জীবন ও পরিচর্যা সভার জন্য অধ্যয়ন পুস্তিকা-র রেফারেন্স
ফেব্রুয়ারি ৫-১১
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | মথি ১২-১৩
“গম ও শ্যামাঘাসের দৃষ্টান্ত”
প্রহরীদুর্গ ১৩ ৭/১৫ ৯-১০ অনু. ২-৩
‘দেখ, আমিই প্রতিদিন তোমাদের সঙ্গে সঙ্গে আছি’
২ সেই কৃষকের ক্ষেত্রে যে-ঘটনাগুলো ঘটেছিল, সেগুলো দেখায় যে, কীভাবে এবং কখন যিশু মানবজাতির মধ্যে থেকে সমস্ত গম শ্রেণিকে—তাঁর রাজ্যে তাঁর সঙ্গে শাসন করবে এমন অভিষিক্ত খ্রিস্টানদের—একত্রিত করবেন। বপন করার কাজ শুরু হয়েছিল ৩৩ খ্রিস্টাব্দে পঞ্চাশত্তমীর দিনে। সংগ্রহ করার কাজ সেই সময়ে সম্পূর্ণ হবে, যখন এই বিধিব্যবস্থার শেষকালে বেঁচে থাকা অভিষিক্ত ব্যক্তিরা তাদের চূড়ান্ত মুদ্রাঙ্কন লাভ করবে আর এরপর তাদেরকে স্বর্গে নিয়ে যাওয়া হবে। (মথি ২৪:৩১; প্রকা. ৭:১-৪) একটা পর্বতের উঁচু স্থান থেকে একজন ব্যক্তি যেমন তার চারপাশের সমস্ত চিত্র দেখতে পারেন, তেমনই এই নীতিগল্প আমাদেরকে সেই ঘটনাগুলোর এক বিশদ চিত্র প্রদান করে, যেগুলো সেই সময় থেকে প্রায় ২,০০০ বছরের একটা সময়কালের মধ্যে ঘটবে। আমাদের দৃষ্টিকোণ থেকে, রাজ্যের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত কোন ঘটনাগুলো আমরা জানতে পারি? এই নীতিগল্প বপন করার, বৃদ্ধি পাওয়ার এবং শস্যচ্ছেদনের সময় সম্বন্ধে বর্ণনা করে। এই প্রবন্ধ মূলত শস্যচ্ছেদনের সময়ের উপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করবে।
যিশুর সতর্ক যত্নাধীনে
৩ দ্বিতীয় শতাব্দীর শুরুর দিকে, ‘শ্যামাঘাস প্রকাশ হইয়া পড়িয়াছিল,’ যখন নকল খ্রিস্টানরা জগৎরূপ ক্ষেত্রে দৃশ্যত হয়েছিল। (মথি ১৩:২৬) চতুর্থ শতাব্দীর মধ্যে, অভিষিক্ত খ্রিস্টানদের তুলনায় শ্যামাঘাসতুল্য খ্রিস্টানদের সংখ্যা অধিক হয়ে গিয়েছিল। স্মরণ করে দেখুন যে, নীতিগল্পে দাসেরা তাদের প্রভুর কাছে শ্যামাঘাস উপড়ে ফেলার অনুমতি চেয়েছিল। (মথি ১৩:২৮) প্রভু কেমন প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিলেন?
‘দেখ, আমিই প্রতিদিন তোমাদের সঙ্গে সঙ্গে আছি’
৪ গম এবং শ্যামাঘাস সম্বন্ধে বর্ণনা করতে গিয়ে যিশু বলেছিলেন: “শস্যচ্ছেদনের সময় পর্য্যন্ত উভয়কে একত্র বাড়িতে দেও।” এই আদেশ দেখায় যে, প্রথম শতাব্দী থেকে শুরু করে বর্তমান দিন পর্যন্ত সবসময়ই পৃথিবীতে গমতুল্য কিছু অভিষিক্ত খ্রিস্টান রয়েছে। এই উপসংহারকে, পরবর্তী সময়ে তাঁর শিষ্যদের প্রতি বলা যিশুর এই কথাগুলোর মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়েছিল: “আমিই যুগান্ত পর্য্যন্ত প্রতিদিন তোমাদের সঙ্গে সঙ্গে আছি।” (মথি ২৮:২০) তাই, অভিষিক্ত খ্রিস্টানরা শেষ আসার আগে পর্যন্ত প্রতিদিন যিশুর দ্বারা সুরক্ষিত থাকবে। কিন্তু, যেহেতু তারা শ্যামাঘাসতুল্য খ্রিস্টানদের দ্বারা আবৃত হয়ে গিয়েছিল, তাই আমরা নিশ্চিত করে বলতে পারি না যে, সেই দীর্ঘ সময়কালে কারা গম শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত ছিল। তবে, শস্যচ্ছেদনের সময় শুরু হওয়ার কয়েক দশক আগে, গম শ্রেণি আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল। কীভাবে?
প্রহরীদুর্গ ১৩ ৭/১৫ ১২ অনু. ১০-১২
‘দেখ, আমিই প্রতিদিন তোমাদের সঙ্গে সঙ্গে আছি’
১০ প্রথমটা হল, শ্যামাঘাস সংগ্রহ করা। যিশু বলেন: “ছেদনের সময়ে আমি ছেদকদিগকে বলিব, তোমরা প্রথমে শ্যামাঘাস সংগ্রহ করিয়া বোঝা বোঝা বাঁধিয়া রাখ।” ১৯১৪ সালের পর, দূতেরা অভিষিক্ত “রাজ্যের সন্তানগণ” থেকে শ্যামাঘাসতুল্য খ্রিস্টানদেরকে পৃথক করার মাধ্যমে “সংগ্রহ” করতে শুরু করে।—মথি ১৩:৩০, ৩৮, ৪১.
১১ সংগ্রহ করার কাজ এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দুটো দলের মধ্যে পার্থক্য আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল। (প্রকা. ১৮:১, ৪) ১৯১৯ সালের মধ্যে, এটা স্পষ্ট হয়ে ওঠে যে, মহতী বাবিলের পতন ঘটেছে। বিশেষভাবে কোন বিষয়টা সত্য খ্রিস্টানদেরকে নকল খ্রিস্টানদের থেকে পৃথক করেছিল? প্রচার কাজ। যারা বাইবেল ছাত্রদের মধ্যে নেতৃত্ব দিচ্ছিল, তারা রাজ্যের প্রচার কাজে ব্যক্তিগতভাবে অংশ নেওয়ার গুরুত্বের উপর জোর দিতে শুরু করেছিল। উদাহরণ স্বরূপ, ১৯১৯ সালে প্রকাশিত যাদেরকে আস্থা সহকারে এই কাজ দেওয়া হয়েছে (ইংরেজি) শিরোনামের প্যামফ্লেটের মধ্যে সমস্ত অভিষিক্ত খ্রিস্টানকে ঘরে ঘরে প্রচার করার জন্য সুপারিশ করা হয়েছিল। সেখানে বলা ছিল: “কাজটা অনেক বিশাল বলে মনে হয় কিন্তু এটা প্রভুর কাজ এবং তাঁর শক্তির মাধ্যমেই আমরা তা সম্পাদন করতে পারব। আপনাদের এতে অংশ নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।” এতে কেমন সাড়া পাওয়া গিয়েছিল? ১৯২২ সালের প্রহরীদুর্গ (ইংরেজি) পত্রিকায় বলা হয়েছিল যে, সেই সময়ের পর থেকে বাইবেল ছাত্ররা তাদের প্রচার কাজে আরও তৎপর হয়ে উঠেছে। অল্পসময়ের মধ্যেই, ঘরে ঘরে প্রচার কাজ সেই বিশ্বস্ত খ্রিস্টানদের শনাক্তকারী চিহ্ন হয়ে ওঠে—যেমনটা এখনও আছে।
১২ দ্বিতীয়টা হল, গম সংগ্রহ করা। যিশু তাঁর দূতদের আদেশ দিয়েছিলেন: “গোম আমার গোলায় সংগ্রহ কর।” (মথি ১৩:৩০) ১৯১৯ সাল থেকে, অভিষিক্ত খ্রিস্টানদেরকে পুনর্স্থাপিত খ্রিস্টীয় মণ্ডলীতে সংগ্রহ করা হয়েছে। যে-অভিষিক্ত খ্রিস্টানরা এই বিধিব্যবস্থার শেষকালে জীবিত থাকবে, তাদেরকে সেই সময় চূড়ান্তভাবে সংগ্রহ করা হবে, যখন তারা তাদের স্বর্গীয় পুরস্কার লাভ করবে।—দানি. ৭:১৮, ২২, ২৭.
আধ্যাত্মিক রত্ন খুঁজে বের করুন
nwtsty স্টাডি নোট—মথি ১২:২০
সধূম সলতে: লোকেরা ঘরে সাধারণত যে-প্রদীপ ব্যবহার করত, সেটা ছিল একটা ছোটো মাটির পাত্র আর এতে জলপাই তেল ভরা হতো। শণের একটা সলতের সাহায্যে সেই তেল উপরে উঠে আসত, যাতে আগুন জ্বলতে পারে। “সধূম সলতে” হিসেবে অনুবাদিত গ্রিক অভিব্যক্তিটা এমন সলতেকে বোঝাতে পারে যেটা থেকে ধোঁয়া উঠছে, কারণ সেটাতে আগুনের আভা দেখা গেলেও, তা নিভু নিভু পর্যায়ে আছে অথবা পুরোপুরি নিভে গিয়েছে। যিশাইয় ৪২:৩ পদ যিশুর সমবেদনা সম্বন্ধে ভবিষ্যদ্বাণী করে; তিনি কখনো দরিদ্র ও নিপীড়িত ব্যক্তিদের শেষ আশার আলো নিভিয়ে দেবেন না।
আপনি কি জানতেন?
প্রাচীন কালে একজন ব্যক্তি আরেকজন ব্যক্তির জমিতে শ্যামাঘাসের বীজ বপন করে চলে যেত। এই ঘটনা কি সত্যিই বিশ্বাসযোগ্য?
মথি ১৩:২৪-২৬ পদে যিশু বলেছিলেন: “স্বর্গ-রাজ্যকে এমন এক ব্যক্তির সহিত তুলনা করা যায়, যিনি আপন ক্ষেত্রে ভাল বীজ বপন করিলেন। কিন্তু লোকে নিদ্রা গেলে পর তাঁহার শত্রু আসিয়া ঐ গোমের মধ্যে শ্যামাঘাসের বীজ বপন করিয়া চলিয়া গেল। পরে যখন বীজ অঙ্কুরিত হইয়া ফল দিল, তখন শ্যামাঘাসও প্রকাশ হইয়া পড়িল।” এই দৃষ্টান্তকে বাস্তব ঘটনা বলে বিবেচনা করা উচিত হবে কি না, সেই বিষয়ে যদিও বিভিন্ন লেখক প্রশ্ন তুলেছিলেন কিন্তু প্রাচীন রোমীয় আইন বিষয়ক গ্রন্থগুলো ইঙ্গিত দেয়, এই বিবরণকে বাস্তব ঘটনা বলে বিবেচনা করা উচিত।
“প্রতিশোধ নেওয়ার উদ্দেশ্যে কোনো জমিতে আগাছার বীজ বপন করা . . . রোমীয় আইনে এক অপরাধ হিসেবে গণ্য হতো। এই বিষয়ের উপর একটা আইন থাকার প্রয়োজনীয়তা ইঙ্গিত দেয় যে, এই কাজ বিরল ছিল না,” একটা বাইবেল অভিধান এভাবে বলে। আইন বিষয়ক পণ্ডিত আ্যলেস্টার কেয়ার ব্যাখ্যা করেন, ৫৩৩ খ্রিস্টাব্দে রোমীয় সম্রাট জাস্টিনিয়ান নিজের লেখা ডাইজেস্ট প্রকাশ করেছিলেন, যেটাতে প্রাচীন কালের (প্রায় ১০০-২৫০ খ্রিস্টাব্দের) রোমীয় আইনের সারসংক্ষেপ ও আইন বিশারদদের উদ্ধৃতি ছিল। এই গ্রন্থ (ডাইজেস্ট, ৯.২.২৭.১৪) অনুসারে, আইন বিশারদ আলপিয়ান এমন একটা মামলা সম্বন্ধে উল্লেখ করেছিলেন, যে-মামলাটা নিয়ে দ্বিতীয় শতাব্দীর রোমীয় কূটনীতিক সেলসাস মনোযোগ সহকারে চিন্তা করেছিলেন। একজন ব্যক্তির জমিতে শ্যামাঘাসের বীজ বপন করা হয়েছিল আর এর ফল স্বরূপ শস্য নষ্ট হয়েছিল। ডাইজেস্ট মালিক অথবা বর্গাচাষির জন্য প্রাপ্তিসাধ্য আইনি প্রতিকার সম্বন্ধে তুলে ধরে, যাতে অপরাধীর কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করা যায়।
প্রাচীন কালে রোমীয় সাম্রাজ্যে ঘটা এই ধরনের বিদ্বেষপূর্ণ আচরণ ইঙ্গিত দেয়, যিশু যে-পরিস্থিতি সম্বন্ধে উল্লেখ করেছিলেন, তা জীবনের বাস্তব ঘটনা ছিল।
ফেব্রুয়ারি ১২-১৮
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | মথি ১৪-১৫
“অল্পসংখ্যক লোকের দ্বারা অনেক লোককে খাদ্য জোগানো”
অল্পসংখ্যক লোকের দ্বারা অনেক লোককে খাদ্য জোগানো
২ সেই জনতাকে দেখে যিশু করুণাবিষ্ট হন, তাই তিনি তাদের মধ্যে যে-অসুস্থ ব্যক্তিরা ছিল, তাদের সুস্থ করেন এবং তাদেরকে ঈশ্বরের রাজ্য সম্বন্ধে অনেক শিক্ষা দেন। যখন সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসে, তখন শিষ্যরা যিশুকে সেই লোকেদের বিদায় করার জন্য অনুরোধ করে, যাতে লোকেরা নিকটবর্তী গ্রামগুলোতে গিয়ে নিজেদের জন্য খাবার কিনতে পারে। কিন্তু, যিশু তাঁর শিষ্যদের বলেন: “তোমরাই উহাদিগকে আহার দেও।” তাঁর কথাগুলো তাদের কাছে নিশ্চয়ই আশ্চর্যজনক বলে মনে হয়েছিল কারণ তাদের কাছে যে-খাবার ছিল, তা খুবই সামান্য—পাঁচটা রুটি ও দুটো ছোটো মাছ।
অল্পসংখ্যক লোকের দ্বারা অনেক লোককে খাদ্য জোগানো
৩ সমব্যথী হয়ে যিশু এক অলৌকিক কাজ সম্পাদন করেন—একমাত্র অলৌকিক কাজ, যা চার জন সুসমাচার লেখকই লিপিবদ্ধ করেছে। (মার্ক ৬:৩৫-৪৪; লূক ৯:১০-১৭; যোহন ৬:১-১৩) যিশু তাঁর শিষ্যদের বলেন, তারা যেন লোকেদেরকে সবুজ ঘাসের উপর ৫০ জন ও ১০০ জন করে সারি সারি বসে যাওয়ার আজ্ঞা দেয়। সেগুলো নিয়ে আশীর্বাদ করার পর, তিনি রুটি ভাঙতে এবং মাছ ভাগ করতে শুরু করেন। এরপর, নিজে সরাসরি লোকেদেরকে খাবার দেওয়ার পরিবর্তে, যিশু তা “শিষ্যদিগকে দিলেন, শিষ্যেরা লোকদিগকে দিলেন।” অলৌকিক বিষয় হল, সেখানে প্রত্যেকের যতটুকু প্রয়োজন, সেটার চেয়েও বেশি খাবার ছিল! একটু চিন্তা করুন: অল্পসংখ্যক লোকের—তাঁর শিষ্যদের—দ্বারা যিশু হাজার হাজার লোককে খাইয়েছিলেন।
nwtsty স্টাডি নোট—মথি ১৪:২১
সেইসঙ্গে মহিলা ও অল্পবয়সি ছেলে-মেয়েও ছিল: এই অলৌকিক কাজের বিবরণ তুলে ধরার সময়, শুধুমাত্র মথিই মহিলা ও অল্পবয়সি ছেলে-মেয়েদের কথা উল্লেখ করেন। তাই, যাদের অলৌকিকভাবে খাওয়ানো হয়েছিল, তাদের সংখ্যা সম্ভবত ১৫,০০০-রেরও বেশি ছিল।
অল্পসংখ্যক লোকের দ্বারা অনেক লোককে খাদ্য জোগানো
দৃশ্যটা কল্পনা করুন। (পড়ুন, মথি ১৪:১৪-২১.) সময়টা হল, ৩২ খ্রিস্টাব্দে নিস্তারপর্বের মাত্র কয়েক দিন আগে। স্ত্রী ও শিশু ছাড়া প্রায় ৫,০০০ পুরুষ, গালীল সমুদ্রের উত্তর উপকূলে অবস্থিত বৈৎসদা নামক এক গ্রামের কাছাকাছি একটা নির্জন স্থানে যিশু ও তাঁর শিষ্যদের সঙ্গে আছে।
আধ্যাত্মিক রত্ন খুঁজে বের করুন
nwtsty স্টাডি নোট—মথি ১৫:৭
ভণ্ডেরা: গ্রিক শব্দ হাইপোক্রাইট্স মূলত গ্রিক (ও পরে রোমীয়) মঞ্চ অভিনেতাদের নির্দেশ করত, যারা তাদের কণ্ঠস্বরের আওয়াজ বাড়ানোর জন্য বিশেষভাবে প্রস্তুতকৃত বড়ো মুখোশ পরত। এই শব্দটা রূপক অর্থে এমন কোনো ব্যক্তির ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হতো, যিনি নিজের আসল উদ্দেশ্য অথবা ব্যক্তিত্ব লুকিয়ে রেখে মিথ্যা অভিনয় করেন বা ভান করেন। যিশু এখানে যিহুদি ধর্মীয় নেতাদের ‘ভণ্ড’ বলে উল্লেখ করেন।—মথি ৬:৫, ১৬.
nwtsty স্টাডি নোট—মথি ১৫:২৬
সন্তানদের . . . কুকুর ছানাদের: যেহেতু মোশির ব্যবস্থা অনুযায়ী কুকুর অশুচি প্রাণী ছিল, তাই শাস্ত্রে এই শব্দটা প্রায়ই অবমাননাকর অর্থে ব্যবহার করা হয়। (লেবীয় ১১:২৭; মথি ৭:৬; ফিলি ৩:২; প্রকা ২২:১৫) কিন্তু, যিশুর কথোপকথন সম্বন্ধে মার্কের বিবরণে (৭:২৭) ও মথির বিবরণে, সেই তুলনাকে কোমল করে তোলার জন্য এই শব্দটা ক্ষুদ্রতাবাচক অর্থে ব্যবহার করা হয়েছে, যেটার অর্থ “কুকুর ছানা” বা “গৃহপালিত কুকুর।” এটা হয়তো ইঙ্গিত দেয় যে, ন-যিহুদিদের ঘরের পোষা প্রাণীর জন্য যিশু স্নেহের এক অভিব্যক্তি ব্যবহার করছিলেন। ইস্রায়েলীয়দের ‘সন্তান’ এবং ন-যিহুদিদের ‘কুকুর ছানার’ সঙ্গে তুলনা করার মাধ্যমে যিশু স্পষ্টতই কাদের অগ্রাধিকার দিতে হবে, সেই বিষয়ে ইঙ্গিত দিতে চেয়েছিলেন। যে-বাড়িতে সন্তান ও কুকুর উভয়ই থাকত, সেখানে প্রথমে সন্তানদের খাবার খাওয়ানো হতো।
ফেব্রুয়ারি ১৯-২৫
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | মথি ১৬-১৭
“আপনি কার মতো করে চিন্তা করছেন?”
প্রহরীদুর্গ ০৭ ২/১৫ ১৬ অনু. ১৭
স্বামীরা—খ্রিস্টের মস্তকপদকে স্বীকার করুন
১৭ আরেকবার, যিশু তাঁর প্রেরিতদের কাছে ব্যাখ্যা করেছিলেন যে, তাঁকে যিরূশালেমে যেতে হবে, যেখানে তাঁকে “প্রাচীনবর্গের, প্রধান যাজকদের ও অধ্যাপকদের হইতে” তাড়িত হতে “ও হত হইতে হইবে, আর তৃতীয় দিবসে উঠিতে হইবে।” এই কথা বলায় পিতর যিশুকে কাছে নিয়ে অনুযোগ করে বলেছিলেন: “প্রভু, ইহা আপনা হইতে দূরে থাকুক, ইহা আপনার প্রতি কখনও ঘটিবে না।” স্পষ্টতই, পিতরের দৃষ্টিভঙ্গি আবেগের দ্বারা অস্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। ফলে সংশোধনের প্রয়োজন হয়েছিল। তাই, যিশু তাঁকে বলেছিলেন: “আমার সম্মুখ হইতে দূর হও, শয়তান, তুমি আমার বিঘ্নস্বরূপ; কেননা যাহা ঈশ্বরের, তাহা নয়, কিন্তু যাহা মনুষ্যের, তাহাই তুমি ভাবিতেছ।”—মথি ১৬:২১-২৩.
প্রহরীদুর্গ ১৫ ৫/১৫ ১৩ অনু. ১৬-১৭
জেগে থাকুন—শয়তান আপনাকে গ্রাস করতে চায়!
১৬ শয়তান এমনকী যিহোবার উদ্যোগী দাসদেরও প্রতারিত করতে পারে। উদাহরণ হিসেবে সেই ঘটনার কথা মনে করে দেখুন, যখন যিশু তাঁর শিষ্যদের বলেছিলেন, শীঘ্রই তাঁকে হত্যা করা হবে। প্রেরিত পিতর, যিনি যিশুকে ভালোবাসতেন, তিনি তখন বলেছিলেন: “প্রভু, ইহা আপনা হইতে দূরে থাকুক [“নিজের প্রতি সদয় হোন,” NW], ইহা আপনার প্রতি কখনও ঘটিবে না।” যিশু পিতরকে বলেছিলেন: “আমার সম্মুখ হইতে দূর হও, শয়তান।” (মথি ১৬:২২, ২৩) কেন যিশু পিতরকে “শয়তান” বলেছিলেন? কারণ যা ঘটতে যাচ্ছিল, তা যিশু জানতেন। শীঘ্র, যিশু মৃত্যুবরণ করে মুক্তির মূল্যরূপ বলিদান প্রদান করবেন এবং শয়তানকে মিথ্যাবাদী হিসেবে প্রমাণ করবেন। এটা ছিল মানব ইতিহাসের এক চরম মুহূর্ত আর এই সময়টা যিশুর জন্য নিজের প্রতি ‘সদয় হইবার’ সময় নয়। যিশু যদি জেগে না থাকতেন, তা হলে শয়তান খুশি হতো।
১৭ এই বিধিব্যবস্থার শেষ নিকটে আর তাই আমরা এক কঠিন সময়ে বাস করছি। শয়তান চায় যেন আমরা এই জগতে সফল হওয়ার প্রতি মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করি আর এভাবে নিজেদের প্রতি ‘সদয় হই’। সে চায় যেন আমরা এটা ভুলে যাই, আমরা শেষকালে বাস করছি এবং সে চায় যেন আমরা জেগে না থাকি। আপনার ক্ষেত্রে যেন এমনটা না ঘটে! এর পরিবর্তে, ‘জাগিয়া থাকুন।’ (মথি ২৪:৪২) শেষ অনেক দূরে অথবা তা কখনো আসবে না, শয়তানের বলা এই মিথ্যা কথা কখনো বিশ্বাস করবেন না।
‘তোমরা গিয়া শিষ্য কর; তাহাদিগকে বাপ্তাইজ কর’
৯ ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করার সময় যিশুর উদাহরণ অনুসরণ করার সঙ্গে কী জড়িত? যিশু তাঁর শিষ্যদের বলেছিলেন: “কেহ যদি আমার পশ্চাৎ আসিতে ইচ্ছা করে, তবে সে আপনাকে অস্বীকার করুক, আপন ক্রুশ [“যাতনাদণ্ড,” NW] তুলিয়া লউক, এবং আমার পশ্চাদগামী হউক [“ক্রমাগতভাবে আমাকে অনুসরণ করে চলুক,” NW]।” (মথি ১৬:২৪) এখানে তিনি তিনটে বিষয় উল্লেখ করেছেন, যা আমাদের করতে হবে। প্রথমত, আমরা নিজেদের “অস্বীকার” করি। অন্য কথায়, আমরা আমাদের স্বার্থপর, অসিদ্ধ প্রবণতাকে না বলি এবং ঈশ্বরের পরামর্শ ও নির্দেশনাকে হ্যাঁ বলি। দ্বিতীয়ত, আমরা ‘আপন যাতনাদণ্ড তুলিয়া লই।’ যিশুর দিনে একটা যাতনাদণ্ড ছিল লজ্জা এবং ক্লেশের প্রতীক। খ্রিস্টান হিসেবে, আমরা সুসমাচারের জন্য ক্লেশভোগ স্বীকার করি। (২ তীমথিয় ১:৮) যদিও জগৎ আমাদের উপহাস বা নিন্দা করতে পারে কিন্তু খ্রিস্টের মতো আমরা ‘অপমান তুচ্ছ করি’ এবং এটা জেনে আনন্দিত হই যে, আমরা ঈশ্বরকে খুশি করছি। (ইব্রীয় ১২:২) সব শেষে, আমরা যিশুকে “ক্রমাগতভাবে” অনুসরণ করি।—গীতসংহিতা ৭৩:২৬; ১১৯:৪৪; ১৪৫:২.
আধ্যাত্মিক রত্ন খুঁজে বের করুন
nwtsty স্টাডি নোট—মথি ১৬:১৮
তুমি পিতর আর এই পাথরের উপর: পুংলিঙ্গবাচক অর্থে গ্রিক শব্দ পেত্রস-এর অর্থ “একটা পাথর; একটা শিলা।” এখানে এটা নামবাচক বিশেষ্য (পিতর) হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে আর এটা যিশু শিমোনকে যে-নাম দিয়েছেন, সেটার গ্রিক রূপ। (যোহন ১:৪২) স্ত্রীলিঙ্গবাচক শব্দ পেত্রা-কে “পাথর” হিসেবে অনুবাদ করা হয় আর এটা ভূগর্ভস্থ শিলাস্তর, কোনো খাড়া পাহাড় অথবা পাথরের স্তুপকে বোঝাতে পারে। এই গ্রিক শব্দটা মথি ৭:২৪, ২৫; ২৭:৬০; লূক ৬:৪৮; ৮:৬; রোমীয় ৯:৩৩; ১করি ১০:৪; ১পিতর ২:৮ পদেও পাওয়া যায়। স্পষ্টতই পিতরও নিজেকে সেই পাথর হিসেবে দেখেননি, যেটার উপর যিশু তাঁর মণ্ডলী গড়ে তুলবেন কারণ তিনি ১ পিতর ২:৪-৮ পদে লিখেছিলেন, যিশু হলেন স্বয়ং ঈশ্বরের মনোনীত “কোণের ভিত্তির পাথর।” একইভাবে, প্রেরিত পৌলও যিশুকে “ভিত্তি” ও “আত্মিক শৈল” বলে উল্লেখ করেছিলেন। (১করি ৩:১১; ১০:৪) যিশু স্পষ্টতই এক ধরনের শব্দের খেলা ব্যবহার করেছিলেন, যুক্তিসংগতভাবেই এই কথা বলেছিলেন: ‘তুমি, যার নাম পিতর, তুমি “এই পাথরের” অর্থাৎ খ্রিস্টের প্রকৃত পরিচয় জানতে পেরেছ, যে-ব্যক্তি খ্রিস্টীয় মণ্ডলীর ভিত্তি হিসেবে কাজ করবেন।’
মণ্ডলী: এই পদে গ্রিক শব্দ এক্ক্লেসিয়া প্রথম বার উল্লেখ করা হয়েছে। এটা দুটো গ্রিক শব্দ এক্, যেটার অর্থ “বাইরে” এবং কেলিও, যেটার অর্থ “ডাকা” থেকে এসেছে। এটা এমন একদল লোককে নির্দেশ করে, যাদের কোনো বিশেষ উদ্দেশ্যে অথবা কাজ করার জন্য একত্রে আহ্বান করা বা ডাকা হয়েছে। (শব্দকোষ দেখুন।) এই প্রসঙ্গে, যিশু খ্রিস্টীয় মণ্ডলীর প্রতিষ্ঠা সম্বন্ধে ভবিষ্যদ্বাণী করেন, যে-মণ্ডলী অভিষিক্ত খ্রিস্টানদের নিয়ে গঠিত। “জীবন্ত পাথর” হিসেবে তাদের দিয়ে “এক আত্মিক গৃহ নির্মাণ” করা হচ্ছে। (১পিতর ২:৪, ৫) “মণ্ডলী” হিসেবে অনুবাদিত ইব্রীয় শব্দ, যেটা প্রায়ই ঈশ্বরের লোকেদের পুরো জাতিকে নির্দেশ করে, সেটার সমার্থ শব্দ হিসেবে সেপ্টুয়াজিন্ট-এ এই গ্রিক শব্দটা বার বার ব্যবহার করা হয়েছে। (দ্বিতীয় ২৩:৩; ৩১:৩০) প্রেরিত ৭:৩৮ পদে, ইস্রায়েলীয়দের একটা “মণ্ডলী” হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, যাদের মিশর থেকে ডেকে আনা হয়েছিল। একইভাবে, খ্রিস্টানদের নিয়ে ‘ঈশ্বরের মণ্ডলী’ গঠিত, যাদের “অন্ধকার হতে . . . ডেকে আনা” হয়েছে এবং “জগতের মধ্য থেকে মনোনীত” করা হয়েছে।—১পিতর ২:৯; যোহন ১৫:১৯; ১করি ১:২.
nwtsty স্টাডি নোট—মথি ১৬:১৯
স্বর্গরাজ্যের চাবিগুলো: রূপক অর্থে হোক কিংবা আক্ষরিক অর্থে হোক, বাইবেলে যে-ব্যক্তিদের নির্দিষ্ট কিছু চাবি দেওয়া হয়েছিল, তাদের আস্থা সহকারে কিছুটা কর্তৃত্ব দেওয়া হয়েছিল। (১বংশা ৯:২৬, ২৭; যিশা ২২:২০-২২) তাই, এখানে “চাবি” শব্দটা কর্তৃত্ব ও দায়িত্বকে চিত্রিত করে। পিতরকে আস্থা সহকারে যে-“চাবিগুলো” দেওয়া হয়েছিল, সেগুলো ব্যবহার করে তিনি যিহুদিদের (প্রেরিত ২:২২-৪১), শমরীয়দের (প্রেরিত ৮:১৪-১৭) ও পরজাতীয়দের (প্রেরিত ১০:৩৪-৩৮) ঈশ্বরের আত্মা লাভ করার জন্য সুযোগের দ্বার খুলে দিয়েছিলেন, যাতে তারা স্বর্গীয় রাজ্যে প্রবেশ করতে পারে।
ফেব্রুয়ারি ২৬–মার্চ ৪
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | মথি ১৮-১৯
“নিজের ও অন্যদের বিঘ্নের কারণ না হওয়ার ব্যাপারে সতর্ক থাকুন”
nwtsty স্টাডি নোট—মথি ১৮:৬, ৭
গাধা দিয়ে ঘোরানো হয় এমন একটা জাঁতা: বা “একটা প্রকাণ্ড জাঁতা।” আক্ষ., “গাধাচালিত জাঁতা।” এই ধরনের একটা জাঁতা, যেটার ব্যাস সম্ভবত ১.২-১.৫ মিটার (৪-৫ ফুট), এতটাই ভারী ছিল যে, এটাকে গাধা দিয়েই ঘোরাতে হতো।
বিঘ্নজনক বস্তু: “বিঘ্নজনক বস্তু” হিসেবে অনুবাদিত গ্রিক স্কানডালন শব্দটার আসল অর্থ একটা ফাঁদকে নির্দেশ করে বলে মনে করা হয়; কেউ কেউ বলেন, এটা ছিল ফাঁদের সেই লাঠি, যেটার সঙ্গে টোপ লাগানো থাকত। ব্যাপক অর্থে, এটা যেকোনো প্রতিবন্ধককে নির্দেশ করতে পারে, যা একজনের হোঁচট খাওয়ার বা পড়ে যাওয়ার কারণ হতে পারে। রূপক অর্থে, এটা এমন কোনো কাজ অথবা পরিস্থিতিকে বোঝায়, যা একজন ব্যক্তিকে অনুপযুক্ত জীবনধারা অনুসরণ করতে, নৈতিকভাবে হোঁচট খেতে বা পড়ে যেতে কিংবা পাপ করতে প্ররোচিত করে। সম্পর্কযুক্ত ক্রিয়া পদ স্কানডালিজো-কে মথি ১৮:৮, ৯ পদে “বিঘ্নের কারণ হয়” হিসেবে অনুবাদ করা হয়েছে আর এটাকে “এক ফাঁদ হয়ে ওঠে; পাপ করার কারণ হয়” হিসেবেও অনুবাদ করা যেতে পারে।
nwtsty মিডিয়া
জাঁতা
শস্য চূর্ণ করার জন্য ও জলপাই পিষে তেল বের করে আনার জন্য জাঁতা ব্যবহার করা হতো। কোনো কোনো জাঁতা বেশ ছোটো ছিল আর সেগুলো হাতেই ঘোরানো যেত। কিন্তু অন্যগুলো এতটাই বিশাল ছিল যে, সেগুলো কোনো পশু দিয়েই ঘোরাতে হতো। পলেস্টীয়রা শিম্শোনকে যে-জাঁতা ঘোরানোর জন্য বাধ্য করেছিল, সেটা হয়তো এখানে দেখানো জাঁতার মতোই বড়ো ছিল। (বিচার ১৬:২১) পশুচালিত এই ধরনের জাঁতাকল শুধু ইস্রায়েলেই নয়, বরং রোমীয় সাম্রাজ্যের বেশিরভাগ এলাকাতেই ব্যবহার করা হতো।
উপরের জাঁতা ও নীচের জাঁতা
এখানে দেখানো জাঁতার মতো বিশাল একটা জাঁতা, গৃহপালিত কোনো পশু, যেমন একটা গাধা দিয়ে ঘোরানো হতো এবং তা শস্য চূর্ণ করার জন্য অথবা জলপাই পেষার জন্য ব্যবহার করা হতো। উপরের জাঁতাটার ব্যাস ১.৫ মিটার (৫ ফুট) পর্যন্ত হতো আর এটাকে নীচের আরও বড়ো জাঁতাটার উপরে রেখে ঘোরানো হতো।
nwtsty স্টাডি নোট—মথি ১৮:৯
গিহেন্না: এই শব্দটা ইব্রীয় শব্দ গেহ্ হিন্নোম থেকে এসেছে, যেটার অর্থ “হিন্নোম উপত্যকা” আর এই উপত্যকা প্রাচীন যিরূশালেমের দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে অবস্থিত। (পরিশিষ্ট বি১২, “যিরূশালেম ও এর চারপাশের এলাকা” শিরোনামের মানচিত্র দেখুন।) যিশু যে-সময়ে পৃথিবীতে ছিলেন, তখন ইতিমধ্যেই সেই উপত্যকা আবর্জনা পোড়ানোর এক স্থান হয়ে উঠেছিল, তাই গিহেন্না শব্দটা চিরধ্বংসের উপযুক্ত প্রতীক ছিল।
nwtsty শব্দকোষ
গিহেন্না
প্রাচীন যিরূশালেমের দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত হিন্নোম উপত্যকার গ্রিক নাম। (যির ৭:৩১) এটাকে ভবিষ্যদ্বাণীমূলকভাবে এমন এক স্থান হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল, যেখানে মৃতদেহ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকবে। (যির ৭:৩২; ১৯:৬) এইরকম কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় না যে, পশুপাখি কিংবা মানুষকে জীবন্ত পোড়ানোর জন্য বা যন্ত্রণা দেওয়ার জন্য গিহেন্নাতে ফেলা হতো। তাই, এটা এমন কোনো অদৃশ্য স্থানকে চিত্রিত করতে পারে না, যেখানে মানুষের মধ্যে অমর কোনো অংশকে আক্ষরিক আগুনে অনন্তকাল ধরে যন্ত্রণা দেওয়া হয়। বরং, যিশু ও তাঁর শিষ্যরা যে-গিহেন্না শব্দ ব্যবহার করেছিলেন, সেটা ‘দ্বিতীয় মৃত্যুর’ চিরস্থায়ী শাস্তিকে চিত্রিত করে, যেটার অর্থ অনন্তধ্বংস, নিশ্চিহ্ন হওয়া।—প্রকা ২০:১৪; মথি ৫:২২; ১০:২৮.
nwtsty স্টাডি নোট—মথি ১৮:১০
আমার পিতার মুখ দেখে: বা “আমার পিতার কাছে যাওয়ার অধিকার রাখে।” যেহেতু আত্মিক প্রাণীদের স্বয়ং ঈশ্বরের সামনে উপস্থিত হওয়ার অধিকার আছে, তাই শুধুমাত্র তারাই ঈশ্বরের মুখ দেখতে পারে।—যাত্রা ৩৩:২০.
প্রহরীদুর্গ ১১ এপ্রিল-জুন পৃষ্ঠা ২৪
আত্মিক প্রাণীরা যেভাবে আমাদেরকে প্রভাবিত করে
যিশু প্রকাশ করেছিলেন যে, স্বর্গদূতদেরকে ঈশ্বরের দাসদের আধ্যাত্মিক মঙ্গলের বিষয়টা দেখাশোনা করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাই, যিশু যখন অন্যদের বিঘ্নিত করার বিষয়ে তাঁর শিষ্যদেরকে সাবধান করেছিলেন, তখন তিনি বলেছিলেন: “দেখিও, এই ক্ষুদ্রগণের মধ্যে একটীকেও তুচ্ছ করিও না; কেননা আমি তোমাদিগকে কহিতেছি, তাহাদের দূতগণ স্বর্গে সতত আমার স্বর্গস্থ পিতার মুখ দর্শন করেন।” (মথি ১৮:১০, ১১) এই কথাগুলোর দ্বারা যিশু অবশ্যই বোঝাতে চাননি যে, তাঁর প্রত্যেক অনুসারীর এক রক্ষক স্বর্গদূত রয়েছে। কিন্তু যিশু দেখিয়েছিলেন যে, যে-স্বর্গদূতেরা ঈশ্বরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে, তারা খ্রিস্টীয় মণ্ডলীর সদস্যদের বিষয়ে আগ্রহী।
আধ্যাত্মিক রত্ন খুঁজে বের করুন
nwtsty স্টাডি নোট—মথি ১৮:২২
৭৭ বার: আক্ষ., “সত্তর গুণ সাত বার।” এই গ্রিক অভিব্যক্তি হয় “৭০ যোগ ৭” (৭৭ বার) কিংবা “৭০ গুণ ৭” (৪৯০ বার) বোঝাতে পারে। একই ধরনের শব্দ সেপ্টুয়াজিন্ট-এ আদি ৪:২৪ পদেও পাওয়া যায়, যা “৭৭ বার”-এর জন্য ব্যবহৃত ইব্রীয় অভিব্যক্তির অনুবাদ, আর এটা “৭৭ বার” হিসেবে অনুবাদ করাকে সমর্থন করে। এটাকে যেভাবেই বোঝা হোক না কেন, সাত সংখ্যার পুনরাবৃত্তি ছিল “অনির্দিষ্ট” বা “সীমাহীন” কিছুর সমরূপ। পিতরের বলা ৭ বারকে ৭৭ বারে পরিবর্তিত করার মাধ্যমে যিশু তাঁর অনুসারীদের বলতে চেয়েছিলেন, তারা যেন ক্ষমা করার বিষয়ে ব্যক্তিগত খেয়ালখুশিমতো সীমা নির্ধারণ না করে। এর বিপরীতে, ব্যাবিলোনিয়ান তালমুড (ইয়োমা ৮৬বি) বলে: “একজন ব্যক্তি কোনো অপরাধ করলে তাকে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বার ক্ষমা করা হয়, কিন্তু চতুর্থ বার তাকে ক্ষমা করা হয় না।”
nwtsty স্টাডি নোট—মথি ১৯:৭
ত্যাগপত্র: বা “বিবাহবিচ্ছেদপত্র।” বিবাহবিচ্ছেদের বিষয়ে বিবেচনা করছেন এমন একজন ব্যক্তির জন্য বৈধ দলিল প্রস্তুত করা ও সম্ভবত প্রাচীনদের সঙ্গে পরামর্শ করা আবশ্যক ছিল। এর মাধ্যমে ব্যবস্থা সেই ব্যক্তিকে এই ধরনের গুরুতর এক সিদ্ধান্তের বিষয়ে পুনর্বিবেচনা করার জন্য সময় দিয়েছিল। স্পষ্টতই ব্যবস্থার উদ্দেশ্য ছিল, তাড়াহুড়ো করে বিবাহবিচ্ছেদ করাকে প্রতিরোধ করা এবং নারীদের কিছুটা আইনি সুরক্ষা প্রদান করা। (দ্বিতীয় ২৪:১) কিন্তু যিশুর দিনে, ধর্মীয় নেতারা বিবাহবিচ্ছেদ করার বিষয়টাকে খুব সহজ করে তুলেছিল। প্রথম শতাব্দীর ইতিহাসবেত্তা জোসিফাস, যিনি নিজেও একজন বিবাহবিচ্ছেদ প্রাপ্ত ফরীশী ছিলেন, তিনি বলেছিলেন, “যেকোনো কারণেই” বিবাহবিচ্ছেদ করা অনুমোদনযোগ্য ছিল “(আর পুরুষরা এইরকম অনেক কারণই খুঁজে পেত)।”
nwtsty মিডিয়া
বিবাহবিচ্ছেদপত্র
এই বিবাহবিচ্ছেদপত্রটা ৭১ অথবা ৭২ খ্রিস্টাব্দের আর এটা অরামীয় ভাষায় লেখা হয়েছিল। এটা ওয়াদি মুরাব্বাতে, যিহূদিয়ার মরুভূমির এক শুষ্ক নদীগর্ভে খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল। এতে বলা আছে, যিহুদি বিদ্রোহের ষষ্ঠ বছরে, জোসেফের ছেলে নাক্সান, মাসাদা নগরের অধিবাসী জোনাথনের মেয়ে মিরিয়ামের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ করেছেন।