ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w০৯ ১২/১৫ পৃষ্ঠা ১৫-১৯
  • সংকটপূর্ণ সময়ে আনন্দ বজায় রাখুন

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • সংকটপূর্ণ সময়ে আনন্দ বজায় রাখুন
  • ২০০৯ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • যিহোবা—“সুখী ঈশ্বর”
  • যুক্তিবাদিতা অত্যাবশ্যক
  • ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করে আনন্দ খুঁজে নিন
  • “সুখী সেই জাতি, সদাপ্রভু যাহার ঈশ্বর”
  • যিহোবা যেন আপনাকে শান্ত থাকতে সাহায্য করেন
    প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য সম্বন্ধে ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০২০
  • হান্না যেভাবে শান্তি লাভ করেছিলেন
    ২০০৭ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • “সমস্ত সান্ত্বনার ঈশ্বর” যিহোবার ওপর নির্ভর করুন
    ২০১১ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • তিনি প্রার্থনায় ঈশ্বরের কাছে তার হৃদয় উজাড় করে দিয়েছিলেন
    তাদের বিশ্বাস অনুকরণ করুন
আরও দেখুন
২০০৯ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w০৯ ১২/১৫ পৃষ্ঠা ১৫-১৯

সংকটপূর্ণ সময়ে আনন্দ বজায় রাখুন

“[সদাপ্রভুর] শরণাপন্ন সকলে আহ্লাদিত হউক, তাহারা চিরকাল আনন্দগান করুক।”—গীত. ৫:১১.

১, ২. (ক) কিছু বিষয় কী, যেগুলো আজকে অনেক দুর্দশার কারণ হয়? (খ) সকলের প্রতি ঘটে এমন দুর্দশাগুলোর পাশাপাশি সত্য খ্রিস্টানদের কী সহ্য করতে হবে?

যিহোবার সাক্ষিরা সেই সমস্ত দুর্দশা থেকে রেহাই পায় না, যেগুলো সমগ্র মানবজাতির ওপর এসে থাকে। ঈশ্বরের লোকেরা অনেকে অপরাধ, যুদ্ধ এবং অন্যান্য অবিচারের মুখোমুখি হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, দরিদ্রতা, রোগব্যাধি ও মৃত্যু অনেক দুর্দশা নিয়ে আসে। প্রেরিত পৌল উপযুক্তভাবেই লিখেছিলেন: “আমরা জানি, সমস্ত সৃষ্টি এখন পর্য্যন্ত একসঙ্গে আর্ত্তস্বর করিতেছে, ও একসঙ্গে ব্যথা খাইতেছে।” (রোমীয় ৮:২২) এ ছাড়া, আমরা আমাদের নিজস্ব অসিদ্ধতার শিকার হই। প্রাচীনকালের রাজা দায়ূদের মতো আমরাও হয়তো বলতে পারি: “আমার অপরাধসমূহ আমার মস্তকের উপরে উঠিয়াছে, ভারী বোঝার ন্যায় সে সকল আমার শক্তি অপেক্ষা ভারী।”—গীত. ৩৮:৪.

২ সমস্ত মানুষের কাছে সাধারণ এমন দুর্দশাগুলোর পাশাপাশি সত্য খ্রিস্টানরা রূপক “ক্রুশ [“যাতনাদণ্ড,” NW]” বহন করে। (লূক ১৪:২৭) হ্যাঁ, যিশুর মতো তাঁর শিষ্যরাও ঘৃণিত ও তাড়িত হয়। (মথি ১০:২২, ২৩; যোহন ১৫:২০; ১৬:২) তাই, নতুন জগতের আশীর্বাদগুলোর জন্য অপেক্ষা করার সময়, খ্রিস্টকে অনুসরণ করার জন্য আমাদের প্রাণপণ প্রচেষ্টা ও ধৈর্যের প্রয়োজন।—মথি ৭:১৩, ১৪; লূক ১৩:২৪.

৩. বাইবেল কি বলে যে, ঈশ্বরকে খুশি করার জন্য খ্রিস্টানদের কষ্টভোগ করতে হবে?

৩ তার মানে কি এই যে, সত্য খ্রিস্টানরা নিরানন্দ ও সুখবিহীন এক জীবনের অনুধাবন করে? শেষ না আসা পর্যন্ত, আমাদের জীবন কি শুধুমাত্র দুঃখ ও শোক দ্বারা চিহ্নিত হওয়া উচিত? এটা স্পষ্ট যে, যিহোবা চান যেন তাঁর প্রতিজ্ঞাগুলোর পরিপূর্ণতার জন্য অপেক্ষা করার সময় আমরা সুখী হই। বাইবেল বার বার সত্য উপাসকদের সুখী লোক হিসেবে বর্ণনা করে। (পড়ুন, যিশাইয় ৬৫:১৩, ১৪.) “[সদাপ্রভুর] শরণাপন্ন সকলে আহ্লাদিত হউক, তাহারা চিরকাল আনন্দগান করুক,” গীতসংহিতা ৫:১১ পদ বলে। হ্যাঁ, এমনকী বিভিন্ন দুর্দশার মধ্যেও অনেক আনন্দ, মনের শান্তি ও পরিতৃপ্তি লাভ করা সম্ভব। আসুন আমরা পুনরালোচনা করে দেখি যে, বিভিন্ন পরীক্ষার মুখোমুখি হওয়া সত্ত্বেও কীভাবে বাইবেল আমাদের আনন্দ বজায় রাখতে সাহায্য করতে পারে।

যিহোবা—“সুখী ঈশ্বর”

৪. ঈশ্বর কেমন বোধ করেন, যখন তাঁর কর্তৃত্বকে প্রত্যাখ্যান করা হয়?

৪ উদাহরণস্বরূপ, যিহোবার কথা বিবেচনা করুন। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর হিসেবে, পুরো নিখিলবিশ্ব তাঁর কর্তৃত্বের অধীনে রয়েছে। তাঁর কিছুরই অভাব নেই এবং কারোরই প্রয়োজন নেই। কিন্তু, তাঁর অসীম শক্তি থাকা সত্ত্বেও, যিহোবা নিশ্চয়ই কিছুটা হতাশ হয়েছিলেন, যখন তাঁর আত্মিক পুত্রদের মধ্যে একজন বিদ্রোহ করেছিল ও শয়তানে পরিণত হয়েছিল। অন্য কিছু স্বর্গদূত যখন সেই বিদ্রোহে যোগ দিয়েছিল, তখনও নিশ্চয়ই তা ঈশ্বরকে প্রভাবিত করেছিল। এ ছাড়া, তাঁর পার্থিব সৃষ্টির মধ্যে শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি আদম ও হবা যখন তাঁকে প্রত্যাখ্যান করেছিল, তখন তিনি যে-কষ্ট অনুভব করেছিলেন, তা-ও চিন্তা করুন। তখন থেকে তাদের কোটি কোটি বংশধর যিহোবার কর্তৃত্বকে প্রত্যাখ্যান করেছে।—রোমীয় ৩:২৩.

৫. কোন বিষয়টা যিহোবাকে বিশেষভাবে দুঃখিত করেছে?

৫ শয়তানের বিদ্রোহ এখনও ব্যাপক মাত্রায় বিদ্যমান। প্রায় ৬,০০০ বছর ধরে, প্রতিমাপূজা, দৌরাত্ম্য, হত্যা ও যৌন বিকৃতির কাজগুলো যিহোবা দেখে আসছেন। (আদি. ৬:৫, ৬, ১১, ১২) অধিকন্তু, তিনি বিভিন্ন সময়ে জঘন্য মিথ্যাচার ও ঈশ্বরনিন্দাও শুনেছেন। এমনকী ঈশ্বরের নিজ সত্য উপাসকরা পর্যন্ত মাঝে মাঝে তাঁর অনুভূতিতে আঘাত দিয়েছে। বাইবেল এইরকম এক পরিস্থিতিকে এই কথাগুলোর দ্বারা বর্ণনা করে: “তাহারা প্রান্তরে কতবার তাঁহার বিরুদ্ধে দ্রোহ করিল, মরুভূমিতে কতবার তাঁহাকে মনঃপীড়া দিল। তাহারা ফিরিয়া ঈশ্বরের পরীক্ষা করিল, ইস্রায়েলের পবিত্রতমকে অসন্তুষ্ট করিল [‘কষ্ট দিল,’ বাংলা কমন ল্যাঙ্গুয়েজ ভারসন]।” (গীত. ৭৮:৪০, ৪১) যিহোবার লোকেরা যখন তাঁকে প্রত্যাখ্যান করে, তখন তিনি নিশ্চিতভাবেই প্রচুররূপে কষ্ট পান। (যির. ৩:১-১০) এটা স্পষ্ট যে, মন্দ বিষয়গুলো ঘটে চলেছে আর যখন সেগুলো ঘটে, তখন যিহোবা গভীরভাবে দুঃখিত হন।—পড়ুন, যিশাইয় ৬৩:৯, ১০.

৬. ঈশ্বর দুঃখজনক পরিস্থিতিগুলোর কীভাবে মোকাবিলা করেন?

৬ কিন্তু, কষ্ট পেয়ে ও হতাশ হয়ে যিহোবা পদক্ষেপ নেওয়া থেকে বিরত হন না। যখন বিভিন্ন জটিল পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে, যিহোবা ঘটনার মন্দ পরিণতিগুলোকে লাঘব করার জন্য সঙ্গেসঙ্গে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। এ ছাড়া, তিনি দীর্ঘস্থায়ী পদক্ষেপও গ্রহণ করেছেন, যাতে শেষপর্যন্ত তাঁর উদ্দেশ্য পরিপূর্ণ হয়। এই ইতিবাচক পদক্ষেপগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে, যিহোবা আনন্দের সঙ্গে তাঁর সার্বভৌমত্বের প্রতিপাদন এবং এর ফলে তাঁর অনুগত উপাসকদের প্রতি যে-আশীর্বাদগুলো আসে, সেগুলোর জন্য অপেক্ষা করে আছেন। (গীত. ১০৪:৩১) হ্যাঁ, যিহোবার নামের ওপর বিভিন্ন নিন্দা আসা সত্ত্বেও, যিহোবা ‘পরম ধন্য [“সুখী,” NW] ঈশ্বর’ হিসেবে আছেন।—১ তীম. ১:১১; গীত. ১৬:১১.

৭, ৮. কোনো সমস্যা দেখা দিলে কীভাবে আমরা হয়তো যিহোবাকে অনুকরণ করতে পারি?

৭ এটা ঠিক যে, সমস্যাগুলো সমাধান করার ব্যাপারে আমাদের ক্ষমতার বিষয়টা উত্থাপিত হলে, আমরা নিজেদেরকে যিহোবার সঙ্গে তুলনা করতে পারি না। তা সত্ত্বেও, বিভিন্ন প্রতিকূল বিষয়ের মুখোমুখি হলে আমরা যিহোবাকে অনুকরণ করতে পারি। কোনো সমস্যা দেখা দিলে কিছুটা বিষণ্ণ বোধ করা স্বাভাবিক কিন্তু আমাদের এইরকম অবস্থায় ক্রমাগত থাকার প্রয়োজন নেই। যিহোবার প্রতিমূর্তিতে সৃষ্টি করা হয়েছে বলে আমাদের চিন্তা করার ক্ষমতা ও ব্যবহারিক প্রজ্ঞা রয়েছে, যেগুলো আমাদেরকে নিজেদের সমস্যাগুলো বিশ্লেষণ করার ও যখনই সম্ভব ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ করার সুযোগ করে দেয়।

৮ একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যা আমাদের জীবনের সমস্যাগুলোর সঙ্গে মোকাবিলা করায় সাহায্য করতে পারে, তা হচ্ছে এই বিষয়টা স্বীকার করা যে, কিছু কিছু বিষয় আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। এইরকম বিষয়গুলো নিয়ে উদ্‌বিগ্ন হওয়া অতিরিক্ত হতাশার দিকে পরিচালিত করতে পারে এবং সত্য উপাসনার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত অনেক আনন্দ কেড়ে নিতে পারে। কোনো একটা সমস্যা সমাধান করার জন্য যুক্তিযুক্ত পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করার পর, সেটা নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তা না করে বরং ফলপ্রদ প্রচেষ্টাগুলোর ওপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করা সর্বোত্তম। নীচে উল্লেখিত বাইবেলের বিবরণগুলো এই বিষয়টাকে খুব ভালোভাবে তুলে ধরে।

যুক্তিবাদিতা অত্যাবশ্যক

৯. কীভাবে হান্না যুক্তিবাদিতা প্রদর্শন করেছিলেন?

৯ হান্নার উদাহরণ বিবেচনা করুন, যিনি অবশেষে ভাববাদী শমূয়েলের মা হয়েছিলেন। সন্তানধারণে অক্ষম হওয়ার কারণে তিনি খুবই নিরুৎসাহিত হয়ে পড়েছিলেন। তার বন্ধ্যাত্বের কারণে তিনি প্রায়ই উপহাস ও টিট্‌কারীর শিকার হতেন। মাঝে মাঝে, হান্না এতটাই নিরুৎসাহিত হয়ে পড়তেন যে, তিনি খাওয়াদাওয়া না করে কেবল কান্নাকাটি করতেন। (১ শমূ. ১:২-৭) একবার যিহোবার ধর্মধামে গিয়ে হান্না “তিক্তপ্রাণা হইয়া সদাপ্রভুর উদ্দেশে প্রার্থনা করিতে ও অনেক রোদন করিতে লাগিলেন।” (১ শমূ. ১:১০) হান্না যিহোবার কাছে তার অনুভূতি উজাড় করে জানানোর পর, মহাযাজক এলি তার কাছে এসে তাকে বলেছিলেন: “তুমি শান্তিতে যাও; ইস্রায়েলের ঈশ্বরের কাছে যাহা যাচ্ঞা করিলে, তাহা তিনি তোমাকে দিউন।” (১ শমূ. ১:১৭) এই সময়ে হান্না নিশ্চিতভাবে উপলব্ধি করেছিলেন যে, তিনি তার যথাসাধ্য করেছেন। তার বন্ধ্যাত্বের বিষয়টা তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে ছিল। তাই, হান্না যুক্তিবাদিতা প্রদর্শন করেছিলেন। এরপর তিনি “আপন পথে চলিয়া গেলেন, এবং ভোজন করিলেন; তাঁহার মুখ আর বিষণ্ণ রহিল না।”—১ শমূ. ১:১৮.

১০. পৌল যখন এমন একটা সমস্যার মুখোমুখি হয়েছিলেন, যা তিনি সমাধান করতে পারতেন না, তখন তিনি কোন বাস্তবসম্মত দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করেছিলেন?

১০ প্রেরিত পৌলও অনুরূপ দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করেছিলেন, যখন তিনি প্রতিকূল পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিলেন। তার কোনো একটা সমস্যা ছিল, যা তাকে অনেক কষ্ট দিয়েছিল। তিনি এটাকে “মাংসে একটা কন্টক” বলেছিলেন। (২ করি. ১২:৭) এটার ধরন যা-ই হোক না কেন, পৌল এই সমস্যাটা দূর করার জন্য তার যথাসাধ্য করেছিলেন, স্বস্তি লাভের জন্য যিহোবার কাছে প্রার্থনা করেছিলেন। এই বিষয়টা নিয়ে পৌল কত বার যিহোবার কাছে অনুরোধ করেছিলেন? তিন বার। তৃতীয় বারের পর, ঈশ্বর পৌলের কাছে প্রকাশ করেছিলেন যে, ‘মাংসের সেই কন্টক’ অলৌকিকভাবে দূর হয়ে যাবে না। পৌল এই বিষয়টাকে মেনে নিয়েছিলেন এবং পূর্ণরূপে যিহোবাকে সেবা করার ওপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করেছিলেন।—পড়ুন, ২ করিন্থীয় ১২:৮-১০.

১১. আমরা বিভিন্ন দুর্দশার সঙ্গে মোকাবিলা করার সময় প্রার্থনা ও বিনতি কোন ভূমিকা পালন করে?

১১ এই উদাহরণগুলো তুলে ধরার মানে এই নয় যে, দুর্দশাজনক বিষয়গুলোর ব্যাপারে আমাদের যিহোবার কাছে প্রার্থনা করা বন্ধ করে দেওয়া উচিত। (গীত. ৮৬:৭) এর বিপরীতে, ঈশ্বরের বাক্য আমাদের অনুরোধ করে: “কোন বিষয়ে ভাবিত হইও না, কিন্তু সর্ব্ববিষয়ে প্রার্থনা ও বিনতি দ্বারা ধন্যবাদ সহকারে তোমাদের যাচ্ঞা সকল ঈশ্বরকে জ্ঞাত কর।” এইরকম বিনতি ও অনুরোধগুলোর উত্তর যিহোবা কীভাবে দেবেন? বাইবেল আরও বলে: “তাহাতে সমস্ত চিন্তার অতীত যে ঈশ্বরের শান্তি, তাহা তোমাদের হৃদয় ও মন খ্রীষ্ট যীশুতে রক্ষা করিবে।” (ফিলি. ৪:৬, ৭) হ্যাঁ, যিহোবা হয়তো আমাদের সমস্যাকে দূর করে দেবেন না, কিন্তু তিনি আমাদের মানসিক ক্ষমতাকে রক্ষা করার দ্বারা আমাদের প্রার্থনাগুলোর উত্তর দিতে পারেন। কোনো বিষয় নিয়ে প্রার্থনা করার পর, আমাদের মন আগের চেয়ে আরও শান্ত হবে এবং আমরা হয়তো উদ্‌বেগের দ্বারা আচ্ছন্ন হয়ে পড়ার পিছনে যে-বিপদ রয়েছে, তা আরও স্পষ্টভাবে বুঝতে পারব।

ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করে আনন্দ খুঁজে নিন

১২. কোনো বিষয় নিয়ে দীর্ঘসময় ধরে নিরুৎসাহিত থাকা কেন ক্ষতিকর প্রমাণিত হতে পারে?

১২ হিতোপদেশ ২৪:১০ পদ স্বীকার করে: “সঙ্কটের দিনে যদি অবসন্ন হও, তবে তোমার শক্তি সঙ্কুচিত।” আরেকটা প্রবাদ বলে: “মনের ব্যথায় আত্মা ভগ্ন হয়।” (হিতো. ১৫:১৩) কিছু খ্রিস্টান এতটাই মনমরা হয়ে গিয়েছে যে, তারা তাদের ব্যক্তিগত বাইবেল পাঠ ও ঈশ্বরের বাক্য নিয়ে ধ্যান করা পর্যন্ত বন্ধ করে দিয়েছে। তাদের প্রার্থনা গতানুগতিক হয়ে উঠেছে এবং তারা নিজেদেরেকে সহউপাসকদের কাছে থেকে হয়তো পৃথক করে ফেলেছে। স্পষ্টতই, কোনো বিষয় নিয়ে দীর্ঘসময় ধরে বিষণ্ণ থাকা ক্ষতিকারক হতে পারে।—হিতো. ১৮:১, ১৪.

১৩. কিছু কাজ কী, যেগুলো নিরুৎসাহিতাকে দূর করতে এবং আমাদের পরমানন্দ লাভ করতে সাহায্য করতে পারে?

১৩ অন্যদিকে, এক ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি আমাদের জীবনের বিভিন্ন দিকের ওপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করতে আমাদের সাহায্য করবে, যেখান থেকে আমরা পরম আনন্দ লাভ করতে পারি। দায়ূদ লিখেছিলেন: “হে আমার ঈশ্বর, তোমার অভীষ্ট সাধনে আমি প্রীত” বা পরমানন্দিত। (গীত. ৪০:৮) আমাদের জীবনে যখন বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়, তখন নিশ্চিতভাবেই উপাসনার উত্তম তালিকাকে আমাদের বিঘ্নিত হতে দেওয়া উচিত নয়। বস্তুতপক্ষে, দুঃখের প্রতিষেধক হচ্ছে এমন কাজে রত হওয়া, যা সুখ নিয়ে আসে। যিহোবা আমাদের বলেন যেন আমরা তাঁর বাক্য পড়ে ও নিয়মিতভাবে এতে দৃষ্টিপাত করে আনন্দ ও সুখ খুঁজে পাই। (গীত. ১:১, ২; যাকোব ১:২৫) পবিত্র শাস্ত্র ও খ্রিস্টীয় সভাগুলো থেকে আমরা “মনোহর বাক্য” লাভ করি, যেগুলো আমাদের উৎসাহিত করতে পারে ও আমাদের হৃদয়কে আনন্দিত করতে পারে।—হিতো. ১২:২৫; ১৬:২৪.

১৪. যিহোবার কাছ থেকে কোন আশ্বাস আমাদের এখন আনন্দিত করে?

১৪ ঈশ্বর আমাদের আনন্দ করার অনেক কারণ প্রদান করেছেন। পরিত্রাণের বিষয়ে তাঁর প্রতিজ্ঞা বাস্তবিকই সুখের এক বিরাট উৎস। (গীত. ১৩:৫) আমরা জানি যে, বর্তমানে আমাদের প্রতি যা-ই ঘটুক না কেন, শেষপর্যন্ত ঈশ্বর সেই ব্যক্তিদের পুরস্কৃত করবেন, যারা আন্তরিকভাবে তাঁর অন্বেষণ করে। (পড়ুন, উপদেশক ৮:১২.) ভাববাদী হবক্‌কূক সুন্দরভাবে এইরকম দৃঢ়প্রত্যয় ব্যক্ত করেছিলেন, যখন তিনি লিখেছিলেন: “যদিও ডুমুরবৃক্ষ পুষ্পিত হইবে না, দ্রাক্ষালতায় ফল ধরিবে না, জিতবৃক্ষ ফলদানে বঞ্চনা করিবে, ও ক্ষেত্রে খাদ্যদ্রব্য উৎপন্ন হইবে না, খোঁয়াড় হইতে মেষপাল উচ্ছিন্ন হইবে, গোষ্ঠে গোরু থাকিবে না; তথাপি আমি সদাপ্রভুতে আনন্দ করিব, আমার ত্রাণেশ্বরে উল্লাসিত হইব।”—হবক্‌. ৩:১৭, ১৮.

“সুখী সেই জাতি, সদাপ্রভু যাহার ঈশ্বর”

১৫, ১৬. ঈশ্বরের দেওয়া কিছু উপহারের নাম বলুন, যেগুলো আমরা ভবিষ্যৎ আশীর্বাদগুলোর জন্য অপেক্ষা করার সময় উপভোগ করতে পারি।

১৫ আমাদের জন্য সামনে যে-চমৎকার ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে, সেটার জন্য অপেক্ষা করার সময় যিহোবার ইচ্ছা হল, তিনি আমাদেরকে যে-উত্তম বিষয়গুলো দেন, সেগুলো যেন আমরা উপভোগ করি। বাইবেল বলে: “আমি জানি, যাবজ্জীবন আনন্দ ও সৎকর্ম্ম করণ ব্যতীত আর মঙ্গল [মানবজাতির] হয় না। আর প্রত্যেক মনুষ্য যে ভোজন পান ও সমস্ত পরিশ্রমের মধ্যে সুখভোগ করে, ইহাও ঈশ্বরের দান।” (উপ. ৩:১২, ১৩) ‘সৎকর্ম্ম করণের’ অন্তর্ভুক্ত অন্যদের জন্য উত্তম কাজগুলো সম্পাদন করা। যিশু বলেছিলেন যে, গ্রহণ করার চেয়ে দান করার মধ্যে বেশি সুখ রয়েছে। আমাদের সাথি, সন্তান, বাবা-মা এবং অন্য আত্মীয়দের প্রতি সদয় কাজগুলো করা গভীর পরিতৃপ্তি নিয়ে আসে। (হিতো. ৩:২৭) আমাদের আধ্যাত্মিক ভাইবোনদের প্রতি করুণার চিত্ত বা কোমল হওয়া, অতিথিসেবক এবং ক্ষমাশীল হওয়াও অনেক আনন্দ নিয়ে আসে আর তা যিহোবাকে খুশি করে। (গালা. ৬:১০; কল. ৩:১২-১৪; ১ পিতর ৪:৮, ৯) অধিকন্তু, আত্মত্যাগমূলক মনোভাব সহকারে আমাদের পরিচর্যা সম্পাদন করা সত্যিই পরিতৃপ্তিদায়ক।

১৬ উপদেশক পুস্তকে ওপরে উদ্ধৃত কথাগুলো জীবনের সাধারণ আনন্দদায়ক বিষয়, যেমন ভোজনপান করা সম্বন্ধে উল্লেখ করে। হ্যাঁ, এমনকী বিভিন্ন পরীক্ষা ভোগ করার সময়, আমরা যিহোবার কাছ থেকে যে-বস্তুগত উপহার লাভ করেছি, তাতে আনন্দ পেতে পারি। অধিকন্তু, এক অপূর্ব সূর্যাস্ত, বিশাল ভূ-দৃশ্য, ছোটো পশুপাখিদের খেলা ও প্রকৃতির অন্যান্য বিস্ময় দেখার জন্য কোনো মূল্য দিতে হয় না, বরং সেগুলো আমাদের গভীর সশ্রদ্ধ ভয়ে পূর্ণ করতে পারে ও আনন্দিত করতে পারে। এইরকম বিষয়গুলো নিয়ে চিন্তা করে যিহোবার প্রতি আমাদের ভালোবাসা আরও বৃদ্ধি পায়, কারণ তিনি হলেন সমস্ত উত্তম বিষয়ের দাতা।

১৭. কী আমাদের দুর্দশাগুলো থেকে সম্পূর্ণ স্বস্তি এনে দেবে আর এই সময়ের মধ্যে কী আমাদের সান্ত্বনা প্রদান করে?

১৭ অবশেষে বলা যায়, ঈশ্বরের প্রতি আমাদের ভালোবাসা, তাঁর আজ্ঞাগুলোর প্রতি আমাদের বাধ্যতা ও মুক্তির মূল্যরূপ বলিদানে বিশ্বাসই অসিদ্ধ জীবনের দুর্দশাগুলো থেকে সম্পূর্ণ স্বস্তি নিয়ে আসবে এবং আমাদেরকে স্থায়ী আনন্দের দিকে পরিচালিত করবে। (১ যোহন ৫:৩) এই সময়ের মধ্যে, আমরা এটা জেনে সান্ত্বনা পেতে পারি যে আমাদের যন্ত্রণা দেয় এমন সমস্ত বিষয় সম্বন্ধে যিহোবা ভালোভাবেই অবগত আছেন। দায়ূদ লিখেছিলেন: “আমি তোমার দয়াতে উল্লাস ও অনন্দ করিব, কেননা তুমি আমার দুঃখ দেখিয়াছ, তুমি দুর্দ্দশাকালে আমার প্রাণের তত্ত্ব লইয়াছ।” (গীত. ৩১:৭) আমাদের প্রতি তাঁর প্রেমের দ্বারা পরিচালিত হয়ে যিহোবা বিপদ থেকে আমাদের উদ্ধার করবেন।—গীত. ৩৪:১৯.

১৮. কেন আনন্দ ঈশ্বরের লোকেদের মধ্যে প্রধান বিষয় হওয়া উচিত?

১৮ যিহোবার প্রতিজ্ঞাগুলোর পরিপূর্ণতার বিষয়ে অপেক্ষা করার সময় আমরা যেন সুখী ঈশ্বরকে অনুকরণ করি। আমরা যেন নেতিবাচক অনুভূতিগুলোকে ঈশ্বরের প্রতি সেবাকে বন্ধ করে দেওয়ার সুযোগ না দিই। যখন সমস্যা উত্থাপিত হয়, তখন চিন্তা করার ক্ষমতা ও ব্যবহারিক প্রজ্ঞা যেন আমাদের পরিচালনা দেয়। আমাদের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে এবং বিপদজনক ঘটনাগুলোর মন্দ পরিণতিগুলোকে লাঘব করার জন্য যে-পদক্ষেপই নেওয়ার প্রয়োজন হোক না কেন, তা নিতে যিহোবা আমাদের সাহায্য করবেন। আসুন, তাঁর কাছ থেকে বস্তুগত ও আধ্যাত্মিক উভয় দিক দিয়ে যে-উত্তম বিষয়গুলো আসে, সেগুলোর মধ্যে থেকে আমরা আনন্দ খুঁজে নিই। ঈশ্বরের সান্নিধ্যে থেকে আমরা আনন্দ করতে সক্ষম হব, কারণ “ধন্য [“সুখী,” বাংলা জুবিলী বাইবেল] সেই জাতি, সদাপ্রভু যাহার ঈশ্বর।”—গীত. ১৪৪:১৫.

আপনি কী শিখেছেন?

• বিভিন্ন দুর্দশার সঙ্গে মোকাবিলা করার সময় কীভাবে আমরা যিহোবাকে অনুকরণ করতে পারি?

• কীভাবে যুক্তিবাদিতা আমাদের দুর্দশাগুলোর সঙ্গে মোকাবিলা করতে সাহায্য করতে পারে?

• দুর্দশার সময়গুলোতে, কীভাবে আমরা ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করে আনন্দ খুঁজে পেতে পারি?

[১৬ পৃষ্ঠার চিত্রগুলো]

যে-মন্দ বিষয়গুলো ঘটে চলেছে, সেগুলো দেখে যিহোবা দুঃখিত হন

[সৌজন্যে]

© G.M.B. Akash/Panos Pictures

[১৮ পৃষ্ঠার চিত্রগুলো]

যিহোবা আমাদের আনন্দ বজায় রাখার মাধ্যমগুলো জুগিয়েছেন

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৫)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার