ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w০৬ ৫/১ পৃষ্ঠা ১৭-২১
  • যে-পালকরা “পালের আদর্শ”

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • যে-পালকরা “পালের আদর্শ”
  • ২০০৬ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • পাল এবং আলাদা আলাদাভাবে প্রত্যেক মেষ উভয়কেই ভালবাসুন
  • ভাববিনিময় করার মাধ্যমে আনন্দ ও শান্তি বৃদ্ধি করুন
  • দীর্ঘসহিষ্ণু এবং সদয় হোন
  • মঙ্গলজনক কাজগুলো বিশ্বাসের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়
  • মৃদুতার জন্য ইন্দ্রিয়দমন প্রয়োজন
  • যিহোবা তাঁর পালের জন্য পালকদের প্রশিক্ষণ দেন
    ২০০৬ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • পালকেরা, মহান পালককে অনুকরণ করুন
    ২০১৩ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • খ্রীষ্টান পালকেরা, ‘আপনাদের হৃদয় প্রশস্ত করুন’!
    ২০০০ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • কিভাবে খ্রীষ্টীয় মেষপালকেরা আপনার সেবা করে
    ১৯৯৬ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
আরও দেখুন
২০০৬ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w০৬ ৫/১ পৃষ্ঠা ১৭-২১

যে-পালকরা “পালের আদর্শ”

“তোমাদের মধ্যে ঈশ্বরের যে পাল আছে, তাহা পালন কর; . . . ইচ্ছাপূর্ব্বক, . . . উৎসুকভাবে কর; . . . পালের আদর্শ হইয়াই কর।”—১ পিতর ৫:২, ৩.

১, ২. (ক) যিশু আস্থা সহকারে প্রেরিত পিতরকে কোন বিশেষ সুযোগ দিয়েছিলেন এবং কেন যিশুর এই আস্থা ভুল ছিল না? (খ) নিযুক্ত পালকদের বিষয়ে যিহোবা কেমন বোধ করেন?

সাধারণ কাল ৩৩ সালের পঞ্চাশত্তমীর দিনের কিছুদিন আগে, পিতর এবং অন্য ছয়জন শিষ্য সকালের জলখাবার খাচ্ছিলেন, যা যিশু গালীল সমুদ্রের তীরে তৈরি করেছিলেন। পুনরুত্থিত যিশুকে যে পিতর এই প্রথম দেখেছেন, তা নয় আর কোনো সন্দেহ নেই যে, যিশু বেঁচে আছেন জেনে তিনি রোমাঞ্চিত হয়েছিলেন। তবে, পিতর হয়তো কিছুটা উদ্বিগ্নও ছিলেন। কারণ মাত্র কয়েক দিন আগে, তিনি এই বলে জনসমক্ষে যিশুকে অস্বীকার করেছিলেন যে, তিনি তাঁকে চেনেনই না। (লূক ২২:৫৫-৬০; ২৪:৩৪; যোহন ১৮:২৫-২৭; ২১:১-১৪) যিশু কি অনুতপ্ত পিতরকে তার বিশ্বাসের অভাবের জন্য তিরস্কার করেছিলেন? না। এর পরিবর্তে, পিতরকে যিশু আস্থা সহকারে তাঁর “মেষগণকে” চরানোর এবং পালন করার বিশেষ সুযোগ দিয়েছিলেন। (যোহন ২১:১৫-১৭) প্রথম শতাব্দীর খ্রিস্টীয় মণ্ডলীর ইতিহাস সম্বন্ধে বাইবেলের বিবরণ দেখায় যে, পিতরের ওপর যিশুর আস্থা ভুল ছিল না। চরম পরীক্ষা এবং দ্রুত প্রসারের এক সময়ে অন্যান্য প্রেরিত ও যিরূশালেমের প্রাচীনবর্গের সঙ্গে পিতর খ্রিস্টীয় মণ্ডলীকে পালন করে গিয়েছিলেন।—প্রেরিত ১:১৫-২৬; ২:১৪; ১৫:৬-৯.

২ আজকে, মানব ইতিহাসের সবচেয়ে সংকটপূর্ণ সময়ে যিহোবা তাঁর মেষদের পরিচালনা দেওয়ার জন্য আধ্যাত্মিক মেষপালক হিসেবে সেবা করতে যিশু খ্রিস্টের মাধ্যমে যোগ্য পুরুষদের নিযুক্ত করেছেন। (ইফিষীয় ৪:১১, ১২; ২ তীমথিয় ৩:১) এই ধরনের আস্থা রাখা কি ভুল হয়েছে? পৃথিবীব্যাপী বিদ্যমান শান্তিপূর্ণ খ্রিস্টীয় ভ্রাতৃসমাজ প্রমাণ দেয় যে, না তা ভুল হয়নি। এটা ঠিক যে, এই পালকরাও ভুলপ্রবণতাসম্পন্ন মানুষ, যেমনটা পিতরও ছিলেন। (গালাতীয় ২:১১-১৪; যাকোব ৩:২) তা সত্ত্বেও, যাদেরকে “তিনি নিজ [“নিজ পুত্রের,” NW] রক্ত দ্বারা ক্রয় করিয়াছেন,” সেই মেষদের যত্ন নেওয়ার ব্যাপারে যিহোবা এই পালকদের ওপর নির্ভর করেন। (প্রেরিত ২০:২৮) এই ব্যক্তিদের প্রতি যিহোবার গভীর স্নেহ রয়েছে এবং তাদেরকে তিনি “দ্বিগুণ সমাদরের যোগ্য” বলে মনে করেন।—১ তীমথিয় ৫:১৭.

৩. কীভাবে আধ্যাত্মিক পালকরা ইচ্ছুক এবং উৎসুক মনোভাব বজায় রাখে?

৩ কীভাবে আধ্যাত্মিক পালকরা ইচ্ছুক এবং উৎসুক মনোভাব বজায় রেখে পালের আদর্শ হয়ে উঠতে পারে? পিতর এবং প্রথম শতাব্দীর অন্যান্য পালকের মতো তারা ঈশ্বরের পবিত্র আত্মার ওপর নির্ভর করে আর এই আত্মা তাদেরকে সেই শক্তি প্রদান করে, যা দায়িত্বভার বহন করার জন্য তাদের প্রয়োজন। (২ করিন্থীয় ৪:৭) এ ছাড়া, পবিত্র আত্মা তাদের মধ্যে আত্মার ফল—প্রেম, আনন্দ, শান্তি, দীর্ঘসহিষ্ণুতা, মাধুর্য বা দয়া, মঙ্গলভাব, বিশ্বস্ততা, মৃদুতা এবং ইন্দ্রিয়দমন—উৎপন্ন করে। (গালাতীয় ৫:২২, ২৩) আসুন আমরা এমন কিছু নির্দিষ্ট উপায় সম্বন্ধে বিবেচনা করি, যেগুলোর মাধ্যমে পালকরা তাদের যত্নাধীন ঈশ্বরের পালকে পালন করার সময় এই ফলগুলো দেখানোর ক্ষেত্রে এক উদাহরণ স্থাপন করতে পারে।

পাল এবং আলাদা আলাদাভাবে প্রত্যেক মেষ উভয়কেই ভালবাসুন

৪, ৫. (ক) কীভাবে যিহোবা এবং যিশু পালের প্রতি প্রেম দেখান? (খ) কিছু উপায় কী, যার মাধ্যমে আধ্যাত্মিক পালকরা পালের প্রতি প্রেম দেখায়?

৪ ঈশ্বরের আত্মার দ্বারা উৎপন্ন সর্বপ্রধান গুণটা হল প্রেম। যিহোবা সমগ্র পালের প্রতি তাঁর প্রেম প্রকাশ করেন, যখন তিনি পালের জন্য প্রচুর আধ্যাত্মিক খাবার জুগিয়ে থাকেন। (যিশাইয় ৬৫:১৩, ১৪; মথি ২৪:৪৫-৪৭) কিন্তু, তিনি কেবল পালের পুষ্টিবিধান করার চেয়ে আরও বেশি কিছু করেন। আলাদা আলাদাভাবে প্রত্যেক মেষের প্রতি তাঁর ব্যক্তিগত অনুরাগ রয়েছে। (১ পিতর ৫:৬, ৭) যিশুও পালকে ভালবাসেন। পালের জন্য তিনি তাঁর নিজ প্রাণ সমর্পণ করেছিলেন ও সেইসঙ্গে তিনি প্রত্যেকটা মেষকে ব্যক্তিগতভাবে ‘নাম ধরিয়া’ জানেন।—যোহন ১০:৩, ১৪-১৬.

৫ আধ্যাত্মিক পালকরা যিহোবা এবং যিশুকে অনুকরণ করে। তারা ‘শিক্ষা দিতে নিবিষ্ট থাকিয়া’ ঈশ্বরের সমগ্র পালের প্রতি প্রেম দেখায়। তাদের বাইবেলভিত্তিক বক্তৃতাগুলো পালের পুষ্টিবিধান এবং পালকে সুরক্ষা করতে সাহায্য করে আর এই ক্ষেত্রে তাদের কঠোর পরিশ্রম সকলে দেখতে পায়। (১ তীমথিয় ৪:১৩, ১৬) তবে রেকর্ড রাখা, চিঠিপত্র আদানপ্রদান করা, তালিকা তৈরি করা ও মণ্ডলীর সভাগুলো এবং অন্যান্য কার্যকলাপ “শিষ্ট ও সুনিয়মিতরূপে” সম্পাদন করার বিষয়টা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন খুঁটিনাটি বিষয়ের যত্ন নেওয়ার জন্য তারা যে-সময় ব্যয় করে থাকে, তা প্রায়ই অলক্ষিত থেকে যায়। (১ করিন্থীয় ১৪:৪০) তাদের এই কাজের অধিকাংশই অন্যেরা দেখতে পায় না আর তাই হয়তো অল্পই উপলব্ধি প্রকাশ করা হয়। এটা সত্যিই প্রেমের এক কাজ।—গালাতীয় ৫:১৩.

৬, ৭. (ক) একটা উপায় কী, যার মাধ্যমে পালকরা মেষদের সঙ্গে আরও ভালভাবে পরিচিত হয়ে উঠে? (খ) মাঝে মাঝে একজন প্রাচীনকে আমাদের অনুভূতিগুলো সম্বন্ধে বলা কেন উপকারী?

৬ প্রেমময় খ্রিস্টান পালকরা মণ্ডলীর প্রত্যেকটা মেষের প্রতি ব্যক্তিগত আগ্রহ দেখানোর প্রচেষ্টা করে। (ফিলিপীয় ২:৪) প্রত্যেকটা মেষের সঙ্গে পালকদের ভালভাবে পরিচিত হওয়ার একটা উপায় হল, জনসাধারণ্যে প্রচার কাজের সময় তাদের সঙ্গে কাজ করা। যিশু প্রায়ই প্রচার কাজের সময় তাঁর অনুসারীদের সঙ্গে নিতেন এবং সেই মুহূর্তগুলোকে উৎসাহ দেওয়ার জন্য কাজে লাগাতেন। (লূক ৮:১) একজন অভিজ্ঞ খ্রিস্টান পালক বলেন: “আমি দেখেছি যে, একজন ভাই অথবা বোনকে জানার এবং তাকে উৎসাহিত করার সবচেয়ে উত্তম একটা উপায় হল, তার সঙ্গে ক্ষেত্রের পরিচর্যায় কাজ করা।” সম্প্রতি, কোনো প্রাচীনের সঙ্গে ক্ষেত্রের পরিচর্যায় কাজ করার সুযোগ যদি আপনার না হয়ে থাকে, তা হলে শীঘ্রই তা করার ব্যবস্থা করুন না কেন?

৭ প্রেম যিশুকে তাঁর অনুসারীদের আনন্দে আনন্দিত এবং দুঃখে দুঃখিত হতে পরিচালিত করেছিল। উদাহরণস্বরূপ, তাঁর ৭০ জন শিষ্য যখন আনন্দ সহকারে তাদের প্রচার থেকে ফিরে এসেছিল, তখন যিশু “উল্লাসিত” হয়েছিলেন। (লূক ১০:১৭-২১) কিন্তু, লাসারের মৃত্যু মরিয়ম এবং তার পরিবারের সদস্য ও বন্ধুবান্ধবদের ওপর যে-প্রভাব ফেলেছিল, তা দেখে ‘যীশু কাঁদিয়াছিলেন।’ (যোহন ১১:৩৩-৩৫) একইভাবে, যত্নশীল পালকরা আজকে মেষদের আবেগের প্রতি উদাসীন নয়। প্রেম তাদেরকে ‘যাহারা আনন্দ করে, তাহাদের সহিত আনন্দ করিতে’ এবং ‘যাহারা রোদন করে, তাহাদের সহিত রোদন করিতে’ পরিচালিত করে। (রোমীয় ১২:১৫) আপনার জীবনে যদি আনন্দ অথবা দুঃখের অভিজ্ঞতা হয়ে থাকে, তা হলে স্বচ্ছন্দে খ্রিস্টান পালকদের কাছে তা বলুন। আপনার আনন্দের কথা শুনলে তারা উৎসাহ পাবে। (রোমীয় ১:১১, ১২) আপনার পরীক্ষাগুলো সম্বন্ধে জানলে তারা আপনাকে শক্তিশালী করতে এবং আশ্বাস বা সান্ত্বনা জোগাতে পারবে।—১ থিষলনীকীয় ১:৬; ৩:১-৩.

৮, ৯. (ক) কীভাবে একজন প্রাচীন তার স্ত্রীর প্রতি প্রেম দেখিয়েছিলেন? (খ) একজন পালকের জন্য তার পরিবারের প্রতি প্রেম দেখানো কতটা গুরুত্বপূর্ণ?

৮ পালের প্রতি একজন পালকের যে-প্রেম রয়েছে, তা মূলত নিজ পরিবারের প্রতি তিনি যেভাবে আচরণ করেন সেটার মাধ্যমে প্রকাশ পায়। (১ তীমথিয় ৩:১, ৪) তিনি যদি বিবাহিত হয়ে থাকেন, তা হলে তার স্ত্রীর প্রতি তিনি যে-প্রেম এবং সম্মান দেখান, তা অন্য স্বামীদের জন্য অনুকরণযোগ্য এক উদাহরণ স্থাপন করে। (ইফিষীয় ৫:২৫; ১ পিতর ৩:৭) লিন্ডা নামে একজন খ্রিস্টান মহিলার মন্তব্য বিবেচনা করুন। তার স্বামী মৃত্যুর আগে পর্যন্ত ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে একজন অধ্যক্ষ হিসেবে সেবা করেছেন। তিনি বলেন: “আমার স্বামী মণ্ডলীর যত্ন নেওয়ার কাজে সবসময় অত্যন্ত ব্যস্ত ছিলেন। কিন্তু, তিনি আমাকে বুঝতে সাহায্য করেছিলেন যে আমিও দলের একটা অংশ। আমার সমর্থনের জন্য প্রায়ই তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতেন এবং যখন কাজ থাকত না, তখন আমার সঙ্গে সময় কাটাতেন। এর ফলে, আমি তার ভালবাসা অনুভব করতাম এবং মণ্ডলীর সেবায় তিনি যে-সময় ব্যয় করতেন সেজন্য একটুও ঈর্ষা করতাম না।”

৯ একজন খ্রিস্টান পালকের যদি সন্তান থাকে, তা হলে তিনি এই ছোট সন্তানদের যেভাবে প্রেমের সঙ্গে শাসন এবং নিয়মিতভাবে প্রশংসা করেন, তা অন্য বাবামাদের জন্য অনুসরণযোগ্য এক উদাহরণ স্থাপন করে। (ইফিষীয় ৬:৪) বস্তুতপক্ষে, তার পরিবারের প্রতি দেখানো প্রেম ক্রমাগতভাবে এই প্রমাণ দেয় যে, পবিত্র আত্মার মাধ্যমে নিযুক্ত করে তার ওপর যে-নির্ভরতা দেখানো হয়েছে, তিনি সেই অনুযায়ী জীবনযাপন করেন।—১ তীমথিয় ৩:৪, ৫.

ভাববিনিময় করার মাধ্যমে আনন্দ ও শান্তি বৃদ্ধি করুন

১০. (ক) কোন বিষয়টা মণ্ডলীর আনন্দ ও শান্তির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে? (খ) কোন বিষয়টা প্রথম শতাব্দীর মণ্ডলীর শান্তির জন্য হুমকিস্বরূপ হয়ে উঠেছিল এবং কীভাবে সেই বিষয়টা মীমাংসা করা হয়েছিল?

১০ পবিত্র আত্মা প্রত্যেক খ্রিস্টানের হৃদয়ে, প্রাচীনবর্গের মধ্যে এবং সমগ্র মণ্ডলীতে আনন্দ ও শান্তি উৎপন্ন করতে পারে। কিন্তু, খোলাখুলি ভাববিনিময়ের অভাব থাকলে, তা এই আনন্দ ও শান্তির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। প্রাচীনকালের শলোমন বলেছিলেন: “মন্ত্রণার অভাবে সঙ্কল্প সকল ব্যর্থ হয়।” (হিতোপদেশ ১৫:২২) অন্যদিকে, সম্মানপূর্ণ এবং খোলাখুলি ভাববিনিময় আনন্দ ও শান্তি বৃদ্ধি করে। উদাহরণস্বরূপ, ত্বক্‌চ্ছেদের বিষয়টা যখন প্রথম শতাব্দীর মণ্ডলীর শান্তিকে নষ্ট করার ক্ষেত্রে হুমকিস্বরূপ হয়ে উঠেছিল, তখন যিরূশালেমের পরিচালক গোষ্ঠী পবিত্র আত্মার নির্দেশনা লাভের চেষ্টা করেছিল। এ ছাড়া, এই বিষয়ের ওপর তারা তাদের ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করেছিল। যথেষ্ট প্রাণবন্ত আলোচনার পর, তারা একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছেছিল। একমত হয়ে তারা যে-সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, সেটা যখন মণ্ডলীগুলোকে জানানো হয়েছিল, তখন ভাইয়েরা ‘সেই আশ্বাসের কথায় আনন্দিত হইয়াছিল।’ (প্রেরিত ১৫:৬-২৩, ২৫, ৩১; ১৬:৪, ৫) আনন্দ ও শান্তি বৃদ্ধি পেয়েছিল।

১১. কীভাবে প্রাচীনরা মণ্ডলীর মধ্যে আনন্দ ও শান্তি বৃদ্ধি করতে পারে?

১১ একইভাবে আজকেও, উত্তম ভাববিনিময়কারী হয়ে পালকরা মণ্ডলীর মধ্যে আনন্দ ও শান্তি বৃদ্ধি করে। বিভিন্ন সমস্যা যখন মণ্ডলীর শান্তির জন্য হুমকিস্বরূপ হয়ে ওঠে, তখন তারা একত্রে মিলিত হয়ে খোলাখুলিভাবে তাদের অনুভূতি প্রকাশ করে। তারা সম্মানপূর্বক তাদের সহপালকের মন্তব্য শুনে থাকে। (হিতোপদেশ ১৩:১০; ১৮:১৩) পবিত্র আত্মার জন্য প্রার্থনা করার পর, তারা বাইবেলের নীতি এবং ‘বিশ্বস্ত ও বুদ্ধিমান্‌ দাসের’ দ্বারা প্রকাশিত নির্দেশাবলির ওপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে। (মথি ২৪:৪৫-৪৭; ১ করিন্থীয় ৪:৬) শাস্ত্রের ওপর ভিত্তি করে প্রাচীনবর্গ যখন কোনো সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে, তখন প্রত্যেক প্রাচীন সেই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে পবিত্র আত্মার নির্দেশনার প্রতি বশীভূত হন, এমনকি যদিও তার ব্যক্তিগত মতামতের সঙ্গে অধিকাংশ প্রাচীন একমত ছিলেন না। এই ধরনের নম্রতা বা বিনয় আনন্দ ও শান্তিকে বৃদ্ধি করে এবং কীভাবে ঈশ্বরের সঙ্গে গমনাগমন করতে হয়, সেই বিষয়ে মেষদের জন্য এক চমৎকার উদাহরণ স্থাপন করে। (মীখা ৬:৮) মণ্ডলীর পালকরা বাইবেলভিত্তিক যে-সিদ্ধান্তগুলো নিয়ে থাকে, সেগুলোকে সমর্থন করে আপনি কি বিনয়ীভাবে সহযোগিতা করেন?

দীর্ঘসহিষ্ণু এবং সদয় হোন

১২. প্রেরিতদের সঙ্গে আচরণের ক্ষেত্রে কেন যিশুকে দীর্ঘসহিষ্ণু এবং সদয় হতে হয়েছিল?

১২ প্রেরিতরা বার বার ভুল করা সত্ত্বেও, তাদের সঙ্গে আচরণের ক্ষেত্রে যিশু দীর্ঘসহিষ্ণু এবং সদয় ছিলেন। উদাহরণস্বরূপ, যিশু তাদের কাছে বার বার নম্র হওয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। (মথি ১৮:১-৪; ২০:২৫-২৭) কিন্তু, যিশুর পার্থিব জীবনের শেষ রাতে, তাদের পা ধুইয়ে দেওয়ার মাধ্যমে তাদেরকে নম্রতা সম্বন্ধে শিক্ষা দেওয়ার পর পরই, “তাঁহাদের মধ্যে এই বিবাদও উৎপন্ন হইল যে তাঁহাদের মধ্যে কে শ্রেষ্ঠ বলিয়া গণ্য।” (লূক ২২:২৪; যোহন ১৩:১-৫) যিশু কি প্রেরিতদের বকাঝকা করেছিলেন? না, তিনি সদয়ভাবে তাদের সঙ্গে এই বলে যুক্তি দেখিয়েছিলেন: “কে শ্রেষ্ঠ? যে ভোজনে বসে, না যে পরিচর্য্যা করে? যে ভোজনে বসে, সেই কি নয়? কিন্তু আমি তোমাদের মধ্যে পরিচারকের ন্যায় রহিয়াছি।” (লূক ২২:২৭) যিশুর দীর্ঘসহিষ্ণুতা এবং দয়া—ও সেইসঙ্গে তাঁর উত্তম উদাহরণ—অবশেষে প্রেরিতদের হৃদয় স্পর্শ করেছিল।

১৩, ১৪. বিশেষভাবে কখন পালকদের সদয় হতে হবে?

১৩ একইভাবে, একজন আধ্যাত্মিক পালককে হয়তো কোনো একটা ভুলের জন্য একজন ব্যক্তিকে বার বার পরামর্শ দিতে হতে পারে। পালক হয়তো সেই ব্যক্তির প্রতি বিরক্ত হয়ে যেতে পারেন। কিন্তু, ‘যাহারা অনিয়মিতরূপে চলে, তাহাদিগকে চেতনা দিবার’ সময় নিজের ভুলগুলোর কথা মনে রাখা, তাকে তার ভাইয়ের প্রতি দীর্ঘসহিষ্ণুতা ও দয়া দেখাতে সমর্থ করে। এভাবে তিনি যিশু এবং যিহোবাকে অনুকরণ করেন, যারা সমস্ত খ্রিস্টানের প্রতি—যাদের মধ্যে এই পালকরাও রয়েছে—এই গুণগুলো দেখিয়ে থাকে।—১ থিষলনীকীয় ৫:১৪; যাকোব ২:১৩.

১৪ মাঝে মাঝে, পালকদের হয়তো এমন ব্যক্তিকে কড়া পরামর্শ দিতে হতে পারে, যিনি গুরুতর পাপ করেছেন। সেই ব্যক্তি যদি অনুতপ্ত না হন, তা হলে পালকরা অবশ্যই সেই দোষী ব্যক্তিকে মণ্ডলী থেকে বের করে দেবে। (১ করিন্থীয় ৫:১১-১৩) তা সত্ত্বেও, সেই ব্যক্তির সঙ্গে তারা এমনভাবে আচরণ করে, যা দেখায় যে তারা পাপকে ঘৃণা করে কিন্তু পাপীকে নয়। (যিহূদা ২৩) পালকদের সদয় আচরণ হয়তো একটা বিপথগামী মেষের জন্য অবশেষে পালের মধ্যে ফিরে আসাকে সহজ করে তোলে।—লূক ১৫:১১-২৪.

মঙ্গলজনক কাজগুলো বিশ্বাসের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়

১৫. একটা উপায় কী, যার মাধ্যমে পালকরা যিহোবার মঙ্গলভাবকে অনুকরণ করে আর কী তাদেরকে তা করতে অনুপ্রাণিত করে?

১৫ “সদাপ্রভু সকলের পক্ষে মঙ্গলময়,” এমনকি তাদের প্রতিও যারা তাঁর কৃতকর্মের প্রতি উপলব্ধি দেখায় না। (গীতসংহিতা ১৪৫:৯; মথি ৫:৪৫) যিহোবার মঙ্গলভাব বিশেষভাবে তিনি যে তাঁর লোকেদের ‘রাজ্যের সুসমাচার’ প্রচার করতে পাঠান, সেটার মাধ্যমে দেখা যায়। (মথি ২৪:১৪) এই প্রচার কাজে নেতৃত্ব নেওয়ার মাধ্যমে পালকরা ঈশ্বরের মঙ্গলভাবকে প্রতিফলিত করে। কী তাদেরকে অক্লান্ত প্রচেষ্টা করতে অনুপ্রাণিত করে? যিহোবা এবং তাঁর প্রতিজ্ঞাগুলোর ওপর দৃঢ় বিশ্বাস।—রোমীয় ১০:১০, ১৩, ১৪.

১৬. পালকরা কীভাবে মেষের প্রতি “সৎকর্ম্ম” বা মঙ্গলজনক কাজ করতে পারে?

১৬ প্রচার করার মাধ্যমে ‘সকলের প্রতি সৎকর্ম্ম’ বা মঙ্গলজনক কাজ করার সঙ্গে সঙ্গে পালকদের “বিশেষতঃ যাহারা [তাহাদের] বিশ্বাস-বাটীর পরিজন,” তাদের প্রতিও মঙ্গলজনক কাজ করার দায়িত্ব রয়েছে। (গালাতীয় ৬:১০) একটা যে-উপায়ে তারা সেটা করে থাকে, তা হল উৎসাহমূলক পালকীয় সাক্ষাৎ করার মাধ্যমে। “পালকীয় সাক্ষাৎ করাটা আমি উপভোগ করি,” একজন প্রাচীন বলেন। “এটা আমাকে ভাই ও বোনদের প্রচেষ্টার জন্য তাদেরকে প্রশংসা করার এবং তাদের কঠোর পরিশ্রমকে যে উচ্চমূল্য দেওয়া হয়, সেই বিষয়টা বুঝতে সাহায্য করার সুযোগ দেয়।” মাঝে মাঝে, পালকরা হয়তো বিভিন্ন উপায় সম্বন্ধে পরামর্শ দিতে পারে, যার মাধ্যমে একজন ব্যক্তি যিহোবার প্রতি তার সেবাকে উন্নত করতে পারেন। তা করার মাধ্যমে বিজ্ঞ পালকরা প্রেরিত পৌলকে অনুকরণ করে থাকে। থিষলনীকীর ভাইদের কাছে তিনি যেভাবে আবেদন করেছিলেন, তা বিবেচনা করে দেখুন: “তোমাদের সম্বন্ধে প্রভুতে আমাদের এই দৃঢ় প্রত্যয় আছে যে, আমরা যাহা যাহা আদেশ করি, সেই সকল তোমরা পালন করিতেছ ও করিবে।” (২ থিষলনীকীয় ৩:৪) আস্থার এইরকম অভিব্যক্তি মেষদের উত্তম প্রবণতাগুলোকে জাগিয়ে তোলে আর তাদের জন্য “নেতাদিগের আজ্ঞাগ্রাহী” হওয়াকে সহজ করে তোলে। (ইব্রীয় ১৩:১৭) আপনার সঙ্গে যখন উৎসাহমূলক পালকীয় সাক্ষাৎ করা হয়, তখন এর জন্য উপলব্ধি প্রকাশ করুন না কেন?

মৃদুতার জন্য ইন্দ্রিয়দমন প্রয়োজন

১৭. যিশুর কাছ থেকে পিতর কোন শিক্ষা লাভ করেছিলেন?

১৭ যিশু এমনকি যখন ক্রুদ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন, তখনও মৃদুশীল ছিলেন। (মথি ১১:২৯) তাঁর সঙ্গে যখন বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়েছিল এবং তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, তখন যিশু মৃদুতা এবং যথেষ্ট ইন্দ্রিয়দমন দেখিয়েছিলেন। ঝোঁকের বশে পিতর একটা খড়্গ বের করে প্রতিশোধ নিয়েছিলেন। কিন্তু, যিশু তাকে মনে করিয়ে দিয়েছিলেন: “তুমি কি মনে কর যে আমি আমার পিতার কাছে বিনতি করিলে তিনি এখনই আমার জন্য দ্বাদশ বাহিনী অপেক্ষা অধিক দূত পাঠাইয়া দিবেন না?” (মথি ২৬:৫১-৫৩; যোহন ১৮:১০) পিতর সেই শিক্ষা গ্রহণ করেছিলেন এবং পরবর্তী সময়ে খ্রিস্টানদের মনে করিয়ে দিয়েছিলেন: “খ্রীষ্টও তোমাদের নিমিত্ত দুঃখ ভোগ করিলেন, এ বিষয়ে তোমাদের জন্য এক আদর্শ রাখিয়া গিয়াছেন, যেন তোমরা তাঁহার পদচিহ্নের অনুগমন কর; . . . তিনি নিন্দিত হইলে প্রতিনিন্দা করিতেন না; দুঃখভোগ কালে তর্জ্জন করিতেন না।”—১ পিতর ২:২১-২৩.

১৮, ১৯. (ক) বিশেষভাবে কখন পালকদের মৃদুতা এবং ইন্দ্রিয়দমন দেখাতে হবে? (খ) পরবর্তী সময়ে আমরা কোন প্রশ্নগুলো বিবেচনা করব?

১৮ একইভাবে, কার্যকারী পালকরা এমনকি যখন তাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করা হয়, তখনও মৃদুশীল থাকে। উদাহরণস্বরূপ, মণ্ডলীতে যাদেরকে তারা সাহায্য করতে চায়, তাদের মধ্যে কেউ কেউ হয়তো অনুকূলভাবে সাড়া না-ও দিতে পারে। সাহায্যের প্রয়োজন রয়েছে এমন কেউ যদি আধ্যাত্মিকভাবে দুর্বল বা অসুস্থ হয়ে থাকে, তা হলে তিনি হয়তো তাকে পরামর্শ দেওয়ার পর ‘খড়্গাঘাতের মত অবিবেচনার কথা বলিতে’ পারেন। (হিতোপদেশ ১২:১৮) কিন্তু যিশুর মতো পালকরাও, রূঢ় কথাবার্তা বলে অথবা প্রতিহিংসাপরায়ণ কাজ করে প্রতিশোধ নেয় না। এর পরিবর্তে, তারা আত্মসংযম দেখিয়ে চলে ও সেইসঙ্গে পরদুঃখে দুখিত হয়, যা হয়তো সাহায্যের প্রয়োজন রয়েছে এমন ব্যক্তির জন্য আশীর্বাদস্বরূপ হতে পারে। (১ পিতর ৩:৮, ৯) আপনি কি প্রাচীনদের উদাহরণ থেকে শিক্ষা লাভ করেন এবং যখন পরামর্শ দেওয়া হয়, তখন মৃদুতা এবং ইন্দ্রিয়দমন দেখান?

১৯ কোনো সন্দেহ নেই যে, যিহোবা এবং যিশু সেই হাজার হাজার পালকের কঠোর পরিশ্রমকে মূল্যবান বলে গণ্য করেন, যারা ইচ্ছুকভাবে পৃথিবীব্যাপী পালের যত্ন নেয়। যিহোবা এবং তাঁর পুত্রের সেই হাজার হাজার পরিচারক দাসের প্রতিও গভীর স্নেহ রয়েছে, যারা ‘পবিত্রগণের পরিচর্য্যা করিবার’ জন্য প্রাচীনদের সমর্থন করে। (ইব্রীয় ৬:১০) তা হলে, কেন কিছু বাপ্তাইজিত ভাই এই “উত্তম কার্য্য” পেতে চাওয়ার ক্ষেত্রে ইতস্তত করে। (১ তীমথিয় ৩:১) আর যাদেরকে যিহোবা পালক হিসেবে নিযুক্ত করেছেন, তাদের তিনি কীভাবে প্রশিক্ষণ দেন? পরের প্রবন্ধে আমরা এই প্রশ্নগুলো নিয়ে বিবেচনা করব।

আপনি কি মনে করতে পারেন?

• কিছু উপায় কী, যার মাধ্যমে পালকরা পালের প্রতি প্রেম দেখায়?

• কীভাবে মণ্ডলীর সকলে আনন্দ ও শান্তি বৃদ্ধি করতে পারে?

• পরামর্শ দেওয়ার সময় পালকরা কেন দীর্ঘসহিষ্ণুতা এবং দয়া দেখায়?

• কীভাবে প্রাচীনরা মঙ্গলভাব এবং বিশ্বাস দেখায়?

[১৮ পৃষ্ঠার চিত্র]

মণ্ডলীকে সেবা করার জন্য প্রাচীনরা প্রেমের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়

[১৮ পৃষ্ঠার চিত্রগুলো]

এ ছাড়া, তারা তাদের পরিবারের সঙ্গে আমোদপ্রমোদ . . .

. . . এবং পরিচর্যা উভয় ক্ষেত্রেই সময় কাটায়

[২০ পৃষ্ঠার চিত্র]

প্রাচীনদের মধ্যে উত্তম ভাববিনিময় মণ্ডলীতে আনন্দ ও শান্তি বৃদ্ধি করে

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৫)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার