ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w25 মে পৃষ্ঠা ২০-২৫
  • যিহোবার নাম যিশুর কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ?

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • যিহোবার নাম যিশুর কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ?
  • প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য সম্বন্ধে ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০২৫
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • “আমি তোমার নাম তাদের জানিয়েছি”
  • “তুমি আমাকে যে-নাম দিয়েছ, তোমার নিজের সেই নামের জন্য”
  • “পিতা, তোমার নাম মহিমান্বিত করো”
  • “আমি নিজের জীবন দান করি”
  • “তুমি আমাকে যে-কাজ দিয়েছ, তা শেষ . . . করেছি”
  • যিহোবার নাম আপনার কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ?
    প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য সম্বন্ধে ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০২৫
  • যিহোবার নামের প্রশংসা করুন
    প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য সম্বন্ধে ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০২৪
  • মুক্তির মূল্য থেকে আমরা কী শিখি?
    প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য সম্বন্ধে ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০২৫
  • “বেছে নাও যে, তোমরা কার সেবা করবে”
    প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য সম্বন্ধে ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০২৫
আরও দেখুন
প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য সম্বন্ধে ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০২৫
w25 মে পৃষ্ঠা ২০-২৫

অধ্যয়ন প্রবন্ধ ২২

গান ১৫ গাও প্রশংসা পুত্রের!

যিহোবার নাম যিশুর কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ?

“আমি তোমার নাম তাদের জানিয়েছি এবং ক্রমাগত জানাব।”—যোহন ১৭:২৬.

আমরা কী শিখব?

যিশু যখন বলেছিলেন যে, তিনি লোকদের যিহোবার নাম জানিয়েছেন, তখন সেটার অর্থ কী ছিল? আর তিনি কীভাবে যিহোবার নামকে পবিত্র করেছিলেন এবং সেই নামের উপর আসা অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণ করেছিলেন?

১-২. (ক) মারা যাওয়ার আগে যিশু কী করেছিলেন? (খ) এই প্রবন্ধে আমরা কোন প্রশ্নগুলোর উত্তর জানতে পারব?

দিনটা ছিল ৩৩ সালের ১৪ই নিশান, বৃহস্পতিবার রাত। যিশু তাঁর বিশ্বস্ত প্রেরিতদের সঙ্গে একটা বাড়ির উপরের তলায় রয়েছেন এবং তারা সবেমাত্র প্রভুর সান্ধ্যভোজ উদ্‌যাপন করেছেন। যিশু জানতেন যে, খুব শীঘ্রই বিশ্বাসঘাতকতা করে তাঁকে ধরিয়ে দেওয়া হবে, তাঁর বিচার করা হবে, তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে এবং নিষ্ঠুরভাবে তাঁকে হত্যা করা হবে। তাই, যিশু তাঁর প্রেরিতদের উৎসাহিত করেন। এরপর সেখান থেকে চলে যাওয়ার আগে তিনি তাদের সঙ্গে প্রার্থনা করেন। পরবর্তী সময়ে, প্রেরিত যোহন এই প্রার্থনা তার সুসমাচারের বইয়ে লিপিবদ্ধ করেছিলেন, যেটা আমরা যোহন ১৭ অধ্যায়ে পাই।

২ এই প্রবন্ধে আমরা যিশুর এই প্রার্থনার উপর মনোযোগ দেব। আর এই প্রশ্নগুলোর উত্তর জানতে পারব: মৃত্যুর আগে যিশু কোন বিষয়ে চিন্তিত ছিলেন এবং পৃথিবীতে থাকাকালীন কোন বিষয়টা তাঁর কাছে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল?

“আমি তোমার নাম তাদের জানিয়েছি”

৩. যিশু তাঁর প্রার্থনায় কী বলেছিলেন এবং তিনি যা বলেছিলেন, সেটার অর্থ কী ছিল? (যোহন ১৭:৬, ২৬)

৩ যিশু তাঁর প্রার্থনায় বলেছিলেন, “আমি তোমার নাম তাদের জানিয়েছি।” তিনি দু-বার বলেছিলেন যে, তিনি তাঁর শিষ্যদের যিহোবার নাম জানিয়েছেন। (পড়ুন, যোহন ১৭:৬, ২৬.) এটা বলার অর্থ কী ছিল? তাঁর শিষ্যেরা কি জানত না যে, ঈশ্বরের নাম কী? যিশুর শিষ্যেরা যিহুদি ছিল এবং তারা জানত যে, ঈশ্বরের নাম হল যিহোবা। এই নাম ইব্রীয় শাস্ত্রে হাজার হাজার বার এসেছে। তাই যিশু যখন বলেছিলেন, “আমি তোমার নাম তাদের জানিয়েছি,” তখন আসলে তিনি বলছিলেন যে, আমি তাদের শিখিয়েছি, যিহোবা কেমন ঈশ্বর, তাঁর কোন কোন গুণ রয়েছে, পৃথিবী এবং মানুষের জন্য তাঁর কোন উদ্দেশ্য রয়েছে, তিনি তাদের জন্য কী কী করেছেন এবং ভবিষ্যতে কী করবেন। একমাত্র যিশুই যিহোবা সম্বন্ধে এই সমস্ত বিষয় ভালোভাবে বলতে পারতেন!

৪-৫. (ক) একটা উদাহরণের মাধ্যমে বোঝান যে, একজন ব্যক্তির নাম কীভাবে আমাদের কাছে আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে? (খ) কীভাবে যিহোবার নাম যিশুর শিষ্যদের কাছে আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল?

৪ ধরুন, আপনার মণ্ডলীতে ডেভিড নামে একজন ভাই প্রাচীন হিসেবে সেবা করছেন আর এর পাশাপাশি তিনি একজন ডাক্তার। আপনি অনেক বছর ধরে ডেভিডকে চেনেন। একদিন আপনি হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং আপনাকে সেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে ডেভিড কাজ করেন। তিনি আপনার চিকিৎসা করেন এবং আপনার জীবন রক্ষা করেন। এরপর যখনই আপনি ডেভিডের নাম শুনবেন, তখন আপনার মনে কোন বিষয়টা আসবে? আপনি শুধু এটাই চিন্তা করবেন না যে, তিনি আপনার মণ্ডলীর একজন প্রাচীন, সেইসঙ্গে আপনি এও চিন্তা করবেন, তিনি কতই-না ভালো একজন ডাক্তার এবং তিনি আপনার জীবন রক্ষা করেছেন!

৫ একইভাবে, যিশুর শিষ্যেরা ঈশ্বরের নাম আগে থেকেই জানত। কিন্তু, যিশু যখন পৃথিবীতে এসেছিলেন এবং তাঁর শিষ্যদের যিহোবাকে ভালোভাবে জানতে সাহায্য করেছিলেন, তখন তাঁর শিষ্যদের কাছে যিহোবার নাম আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল। কীভাবে? তারা দেখেছিল যে, যিশু একেবারে তাঁর পিতার মতো। তাই, তিনি যা-কিছু করেছিলেন এবং বলেছিলেন, সেটা থেকে শিষ্যেরা বুঝতে পেরেছিল যে, তাঁর পিতা যিহোবা আসলে কেমন। সত্যিই, যিশুর শিক্ষাগুলো শুনে এবং তাঁর আচরণ দেখে শিষ্যেরা আরও ভালোভাবে যিহোবাকে ‘জানতে’ পেরেছিল।—যোহন ১৪:৯; ১৭:৩.

“তুমি আমাকে যে-নাম দিয়েছ, তোমার নিজের সেই নামের জন্য”

৬. যিশু যখন বলেছিলেন যে, যিহোবা তাঁকে নিজের নাম দিয়েছেন, তখন এর অর্থ কী ছিল? (যোহন ১৭:১১, ১২)

৬ যিশু তাঁর শিষ্যদের বিষয়ে যিহোবার কাছে প্রার্থনা করে বলেছিলেন, “তুমি আমাকে যে-নাম দিয়েছ, তোমার নিজের সেই নামের জন্য তাদের যত্ন নিয়ো।” (পড়ুন, যোহন ১৭:১১, ১২.) তাই, যিশু যখন এটা বলেছিলেন যে, যিহোবা তাঁকে নিজের নাম দিয়েছেন, তখন এটার মানে কি এই ছিল যে, যিশুর নাম পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে এবং তাঁকে যিহোবা বলে ডাকা হবে? না একদমই না। লক্ষ করুন, যিশু যিহোবাকে বলেছিলেন যে, তিনি যেন “নিজের সেই নামের জন্য” এমনটা করেন। এর থেকে বোঝা যায় যে, যিশুর নাম পরিবর্তন হয়ে যিহোবা হয়ে যায়নি। তাহলে, যিশুর এই কথা “তুমি আমাকে যে-নাম দিয়েছ,” এর অর্থ কী ছিল? প্রথমত, যিশু যিহোবার প্রতিনিধি ছিলেন এবং তিনি যিহোবার হয়ে কথা বলতেন। তিনি তাঁর পিতার নামে এসেছিলেন এবং সেই নামে তিনি বড়ো বড়ো অলৌকিক কাজ করেছিলেন। (যোহন ৫:৪৩; ১০:২৫) এ ছাড়া, যিশুর নামের অর্থ হল, “যিহোবা পরিত্রাণ” অর্থাৎ তাঁর নামের অর্থে যিহোবার নামও রয়েছে। তাই, তিনি বলেছিলেন যে, পিতা তাঁকে নিজের নাম দিয়েছেন।

৭. কেন আমরা বলতে পারি, যিশু যিহোবার হয়ে কথা বলতেন? একটা উদাহরণ দিন।

৭ একজন রাষ্ট্রদূত নিজের দেশের রাষ্ট্রপতিকে প্রতিনিধিত্ব করেন এবং তার হয়ে কথা বলেন। তিনি যখন কোনো কথা বলেন, তখন এটা এমন যেন রাষ্ট্রপতি কথা বলছেন। একইভাবে, যিশু যিহোবার প্রতিনিধি ছিলেন এবং তিনি তাঁর নামে এসেছিলেন। তাই তিনি যা-কিছু বলতেন, সেটা যেন যিহোবাই বলতেন।—মথি ২১:৯; লূক ১৩:৩৫.

৮. যিশু পৃথিবীতে আসার আগে যিহোবা কেন এমন বলেছিলেন যে, “তাঁহার অন্তরে আমার নাম রহিয়াছে”? (যাত্রাপুস্তক ২৩:২০, ২১)

৮ যিশু তাঁর পিতার হয়ে কথা বলতেন, তাই তাঁকে ‘বাক্যও’ বলা হয়েছে। তিনি স্বর্গদূতদের এবং মানুষের কাছে যিহোবার বার্তা এবং নির্দেশনা পৌঁছে দিতেন। (যোহন ১:১-৩) এমনটা মনে করা হয় যে, প্রান্তরে যিহোবা ইজরায়েলীয়দের সুরক্ষা দেওয়ার এবং তাদের পথ দেখানোর জন্য যে-স্বর্গদূতকে পাঠিয়েছিলেন, তিনি আসলে যিশুই ছিলেন। যিহোবা ইজরায়েলীয়দের বলেছিলেন, তাদের সেই স্বর্গদূতের কথা শোনা উচিত। কেন? কারণ যিহোবা বলেছিলেন, “তাঁহার অন্তরে আমার নাম রহিয়াছে।”a (পড়ুন, যাত্রাপুস্তক ২৩:২০, ২১.) এর থেকে বোঝা যায়, যিশুর “অন্তরে” যিহোবার নাম রয়েছে অর্থাৎ তিনি যিহোবার হয়ে কথা বলেন। আর তিনি যিহোবার নাম পবিত্র করার এবং সেই নামের উপর আসা অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণ করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।

“পিতা, তোমার নাম মহিমান্বিত করো”

৯. যিশুর কাছে যিহোবার নাম কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল? বুঝিয়ে বলুন।

৯ আমরা যেমনটা দেখলাম, পৃথিবীতে আসার আগে যিশুর কাছে যিহোবার নাম অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আর পৃথিবীতে থাকাকালীনও তিনি যিহোবার নামকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখতেন। তিনি যা-কিছু করেছিলেন, যিহোবার নামের জন্য করেছিলেন। তাঁর সেবার শেষের দিকে যিশু বলেছিলেন, “পিতা, তোমার নাম মহিমান্বিত করো।” তখন স্বর্গ থেকে যিহোবার এই উচ্চ কণ্ঠস্বর শোনা গিয়েছিল: “আমি তা মহিমান্বিত করেছি এবং আবার তা মহিমান্বিত করব।”—যোহন ১২:২৮.

১০-১১. (ক) যিশু কীভাবে যিহোবার নামকে মহিমান্বিত করেছিলেন? (ছবিও দেখুন।) (খ) যিহোবার নামকে পবিত্র করা কেন এত গুরুত্বপূর্ণ ছিল?

১০ যিশুও তাঁর পিতার নামকে মহিমান্বিত করেছিলেন। কীভাবে? তিনি অন্যদের বলেছিলেন যে, যিহোবা কত ভালো একজন ঈশ্বর এবং তিনি মানুষের জন্য কত চমৎকার কাজ করেছেন। কিন্তু, যিহোবার নাম মহিমান্বিত করার জন্য এটাও গুরুত্বপূর্ণ ছিল যেন তাঁর নাম পবিত্র করা হয় এবং তাঁর নামের উপর আসা অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণ করা হয়। যিশুর কাছে এই বিষয়টা কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল, তা আমরা তাঁর আদর্শ প্রার্থনা থেকে বুঝতে পারি, যেটা তিনি তাঁর শিষ্যদের শিখিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন: “হে আমাদের স্বর্গস্থ পিতা, তোমার নাম পবিত্র হোক।”—মথি ৬:৯.

১১ যিহোবার নামকে পবিত্র করা কেন এত গুরুত্বপূর্ণ ছিল? কারণ এদন উদ্যানে শয়তান যিহোবাকে অপমান করেছিল এবং তাঁর উপর মিথ্যা অভিযোগ এনেছিল। সে দাবি করেছিল, যিহোবা হলেন মিথ্যাবাদী এবং আদম ও হবাকে ভালো বিষয়গুলো থেকে বঞ্চিত করছেন। (আদি. ৩:১-৫) শয়তান এটাও দাবি করেছিল যে, যিহোবার শাসন করার পদ্ধতি ভুল। এভাবে সে যিহোবাকে অপমান করেছিল এবং তাঁর নামের উপর নিন্দা নিয়ে এসেছিল। পরবর্তীকালে ইয়োবের সময়ে শয়তান মানুষের উপরও প্রশ্ন তুলেছিল। সে দাবি করেছিল যে, মানুষ হল স্বার্থপর, তারা শুধুমাত্র নিজেদের লাভের জন্য যিহোবার সেবা করে। সে এটাও দাবি করেছিল যে, মানুষ যিহোবাকে ভালোবাসে না। মানুষের উপর যদি সমস্যা নিয়ে আসা হয়, তা হলে তারা যিহোবার সেবা করা ছেড়ে দেবে। (ইয়োব ১:৯-১১; ২:৪) এটা একটা বড়ো বিচার্য বিষয় ছিল এবং এটা প্রমাণ করার জন্য সময় লাগত যে, কে মিথ্যাবাদী, শয়তান না কি যিহোবা!

যিশু অনেক লোকের সামনে পর্বতে দেওয়া উপদেশ দিচ্ছেন।

যিশু তাঁর শিষ্যদের শিখিয়েছিলেন যে, ঈশ্বরের নাম পবিত্র করা কতটা গুরুত্বপূর্ণ (১০ অনুচ্ছেদ দেখুন)


“আমি নিজের জীবন দান করি”

১২. যিশু যিহোবার নামকে খুবই ভালোবাসতেন, তাই তিনি কী করার জন্য প্রস্তুত ছিলেন?

১২ যিশু তাঁর পিতাকে খুবই ভালোবাসতেন। তিনি যেকোনো পরিস্থিতিতে নিজের পিতার নামকে পবিত্র করতে চাইতেন এবং তাঁর নামের উপর আসা অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণ করতে চাইতেন। এটার জন্য যিশু কী করতে প্রস্তুত ছিলেন? তিনি বলেছিলেন, “আমি নিজের জীবন দান করি।” (যোহন ১০:১৭, ১৮) তিনি তাঁর পিতার জন্য নিজের জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলেন।b আদম ও হবা নিখুঁত ছিলেন, কিন্তু তারা যিহোবাকে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন এবং শয়তানের পক্ষ নিয়েছিলেন। এর বিপরীতে, যিশু তাঁর পিতাকে এত ভালোবাসতেন যে, তিনি ইচ্ছুকমনে পৃথিবীতে এসেছিলেন এবং সবসময় যিহোবার প্রতি বাধ্যতা দেখিয়েছিলেন। (ইব্রীয় ৪:১৫; ৫:৭-১০) তিনি যাতনাদণ্ডে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করা পর্যন্ত যিহোবার প্রতি বিশ্বস্ত ছিলেন। (ইব্রীয় ১২:২) এভাবে যিশু প্রমাণ করেছিলেন যে, তিনি যিহোবাকে এবং তাঁর নামকে কতটা ভালোবাসতেন।

১৩. যিশু কেন সবচেয়ে ভালোভাবে এটা প্রমাণ করতে পারতেন যে, শয়তান মিথ্যাবাদী? (ছবিও দেখুন।)

১৩ যিশু নিজের জীবনধারার মাধ্যমে প্রমাণ করেছিলেন যে, শয়তান মিথ্যাবাদী, যিহোবা নন। (যোহন ৮:৪৪) যিশু যিহোবাকে যতটা ভালোভাবে জানেন, ততটা আর কেউই জানে না। শয়তান যে-অভিযোগগুলো এনেছিল, সেগুলোর মধ্যে একটাও যদি সত্য হত, তা হলে যিশু নিশ্চয়ই সেই বিষয়ে জানতেন। কিন্তু, তিনি জানতেন যে, শয়তানের দাবি মিথ্যা, তাই তিনি যিহোবার পক্ষসমর্থন করেছিলেন এবং ক্রমাগত তাঁর নামকে পবিত্র করেছিলেন। যাতনাদণ্ডে যিশু যখন বুঝতে পেরেছিলেন যে, যিহোবা তাঁকে পরিত্যাগ করেছেন, তখনও তিনি নিজের জীবন দেওয়ার ক্ষেত্রে পিছিয়ে যাননি। শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত তিনি যিহোবার প্রতি বিশ্বস্ত ছিলেন।—মথি ২৭:৪৬.c

যিশু যাতনাদণ্ডে ঝুলে রয়েছেন।

যিশু যেভাবে জীবনযাপন করেছিলেন, তা প্রমাণ করেছিল যে, শয়তান মিথ্যাবাদী যিহোবা নন! (১৩ অনুচ্ছেদ দেখুন)


“তুমি আমাকে যে-কাজ দিয়েছ, তা শেষ . . . করেছি”

১৪. যিহোবার প্রতি বিশ্বস্ত থাকার ফলে যিশু কোন পুরস্কার পেয়েছিলেন?

১৪ মারা যাওয়ার আগের রাতে যিশু প্রার্থনায় বলেছিলেন, ‘তুমি আমাকে যে-কাজ দিয়েছ, তা শেষ . . . করেছি।’ যিশু পুরোপুরি নিশ্চিত ছিলেন যে, যিহোবা তাঁর বিশ্বস্ততার জন্য তাঁকে পুরস্কার দেবেন। (যোহন ১৭:৪, ৫) আর যিহোবা এমনটাই করেছিলেন। তিনি যিশুকে কবরে রেখে দেননি বরং তাঁকে পুনরুত্থিত করেছিলেন এবং স্বর্গে আগের চেয়েও উচ্চ এক পদ দিয়েছিলেন। (প্রেরিত ২:২৩, ২৪; ফিলি. ২:৮, ৯) পরবর্তী সময়ে, যিহোবা যিশুকে তাঁর রাজ্যের রাজা হিসেবে নিযুক্ত করেছিলেন। এই রাজ্য কী করবে? আদর্শ প্রার্থনায় যিশু বলেছিলেন, “তোমার রাজ্য আসুক। তোমার [যিহোবার] ইচ্ছা যেমন স্বর্গে, তেমনই পৃথিবীতেও পূর্ণ হোক।”—মথি ৬:১০.

১৫. যিশু ভবিষ্যতে কী করবেন?

১৫ ভবিষ্যতে যিশু আরমাগিদোনের যুদ্ধে যিহোবার শত্রুদের সঙ্গে লড়াই করবেন এবং মন্দ লোকদের শেষ করে দেবেন। (প্রকা. ১৬:১৪, ১৬; ১৯:১১-১৬) এর পরে যিশু শয়তানকে ‘অতল গহ্বরে’ ফেলে দেবেন, যেখানে সে আর কিছুই করতে পারবে না। (প্রকা. ২০:১-৩) যিশু তাঁর হাজার বছরের রাজত্বের সময়ে পুরো পৃথিবীতে শান্তি নিয়ে আসবেন এবং সমস্ত মানুষকে নিখুঁত হতে সাহায্য করবেন। তিনি মৃত ব্যক্তিদের পুনরুত্থিত করবেন এবং পুরো পৃথিবীকে পরমদেশে পরিণত করবেন। সেইসময়ে পৃথিবী ও মানুষের জন্য যিহোবার যে-উদ্দেশ্য রয়েছে, তা পরিপূর্ণ হবে।—প্রকা. ২১:১-৪.

১৬. যিশুর হাজার বছরের রাজত্বের শেষে কী হবে?

১৬ যিশুর হাজার বছরের রাজত্বের শেষে সমস্ত পাপ নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। আমাদের আর মুক্তির মূল্যের ভিত্তিতে পাপের ক্ষমা লাভ করার প্রয়োজন পড়বে না এবং ঈশ্বরের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য কোনো মধ্যস্থতাকারী অথবা যাজকদের প্রয়োজন হবে না। আমাদের “শেষ শত্রু যে মৃত্যু, সেটাকেও ধ্বংস করে দেওয়া হবে,” যেটা আমরা আদমের কাছ থেকে পেয়েছি। সমস্ত কবর খালি হয়ে যাবে। মৃত ব্যক্তিরা পুনরুত্থিত হয়ে যাবে এবং পৃথিবীতে সমস্ত ব্যক্তি নিখুঁত হয়ে যাবে।—১ করি. ১৫:২৫, ২৬.

১৭-১৮. (ক) খ্রিস্টের হাজার বছরের রাজত্বের শেষে কী হবে? (খ) হাজার বছরের রাজত্ব শেষ হওয়ার পর যিশু কী করবেন? (১ করিন্থীয় ১৫:২৪, ২৮) (ছবিও দেখুন।)

১৭ যিশুর হাজার বছরের রাজত্বের পর কী হবে? সেই সময়টা খুবই বিশেষ হবে। যিহোবার নাম পবিত্র করা হবে। বছরের পর বছর ধরে যিহোবার নাম নিয়ে যে-বিচার্য বিষয় চলছে, সেটা চিরকালের জন্য শেষ হয়ে যাবে। কেন আমরা তা বলতে পারি? এদন উদ্যানে শয়তান দাবি করেছিল যে, যিহোবা হলেন মিথ্যাবাদী। তিনি একজন ভালো শাসক নন এবং মানুষকে ভালোবাসেন না। কিন্তু, সেইসময় থেকে শুরু করে এখনও পর্যন্ত যিহোবাকে ভালোবাসে এবং সম্মান করে এমন অনেক ব্যক্তি তাঁর নামকে পবিত্র করেছে। খ্রিস্টের হাজার বছরের রাজত্বের শেষে যিহোবা নিজের নামকে পুরোপুরি পবিত্র করবেন এবং চিরকালের জন্য এটা প্রমাণ করে দেবেন যে, তিনি হলেন একজন প্রেমময় পিতা।

১৮ অবশেষে এটা প্রমাণ হয়ে যাবে যে, শয়তান যিহোবার উপর যে-অভিযোগ এনেছে, তা মিথ্যা। হাজার বছর রাজত্ব শেষ হওয়ার পর যিশু কী করবেন? তিনিও কি শয়তানের মতো যিহোবার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করবেন? একেবারেই না! (পড়ুন, ১ করিন্থীয় ১৫:২৪, ২৮.) তিনি তাঁর পিতা যিহোবাকে রাজ্য ফিরিয়ে দেবেন এবং তাঁর নিয়ন্ত্রণাধীন হবেন। যিশু ইচ্ছুকমনে সমস্ত কিছু তাঁর পিতাকে দিয়ে দেবেন কারণ তিনি যিহোবাকে অনেক ভালোবাসেন।

যিশু স্বর্গে তাঁর মুকুট যিহোবাকে দিয়ে দিচ্ছেন।

যিশু ইচ্ছুকমনে তাঁর হাজার বছরের রাজত্বের পর যিহোবাকে রাজ্য ফিরিয়ে দেবেন (১৮ অনুচ্ছেদ দেখুন)


১৯. যিশুর কাছে যিহোবার নাম কেন এত গুরুত্বপূর্ণ ছিল?

১৯ আমরা দেখতে পারলাম যে, কেন যিহোবা যিশুকে নিজের নাম দিয়েছিলেন! যিশু যিহোবার প্রতিনিধি ছিলেন এবং তিনি ঠিক সেটাই করেছিলেন, যেমনটা তাঁর পিতা চেয়েছিলেন। যিহোবার নামের পক্ষসমর্থন করেছিলেন। তাঁর কাছে এই নাম কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল? যেকোনো কিছুর চেয়ে তাঁর পিতার নাম তাঁর কাছে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এই নামের জন্য তিনি এমনকী নিজের জীবন দেওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিলেন এবং তাঁর হাজার বছরের রাজত্বের পর তিনি সমস্ত কিছু তাঁর পিতাকে দিয়ে দেবেন। এখন প্রশ্ন হল, আমরা কীভাবে যিশুকে অনুকরণ করতে পারি? এই বিষয়ে আমরা পরের প্রবন্ধে জানতে পারব।

আপনি কীভাবে উত্তর দেবেন?

  • যিশু যখন বলেছিলেন যে, তিনি শিষ্যদের যিহোবার নাম জানিয়েছেন, তখন এর অর্থ কী ছিল?

  • যিহোবা যখন যিশুকে নিজের নাম দিয়েছিলেন, তখন এর অর্থ কী ছিল?

  • যিশু যিহোবার নামের জন্য কী করতে প্রস্তুত ছিলেন এবং কেন?

গান ১৬ যিহোবাকে তাঁর পুত্রের জন্য প্রশংসা করো

a যিশু ছাড়া অন্যান্য স্বর্গদূতও যিহোবার নামে অথবা তাঁর হয়ে লোকদের নির্দেশনা দিয়েছিল। বাইবেলের অনেক জায়গায় যখন স্বর্গদূতেরা লোকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন, তখন এমনটা বলা হয়েছে, যেন যিহোবা নিজে কথা বলছেন। (আদি. ১৮:১-৩৩) যেমন, কিছু শাস্ত্রপদে বলা হয়েছে যে, যিহোবা মোশিকে আইন দিয়েছিলেন। কিন্তু অন্যান্য শাস্ত্রপদ থেকে জানা যায় যে, যিহোবা স্বর্গদূতদের মাধ্যমে এই আইন পৌঁছে দিয়েছিলেন।—লেবীয়. ২৭:৩৪; প্রেরিত ৭:৩৮, ৫৩; গালা. ৩:১৯; ইব্রীয় ২:২-৪.

b এ ছাড়া, যিশুর বলিদান মানুষের জন্য অনন্তজীবনের পথ খুলে দিয়েছে।

c ২০২১ সালের এপ্রিল মাসের ৩০-৩১ পৃষ্ঠায় দেওয়া প্রহরীদুর্গ পত্রিকার “পাঠকদের কাছ থেকে প্রশ্ন” পড়ুন।

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৫)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার