-
হনোক এক ভক্তিহীন জগতে থেকেও ঈশ্বরের সঙ্গে গমনাগমন করতেন২০০১ প্রহরীদুর্গ | সেপ্টেম্বর ১৫
-
-
ভক্তিহীনদের বিরুদ্ধে ভবিষ্যদ্বাণী
ভক্তিহীন লোকেদের মাঝে থেকে উচ্চ নৈতিক মানগুলো বজায় রাখা আমাদের পক্ষে সত্যিই খুব কঠিন। কিন্তু, হনোক দুষ্টদের ওপর আপোশহীন বিচারের বার্তা ঘোষণা করেছিলেন। ঈশ্বরের আত্মা দ্বারা পরিচালিত হয়ে হনোক ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন: “দেখ, প্রভু আপন অযুত অযুত পবিত্র লোকের সহিত আসিলেন, যেন সকলের বিচার করেন; আর ভক্তিহীন সকলে আপনাদের যে সকল ভক্তিবিরুদ্ধ কার্য্য দ্বারা ভক্তিহীনতা দেখাইয়াছে, এবং ভক্তিহীন পাপিগণ তাঁহার বিরুদ্ধে যে সকল কঠোর বাক্য কহিয়াছে, তৎপ্রযুক্ত তাহাদিগকে যেন ভর্ৎসনা করেন।”—যিহূদা ১৪, ১৫.
বিপথগামী অবিশ্বাসীদের ওপর এই বার্তা কেমন প্রভাব ফেলেছিল? এটা মনে করা একেবারে যুক্তিযুক্ত যে, হুল ফোটার মতো এইধরনের কথাগুলোর জন্য হনোক তাদের কাছে অপ্রিয় হয়ে গিয়েছিলেন, হয়তো তাকে বিদ্রূপ বা উপহাস করা হয়েছিল এবং হুমকিও দেওয়া হয়েছিল। কেউ কেউ তাকে চির জীবনের জন্য শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু, হনোক ভয় পাননি। হনোক জানতেন যে ধার্মিক ব্যক্তি হেবলের কী হয়েছিল এবং তার মতো হনোকও দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ ছিলেন যে যত বাধাই আসুক না কেন, তিনি ঈশ্বরের সেবা করে যাবেন।
-
-
হনোক এক ভক্তিহীন জগতে থেকেও ঈশ্বরের সঙ্গে গমনাগমন করতেন২০০১ প্রহরীদুর্গ | সেপ্টেম্বর ১৫
-
-
[৩০ পৃষ্ঠার বাক্স]
বাইবেল কি হনোকের বই থেকে উদ্ধৃতি করে?
হনোকের বই হল এমন এক বই যেটা অপ্রামাণিক এবং মিথ্যা, যা বাইবেলের অংশ নয়। মিথ্যেভাবে বলা হয়েছিল যে, এর রচয়িতা হনোক। এটা সম্ভবত সা.কা.পূ. দ্বিতীয় থেকে প্রথম শতাব্দীর মধ্যে লেখা হয়েছিল। আর এটা যিহুদিদের অতিরঞ্জিত ও অনৈতিহাসিক পৌরাণিক কাহিনী ছিল, যেটাতে স্পষ্টতই আদিপুস্তকে দেওয়া হনোকের সংক্ষিপ্ত বিবরণকে বাড়িয়ে বাড়িয়ে লেখা হয়েছে। আর হনোকের বই নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি না করার জন্য ঈশ্বরের প্রেমিকদের জন্য এই প্রমাণই যথেষ্ট।
বাইবেলে একমাত্র যিহূদার পুস্তকে হনোকের ভবিষ্যদ্বাণীমূলক বাক্যগুলো পাওয়া যায়: “দেখ, প্রভু আপন অযুত অযুত পবিত্র লোকের সহিত আসিলেন, যেন সকলের বিচার করেন; আর ভক্তিহীন সকলে আপনাদের যে সকল ভক্তিবিরুদ্ধ কার্য্য দ্বারা ভক্তিহীনতা দেখাইয়াছে, এবং ভক্তিহীন পাপিগণ তাঁহার বিরুদ্ধে যে সকল কঠোর বাক্য কহিয়াছে, তৎপ্রযুক্ত তাহাদিগকে যেন ভর্ৎসনা করেন।” (যিহূদা ১৪, ১৫) অনেক পণ্ডিত ব্যক্তি মনে করেন যে, হনোকের সময়কার ভক্তিহীন লোকেদের জন্য তিনি যে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, তা সরাসরি হনোকের বই থেকে উদ্ধৃতি করা হয়েছে। এটা কি কখনও সম্ভব যে, নির্ভরযোগ্য নয় এমন একটা অপ্রামাণিক বইকে যিহূদা তার উৎস হিসেবে ব্যবহার করবেন?
যিহূদা কীভাবে হনোকের ভবিষ্যদ্বাণী সম্বন্ধে জেনেছিলেন, সেই সম্বন্ধে শাস্ত্রে কোথায় লেখা নেই। তিনি হয়তো পূর্বপুরুষ থেকে পাওয়া এমন এক পুরনো নির্ভরযোগ্য বই থেকে উদ্ধৃতি করেছিলেন, যেটা সম্বন্ধে সবাই-ই জানত। একইভাবে পৌলও এক নির্ভরযোগ্য বই থেকে ফরৌণের রাজপ্রাসাদের দুজন জাদুকর যান্নি ও যাম্ব্রির নাম উল্লেখ করেছিলেন, যারা মোশির বিরোধিতা করেছিল এবং যাদের নাম উল্লেখ করা না থাকলে অজানাই থেকে যেত। হনোকের বইয়ের লেখকরা যদি এইধরনের কোন প্রাচীন উৎস পেতে পারেন, তাহলে যিহূদার ক্ষেত্রে আমরা তা স্বীকার করব না কেন?a—যাত্রাপুস্তক ৭:১১, ২২; ২ তীমথিয় ৩:৮.
তাই ভক্তিহীনদের বিরুদ্ধে হনোকের বার্তা সম্বন্ধে যিহূদা কীভাবে তথ্য পেয়েছিলেন, তা সামান্য একটা ব্যাপার। যিহূদা ঈশ্বরের অনুপ্রেরণায় লিখেছিলেন আর তা-ই প্রমাণ করে যে এটা নির্ভরযোগ্য। (২ তীমথিয় ৩:১৬) ঈশ্বরের পবিত্র আত্মা তাকে সত্য নয়, এমন কোন কিছু লিখতে বাধা দিয়েছিল।
[পাদটীকা]
a শিষ্য স্তিফানও যে তথ্যগুলো জানিয়েছিলেন, তা ইব্রীয় শাস্ত্রাবলীর কোথাও পাওয়া যায় না। এগুলো জানায় যে মোশি মিশরে পড়ালেখা করেছিলেন, মিশর থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় তার বয়স ৪০ বছর ছিল, মিদিয়নে তিনি ৪০ বছর ছিলেন এবং মোশির ব্যবস্থা দেওয়ার সঙ্গে দূতের ভূমিকা ছিল।—প্রেরিত ৭:২২, ২৩, ৩০, ৩৮.
-