শুধুমাত্র অলৌকিক কাজগুলি কেন বিশ্বাস গড়ে তোলে না
দেখাই হল বিশ্বাস করা। এটিই অনেকের ধারণা। কেউ কেউ বলে যে তারা ঈশ্বরে বিশ্বাস করত যদি তিনি নিজেকে কোন অলৌকিক উপায়ে প্রকাশ করতেন। সম্ভবত তা ঠিক, কিন্তু এইরূপ বিশ্বাস কি প্রকৃত বিশ্বাসে পরিচালিত করবে?
ইস্রায়েলের কোরহ, দাথন এবং অবীরামের কথা বিবেচনা করুন। বাইবেল দেখায় যে ঈশ্বরের এই সমস্ত ভয়সঞ্চারকারী অলৌকিক কাজগুলির তারা ছিল প্রত্যক্ষদর্শী: মিশরের উপর দশটি আঘাত, লোহিত সাগরের মধ্য দিয়ে ইস্রায়েল জাতির উদ্ধার এবং মিশ্রীয় ফরৌণ এবং তার সৈন্যবাহিনীর ধ্বংস। (যাত্রাপুস্তক ৭:১৯–১১:১০; ১২:২৯-৩২; গীতসংহিতা ১৩৬:১৫) কোরহ, দাথন এবং অবীরাম, সীনয় পর্বতে, স্বর্গ থেকে যিহোবাকে কথা বলতেও শুনেছিল। (দ্বিতীয় বিবরণ ৪:১১, ১২) তথাপি, এই সমস্ত অলৌকিক কাজগুলি ঘটার পর বেশিদিন না যেতেই এই তিন জন ব্যক্তি যিহোবা এবং তাঁর নিযুক্ত দাসেদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহকে প্ররোচিত করেছিল।—গণনাপুস্তক ১৬:১-৩৫; গীতসংহিতা ১০৬:১৬-১৮.
প্রায় ৪০ বছর পরে, বিলিয়াম নামে একজন ভাববাদীও একটি অলৌকিক কাজের সাক্ষী হয়েছিল। এমনকি স্বর্গদূতের হস্তক্ষেপও তাকে ঈশ্বরের শত্রু, মোয়াবীয়দের পক্ষাবলম্বন করাকে রোধ করতে পারেনি। সেই অলৌকিক কাজ সত্ত্বেও, বিলিয়াম অগ্রসর হয়েছিল এবং যিহোবা ও তাঁর লোকেদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিল। (গণনাপুস্তক ২২:১-৩৫; ২ পিতর ২:১৫, ১৬) কিন্তু বিলিয়ামের বিশ্বাসের অভাব ঈষ্করিয়োতীয় যিহূদার সাথে তুলনায় ম্লান। যীশুর ঘনিষ্ঠ সাহচর্য লাভ করা এবং অসাধারণ অলৌকিক কাজগুলি সম্পাদনের এক প্রত্যক্ষ সাক্ষী হওয়া সত্ত্বেও, যিহূদা ত্রিশটি রৌপ্য মুদ্রার বিনিময়ে খ্রীষ্টের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল।—মথি ২৬:১৪-১৬, ৪৭-৫০; ২৭:৩-৫.
এছাড়া যীশুর বহু অলৌকিক কাজগুলি সম্বন্ধে যিহূদী ধর্মীয় নেতারাও অবগত ছিল। তিনি লাসারকে পুনরুত্থিত করার পর, তারা এমনকি স্বীকারও করেছিল: “এ ব্যক্তি ত অনেক চিহ্ন-কার্য্য করিতেছে।” কিন্তু তখন জীবিত লাসারকে দেখা কি তাদের হৃদয়কে কোমল করেছিল এবং তাদের বিশ্বাস প্রদান করেছিল? অবশ্যই না। পরিবর্তে, তারা যীশু এবং লাসার উভয়কে বধ করার ষড়যন্ত্র করেছিল!—যোহন ১১:৪৭-৫৩; ১২:১০.
এমনকি ঈশ্বরের সরাসরি হস্তক্ষেপও সেই দুষ্ট লোকেদের মধ্যে বিশ্বাস জন্মাতে অসমর্থ হয়। কোন এক সময়ে যখন যীশু মন্দিরের প্রাঙ্গনের মধ্যে ছিলেন, তিনি উচ্চৈঃস্বরে প্রার্থনা করেছিলেন: “পিতঃ, তোমার নাম মহিমান্বিত কর।” যিহোবা স্বর্গ থেকে এক কণ্ঠস্বরের মাধ্যমে উত্তর দিয়েছিলেন: “‘আমি তাহা মহিমান্বিত করিয়াছি, আবার মহিমান্বিত করিব।’” তথাপি, উপস্থিত ব্যক্তিদের হৃদয়ে এই অলৌকিক ঘটনা বিশ্বাস উৎপন্ন করতে পারেনি। বাইবেল বলে: “যদিও তিনি তাহাদের সাক্ষাতে এত চিহ্ন-কার্য্য করিয়াছিলেন, তথাপি তাহারা তাঁহাতে বিশ্বাস করিল না।”—যোহন ১২:২৮-৩০, ৩৭; তুলনা করুন ইফিষীয় ৩:১৭.
অলৌকিক কাজগুলি কেন বিশ্বাস গড়ে তোলেনি
অলৌকিক কাজগুলি সত্ত্বেও এইরূপ বিশ্বাসের অভাব কিভাবে থাকতে পারে? যিহূদী ধর্মীয় নেতাদের দ্বারা যীশুকে প্রত্যাখ্যান করার বিষয়টি বিশেষ করে বিভ্রান্তিকর বলে মনে হয়, যখন আপনি বিবেচনা করবেন যে যখন তিনি তাঁর পরিচর্যা আরম্ভ করেছিলেন ঠিক সেই সময়ে সামগ্রিকভাবে যিহূদীরা “খ্রীষ্ট” অর্থাৎ মশীহের “প্রত্যাশায়” ছিল। (লূক ৩:১৫, NW) কিন্তু, সেই প্রত্যাশাগুলি কী, সেটি নিয়েই ছিল সমস্যা। আভিধানিক ডব্লিউ. ই. ভাইন একজন বিখ্যাত বাইবেল পণ্ডিতের বক্তব্য উদ্ধৃত করে বলেন যে যিহূদীরা একজন মশীহ সম্পর্কে এমন এক ধারণা দ্বার আচ্ছন্ন ছিল, যিনি তাদের “পার্থিব জয়” এবং “বস্তুগত সমৃদ্ধি” প্রদান করবেন। সেইজন্য, তারা সেই নম্র, অরাজনৈতিক নাসরতীয় যীশুর জন্য প্রস্তুত ছিল না যিনি সা.শ. ২৯ সালে সত্য মশীহ হিসাবে তাদের মাঝে প্রকাশমান হয়েছিলেন। এছাড়া ধর্মীয় নেতারা ভয় পেয়েছিল যে যীশুর শিক্ষাগুলি অস্তিত্বমান অবস্থাকে বিপর্যস্ত করবে এবং তাদের বিশিষ্ট পদগুলি বিপন্ন হবে। (যোহন ১১:৪৮) তাদের পূর্বকল্পিত ধারণাগুলি এবং স্বার্থপরতাই যীশুর অলৌকিক কাজগুলির অর্থের প্রতি তাদের অন্ধ করে রেখেছিল।
যিহূদী ধর্মীয় নেতারা এবং অন্যান্যেরা পরবর্তীকালে সেই অলৌকিক প্রমাণকে প্রত্যাখ্যান করেছিল যে যীশুর অনুগামীরা ঐশিক অনুমোদন উপভোগ করেছিল। উদাহরণস্বরূপ, তার প্রেরিতেরা যখন জন্ম থেকে খঞ্জ এক ব্যক্তিকে সুস্থ করেছিল, তখন যিহূদী উচ্চ আদালতের ক্রুদ্ধ সদস্যেরা জিজ্ঞাসা করেছিল: “এই লোকদের প্রতি কি করি? কেননা উহাদের কর্ত্তৃক যে একটা প্রসিদ্ধ চিহ্ন-কার্য্য সম্পন্ন হইয়াছে, তাহা যিরূশালেম-নিবাসী সকলের নিকটে প্রকাশ আছে, এবং আমরা তাহা অস্বীকার করিতে পারি না। কিন্তু কথাটা যেন লোকদের মধ্যে আরও রটিয়া না যায়, এই নিমিত্ত ইহাদিগকে ভয় দেখান যাউক, যেন কোন লোককেই আর এই নামে কিছু না বলে।” (প্রেরিত ৩:১-৮; ৪:১৩-১৭) স্পষ্টতই, এই অপূর্ব অলৌকিক কাজ এই লোকেদের হৃদয়ে বিশ্বাস গড়ে তুলতে অথবা তা উৎপন্ন করতে পারেনি।
উচ্চাকাঙ্ক্ষা, গর্ব এবং লোভ হল সেই বিষয়গুলি যা অনেককে তাদের হৃদয়ের দ্বার রুদ্ধ করতে পরিচালিত করেছিল। যেমন প্রারম্ভে উল্লেখিত হয়েছে কোরহ, দাথন, এবং অবীরামের ক্ষেত্রেও এই ঘটনাটি ঘটেছিল বলে প্রতীয়মান হয়। ঈর্ষা, ভয় এবং অন্য আঘাতকারী মনোভাবও অন্যান্যদের ব্যাহত করেছে। এছাড়া, আমাদের স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে, সেই অবাধ্য দূতদের অর্থাৎ মন্দদূত, যাদের একসময় ঈশ্বরের নিজ মুখ দর্শনের সুযোগ ছিল! (মথি ১৮:১০) ঈশ্বরের অস্তিত্ব সম্পর্কে তাদের সন্দেহ নেই। বস্তুতপক্ষে, “ভূতেরাও তাহা বিশ্বাস করে, এবং ভয়ে কাঁপে।” (যাকোব ২:১৯) তথাপি, ঈশ্বরে তাদের কোন বিশ্বাস নেই।
সত্য বিশ্বাসের অর্থ
বিশ্বাস কেবলমাত্র স্বাভাবিক আস্থা থেকে আরও বেশি কিছু। এছাড়া এটি কোন অলৌকিক কাজের প্রতি এক ক্ষণস্থায়ী আবেগগত প্রতিক্রিয়ার চেয়েও আরও বেশি কিছু। ইব্রীয় ১১:১ পদ বলে: “আর বিশ্বাস প্রত্যাশিত বিষয়ের নিশ্চয়জ্ঞান, অদৃশ্য বিষয়ের প্রমাণপ্রাপ্তি।” একজন ব্যক্তি যার বিশ্বাস আছে তিনি তার হৃদয়ে প্রত্যয়ী যে যিহোবা ঈশ্বর যা কিছু প্রতিজ্ঞা করেন তা যেন ইতিমধ্যেই পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। অধিকন্তু, অদৃশ্য বাস্তবতার স্বীকার যোগ্য প্রমাণ এতই শক্তিশালী যে স্বয়ং বিশ্বাসকে প্রমাণের সমতুল্য বলা হয়েছে। হ্যাঁ, প্রমাণের উপর ভিত্তি করেই বিশ্বাস গড়ে ওঠে। আর অতীত কালেই, অলৌকিক কাজগুলি বিশ্বাস বৃদ্ধির অথবা তা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এক ভূমিকা নিয়েছিল। যীশু কর্তৃক সম্পাদিত চিহ্নগুলি, অন্যদের মধ্যে দৃঢ় প্রত্যয় উৎপন্ন করতে কাজ করে যে তিনিই প্রতিজ্ঞাত মশীহ ছিলেন। (মথি ৮:১৬, ১৭: ইব্রীয় ২:২-৪) অনুরূপভাবে, ঈশ্বরের পবিত্র আত্মা অথবা কার্যকারী শক্তির এইরকম দান, যেমন অলৌকিকভাবে আরোগ্য এবং বিশেষ বিশেষ ভাষায় কথা বলা প্রমাণ করেছিল যে যিহূদীদের উপর আর যিহোবার অনুগ্রহ নেই, বরং, তাঁর অনুমোদন এখন তাঁর পুত্র, যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত খ্রীষ্টীয় মণ্ডলীর উপরে অবস্থিতি করছিল।—১ করিন্থীয় ১২:৭-১১.
আত্মার অলৌকিক দানগুলির মধ্যে ভাববাণী করার ক্ষমতা অন্তর্ভুক্ত ছিল। যখন অবিশ্বাসীরা এই অলৌকিক কাজ লক্ষ্য করেছিল, তখন কেউ কেউ যিহোবার উপাসনার প্রতি পরিচালিত হয়েছিল এটি ঘোষণা করে: “ঈশ্বর বাস্তবিকই তোমাদের মধ্যবর্ত্তী।” (১ করিন্থীয় ১৪:২২-২৫) কিন্তু, যিহোবা ঈশ্বরের উদ্দেশ্য ছিল না যে খ্রীষ্টীয় উপাসনায় অলৌকিক কাজ একটি স্থায়ী বৈশিষ্ট্য হবে। তদনুসারে প্রেরিত পৌল লিখেছিলেন: “যদি ভাববাণী থাকে, তাহার লোপ হইবে; যদি বিশেষ বিশেষ ভাষা থাকে, সে সকল শেষ হইবে।” (১ করিন্থীয় ১৩:৮) প্রেরিতদের এবং যারা তাদের মাধ্যমে এইরূপ দানগুলি পেয়েছিলেন স্পষ্টতই তাদের মৃত্যুর সাথেই এইগুলি শেষ হয়ে গিয়েছিল।
তাহলে, লোকেদের কি বিশ্বাসের ভিত্তি ছাড়াই রাখা হয়েছিল? না, কারণ পৌল বলেছিলেন: “[ঈশ্বর] আপনাকে সাক্ষ্যবিহীন রাখেন নাই, কেননা, তিনি মঙ্গল করিতেছেন, আকাশ হইতে আপনাদিগকে বৃষ্টি এবং ফলোৎপাদক ঋতুগণ দিয়া ভক্ষ্যে ও আনন্দে আপনাদের হৃদয় পরিতৃপ্ত করিয়া আসিতেছেন।” (প্রেরিত ১৪:১৭) বস্তুতপক্ষে, আমাদের চারিপাশের সাক্ষ্য প্রমাণের প্রতি যারা তাদের মন ও হৃদয় খুলে দিতে ইচ্ছুক সেই সৎহৃদয় ব্যক্তিদের জন্য যিহোবা ঈশ্বরের “অদৃশ্য গুণ, অর্থাৎ তাঁহার অনন্ত পরাক্রম ও ঈশ্বরত্ব, জগতের সৃষ্টিকাল অবধি তাঁহার বিবিধ কার্য্যে বোধগম্য হইয়া দৃষ্ট হইতেছে, এ জন্য তাহাদের [যাহারা ঈশ্বরকে অস্বীকার করে] উত্তর দিবার পথ নাই।”—রোমীয় ১:২০.
ঈশ্বরের অস্তিত্বে বিশ্বাস করার চেয়েও আরও বেশি কিছুর প্রয়োজন আছে। পৌল পরামর্শ দিয়েছিলেন: “এই যুগের অনুরূপ হইও না, কিন্তু মনের নূতনীকরণ দ্বারা স্বরূপান্তরিত হও; যেন তোমরা পরীক্ষা করিয়া জানিতে পার, ঈশ্বরের ইচ্ছা কি, যাহা উত্তম ও প্রীতিজনক ও সিদ্ধ।” (রোমীয় ১২:২) যেমন এই পত্রিকার মত, খ্রীষ্টীয় প্রাকাশনাগুলির সাহায্যে অধ্যবসায়ের সাথে শাস্ত্র অধ্যয়ন করার দ্বারা এটি করা যেতে পারে। ঈশ্বরের বাক্য, বাইবেলের যথার্থ জ্ঞানের উপর ভিত্তি করা বিশ্বাস দুর্বল অথবা ভাসাভাসা নয়। যারা ঈশ্বরের ইচ্ছাকে বুঝতে পেরেছে এবং বিশ্বাসের সাথে তা পালন করছে তারাই ঈশ্বরকে পবিত্র আরাধনা প্রদান করে চলেছে।—রোমীয় ১২:১.
না দেখেও বিশ্বাস
মৃত্যু থেকে যীশুর পুনরুত্থানের প্রতি বিশ্বাস অনুশীলন করা প্রেরিত থোমার জন্য অসুবিধাজনক ছিল। থোমা ঘোষণা করেছিল: “আমি যদি তাঁহার দুই হাতে প্রেকের চিহ্ন না দেখি, ও সেই প্রেকের স্থানে আমার অঙ্গুলি না দিই, এবং তাঁহার কুক্ষিদেশ মধ্যে আমার হাত না দিই, তবে কোন মতে বিশ্বাস করিব না।” পরে যীশু যখন এক রূপান্তিত দেহ ধারণ করেন যা তাঁর বিদ্ধ ক্ষত প্রদর্শন করেছিল, থোমা এই অলৌকিক কাজের প্রতি অনুকূলভাবে সাড়া দিয়েছিলেন। কিন্তু যীশু বলেছিলেন: “ধন্য [“সুখী,” NW] তাহারা, যাহারা না দেখিয়া বিশ্বাস করিল।”—যোহন ২০:২৫-২৯.
বর্তমানে, লক্ষ লক্ষ যিহোবার সাক্ষীরা ‘বিশ্বাস দ্বারা চলছে, বাহ্য দৃশ্য দ্বারা নয়।’ (২ করিন্থীয় ৫:৭) যদিও তারা বাইবেলে লিপিবদ্ধ অলৌকিক কাজগুলি দেখেনি, তথাপি তারা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে এইগুলি ঘটেছিল। সাক্ষীরা ঈশ্বর এবং তাঁর বাক্যে বিশ্বাস অনুশীলন করে। তাঁর আত্মার সাহায্যে তারা বাইবেলের শিক্ষাগুলি এবং এর প্রধান বিষয়বস্তুটি বুঝতে সক্ষম—যা হল তাঁর স্বর্গীয় রাজ্যের মাধ্যমে যিহোবা ঈশ্বরের সার্বভৌমত্বের প্রতিপাদন। (মথি ৬:৯, ১০; ২ তীমথিয় ৩:১৬, ১৭) নিজেদের মহা উপকারার্থে এই অকৃত্রিম খ্রীষ্টানেরা বাইবেলের বিজ্ঞ পরামর্শ জীবনে প্রয়োগ করে। (গীতসংহিতা ১১৯:১০৫; যিশাইয় ৪৮:১৭, ১৮) তারা এই অখণ্ডনীয় প্রমাণটি গ্রহণ করে যে বাইবেলের ভবিষ্যদ্বাণীগুলি আমাদের সময়কে ‘শেষ কাল’ হিসাবে চিহ্নিত করে আর তারা বিশ্বাস করে যে ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞাত নতুন জগৎ সন্নিকট। (২ তীমথিয় ৩:১-৫; মথি ২৪:৩-১৪; ২ পিতর ৩:১৩) তাদের জন্য ঈশ্বরবিষয়ক জ্ঞান অন্যদের সাথে বন্টন করে নেওয়া এক আনন্দস্বরূপ। (হিতোপদেশ ২:১-৫) তারা জানে যে যারা ঈশ্বরের অন্বেষণ করছে তারা কেবলমাত্র শাস্ত্র অধ্যয়নের মাধ্যমেই তাঁকে প্রকৃতভাবে খুঁজে পেতে পারে।—প্রেরিত ১৭:২৬, ২৭.
আপনার কি এলবার্টের কথা স্মরণে আছে, যার সম্বন্ধে আগের প্রবন্ধে উল্লেখ করা হয়েছিল? একটি অলৌকিক কাজের জন্য তার প্রার্থনা নিরুত্তর থেকে যাওয়ার অল্প কয়েকদিন পর, একজন বয়স্কা যিহোবার সাক্ষী তার সাথে সাক্ষাৎ করেন, যিনি তার কাছে কিছু বাইবেল-ভিত্তিক সাহিত্যাদি ছেড়ে যান। এরপর এলবার্ট একটি বিনামূল্যে গৃহ বাইবেল অধ্যয়ন গ্রহণ করেন। যতই তিনি বাইবেলের বার্তার সাথে ভালভাবে পরিচিত হতে থাকেন, ততই তার হতাশা, উত্তেজনায় পরিণত হতে থাকে। যাইহোক, তিনি উপলব্ধি করতে শুরু করেন যে পরিশেষে তিনি ঈশ্বরকে খুঁজে পেয়েছেন।
শাস্ত্র পরামর্শ দেয়: “সদাপ্রভুর অন্বেষণ কর, যাবৎ তাঁহাকে পাওয়া যায়, তাঁহাকে ডাক, যাবৎ তিনি নিকটে থাকেন।” (যিশাইয় ৫৫:৬) ঈশ্বরের কাছ থেকে একটি আধুনিক-দিনের অলৌকিক কাজের জন্য অপেক্ষা না করে, বরং তাঁর বাক্যের যথার্থ জ্ঞান লাভের দ্বারা আপনি এটি করতে পারেন। এটি অপরিহার্য, কারণ শুধুমাত্র আলৌকিক কাজগুলি বিশ্বাস গড়ে তোলে না।
[৫ পৃষ্ঠার চিত্র]
এমনকি লাসারের অলৌকিক পুনরুত্থানও যীশুর শত্রুদের বিশ্বাস অনুশীলন করতে পরিচালিত করেনি
[৭ পৃষ্ঠার চিত্র]
বিশ্বাস অবশ্যই বাইবেলের যথার্থ জ্ঞানের উপর ভিত্তি করে হতে হবে