রাজাবলির দ্বিতীয় খণ্ড
২২ যোশিয় যখন রাজা হলেন, তখন তার বয়স ছিল আট বছর আর তিনি জেরুসালেম থেকে ৩১ বছর ধরে রাজত্ব করলেন। তার মায়ের নাম ছিল যিদীদা, যিনি বস্কতের বাসিন্দা অদায়ার মেয়ে ছিলেন। ২ যোশিয় যিহোবার দৃষ্টিতে যা সঠিক, তা-ই করলেন আর তিনি তার পূর্বপুরুষ দায়ূদের সমস্ত পথে চললেন। তিনি ঈশ্বরের দেখানো পথ থেকে ডান দিকে কিংবা বাঁ-দিকে গেলেন না।
৩ যোশিয় তার রাজত্বের ১৮তম বছরে তার সচিব শাফনকে, যিনি অৎসলিয়ের ছেলে এবং মশুল্লমের নাতি ছিলেন, এই বলে যিহোবার গৃহে পাঠালেন: ৪ “মহাযাজক হিল্কিয়ের কাছে যাও আর তাকে বলো, লোকেরা যিহোবার গৃহে যে-টাকাপয়সা দান দিয়েছে, যেটাকে দারোয়ানেরা একত্রিত করেছে, সেটাকে সে যেন একত্রিত করে। ৫ সেই টাকাপয়সা যেন সেই ব্যক্তিদের দেওয়া হয়, যাদের যিহোবার গৃহের কাজের দেখাশোনা করার জন্য নিযুক্ত করা হয়েছে। তারপর, সেই নিযুক্ত ব্যক্তিরা সেই টাকাপয়সা নিয়ে গিয়ে সেই লোকদের দেবে, যারা যিহোবার গৃহে হওয়া ক্ষয়ক্ষতি* মেরামত করবে ৬ অর্থাৎ কারিগর, নির্মাণকারী ও রাজমিস্ত্রিদের দেবে। তারা সেই টাকাপয়সা দিয়ে গৃহ মেরামতের জন্য কড়িকাঠ এবং কাটা পাথর কিনবে। ৭ কিন্তু, সেই নিযুক্ত ব্যক্তিদের কাছ থেকে যেন কখনো হিসাব চাওয়া না হয় কারণ তারা নির্ভরযোগ্য ব্যক্তি।”
৮ পরে, মহাযাজক হিল্কিয় রাজার সচিব শাফনকে বললেন: “আমি যিহোবার গৃহে ব্যবস্থার পুস্তক পেয়েছি।” হিল্কিয় সেই পুস্তকটা শাফনকে দিলেন আর শাফন সেটা পড়তে লাগলেন। ৯ তারপর, রাজার সচিব শাফন রাজার কাছে গেলেন আর তাকে বললেন: “আপনার সেবকেরা গৃহের সমস্ত টাকাপয়সা একত্রিত করে সেই ব্যক্তিদের দিয়ে দিয়েছে, যাদের যিহোবার গৃহের কাজের দেখাশোনা করার জন্য নিযুক্ত করা হয়েছে।” ১০ এ ছাড়া, রাজার সচিব শাফন রাজাকে এই কথাও বললেন: “যাজক হিল্কিয় আমাকে একটা পুস্তক দিয়েছেন।” তারপর, শাফন রাজাকে সেই পুস্তকটা পড়ে শোনাতে লাগলেন।
১১ যেই-না রাজা ব্যবস্থার পুস্তকে লেখা কথাগুলো শুনলেন, অমনি তিনি নিজের পোশাক ছিঁড়লেন। ১২ তারপর, তিনি যাজক হিল্কিয়, শাফনের ছেলে অহীকাম, মীখায়ের ছেলে অক্বোর, রাজার সচিব শাফন আর নিজের সেবক অসায়কে এই আদেশ দিলেন: ১৩ “তোমরা যাও আর এই যে-পুস্তকটা পাওয়া গিয়েছে, এটাতে লেখা কথাগুলোর বিষয়ে তোমরা আমার হয়ে, লোকদের হয়ে এবং পুরো যিহূদার হয়ে যিহোবার কাছে নির্দেশনা চাও। আমাদের পূর্বপুরুষেরা এই পুস্তকে লেখা আজ্ঞাগুলোর বাধ্য হননি এবং এতে লেখা কথাগুলো পালন করেননি, যেগুলো আমাদেরও পালন করা উচিত। এইজন্য আমাদের বিরুদ্ধে যিহোবার ক্রোধের আগুন জ্বলে উঠেছে।”
১৪ তখন যাজক হিল্কিয়, অহীকাম, অক্বোর, শাফন ও অসায় ভাববাদিনী হুল্দার কাছে গেলেন। ভাববাদিনী হুল্দা শল্লুমের স্ত্রী ছিলেন, যিনি তিক্বের ছেলে এবং হর্হসের নাতি ছিলেন। শল্লুম পোশাকের ঘরের দেখাশোনা করতেন। হুল্দা জেরুসালেমের দ্বিতীয় বিভাগে থাকতেন আর যোশিয়ের পাঠানো লোকেরা সেখানে তার সঙ্গে কথা বললেন। ১৫ হুল্দা তাদের বললেন: “ইজরায়েলের ঈশ্বর যিহোবা এই কথা বলেন, ‘যে-ব্যক্তি তোমাদের আমার কাছে পাঠিয়েছে, তাকে বলো: ১৬ “যিহোবা এই কথা বলেন, ‘আমি এই জায়গার উপর এবং এখানে থাকা লোকদের উপর বিপর্যয় আনব, ঠিক যেমনটা সেই পুস্তকে লেখা রয়েছে, যেটা যিহূদার রাজা পড়েছে। ১৭ তারা আমাকে ছেড়ে দিয়েছে আর তারা অন্য দেবতাদের কাছে বলি উৎসর্গ করার মাধ্যমে এবং নিজেদের হাতের কাজের মাধ্যমে আমাকে রাগিয়ে তুলছে। তাই, এই জায়গার বিরুদ্ধে আমার ক্রোধের আগুন জ্বলে উঠবে আর সেই আগুন নিভবে না।’” ১৮ কিন্তু যিহূদার রাজা, যিনি তোমাদের যিহোবার নির্দেশনা চাওয়ার জন্য পাঠিয়েছেন, তাকে বলো, “আপনি যে-কথাগুলো শুনেছেন, সেগুলোর বিষয়ে ইজরায়েলের ঈশ্বর যিহোবা এই কথা বলেন: ১৯ ‘যেহেতু তুমি যখন শুনেছিলে যে, আমি এই জায়গা এবং এখানে থাকা লোকদের এমনভাবে বিনষ্ট করব যে, তারা অভিশপ্ত হয়ে উঠবে এবং যারা তাদের ধ্বংস দেখবে, তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়বে, তখন এই বিষয়টা তোমার হৃদয়ের উপর গভীর ছাপ ফেলেছিল আর তুমি যিহোবার সামনে নিজেকে নত করেছিলে এবং নিজের পোশাক ছিঁড়ে আমার সামনে কেঁদেছিলে, তাই যিহোবা এই কথা বলেন, আমি তোমার বিনতি শুনেছি। ২০ এইজন্য তোমার জীবনকালে আমি এই জায়গার উপর বিপর্যয় আনব না। তুমি মারা যাবে* আর তোমাকে শান্তিতে তোমার কবরে কবর দেওয়া হবে।’”’” তখন সেই লোকেরা ফিরে গিয়ে রাজাকে এই বার্তা জানাল।