অধ্যয়ন প্রবন্ধ ১৫
গান ৩০ যিহোবা আমার পিতা, ঈশ্বর ও বন্ধু
“ঈশ্বরের নিকটবর্তী হওয়া” আমাদের জন্য ভালো!
“ঈশ্বরের নিকটবর্তী হওয়া আমার জন্যই ভালো।”—গীত. ৭৩:২৮.
আমরা কী শিখব?
যিহোবার আরও নিকটবর্তী হওয়ার জন্য আমরা কী করতে পারি আর এমনটা করলে আমরা কোন কোন আশীর্বাদ লাভ করব?
১-২. (ক) কারো সঙ্গে বন্ধুত্ব করার জন্য আমাদের কী করতে হয়? (খ) এই প্রবন্ধে আমরা কী জানতে পারব?
আপনার কি কোনো ভালো বন্ধু রয়েছে? তার সঙ্গে বন্ধুত্ব করার জন্য আপনি কী করেছিলেন? আপনি নিশ্চয়ই তার সঙ্গে সময় কাটিয়েছেন, তার পছন্দ অপছন্দ জানার চেষ্টা করেছেন আর সেইসঙ্গে তার জীবন সম্বন্ধেও অনেক কিছু জেনেছেন। আর আপনি যখন জেনেছেন যে, তিনি খুবই ভালো একজন ব্যক্তি এবং তার মধ্যে অনেক ভালো গুণ রয়েছে, তখন আপনি তার দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়েছেন। এরপর, ধীরে ধীরে তার সঙ্গে আপনার বন্ধুত্ব ঘনিষ্ঠ হয়েছে।
২ কারো সঙ্গে বন্ধুত্ব করার জন্য সময় ও প্রচেষ্টার প্রয়োজন হয়। ঠিক একইভাবে, যিহোবার নিকটবর্তী হওয়ার জন্য সময় ও প্রচেষ্টার প্রয়োজন। এই প্রবন্ধে আমরা জানতে পারব যে, যিহোবার আরও নিকটবর্তী হওয়ার জন্য আমাদের কী করতে হবে আর তা করার ফলে আমরা কোন কোন আশীর্বাদ লাভ করব। আসুন প্রথমে দেখি, আমাদের প্রিয় বন্ধু যিহোবার নিকটবর্তী হওয়া কেন আমাদের জন্য ভালো।
৩. কেন আমাদের এই বিষয়ে গভীরভাবে চিন্তা করা উচিত যে, যিহোবার নিকটবর্তী হওয়া আমাদের জন্য ভালো? একটা উদাহরণ দিন।
৩ যিহোবার নিকটবর্তী হওয়া আমাদের জন্য ভালো। কিন্তু, এটা কতটা ভালো, সেই বিষয়ে আমরা যদি গভীরভাবে চিন্তা করি, তা হলে আমরা যিহোবার আরও নিকটবর্তী হতে পারব। (গীত. ৬৩:৬-৮) এটা বোঝার জন্য একটা উদাহরণ লক্ষ করুন। প্রত্যেকে জানে যে, সুস্থসবল থাকার জন্য পুষ্টিকর খাবার খাওয়া, এক্সারসাইজ করা, পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম নেওয়া ও সেইসঙ্গে প্রতিদিন প্রচুর জল খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু, এটা জানা সত্ত্বেও, অনেকে এই বিষয়গুলো মেনে চলে না কারণ তারা এই বিষয়ে কোনো চিন্তাই করে না। তবে, একজন ব্যক্তি যদি এই সমস্ত বিষয়ে চিন্তা করেন, তা হলে তিনি নিশ্চয়ই কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেবেন এবং তার স্বাস্থ্য ভালো থাকবে। একইভাবে, আমরা সবাই জানি, যিহোবার নিকটবর্তী হওয়া আমাদের জন্য ভালো। কিন্তু, আমরা যদি এই বিষয়ে গভীরভাবে চিন্তা করি, তা হলে আমাদের তাঁর আরও নিকটবর্তী হতে ইচ্ছা করবে।—গীত. ১১৯:২৭-৩০.
৪. গীতসংহিতা ৭৩:২৮ পদের লেখক কী বলেছিলেন?
৪ গীতসংহিতা ৭৩:২৮ পদ পড়ুন। ৭৩ গীতের লেখক একজন লেবীয় ছিলেন, যিনি যিহোবার মন্দিরে বাদক হিসেবে সেবা করতেন। তিনি হয়তো অনেক বছর ধরে যিহোবার সেবা করছিলেন। কিন্তু, তিনি জানতেন, ‘যিহোবার নিকটবর্তী হওয়াই’ তার জন্য ভালো। আর তিনি অন্যদেরও এমনটা করার জন্য উৎসাহিত করেছিলেন। তাহলে আসুন দেখি যে, যিহোবার নিকটবর্তী হওয়া কেন আমাদের জন্য ভালো।
‘ঈশ্বরের নিকটবর্তী হওয়ার’ ফলে সুখী হওয়া যায়
৫. (ক) যিহোবার আরও নিকটবর্তী হলে কেন সুখী হওয়া যায়? (খ) হিতোপদেশ ২:৬-১৬ পদে দেওয়া যিহোবার প্রজ্ঞার কথাগুলো মেনে চললে কীভাবে আপনি সাহায্য লাভ করতে পারেন এবং নিজেকে রক্ষা করতে পারেন?
৫ আমরা যতবেশি যিহোবার নিকটবর্তী হব, ততবেশি সুখী হতে পারব। (গীত. ৬৫:৪) কেন আমরা এমনটা বলতে পারি? এর অনেক কারণ রয়েছে। যেমন, যিহোবা তাঁর বাক্যে যে-প্রজ্ঞার কথাগুলো লিখিয়েছেন, সেগুলো মেনে চললে আমাদেরই মঙ্গল হয়। আমরা খারাপ বিষয়ে জড়িয়ে পড়ি না আর পাপ করা থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারি। (পড়ুন, হিতোপদেশ ২:৬-১৬.) এইজন্য বাইবেলে লেখা আছে: “সুখী সেই ব্যক্তি, যে প্রজ্ঞা খুঁজে পায়, সুখী সেই ব্যক্তি, যে বিচক্ষণতা অর্জন করে।”—হিতো. ৩:১৩.
৬. তিয়াত্তর গীতের লেখক কোন কারণে নিজের আনন্দ হারিয়ে ফেলেছিলেন?
৬ এটা ঠিক যে, অনেকসময় যিহোবার বন্ধুরাও হতাশ হয়ে পড়ে। একবার ৭৩ গীতের লেখকও নিজের আনন্দ হারিয়ে ফেলেছিলেন। তার মনে হয়েছিল, যারা যিহোবাকে ভালোবাসে না এবং তাঁর মান অনুযায়ী জীবনযাপন করে না, তারা আরাম-আয়েশে জীবন কাটাচ্ছে। তাই তিনি খুব রেগে গিয়েছিলেন এবং তাদের দেখে হিংসা করতে শুরু করেছিলেন। তিনি এটা ধরে নিয়েছিলেন যে, যারা অহংকারী এবং অন্যদের ঘৃণা করে, তারা দিন দিন ধনী হচ্ছে, তাদের স্বাস্থ্যও ভালো আছে এবং তাদের জীবনে কোনো সমস্যা নেই। (গীত. ৭৩:৩-৭, ১২) এই বিষয়গুলো নিয়ে বার বার চিন্তা করে তিনি এতটাই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলেন যে, তার মনে হয়েছিল, যিহোবার সেবা করে কোনো লাভ নেই। অত্যন্ত দুঃখিত হয়ে তিনি বলেছিলেন, “আমি বৃথাই আমার হৃদয় বিশুদ্ধ রেখেছি, আমি যে নির্দোষ, তা প্রমাণ করার জন্য নিজের হাত ধুয়েছি।”—গীত. ৭৩:১৩.
৭. আমরা যখন দুঃখের মধ্যে থাকি, তখন আমরা কী করতে পারি? ( ছবিও দেখুন।)
৭ গীতরচক অনেক নিরুৎসাহিত হয়ে পড়েছিলেন, কিন্তু তিনি হাল ছেড়ে দেননি। তিনি “ঈশ্বরের মহৎ পবিত্র স্থানে প্রবেশ” করেছিলেন আর সেখানে যিহোবা তার চিন্তাভাবনা সংশোধন করেছিলেন। (গীত. ৭৩:১৭-১৯) আমরা যখন দুঃখিত অথবা নিরুৎসাহিত হয়ে পড়ি, তখন আমাদের প্রিয় বন্ধু যিহোবা জানেন যে, আমরা কোন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। তাই, আমরা প্রার্থনায় তাঁর কাছ থেকে সাহায্য চাইতে পারি। এমনটা করলে যিহোবা তাঁর বাক্য বাইবেলের মাধ্যমে এবং মণ্ডলীর ভাই-বোনদের মাধ্যমে আমাদের শক্তিশালী করবেন, যাতে আমরা আমাদের দুঃখ কাটিয়ে উঠতে পারি। শুধু তা-ই নয়, যখন দুশ্চিন্তা আমাদের চেপে ধরে, তখন যিহোবা আমাদের সান্ত্বনা ও স্বস্তি দেবেন।—গীত. ৯৪:১৯.a
যে-লেবীয় ৭৩ গীত লিখেছিলেন, তিনি “ঈশ্বরের মহৎ পবিত্র স্থানে” দাঁড়িয়ে আছেন (৭ অনুচ্ছেদ দেখুন)
‘ঈশ্বরের নিকটবর্তী হওয়ার’ ফলে জীবনের উদ্দেশ্য এবং প্রত্যাশা লাভ করা যায়
৮. আর কোন কোন কারণে যিহোবার নিকটবর্তী হওয়া আমাদের জন্য ভালো?
৮ যিহোবার নিকটবর্তী হওয়া আমাদের জন্য ভালো। কেন? এর আরও দুটো কারণ রয়েছে। প্রথমত, এর ফলে আমরা জীবনের উদ্দেশ্য লাভ করি। আর দ্বিতীয়ত, আমরা ভবিষ্যতের জন্য এক প্রত্যাশা লাভ করি। (যির. ২৯:১১) আসুন, আরও ভালোভাবে এগুলো নিয়ে আলোচনা করি।
৯. যিহোবার নিকটবর্তী হওয়ার ফলে কীভাবে আমরা জীবনের উদ্দেশ্য এবং আনন্দ লাভ করি?
৯ যিহোবার নিকটবর্তী হওয়ার ফলে আমরা জীবনের উদ্দেশ্য এবং আনন্দ লাভ করি। বর্তমানে অনেকে মনে করে, ঈশ্বর বলে কেউ নেই আর তাই তাদের জীবনের কোনো উদ্দেশ্য নেই। তারা মনে করে যে, একদিন সমস্ত কিছু শেষ হয়ে যাবে, এমনকী কোনো মানুষও বেঁচে থাকবে না। কিন্তু, আমরা বাইবেল অধ্যয়ন করে নিশ্চিত হয়েছি যে, “ঈশ্বর আছেন” আর আমরা তাঁর সেবায় যা-কিছু করি, সেটা কখনো ব্যর্থ হবে না কারণ “যারা আন্তরিকভাবে তাঁর অন্বেষণ করে, তিনি তাদের পুরস্কার দেন।” (ইব্রীয় ১১:৬) যিহোবা আমাদের এমনভাবে সৃষ্টি করেছেন যে, তাঁর উপাসনা করে আমরা আনন্দ লাভ করি। তাই, আমরা যখন তাঁর উপাসনা করি, তখন আমরা আনন্দে থাকি।—দ্বিতীয়. ১০:১২, ১৩.
১০. যারা যিহোবার উপর আশা রাখে, তিনি তাদের কেমন ভবিষ্যৎ দেবেন বলে প্রতিজ্ঞা করেছেন? (গীতসংহিতা ৩৭:২৯)
১০ অনেকে মনে করে জীবনের উদ্দেশ্য হল, শুধুমাত্র চাকরি করা, বিয়ে করা, সন্তান মানুষ করে তোলা এবং বৃদ্ধ বয়সের জন্য কিছু টাকাপয়সা জমিয়ে রাখা। তারা ঈশ্বর সম্বন্ধে চিন্তাই করে না। কিন্তু, ঈশ্বরের সেবক হিসেবে আমরা তাঁর উপর আশা রাখি। (গীত. ২৫:৩-৫; ১ তীম. ৬:১৭) আমরা যিহোবার নিকটবর্তী হয়েছি এবং আমরা পুরোপুরি নিশ্চিত যে, তিনি তাঁর প্রতিজ্ঞা পূরণ করবেন। আমরা সেই সময়ের জন্যও অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে রয়েছি, যখন আমরা নতুন জগতে চিরকাল ধরে যিহোবার উপাসনা করব।—পড়ুন, গীতসংহিতা ৩৭:২৯.
১১. আমরা যখন যিহোবার নিকটবর্তী হই, তখন আমরা কোন কোন আশীর্বাদ লাভ করি আর যিহোবা কেমন অনুভব করেন?
১১ যিহোবার নিকটবর্তী হওয়ার ফলে আমরা আরও অনেক আশীর্বাদ লাভ করি। যেমন, যিহোবা প্রতিজ্ঞা করেছেন, আমরা যদি প্রকৃতই অনুতপ্ত হই, তা হলে তিনি আমাদের পাপ ক্ষমা করে দেবেন। (যিশা. ১:১৮) এই কারণে আমাদের পাপের ভারী বোঝা বয়ে বেড়াতে হয় না এবং আমাদের এক শুদ্ধ বিবেক থাকে। (গীত. ৩২:১-৫) এ ছাড়া, আমরা যখন যিহোবার নিকটবর্তী হই, তখন তাঁর হৃদয়কে আনন্দিত করি। (হিতো. ২৩:১৫) আপনি কি এইরকম আরও আশীর্বাদের বিষয়ে চিন্তা করতে পারেন, যেগুলো যিহোবার নিকটবর্তী হওয়ার ফলে আপনি লাভ করেছেন? এখন আসুন দেখি যে, ক্রমাগত যিহোবার নিকটবর্তী হওয়ার জন্য আমরা কী করতে পারি?
ক্রমাগত ‘ঈশ্বরের নিকটবর্তী হওয়ার’ জন্য আমরা কী করতে পারি?
১২. যিহোবার আরও নিকটবর্তী হওয়ার জন্য আপনাকে কী করে চলতে হবে?
১২ আপনি যদি বাপ্তিস্ম নিয়ে থাকেন, তা হলে আপনি নিশ্চয়ই যিহোবার নিকটবর্তী হওয়ার জন্য ইতিমধ্যেই কিছু পদক্ষেপ নিয়েছেন। যেমন, আপনি যিহোবা ও যিশু খ্রিস্ট সম্বন্ধে সত্য জেনেছেন, নিজের পাপের জন্য অনুতপ্ত হয়েছেন, যিহোবার উপর আপনার বিশ্বাস বৃদ্ধি করেছেন এবং তাঁর ইচ্ছা অনুযায়ী জীবনযাপন করার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু, আপনি যদি যিহোবার আরও নিকটবর্তী হতে চান, তা হলে আপনাকে এই কাজগুলো করে চলতে হবে।—কল. ২:৬.
১৩. যিহোবার আরও নিকটবর্তী হওয়ার জন্য আমাদের কোন তিনটে পদক্ষেপ নিতে হবে?
১৩ যিহোবার আরও নিকটবর্তী হওয়ার জন্য আমাদের কোন পদক্ষেপগুলো নিতে হবে? (১) আমাদের প্রতিদিন বাইবেল পড়তে এবং তা নিয়ে অধ্যয়ন করতে হবে। বাইবেল পড়ার সময় আমাদের শুধু কোনো বিষয়ে জ্ঞান নিলেই হবে না, এর পাশাপাশি যিহোবার চিন্তাভাবনা বোঝার চেষ্টা করতে হবে। আমাদের এটাও বুঝতে হবে, তিনি আমাদের কাছ থেকে কী চান আর সেই অনুযায়ী জীবনযাপন করতে হবে। (ইফি. ৫:১৫-১৭) (২) যিহোবার উপর আমাদের বিশ্বাস দৃঢ় করতে হবে। কীভাবে আমরা তা করতে পারি? যিহোবা বিভিন্ন উপায়ে আমাদের প্রতি যে-প্রেম দেখিয়েছেন, তা নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করার মাধ্যমে। আর (৩) আমাদের সেই কাজগুলো ঘৃণা করতে হবে, যেগুলো যিহোবা ঘৃণা করেন। আমাদের সেই লোকদের থেকেও দূরে থাকতে হবে, যারা খারাপ কাজ করে চলে।—গীত. ১:১; ১০১:৩.
১৪. যিহোবাকে খুশি করার জন্য আমরা প্রতিদিন কী করতে পারি? (১ করিন্থীয় ১০:৩১) (ছবিগুলোও দেখুন।)
১৪ প্রথম করিন্থীয় ১০:৩১ পদ পড়ুন। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ আমরা যেন সেই কাজগুলো করে চলি, যেগুলো দেখে যিহোবা খুশি হন। যেমন, আমাদের প্রচার করা উচিত এবং সভায় যাওয়া উচিত। কিন্তু, শুধু এগুলো করাই যথেষ্ট নয়। যিহোবাকে খুশি করার জন্য আমাদের প্রতিদিন ভালো কাজও করতে হবে। যেমন, আমাদের প্রতিটা বিষয়ে সৎ হতে হবে এবং আমাদের কাছে যা-কিছু আছে, তা অন্যদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে হবে। (২ করি. ৮:২১; ৯:৭) এ ছাড়া, আমাদের নিজেদের জীবনকে মূল্যবান হিসেবে দেখতে হবে। আমাদের খাওয়া-দাওয়া ও পান করার বিষয়ে সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি রাখতে হবে এবং নিজেদের স্বাস্থ্যের যত্ন নিতে হবে। এভাবে আমরা যিহোবার আরও নিকটবর্তী হতে পারব। আর যিহোবা যখন দেখবেন, আমরা ছোটো ছোটো বিষয়েও তাঁকে খুশি করার চেষ্টা করছি, তখন তিনি আমাদের আরও ভালোবাসবেন।—লূক ১৬:১০.
যিহোবাকে খুশি করার কিছু উপায়: সাবধানে গাড়ি চালানো, এক্সারসাইজ করা এবং পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার মাধ্যমে শরীরের যত্ন নেওয়া আর আতিথেয়তা দেখানো (১৪ অনুচ্ছেদ দেখুন)
১৫. যিহোবা আমাদের কাছ থেকে কী চান?
১৫ যিহোবা ভালো ও মন্দ দুই ধরনের ব্যক্তিদের প্রতিই ভালো কাজ করেন। (মথি ৫:৪৫) আর তিনি চান যেন আমরাও তা করি। তাই, তিনি বলেছেন, আমরা যেন ‘কারো সম্বন্ধে নিন্দাজনক কথা না বলি, ঝগড়াঝাঁটি না করি . . . এবং সমস্ত মানুষের প্রতি মৃদুতা দেখাই।’ (তীত ৩:২) আমরা এই কথাগুলো মনে রাখি আর তাই যখন কেউ যিহোবাকে বিশ্বাস করে না, তখন আমরা তাকে নীচু চোখে দেখি না। (২ তীম. ২:২৩-২৫) আমরা সবার সঙ্গে ভালো আচরণ করি আর এই কারণে আমরা যিহোবার আরও নিকটবর্তী হই।
ভুল করার পরও আমরা ‘ঈশ্বরের নিকটবর্তী হতে’ পারি
১৬. একসময় ৭৩ গীতের লেখক কেমন অনুভব করেছিলেন?
১৬ হতে পারে, আপনি কোনো ভুল করেছেন আর এই কারণে আপনি মনে করছেন, আপনি যিহোবার ভালোবাসা পাওয়ার যোগ্য নন। এই পরিস্থিতিতে আপনি কী করতে পারেন? ৭৩ গীতের লেখকের কথা চিন্তা করুন। তিনি বলেছিলেন, “আমার পা প্রায় বিপথে চলে গিয়েছিল, আমার পা প্রায় পিছলে গিয়েছিল।” (গীত. ৭৩:২) পরে তিনি বলেছিলেন, তার “মন তেতো হয়ে গিয়েছিল” আর তিনি “নিজের বিচারবুদ্ধি ও বোঝার ক্ষমতা হারিয়ে” ফেলেছিলেন। তিনি এও বলেছিলেন যে, তিনি যিহোবার সামনে “নির্বোধ পশুর মতো হয়ে” গিয়েছিলেন। (গীত. ৭৩:২১, ২২) কিন্তু, এই কারণে কি তিনি এটা ধরে নিয়েছিলেন যে, তার আর কোনো আশা নেই এবং যিহোবা তাকে আর কখনো ভালোবাসবেন না?
১৭. (ক) গীতরচক যখন অনেক নিরুৎসাহিত হয়ে পড়েছিলেন, তখন তিনি কী করেছিলেন? (খ) আমরা তার কাছ থেকে কী শিখতে পারি? (ছবিগুলোও দেখুন।)
১৭ গীতরচকের হয়তো কিছু সময়ের জন্য মনে হয়েছিল, যিহোবা তাকে ছেড়ে দিয়েছেন। তিনি যখন অনেক নিরুৎসাহিত হয়ে গিয়েছিলেন, তখন তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে, তাকে যিহোবার আরও নিকটবর্তী হতে হবে। তাই তিনি লিখেছিলেন, “কিন্তু, [যিহোবা] এখন আমি সবসময় তোমার সঙ্গে রয়েছি, তুমি আমার ডান হাত ধরে রেখেছ। তুমি আমাকে পরামর্শ দেওয়ার মাধ্যমে পথ দেখাও আর পরে তুমি আমাকে সেই পথে পরিচালিত করবে, যে-পথে গৌরব রয়েছে।” (গীত. ৭৩:২৩, ২৪) আমরাও যখন দুর্বল অথবা নিরুৎসাহিত হয়ে পড়ি, তখন আমাদের শৈল যিহোবার উপর আমাদের আস্থা রাখতে হবে যে, তিনি আমাদের সাহায্য করবেন। (গীত. ৭৩:২৬; ৯৪:১৮) আমাদের পা হয়তো কিছু সময়ের জন্য পিছলে যেতে পারে, কিন্তু আমরা যিহোবার কাছে ফিরে আসতে পারি এবং এই নিশ্চয়তা রাখতে পারি যে, তিনি “ক্ষমা করার জন্য প্রস্তুত।” (গীত. ৮৬:৫) আর আমরা যখন অনেক নিরুৎসাহিত হয়ে পড়ি, তখন আমাদের যিহোবার আরও নিকটবর্তী হওয়া উচিত।—গীত. ১০৩:১৩, ১৪.
আমাদের বিশ্বাস যখন দুর্বল হতে শুরু করে, তখন প্রার্থনা করার এবং সভাতে যাওয়ার মাধ্যমে আমাদের যিহোবার নিকটবর্তী হওয়া উচিত (১৭ অনুচ্ছেদ দেখুন)
ক্রমাগত “ঈশ্বরের নিকটবর্তী” হোন
১৮. কেন আমাদের সবসময় যিহোবার নিকটবর্তী হতে হবে?
১৮ বাইবেলে লেখা আছে, যিহোবার পথ, তাঁর প্রজ্ঞা এবং তাঁর জ্ঞান “পুরোপুরি অনুসন্ধান করা যায় না!” (রোমীয় ১১:৩৩) তাই, আমরা কখনোই যিহোবার বিষয়ে সমস্ত কিছু জানতে পারব না। আমাদের সবসময় তাঁর সম্বন্ধে শিখে চলতে হবে এবং ক্রমাগত তাঁর নিকটবর্তী হতে হবে।
১৯. গীতসংহিতা বইয়ে লেখা কথাগুলো থেকে আমরা কোন বিষয়ে নিশ্চিত হই?
১৯ গীতসংহিতা ৭৯:১৩ পদে লেখা রয়েছে: “আমরা, তোমার লোকেরা, তোমার চারণভূমির মেষেরা চিরকাল ধরে তোমাকে ধন্যবাদ দেব, প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে তোমার প্রশংসা করব।” আমরা যত বেশি যিহোবার নিকটবর্তী হব, ততই আমাদের এই নিশ্চয়তা বাড়বে যে, তিনি আমাদের প্রচুর আশীর্বাদ করবেন। এরপর গীতরচকের মতো আমরাও বলতে পারব যে, “ঈশ্বর সেই শৈল, যিনি আমার মনকে দৃঢ় করেন, তিনিই আমার চিরকালের অংশ।”—গীত. ৭৩:২৬.
গান ৩২ নাও পক্ষ যিহোবার!
a যারা অনেক দীর্ঘসময় ধরে হতাশা, দুশ্চিন্তা অথবা দুঃখের সঙ্গে লড়াই করছে, তাদের হয়তো কোনো ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। আরও তথ্যের জন্য ২০২৩ সালের নং ১ প্রহরীদুর্গ পত্রিকা দেখুন।