অধ্যয়ন প্রবন্ধ ১৫
গান ২৬ তুমি আমায় তা দিলে
যিহোবার সংগঠনের উপর নির্ভরতা বাড়িয়ে চলুন
“যারা তোমাদের মধ্যে নেতৃত্ব নেন এবং যারা তোমাদের কাছে ঈশ্বরের বাক্য বলে গিয়েছেন, সেই ব্যক্তিদের স্মরণ করো।”—ইব্রীয় ১৩:৭.
আমরা কী শিখব?
যিহোবার সংগঠনের উপর আমাদের নির্ভরতা বাড়ানোর জন্য আমরা কী করতে পারি?
১. প্রথম শতাব্দীতে কীভাবে যিহোবার লোকেরা সুসংগঠিতভাবে কাজ করত?
যিহোবা যখন তাঁর লোকদের কোনো কাজ দেন, তখন তিনি চান যেন সেটা ভালোভাবে করা হয়। (১ করি. ১৪:৩৩) উদাহরণ স্বরূপ, ঈশ্বরের ইচ্ছা হল যেন পুরো পৃথিবীতে সুসমাচার প্রচার করা হয়। (মথি ২৪:১৪) তিনি যিশুকে এই দায়িত্ব দিয়েছেন। যিশু খেয়াল রেখেছেন যেন এই কাজটা ভালোভাবে ও সুসংগঠিতভাবে করা হয়। প্রথম শতাব্দীতে জেরুসালেমে প্রাচীন ও প্রেরিতদের একটা দল ছিল, যারা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিত। এরপর, এই সিদ্ধান্তগুলো প্রতিটা মণ্ডলীতে পৌঁছে দেওয়া হত। (প্রেরিত ১৫:২; ১৬:৪) মণ্ডলীর প্রাচীনেরা ভাই-বোনদের এই সিদ্ধান্তগুলো বলত এবং তাদের নির্দেশনা দিত। (প্রেরিত ১৪:২৩) আর ভাই-বোনেরা এগুলো মেনে চলত। তাই, ‘মণ্ডলীগুলো বিশ্বাসে দৃঢ় হয়েছিল এবং সংখ্যায় বৃদ্ধি পেয়েছিল।’—প্রেরিত ১৬:৫.
২. ১৯১৯ সাল থেকে যিহোবা কীভাবে তাঁর লোকদের নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ভালো খাবার জোগাচ্ছেন?
২ বর্তমানেও যিহোবা খেয়াল রাখছেন যেন তাঁর লোকেরা সুসংগঠিতভাবে কাজ করে। ১৯১৯ সালে যিশু অভিষিক্ত খ্রিস্টানদের একটা ছোটো দল গঠন করেছিলেন। সেইসময় থেকে তারা সুসংগঠিতভাবে প্রচার কাজে নেতৃত্ব নিচ্ছে এবং সঠিক সময়ে ঈশ্বরের বাক্য থেকে খাবার জোগাচ্ছে।a (লূক ১২:৪২) এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, যিহোবা এই দলের কাজের উপর আশীর্বাদ করছেন।—যিশা. ৬০:২২; ৬৫:১৩, ১৪.
৩-৪. (ক) উদাহরণের সাহায্যে বলুন, সুসংগঠিতভাবে কাজ করলে কোন উপকার পাওয়া যায়। (খ) এই প্রবন্ধে আমরা কী জানতে পারব?
৩ সুসংগঠিতভাবে কাজ করলে আমরা ভালোভাবে প্রচার কাজ করতে পারব, যেটা যিশু আমাদের করতে বলেছেন। (মথি ২৮:১৯, ২০) ধরুন, প্রচার করার জন্য আমাদের কোনো এলাকা দেওয়া হয়নি, আমরা যেখানে ইচ্ছা প্রচার করতে পারি। তা হলে, কী হবে? হতে পারে, কোনো কোনো এলাকায় বার বার প্রচার করা হবে অথবা কোনো কোনো এলাকা বাদ পড়ে যাবে। সত্যিই, সুসংগঠিতভাবে কাজ করলে অনেক উপকার আসে! আপনি কি আরও কিছু উপকারের বিষয়ে চিন্তা করতে পারেন?
৪ যিশু তাঁর শিষ্যদের সঠিকভাবে কাজ করতে শিখিয়েছিলেন আর বর্তমানেও সেভাবে কাজ করা হচ্ছে। এই প্রবন্ধে আমরা জানতে পারব, কীভাবে যিহোবার সংগঠন ঠিক সেটাই করে, যেটা যিশু করেছিলেন। আমরা এও জানতে পারব, কীভাবে আমরা দেখাতে পারি যে, যিহোবার সংগঠনের উপর আমাদের সম্পূর্ণ নির্ভরতা রয়েছে।
আমাদের সংগঠন ঠিক সেটাই করে, যেটা যিশু করেছিলেন
৫. যিশুর মতো বর্তমানে যিহোবার সংগঠন কী করে? (যোহন ৮:২৮)
৫ যিশু যা-কিছু বলেছিলেন ও করেছিলেন, সেই সমস্ত কিছু তিনি তাঁর পিতার কাছ থেকে শিখেছিলেন। একইভাবে, বর্তমানে যিহোবার সংগঠন আমাদের যা-কিছু শেখায় এবং যে-নির্দেশনাগুলো দেয়, সেগুলো ঈশ্বরের বাক্য বাইবেলের উপর ভিত্তি করে হয়ে থাকে। (পড়ুন, যোহন ৮:২৮; ২ তীম. ৩:১৬, ১৭.) আমাদের সবসময় উৎসাহিত করা হয় যেন আমরা ঈশ্বরের বাক্য পড়ি এবং যা শিখি, তা কাজে লাগাই। এতে আমরা কোন উপকার পাই?
৬. বাইবেল অধ্যয়ন করলে আমরা কোন উপকার পাই?
৬ আমরা যখন আমাদের প্রকাশনা ব্যবহার করে বাইবেল অধ্যয়ন করি, তখন আমরা অনেক উপকার পাই। যেমন, আমরা যখন যিহোবার সংগঠনের কাছ থেকে কোনো নির্দেশনা পাই, তখন প্রকাশনাগুলো নিয়ে অধ্যয়ন করলে আমরা জানতে পারি, সেই নির্দেশনা বাইবেলের উপর ভিত্তি করে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে, সংগঠনের উপর আমাদের নির্ভরতা বেড়ে যায়।—রোমীয় ১২:২.
৭. (ক) যিশু কী করেছিলেন? (খ) বর্তমানে যিহোবার সংগঠনে প্রত্যেক ব্যক্তি কী করে থাকে?
৭ যিশু “ঈশ্বরের রাজ্যের সুসমাচার” জানিয়েছিলেন। (লূক ৪:৪৩, ৪৪) তিনি তাঁর শিষ্যদের আজ্ঞা দিয়েছিলেন যেন তারা রাজ্যের সুসমাচার প্রচার করে। (লূক ৯:১, ২; ১০:৮, ৯) বর্তমানে যিহোবার সংগঠনে প্রত্যেক ব্যক্তি রাজ্যের সুসমাচার প্রচার করে থাকে, তা তারা যেখানেই থাকুক না কেন অথবা যে-দায়িত্বই পালন করুক না কেন।
৮. আমরা কোন সুযোগ পেয়েছি?
৮ এটা কতই-না সম্মানের বিষয় যে, আমরা অন্যদের ঈশ্বরের রাজ্যের সুসমাচার জানাই! এই সুযোগ সবাই পায় না। মনে করে দেখুন, পৃথিবীতে থাকার সময়ে যিশু মন্দ স্বর্গদূতদের তাঁর বিষয়ে সাক্ষ্য দিতে দেননি। (লূক ৪:৪১) বর্তমানে, কেউ যদি ঈশ্বরের লোকদের সঙ্গে প্রচার করতে চায়, তা হলে সবচেয়ে প্রথমে তাকে ঈশ্বরের ইচ্ছা অনুযায়ী জীবনযাপন করতে হবে। কীভাবে আমরা দেখাতে পারি, প্রচার কাজ করার আমরা যে-সুযোগ পেয়েছি, সেটাকে আমরা সত্যিই সম্মান করি? আমরা যখনই আর যেখানেই সুযোগ পাব, অন্যদের সুসমাচার জানাব। যিশুর মতো আমরাও লোকদের হৃদয়ে সত্যের বীজ বুনতে চাই এবং তাতে জল দিতে চাই।—মথি ১৩:৩, ২৩; ১ করি. ৩:৬.
৯. লোকদের ঈশ্বরের নাম জানানোর জন্য তাঁর সংগঠন কী করেছে?
৯ যিশু লোকদের ঈশ্বরের নাম জানিয়েছিলেন। তাঁর পিতার কাছে প্রার্থনা করার সময়ে তিনি বলেছিলেন: “আমি তোমার নাম তাদের জানিয়েছি।” (যোহন ১৭:২৬) যিশুর মতো যিহোবার সংগঠনও লোকদের ঈশ্বরের নাম জানানোর জন্য অনেক প্রচেষ্টা করে। যেমন, পবিত্র বাইবেল—নতুন জগৎ অনুবাদ-এ ঈশ্বরের নাম সেই সমস্ত জায়গায় দেওয়া হয়েছে, যেখানে সেটা থাকা উচিত। বর্তমানে, এই বাইবেল অথবা এটির কিছু বই ২৭০-রেরও বেশি ভাষায় পাওয়া যাচ্ছে। ঈশ্বরের বাক্য অধ্যয়নের জন্য এক সহায়িকা পুস্তিকার ১-১৩ পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে যে, কেন ঈশ্বরের নাম সেই সমস্ত জায়গায় আবারও দেওয়া হয়েছে, যেখানে সেটা থাকার কথা। সেই পুস্তিকায় আপনি জানতে পারবেন, কেন খ্রিস্টীয় গ্রিক শাস্ত্র-এ ঈশ্বরের নাম ২৩৭ বার থাকা উচিত।
১০. মিয়ানমারে থাকা একজন মহিলার কাছ থেকে আপনি কী শিখেছেন?
১০ যিশুর মতো আমরাও যত বেশি সম্ভব লোককে ঈশ্বরের নাম জানাতে চাই। মিয়ানমারে থাকা ৬৭ বছর বয়সি একজন মহিলা যখন ঈশ্বরের নাম জানতে পেরেছিলেন, তখন তার চোখে জল চলে এসেছিল। তিনি বলেছিলেন: “জীবনে এই প্রথম বার আমি জানতে পেরেছি যে, ঈশ্বরের নাম যিহোবা। . . . তুমি আমাকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টা শিখিয়েছ।” এই অভিজ্ঞতা থেকে বোঝা যায়, যখন সৎহৃদয়ের ব্যক্তিরা ঈশ্বরের নাম জানতে পারে, তখন এটা তাদের হৃদয়ে এক গভীর ছাপ ফেলে।
সংগঠনের উপর নির্ভর করে চলুন
১১. কীভাবে প্রাচীনেরা দেখাতে পারে যে, তারা ঈশ্বরের সংগঠনের উপর পুরোপুরি নির্ভর করে? (ছবিও দেখুন।)
১১ কীভাবে প্রাচীনেরা দেখাতে পারে যে, তারা ঈশ্বরের সংগঠনের উপর পুরোপুরি নির্ভর করে? একটা উপায় হল, সংগঠনের কাছ থেকে কোনো নির্দেশনা পেলে সেটা মন দিয়ে পড়া আর সেই অনুযায়ী কাজ করার প্রচেষ্টা করা। উদাহরণ স্বরূপ, প্রাচীনদের বলা হয়, তাদের কীভাবে মণ্ডলীর বিভিন্ন অংশ তুলে ধরা উচিত এবং কীভাবে মণ্ডলীর হয়ে প্রার্থনা করা উচিত। এর পাশাপাশি তাদের এও বলা হয়, তাদের কীভাবে খ্রিস্টের মেষদের যত্ন নেওয়া উচিত। প্রাচীনেরা যখন ঈশ্বরের সংগঠনের নির্দেশনা মেনে চলে, তখন ভাই-বোনেরা যিহোবার প্রেম অনুভব করে এবং নিজেদের সুরক্ষিত বোধ করে।
প্রাচীনেরা আমাদের যিহোবার সংগঠনের কাছ থেকে পাওয়া নির্দেশনা মেনে চলতে এবং সংগঠনের উপর নির্ভর করতে সাহায্য করে (১১ অনুচ্ছেদ দেখুন)b
১২. (ক) যারা আমাদের মধ্যে নেতৃত্ব নেয়, কেন আমাদের তাদের বাধ্য হওয়া উচিত? (ইব্রীয় ১৩:৭, ১৭) (খ) কেন আমাদের সেই ভাইদের ভালো বিষয়গুলোর উপর মনোযোগ দেওয়া উচিত, যারা নেতৃত্ব নেয়?
১২ আমরা যখন প্রাচীনদের কাছ থেকে কোনো নির্দেশনা পাই, তখন আমাদের তা আনন্দের সঙ্গে মেনে নেওয়া উচিত। ফলে, প্রাচীনেরা ভালোভাবে এবং সহজে তাদের দায়িত্ব পালন করতে পারবে। বাইবেল বলে, আমাদের মধ্যে যারা নেতৃত্ব নেয়, আমরা যেন তাদের বাধ্য হই এবং তাদের অধীনে থাকি। (পড়ুন, ইব্রীয় ১৩:৭, ১৭.) কিন্তু, কখনো কখনো তা করা কঠিন হতে পারে। কেন? কারণ আমাদের মতো প্রাচীনেরাও ভুল করে এবং তাদের মধ্যেও দুর্বলতা রয়েছে। তাই, আমরা যদি তাদের ভালো বিষয়গুলোর পরিবর্তে খারাপ বিষয়গুলোর উপর মনোযোগ দিই, তা হলে তাদের বাধ্য হওয়া আমাদের কঠিন বলে মনে হবে। এটা এমন হবে যেন আমরা আমাদের শত্রুদের সাহায্য করছি। কীভাবে? আমরা যদি শুধু প্রাচীনদের দুর্বলতাগুলোর উপরই মনোযোগ দিই, তা হলে হয়তো সংগঠনের ভুলগুলোই আমাদের চোখে পড়বে আর ধীরে ধীরে সংগঠনের উপর থেকে আমাদের নির্ভরতা উঠে যাবে। আর আমাদের শত্রুরা তো এটাই চায়! তাহলে, কীভাবে আমরা আমাদের শত্রুদের ছলচাতুরী চিনতে পারি এবং তাদের বলা মিথ্যা কথাগুলোতে কান দেওয়া এড়িয়ে চলতে পারি?
আপনার নির্ভরতা কমে যেতে দেবেন না
১৩. ঈশ্বরের বিরোধীরা আমাদের উপর কোন অভিযোগগুলো নিয়ে আসে?
১৩ ঈশ্বরের বিরোধীরা তাঁর সংগঠনের ভালো বিষয়গুলোকে ভুলভাবে তুলে ধরে। বাইবেলে বলা আছে, যিহোবা তাঁর সেবকদের কাছ থেকে আশা করেন যেন তারা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকে, তাদের আচার-আচরণ ভালো হয় আর তারা যেন ঠিক সেভাবে তাঁর উপাসনা করে, যেভাবে তিনি চান। বাইবেলে এও বলা আছে, একজন ব্যক্তি যদি পাপ করে এবং অনুতপ্ত না হয়, তা হলে তাকে যেন মণ্ডলী থেকে বের করে দেওয়া হয়। (১ করি. ৫:১১-১৩; ৬:৯, ১০) আমরা বাইবেলের এই সমস্ত কথা মেনে চলি। তাই, ঈশ্বরের বিরোধীরা আমাদের উপর এই অভিযোগগুলো নিয়ে আসে যে, আমরা লোকদের ভালোবাসি না, লোকদের শুধু বিচার করি আর যারা আমাদের চেয়ে আলাদা, তাদের সহ্য করি না।
১৪. কে আসলে সংগঠনের নামে মিথ্যা কথা ছড়ায়?
১৪ আসল শত্রু কে, তা চিনুন। শয়তান বিভিন্ন ধরনের মিথ্যা কথা ছড়িয়ে থাকে। বাইবেলে তাকে “মিথ্যার পিতা” বলা হয়েছে। (যোহন ৮:৪৪; আদি. ৩:১-৫) তাই, শয়তান যখন তার লোকদের মাধ্যমে যিহোবার সংগঠনের নামে মিথ্যা কথা বা গুজব ছড়ায়, তখন আমাদের অবাক হওয়া উচিত নয়। সে প্রথম শতাব্দীতেও তা করেছিল।
১৫. কীভাবে ধর্মীয় গুরুরা যিশু এবং তাঁর শিষ্যদের নামে মিথ্যা কথা ছড়িয়েছিল?
১৫ প্রথম শতাব্দীতে শয়তান তার লোকদের মাধ্যমে ঈশ্বরের পুত্রের নামে অনেক মিথ্যা কথা ছড়িয়েছিল। যিশু নিখুঁত ছিলেন এবং ঈশ্বরের শক্তিতে অনেক বড়ো বড়ো অলৌকিক কাজ করেছিলেন। কিন্তু, ধর্মীয় গুরুরা তাঁর নামে এই মিথ্যা কথা ছড়িয়েছিল যে, “[যিশু] মন্দ স্বর্গদূতদের রাজার সাহায্যেই মন্দ স্বর্গদূত ছাড়ায়।” (মার্ক ৩:২২) যিশুকে যখন বিচার করা হচ্ছিল, তখন ধর্মীয় গুরুরা তাঁর উপর ঈশ্বরনিন্দার অভিযোগ এনেছিল। সেই ধর্মীয় গুরুরা লোকদের উসকে দিয়েছিল যেন তারা বলে, যিশুকে মেরে ফেলা হোক। (মথি ২৭:২০) পরবর্তী সময়ে যিশুর শিষ্যেরা যখন সুসমাচার প্রচার করেছিল, তখন বিরোধীরা ‘ভাইদের বিরুদ্ধে ন-যিহুদি লোকদের উত্তেজিত করে তুলেছিল এবং তাদের মন বিষিয়ে তুলেছিল’ যেন তারা শিষ্যদের উপর তাড়না নিয়ে আসে। (প্রেরিত ১৪:২, ১৯) এই বিষয়ে ১৯৯৮ সালের ১ ডিসেম্বর প্রহরীদুর্গ পত্রিকায় বলা হয়েছিল: “যিহূদী বিরোধীরা সেই বার্তা অগ্রাহ্য করেই সন্তুষ্ট হননি, তারা পরজাতীয়দের মধ্যে খ্রীষ্টানদের বিরুদ্ধে প্রতিকূল ধারণা সৃষ্টি করার চেষ্টায় অপপ্রচার চালিয়েছিলেন।”
১৬. আমরা যদি সংগঠন অথবা নেতৃত্ব নেয় এমন ভাইদের নামে মিথ্যা কথা শুনি, তা হলে আমাদের কী মনে রাখতে হবে?
১৬ শয়তান আজও বিভিন্ন মিথ্যা কথা ছড়াচ্ছে। বাইবেলে লেখা আছে, সে ‘পৃথিবীতে বসবাসকারী সমস্ত লোককে ভ্রান্ত করছে।’ (প্রকা. ১২:৯) তাই, আপনি যদি সংগঠন অথবা নেতৃত্ব নেয় এমন ভাইদের নামে মিথ্যা কথা শোনেন, তা হলে মনে রাখবেন, প্রথম শতাব্দীতেও যিশু এবং তাঁর শিষ্যদের নামে বিরোধীরা মিথ্যা কথা ছড়িয়েছিল। এ ছাড়া, বাইবেলে বলা আছে, যিহোবার লোকদের উপর তাড়না করা হবে এবং তাদের নামে অনেক মিথ্যা কথা ছড়ানো হবে। (মথি ৫:১১, ১২) আমরা যদি সেগুলোর দ্বারা ভ্রান্ত হতে না চাই, তা হলে আমাদের মনে রাখতে হবে, আমাদের আসল শত্রু কে আর সঙ্গেসঙ্গে পদক্ষেপ নিতে হবে। আমাদের কোন পদক্ষেপ নিতে হবে?
১৭. কোনো মিথ্যা কথা কানে এলে আমাদের কী করতে হবে? (২ তীমথিয় ১:১৩) (এ ছাড়া, “কোনো মিথ্যা কথা কানে এলে কী করব?” বক্স দেখুন।)
১৭ মিথ্যা কথায় কান দেবেন না। প্রেরিত পৌল বলেছিলেন, কোনো মিথ্যা কথা কানে এলে আমাদের কী করতে হবে। তিনি তীমথিয়কে বলেছিলেন, তীমথিয় যেন ‘কয়েক জনকে এই আদেশ দেন, যেন তারা মিথ্যা গল্পের প্রতি মনোযোগ না দেয় এবং মিথ্যা ও ঈশ্বরনিন্দাকারী গল্প প্রত্যাখ্যান করে।’ (১ তীম. ১:৩, ৪; ৪:৭) চিন্তা করুন, বাচ্চারা কত অবুঝ হয়। তারা মাটিতে পড়ে থাকা যেকোনো জিনিস মুখে দেয়। কিন্তু, বড়োরা কখনো তা করে না কারণ তারা এর বিপদ সম্বন্ধে জানে। আমরাও মিথ্যা কথার বিপদ সম্বন্ধে জানি, তাই আমরা এগুলোতে কান দিই না বরং ‘উপকারজনক বাক্য’ অর্থাৎ সত্যকে ধরে রাখি।—পড়ুন, ২ তীমথিয় ১:১৩.
১৮. কীভাবে আমরা যিহোবার সংগঠনের উপর আমাদের সম্পূর্ণ নির্ভরতা দেখাতে পারি?
১৮ এই প্রবন্ধে আমরা শিখেছি, আমাদের সংগঠন কোন তিনটে উপায়ে যিশুর মতো কাজ করে। তবে, এইরকম আরও উপায় রয়েছে। তাই, বাইবেল অধ্যয়ন করার সময়ে সেগুলোর উপর মনোযোগ দিন। এ ছাড়া, ভাই-বোনদের যিহোবার সংগঠনের উপর নির্ভরতা বাড়াতে সাহায্য করুন। যিহোবার প্রতি বিশ্বস্ত থাকুন এবং তাঁর সংগঠনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলুন। এভাবে দেখান যে, তাঁর সংগঠনের উপর আপনার সম্পূর্ণ নির্ভরতা রয়েছে, যেটার মাধ্যমে তিনি তাঁর ইচ্ছা পূরণ করছেন। (গীত. ৩৭:২৮) আসুন, আমরা সবসময় এই বিষয়ের জন্য কৃতজ্ঞ হই যে, আমরা যিহোবার লোকদের সঙ্গে মিলে তাঁর সেবা করছি, যারা তাঁকে ভালোবাসে এবং তাঁর প্রতি বিশ্বস্ত থাকে।
আপনি কীভাবে উত্তর দেবেন?
কোন কোন উপায়ে বর্তমানে যিহোবার সংগঠন যিশুর মতো কাজ করে?
কীভাবে আমরা ক্রমাগত যিহোবার সংগঠনের উপর সম্পূর্ণ নির্ভরতা দেখাতে পারি?
কোনো মিথ্যা কথা কানে এলে আমাদের কী করতে হবে?
গান ১০৩ প্রাচীনেরা—যিহোবার কাছ থেকে এক দান
b ছবি সম্বন্ধে বর্ণনা: প্রাচীনেরা জনসাধারণ্যে সাক্ষ্য দেওয়ার বিষয়ে সংগঠনের কাছ থেকে পাওয়া নির্দেশনা নিয়ে আলোচনা করছে। এরপর, একজন পরিচর্যা দল অধ্যক্ষ প্রকাশকদের বলছেন, কার্ট বা ট্রলি লাগিয়ে প্রচার করার সময়ে তাদের পিঠ যেন দেওয়ালের দিকে থাকে।