ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w23 অক্টোবর পৃষ্ঠা ১২-১৭
  • “তিনি তোমাদের দৃঢ় করবেন”

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • “তিনি তোমাদের দৃঢ় করবেন”
  • প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য সম্বন্ধে ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০২৩
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • প্রার্থনা এবং অধ্যয়ন করে শক্তি লাভ করুন
  • যিহোবার দাসদের কাছ থেকে শক্তি লাভ করুন
  • আপনার প্রত্যাশা থেকে শক্তি লাভ করুন
  • তিনি তার ভুলগুলো থেকে শিখেছিলেন
    তাদের বিশ্বাস অনুকরণ করুন
  • তিনি তার ভুলগুলো থেকে শিখেছিলেন
    ২০০৯ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • যিহোবার দয়া সম্বন্ধে যোনা শেখেন
    ১৯৯৬ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • অন্যদের যিহোবার মতো করে দেখার চেষ্টা করুন
    ২০০৩ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
আরও দেখুন
প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য সম্বন্ধে ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০২৩
w23 অক্টোবর পৃষ্ঠা ১২-১৭

অধ্যয়ন প্রবন্ধ ৪৩

“তিনি তোমাদের দৃঢ় করবেন”

“[যিহোবা] তোমাদের দৃঢ় করবেন, সবল করবেন এবং শক্ত ভিত্তির উপর দাঁড় করাবেন।”—১ পিতর ৫:১০.

গান ৩৮ তিনি সবল করবেন তোমায়

সারাংশa

১. অতীতে ঈশ্বরের দাসেরা কেন শক্তিশালী হতে পেরেছিল?

বাইবেল প্রায়ই বলে যে, যিহোবার বিশ্বস্ত দাসেরা শক্তিশালী ছিলেন। কিন্তু, যারা খুব শক্তিশালী ছিলেন, তারাও সবসময় এমনটা মনে করেননি তারা শক্তিশালী। যেমন, রাজা দায়ূদ অনেকবার অনুভব করেছিলেন যে, তিনি পর্বতের মতো শক্তিশালী। কিন্তু, কখনো কখনো তিনি “বিহ্বল” হয়ে পড়তেন বা ভয় পেতেন। (গীত. ৩০:৭) ঈশ্বরের পবিত্র শক্তি যখন শিম্‌শোনের উপর কাজ করত, তখন তিনি অসাধারণ শক্তি লাভ করতেন। কিন্তু তিনি জানতেন, ঈশ্বরের পবিত্র শক্তি ছাড়া তার ‘শক্তি ফুরিয়ে যাবে আর তিনি সাধারণ মানুষের মতোই দুর্বল হয়ে পড়বেন।’ (বিচার. ১৪:৫, ৬; ১৬:১৭, NW) আসলে, যিহোবাই এই বিশ্বস্ত দাসদের শক্তিশালী করেছিলেন।

২. কেন পৌল এমনটা বলেছিলেন, যখন তিনি দুর্বল, তখনই তিনি শক্তিশালী? (২ করিন্থীয় ১২:৯, ১০)

২ প্রেরিত পৌল জানতেন যে, তারও যিহোবার কাছ থেকে শক্তির প্রয়োজন। (পড়ুন, ২ করিন্থীয় ১২:৯, ১০.) কেন? কারণ পৌলেরও কিছু স্বাস্থ্যগত সমস্যা ছিল, যেমনটা আমাদের মধ্যে অনেকেরই রয়েছে। (গালা. ৪:১৩, ১৪) অনেকসময় সঠিক কাজ করাও পৌলের জন্য কঠিন বলে মনে হত। (রোমীয় ৭:১৮, ১৯) আর মাঝে মাঝে তিনি উদ্‌বিগ্ন হয়ে পড়তেন এবং এই ভেবে ভয় পেতেন যে, তার সঙ্গে পরবর্তী সময়ে কী হবে। (২ করি. ১:৮, ৯) তা সত্ত্বেও, তিনি বলেছিলেন, যখনই তিনি দুর্বল তখনই তিনি শক্তিশালী। কেন তিনি এমনটা বলতে পেরেছিলেন? যিহোবা তাকে প্রয়োজনীয় শক্তি দিয়েছিলেন, যাতে তিনি তার সমস্যাগুলোর সঙ্গে মোকাবিলা করতে পারেন।

৩. এই প্রবন্ধে আমরা কোন প্রশ্নগুলোর উত্তর জানতে পারব?

৩ যিহোবা প্রতিজ্ঞা করেছেন যে, তিনি আমাদেরও শক্তিশালী করবেন। (১ পিতর ৫:১০) কিন্তু, আমরা আপনা-আপনি যিহোবার কাছ থেকে শক্তি পাব না, আমাদেরও কিছু করতে হবে। উদাহরণ স্বরূপ, একটা গাড়িতে ইঞ্জিন থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু, শুধু ইঞ্জিন থাকলেই গাড়ি আপনা-আপনি চলবে না বরং ড্রাইভারকে সেটা চালাতে হবে, তখনই সেটা চলবে। ঠিক একইভাবে, যিহোবা আমাদের শক্তি দেওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছেন। কিন্তু, সেটা পাওয়ার জন্য আমাদেরও কিছু করতে হবে। যিহোবা আমাদের শক্তিশালী করার জন্য কোন ব্যবস্থা করেছেন? তাঁর কাছ থেকে শক্তি পাওয়ার জন্য আমাদের কী করতে হবে? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর পাওয়ার জন্য আমরা লক্ষ করব যে, ভাববাদী যোনা, যিশুর মা মরিয়ম এবং প্রেরিত পৌলকে যিহোবা কীভাবে শক্তিশালী করেছিলেন। আমরা এই প্রবন্ধে এও দেখব যে, বর্তমানে যিহোবা তাঁর দাসদের কীভাবে শক্তিশালী করেন।

প্রার্থনা এবং অধ্যয়ন করে শক্তি লাভ করুন

৪. যিহোবার কাছ থেকে শক্তি লাভ করার জন্য আমরা কী করতে পারি?

৪ যিহোবার কাছ থেকে শক্তি পাওয়ার একটা উপায় হল, তাঁর কাছে প্রার্থনা করা। যখন আমরা প্রার্থনা করি, তখন যিহোবা আমাদের তাঁর “অসাধারণ শক্তি” দিতে পারেন। (২ করি. ৪:৭) আর যিহোবা বাইবেলের মাধ্যমে যে-বার্তা লিখিয়েছেন, তা “অত্যন্ত ক্ষমতাশালী।” (ইব্রীয় ৪:১২) সেইজন্য, আমরা যখন ঈশ্বরের বাক্য পড়ি এবং সেটি নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করি, তখন তা থেকেও আমরা সাহস ও শক্তি লাভ করতে পারি। (গীত. ৮৬:১১) তাই, যিহোবার কাছে প্রার্থনা করুন এবং তাঁর বাক্য বাইবেল পড়ুন, তা করলে তিনি আপনাকে শক্তি দেবেন। এর মাধ্যমে আপনি কঠিন পরিস্থিতির সঙ্গে মোকাবিলা করতে পারবেন, আপনার আনন্দ বজায় রাখতে পারবেন এবং সেই দায়িত্ব ভালোভাবে পালন করতে পারবেন, যেটা হয়তো আপনার কাছে কঠিন বলে মনে হয়। এখন আসুন আমরা লক্ষ করি, কীভাবে যিহোবা ভাববাদী যোনাকে সাহস ও শক্তি জুগিয়েছিলেন।

৫. কেন যোনার সাহসের প্রয়োজন ছিল?

৫ ভাববাদী যোনারও সাহসের প্রয়োজন ছিল। যিহোবা তাকে যে-কার্যভার দিয়েছিলেন, সেটা তার কাছে কঠিন বলে মনে হয়েছিল। সেইজন্য, তিনি একটা জাহাজে চড়ে উলটো দিকে পালিয়ে যান। তারপর সমুদ্রে এক ভয়ঙ্কর ঝড় ওঠে, যেটার ফলে তার সঙ্গে জাহাজে থাকা অন্যান্য লোকদের জীবনও ঝুঁকির মুখে পড়ে যায়। নাবিকেরা যখন তাকে ধরে সমুদ্রে ফেলে দেয়, তখন একটা বড়ো মাছ এসে তাকে গিলে নেয়। এখন যোনা মাছের পেটের মধ্যে রয়েছেন এবং তার চারিদিকে শুধুই অন্ধকার। কল্পনা করুন, যোনার কেমন লাগছিল। তিনি কি এমনটা চিন্তা করছিলেন, তার বাঁচার কোনো আশা নেই? কিংবা তার কি এইরকম মনে হচ্ছিল, যিহোবা তাকে ছেড়ে দিয়েছেন? যোনা সেইসময় সত্যিই খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন।

কোলাজ: ১. যোনা মাছের পেটে রয়েছেন এবং তিনি আন্তরিকভাবে যিহোবার কাছ প্রার্থনা করছেন। ২. একজন ভাই তার রুমে বসে আন্তরিকভাবে যিহোবার কাছ প্রার্থনা করছেন। তার পাশে বাইবেল, তার ফোন এবং ইয়ারফোন রয়েছে।

যখন আমরা কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাই, তখন কীভাবে আমরা যোনার মতো শক্তি লাভ করতে পারি? (৬-৯ অনুচ্ছেদ দেখুন)

৬. যোনা ২:১, ২, ৭ পদ অনুযায়ী যোনা যখন মাছের পেটের মধ্যে ছিলেন, তখন সাহস পাওয়ার জন্য তিনি কী করেছিলেন?

৬ যোনা একদম একা ছিলেন, তার আশেপাশে কেউ ছিল না। এইরকম পরিস্থিতিতে সাহস পাওয়ার জন্য যোনা কী করেছিলেন? তিনি যিহোবার কাছে প্রার্থনা করেছিলেন। (পড়ুন, যোনা ২:১, ২, ৭.) যোনা যিহোবার আজ্ঞার অবাধ্য হয়েছিলেন, কিন্তু তিনি অনুতপ্ত হয়েছিলেন। তাই, তিনি পুরোপুরি নিশ্চিত ছিলেন যে, যিহোবা তার প্রার্থনা শুনবেন। যোনা সেই সমস্ত বিষয় নিয়েও চিন্তা করেছিলেন, যেগুলো তিনি আগে শাস্ত্রে পড়েছিলেন। কেন আমরা এমনটা বলতে পারি? যোনা বইয়ের দুই অধ্যায়ে যোনার যে-প্রার্থনা লেখা রয়েছে, সেখানে এমন কিছু বিষয় লেখা আছে, যেটা আমরা গীতসংহিতা বইয়েও পাই। (উদাহরণ স্বরূপ, যোনা ২:২, ৫ পদের সঙ্গে গীতসংহিতা ৬৯:১; ৮৬:৭ পদের তুলনা করুন।) এর থেকে স্পষ্টভাবে বোঝা যায় যে, যোনা সেই সমস্ত বিষয় খুব ভালোভাবে জানতেন। আর এখন এই কঠিন পরিস্থিতিতে তিনি সেই বিষয়গুলো নিয়ে চিন্তা করছিলেন। এর ফলে, তিনি পুরোপুরিভাবে নিশ্চিত হয়েছিলেন যে, যিহোবা তাকে সাহায্য করবেন। কিছুসময় পর মাছটা যোনাকে একটা শুষ্ক ভূমিতে বমি করে দিয়েছিল। এখন যোনা যিহোবার দেওয়া কার্যভার পালন করার জন্য পুরোপুরিভাবে প্রস্তুত ছিলেন।—যোনা ২:১০–৩:৪.

৭-৮. কীভাবে তাইওয়ানে থাকা একজন ভাই সমস্যার সময়েও সাহস লাভ করেছিলেন?

৭ যোনার উদাহরণ আমাদের সবাইকে সাহায্য করে, বিশেষ করে যখন আমরা কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হই। জিমিং নামে তাইওয়ানে থাকা এক ভাইয়ের উদাহরণের প্রতি মনোযোগ দিন, যিনি বিভিন্ন কঠিন রোগের সঙ্গে লড়াই করছেন।b সেই ভাই এত অসুস্থ থাকার পরও তার পরিবারের লোকেরা তার প্রতি খারাপ ব্যবহার করে শুধুমাত্র এই কারণের জন্য যে, তিনি একজন যিহোবার সাক্ষি। এইরকম পরিস্থিতিতে প্রার্থনা করা এবং বাইবেল পড়া ভাইকে সাহস জোগায়। তিনি বলেন, “যখন সমস্যা বেড়ে যায়, তখন আমি এতটা উদ্‌বিগ্ন হয়ে পড়ি যে, আমি অধ্যয়ন করতে পারি না।” কিন্তু, ভাই হাল ছেড়ে দেননি। তিনি বলেন, “প্রথমে আমি যিহোবার কাছে প্রার্থনা করি, তারপর কানে ইয়ারফোন লাগিয়ে রাজ্যের গান শুনি। অনেকসময় গান শোনার সঙ্গে সঙ্গে আমি মনে মনে গুনগুনও করি, যতক্ষণ না আমার মন শান্ত হয়। আর তারপর আমি অধ্যয়ন করা শুরু করি।”

৮ ব্যক্তিগত অধ্যয়ন করার ফলে ভাই জিমিং অনেক সাহস লাভ করেছিলেন। লক্ষ করুন, একবার তার প্রতি কী ঘটেছিল। একবার তার একটা বড়ো অপারেশন হয়েছিল। অপারেশন করার পর একজন নার্স এসে তাকে বলেন যে, তার শরীরে রক্ত (লোহিত রক্তকণিকা) অনেক কমে গিয়েছে, তাই তাকে রক্ত নিতে হবে। কিন্তু, ভাই রক্ত না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কীভাবে তিনি এই সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছিলেন? অপারেশন করার আগের রাতে ভাই এমন একজন বোনের অভিজ্ঞতা পড়েছিলেন, যার একইরকম অপারেশন হয়েছিল। সেই বোনের শরীরের রক্ত ভাইয়ের শরীরের চেয়েও অনেক কমে গিয়েছিল। কিন্তু, তারপরও বোন রক্ত নেননি আর পরে তিনি সুস্থও হয়ে গিয়েছিলেন। সেই বোনের অভিজ্ঞতা ভাইকে অনেক সাহস জুগিয়েছিল এবং যিহোবার প্রতি অনুগত থাকতে সাহায্য করেছিল।

৯. আপনি যদি কোনো কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যান বা দুশ্চিন্তার মধ্যে থাকেন, তা হলে আপনি কী করতে পারেন? (ছবিগুলোও দেখুন।)

৯ আপনি যখন কোনো কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যান, তখন কি আপনি এতটাই চিন্তিত হয়ে পড়েন যে, আপনি ভালোভাবে প্রার্থনা করতে পারেন না? কিংবা আপনি কি এতটাই ক্লান্ত হয়ে পড়েন যে, অধ্যয়নও করতে পারেন না? যদি এমনটা হয়, তা হলে মনে রাখবেন, যিহোবা আপনার পরিস্থিতি বোঝেন। এইরকম পরিস্থিতিতে আপনি যদি একটা ছোটো প্রার্থনাও করেন, তা হলে নিশ্চিত থাকুন যে, যিহোবা আপনার প্রার্থনা শুনবেন এবং আপনাকে প্রয়োজনীয় সাহায্য জুগিয়ে দেবেন। (ইফি. ৩:২০) আপনি যদি অসুস্থ কিংবা দুশ্চিন্তার মধ্যে থাকেন অথবা আপনি এতটাই ক্লান্ত যে, আপনার পড়ার বা অধ্যয়ন করার শক্তি নেই, তা হলে এইরকম পরিস্থিতিতে আপনি কি আমাদের প্রকাশনার অডিও শুনতে পারেন? আপনি যদি চান, তা হলে jw.org-এ কোনো গান শুনতে পারেন বা ভিডিও দেখতে পারেন। আপনি যখন প্রার্থনা করবেন এবং যিহোবা অন্যান্য যে-সমস্ত ব্যবস্থা করেছেন, সেগুলোতে আপনার প্রার্থনার উত্তর খোঁজার চেষ্টা করবেন, তখন আপনি যিহোবাকে এই সুযোগ দিচ্ছেন, যেন তিনি আপনাকে শক্তি দেন।

যিহোবার দাসদের কাছ থেকে শক্তি লাভ করুন

১০. কীভাবে ভাই-বোনেরা আমাদের সাহস বৃদ্ধি করে?

১০ যিহোবা আমাদের খ্রিস্টীয় ভাই-বোনদের মাধ্যমেও শক্তি অথবা সাহস জোগাতে পারেন। যখন আমরা কোনো দুশ্চিন্তার মধ্য দিয়ে যাই বা কোনো দায়িত্ব পালন করা আমাদের জন্য কঠিন বলে মনে হয়, তখন ভাই-বোনেরা আমাদের “সান্ত্বনা” দিতে পারেন। (কল. ৪:১০, ১১) “দুর্দ্দশার” সময়ে আমাদের বন্ধুদের বেশি প্রয়োজন হয়। (হিতো. ১৭:১৭) যখন আমরা দুর্বল অনুভব করি, তখন ভাই-বোনেরা আমাদের প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো জোগাতে পারে, আমাদের সান্ত্বনা দিতে পারে, আমাদের সাহস জোগাতে পারে, যেন আমরা বিশ্বস্ততার সঙ্গে যিহোবার সেবা করে চলি। এখন আসুন আমরা লক্ষ করি, যিশুর মা মরিয়ম কীভাবে অন্যদের কাছ থেকে সাহস লাভ করেছিলেন।

১১. কেন মরিয়মের সাহসের প্রয়োজন ছিল?

১১ মরিয়মের সাহসের প্রয়োজন ছিল। কল্পনা করুন, যখন গাব্রিয়েল নামে একজন স্বর্গদূত তাকে বলেছিলেন যে, মরিয়ম এক সন্তানের জন্ম দেবেন, তখন তিনি কত ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন। এখনও পর্যন্ত তার বিয়ে হয়নি। কিন্তু, তিনি গর্ভবতী হতে চলেছেন। সন্তান লালনপালন করার তার কোনো অভিজ্ঞতা ছিল না। কিন্তু, তাকে এমন এক সন্তানকে বড়ো করে তুলতে হত, যিনি পরবর্তী সময়ে মশীহ হবেন। মরিয়ম এখনও পর্যন্ত কোনো পুরুষের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেননি। কিন্তু, তারপরও তিনি মা হতে চলেছেন। তিনি যোষেফকে কীভাবে এই সমস্ত কিছু বোঝাবেন, যিনি তার স্বামী হবেন?—লূক ১:২৬-৩৩.

১২. লূক ১:৩৯-৪৫ পদ অনুযায়ী মরিয়ম কীভাবে সাহস লাভ করেছিলেন?

১২ মরিয়ম এক অপূর্ব ও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পেয়েছিলেন। সেই দায়িত্ব পালন করার জন্য তিনি কীভাবে সাহস পেয়েছিলেন? তিনি অন্যদের কাছ থেকে সাহায্য চেয়েছিলেন। যেমন, তিনি গাব্রিয়েল স্বর্গদূতকে বলেছিলেন, যেন তিনি সেই বিষয়ে তাকে আরও তথ্য দেন। (লূক ১:৩৪) কিছুসময় পর, মরিয়ম এক দীর্ঘ যাত্রা করে যিহূদার “পাহাড়ি অঞ্চলে” তার আত্মীয় ইলীশাবেতের সঙ্গে দেখা করতে যান। আর এই সিদ্ধান্ত নিয়ে মরিয়ম ভালোই করেছিলেন। ইলীশাবেৎ মরিয়মের অনেক প্রশংসা করেন এবং যিহোবার সাহায্যে তিনি মরিয়মের সন্তানের বিষয়ে এক ভবিষ্যদ্‌বাণী করেন। (পড়ুন, লূক ১:৩৯-৪৫.) তখন মরিয়ম বলেছিলেন যে, যিহোবা “তাঁর হস্ত দিয়ে পরাক্রমী কাজ করেছেন।” (লূক ১:৪৬-৫১) গাব্রিয়েল স্বর্গদূত ও ইলীশাবেতের মাধ্যমে যিহোবা মরিয়মকে সাহস জুগিয়েছিলেন।

১৩. বলিভিয়ায় থাকা আমাদের একজন বোন যখন ভাই-বোনদের সাহায্য নিয়েছিলেন, তখন কী হয়েছিল?

১৩ মরিয়মের মতো আপনিও ভাই-বোনদের কাছ থেকে সাহস লাভ করতে পারেন। বলিভিয়ায় থাকা বোন দাসুরিরও সাহসের প্রয়োজন ছিল। তার বাবার এমন এক রোগ হয়েছিল, যেটার কোনো চিকিৎসা ছিল না। যখন তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল, তখন বোন দাসুরি তার দেখাশোনা করতেন। (১ তীম. ৫:৪) এমনটা করা বোনের জন্য সবসময় সহজ ছিল না। তিনি বলেন, “অনেকসময় আমার মনে হত, আমি আর পারছি না।” তখন বোন কি অন্যদের কাছ থেকে সাহায্য নিয়েছিলেন? প্রথম প্রথম তিনি নেননি। তিনি বলেন, “আমি ভাই-বোনদের কোনো দুশ্চিন্তার মধ্যে ফেলতে চাইনি, আমি মনে করতাম, যিহোবা তো আমার সঙ্গে আছেন, তিনি আমাকে সাহায্য করবেন। কিন্তু, পরে আমি বুঝতে পারি, আমি অন্যদের থেকে নিজেকে আলাদা করে রাখছি এবং নিজের সমস্যাগুলো নিজেই সমাধান করার চেষ্টা করছি।” (হিতো. ১৮:১) পরে, বোন দাসুরি তার কিছু বন্ধুকে বলেন যে, তিনি কোন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। তিনি বলেন,“ভাই-বোনদের কাছ থেকে আমি যে-সাহস পেয়েছিলাম, তা আমি ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। তারা হাসপাতালে খাবার নিয়ে এসেছিল এবং বাইবেল থেকে আমাকে এমন বিষয়গুলো বলেছিল, যেখান থেকে আমি অনেক সান্ত্বনা পেয়েছিলাম। এটা জেনে আমরা অনেক সাহস পাই যে, আমরা একা নই, আমরা যিহোবার এক বড়ো পরিবারের অংশ। এটা এমন এক পরিবার, যা প্রয়োজনের সময় আপনার হাত ধরে, আপনার দুঃখে কাঁদে এবং আপনি যখন কোনো কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যান, তখন আপনার পাশে থাকে।”

১৪. কেন আমাদের প্রাচীনদের কাছ থেকে সাহায্য নেওয়ার ক্ষেত্রে ইতস্তত বোধ করা উচিত নয়?

১৪ যিহোবা প্রাচীনদের মাধ্যমেও আমাদের সাহস বৃদ্ধি করতে পারেন। তারা যিহোবার কাছ থেকে পাওয়া এক উপহার। তাদের মাধ্যমে তিনি আমাদের শক্তি দিতে পারেন এবং সতেজ করতে পারেন। (যিশা. ৩২:১, ২) তাই, আপনি যখন চিন্তিত থাকেন, তখন প্রাচীনদের কাছে আপনার চিন্তার বিষয়গুলো বলুন। তারা যখন আপনাকে সাহায্য করেন, তখন ইতস্তত বোধ করবেন না বরং তাদের কাছ থেকে সাহায্য নিন। তাদের মাধ্যমে যিহোবা আপনাকে শক্তিশালী করতে পারেন।

আপনার প্রত্যাশা থেকে শক্তি লাভ করুন

১৫. প্রত্যেক খ্রিস্টানের কাছে কোন অপূর্ব প্রত্যাশা রয়েছে?

১৫ বাইবেলে আমরা যে-প্রত্যাশা পেয়েছি, তা থেকে আমরা সাহস অথবা শক্তি লাভ করতে পারি। (রোমীয় ৪:৩, ১৮-২০) খ্রিস্টান হিসেবে আমাদের প্রত্যেকের চিরকাল পৃথিবীতে বেঁচে থাকার এক অপূর্ব প্রত্যাশা রয়েছে। আমাদের মধ্যে বেশিরভাগ লোকের পরমদেশ পৃথিবীতে বেঁচে থাকার এবং কিছু লোকের স্বর্গে বেঁচে থাকার প্রত্যাশা রয়েছে। এই প্রত্যাশা আমাদের কঠিন পরিস্থিতি সহ্য করতে, প্রচার কাজ চালিয়ে যেতে এবং মণ্ডলীতে বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করতে শক্তি দেয়। (১ থিষল. ১:৩) প্রেরিত পৌলও এই প্রত্যাশা থেকে অনেক সাহস লাভ করেছিলেন।

১৬. কেন প্রেরিত পৌলের শক্তির প্রয়োজন ছিল?

১৬ পৌলের শক্তির প্রয়োজন হয়েছিল। করিন্থীয়দের উদ্দেশ্যে লেখা তার দ্বিতীয় চিঠিতে পৌল নিজেকে মাটির পাত্রের মতো দুর্বল বলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, তাকে ‘ঘিরে ধরা’ হচ্ছে, তিনি “বিভ্রান্ত,” তার উপর ‘তাড়না’ করা হচ্ছে এবং তাকে “মাটিতে আছড়ে ফেলে দেওয়া হচ্ছে।” এমনকী তার জীবনও ঝুঁকির মুখে পড়েছিল। (২ করি. ৪:৮-১০) পৌল এই কথাগুলো তখন লিখেছিলেন, যখন তিনি তার তৃতীয় মিশনারি যাত্রা করছিলেন। তিনি হয়তো জানতেন না যে, পরে তাকে আরও সমস্যার মুখোমুখি হতে হবে। আর এটাই ঘটেছিল। লোকেরা তাকে মারধর করেছিল, তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, তিনি যে-জাহাজে করে যাত্রা করছিলেন, সেটা ডুবে গিয়েছিল এবং তাকে জেলেও বন্দি করা হয়েছিল।

১৭. ২ করিন্থীয় ৪:১৬-১৮ পদ অনুযায়ী কী পৌলকে পরীক্ষাগুলো সহ্য করতে শক্তি জুগিয়েছিল?

১৭ শক্তি লাভ করার জন্য পৌল তার প্রত্যাশার উপর মনোযোগ দিয়েছিলেন। (পড়ুন, ২ করিন্থীয় ৪:১৬-১৮.) তিনি করিন্থীয় খ্রিস্টানদের বলেছিলেন, যদিও তার “দেহ ক্ষয় পাচ্ছে,” কিন্তু তিনি হাল ছেড়ে দেবেন না। পৌলের কাছে স্বর্গে চিরকাল বেঁচে থাকার যে-প্রত্যাশা ছিল, সেটাকে “কোনো কিছুর সঙ্গে তুলনা করা যায় না।” সেটা পরিপূর্ণ হতে দেখার জন্য তিনি যেকোনো কঠিন পরিস্থিতির সঙ্গে মোকাবিলা করতে প্রস্তুত ছিলেন। পৌল সবসময় তার প্রত্যাশা নিয়ে চিন্তা করতেন এবং এর মাধ্যমে তিনি অনেক শক্তি লাভ করতেন। তিনি মনে করেছিলেন, তিনি যেন ‘দিন দিন নতুন হচ্ছেন।’

১৮. ভাই তিহমির এবং তার পরিবার কীভাবে প্রত্যাশার বিষয়ে চিন্তা করার ফলে শক্তি লাভ করেছে?

১৮ বুলগেরিয়ায় থাকা ভাই তিহমির তার প্রত্যাশার বিষয়ে চিন্তা করে অনেক শক্তি লাভ করেন। কিছু বছর আগে তার ছোটো ভাই স্টাবকো একটা অ্যাক্সিডেন্টে মারা যান। অনেক সময় কেটে যাওয়ার পরও তিনি সেই বিষয় নিয়ে চিন্তা করতেন এবং দুঃখে ভেঙে পড়তেন। এই শোক কাটিয়ে ওঠার জন্য তিনি এবং তার পরিবার কল্পনা করেন যে, যিহোবা যখন স্টাবকোকে পুনরুত্থিত করবেন, তখন সেই সময়টা কেমন হবে। তিনি বলেন যে, “আমরা একে অন্যের সঙ্গে এই বিষয় নিয়ে কথা বলি, আমরা স্টাবকোর সঙ্গে কোথায় দেখা করব, তার জন্য কী কী খাবার বানাব, তাকে স্বাগত জানানোর জন্য যে-পার্টি রাখব, সেখানে কাদের ডাকব আর শেষকালের বিষয়ে আমরা তাকে কী কী বলব।” ভাই তিহমির বলেন, তিনি এবং তার পরিবার তাদের প্রত্যাশার উপর মনোযোগ বজায় রাখার ফলে অনেক শক্তি পেয়েছে। এর ফলে তারা ধৈর্য ধরতে পারছে এবং সেই দিনের জন্য অপেক্ষা করতে পারছে, যখন যিহোবা তার ভাইকে আবার ফিরিয়ে দেবেন।

একজন বোন যিনি শুনতে পান না, তিনি সাইন ল্যাঙ্গুয়েজে “পরমদেশ জগতে” শিরোনামের গানের ভিডিও দেখছেন। তিনি চিন্তা করছেন, নতুন জগতে জীবন কেমন হবে। তিনি কল্পনা করছেন, নতুন জগতে অন্য মিউজিসিয়ানদের সঙ্গে তিনি চেলো বাজাচ্ছেন।

আপনি কী মনে করেন, নতুন জগতে আপনার জীবন কেমন হবে? (১৯ অনুচ্ছেদ দেখুন)c

১৯. আপনার প্রত্যাশা আরও দৃঢ় করার জন্য আপনি কী করতে পারেন? (ছবিও দেখুন।)

১৯ কীভাবে আপনি আপনার প্রত্যাশা আরও দৃঢ় করতে পারেন? আপনার যদি পৃথিবীতে চিরকাল বেঁচে থাকার আশা থাকে, তা হলে বাইবেলের সেই পদগুলো পড়ুন, যেখানে পরমদেশের বিষয়ে লেখা আছে এবং তা নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করুন। (যিশা. ২৫:৮; ৩২:১৬-১৮) চিন্তা করুন, পরমদেশ পৃথিবীতে জীবন কেমন হবে। নিজেকে সেখানে কল্পনা করুন যে, আপনি কাদের দেখতে পাচ্ছেন? আপনি কোন কোন আওয়াজ শুনতে পাচ্ছেন? আপনি কেমন অনুভব করছেন? এগুলো নিয়ে কল্পনা করার জন্য আপনি চাইলে আমাদের প্রকাশনায় দেওয়া ছবিগুলো দেখতে পারেন অথবা আপনি আমাদের ভিডিও গান দেখতে পারেন। যেমন, পরমদেশ জগতে, রয়েছ তুমি অপেক্ষায় এবং ভেবে দেখো সেই দিন। আমরা যদি নতুন জগতের বিষয়ে আমাদের প্রত্যাশা নিয়ে সবসময় চিন্তা করি, তা হলে বর্তমানে আমাদের সমস্যাগুলো “ক্ষণস্থায়ী ও সামান্য” বলে মনে হবে। (২ করি. ৪:১৭) এই প্রত্যাশার মাধ্যমে যিহোবা আপনাকে শক্তিশালী করবেন এবং কঠিন পরিস্থিতি সহ্য করার জন্য শক্তি দেবেন।

২০. যখন আমরা নিজেদের দুর্বল বলে মনে করি, তখন কীভাবে আমরা শক্তি লাভ করতে পারি?

২০ যদিও আমরা নিজেদের দুর্বল বলে মনে করি, তারপরও “ঈশ্বরের সাহায্যে আমরা জয়লাভ করব।” (গীত. ১০৮:১৩, বাংলা কমন ল্যাঙ্গুয়েজ ভারশন) যিহোবা আগে থেকেই এমন ব্যবস্থা করেছেন, যেটার মাধ্যমে আমরা তাঁর কাছ থেকে শক্তি লাভ করতে পারি। তাই, আপনার যদি কোনো দায়িত্ব পালন করা কঠিন বলে মনে হয় অথবা আপনার সমস্যাগুলোর কারণে এক একটা দিন কাটানো কঠিন বলে মনে হয় কিংবা আপনি আপনার আনন্দ হারিয়ে ফেলেন, তা হলে যিহোবার কাছে হৃদয় উজাড় করে প্রার্থনা করুন এবং ব্যক্তিগত অধ্যয়নের মাধ্যমে তাঁর কাছ থেকে সাহায্য নিন। এ ছাড়া, আপনার ভাই-বোনদের কাছ থেকে সাহায্য নিন এবং সবসময় আপনার প্রত্যাশা নিয়ে চিন্তা করুন। তখন আপনি ‘[ঈশ্বরের] গৌরবময় ক্ষমতার দ্বারা শক্তিশালী হবেন, যাতে আপনি ধৈর্য ও আনন্দ সহকারে পূর্ণরূপে কষ্ট সহ্য করতে পারেন।’—কল. ১:১১.

আপনি কী বলবেন?

  • কীভাবে আপনি প্রার্থনা এবং অধ্যয়ন করার মাধ্যমে শক্তি লাভ করতে পারেন?

  • ভাই-বোনদের কাছ থেকে সাহস লাভ করার জন্য আপনি কী করতে পারেন?

  • কীভাবে আপনি ভবিষ্যতের প্রত্যাশা থেকে শক্তি লাভ করতে পারেন?

গান ৩৩ যিহোবাকে তোমার ভার দিয়ে দাও

a এই প্রবন্ধ বিশেষ করে সেই সমস্ত ভাই-বোনকে সাহায্য করবে, যারা কোনো কঠিন সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে অথবা যারা মনে করে, তাদের যে-দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তারা সেটা পালন করতে পারবে না। এই প্রবন্ধে আমরা শিখব যে, কীভাবে যিহোবা আমাদের শক্তি দিতে পারেন এবং তাঁর সাহায্য পাওয়ার জন্য আমরা কী করতে পারি।

b কিছু নাম পরিবর্তন করা হয়েছে।

c ছবি সম্বন্ধে বর্ণনা: একজন বোন যিনি শুনতে পান না, তিনি ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞা নিয়ে চিন্তা করছেন এবং একটা গানের ভিডিও দেখছেন। তিনি কল্পনা করছেন, নতুন জগতে তার জীবন কেমন হবে।

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৫)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার