ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w০০ ৭/১ পৃষ্ঠা ৮-১৩
  • জোর কদমে সুসমাচার প্রচার করুন

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • জোর কদমে সুসমাচার প্রচার করুন
  • ২০০০ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • আমাদের হৃদয়ে “দাহকারী অগ্নি”
  • “পবিত্র আত্মাকে নিভিয়ে ফেলো না”
  • আমরা লোকেদের কাছে ঋণী
  • যিহোবা আমাদের সাহায্য করবেন
  • ‘মঙ্গলের সুসমাচার প্রচার করা’
    ২০০৫ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • “আত্মায় উত্তপ্ত হও”
    ২০০৯ আমাদের রাজ্যের পরিচর্যা
  • আপনি কি আপনার পরিচর্যা পূর্ণরূপে সম্পন্ন করছেন?
    প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০১৯
  • ‘সাহসপূর্ব্বক ঈশ্বরের বাক্য বলুন’
    ২০১০ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
আরও দেখুন
২০০০ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w০০ ৭/১ পৃষ্ঠা ৮-১৩

জোর কদমে সুসমাচার প্রচার করুন

“তোমাদের অন্তর ভক্তিতে ভরা থাকুক। তোমরা প্রভুর কাজে লেগে থাক।”—রোমীয় ১২:১১, প্রেমের বাণী।

১, ২. আমরা খ্রীষ্টানেরা রাজ্যের সুসমাচার প্রচারের কাজকে কীভাবে দেখি?

নতুন চাকরিতে যাওয়ার আগের রাতে একজন যুবক উত্তেজনায় হয়তো ঘুমাতেই পারে না। সারা রাত ধরে সে শুধু পরের দিনটার কথাই ভাবতে থাকে। প্রথম দিন অফিসে গিয়ে কাজ করার জন্য সে একেবারে তৈরি, বস যখন তাকে প্রথম কাজ দেয়, খুবই মন দিয়ে সে তা করতে চায় আর সবচেয়ে ভালভাবে।

২ এই যুবকের মতো আমরা খ্রীষ্টানেরাও যেন সদ্য কাজে যোগ দিয়েছি। আর আমাদের প্রথম কাজও আমরা পেয়েছি যা হল সুসমাচার প্রচারের কাজ। (১ থিষলনীকীয় ২:৪) কিন্তু কেন সুসমাচার প্রচার করা আমাদের প্রথম কাজ? কারণ আমরা চিরকাল বেঁচে থাকব আর তাই যিহোবা আমাদের আরও অনেক কাজ দেবেন। এইভাবে দেখলে আমরা যেন সবেমাত্র যিহোবার সেবা শুরু করেছি। ঈশ্বরের কাছ থেকে পাওয়া এই কাজকে আমরা কীভাবে দেখি? সেই যুবকের মতো আমরাও যতখানি পারি ভালভাবে করতে চাই। জোর কদমে, মনের আনন্দে!

৩. জোর কদমে, মনের আনন্দে প্রচার করার জন্য আমাদের কী করে চলতে হবে?

৩ কিন্তু সবসময় জোর কদমে, মনের আনন্দে প্রচার করা সত্যিই কঠিন ব্যাপার। প্রচার করা ছাড়াও আমাদের অন্য অনেক দায়দায়িত্ব আছে যার জন্য হয়তো আমাদের খাটাখাটনি করতে হয়, ভাবনা পোহাতে হয়। কিন্তু বেশিরভাগ সময়ই আমরা প্রচারে অনেকখানি সময় কাটিয়েও এই দায়দায়িত্বগুলো পালন করি। কিন্তু এর জন্য আমাদের চেষ্টা করে চলতেই হয়। (মার্ক ৮:৩৪) যীশু বলেছিলেন যে আমরা যদি যিহোবার সেবাকে জীবনে প্রথমে রাখতে চাই, তাহলে আমাদের সে জীবন খুব সহজ হবে না। আমাদের সবসময় চেষ্টা করে চলতে হবে।—লূক ১৩:২৪.

৪. জীবিকার চিন্তা ঈশ্বরের কাজে আমাদের কীভাবে বাধা দিতে পারে?

৪ অনেক কিছু একসঙ্গে করতে যাওয়ায় কখনও কখনও আমাদের মনে হতে পারে যে আমরা আর পেরে উঠছি না, আমাদের মাথার ওপর কে যেন এক মস্তবড় বোঝা চাপিয়ে দিয়েছে। ‘জীবিকার চিন্তা’ ঈশ্বরের কাজে আমাদের বাধা দিতে পারে, আমরা গা-ছাড়া ভাব দেখাতে শুরু করতে পারি। (লূক ২১:৩৪, ৩৫; মার্ক ৪:১৮, ১৯) অসিদ্ধ হওয়ায় আমরা হয়তো আমাদের “প্রথম প্রেম” ভুলে যেতে পারি। (প্রকাশিত বাক্য ২:১-৪) ঈশ্বরের জন্য কাজ করাটা যেন আমাদের কাছে একঘেয়ে হয়ে পড়তে পারে। জোর কদমে প্রচার করে চলার জন্য বাইবেল আমাদের উৎসাহ দিয়ে কী বলে?

আমাদের হৃদয়ে “দাহকারী অগ্নি”

৫, ৬. প্রেরিত পৌল প্রচার কাজকে কীভাবে দেখতেন?

৫ যিহোবা আমাদের যে কাজ করতে দিয়েছেন তার সঙ্গে অন্য আর কোন কাজেরই কোন তুলনা হয় না। প্রেরিত পৌল প্রচার কাজকে কীভাবে দেখতেন? তিনি এটাকে এক বিরাট সুযোগ হিসেবে দেখতেন। কিন্তু তিনি নিজেকে এর যোগ্য বলে মনে করতেন না। তিনি বলেছিলেন: “আমি সমস্ত পবিত্রগণের মধ্যে সর্ব্বাপেক্ষা ক্ষুদ্রতম হইলেও আমাকে এই অনুগ্রহ দত্ত হইয়াছে, যাহাতে পরজাতিদের কাছে আমি খ্রীষ্টের সেই ধনের বিষয়ে সুসমাচার প্রচার করি, যে ধনের সন্ধান করিয়া উঠা যায় না; এবং যাহা আদি অবধি সমুদয়ের সৃষ্টিকর্ত্তা ঈশ্বরের কাছে গুপ্ত থাকিয়া আসিয়াছে, সেই নিগূঢ়তত্ত্বের বিধান কি, তাহা প্রকাশ করি।”—ইফিষীয় ৩:৮, ৯.

৬ প্রচার কাজকে পৌল যেভাবে দেখতেন তার থেকে আমরা অনেক কিছু শিখতে পারি। তিনি আমাদের জন্য এক বড় উদাহরণ। রোমীয়দের কাছে লেখা চিঠিতে তিনি বলেছিলেন: “সুখবর প্রচার করতে আমি আগ্রহী।” প্রচার করতে তিনি কখনও লজ্জা পেতেন না। (রোমীয় ১:১৫, ১৬, প্রে.বা.) তিনি প্রচার করার জন্য সবসময় তৈরি ছিলেন আর জোর কদমে প্রচার করতেন।

৭. রোমের খ্রীষ্টানদেরকে পৌল উৎসাহ দিয়ে কী লিখেছিলেন?

৭ প্রেরিত পৌল বুঝেছিলেন যে আগ্রহ নিয়ে প্রচার করা খুবই জরুরি। তাই রোমের খ্রীষ্টানদেরকে উৎসাহ দিয়ে তিনি লিখেছিলেন: “ঈশ্বরের প্রতি সবসময় তোমাদের আগ্রহ থাকুক। তোমাদের অন্তর ভক্তিতে ভরা থাকুক। তোমরা প্রভুর কাজে লেগে থাক।” (রোমীয় ১২:১১ প্রে.বা.) ঈশ্বরের কাজে সবসময় “আগ্রহ” না থাকার মানে হচ্ছে ঢিলেমি দেওয়া। আমরা যদিও বা সত্যি করেই ঢিলেমি দিচ্ছি না কিন্তু তবুও ঈশ্বরের কাজে ঢিলেমি দেওয়ার কিছু লক্ষণ যদি দেখা দেয়, আমাদের সাবধান হওয়া দরকার। আর তক্ষুণি আমাদের তা শেষ করে ফেলার জন্য চেষ্টা করা উচিত।—হিতোপদেশ ২২:৩.

৮. (ক) যিরমিয়ের হৃদয়ে কী “দাহকারী অগ্নি” হয় ও কেন? (খ) যিরমিয়ের উদাহরণ থেকে আমরা কী শিখতে পারি?

৮ ঈশ্বরের কাজে ঢিলেমি দেওয়ার লক্ষণগুলোর মধ্যে একটা হল নিরুৎসাহিত হয়ে পড়া। আমরা যখন নিরুৎসাহিত হই ঈশ্বরের আত্মা আমাদের সাহায্য করে। উদাহরণ হিসেবে আমরা ভাববাদী যিরমিয়ের কথা দেখতে পারি। একসময়ে ভাববাদী যিরমিয় খুব নিরুৎসাহিত হয়ে পড়েছিলেন। আর তিনি ভাববাণী বলার কাজ ছেড়ে দেবেন বলে ঠিক করেছিলেন। যিহোবার জন্য তিনি বলেছিলেন: “তাঁহার বিষয় আর উল্লেখ করিব না, তাঁহার নামে আর কিছু কহিব না।” যিরমিয়ের এই কথা কি দেখায় যে তিনি ঈশ্বরের পথ থেকে একেবারেই দূরে সরে গিয়েছেন? কখনই নয়। বরং আমরা দেখি যে যিহোবার সঙ্গে যিরমিয়ের কাছের সম্পর্ক, যিহোবার জন্য তার ভালবাসা, সত্যের জন্য তার ভালবাসা তাকে ভাববাণী বলে চলতে শক্তি যুগিয়েছিল। তিনি বলেছিলেন: “আমার হৃদয়ে [যিহোবার বাক্য] যেন দাহকারী অগ্নি অস্থিমধ্যে রুদ্ধ হয়; তাহা সহ্য করিতে করিতে আমি ক্লান্ত হইয়া পড়ি, আর তিষ্ঠিতে পারি না।” (যিরমিয় ২০:৯) যিরমিয়ের উদাহরণ থেকে আমরা শিখি যে যিহোবার বিশ্বস্ত সেবকেরাও কখনও কখনও নিরুৎসাহিত হন। কিন্তু যখন তারা তা কাটিয়ে ওঠার জন্য যিহোবার কাছে সাহায্য চান যিহোবা তাদেরকে তাঁর পবিত্র আত্মা দিয়ে সাহায্য করেন। কারণ যিহোবা আমাদের হৃদয়ের অবস্থা জানেন আর তাই তিনি আমাদের সাহায্য করতে চান।—লূক ১১:৯-১৩; প্রেরিত ১৫:৮.

“পবিত্র আত্মাকে নিভিয়ে ফেলো না”

৯. পবিত্র আত্মা কখন একজন খ্রীষ্টানকে সাহায্য করবে না?

৯ প্রেরিত পৌল থিষলনীকীর ভাইদের বলেছিলেন: “পবিত্র আত্মাকে নিভিয়ে ফেলো না।” (১ থিষলনীকীয় ৫:১৯, প্রে.বা.) আমাদের কাজকর্ম ও চিন্তাভাবনা যদি জগতের মতো হয়, তাহলে পবিত্র আত্মা হয়ত আমাদের সাহায্য করবে না। (ইফিষীয় ৪:৩০) আজকে যিহোবা খ্রীষ্টানদের সারা পৃথিবীতে সুসমাচার প্রচার করার কাজ দিয়েছেন। আমরা এই কাজকে একটা বিরাট সুযোগ বলে মনে করি। তবে যখন বাইরের লোকেরা যারা যিহোবাকে জানে না তারা আমাদের প্রচারকে নিচু চোখে দেখেন তখন তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। কিন্তু যখন একজন খ্রীষ্টান জেনেশুনে প্রচার কাজকে অবহেলা করেন তখন তার মানে হল পবিত্র আত্মাকে নিভিয়ে ফেলা আর তাই যিহোবার আত্মা তাকে সাহায্য করবে না।

১০. (ক) লোকেরা যা ভাবে বা বলে তা দেখে আমাদের কী মনে হতে পারে? (খ) কিন্তু ২ করিন্থীয় ২:১৭ পদে এবিষয়ে কী বলা হয়েছে?

১০ লোকেরা হয়তো ভাবতে পারেন যে আমরা বই বিক্রি করি। অনেক লোকেরা আবার বলতে পারেন যে আমরা চাঁদা তোলার জন্য লোকেদের ঘরে ঘরে যাই। কিন্তু লোকেরা এরকম ভাবে বা বলে দেখে আমরা যদি মন খারাপ করি বা লজ্জা পাই, তাহলে আমরা হয়তো প্রচারে যাওয়া কমিয়ে দিতে পারি। তাই এইসব কথা ভেবে মন খারাপ না করে আমরা চিন্তা করতে পারি যে যিহোবা আর যীশু খ্রীষ্ট আমাদের প্রচার কাজকে কোন্‌ চোখে দেখেন। প্রেরিত পৌল বলেছিলেন যে আসলে “আমরা ত সেই অনেকের ন্যায় যে ঈশ্বরের বাক্যে ভাঁজ দিই, তাহা নয়; কিন্তু সরল ভাবে, ঈশ্বরের আদেশক্রমে, আমরা ঈশ্বরের সম্মুখে খ্রীষ্টে কথা কহিতেছি।”—২ করিন্থীয় ২:১৭.

১১. যিরূশালেমে শিষ্যদের ওপর তাড়না করে কেন তাদের থামিয়ে দেওয়া যায়নি আর খ্রীষ্টানদের প্রচার কাজকে কীভাবে দেখা উচিত?

১১ যীশু মারা যাওয়ার কিছু সময় পরেই যিরূশালেমে শিষ্যদের ওপর তাড়না আসে। তাদেরকে প্রচার করতে মানা করা হয় আর ভয় দেখানো হয়। কিন্তু তাদেরকে থামিয়ে দেওয়া যায়নি। কেন? কারণ তাদের বিষয়ে বাইবেল বলে “তাঁহারা সকলেই পবিত্র আত্মায় পরিপূর্ণ হইলেন ও সাহসপূর্ব্বক ঈশ্বরের বাক্য বলিতে থাকিলেন।” (প্রেরিত ৪:১৭, ২১, ৩১) এর কিছু বছর পরে যখন পৌল তীমথিয়কে চিঠি লিখেছিলেন তখন তাতে তিনি খ্রীষ্টানদের প্রচার কাজকে কীভাবে দেখা উচিত সে কথা বলেছিলেন। পৌল লিখেছিলেন: “ঈশ্বর আমাদিগকে ভীরুতার আত্মা দেন নাই, কিন্তু শক্তির, প্রেমের ও সুবুদ্ধির আত্মা দিয়াছেন। অতএব আমাদের প্রভুর সাক্ষ্যের বিষয়ে, এবং তাঁহার বন্দি যে আমি, আমার বিষয়ে তুমি লজ্জিত হইও না, কিন্তু ঈশ্বরের শক্তি অনুসারে সুসমাচারের সহিত ক্লেশভোগ স্বীকার কর।”—২ তীমথিয় ১:৭, ৮.

আমরা লোকেদের কাছে ঋণী

১২. আমাদের প্রচার করার মূল কারণটা কী?

১২ জোর কদমে প্রচার করার জন্য প্রথমেই আমাদের জানা দরকার যে কেন আমরা প্রচার করব। এর মূল কারণটা গীতরচক আমাদের বলেছেন। তিনি গেয়েছিলেন: “তোমার সাধুগণ তোমার [যিহোবার] ধন্যবাদ করে। তাহারা তোমার রাজ্যের গৌরব বর্ণনা করে, তোমার পরাক্রমের কথা বলে, যেন মনুষ্য-সন্তানগণকে জানাইতে পারে তাঁহার পরাক্রমের কার্য্য সকল, এবং তাঁহার রাজ্যের প্রতাপের গৌরব।” (গীতসংহিতা ১৪৫:১০-১২) আমরা সব লোকেদের সামনে যিহোবার প্রশংসা করার জন্য, তাঁর নাম সবাইকে জানানোর জন্য প্রচার করি। তাই যখন এমনকি খুব অল্প লোকেরাও আমাদের কথা শোনে আমাদের প্রচার কাজ যিহোবার প্রশংসা নিয়ে আসে।

১৩. আর কী কারণে আমরা লোকেদের কাছে প্রচার করি?

১৩ এছাড়াও আমরা লোকেদের ভালবাসি বলে তাদের কাছে প্রচার করি আর প্রচার করে আমরা তাদের রক্তের দায় থেকে মুক্ত হই। (যিহিষ্কেল ৩৩:৮; মার্ক ৬:৩৪) জগতের লোকেদের বিষয় বলতে গিয়ে প্রেরিত পৌলও এই একই কথা বলেছিলেন: “সভ্য-অসভ্য, শিক্ষিত-অশিক্ষিত, সবার কাছেই আমি ঋণী।” (রোমীয় ১:১৪, প্রে.বা.) পৌল বুঝতেন যে যেহেতু ঈশ্বর চান “যেন সমুদয় মনুষ্য পরিত্রাণ পায়” তাই তিনি লোকেদের কাছে ঋণী, সুসমাচার প্রচার তাকে করতেই হবে। (১ তীমথিয় ২:৪) আজকে আমরাও লোকেদের ভালবাসি আর প্রেরিত পৌলের মতোই আমরাও বুঝি যে প্রচার করতে আমরা বাধ্য। আমরা প্রচার করলে তবেই লোকেরা রক্ষা পাবে। লোকেদের ভালবেসে যিহোবা তাঁর একমাত্র পুত্রকে পৃথিবীতে পাঠিয়েছিলেন যেন তিনি আমাদের জন্য তাঁর জীবন দেন। (যোহন ৩:১৬) এটা যে কত বড় ত্যাগ তা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। আমরা যিহোবার মত করে লোকেদের ভালবাসব। আর তাই অন্যদের সুসমাচার শোনানোর জন্য আমাদের সময় ও শক্তি দেব।

১৪. বাইবেল প্রায়ই জগৎ সম্বন্ধে কীভাবে কথা বলে?

১৪ আমরা জগতের লোকেদের কাছে সাহসের সঙ্গে প্রচার করি। কারণ আমরা মনে করি যে সমস্ত লোকেরাই ভবিষ্যতে যিহোবার পথে আসতে পারেন। তবে বাইবেল প্রায়ই জগৎ সম্বন্ধে বেশ কড়াভাবেই কথা বলে। প্রেরিত পৌল “জগতের জ্ঞান” ও “জগতের কামনা-বাসনা” এই কথাগুলো বলার সময় “জগৎ” শব্দটা দিয়ে ভাল কোন বিষয় বোঝাননি। (১ করিন্থীয় ৩:১৯; তীত ২:১২, প্রে.বা.) পৌল ইফিষীয়ের খ্রীষ্টানদেরও বলেছিলেন যে যদি তারা “এই জগতের যুগ অনুসারে” চলে, তাহলে তারা আধ্যাত্মিকভাবে “মৃত।” (ইফিষীয় ২:১-৩) প্রেরিত যোহনও এই একই কথা বলেছিলেন, “আমরা জানি যে, আমরা ঈশ্বর হইতে; আর সমস্ত জগৎ সেই পাপাত্মার মধ্যে শুইয়া রহিয়াছে।” (১ যোহন ৫:১৯) কিন্তু জগতের লোকেদের কাছে সাহসের সঙ্গে প্রচার করার মানে নয় যে আমরা প্রচারে গিয়ে লোকেদের সঙ্গে ঝগড়া-লড়াই করব।

১৫. জগতের লোকেদের জন্য আমরা কী ভেবে নেব না আর কেন?

১৫ বাইবেল “জগৎ” সম্বন্ধে বেশ কড়াভাবে কথা বললেও জগৎ বলতে বাইবেল কোন একজন ব্যক্তিকে বোঝায় না বরং সেই লোকেদের বোঝায় যারা ঈশ্বর থেকে দূরে সরে গেছে। তাই আমরা আগে থেকেই ভেবে নেব না যে কত জন লোক আমাদের প্রচার শুনবে। কাউকে ছাগ বলার কোন অধিকার আমাদের নেই। যীশু এসে যখন “ছাগ” থেকে ‘মেষদের’ আলাদা করবেন তখন কী হবে তা আগে থেকে বলার আমরা কেউ নই। (মথি ২৫:৩১-৪৬) বিচার করার ভার যিহোবা আমাদের নয় কিন্তু যীশুকে দিয়েছেন। এছাড়া এমন অনেক ঘটনা ঘটেছে যেখানে দেখা গেছে যে অনেক খারাপ লোকেরাও বাইবেল শোনার পর সত্যে এসেছেন ও বাইবেলের নীতি মেনে চলছেন। জগতের লোকেদের সঙ্গে আমরা হয়তো বন্ধুত্ব করব না ঠিকই কিন্তু তাই বলে যে আমরা তাদের কাছে প্রচার করব না তা নয়। বাইবেল বলে যে কিছু লোকেরা “অনন্ত জীবনের জন্য নিরূপিত।” আর ঠিক সময়ে তারা সত্য শিখবেন। (প্রেরিত ১৩:৪৮) কিন্তু যতক্ষণ পর্যন্ত না আমরা তাদের কাছে প্রচার করছি ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা জানি না যে কারা সত্য শিখতে চান। আর অনেকের কাছে হয়তো বার বার প্রচার করার পরেই তারা সত্য শিখবেন। এই কথা মনে রেখে আমরা লোকেদের সঙ্গে “নম্রভাবে” ও মনে ‘ভক্তি’ নিয়ে প্রচার করি। আমরা আশা রাখি যে তাদের মধ্যে অনেকেই সত্য শিখবেন ও জীবন পাবেন।—২ তীমথিয় ২:২৫; ১ পিতর ৩:১৫, প্রে.বা.

১৬. কেন আমরা অন্যদের শেখানোয় পটু হয়ে উঠব?

১৬ তাই আমরা যদি অন্যদের ভাল করে শেখানোয় পটু হই, তাহলে আমরা জোর কদমে প্রচার করতে পারব। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় যে কেউ যদি ক্রিকেট খেলতে না জানেন, তাহলে ক্রিকেট তার একেবারেই ভাল লাগবে না। কিন্তু যিনি জানেন তার এটা প্রিয় খেলা। সেইরকমই ভাইবোনেরা যখন অন্যদের ভাল করে শেখানোয় পটু হন তখন তারা প্রচার করে আনন্দ পান। (২ তীমথিয় ৪:২; তীত ১:৯) পৌল তীমথিয়কে বলেছিলেন: “তুমি আপনাকে ঈশ্বরের কাছে পরীক্ষাসিদ্ধ লোক দেখাইতে যত্ন কর; এমন কার্য্যকারী হও, যাহার লজ্জা করিবার প্রয়োজন নাই, যে সত্যের বাক্য যথার্থরূপে ব্যবহার করিতে জানে।” (২ তীমথিয় ২:১৫) আমরা কি করে অন্যদের শেখানোয় পটু হয়ে উঠতে পারি?

১৭. বাইবেলের জ্ঞান পাওয়ার জন্য আমরা কীভাবে “লালসা” গড়ে তুলতে পারি আর কীভাবে বাইবেল পড়া আমাদের প্রচার করতে সাহায্য করে?

১৭ অন্যদের শেখানোয় পটু হওয়ার একটা উপায় হল আরও বেশি করে যথার্থ জ্ঞান নেওয়া। প্রেরিত পিতর আমাদের উৎসাহ দিয়ে বলেছিলেন: “নবজাত শিশুদের ন্যায় সেই পারমার্থিক অমিশ্রিত দুগ্ধের লালসা কর, যেন তাহার গুণে পরিত্রাণের জন্য বৃদ্ধি পাও।” (১ পিতর ২:১, ২) সাধারণত যে বাচ্চাদের স্বাস্থ্য ভাল তারা দুধ খেতে ভালবাসে। কিন্তু একজন খ্রীষ্টানকে হয়তো বাইবেলের জ্ঞান পাওয়ার জন্য “লালসা” গড়ে তুলতে হবে। কিন্তু কীভাবে? বাইবেল পড়া ও অধ্যয়ন করার অভ্যাস গড়ে তুলে। (হিতোপদেশ ২:১-৬) অন্যদের ভাল করে শেখানোয় পটু হতে গেলে চেষ্টা ও সংযমের দরকার। বাইবেল পড়ে আমরা যে আনন্দ পাই তা আমাদের প্রচার করতে, আমরা যা শিখেছি জোর কদমে ও ভক্তিতে ভরা অন্তরে তা অন্যদেরকে বলতে সাহায্য করে।

১৮. অন্যদের ভাল করে শেখানোর জন্য মিটিং থেকে আমরা কী শিখি?

১৮ অন্যদের ভাল করে শেখানোর জন্য আমরা আর যেখান থেকে শিখি তা হল আমাদের মিটিং। জনভাষণ ও অন্য মিটিংগুলোতে যখন বাইবেল পড়া ও আলোচনা করা হয় তখন আমাদের বাইবেল খুলে মিলিয়ে নেওয়া উচিত। মিটিংগুলোতে আমাদের মন দেওয়া উচিত আর বিশেষ করে যখন প্রচার করার বিষয়ে শেখানো হয় তখন আরও মন দিয়ে শেখা উচিত। এমনকি যখন নমুনা দেখানো হয় তখনও আমরা সেগুলোকে হালকাভাবে দেখব না ও অন্যমনস্ক হব না। এখানেও আমাদের নিজেকে সংযত রাখার ও মন দিয়ে শোনার দরকার। (১ তীমথিয় ৪:১৬) মিটিং আমাদের বিশ্বাস বাড়ায়, বাইবেলের জ্ঞান পাওয়ার জন্য লালসা গড়ে তোলে আর জোর কদমে প্রচার করতে শেখায়।

যিহোবা আমাদের সাহায্য করবেন

১৯. সবসময়ই প্রচার করা কেন খুব জরুরি?

১৯ যে খ্রীষ্টানদের ‘অন্তর ভক্তিতে ভরা’ ও যারা জোর কদমে প্রচার করতে চান তারা সবসময়ই প্রচার করার সময় করে নেন। (ইফিষীয় ৫:১৫, ১৬) এটা ঠিক যে লোকেদের পরিস্থিতি আলাদা আলাদা, সবাই সমান ঘন্টা প্রচারে দিতে পারেন না। (গালাতীয় ৬:৪, ৫) কিন্তু আমরা কত ঘন্টা প্রচার করছি তার চেয়েও বড় বিষয় হল যে আমরা সব সুযোগগুলোতে প্রচার করছি কিনা। (২ তীমথিয় ৪:১, ২) আমরা যত বেশি প্রচার করব তত বেশি করে বুঝব যে সবসময়ই প্রচার করা কতই না জরুরি। (রোমীয় ১০:১৪, ১৫) এই জগতে যারা কষ্ট পাচ্ছেন ও হা-হুতাশ করছেন তাদের কাছে আমরা যত বেশি যাব তাদের অবস্থা দেখে আমরা দুঃখ পাব আর আমাদের আরও বেশি করে প্রচার করতে ইচ্ছা হবে।—যিহিষ্কেল ৯:৪; রোমীয় ৮:২২.

২০, ২১. (ক) আমাদের এখনও কী কাজ করে চলতে হবে? (খ) যিহোবা আমাদের কীভাবে সাহায্য করবেন?

২০ সুসমাচার প্রচার করার ভার যিহোবা আমাদের দিয়েছেন। যিহোবার ‘সঙ্গে কাজ করার’ সময় আমাদের প্রথম কাজই হচ্ছে প্রচার করা। (১ করিন্থীয় ৩:৬-৯, প্রে.বা.) আমরা মনপ্রাণ দিয়ে যিহোবার দেওয়া এই কাজ যতটা পারা যায় ভালভাবে করতে চাই। (মার্ক ১২:৩০; রোমীয় ১২:১) এখনও জগতে অনেক লোকেরা আছেন যারা সত্য শিখবেন। তাই আমাদের এখনও অনেক কাজ করতে হবে। আর আমরা যখন মনপ্রাণ দিয়ে এই কাজ করার চেষ্টা করি তখন আমরা আশা করতে পারি যে যিহোবা আমাদের সাহায্য করবেন।—২ তীমথিয় ৪:৫.

২১ যিহোবা তাঁর আত্মা দিয়ে আমাদের সাহায্য করেন আর আমাদের কাছে তাঁর “আত্মার খড়গ” বাইবেল আছে। তাঁর সাহায্যে আমরা “সাহস পূর্ব্বক সেই সুসমাচারের নিগূঢ়তত্ত্ব জ্ঞাত করিতে পারি।” (ইফিষীয় ৬:১৭-২০) তাই আসুন আমরা নিজেদেরকে সেইভাবে তৈরি করি যাতে থিষলনীকীর ভাইবোনদের জন্য প্রেরিত পৌল যেমন বলেতে পেরেছিলেন তা আমাদের জন্যও বলা যায়। তিনি বলেছিলেন: “আমাদের সুসমাচার তোমাদের কাছে কেবল বাক্যে নয়, কিন্তু শক্তিতে ও পবিত্র আত্মায় ও অতিশয় নিশ্চয়তায় উপস্থিত হইয়াছিল।” (১ থিষলনীকীয় ১:৫) আসুন আমরা জোর কদমে প্রচার করে চলি!

অল্পকথায় উত্তর দিন

• ‘জীবিকার চিন্তা’ জোর কদমে প্রচার করতে আমাদের কীভাবে বাধা দিতে পারে?

• সুসমাচার প্রচার করার ইচ্ছা কীভাবে আমাদের মধ্যে “দাহকারী অগ্নি” হয়?

• কোন্‌ চিন্তাভাবনাগুলো আমাদের এড়ানো উচিত যা জোর কদমে প্রচার করাকে দমিয়ে দিতে পারে?

• জগতের লোকেদের আমরা কী চোখে দেখব?

• জোর কদমে প্রচার করে চলার জন্য যিহোবা কীভাবে আমাদের সাহায্য করেন?

[৯ পৃষ্ঠার চিত্রগুলো]

খ্রীষ্টানেরা পৌল ও যিরমিয়ের মতো জোর কদমে প্রচার করেন

[১০ পৃষ্ঠার চিত্রগুলো]

আমরা ঈশ্বর ও প্রতিবেশীদের ভালবাসি বলে জোর কদমে প্রচার করি

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৫)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার