-
যিহোবার সাক্ষিদের সভাগুলোতে আপনাকে স্বাগত জানাই!চিরকাল জীবন উপভোগ করুন!—ঈশ্বরের কাছ থেকে শিখুন
-
-
পাঠ ১০
যিহোবার সাক্ষিদের সভাগুলোতে আপনাকে স্বাগত জানাই!
আপনি কি কখনো যিহোবার সাক্ষিদের সভায় যোগ দিয়েছেন? যদি না দিয়ে থাকেন, তা হলে প্রথম বার সভাতে যোগ দেওয়ার ব্যাপারে আপনি হয়তো ইতস্তত বোধ করতে পারেন। আপনি হয়তো চিন্তা করতে পারেন: ‘সভাগুলোতে কী হয়? সভাগুলো কেন গুরুত্বপূর্ণ? সভাগুলোতে কেন যোগ দেব?’ সভাগুলোতে যোগ দেওয়ার মাধ্যমে কীভাবে যিহোবার সঙ্গে আপনার বন্ধুত্ব দৃঢ় হতে পারে এবং কীভাবে আপনি ব্যক্তিগতভাবে সাহায্য লাভ করতে পারেন, তা এই পাঠ থেকে জানতে পারবেন।
১. যিহোবার সাক্ষিরা কেন সভাগুলোতে যোগ দেয়?
বাইবেলের একজন লেখক বলেছিলেন,“আমি মণ্ডলীগণের মধ্যে সদাপ্রভুর ধন্যবাদ করিব।” (গীতসংহিতা ২৬:১২) সভাগুলোতে যোগ দেওয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণ হল, যিহোবার প্রশংসা করা অর্থাৎ তাঁর উপাসনা করা। তাই, প্রতি সপ্তাহে সারা পৃথিবীতে থাকা যিহোবার সাক্ষিরা আনন্দের সঙ্গে সভাগুলোতে যোগ দেয়। এ ছাড়া, বছরে কয়েক বার তারা বড়ো বড়ো সভায়ও যোগ দিয়ে থাকে। সভাগুলোতে তারা ঈশ্বরের উপাসনা করে, গান করে আর প্রার্থনা করে।
২. সভাগুলো থেকে আপনি কী শিখতে পারবেন?
সভাগুলোতে বাইবেল থেকে শেখানো হয়। এটিতে লেখা বিষয়গুলো ‘ভালোভাবে বোঝানো এবং সেগুলোর অর্থ ব্যাখ্যা’ করা হয়। (পড়ুন, নহিমিয় ৮:৮. NW) সভাগুলোতে যোগ দেওয়ার মাধ্যমে আপনি যিহোবা সম্বন্ধে অনেক কিছু জানতে পারবেন। আপনি যখন জানতে পারবেন যে, যিহোবার কত অপূর্ব গুণ রয়েছে এবং তিনি আপনাকে কতটা ভালোবাসেন, তখন তাঁর সঙ্গে আপনার বন্ধুত্ব আরও দৃঢ় হবে। শুধু তাই নয়, সভাগুলোতে যোগ দেওয়ার মাধ্যমে আপনি যিহোবার কাছ থেকে শিখতে পারবেন যে, কীভাবে জীবন উপভোগ করা যায়।—যিশাইয় ৪৮:১৭, ১৮.
৩. সভাগুলোতে অন্যদের সঙ্গে মেলামেশা করার মাধ্যমে কীভাবে আপনি উপকৃত হতে পারেন?
যিহোবা আমাদের বলেন, যেন “আমরা একে অন্যের প্রতি মনোযোগ দিই, যাতে প্রেম দেখানোর এবং উত্তম কাজ করার ব্যাপারে পরস্পরকে উদ্দীপিত করতে পারি আর সেইসঙ্গে সভায় একত্রে মিলিত হওয়া বাদ না দিই।” (ইব্রীয় ১০:২৪, ২৫) সভাগুলোতে আপনি এমন ব্যক্তিদের সঙ্গে পরিচিত হবেন, যারা আপনার মতো ঈশ্বর সম্বন্ধে আরও জানতে চায় এবং একে অন্যের জন্য চিন্তা করে। তাদের কথাবার্তার মাধ্যমে আপনি অনেক উৎসাহিত হবেন এবং বাইবেলের উপর আপনার বিশ্বাস আরও শক্তিশালী হবে। (পড়ুন, রোমীয় ১:১১, ১২.) এ ছাড়া, আপনি সেই ব্যক্তিদের সঙ্গে পরিচিত হবেন, যারা এমন সমস্যাগুলোর সঙ্গে সফলভাবে মোকাবিলা করেছে, যেগুলো আপনি এখন ভোগ করছেন। সভাগুলোতে যোগ দেওয়ার আরও অনেক উপকার রয়েছে, তাই যিহোবা চান যেন আমরা প্রতিটা সভায় যোগ দিই!
গভীরভাবে গবেষণা করুন
যিহোবার সাক্ষিদের সভাগুলোতে কী হয় এবং এই সভাগুলোতে যোগ দেওয়ার জন্য কেন আমাদের কঠোর প্রচেষ্টা করা উচিত, তা জানুন।
৪. যিহোবার সাক্ষিদের সভাগুলো
প্রথম শতাব্দীর খ্রিস্টানেরা যিহোবার উপাসনা করার জন্য একসঙ্গে নিয়মিতভাবে মিলিত হত। (রোমীয় ১৬:৩-৫) কলসীয় ৩:১৬ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নটা নিয়ে আলোচনা করুন:
প্রথম শতাব্দীর খ্রিস্টানেরা কীভাবে যিহোবার উপাসনা করত?
বর্তমানে, যিহোবার সাক্ষিরাও উপাসনা করার জন্য নিয়মিতভাবে একটা জায়গায় মিলিত হয়, যেটাকে কিংডম হল বলা হয়। সভাগুলোতে কী হয়, তা জানার জন্য ভিডিওটা দেখুন আর মণ্ডলীর সভার ছবিটা দেখুন এবং এরপর এই প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা করুন।
কলসীয় ৩:১৬ পদ অনুযায়ী, বর্তমানে আমাদের সভাগুলোতে কী হয়?
ভিডিওতে অথবা ছবিতে, কোন বিষয়টা আপনার ভালো লেগেছে?
২ করিন্থীয় ৯:৭ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নটা নিয়ে আলোচনা করুন:
যিহোবার সাক্ষিদের সভাগুলোতে কেন টাকাপয়সা চাওয়া হয় না?
আপনাকে যিনি বাইবেল অধ্যয়ন করাচ্ছেন, তার সঙ্গে পরবর্তী সভার বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা করুন।
সভার কোন বিষয়টা আপনার জন্য আগ্রহজনক কিংবা সাহায্যকারী হবে বলে মনে হয়?
আপনি কি জানেন?
সারা পৃথিবীতে কখন এবং কোথায় এই সভাগুলো অনুষ্ঠিত হয়, তা আপনি jw.org ওয়েবসাইট থেকে খুঁজে পেতে পারেন।
(ক) গান ও প্রার্থনার মাধ্যমে সভাগুলো শুরু ও শেষ হয়। সেখানে আমরা বক্তৃতা শুনি এবং ভিডিও দেখি। এ ছাড়া, সেখানে প্রচার করার এবং বাইবেল অধ্যয়ন করার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়ে থাকে
(খ) সভার কিছু অংশে প্রশ্ন জিজ্ঞেস করা হয় আর শ্রোতারা মন্তব্য করতে পারে
(গ) সভাতে প্রত্যেকে আসতে পারে—যুবক-যুবতীরা, বয়স্ক ব্যক্তিরা ও বাচ্চারা
(ঘ) যিহোবার সাক্ষিদের সভাগুলোতে কোনো চাঁদা তোলা হয় না। তারা কোনো টাকাপয়সা চায় না
৫. সভাগুলোতে যোগ দেওয়ার জন্য প্রচেষ্টা করা প্রয়োজন
যিশুর পরিবারের কথা চিন্তা করুন। প্রতি বছর একটা উৎসব পালন করার জন্য তারা নাসরৎ থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত জেরুসালেমে যেতেন। সেখানে পৌঁছানোর জন্য তাদের পার্বত্য এলাকার মধ্য দিয়ে তিন দিন ধরে পায়ে হেঁটে যাত্রা করতে হত। লূক ২:৩৯-৪২ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা করুন:
জেরুসালেমে যাওয়ার জন্য তাদের কতটা প্রচেষ্টা করতে হত বলে আপনার মনে হয়?
সভাগুলোতে যোগ দেওয়ার জন্য আপনার সামনে কোন কোন বাধা আসতে পারে?
এই বাধাগুলো কাটিয়ে ওঠার জন্য আপনি যে-প্রচেষ্টা করবেন, তাতে আপনার কি কোনো উপকার হবে? কেন আপনি তা মনে করেন?
বাইবেল বলে, যিহোবার উপাসনা করার জন্য সভায় একসঙ্গে মিলিত হওয়া অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ইব্রীয় ১০:২৪, ২৫ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নটা নিয়ে আলোচনা করুন:
কেন আমাদের প্রতিটা সভায় যোগ দেওয়া উচিত?
কেউ কেউ বলে থাকে: “বাড়িতে বাইবেল পড়লেই হবে, ঈশ্বরকে উপাসনা করার জন্য সভায় যোগ দেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই।”
বাইবেলের কোন উদাহরণ কিংবা শাস্ত্রপদ দেখায় যে, যিহোবা চান যেন আপনি সভাগুলোতে যোগ দেন?
সারাংশ
সভাগুলোতে যোগ দেওয়ার মাধ্যমে আপনি যিহোবা সম্বন্ধে আরও জানতে পারবেন, তাঁর সঙ্গে আপনার বন্ধুত্ব দৃঢ় হবে এবং অন্যদের সঙ্গে তাঁর উপাসনা করতে পারবেন।
পুনরালোচনা
কেন যিহোবা চান যেন আমরা সভাগুলোতে যোগ দিই?
যিহোবার সাক্ষিদের সভাগুলো থেকে আপনি কী শিখতে পারবেন?
সভাগুলোতে যোগ দেওয়ার ফলে আপনি আর কোন কোন উপকার লাভ করতে পারবেন?
আরও জানুন
আপনি কি সভায় যোগ দেওয়ার ব্যাপারে ইতস্তত বোধ করছেন? একজন ব্যক্তি সম্বন্ধে জানুন, যিনি প্রথম প্রথম একইরকম অনুভব করতেন, কিন্তু এখন তার সভায় যোগ দিতে খুব ভালো লাগে।
সভাগুলোতে যোগ দিতে একজন যুবকের কেন ভালো লাগে এবং সেখানে যোগ দেওয়ার জন্য সে কী করেছে, তা দেখুন।
সভাগুলোতে যোগ দেওয়ার বিষয়ে কিছু ব্যক্তি কেমন অনুভব করে, তা জানুন।
যিহোবার সাক্ষিদের সভায় যোগ দেওয়ার পর, একটা দুর্বৃত্ত দলের সদস্যের জীবন কীভাবে বদলে গিয়েছিল, তা জানুন।
“আমি বন্দুক ছাড়া কখনোই কোথাও যেতাম না” (প্রহরীদুর্গ, অক্টোবর–ডিসেম্বর ২০১৪)
-
-
ঈশ্বরের রাজ্য শাসন করছে!চিরকাল জীবন উপভোগ করুন!—ঈশ্বরের কাছ থেকে শিখুন
-
-
৫. জগতের পরিস্থিতি ১৯১৪ সালের পর থেকে বদলে গিয়েছে
যিশু ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, তিনি রাজা হওয়ার পর জগতের পরিস্থিতি কেমন হবে। লূক ২১:৯-১১ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নটা নিয়ে আলোচনা করুন:
এখানে যে-পরিস্থিতি সম্বন্ধে বলা হয়েছে, এর মধ্যে আপনি কোনগুলো শুনেছেন অথবা ঘটতে দেখেছেন?
প্রেরিত পৌল বলেছিলেন যে, মানব শাসনের শেষকালে লোকদের আচরণ কেমন হবে। ২ তীমথিয় ৩:১-৫ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নটা নিয়ে আলোচনা করুন:
এখানে বলা আচরণগুলোর মধ্যে আপনি কোন কোন আচরণ লোকদের মধ্যে লক্ষ করেছেন?
৬. ঈশ্বরের রাজ্যের শাসন স্বর্গে শুরু হয়ে গিয়েছে, এটা জেনে আমাদের কী করা উচিত?
মথি ২৪:৩, ১৪ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা করুন:
এমন কোন গুরুত্বপূর্ণ কাজ চলছে, যেটা দেখায় ঈশ্বরের রাজ্য শাসন করছে?
কীভাবে আপনি এই কাজে অংশ নিতে পারেন?
ঈশ্বরের রাজ্য স্বর্গে শাসন করছে আর খুব শীঘ্রই পুরো পৃথিবীর উপরও শাসন করবে। ইব্রীয় ১০:২৪, ২৫ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নটা নিয়ে আলোচনা করুন:
“ঈশ্বরের দিন যেহেতু এগিয়ে আসছে,” তাই আমাদের প্রত্যেকের কী করা উচিত?
আপনি যদি এমন কোনো বিষয় জেনে থাকেন, যেটা লোকদের সাহায্য করতে এবং তাদের জীবন রক্ষা করতে পারে, তা হলে আপনি কী করবেন?
-