ তোমার পক্ষে যথেষ্ট; কেননা আমার শক্তি দুর্ব্বলতায় সিদ্ধি পায়।” পৌল বলেছিলেন: “অতএব আমি বরং অতিশয় আনন্দের সহিত নানা দুর্ব্বলতায় শ্লাঘা করিব, যেন খ্রীষ্টের শক্তি আমার উপরে [“তাঁবুর ন্যায়,” NW] অবস্থিতি করে।” (২ করিন্থীয় ১২:৯; গীতসংহিতা ১৪৭:৫) তাই, পৌল অনুভব করতে পেরেছিলেন যে, খ্রিস্টের মাধ্যমে ঈশ্বরের শক্তিশালী সুরক্ষা তার উপর তাঁবুর মতো বিস্তৃত রয়েছে। আজকে যিহোবা একই উপায়ে আমাদের প্রার্থনার উত্তর দেন। তিনি তাঁর দাসদের উপর আশ্রয়ের মতো সুরক্ষা বিস্তৃত করেন।
১৮ অবশ্য, একটা তাঁবু বৃষ্টি পড়াকে বা বাতাস বয়ে যাওয়াকে রোধ করে না কিন্তু এটা এগুলো থেকে কিছুটা সুরক্ষা জোগায়। একইভাবে, ‘খ্রীষ্টের শক্তির’ মাধ্যমে যে-আশ্রয় জোগানো হয়, তা আমাদের উপর পরীক্ষা আসাকে অথবা আমাদের বিরুদ্ধে কষ্ট আসাকে রোধ করে না। কিন্তু, এটা এই জগতের ক্ষতিকর শক্তিগুলোর এবং এর শাসক শয়তানের আক্রমণগুলোর বিরুদ্ধে আধ্যাত্মিক সুরক্ষা জোগায়। (প্রকাশিত বাক্য ৭:৯, ১৫, ১৬) তাই, এমনকী আপনি যদি এমন এক পরীক্ষার সঙ্গে মোকাবিলা করে থাকেন, যা ‘আপনাকে ছাড়িয়া যায়’ না, তবুও আপনি নিশ্চিত থাকতে পারেন যে, যিহোবা আপনার সংগ্রাম সম্বন্ধে অবগত আছেন এবং তিনি ‘আপনার ক্রন্দনের রবে’ উত্তর দিয়েছেন। (যিশাইয় ৩০:১৯; ২ করিন্থীয় ১:৩, ৪) পৌল লিখেছিলেন: “ঈশ্বর বিশ্বাস্য; তিনি তোমাদের প্রতি তোমাদের শক্তির অতিরিক্ত পরীক্ষা ঘটিতে দিবেন না, বরং পরীক্ষার সঙ্গে সঙ্গে রক্ষার পথও করিয়া দিবেন, যেন তোমরা সহ্য করিতে পার।”—১ করিন্থীয় ১০:১৩; ফিলিপীয় ৪:৬, ৭.
“তিনি ক্লান্ত ব্যক্তিকে শক্তি দেন”
৮ যিশাইয় ৪০:৩০ পদ পড়ুন। আমাদের হয়তো অনেক দক্ষতা থাকতে পারে, কিন্তু নিজেদের শক্তিতে আমরা যা করতে পারি, সেই বিষয়ে আমাদের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এই শিক্ষাটা আমাদের সকলকে অবশ্যই শিখতে হবে। প্রেরিত পৌলের অনেক কিছু করার ক্ষমতা ছিল, কিন্তু তিনি যা-কিছু করতে চাইতেন, সেগুলোর সমস্তই করতে পারতেন না। তিনি যখন তার অনুভূতি সম্বন্ধে যিহোবাকে বলেছিলেন, তখন যিহোবা তাকে এই উত্তর দিয়েছিলেন: “আমার শক্তি দুর্ব্বলতায় সিদ্ধি পায়।” পৌল যিহোবার কথাগুলোর অর্থ বুঝতে পেরেছিলেন। আর তাই তিনি বলেছিলেন: “যখন আমি দুর্ব্বল, তখনই বলবান্।” (২ করি. ১২:৭-১০) তিনি আসলে কী বোঝাতে চেয়েছিলেন?
৯ পৌল বুঝতে পেরেছিলেন যে, তিনি নিজের শক্তিতে যা করতে পারেন, সেই বিষয়ে তার সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তার আরও শক্তিশালী কোনো ব্যক্তির কাছ থেকে সাহায্যের প্রয়োজন ছিল। ঈশ্বরের পবিত্র আত্মা পৌলকে সেইসময় শক্তি প্রদান করতে পারত, যখন তিনি নিজেকে দুর্বল বলে মনে করতেন। আর এটা আরও বেশি কিছু সম্পাদন করতে পারত। ঈশ্বরের পবিত্র আত্মা পৌলকে এমনকী সেই কাজগুলো করার জন্য শক্তি প্রদান করতে পারত, যেগুলো তিনি নিজের শক্তিতে করতে পারতেন না। আমাদের ক্ষেত্রেও একই বিষয় ঘটতে পারে। যিহোবা যখন আমাদের তাঁর পবিত্র আত্মা প্রদান করেন, তখন আমরা সত্যিই শক্তিশালী হয়ে উঠি!
আধ্যাত্মিক রত্ন খুঁজে বের করুন
প্রহরীদুর্গ ১৮.১২ ৮ অনু. ১০-১২
পাঠকদের কাছ থেকে প্রশ্ন
২ করিন্থীয় ১২:২ পদে উল্লেখিত “তৃতীয় স্বর্গ” সম্ভবত যিশু খ্রিস্ট ও ১,৪৪,০০০ ব্যক্তির অধীনে মশীহ রাজ্যকে অর্থাৎ ‘নূতন আকাশমণ্ডলকে’ বোঝায়।—২ পিতর ৩:১৩.
এটা “তৃতীয় স্বর্গ” কারণ ঈশ্বরের রাজ্য হল সর্বোচ্চ মানের এক শাসন।
যে-“পরমদেশে” পৌল ‘নীত হইয়াছিলেন,’ সেটা সম্ভবত এই বিষয়গুলোকে নির্দেশ করে: (১) আক্ষরিক পরমদেশ, যেটা পৃথিবীর উপর আসবে, (২) আধ্যাত্মিক পরমদেশ, যেটা সেই সময়ে থাকবে এবং বর্তমানের আধ্যাত্মিক পরমদেশের চেয়ে আরও ব্যাপক হবে এবং (৩) ‘ঈশ্বরের পরমদেশ,’ যেটা নতুন জগতে একইসময়ে স্বর্গে থাকবে।
অন্তর্দৃষ্টি-২ ১৭৭, ইংরেজি
চুম্বন
‘পবিত্র চুম্বন।’ প্রাথমিক খ্রিস্টানদের মধ্যে ‘পবিত্র চুম্বন’ (রোমীয় ১৬:১৬; ১করি ১৬:২০; ২করি ১৩:১২; ১থিষল ৫:২৬) বা ‘প্রেমচুম্বন’ (১পিতর ৫:১৪) করার রীতি ছিল আর তা সম্ভবত সমলিঙ্গের ব্যক্তিদের প্রতি করা হতো। প্রাথমিক খ্রিস্টানদের সম্ভাষণ জানানোর এই ধরন হয়তো প্রাচীন ইব্রীয়দের মধ্যে কাউকে চুম্বন করে সম্ভাষণ জানানোর প্রথার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ। যদিও শাস্ত্র বিস্তারিতভাবে কিছু জানায় না, তবে ‘পবিত্র চুম্বন’ বা ‘প্রেমচুম্বন’ স্পষ্টতই খ্রিস্টীয় মণ্ডলীতে বিরাজমান গঠনমূলক প্রেম ও একতাকে প্রকাশ করেছিল।—যোহন ১৩:৩৪, ৩৫.
মে ২৭–জুন ২
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | গালাতীয় ১-৩
“আমি মুখের উপরেই তাঁহার প্রতিরোধ করিলাম”
ন্যায়বিচার সম্বন্ধে আপনার কি যিহোবার মতো দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে?
১৬ গালাতীয় ২:১১-১৪ পদ পড়ুন। পিতর লোকেদের ভয়ের কারণে এমনটা করেছিলেন। (হিতো. ২৯:২৫) পিতর জানতেন, পরজাতীয়দের সম্বন্ধে যিহোবা কেমন বোধ করেন। তা সত্ত্বেও, তিনি এই ভেবে ভয় পেয়েছিলেন যে, তাকে পরজাতীয় খ্রিস্টানদের সঙ্গে মেলামেশা করতে দেখে যিরূশালেম থেকে আসা ছিন্নত্বক যিহুদি খ্রিস্টানরা তাকে নীচু চোখে দেখবে। প্রেরিত পৌল পিতরকে বলেছিলেন যে, তিনি একজন কপট ব্যক্তির মতো ব্যবহার করছেন। কেন? কারণ ৪৯ সালে যিরূশালেমের সভায় পৌল নিজে পিতরকে পরজাতীয়দের পক্ষে কথা বলতে শুনেছিলেন। (প্রেরিত ১৫:১২) যে-পরজাতীয় খ্রিস্টানদের পিতর অসন্তুষ্ট করেছিলেন, তারা কেমন প্রতিক্রিয়া দেখাবে? তারা কি সেটাকে বিঘ্ন পাওয়ার কারণ হতে দেবে? পিতর কি তার এই ভুলের কারণে তার সব কার্যভার হারাবেন?
যারা যিহোবাকে ভালোবাসে, “তাহাদের উছোট লাগে না”
১২ পিতর লোকভয় প্রদর্শন করেছিলেন, মাঝে মাঝে মারাত্মক হোঁচট খেয়েছিলেন; তা সত্ত্বেও, তিনি যিশু ও যিহোবার প্রতি আনুগত্য বজায় রেখেছিলেন। উদাহরণ স্বরূপ, তিনি জনসমক্ষে তার প্রভুকে অস্বীকার করেছিলেন আর তা কেবল এক বার নয় বরং তিন বার। (লূক ২২:৫৪-৬২) পরবর্তী সময়ে, পিতর খ্রিস্টীয় উপায়ে আচরণ করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন, পরজাতীয় বিশ্বাসীদের সঙ্গে এমনভাবে আচরণ করেছিলেন, যেন ত্বকচ্ছেদপ্রাপ্ত যিহুদি খ্রিস্টান হিসেবে তারা তাদের চেয়ে উত্তম। কিন্তু, প্রেরিত পৌল বিষয়টা স্পষ্টভাবে লক্ষ করেছিলেন—মণ্ডলীতে শ্রেণিবৈষম্যের কোনো স্থান ছিল না। পিতরের মনোভাব ভুল ছিল। পিতরের আচরণ ভাইদের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলার আগেই পৌল সরাসরি পিতরকে পরামর্শ দেওয়ার মাধ্যমে পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। (গালা. ২:১১-১৪) পিতরের আত্মসম্মানে কি এতটাই আঘাত লেগেছিল যে, তিনি জীবনের ধাবনক্ষেত্রে চলা বন্ধ করে দিয়েছিলেন? না। তিনি পৌলের পরামর্শ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করেছিলেন, তা কাজে লাগিয়েছিলেন এবং ধাবনক্ষেত্র থেকে সরে পড়েননি।
আধ্যাত্মিক রত্ন খুঁজে বের করুন
প্রহরীদুর্গ ১৪ ৯/১৫ ১৬ অনু. ২০-২১
‘অনেক ক্লেশ’ সত্ত্বেও অনুগতভাবে ঈশ্বরের সেবা করুন
২০ পরোক্ষ আক্রমণ সম্বন্ধে কী বলা যায়? যেমন, কীভাবে আমরা নিরুৎসাহিতার অনুভূতি কাটিয়ে উঠতে পারি? তা করার একটা জোরালো উপায় হচ্ছে, যিশুর মুক্তির মূল্যরূপ বলিদান নিয়ে ধ্যান করা। প্রেরিত পৌল সেটাই করেছিলেন। কখনো কখনো, তিনি অত্যন্ত দুঃখিত হয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু, তিনি জানতেন, খ্রিস্ট সিদ্ধ ব্যক্তিদের জন্য নয়, বরং তার মতো পাপীদের জন্যই মারা গিয়েছেন। তিনি লিখেছিলেন: “আমি বিশ্বাসে, ঈশ্বরের পুত্রে বিশ্বাসেই, যাপন করিতেছি; তিনিই আমাকে প্রেম করিলেন, এবং আমার নিমিত্তে আপনাকে প্রদান করিলেন।” (গালা. ২:২০) হ্যাঁ, পৌল মুক্তির মূল্যকে স্বীকার করেছিলেন এবং এটা যে ব্যক্তিগতভাবে তার প্রতি প্রযোজ্য, তা বিশ্বাস করেছিলেন।
২১ আপনি যদি মুক্তির মূল্যকে যিহোবার কাছ থেকে এক ব্যক্তিগত উপহার হিসেবে স্বীকার করেন, তা হলে আপনিও প্রচুর উপকার লাভ করবেন। এর অর্থ এই নয় যে, আমাদের নিরুৎসাহিতা সঙ্গেসঙ্গে দূর হয়ে যাবে। নতুন জগৎ না আসা পর্যন্ত, কাউকে কাউকে হয়তো মাঝে মাঝে নিরুৎসাহিতা সহ্য করতে হবে। কিন্তু মনে রাখবেন: যারা হাল ছেড়ে দেবে না, তারাই পুরস্কার লাভ করবে। প্রতিদিন আমরা সেই সময়টার আরও নিকটবর্তী হচ্ছি, যখন ঈশ্বরের রাজ্য আসবে। সেই রাজ্য যখন আসবে, তখন পৃথিবীতে শান্তি থাকবে এবং সমস্ত মানুষ সিদ্ধ হবে। এমনকী আপনাকে যদি অনেক ক্লেশের মধ্য দিয়ে যেতেও হয়, তবুও সেই রাজ্যে প্রবেশ করার জন্য দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ হোন।
অন্তর্দৃষ্টি-১ ৮৮০, ইংরেজি
গালাতীয়দের উদ্দেশে চিঠি
“হে অবোধ গালাতীয়েরা,” পৌলের এই উক্তি এমন কোনো প্রমাণ নয় যে, তার মনে নির্দিষ্ট কোনো জাতির লোকেদের কথা ছিল, যারা গালাতিয়ার উত্তরাঞ্চলের গলদেশীয় (প্রাচীন ফ্রান্স) লোকেদের মধ্য থেকে এসেছে। (গালা ৩:১) বরং পৌল মণ্ডলীর মধ্যে নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের তিরস্কার করছিলেন কারণ তারা তাদের মধ্যে থাকা যিহুদিবাদীদের—যে-যিহুদিরা নতুন চুক্তির মাধ্যমে জোগানো ‘বিশ্বাস হেতু ধার্ম্মিক গণিত হইবার’ স্থলে মোশির ব্যবস্থার মাধ্যমে নিজেদের ধার্মিকতা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছিল, তাদের—কোনো শিক্ষা দ্বারা নিজেদের প্রভাবিত হতে দিয়েছিল। (২:১৫–৩:১৪; ৪:৯, ১০) পৌল যে-“গালাতীয়ার মণ্ডলীগণের” (১:২) উদ্দেশে লিখেছিল, তারা জাতিগতভাবে মিশ্রিত ছিল, যাদের মধ্যে ছিল যিহুদি ব্যক্তিরা, ন-যিহুদি ব্যক্তিরা অর্থাৎ ছিন্নত্বক ধর্মান্তরিত ব্যক্তি ও অছিন্নত্বক পরজাতীয় উভয় ধরনের ব্যক্তি এবং নিঃসন্দেহে কিছু কেলটিক বংশোদ্ভূত ব্যক্তি। (প্রেরিত ১৩:১৪, ৪৩; ১৬:১; গালা ৫:২) তাদের সবাইকে গালাতিয়ার খ্রিস্টান বলা হতো কারণ তারা যে-এলাকায় বাস করত, সেই এলাকার নাম গালাতিয়া। পুরো চিঠির ধরন থেকে বোঝা যায় যে, পৌল রোমীয় প্রদেশের দক্ষিণ দিকে থাকা সেই লোকেদের কাছে চিঠি লিখেছিলেন, যাদের সম্বন্ধে তিনি ভালোভাবে জানতেন, তিনি উত্তর দিকে অর্থাৎ যেখানে তিনি কখনোই পরিদর্শন করেননি, সেই অপরিচিত লোকেদের কাছে লেখেননি।