ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w০৮ ৫/১৫ পৃষ্ঠা ১২-১৬
  • ঈশ্বরের রাজ্যের মাধ্যমে মুক্তি সন্নিকট!

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • ঈশ্বরের রাজ্যের মাধ্যমে মুক্তি সন্নিকট!
  • ২০০৮ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • এখনই মুক্তির আরও বেশি প্রয়োজন
  • মুক্তির একমাত্র নির্ভরযোগ্য উৎস
  • এক ধার্মিক সরকার
  • শেষকাল শীঘ্রই শেষ হবে!
  • যেহেতু মুক্তি সন্নিকট সাহস করুন
    ১৯৯৭ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • ঈশ্বরের রাজ্য কী?
    বাইবেল প্রকৃতপক্ষে কী শিক্ষা দেয়?
  • এক ধার্মিক নতুন জগতে মুক্তি
    ১৯৯৭ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • ঈশ্বরের রাজ্য যে কাজগুলো করবে
    ২০০০ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
আরও দেখুন
২০০৮ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w০৮ ৫/১৫ পৃষ্ঠা ১২-১৬

ঈশ্বরের রাজ্যের মাধ্যমে মুক্তি সন্নিকট!

“তোমার রাজ্য আইসুক, তোমার ইচ্ছা সিদ্ধ হউক, যেমন স্বর্গে তেমনি পৃথিবীতেও হউক।”—মথি ৬:১০.

১. যিশুর প্রধান শিক্ষা কী ছিল?

যিশু খ্রিস্ট যখন পর্বতেদত্ত উপদেশ দিয়েছিলেন, তখন তিনি একটা আদর্শ প্রার্থনা অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন, যা তাঁর মূল শিক্ষাকে সারাংশ করেছিল। তিনি তাঁর অনুসারীদের ঈশ্বরের কাছে এই প্রার্থনা করতে শিখিয়েছিলেন: “তোমার রাজ্য আইসুক, তোমার ইচ্ছা সিদ্ধ হউক, যেমন স্বর্গে তেমনি পৃথিবীতেও হউক।” (মথি ৬:৯-১৩) যিশু “ঈশ্বরের রাজ্যের সুসমাচার প্রচার করিতে করিতে নগরে নগরে ও গ্রামে গ্রামে ভ্রমণ করিলেন।” (লূক ৮:১) খ্রিস্ট তাঁর অনুসারীদের জোরালো পরামর্শ দিয়েছিলেন: ‘তোমরা প্রথমে ঈশ্বরের রাজ্য ও তাঁহার ধার্ম্মিকতার বিষয়ে চেষ্টা কর।’ (মথি ৬:৩৩) এই প্রবন্ধ অধ্যয়ন করার সময়, আপনার পরিচর্যায় এই তথ্য কাজে লাগানোর বিভিন্ন উপায় খুঁজুন। উদাহরণস্বরূপ, দেখুন যে কীভাবে আপনি এই প্রশ্নগুলোর উত্তর দিতে পারবেন: রাজ্যের বার্তা কতখানি গুরুত্বপূর্ণ? মানবজাতির কীসের থেকে মুক্তি পাওয়া প্রয়োজন? আর ঈশ্বরের রাজ্য কীভাবে মুক্তি এনে দেবে?

২. রাজ্যের বার্তা কতখানি গুরুত্বপূর্ণ?

২ যিশু ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন: “সর্ব্ব জাতির কাছে সাক্ষ্য দিবার নিমিত্ত রাজ্যের এই সুসমাচার সমুদয় জগতে প্রচার করা যাইবে; আর তখন শেষ উপস্থিত হইবে।” (মথি ২৪:১৪) ঈশ্বরের রাজ্যের সুসমাচার হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। বাস্তবিকই এটা হচ্ছে পৃথিবীতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা! সারা পৃথিবীতে ১,০০,০০০রও বেশি মণ্ডলীতে ঈশ্বরের প্রায় সত্তর লক্ষ দাস সেই প্রচার কাজ করে চলেছে, যা আগে কখনো ঘটেনি, তারা অন্যদেরকে জানাচ্ছে যে, রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। রাজ্য প্রতিষ্ঠা হওয়ার বিষয়টা হচ্ছে সুসমাচার কারণ এর অর্থ হচ্ছে, ঈশ্বর পৃথিবীর বিষয়গুলোর ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করার জন্য স্বর্গে এক সরকার প্রতিষ্ঠা করেছেন। রাজ্যের শাসনাধীনে যিহোবার ইচ্ছা শীঘ্রই যেমন স্বর্গে তেমনই পৃথিবীতে পূর্ণ হতে যাচ্ছে।

৩, ৪. ঈশ্বরের ইচ্ছা যখন পৃথিবীতে পূর্ণ হবে, তখন এর ফল কী হবে?

৩ ঈশ্বরের ইচ্ছা যখন পৃথিবীতে পূর্ণ হবে, তখন মানবজাতির কী হবে? যিহোবা “তাহাদের সমস্ত নেত্রজল মুছাইয়া দিবেন; এবং মৃত্যু আর হইবে না; শোক বা আর্ত্তনাদ বা ব্যথাও আর হইবে না।” (প্রকা. ২১:৪) উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া পাপ ও অসিদ্ধতার কারণে লোকেরা অসুস্থ হবে না বা মারা যাবে না। ঈশ্বরের স্মৃতিতে থাকা মৃত ব্যক্তিদের চিরকাল বেঁচে থাকার সুযোগ থাকবে কারণ বাইবেল প্রতিজ্ঞা করে: “ধার্ম্মিক অধার্ম্মিক উভয় প্রকার লোকের পুনরুত্থান হইবে।” (প্রেরিত ২৪:১৫) আর কোনো যুদ্ধ, অসুস্থতা বা ক্ষুধা থাকবে না এবং পৃথিবী এক পরমদেশে রূপান্তরিত হবে। এমনকি যে-পশুরা এখন হিংস্র, সেগুলো মানুষের সঙ্গে ও একে অন্যের সঙ্গে শান্তিতে থাকবে।—গীত. ৪৬:৯; ৭২:১৬; যিশা. ১১:৬-৯; ৩৩:২৪; লূক ২৩:৪৩.

৪ রাজ্য শাসনের ফলে এই চমৎকার আশীর্বাদগুলো রয়েছে বলে এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে, বাইবেলের ভবিষ্যদ্বাণী এই সান্ত্বনাদায়ক কথাগুলোর মাধ্যমে সেই সময়ের জীবন সম্বন্ধে বলে: “মৃদুশীলেরা দেশের অধিকারী হইবে, এবং শান্তির বাহুল্যে আমোদ করিবে।” কিন্তু, যারা সমস্যার সৃষ্টি করে, তাদের সম্বন্ধে কী বলা যায়? শাস্ত্র ভবিষ্যদ্বাণী করে: “ক্ষণকাল, পরে দুষ্ট লোক আর নাই।” কিন্তু, “যাহারা সদাপ্রভুর অপেক্ষা করে, তাহারাই দেশের অধিকারী হইবে।”—গীত. ৩৭:৯-১১.

৫. বর্তমান বিধিব্যবস্থার কী ঘটতে যাচ্ছে?

৫ এই সমস্তকিছু ঘটার জন্য পরস্পরবিরোধী সরকার, ধর্ম ও বাণিজ্যিক ব্যবস্থাসহ বর্তমান বিধিব্যবস্থাকে প্রথমে সরিয়ে ফেলতে হবে। আর স্বর্গীয় সরকার ঠিক তা-ই করবে। ভাববাদী দানিয়েল এই ভবিষ্যদ্বাণী করতে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন: “সেই [বর্তমানে অস্তিত্বমান] রাজগণের সময়ে স্বর্গের ঈশ্বর [স্বর্গে] এক রাজ্য স্থাপন করিবেন, তাহা কখনও বিনষ্ট হইবে না, এবং সেই রাজত্ব অন্য জাতির হস্তে সমর্পিত হইবে না; তাহা ঐ সকল [বর্তমান] রাজ্য চূর্ণ ও বিনষ্ট করিয়া আপনি চিরস্থায়ী হইবে।” (দানি. ২:৪৪) ঈশ্বরের রাজ্য—এক নতুন স্বর্গীয় সরকার—তখন এক নতুন পার্থিব সমাজের ওপর শাসন করবে। সেই সময় ‘নূতন আকাশমণ্ডল ও নূতন পৃথিবী’ থাকবে, “যাহার মধ্যে ধার্ম্মিকতা বসতি করে।”—২ পিতর ৩:১৩.

এখনই মুক্তির আরও বেশি প্রয়োজন

৬. কীভাবে বাইবেল এই দুষ্ট জগতের মন্দতা সম্বন্ধে বর্ণনা করে?

৬ শয়তান, আদম ও হবা যখন ঈশ্বরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল, কোনটা ঠিক ও কোনটা ভুল নিজেরাই স্থির করতে চেয়েছিল, তখন মানব পরিবার এক ধ্বংসাত্মক পথে এগিয়ে গিয়েছিল। এই ঘটনার প্রায় ১,৬০০ বছর পর, পৃথিবীব্যাপী জলপ্লাবনের আগে, “পৃথিবীতে মনুষ্যের দুষ্টতা বড়, এবং তাহার অন্তঃকরণের চিন্তার সমস্ত কল্পনা নিরন্তর কেবল মন্দ” ছিল। (আদি. ৬:৫) এর প্রায় ১,৩০০ বছর পর, শলোমন পরিস্থিতিকে এত খারাপ দেখেছিলেন যে তিনি লিখেছিলেন: “যাহারা এখনও জীবিত আছে, তাহাদের অপেক্ষা, যাহারা ইতিপূর্ব্বে মরিয়া গিয়াছে, আমি তাহাদিগের প্রশংসা করিলাম। কিন্তু যে অদ্য পর্য্যন্ত হয় নাই, এবং সূর্য্যের নীচে কৃত মন্দ কার্য্য দেখে নাই, তাহার অবস্থা ঐ উভয় হইতেও ভাল।” (উপ. ৪:২, ৩) তারও প্রায় ৩,০০০রেরও বেশি বছর পর আমাদের সময়ে মন্দতা ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে।

৭. ঈশ্বরের দ্বারা মুক্তির কেন এখনই আরও বেশি প্রয়োজন?

৭ যদিও এটা ঠিক যে, দীর্ঘসময় ধরে মন্দতা বিরাজ করছে কিন্তু অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে এখনই ঈশ্বরের রাজ্যের দ্বারা মুক্তির আরও বেশি প্রয়োজন রয়েছে। বিগত ১০০ বছরে পরিস্থিতি আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে আরও খারাপ হয়েছে এবং সেগুলো ক্রমান্বয়ে খারাপ হয়ে চলেছে। উদাহরণস্বরূপ, ওয়ার্ল্ডওয়াচ ইন্সটিটিউট রিপোর্ট করে: “সা.কা. প্রথম শতাব্দী থেকে ১৮৯৯ সাল পর্যন্ত সমস্ত যুদ্ধে যত লোক নিহত হয়েছে, [বিংশ] শতাব্দীর যুদ্ধে তার চেয়ে তিন গুণ বেশি লোক নিহত হয়েছে।” ১৯১৪ সাল থেকে যুদ্ধগুলোতে ১০ কোটিরও বেশি লোক নিহত হয়েছে! একটি বিশ্বকোষ হিসেব করে বলে যে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে প্রায় ৬ কোটি লোক নিহত হয়েছে। কিছু কিছু দেশ পারমাণবিক অস্ত্রের দ্বারা সজ্জিত হওয়ায়, মানুষের পক্ষে এখন বিশ্বের জনসংখ্যার এক বৃহৎ অংশকে নির্মূল করে দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। আর এমনকি বিজ্ঞান ও চিকিৎসাবিদ্যায় উন্নতি হওয়া সত্ত্বেও, প্রতি বছর ক্ষুধা এখনও প্রায় পঞ্চাশ লক্ষ শিশুর জীবন কেড়ে নেয়।—বাইবেল প্রকৃতপক্ষে কী শিক্ষা দেয়? বইয়ের ৯ অধ্যায় দেখুন।

৮. হাজার হাজার বছরের মানব শাসন নিঃসন্দেহে কী প্রমাণ করেছে?

৮ মন্দতার জোয়ারকে থামানোর জন্য মানব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। বিশ্বের রাজনৈতিক, বাণিজ্যিক ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো কখনোই শান্তি, সমৃদ্ধি ও স্বাস্থ্যের জন্য মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলোকে পূরণ করেনি। মানবজাতি এখন যে-বড় বড় সমস্যাগুলোর মুখোমুখি হচ্ছে, সেগুলো সমাধান করা তো দূরের কথা, এই প্রতিষ্ঠানগুলো বরং সেগুলোকে আরও বৃদ্ধি করেছে। নিশ্চিতভাবেই, হাজার হাজার বছরের মানব শাসন এই কথাগুলোর সত্যতাকে প্রমাণ করেছে: “মনুষ্যের পথ তাহার বশে নয়, মনুষ্য চলিতে চলিতে আপন পাদবিক্ষেপ স্থির করিতে পারে না।” (যির. ১০:২৩) হ্যাঁ, “এক জন অন্যের উপরে তাহার অমঙ্গলার্থে কর্ত্তৃত্ব করে।” (উপ. ৮:৯) অধিকন্তু, “সমস্ত সৃষ্টি . . . একসঙ্গে আর্ত্তস্বর করিতেছে, ও একসঙ্গে ব্যথা খাইতেছে।”—রোমীয় ৮:২২.

৯. সত্য খ্রিস্টানরা এই “শেষ কালে” কোন পরিস্থিতি দেখার আশা করে?

৯ আমাদের সময় সম্বন্ধে বাইবেল ভবিষ্যদ্বাণী করেছিল: “শেষ কালে বিষম সময় উপস্থিত হইবে।” মানব শাসনের অধীনে শেষকালের পরিস্থিতি সম্বন্ধে বর্ণনা করার পর সেই ভবিষ্যদ্বাণী বলে: “দুষ্ট লোকেরা ও বঞ্চকেরা, . . . উত্তর উত্তর কুপথে অগ্রসর হইবে।” (পড়ুন, ২ তীমথিয় ৩:১-৫, ১৩.) খ্রিস্টানরা এটাই আশা করে, কারণ “সমস্ত জগৎ সেই পাপাত্মার” অর্থাৎ শয়তানের “মধ্যে শুইয়া রহিয়াছে।” (১ যোহন ৫:১৯) কিন্তু সুসংবাদ হচ্ছে যে, ঈশ্বর শীঘ্রই সেই ব্যক্তিদের মুক্ত করবেন, যারা তাঁকে ভালবাসে। তাদেরকে এই জগৎ থেকে মুক্ত করা হবে, যা অতি দ্রুত মন্দ থেকে মন্দতর হচ্ছে।

মুক্তির একমাত্র নির্ভরযোগ্য উৎস

১০. কেন যিহোবাই হলেন মুক্তির একমাত্র নির্ভরযোগ্য উৎস?

১০ সুসমাচার প্রচার করার সময় ব্যাখ্যা করুন যে, যিহোবা হলেন মুক্তির একমাত্র নির্ভরযোগ্য উৎস। একা তাঁরই তাঁর দাসদেরকে যেকোনো মন্দ পরিস্থিতি থেকে মুক্ত করার ক্ষমতা ও ইচ্ছা রয়েছে। (প্রেরিত ৪:২৪, ৩১; প্রকা. ৪:১১) আমরা নিশ্চিত থাকতে পারি যে, যিহোবা সবসময় তাঁর লোকেদের মুক্ত করবেন এবং তাঁর উদ্দেশ্য পূর্ণ করবেন, কারণ তিনি প্রতিজ্ঞা করেছেন: “অবশ্যই, আমি যেরূপ সঙ্কল্প করিয়াছি, তদ্রূপ ঘটিবে।” তাঁর বাক্য “নিষ্ফল হইয়া [তাঁহার] কাছে ফিরিয়া আসিবে না।”—পড়ুন, যিশাইয় ১৪:২৪, ২৫; ৫৫:১০, ১১.

১১, ১২. ঈশ্বর তাঁর দাসদের কোন নিশ্চয়তা দেন?

১১ যিহোবা নিশ্চয়তা দিয়েছেন যে, দুষ্টদের ওপর বিচার নিয়ে আসার সময় তিনি তাঁর দাসদের মুক্ত করবেন। গুরুতর পাপীদের কাছে সাহসের সঙ্গে কথা বলার জন্য ভাববাদী যিরমিয়কে পাঠানোর সময় ঈশ্বর বলেছিলেন: “ভীত হইও না।” কেন ভীত হবে না? “তোমার উদ্ধারার্থে আমি তোমার সঙ্গে সঙ্গে আছি।” (যির. ১:৮) অনুরূপভাবে, যিহোবা যখন দুষ্ট সদোম ও ঘমোরাকে ধ্বংস করতে যাচ্ছিলেন, তখন তিনি লোট ও তার পরিবারকে নিরাপদে সেই এলাকা থেকে বের করে নিয়ে আসার জন্য দুজন দূতকে পাঠিয়েছিলেন। ‘এমন সময়ে সদাপ্রভু সদোমের ও ঘমোরার উপরে গন্ধক ও আগ্নি বর্ষাইলেন।’—আদি. ১৯:১৫, ২৪, ২৫.

১২ এমনকি বিশ্বব্যাপী যিহোবা সেই ব্যক্তিদের মুক্ত করতে পারেন, যারা তাঁর ইচ্ছা পালন করে। যখন তিনি প্লাবন দ্বারা প্রাচীন দুষ্ট জগৎকে ধ্বংস করে দিয়েছিলেন, তখন তিনি “আর সাত জনের সহিত ধার্ম্মিকতার প্রচারক নোহকে রক্ষা করিলেন।” (২ পিতর ২:৫) বর্তমান দুষ্ট জগৎকে ধ্বংস করার সময় যিহোবা আবারও সরল ব্যক্তিদের মুক্ত করবেন। তাই তাঁর বাক্য আমাদের বলে: “হে দেশস্থ সমস্ত নম্র লোক, . . . ধর্ম্মের অনুশীলন কর, নম্রতার অনুশীলন কর; হয় ত সদাপ্রভুর ক্রোধের দিনে তোমরা গুপ্তস্থানে রক্ষা পাইবে।” (সফ. ২:৩) সেই বিশ্বব্যাপী ধ্বংসের ফলস্বরূপ, ‘সরলগণ দেশে বাস করিবে, কিন্তু দুষ্টগণ তথা হইতে উচ্ছিন্ন হইবে।’—হিতো ২:২১, ২২.

১৩. যিহোবার যে-দাসেরা মারা গিয়েছে, তারা কীভাবে মুক্ত হবে?

১৩ কিন্তু, ঈশ্বরের অনেক দাস অসুস্থতা, তাড়না ও অন্যান্য কারণে ইতিমধ্যেই মারা গিয়েছে। (মথি ২৪:৯) এই ব্যক্তিরা তাহলে কীভাবে মুক্তি পাবে? আগে যেমন উল্লেখ করা হয়েছে, “ধার্ম্মিক . . . লোকের পুনরুত্থান হইবে।” (প্রেরিত ২৪:১৫) এটা জেনে কতই না সান্ত্বনা পাওয়া যায় যে, কোনোকিছুই যিহোবাকে তাঁর দাসদের মুক্ত করা থেকে বিরত করতে পারবে না!

এক ধার্মিক সরকার

১৪. কেন আমরা দৃঢ়প্রত্যয়ী যে, ঈশ্বরের রাজ্য হচ্ছে এক ধার্মিক সরকার?

১৪ পরিচর্যায় আপনি ব্যাখ্যা করতে পারেন যে, যিহোবার স্বর্গীয় রাজ্য হচ্ছে এক ধার্মিক সরকার। এটা সত্য কারণ এটা ঈশ্বরের ন্যায়বিচার, ধার্মিকতা ও প্রেমের মতো অপূর্ব গুণাবলিকে প্রতিফলিত করে। (দ্বিতী. ৩২:৪; ১ যোহন ৪:৮) ঈশ্বর এই রাজ্যকে যিশু খ্রিস্টের হাতে সমর্পণ করেছেন, যিনি পৃথিবীতে শাসন করার জন্য সবচেয়ে যোগ্য। এ ছাড়া, যিহোবা এও উদ্দেশ্য করেছেন যে, ১,৪৪,০০০ জন অভিষিক্ত ব্যক্তিকে পৃথিবী থেকে নেওয়া হবে এবং পৃথিবীর বিষয়গুলোতে পরিচালনা দেওয়ার জন্য খ্রিস্টের সঙ্গে তাঁর সহদায়াদ হিসেবে স্বর্গীয় জীবনে উত্থিত করা হবে।—প্রকা. ১৪:১-৫.

১৫. ঈশ্বরের রাজ্যের শাসন ও মানব শাসনের মধ্যে বৈসাদৃশ্য তুলে ধরুন।

১৫ যিশু ও ১,৪৪,০০০ জন এবং অসিদ্ধ মানুষদের শাসনের মধ্যে কত বৈসাদৃশ্যই না থাকবে! এই বিধিব্যবস্থার শাসকরা প্রায়ই নিষ্ঠুর হয়ে এসেছে এবং তাদের প্রজাদের যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিয়েছে, যার ফলে লক্ষ লক্ষ লোক নিহত হয়েছে। এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে, শাস্ত্র আমাদেরকে সেই মানুষের ওপর নির্ভর না করতে পরামর্শ দেয়, “যাহার নিকটে ত্রাণ নাই”! (গীত. ১৪৬:৩) কিন্তু খ্রিস্টের শাসন কী এক উত্তম মনোভাবকেই না চিহ্নিত করবে! যিশু বলেছিলেন, “হে পরিশ্রান্ত ও ভারাক্রান্ত লোক সকল, আমার নিকটে আইস, আমি তোমাদিগকে বিশ্রাম দিব। আমার যোঁয়ালি আপনাদের উপরে তুলিয়া লও, এবং আমার কাছে শিক্ষা কর, কেননা আমি মৃদুশীল ও নম্রচিত্ত; তাহাতে তোমরা আপন আপন প্রাণের জন্য বিশ্রাম পাইবে। কারণ আমার যোঁয়ালি সহজ ও আমার ভার লঘু।”—মথি ১১:২৮-৩০.

শেষকাল শীঘ্রই শেষ হবে!

১৬. এই শেষকাল কীভাবে শেষ হবে?

১৬ এই জগৎ সেই ১৯১৪ সাল থেকে শেষকালে বা ‘যুগান্তে’ রয়েছে। (মথি ২৪:৩) খুব শীঘ্রই যিশু যেটাকে “মহাক্লেশ” বলে অভিহিত করেছিলেন, সেটা ঘটবে। (পড়ুন, মথি ২৪:২১.) সেই ক্লেশ, যা আগে কখনো ঘটেনি, তা শয়তানের পুরো জগতের শেষ নিয়ে আসবে। কিন্তু, মহাক্লেশ কীভাবে শুরু হবে? আর কীভাবেই বা সেটা শেষ হবে?

১৭. মহাক্লেশের শুরুতে কী ঘটবে বলে বাইবেল ইঙ্গিত করে?

১৭ মহাক্লেশ আকস্মিকভাবে শুরু হবে। হ্যাঁ, “প্রভুর [“যিহোবার,” NW] দিন” অপ্রত্যাশিতভাবে আসবে, “লোকে যখন বলে, শান্তি ও অভয়।” (পড়ুন, ১ থিষলনীকীয় ৫:২, ৩.) ভবিষ্যদ্বাণীকৃত ক্লেশ তখনই শুরু হবে, যখন জাতিগুলো মনে করবে যে, তারা তাদের কিছু বড় বড় সমস্যা প্রায় সমাধান করে ফেলেছে। মিথ্যা ধর্মের বিশ্ব সাম্রাজ্য ‘মহতী বাবিলের’ আকস্মিক বিনাশ বিশ্বকে হতবাক করে দেবে। রাজারা ও অন্যান্যরা বিস্মিত হয়ে যাবে, যখন মহতী বাবিলের ওপর বিচার সম্পাদিত হবে।—প্রকা. ১৭:১-৬, ১৮; ১৮:৯, ১০, ১৫, ১৬, ১৯.

১৮. তাঁর লোকেদের ওপর শয়তানের আক্রমণের প্রতি যিহোবা কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাবেন?

১৮ চরম সংকটপূর্ণ এক সময়ে “সূর্য্যে, চন্দ্রে ও নক্ষত্রগণে নানা চিহ্ন” প্রকাশ পাবে এবং “মনুষ্যপুত্ত্রের চিহ্ন আকাশে দেখা যাইবে।” সেই সময়ে আমরা ‘ঊর্দ্ধ্বদৃষ্টি করিতে পারি, কেননা আমাদের মুক্তি সন্নিকট।’ (লূক ২১:২৫-২৮; মথি ২৪:২৯, ৩০) শয়তান অর্থাৎ গোগ ঈশ্বরের লোকেদের বিরুদ্ধে তার বাহিনীকে উসকে দেবে। কিন্তু, যিহোবার বিশ্বস্ত দাসদের যারা আক্রমণ করে, তাদের সম্বন্ধে তিনি বলেন: “যে ব্যক্তি তোমাদিগকে স্পর্শ করে, সে তাঁহার [“আমার,” NW] চক্ষুর তারা স্পর্শ করে।” (সখ. ২:৮) তাই, তাদেরকে ধ্বংস করার জন্য শয়তানের প্রচেষ্টা সফল হবে না। কেন? কারণ সার্বভৌম প্রভু যিহোবা তাঁর দাসদের মুক্ত করার জন্য তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দেখাবেন।—যিহি. ৩৮:৯, ১৮.

১৯. কেন আমরা প্রত্যয়ী হতে পারি যে, ঈশ্বরের দণ্ড প্রদানকারী বাহিনী শয়তানের ব্যবস্থাকে ধ্বংস করবে?

১৯ ঈশ্বর যখন জাতিগুলোর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেবেন, তখন ‘তাহারা জানিবে যে, তিনিই সদাপ্রভু [“যিহোবা,” NW]।’ (যিহি. ৩৬:২৩) তিনি তাঁর দণ্ড প্রদানকারী বাহিনীকে—খ্রিস্ট যিশুর নেতৃত্বে অযুত অযুত আত্মিক প্রাণীদের—শয়তানের বিধিব্যবস্থার বাকি অংশকে ধ্বংস করার জন্য প্রেরণ করবেন। (প্রকা. ১৯:১১-১৯) যখন আমরা স্মরণ করি যে, একবার শুধুমাত্র একজন দূত এক রাতেই ঈশ্বরের “এক লক্ষ পঁচাশী সহস্র” শত্রুকে হত্যা করেছিল, তখন আমরা দৃঢ়প্রত্যয়ী হতে পারি যে, যখন মহাক্লেশ আরমাগিদোনের মাধ্যমে চূড়ান্ত পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছাবে, তখন স্বর্গীয় সৈন্যবাহিনী সহজেই পৃথিবীতে শয়তানের ব্যবস্থার প্রতিটা ক্ষুদ্রতম অংশকেও ধ্বংস করে দেবে। (২ রাজা. ১৯:৩৫; প্রকা. ১৬:১৪, ১৬) শয়তান ও তার মন্দ দূতদের এক হাজার বছরের জন্য অগাধলোকে বদ্ধ করা হবে। অবশেষে তাদেরকে ধ্বংস করে দেওয়া হবে।—প্রকা. ২০:১-৩.

২০. রাজ্যের মাধ্যমে যিহোবা কী সম্পাদন করবেন?

২০ এভাবে পৃথিবীকে দুষ্টতা থেকে পরিষ্কার করা হবে আর ধার্মিক মানুষেরা চিরকাল এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকবে। যিহোবা মহান মুক্তিদাতা হিসেবে প্রমাণিত হবেন। (গীত. ১৪৫:২০) রাজ্যের মাধ্যমে, তিনি তাঁর সার্বভৌমত্বকে প্রতিপাদন করবেন, তাঁর পবিত্র নামকে পবিত্রীকৃত করবেন ও পৃথিবীর জন্য তাঁর মহৎ উদ্দেশ্যকে পরিপূর্ণ করবেন। আপনি যখন এই সুসমাচার ঘোষণা করেন ও “অনন্ত জীবনের জন্য নিরূপিত [“সঠিক প্রবণতাসম্পন্ন,” NW]” লোকেদেরকে উপলব্ধি করতে সাহায্য করেন যে, ঈশ্বরের রাজ্যের মাধ্যমে মুক্তি সন্নিকট, তখন আপনিও যেন এই প্রচুর আনন্দ উপভোগ করেন!—প্রেরিত ১৩:৪৮.

আপনি কি মনে করতে পারেন?

• কীভাবে যিশু রাজ্যের গুরুত্বকে তুলে ধরেছিলেন?

• কেন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে এখনই মুক্তির আরও বেশি প্রয়োজন?

• মহাক্লেশের সময় আমরা কোন ঘটনাগুলো আশা করতে পারি?

• কীভাবে যিহোবা মহান মুক্তিদাতা হিসেবে প্রমাণিত হন?

[১২, ১৩ পৃষ্ঠার চিত্রগুলো]

ঈশ্বরের বাক্য আমাদের সময়ের জন্য বিশ্বব্যাপী এক প্রচার কাজের বিষয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিল, যা আগে কখনো ঘটেনি

[১৫ পৃষ্ঠার চিত্র]

যিহোবা যেমন নোহ ও তার পরিবারকে রক্ষা করেছিলেন, তেমনই তিনি আমাদের রক্ষা করতে পারেন

[১৬ পৃষ্ঠার চিত্র]

যিহোবা “সমস্ত নেত্রজল মুছাইয়া দিবেন; এবং মৃত্যু আর হইবে না।”—প্রকা. ২১:৪

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৫)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার