ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w৯৯ ১২/১ পৃষ্ঠা ৯-১৪
  • প্রকাশিত বাক্যের বার্তা থেকে “সুসমাচার”

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • প্রকাশিত বাক্যের বার্তা থেকে “সুসমাচার”
  • ১৯৯৯ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • সুসমাচার ঘোষণা করা
  • প্রকাশিত বাক্যে আমাদের জন্য যা আছে
  • মেষশাবক সম্মান পাওয়ার যোগ্য
  • “তাঁহার বিচারাজ্ঞা সকল সত্য ও ন্যায্য”
  • খ্রীষ্টের সহস্র বৎসরের প্রতাপান্বিত রাজত্ব
  • প্রকাশিত বাক্য বইয়ের পাঠকেরা সুখী হোন
    ১৯৯৯ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • পরমদেশ পুনরুদ্ধার করা হয়!
    বাইবেল—এই বইয়ে কোন বার্তা রয়েছে?
  • যে সহস্রাব্দ সত্যিই বিশেষ তার জন্য তৈরি হোন!
    ১৯৯৯ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • পাঠক-পাঠিকাদের থেকে প্রশ্নসকল
    ২০০৪ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
আরও দেখুন
১৯৯৯ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w৯৯ ১২/১ পৃষ্ঠা ৯-১৪

প্রকাশিত বাক্যের বার্তা থেকে “সুসমাচার”

“আমি আর এক দূতকে দেখিলাম, তিনি আকাশের মধ্যপথে উড়িতেছেন, তাঁহার কাছে অনন্তকালীন সুসমাচার আছে, যেন তিনি পৃথিবী-নিবাসীদিগকে . . . সুসমাচার জানান।”—প্রকাশিত বাক্য ১৪:৬.

১. যদিও যিহোবার সাক্ষিরা প্রকাশিত বাক্যের বইয়ে বলা ধ্বংসের কথা বিশ্বাস করেন, তবুও কেন তারা এমন কোন “বিপদজনক দল” নন যারা জগৎ ধ্বংস হয়ে যাবে বলে ভয় দেখান?

যিহোবার সাক্ষিদের নামে দোষ দেওয়া হয় যে তারা জগৎ ধ্বংস হয়ে যাবে বলে লোকেদের ভয় দেখান। কিন্তু এটা ঠিক নয়, যিহোবার সাক্ষিরা এমন কোন “বিপদজনক দল” নন যারা জগৎ ধ্বংস হয়ে যাবে বলে ভয় দেখান বা বিচারের দিন ঘোষণা করেন। কিন্তু যিহোবার সাক্ষিরা বিশ্বাস করেন যে বিচারের দিন আসবে, ধ্বংস হবে যা ঈশ্বরের অনুপ্রাণিত বাক্যের একটা অংশ, প্রকাশিত বাক্যের বইয়ে লেখা আছে। এটা ঠিক, প্রকাশিত বাক্যের বই বলে যে দুষ্টদের ধ্বংস করা হবে। কিন্তু যিহোবার সাক্ষিরা লোকেদের শুধু ধ্বংসের কথাই শোনান না বরং তারা তাদেরকে এক আশার সংবাদও দেন যা বাইবেলে ও বিশেষ করে প্রকাশিত বাক্যে লেখা রয়েছে। তাই তারা সেখানে লেখা ভবিষ্যদ্বাণীর বাক্যের সঙ্গে কিছু যোগ করেন না বা তার থেকে কিছু বাদও দেন না।—প্রকাশিত বাক্য ২২:১৮, ১৯.

সুসমাচার ঘোষণা করা

২. প্রচারে গিয়ে যিহোবার সাক্ষিরা প্রায়ই বাইবেলের কোন্‌ পদগুলো দেখিয়ে থাকেন?

২ যিহোবার সাক্ষিরা তাদের প্রচারে বাইবেল থেকে যীশুর এই কথাগুলো প্রায়ই দেখান: “সর্ব্ব জাতির কাছে সাক্ষ্য দিবার নিমিত্ত রাজ্যের এই সুসমাচার সমুদয় জগতে ঘোষণা করা যাইবে; আর তখন শেষ উপস্থিত হইবে।” (মথি ২৪:১৪, পাদটীকা, NW) “রাজ্যের এই সুসমাচার” আসলে কী? এর উত্তর দিতে গিয়ে অনেক সাক্ষিই প্রকাশিত বাক্যের ২০ ও ২১ অধ্যায় খুলে বিভিন্ন পদ পড়ে দেখাবেন যেখানে খ্রীষ্টের সহস্র বৎসরের রাজত্ব, তাঁর সরকার এবং এক মানব সমাজের কথা লেখা আছে যেখানে মৃত্যু, শোক ও ব্যথা “আর হইবে না।”—প্রকাশিত বাক্য ২০:৬; ২১:১, ৪.

৩. কোন্‌ কাজের সঙ্গে যিহোবার সাক্ষিদের প্রচার কাজের মিল রয়েছে?

৩ এই সুসমাচার ঘোষণা করার সময় যিহোবার সাক্ষিরা একজন প্রতীক স্বর্গদূতের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করেন, যার কাজের কথাও প্রকাশিত বাক্যে বর্ণনা করা আছে। “আমি আর এক দূতকে দেখিলাম, তিনি আকাশের মধ্যপথে উড়িতেছেন, তাঁহার কাছে অনন্তকালীন সুসমাচার আছে, যেন তিনি পৃথিবী-নিবাসীদিগকে, প্রত্যেক জাতি ও বংশ ও ভাষা ও প্রজাবৃন্দকে, সুসমাচার জানান।” (প্রকাশিত বাক্য ১৪:৬) ‘অনন্তকালীন সুসমাচারের’ মধ্যে এই কথাও রয়েছে যে “জগতের রাজ্য [বা কর্তৃত্ব] আমাদের প্রভুর ও তাঁহার খ্রীষ্টের হইল” এবং “পৃথিবীনাশকদিগকে নাশ করিবার” জন্য যিহোবার “সময় উপস্থিত হইল।” (প্রকাশিত বাক্য ১১:১৫, ১৭, ১৮) এটা কি সত্যিই সুসমাচার নয়?

প্রকাশিত বাক্যে আমাদের জন্য যা আছে

৪. (ক) প্রকাশিত বাক্য ১ অধ্যায়ে কোন্‌ মৌলিক সত্যগুলো বলা আছে? (খ) যারা সুসমাচার থেকে উপকার পেতে চান তাদের কী করা দরকার?

৪ প্রকাশিত বাক্য বইয়ের প্রথম অধ্যায় যিহোবাকে “আল্‌ফা এবং ওমিগা, . . . যিনি আছেন ও যিনি ছিলেন ও যিনি আসিতেছেন, যিনি সব্বাশক্তিমান” বলে বর্ণনা করে। আর এটা তাঁর পুত্র, যীশু খ্রীষ্টকে “বিশ্বস্ত সাক্ষী,” “মৃতগণের মধ্যে প্রথমজাত,” এবং “পৃথিবীর রাজাদের কর্ত্তা” বলে। এটা যীশুর বিষয়ে আরও বলে যে তিনি “আমাদিগকে প্রেম করেন, ও নিজ রক্তে আমাদের পাপ হইতে আমাদিগকে মুক্ত করিয়াছেন।” (প্রকাশিত বাক্য ১:৫, ৮) অতএব, শুরু থেকেই প্রকাশিত বাক্য জীবনরক্ষাকারী মৌলিক সত্যগুলো সম্বন্ধে বলে। ‘পৃথিবী-নিবাসীরা’ সুসমাচার থেকে কোন উপকারই পাবেন না যদি কিনা তারা এই সত্য বিষয়গুলো মেনে না নেন যে যিহোবাই সার্বভৌম প্রভু, যীশু আমাদের জন্য নিজেকে বলি দিয়েছিলেন আর যিহোবা তাঁকে পুনরুত্থিত করেছেন ও তিনিই এখন পৃথিবীর ঈশ্বর-নিযুক্ত শাসক।—গীতসংহিতা ২:৬-৮.

৫. প্রকাশিত বাক্য ২ ও ৩ অধ্যায়ে খ্রীষ্টের বিষয়ে কী বলা হয়েছে?

৫ পরের দুটো অধ্যায় বলে যে যীশু খ্রীষ্ট পৃথিবীতে তাঁর শিষ্যদের যে মণ্ডলীগুলো আছে, স্বর্গ থেকে প্রেমের সঙ্গে সেগুলোর দেখাশোনা করেন। প্রথম শতাব্দীতে এশিয়া মাইনরের সপ্ত মণ্ডলীকে লেখা চিঠিতে তাদের যে উৎসাহ ও দৃঢ় পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল তা আজকে আমাদের দিনেও কাজে লাগে। মণ্ডলীগুলোকে যে বার্তা পাঠানো হয়েছিল তা প্রায়ই “আমি জানি তোমার কার্য্য সকল” বা “আমি জানি তোমার ক্লেশ” এইধরনের কথা দিয়ে শুরু করা হয়েছে। (প্রকাশিত বাক্য ২:২, ৯) হ্যাঁ, তাঁর শিষ্যদের মণ্ডলীগুলোতে কী হচ্ছিল না হচ্ছিল তা খ্রীষ্ট একেবারে ঠিক ঠিক জানতেন। তিনি কয়েকটা মণ্ডলীকে তাদের প্রেম, বিশ্বাস, পরিচর্যায় পরিশ্রম, ধৈর্য এবং তাঁর নাম ও বাক্যের প্রতি বিশ্বস্ততার জন্য প্রশংসা করেছিলেন। অন্যগুলোকে তিনি তিরস্কার করেছিলেন কারণ তারা যিহোবা ও তাঁর পুত্রের জন্য তাদের প্রেমকে শীতল হতে দিয়েছিল বা তারা যৌন অনৈতিকতা, প্রতিমাপূজা অথবা ধর্মভ্রষ্টদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিল।

৬. ৪ অধ্যায়ের দর্শন লোকেদের কী বুঝতে সাহায্য করে?

৬ চার অধ্যায়ে যিহোবা ঈশ্বরের স্বর্গীয় সিংহাসনের এক বিস্ময়কর দর্শন রয়েছে। এই অধ্যায়ে যিহোবার উপস্থিতি, তাঁর মহিমা ও শাসন করার জন্য তিনি যে লোকেদের ব্যবহার করবেন তার এক ঝলক দেখতে পাওয়া যায়। নিখিলবিশ্বের প্রধান সিংহাসনকে ঘিরে যে মুকুট পরা অন্য রাজাদের সিংহাসন আছে, তারা যিহোবাকে প্রণাম করেন ও ঘোষণা করেন: “‘হে আমাদের প্রভু ও আমাদের ঈশ্বর, তুমিই প্রতাপ ও সমাদর ও পরাক্রম গ্রহণের যোগ্য; কেননা তুমিই সকলের সৃষ্টি করিয়াছ, এবং তোমার ইচ্ছাহেতু সকলই অস্তিত্বপ্রাপ্ত ও সৃষ্ট হইয়াছে।’”—প্রকাশিত বাক্য ৪:১১.

৭. (ক) পৃথিবী-নিবাসীদিগকে দূত কী করতে বলেন? (খ) যিহোবার সাক্ষিদের বাইবেল শেখানোর একটা মূল উদ্দেশ্য কী?

৭ আজকের দিনের লোকেদের সঙ্গে এর কী কোন সম্পর্ক আছে? অবশ্যই আছে। তারা যদি সহস্র বৎসর রাজত্বের সময় বেঁচে থাকতে চান, তাহলে তাদের অবশ্যই ‘আকাশের মধ্যপথে উড়ন্ত দূত’ যা ঘোষণা করেন তাতে মন দিতে হবে, যিনি বলেন: “ঈশ্বরকে ভয় কর ও তাঁহাকে গৌরব প্রদান কর, কেননা তাঁহার বিচার-সময় উপস্থিত।” (প্রকাশিত বাক্য ১৪:৬, ৭) যিহোবার সাক্ষিদের লোকেদেরকে বাইবেল শেখানোর একটা মূল উদ্দেশ্য হল “পৃথিবী-নিবাসীদিগকে” যিহোবার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া ও তাঁর উপাসনা করতে বলা আর তিনিই যে একমাত্র সৃষ্টিকর্তা তা স্বীকার করতে ও তাঁর ধার্মিক সার্বভৌমত্বকে মেনে নিতে শেখানো।

মেষশাবক সম্মান পাওয়ার যোগ্য

৮. (ক) ৫ ও ৬ অধ্যায়ে খ্রীষ্টের সম্বন্ধে কী বলা হয়েছে? (খ) যারা সুসমাচার শোনেন তারা সবাই এই দর্শন থেকে কী জানতে পারেন?

৮ পরের দুটো অধ্যায় ৫ ও ৬ যীশু খ্রীষ্টকে মেষশাবক হিসেবে বর্ণনা করে, যিনি সপ্ত মুদ্রায় মুদ্রাঙ্কিত একটা পুস্তক খোলার যোগ্য। এই পুস্তক খুলে তিনি আমাদের দিনে কোন্‌ কোন্‌ ঘটনা ঘটবে তা প্রতীক ভাষায় বলেন। (যোহন ১:২৯ পদের সঙ্গে তুলনা করুন।) এই প্রতীক মেষশাবককে স্বর্গবাসীরা বলেন: “‘তুমি ঐ পুস্তক গ্রহণ করিবার ও তাহার মুদ্রা খুলিবার যোগ্য; কেননা তুমি হত হইয়াছ, এবং আপনার রক্ত দ্বারা সমুদয় বংশ ও ভাষা ও জাতি ও লোকবৃন্দ হইতে ঈশ্বরের নিমিত্ত লোকদিগকে ক্রয় করিয়াছ; এবং আমাদের ঈশ্বরের উদ্দেশে তাহাদিগকে রাজ্য ও যাজক করিয়াছ; আর তাহারা পৃথিবীর উপরে রাজত্ব করিবে।’” (প্রকাশিত বাক্য ৫:৯, ১০) এই দর্শন আমাদের জানায় যে খ্রীষ্টের পাতিত রক্তের ওপর ভিত্তি করে সমস্ত জাতি, ভাষা ও বংশের লোকেদের মধ্যে থেকে কিছু লোকেদের তাঁর সঙ্গে স্বর্গে থাকার এবং “পৃথিবীর উপরে রাজত্ব” করার জন্য ডাকা হবে। (প্রকাশিত বাক্য ১:৫, ৬ পদের সঙ্গে তুলনা করুন।) এই লোকেদের একটা নির্দিষ্ট সংখ্যা আছে, যা প্রকাশিত বাক্য পরে আমাদের জানাবে।

৯. ৬ অধ্যায়ে খ্রীষ্ট সম্বন্ধে কী বলা হয়েছে?

৯ এছাড়াও অন্য একটা দর্শনে যীশুর সম্বন্ধে বলা হয়েছে যে তাঁর মাথায় মুকুট রয়েছে ও তিনি সাদা ঘোড়ায় চড়ে আছেন আর “জয় করিতে করিতে ও জয় করিবার জন্য” এগিয়ে চলেছেন। এটা আমাদের জন্য আনন্দের কারণ তিনি প্রকাশিত বাক্যের বাকি তিনজন প্রতীক অশ্বারোহীর মন্দ শক্তিকে শেষ করে দিয়ে তাদের ওপর জয় লাভ করবেন, যাদের প্রচণ্ড বেগে ছুটে চলা ১৯১৪ সাল থেকে মানুষের জন্য শোচনীয় যুদ্ধ, দুর্ভিক্ষ ও মৃত্যু নিয়ে এসেছে। (প্রকাশিত বাক্য ৬:১-৮) মানবজাতির পরিত্রাণ এবং যিহোবার চমৎকার উদ্দেশ্যগুলো পূর্ণ করায় ঈশ্বরের মেষশাবক, যীশু খ্রীষ্টের যে অদ্বিতীয় ভূমিকা রয়েছে তা যিহোবার সাক্ষিরা বাইবেল থেকে লোকেদের যে শিক্ষা দেয় তার একটা মূল বিষয়।

১০. (ক) ৭ অধ্যায়ে কোন্‌ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেওয়া হয়েছে? (খ) যারা রাজ্য পাবেন তাদের সম্বন্ধে খ্রীষ্ট কী বলেছিলেন?

১০ ৭ অধ্যায়ে সত্যিই সুসমাচার রয়েছে। একমাত্র প্রকাশিত বাক্যেই আমরা তাদের সংখ্যা পাই যাদের যীশু “ক্ষুদ্র মেষপাল” বলেছিলেন ও যাদেরকে মেষশাবকের পিতা রাজ্য দেন। (লূক ১২:৩২; ২২:২৮-৩০) যিহোবা ঈশ্বর তাদেরকে তাঁর পবিত্র আত্মার মাধ্যমে মুদ্রাঙ্কিত করেছেন। (২ করিন্থীয় ১:২১, ২২) প্রেরিত যোহন, যাকে প্রকাশিত বাক্য দেওয়া হয়েছিল, তিনি সাক্ষ্য দেন: “আমি ঐ মুদ্রাঙ্কিত লোকদের সংখ্যা শুনিলাম . . . এক লক্ষ চুয়াল্লিশ সহস্র।” (প্রকাশিত বাক্য ৭:৪) পরের একটা অধ্যায়ে বলা হয়েছে যে এই সমস্ত লোকেদের ‘মনুষ্যদের মধ্য হইতে ক্রয়’ করা হয়েছে যাতে করে তারা স্বর্গীয় সিয়োন পর্বতে মেষশাবকের সঙ্গে রাজত্ব করেন। (প্রকাশিত বাক্য ১৪:১-৪) যদিও খ্রীষ্টীয়জগতের গির্জাগুলো এই সংখ্যা সম্বন্ধে অস্পষ্ট ও আজগুবি ব্যাখ্যা দেয় কিন্তু একজন বাইবেল পণ্ডিত ই. ডব্লিউ. বুলিংগার বলেন: “বিষয়টা খুবই পরিষ্কার: এই একই অধ্যায়ে নির্দিষ্ট এক সংখ্যার সঙ্গে অনির্দিষ্ট একটা সংখ্যার পার্থক্য দেখানো হয়েছে।”

১১. (ক) ৭ অধ্যায়ে কোন্‌ সুসমাচার পাওয়া যায়? (খ) ‘বিরাট জনতার’ সদস্যদের জন্য ভবিষ্যতে কী রয়েছে?

১১ বুলিংগার কোন্‌ অনির্দিষ্ট সংখ্যার কথা বলেছিলেন? ৯ পদে প্রেরিত যোহন লিখেছিলেন: “ইহার পরে আমি দৃষ্টি করিলাম, আর দেখ, প্রত্যেক জাতির ও বংশের ও প্রজাবৃন্দের ও ভাষার বিস্তর লোক [বিরাট জনতা], তাহা গণনা করিতে সমর্থ কেহ ছিল না।” (প্রকাশিত বাক্য ৭:৯) এই বিরাট জনতা কারা, ঈশ্বরের সামনে এখন তাদের কোন্‌ স্থান রয়েছে আর ভবিষ্যতেই বা তাদের জন্য কী রয়েছে? প্রকাশিত বাক্য আমাদের যে উত্তর দেয় তা পৃথিবীনিবাসীদের জন্য সুসমাচার। আমরা পড়ি: “ইহারা সেই লোক, যাহারা সেই মহাক্লেশের মধ্য হইতে আসিয়াছে, এবং মেষশাবকের রক্তে আপন আপন বস্ত্র ধৌত করিয়াছে, ও শুক্লবর্ণ করিয়াছে।” খ্রীষ্টের পাতিত রক্তে বিশ্বাস করে তারা “মহাক্লেশের” সময় রক্ষা পাবেন। খ্রীষ্ট “ইহাদিগকে . . . জীবন-জলের উনুইয়ের নিকটে গমন করাইবেন, আর ঈশ্বর ইহাদের সমস্ত নেত্রজল মুছাইয়া দিবেন।” (প্রকাশিত বাক্য ৭:১৪-১৭) হ্যাঁ, আজকে যে লাখ লাখ লোক জীবিত আছেন তারা বিরাট জনতার অংশ হতে পারেন, সেই লোকেদের অংশ যারা আজকের দুষ্ট বিধিব্যবস্থার ধ্বংস থেকে রক্ষা পাবেন। এরপর তারা রাজা যীশু খ্রীষ্টের সহস্র বৎসর রাজত্বের প্রজা হবেন আর তিনি তাদেরকে এই পৃথিবীতে অনন্ত জীবন দেবেন। এটা কি একটা সুসমাচার নয়?

“তাঁহার বিচারাজ্ঞা সকল সত্য ও ন্যায্য”

১২, ১৩. (ক) ৮ থেকে ১৯ অধ্যায়ের মধ্যে কী রয়েছে? (খ) এই ভবিষ্যদ্বাণীগুলো পড়ে কেন ঈশ্বরকে বিশ্বাস করেন এমন লোকেদের ভয় পাওয়া উচিত নয়?

১২ বিশেষ করে ৮ থেকে ১৯ অধ্যায়ে যা বলা হয়েছে সেই কারণে প্রকাশিত বাক্যকে লোকেরা এমন একটা বই বলে মনে করে যা খুবই ভয়াবহ ধ্বংস সম্বন্ধে ভাববাণী করে। এতে শয়তানের জগতের বিভিন্ন সংগঠনের বিরুদ্ধে কঠিন বিচারের বার্তা (তুরী ধ্বনি, আঘাত এবং ঈশ্বরের রোষের বাটির দ্বারা চিত্রিত) রয়েছে। সবচেয়ে প্রথমে এই বিচার মিথ্যা ধর্মের (“মহতী বাবিল”) ওপর এবং পরে পৃথিবীর সমস্ত অধার্মিক রাজনৈতিক ব্যবস্থার ওপর আসবে যাকে বন্য পশু দিয়ে চিত্রিত করা হয়েছে।—প্রকাশিত বাক্য ১৩:১, ২; ১৭:৫-৭, ১৫, ১৬.a

১৩ এই অধ্যায়গুলোতে বলা হয়েছে যে কীভাবে স্বর্গ পরিষ্কার করা হয়েছে আর শয়তান ও তার মন্দ দূতদের স্বর্গ থেকে পৃথিবীতে ফেলে দেওয়া হয়েছে। আর এই পদগুলো ১৯১৪ সালের পর থেকে পৃথিবীতে নজিরবিহীন দুঃখকষ্ট থাকার কারণ সম্বন্ধে বলে। (প্রকাশিত বাক্য ১২:৭-১২) এছাড়াও এগুলো রূপক ভাষায় পৃথিবীতে শয়তানের দুষ্ট বিধিব্যবস্থার ধ্বংস বর্ণনা করে। (প্রকাশিত বাক্য ১৯:১৯-২১) এই ঘটনাগুলো পড়ে, ঈশ্বরকে বিশ্বাস করেন এমন লোকেদের কি ভয় পাওয়া উচিত? একেবারেই না কারণ ঈশ্বর যখন এই বিচার নিয়ে আসেন তখন স্বর্গ থেকে এক মহারব শোনা যায়: “হাল্লিলূয়া, পরিত্রাণ ও প্রতাপ ও পরাক্রম আমাদের ঈশ্বরেরই; কেননা তাঁহার বিচারাজ্ঞা সকল সত্য ও ন্যায্য।”—প্রকাশিত বাক্য ১৯:১, ২.

১৪, ১৫. (ক) কী করে ন্যায্যভাবে আজকের এই দুষ্ট ব্যবস্থার শেষ নিয়ে আসা হবে? (খ) প্রকাশিত বাক্য বইয়ের এই অংশ পড়া কেন ঈশ্বরে বিশ্বাস করেন এমন লোকেদের জন্য আনন্দের কারণ হবে?

১৪ যারা পৃথিবীকে ধ্বংস করছে তাদের হাত থেকে পৃথিবীকে উদ্ধার না করে যিহোবা ধার্মিক ব্যবস্থা আনবেন না। (প্রকাশিত বাক্য ১১:১৭, ১৮; ১৯:১১-১৬; ২০:১, ২) কিন্তু, কোন মানুষ কিংবা সরকার এটা করতে পারে না কারণ তা করার অধিকার ও ক্ষমতা তাদের নেই। শুধু যিহোবা এবং তাঁর নিযুক্ত রাজা ও বিচারক খ্রীষ্ট যীশু ন্যায্যভাবে এটা করতে পারেন।—২ থিষলনীকীয় ১:৬-৯.

১৫ প্রকাশিত বাক্যের বইয়ে যে বিষয়টা একেবারে পরিষ্কার তা হল, যিহোবা বর্তমান দুষ্ট ব্যবস্থার শেষ নিয়ে আসবেন বলে ঠিক করেছেন। আর এটা সেই পুরুষ ও নারীদের জন্য আনন্দের কারণ হবে যারা “সমস্ত ঘৃণার্হ কার্য্যের বিষয়ে . . . দীর্ঘনিঃশ্বাস ত্যাগ করে ও কোঁকায়।” (যিহিষ্কেল ৯:৪) আর এই কারণে তাদের সুসমাচার ঘোষণাকারী দূতের কথায় কান দেওয়াও খুবই জরুরি, যিনি ঘোষণা করছেন: “ঈশ্বরকে ভয় কর . . . কেননা তাঁহার বিচার-সময় উপস্থিত; যিনি স্বর্গ, পৃথিবী . . . উৎপন্ন করিয়াছেন।” (প্রকাশিত বাক্য ১৪:৭) এই লোকেরা যেন যিহোবার সাক্ষিদের, “যাহারা ঈশ্বরের আজ্ঞা পালন ও যীশুর সাক্ষ্য ধারণ করে” তাদের পাশাপাশি থেকে যিহোবার উপাসনা ও সেবা করেন।—প্রকাশিত বাক্য ১২:১৭.

খ্রীষ্টের সহস্র বৎসরের প্রতাপান্বিত রাজত্ব

১৬. (ক) কেন খ্রীষ্টীয়জগতের গির্জাগুলো সহস্র বৎসরের আশাকে প্রত্যাখ্যান করেছে? (খ) কেন যিহোবার সাক্ষিরা বিশ্বাস করেন যে আদর্শ প্রার্থনায় বলা কথাগুলো পূর্ণ হবে?

১৬ প্রকাশিত বাক্যের ২০ থেকে ২২ অধ্যায়ে খ্রীষ্টের সহস্র বৎসরের রাজত্ব যে এক খুশির সময় হবে সে বিষয়ে প্রমাণ দেওয়া হয়েছে। পুরো বাইবেলের শুধু এই অংশই বলে যে খ্রীষ্টের সহস্র বৎসরের রাজত্বের পরে স্বর্গে ও পৃথিবীতে অনন্তকালের জন্য সুখ আসবে। খ্রীষ্টীয়জগতের গির্জাগুলো সহস্র বৎসরের আশাকে প্রত্যাখ্যান করেছে। যেহেতু গির্জা শেখায় যে ধার্মিকেরা স্বর্গে যাবেন ও দুষ্টেরা নরকে যাবে, তাই তাদের মতে এই পৃথিবীতে পরমদেশ হওয়ার কোন দরকারই নেই। তাই আদর্শ প্রার্থনায় ঈশ্বরের “ইচ্ছা যেমন স্বর্গে তেমনই পৃথিবীতেও পূর্ণ” হোক বলে যা বলা আছে, খ্রীষ্টীয়জগতের গির্জাগুলোর কাছে তার কোন মূল্য নেই। (মথি ৬:১০, নিউ ইন্টারন্যাশনাল ভারসন) কিন্তু যিহোবার সাক্ষিদের বেলায় তা নয়। তারা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন যে যিহোবা ঈশ্বর পৃথিবীকে “অনর্থক” সৃষ্টি করেননি বরং “বাসস্থানার্থে” নির্মাণ করেছেন। (যিশাইয় ৪৫:১২, ১৮) আর এর থেকে বোঝা যায় যে প্রাচীনকালের ভবিষ্যদ্বাণী, আদর্শ প্রার্থনা এবং প্রকাশিত বাক্যে দেওয়া সহস্র বৎসরের রাজত্ব সব একটা আরেকটার সঙ্গে মিলে যায়। খ্রীষ্ট তাঁর সহস্র বৎসর রাজত্বের সময় খেয়াল রাখবেন যেন যিহোবার ইচ্ছা স্বর্গের মতো পৃথিবীতেও পূর্ণ হয়।

১৭. কী দেখায় যে “সহস্র বৎসর” প্রকৃতই এক হাজার বছর, কোন অনির্দিষ্ট সময়কাল নয়?

১৭ প্রকাশিত বাক্য ২০ অধ্যায়ের প্রথম সাতটা পদে “সহস্র বৎসর” কথাটা ছয়বার পাওয়া যায়। কিন্তু লক্ষ্য করার মতো বিষয় হল যে এখানে সহস্র বৎসর কথাটার আগে মোট চারবার “ঐ” এবং “সেই” শব্দগুলো ব্যবহার করা হয়েছে, যা দেখায় যে এটা প্রকৃতই এক হাজার বছর, অনির্দিষ্ট কোন সময়কাল নয়, যেমন খ্রীষ্টীয়জগতের অনেক পণ্ডিত ব্যক্তিরা আমাদের বিশ্বাস করানোর চেষ্টা করেন। এই সহস্র বৎসরে কী কী ঘটবে? প্রথমেই শয়তানকে ওই পুরো সময়ের জন্য নিষ্ক্রিয় করা হবে। (প্রকাশিত বাক্য ২০:১-৩. ইব্রীয় ২:১৪ পদের সঙ্গে তুলনা করুন।) এটা আমাদের জন্য সত্যিই এক সুসমাচার!

১৮. (ক) সহস্র বৎসরকে কেন বিচারের একটা “দিন” বলা যেতে পারে? (খ) সহস্র বৎসরের শেষে কী হবে?

১৮ যেহেতু যারা “সহস্র বৎসর খ্রীষ্টের সহিত রাজত্ব” করবেন তাদেরকে “বিচার করিবার ভার” দেওয়া হয়েছে, তাই এই সময়কাল বিচারের ‘দিনও’ হবে। (প্রকাশিত বাক্য ২০:৪, ৬. প্রেরিত ১৭:৩১; ২ পিতর ৩:৮ পদগুলোর সঙ্গে তুলনা করুন।) মৃতেরা পুনরুত্থিত হবে এবং সেখানে ‘মহাক্লেশ’ থেকে রক্ষাপ্রাপ্ত লোকেরাও থাকবে আর তারা সবাই তখন তাদের নিজেদের কাজ বা আচরণ অনুযায়ী বিচারিত হবে। (প্রকাশিত বাক্য ২০:১২, ১৩) সহস্র বৎসরের শেষে, মানবজাতিকে শেষবারের মতো পরীক্ষা করার জন্য শয়তানকে অল্প সময়ের জন্য ছেড়ে দেওয়া হবে আর তারপর তাকে ও তার মন্দ দূতেদের এবং পৃথিবীতে যারা তাকে অনুসরণ করবে সেইসব বিদ্রোহীদের চিরকালের মতো ধ্বংস করা হবে। (প্রকাশিত বাক্য ২০:৭-১০) যে সব মানুষ ওই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবে তাদের নাম চিরকালের জন্য “জীবনপুস্তকে” লেখা হবে আর তারা চির সুখের এক জীবন পাবে এবং এক পরমদেশ পৃথিবীতে যিহোবার সেবা ও উপাসনা করবে।—প্রকাশিত বাক্য ২০:১৪, ১৫; গীতসংহিতা ৩৭:৯, ২৯; যিশাইয় ৬৬:২২, ২৩.

১৯. (ক) কেন আমরা নিশ্চিত হতে পারি যে প্রকাশিত বাক্যের বইয়ে দেওয়া চমৎকার প্রতিজ্ঞাগুলো পূর্ণ হবেই হবে? (খ) পরের প্রবন্ধে কী আলোচনা করা হবে?

১৯ প্রকাশিত বাক্যের পুস্তকে এই সুসমাচারগুলো রয়েছে। এগুলো মানুষের মিথ্যা প্রতিজ্ঞাগুলোর মতো নয়। প্রেরিত যোহন লিখেছিলেন: “যিনি সিংহাসনে বসিয়া আছেন, তিনি কহিলেন, দেখ, আমি সকলই নূতন করিতেছি। পরে তিনি কহিলেন, লিখ, কেননা এ সকল কথা বিশ্বসনীয় ও সত্য।” (প্রকাশিত বাক্য ২১:৫) এই সুসমাচারগুলোকে পূর্ণ হতে দেখার জন্য আমাদের কী করতে হবে? যারা ঈশ্বরকে খুশি করতে চান তাদের জন্য প্রকাশিত বাক্য বইয়ে অনেক পরামর্শ রয়েছে। এই পরামর্শগুলো মেনে চললে আমরা এখন এবং চিরকালের জন্য অনেক অনেক সুখী হতে পারব, যেমন পরের প্রবন্ধে আলোচনা করা হবে।

[পাদটীকাগুলো]

a প্রকাশিত বাক্য বইয়ের পুরো ব্যাখ্যার জন্য ওয়াচটাওয়ার বাইবেল অ্যান্ড ট্র্যাক্ট সোসাইটি দ্বারা ১৯৮৮ সালে প্রকাশিত, প্রকাশিত বাক্য—এর মহান পরিপূর্ণতা সন্নিকট! (ইংরেজি) বইটা দেখুন।

পুনরালোচনার বিষয়বস্তু

◻ প্রকাশিত বাক্য ৪ থেকে ৬ অধ্যায়ে কোন্‌ মৌলিক সত্যগুলো রয়েছে যার জন্য বলা যেতে পারে যে এটা সত্যিই এক জরুরি সুসমাচার?

◻ প্রকাশিত বাক্য ৭ অধ্যায়ে কোন্‌ সুসমাচার পাওয়া যায়?

◻ প্রকাশিত বাক্যে দেওয়া বিচারের বার্তা পড়ে ঈশ্বরকে বিশ্বাস করেন এমন লোকেদের কেন ভয় পাওয়া উচিত নয়?

◻ কোন্‌ কোন্‌ দিক দিয়ে সহস্র বৎসরের রাজত্ব বিচারের একটা “দিন”?

[১০ পৃষ্ঠার চিত্র]

রাজা যীশু খ্রীষ্ট পৃথিবী থেকে যুদ্ধ, দুর্ভিক্ষ ও মৃত্যু সম্পূর্ণভাবে সরিয়ে দেবেন

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৫)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার