ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w৯৯ ৫/১ পৃষ্ঠা ২০-২৪
  • সতর্ক হোন এবং অধ্যবসায়ী হোন!

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • সতর্ক হোন এবং অধ্যবসায়ী হোন!
  • ১৯৯৯ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • পাঁচজন কুমারীর মতো সতর্ক হোন!
  • শেষ যতই এগিয়ে আসছে অধ্যবসায়ী হোন
  • তাঁর উপস্থিতির সময়ে সতর্ক ও অধ্যবসায়ী হোন
  • আপনি কি ‘জাগিয়া থাকিবেন’?
    ২০১৫ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • আপনি কি সাবধানবাণীগুলোর প্রতি মনোযোগ দিচ্ছেন?
    প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য সম্বন্ধে ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০২৪
  • তালন্তের দৃষ্টান্ত থেকে শিখুন
    ২০১৫ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • শেষদিনের চিহ্ন
    সর্বমহান পুরুষ যিনি কখনও জীবিত ছিলেন
আরও দেখুন
১৯৯৯ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w৯৯ ৫/১ পৃষ্ঠা ২০-২৪

সতর্ক হোন এবং অধ্যবসায়ী হোন!

“অতএব জাগিয়া থাক; কেননা তোমরা সেই দিন বা সেই দণ্ড জান না।”—মথি ২৫:১৩.

১. প্রেরিত যোহন কীসের জন্য অধীরভাবে অপেক্ষা করছিলেন?

বাইবেলে দেওয়া তাদের শেষ কথাবার্তায় যীশু প্রতিজ্ঞা করেছিলেন: “আমি শীঘ্র আসিতেছি।” তাঁর প্রেরিত, যোহন উত্তর দিয়েছিলেন: “আমেন; প্রভু যীশু, আইস।” যীশু যে আসবেন সেই বিষয়ে যোহনের মনে কোন সন্দেহই ছিল না। কারণ তিনি সেই শিষ্যদের মধ্যে একজন ছিলেন যারা যীশুকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন: “আমাদের বলুন দেখি এই সমস্ত ঘটনা কখন হবে? আর আপনার উপস্থিতির [গ্রিক, পারৌসিয়া] ও এই বিধিব্যবস্থার শেষের চিহ্ন কী?” হ্যাঁ, যোহন সম্পূর্ণ বিশ্বাস নিয়ে যীশুর ভবিষ্যৎ উপস্থিতির জন্য অধীরভাবে অপেক্ষা করেছিলেন।—প্রকাশিত বাক্য ২২:২০; মথি ২৪:৩, NW.

২. যীশুর উপস্থিতি সম্বন্ধে গির্জার লোকেদের মনোভাব কী?

২ আজকে এইরকম বিশ্বাস বলতে গেলে দেখাই যায় না। যেমন অনেক গির্জায় যীশুর ‘আসার’ বিষয়ে অনেক শিক্ষা দেওয়া হয়ে থাকে কিন্তু তাদের খুব অল্প সদস্যরাই সত্যি করে সেটার জন্য অপেক্ষা করেন। তাদের জীবনযাপন দেখায় না যে তারা যীশুর আসার জন্য অপেক্ষা করেন। নতুন নিয়মে পারৌসিয়া (ইংরেজি) বইটা বলে: “গির্জার সদস্যদের জীবনধারা, চিন্তাভাবনা ও কাজকর্ম খুব কমই দেখায় যে তারা পারৌসিয়ার জন্য অপেক্ষা করেন। . . . গির্জাগুলোর অনুতাপ করা ও সুসমাচার ঘোষণা করা যতখানি উচিত তা পুরোপুরি শেষ না হয়ে গেলেও একেবারে নেই বললেই চলে।” কিন্তু তা সকলের বেলায় সত্যি নয়!

৩. (ক) পারৌসিয়া সম্পর্কে সত্য খ্রীষ্টানেরা কেমন বোধ করেন? (খ) এখন বিশেষ করে কোন্‌ বিষয়টা আমরা আলোচনা করব?

৩ যীশুর প্রকৃত শিষ্যরা আজকের দুষ্ট বিধিব্যবস্থার শেষ দেখার জন্য খুবই আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করেন। আর বিশ্বস্ততার সঙ্গে তা করে চলার সময় আমাদের যীশুর উপস্থিতির সঙ্গে জড়িত সবকিছুর জন্য সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি রাখা আর সেই অনুযায়ী কাজ করা দরকার। তা আমাদেরকে ‘শেষ পর্যন্ত স্থির থেকে পরিত্রাণ পেতে’ সাহায্য করবে। (মথি ২৪:১৩) মথি ২৪ ও ২৫ অধ্যায়ের ভবিষ্যদ্বাণীতে যীশু বিজ্ঞ উপদেশ দিয়েছিলেন যা কাজে লাগালে তার থেকে আমরা স্থায়ী উপকার পাব। ২৫ অধ্যায়ে এমন কিছু দৃষ্টান্ত রয়েছে যেগুলো হয়ত আপনি জানেন। তার মধ্যে একটা হল দশ কুমারীর (সুবুদ্ধি ও নির্বুদ্ধি কুমারী) আর আরেকটা হল তালন্তের দৃষ্টান্ত। (মথি ২৫:১-৩০) ওই দৃষ্টান্তগুলো থেকে আমরা কীভাবে উপকার পেতে পারি?

পাঁচজন কুমারীর মতো সতর্ক হোন!

৪. কুমারীর দৃষ্টান্তের মূল বিষয় কী?

৪ আপনি হয়ত মথি ২৫:১-১৩ পদে দেওয়া কুমারীদের দৃষ্টান্তটা আবার পড়তে চাইবেন। সেখানে একটা জাঁকজমকপূর্ণ যিহূদী বিয়ের অনুষ্ঠানের কথা বলা হয়েছে যেখানে বর কনেকে তার বাড়িতে (অথবা তার বাবার বাড়িতে) নিয়ে আসার জন্য কনের বাবার বাড়িতে যান। এইরকম বরযাত্রী দলে হয়ত গানবাজনার ব্যাবস্থাও থাকত আর বর ঠিক কোন সময়ে আসবেন তা কেউ জানত না। ওই দৃষ্টান্তে দশজন কুমারীকে অনেক রাত পর্যন্ত বরের আসার জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছিল। পাঁচজন কুমারী নির্বোধের মতো তাদের প্রদীপের জন্য যথেষ্ট তেল আনেননি, তাই তাদেরকে তেল কিনতে যেতে হয়েছিল। কিন্তু বাকি পাঁচজন বুদ্ধি করে তাদের নিজের নিজের পাত্রে তেল ভরে নিয়ে এসেছিলেন, যাতে তারা অপেক্ষা করার সময় দরকার হলে তাদের প্রদীপগুলোতে তেল ভরতে পারেন। তাই যখন বর আসেন তখন শুধু এই পাঁচজনই সেখানে ছিলেন আর তারা ভালভাবেই তৈরি ছিলেন। আর শুধু তারাই বিবাহভোজে ঢুকতে পান। পাঁচজন নির্বুদ্ধি কুমারী যখন তেল কিনে ফিরে এসেছিলেন তখন খুবই দেরি হয়ে গিয়েছিল আর তাই তারা ঢুকতে পারেননি।

৫. বাইবেলের কোন্‌ পদগুলো আমাদেরকে কুমারীর দৃষ্টান্তের অর্থ বুঝতে সাহায্য করে?

৫ এই দৃষ্টান্তের অনেক দিকই রূপক। যেমন, বাইবেল যীশুকে বর বলে। (যোহন ৩:২৮-৩০) যীশু নিজেকে একজন রাজপুত্রের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন যাঁর জন্য বিবাহ ভোজের আয়োজন করা হয়েছিল। (মথি ২২:১-১৪) আর বাইবেলে খ্রীষ্টকে একজন স্বামীর সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। (ইফিষীয় ৫:২৩) বাইবেলে কোথাও কোথাও অভিষিক্ত খ্রীষ্টানদের খ্রীষ্টের ‘কনে’ হিসেবে বলা হয়েছে কিন্তু আগ্রহের বিষয় হল যে এই দৃষ্টান্তে কোথাও কনের কথা বলা হয়নি। (যোহন ৩:২৯; প্রকাশিত বাক্য ১৯:৭; ২১:২, ৯) কিন্তু এখানে দশজন কুমারীর কথা বলা হয়েছে আর অভিষিক্তদের কোথাও কোথাও খ্রীষ্টের সঙ্গে বিয়ের জন্য বাগদত্তা কুমারী হিসেবেও বলা হয়েছে।—২ করিন্থীয় ১১:২.a

৬. কুমারীর দৃষ্টান্ত শেষ করার সময় যীশু কোন্‌ পরামর্শ দিয়েছিলেন?

৬ দৃষ্টান্তের এই বর্ণনা ও ভবিষ্যতের জন্য এটা যা বোঝায় তা ছাড়াও এই দৃষ্টান্তে কিছু সুন্দর সুন্দর নীতি রয়েছে যা আমরা শিখতে পারি। উদাহরণ হিসেবে দেখুন যে যীশু এই কথা বলে শেষ করেন: “অতএব জাগিয়া থাক; কেননা তোমরা সেই দিন বা সেই দণ্ড জান না।” অর্থাৎ, ওই দৃষ্টান্তটা আমাদের প্রত্যেকের জন্য এই দুষ্ট ব্যবস্থার আসন্ন শেষের বিষয়ে সতর্ক ও সজাগ হওয়ার প্রয়োজনের বিষয়ে বলে। যদিও আমরা নির্দিষ্ট কোন তারিখ জানি না তবুও, কোন সন্দেহই নেই যে ওই দিন এগিয়ে আসছে। এক্ষেত্রে, দেখুন যে পাঁচজন কুমারী কেমন মনোভাব দেখিয়েছিলেন আর বাকি পাঁচজন কী করেছিলেন।

৭. কোন্‌ অর্থে পাঁচজন কুমারী নির্বুদ্ধি ছিলেন?

৭ যীশু বলেছিলেন: “তাহাদের মধ্যে পাঁচ জন নির্বুদ্ধি।” এর কারণ কি এই যে তারা বিশ্বাস করেননি যে বর আসছিলেন? তারা কি সুখ-বিলাসের পিছনে ছুটছিলেন? তারা কি প্রতারিত হয়েছিলেন? এগুলোর কোনটাই ঘটেনি। যীশু বলেছিলেন যে এই পাঁচ জন “প্রদীপ লইয়া বরের সহিত সাক্ষাৎ করিতে বাহির হইল।” তারা জানতেন যে তিনি আসছিলেন, তারা বরের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন, এমনকি “বিবাহবাটীতে” ঢুকতেও চেয়েছিলেন। কিন্তু, তারা কি সবকিছু নিয়ে তৈরি ছিলেন? তারা বরের জন্য ‘মধ্য রাত্র’ পর্যন্ত অপেক্ষা করেছিলেন ঠিকই কিন্তু তারা যখন আশা করেছিলেন যে বর আসবেন তার চেয়ে আগে বা পরে যখনই বর আসুন না কেন, তাকে গ্রহণ করার জন্য তারা তৈরি ছিলেন না।

৮. ওই দৃষ্টান্তের পাঁচজন কুমারী কীভাবে সুবুদ্ধি প্রমাণিত হয়েছিলেন?

৮ অন্য পাঁচজন—যাদেরকে যীশু সুবুদ্ধি বলেছিলেন—তারাও প্রদীপ নিয়ে বাইরে গিয়ে বরের আসার অপেক্ষায় ছিলেন। তাদেরও অপেক্ষা করতে হয়েছিল কিন্তু তারা “সুবুদ্ধি” ছিলেন। যে গ্রিক শব্দকে “সুবুদ্ধি” অনুবাদ করা হয়েছে তার অর্থ “দূরদর্শী, বিচক্ষণ, উপস্থিত বুদ্ধিসম্পন্ন।” এই পাঁচজন কুমারী পাত্রে করে বাড়তি তেল নিয়ে এসেছিলেন, যেন দরকার হলে প্রদীপে ভরতে পারেন। এটা করে তারা প্রমাণ দিয়েছিলেন যে তারা সুবুদ্ধি। বরের জন্য তৈরি হয়ে থাকতে তারা এতটাই মনোযোগী ছিলেন যে তারা তাদের তেল থেকে অন্যদেরকে কিছু দিতে চাননি। তাদের এই সতর্কতা ভুল ছিল না আর যখন বর এসেছিলেন তখন তাদের উপস্থিত থাকা ও পুরোপুরিভাবে তৈরি থাকাই তা প্রমাণ করেছিল। যারা “প্রস্তুত ছিল, তাহারা তাঁহার সঙ্গে বিবাহবাটীতে প্রবেশ করিল।”

৯, ১০. কুমারীর দৃষ্টান্তের মূল বিষয় কী আর আমাদের নিজেদের কোন্‌ প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা উচিত?

৯ যীশু এখানে বিয়ের অনুষ্ঠানে কীরকম আচার-ব্যবহার করতে হয় সে বিষয়ে শিক্ষা দিচ্ছিলেন না বা তিনি কোন জিনিস অন্যের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার বিষয়েও কোন পরামর্শ দিচ্ছিলেন না। তিনি যে বিষয়টা বলতে চাচ্ছিলেন তা হল: “অতএব জাগিয়া থাক; কেননা তোমরা সেই দিন বা সেই দণ্ড জান না।” নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন: ‘যীশুর উপস্থিতি সম্পর্কে কি আমি সত্যিই সতর্ক?’ আমরা বিশ্বাস করি যে যীশু এখন স্বর্গে শাসন করছেন কিন্তু ‘মনুষ্যপুত্ত্র যে আকাশীয় মেঘরথে পরাক্রম ও মহাপ্রতাপে শীঘ্রই আসিতেছেন’ তার সত্যতার ব্যাপারে আমরা কতটা মনোযোগী? (মথি ২৪:৩০) কুমারীরা যখন প্রথমবার বরের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন তখন বরের আসতে দেরি ছিল কিন্তু “মধ্য রাত্রে” বরের আসার সময় নিশ্চয়ই এগিয়ে এসেছিল। একইভাবে, আমরা যখন থেকে মনুষ্যপুত্রের আসার অপেক্ষা করছি সেই সময় মনুষ্যপুত্রের আসার দেরি ছিল কিন্তু আজকে দুষ্ট ব্যবস্থাকে ধ্বংস করার জন্য মনুষ্যপুত্রের আসার সময় এগিয়ে এসেছে। (রোমীয় ১৩:১১-১৪) সেই দিন যতই কাছে এগিয়ে আসছে আমরা কি আরও বেশি সতর্ক হয়ে আমাদের সতর্ক করছি?

১০ “জাগিয়া থাক” এই আদেশের বাধ্য হওয়ার জন্য আমাদের সবসময় সতর্ক থাকা দরকার। পাঁচজন কুমারীর তেল ফুরিয়ে গিয়েছিল এবং তারা তেল কিনতে গিয়েছিলেন। একইভাবে আজকেও একজন খ্রীষ্টান বিক্ষিপ্ত হয়ে যেতে পারেন আর এর ফলে যীশুর আসন্ন আগমনের জন্য পুরোপুরি তৈরি নাও থাকতে পারেন। প্রথম শতাব্দীর কিছু খ্রীষ্টানদের বেলায় এমনটা ঘটেছিল। আজকেও তা কয়েকজনের বেলায় হতে পারে। তাই আসুন আমরা নিজেদের প্রশ্ন করি, ‘এমনটা কি আমার বেলায় ঘটছে?’—১ থিষলনীকীয় ৫:৬-৮; ইব্রীয় ২:১; ৩:১২; ১২:৩; প্রকাশিত বাক্য ১৬:১৫.

শেষ যতই এগিয়ে আসছে অধ্যবসায়ী হোন

১১. যীশু পরে কোন্‌ দৃষ্টান্ত বলেছিলেন আর কোন্‌ দৃষ্টান্তের সঙ্গে এর মিল রয়েছে?

১১ পরের দৃষ্টান্তে যীশু তাঁর অনুসারীদের সতর্ক হওয়ার চেয়েও আরও বেশি কিছু করার জন্য পরামর্শ দিয়েছিলেন। সুবুদ্ধি ও নির্বুদ্ধি কুমারীদের বিষয়ে বলার পর, তিনি তালন্তের দৃষ্টান্ত বলেছিলেন। (মথি ২৫:১৪-৩০ পদ পড়ুন।) এই দৃষ্টান্তটা অনেক দিক দিয়ে যীশুর আগের মুদ্রার দৃষ্টান্তের সঙ্গে মিলে যায়, যেটা তিনি বলেছিলেন কারণ অনেকে “অনুমান করিতেছিল যে, ঈশ্বরের রাজ্যের প্রকাশ তখনই হইবে।”—লূক ১৯:১১-২৭.

১২. তালন্তের দৃষ্টান্তের মূল বিষয়টা কী?

১২ তালন্তের দৃষ্টান্তে, যীশু একজন লোকের কথা বলেছিলেন যিনি দূরদেশে যাওয়ার আগে তার তিনজন দাসকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন। তিনি একজনকে পাঁচ তালন্ত, আরেকজনকে দুই তালন্ত এবং শেষ জনকে শুধু এক তালন্ত দিয়েছিলেন—“যাহার যেরূপ শক্তি, তাহাকে তদনুসারে দিলেন।” সম্ভবত এগুলো ছিল রুপোর মুদ্রা আর এক তালন্ত সাধারণত একজন মজুরের ১৪ বছরের বেতনের সমান ছিল—অনেক অনেক টাকা! ‘দীর্ঘকাল’ তিনি যখন দূরে ছিলেন তখন তারা কী করেছেন তার হিসাব নেওয়ার জন্য তিনি ফিরে এসে তার দাসদের ডাকেন। প্রথম দুজন দাস তাদের যা দেওয়া হয়েছিল সেগুলোকে দ্বিগুণ করেছিল। তিনি বলেছিলেন, “বেশ,” আর তাদের দুজনকে আরও বেশি দায়িত্ব দেওয়ার প্রতিজ্ঞা করে তিনি বলেছিলেন: “তুমি আপন প্রভুর আনন্দের সহভাগী হও।” যে দাসকে এক তালন্ত দেওয়া হয়েছিল সে তার প্রভুকে খুবই কড়া লোক মনে করে ওই তালন্তকে কোন কাজে ব্যবহার করেনি। সে টাকাটা লুকিয়ে রেখেছিল, এমনকি ব্যাংকেও রাখেনি যেখান থেকে সুদ পাওয়া যেত। প্রভু তাকে “দুষ্ট অলস দাস” বলেছিলেন কারণ সে তার প্রভুর লাভের জন্য কাজ করেনি। শেষ পর্যন্ত তার কাছ থেকে ওই এক তালন্ত নিয়ে নেওয়া হয়েছিল আর তাকে এমন জায়গায় ফেলে দেওয়া হয়েছিল যেখানে, “রোদন ও দন্তঘর্ষণ হইবে।”

১৩. কীভাবে যীশু ওই দৃষ্টান্তের প্রভু প্রমাণিত হয়েছিলেন?

১৩ এই দৃষ্টান্তটাও রূপক। উদাহরণ হিসাবে বলা যায়, যে ব্যক্তি বিদেশে যাচ্ছেন তিনি যীশুকে চিত্রিত করেন যিনি তাঁর শিষ্যদের ছেড়ে স্বর্গে চলে যান এবং তাঁর রাজকীয় ক্ষমতা না পাওয়া পর্যন্ত অনেক সময় অপেক্ষা করেন।b (গীতসংহিতা ১১০:১-৪; প্রেরিত ২:৩৪-৩৬; রোমীয় ৮:৩৪; ইব্রীয় ১০:১২, ১৩) এখানেও আমরা একটা বড় শিক্ষা বা নীতি পাই যা আমাদের সবার জীবনে কাজে লাগানো উচিত। সেটা কী?

১৪. তালন্তের দৃষ্টান্তটা কোন্‌ জরুরি দরকারের ওপর জোর দেয়?

১৪ আমাদের আশা স্বর্গে অমর জীবন কিংবা পরমদেশ পৃথিবীতে অনন্ত জীবন যাই হোক না কেন, যীশুর দৃষ্টান্ত থেকে এটা স্পষ্ট যে খ্রীষ্টীয় কাজকর্মে আমাদের নিজেদেরকে ব্যস্ত রাখা উচিত। আসলে, এই দৃষ্টান্তের মূল বিষয়বস্তুকে এক কথায় বলা যেতে পারে: অধ্যবসায়। সা.কা. ৩৩ সালের পঞ্চাশত্তমীর দিন থেকে প্রেরিতেরা এই বিষয়ে এক উদাহরণ স্থাপন করেন। আমরা পড়ি: “আর আর অনেক কথায় [পিতর] সাক্ষ্য দিলেন, ও তাহাদিগকে উপদেশ দিয়া কহিলেন, এই কালের কুটিল লোকদের হইতে আপনাদিগকে রক্ষা কর।” (প্রেরিত ২:৪০-৪২) আর তার পরিশ্রমের কত চমৎকার ফলই না তিনি পেয়েছিলেন! খ্রীষ্টীয় প্রচার কাজে প্রেরিতদের সঙ্গে অন্যেরা যখন যোগ দিয়েছিলেন তখন তারাও অনেক পরিশ্রমের সঙ্গে তা করেছিলেন আর তার ফলে সুসমাচার ‘সমস্ত জগতে বর্ধিষ্ণু’ হয়েছিল।—কলসীয় ১:৩-৬, ২৩; ১ করিন্থীয় ৩:৫-৯.

১৫. তালন্তের দৃষ্টান্ত থেকে মূল বিষয়টা কাজে লাগাতে হলে আমাদের কোন্‌ বিশেষ উপায়ে কাজ করতে হবে?

১৫ এই দৃষ্টান্তের প্রসঙ্গটা মনে করে দেখুন—যীশুর উপস্থিতি সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী। আমাদের যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে যে যীশুর পারৌসিয়া চলছে এবং শীঘ্রিই এটা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছাবে। “শেষ” এবং খ্রীষ্টানদের যে কাজ করতে হবে তার মধ্যে যীশু যে যোগসূত্র দেখিয়েছেন তা মনে করে দেখুন: “সর্ব্ব জাতির কাছে সাক্ষ্য দিবার নিমিত্ত রাজ্যের এই সুসমাচার সমুদয় জগতে প্রচার করা যাইবে; আর তখন শেষ উপস্থিত হইবে।” (মথি ২৪:১৪) এই কথা মাথায় রেখে আমরা কোন্‌ দাসের মতো হব? নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন: ‘আমাকে সেই দাসের মতো ভাবার কি কোন কারণ রয়েছে যে তাকে দেওয়া তালন্তটা লুকিয়ে রেখেছিল, সম্ভবত এইজন্য যে সে তার নিজের ব্যাপারে চিন্তিত ছিল? অথবা আমার কাজ থেকে কি পরিষ্কার বোঝা যায় যে আমি তাদের মতো যারা উত্তম ও বিশ্বস্ত ছিলেন? আমি কি প্রতিটা সুযোগেই প্রভুর লাভের অংশকে বাড়ানোর চেষ্টা করি?’

তাঁর উপস্থিতির সময়ে সতর্ক ও অধ্যবসায়ী হোন

১৬. আমরা যে দুটো দৃষ্টান্ত আলোচনা করেছি সেগুলো আপনার জন্য কী অর্থ রাখে?

১৬ হ্যাঁ, রূপক ও ভবিষ্যতের জন্য এর অর্থ ছাড়াও এই দুটো দৃষ্টান্তই আমাদের উৎসাহ দেয় যা স্বয়ং যীশু আমাদের বলেন। তিনি বলেছিলেন: খ্রীষ্টের পারৌসিয়া যখন বোঝা যাবে বিশেষ করে তখন সতর্ক হোন; অধ্যবসায়ী হোন। আর তা এখনই। অতএব, আমরা কি সত্যিই সতর্ক এবং অধ্যবসায়ী?

১৭, ১৮. যীশুর উপস্থিতি সম্পর্কে শিষ্য যাকোব কোন্‌ পরামর্শ দিয়েছিলেন?

১৭ যীশু যখন জৈতুন পর্বতে এই ভবিষ্যদ্বাণী করছিলেন তখন সেখানে তাঁর সৎ ভাই যাকোব ছিলেন না। কিন্তু পরে তিনি এই বিষয়ে জেনেছিলেন এবং এর অর্থ স্পষ্ট করে বুঝেছিলেন। তিনি লিখেছিলেন: “অতএব, হে ভ্রাতৃগণ, তোমরা প্রভুর আগমন [উপস্থিতি] পর্য্যন্ত দীর্ঘসহিষ্ণু থাক। দেখ, কৃষক ভূমির বহুমূল্য ফলের অপেক্ষা করে এবং যত দিন তাহা প্রথম ও শেষ বর্ষা না পায়, তত দিন তাহার বিষয়ে দীর্ঘসহিষ্ণু থাকে। তোমরাও দীর্ঘসহিষ্ণু থাক, আপন আপন হৃদয় সুস্থির কর, কেননা প্রভুর আগমন [উপস্থিতি] সন্নিকট।” (বাঁকা অক্ষরে মুদ্রণ আমাদের।)—যাকোব ৫:৭, ৮.

১৮ যাকোব নিশ্চিতভাবে বলেছিলেন যে যারা তাদের ধনসম্পদকে ভুলভাবে ব্যবহার করবে ঈশ্বর তাদের কঠিনভাবে বিচার করবেন। এরপর তিনি খ্রীষ্টানদের পরামর্শ দিয়েছিলেন যে তারা যেন যিহোবার বিচারের সময়ের জন্য অপেক্ষা করতে করতে অধৈর্য না হয়ে পড়েন। একজন অধৈর্য খ্রীষ্টান হয়ত বদলা নেওয়ার কথা ভাবতে পারেন, তিনি মনে করতে পারেন যে তার বিরুদ্ধে যে ভুল করা হয়েছে তা শুধরাবার অধিকার তার রয়েছে। কিন্তু আমাদের অধৈর্য হওয়া উচিত নয় কারণ বিচারের সময় অবশ্যই আসবে। কৃষকের দৃষ্টান্ত সেটাই দেখায় যেমন যাকোব বর্ণনা করেছেন।

১৯. একজন ইস্রায়েলীয় কৃষককে কেমন ধৈর্য ধরতে হতো?

১৯ একজন ইস্রায়েলীয় কৃষককে বীজ বোনার পর প্রথমে মুকুল বের হওয়ার জন্য, শস্য পাকবার জন্য আর শস্য কাটার জন্য শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতো। (লূক ৮:৫-৮; যোহন ৪:৩৫) অপেক্ষা করার সময় হয়ত এমন সময় এসেছে বা এমন কিছু হয়েছে যখন তাকে দুশ্চিন্তায় পড়তে হয়েছে। প্রথম বর্ষা কি ঠিক মতো আসবে আর এলেও তা কি ঠিকমতো হবে? শেষ বর্ষা কী ঠিক সময় আসবে? পোকামাকড়ে কি শস্য খেয়ে ফেলবে ঝড়ে কি তা নষ্ট হয়ে যাবে? (যোয়েল ১:৪; ২:২৩-২৫ পদগুলোর সঙ্গে তুলনা করুন।) তাসত্ত্বেও, দেখা যায় যে একজন ইস্রায়েলীয় কৃষক যিহোবা ও তাঁর তৈরি প্রাকৃতিক চক্রের ওপর নির্ভর করতে পারতেন। (দ্বিতীয় বিবরণ ১১:১৪; যিরমিয় ৫:২৪) বিশ্বাস নিয়ে অপেক্ষা করার মধ্যেই কৃষকের ধৈর্য বোঝা যেত। বিশ্বাস থাকায় তিনি জানতেন যে তিনি যার জন্য অপেক্ষা করছিলেন তা হবেই। অবশ্যই হবে!

২০. যাকোবের পরামর্শের সঙ্গে মিল রেখে আমরা কীভাবে ধৈর্য দেখাতে পারি?

২০ ফসল কাটার সময় কখন আসবে সেই বিষয়ে একজন কৃষকের কিছুটা জ্ঞান থাকে কিন্তু প্রথম শতাব্দীর খ্রীষ্টানেরা হিসাব করতে পারেননি যে যীশুর উপস্থিতি ঠিক কখন হবে। কিন্তু তারা নিশ্চিত ছিলেন যে এটা আসবেই। যাকোব লিখেছিলেন: “প্রভুর উপস্থিতি [গ্রিক, পারৌসিয়া] সন্নিকট।” যাকোব যখন ওই কথাগুলো লিখেছিলেন তখন খ্রীষ্টের উপস্থিতির চিহ্নগুলো বড় আকারে অথবা সারা পৃথিবীতে স্পষ্টভাবে দেখা যায়নি। কিন্তু এখন তা স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে! তাই এই সময় সম্পর্কে আমাদের অনুভূতি কেমন হওয়া উচিত? চিহ্ন সত্যিই দেখা যাচ্ছে। আমরা নিজের চোখে তা দেখতে পাচ্ছি। আমরা পুরো নিশ্চয়তার সঙ্গে বলতে পারি, ‘আমি দেখতে পাচ্ছি যে চিহ্ন পরিপূর্ণ হচ্ছে।’ সুতরাং আমরা বিশ্বাসের সঙ্গে বলতে পারি ‘প্রভুর উপস্থিতি চলছে এবং শীঘ্রিই এটা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছাবে।’

২১. আমরা কী করার জন্য স্থির সিদ্ধান্ত নেব?

২১ সেই দিন যেহেতু কাছেই তাই আমরা যীশুর বলা যে দুটো দৃষ্টান্ত আলোচনা করেছি, তার মূল শিক্ষাতে মন দেওয়ার ও তা কাজে লাগানোর চেষ্টা করি। তিনি বলেছিলেন: “জাগিয়া থাক; কেননা তোমরা সেই দিন বা সেই দণ্ড জান না।” (মথি ২৫:১৩) তাই এখনই সময় যখন আমরা উদ্যোগের সঙ্গে খ্রীষ্টীয় পরিচর্যা করতে পারি। আসুন আমরা আমাদের প্রতিদিনের কাজের মধ্যে দিয়ে দেখাই যে আমরা যীশুর কথা বুঝতে পেরেছি। আসুন আমরা সতর্ক হই! আসুন আমরা অধ্যবসায়ী হই!

[পাদটীকাগুলো]

a এই রূপক দৃষ্টান্তের অর্থ বোঝার জন্য ওয়াচটাওয়ার বাইবেল অ্যান্ড ট্র্যাক্ট সোসাইটি দ্বারা প্রকাশিত ঈশ্বরের রাজ্যের হাজার বছরের শাসন আসন্ন (ইংরেজি) বইয়ের ১৬৯-২১১ পৃষ্ঠা দেখুন।

b ঈশ্বরের রাজ্যের হাজার বছরের শাসন আসন্ন বইয়ের ২১২-৫৬ পৃষ্ঠা দেখুন।

আপনি কি মনে করতে পারেন?

◻ সুবুদ্ধি ও নির্বুদ্ধি কুমারীর দৃষ্টান্ত থেকে আপনি কোন্‌ মূল বিষয় শিখেছেন?

◻ তালন্তের দৃষ্টান্তের মাধ্যমে যীশু আপনাকে কোন্‌ জরুরি পরামর্শ দিচ্ছেন?

◻ একজন ইস্রায়েলীয় কৃষকের মতো কোন্‌ অর্থে আপনার ধৈর্য পারৌসিয়া-র সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত?

◻ আমরা যে সময়ে বাস করছি তা কেন বিশেষ করে রোমাঞ্চকর ও কঠিন?

[২৩ পৃষ্ঠার চিত্র]

কুমারী ও তালন্তের দৃষ্টান্ত থেকে আপনি কী শিখতে পারেন?

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৫)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার